Ajker Patrika

নতুন বছরে ত্বকের যত্নে নতুন উপকরণ

ঘড়ির কাঁটায় টিক টিক। ক্ষণগণনা শুরু। নতুন বছরজুড়ে সবার থাকে নানা পরিকল্পনা। অন্য বছরের মতো ২০২৫ সালেও দেখা যাবে সৌন্দর্যচর্চার বিভিন্ন ট্রেন্ড। নতুন বছরে বদলে ফেলুন নিজেকে।

কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা 
Thumbnail image
ছবি: মজ্ঞু আলম

ফ্যাশন ম্যাগাজিন ভোগ বলছে, বায়োটেক স্কিনকেয়ারের নতুন উদ্ভাবনগুলো মানুষকে তাদের ঘরে সব উপাদান একসঙ্গে এনে দেবে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানগুলো নতুনভাবে ব্যবহার করা ফার্ম-টু-ফেস ট্রেন্ড আসছে নতুন বছর। আসছে মাল্টি-ইউজ পণ্য, যা স্কিনকেয়ার ইনভেস্টমেন্টকে অর্থপূর্ণ করে তুলবে বলে জানিয়েছে ভোগ। অতিরিক্ত জিনিস বাদ দেওয়া এবং কার্যকর পণ্যের ব্যবহার নিশ্চিত করাই এই ট্রেন্ডগুলোর প্রধান উদ্দেশ্য।

বৈশ্বিক প্রভাব

সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তথ্য দ্রুত পৌঁছায় মানুষের কাছে। যে ট্রেন্ডগুলো একসময় কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে বাড়ত কিংবা এদের উৎপত্তি ও ব্যবহার নির্দিষ্ট সংস্কৃতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত, তা এখন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। কারণ, সৌন্দর্যপ্রেমীদের মধ্যে গল্প বলার এবং টিপস ও ট্রিকস আদান-প্রদানের মাধ্যম এখন সহজলভ্য। ফলে অন্য সবকিছুর মতো সাজসজ্জা ও সৌন্দর্যের যেকোনো পণ্য এখন সহজলভ্য। গত বছর বেশির ভাগ আলোচনা ছিল কোরিয়া ও জাপান থেকে আসা পণ্য এবং চিকিৎসা সুবিধা বিষয়ে। এগুলোর মধ্যে ছিল সারা বিশ্বে ভাইরাল হওয়া গ্লাসের মতো উজ্জ্বল ত্বকের গল্প।

২০২৫ সালের শপিং তালিকায় যে পণ্যগুলো থাকবে, সেগুলোর মধ্যে জনপ্রিয় মূল উপাদানগুলো থাকছে সেন্টেলা এশিয়াটিকা, চালের এক্সট্র্যাক্ট, জিনসেং ও মাগওর্ট। সেন্টেলা ও মাগওর্টে প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা সংবেদনশীল ত্বককে প্রশান্তি ও আরাম দেবে। জিনসেংয়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ত্বককে উজ্জ্বল করতে এবং রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে। আর চালের এক্সট্র্যাক্ট ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং আর্দ্রতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটা একেবারে স্বাভাবিক, সুস্থ, কোমল ত্বকের জন্য সর্বজনীন ট্রেন্ডের মধ্যে আগামী বছরেও থাকবে।

ফার্ম-টু-ফেস উপাদান

সৌন্দর্য ধরে রাখতে কিংবা বাড়াতে বিভিন্ন পণ্য ব্যবহার করা হয়। বৈজ্ঞানিক শব্দ দেখে অনেকে অনেক পণ্যের প্রতি আকৃষ্ট হন।

কিন্তু সঠিক তথ্য না জেনে, ব্যবহার ও গুণাবলি না বুঝে পণ্যগুলো ব্যবহার করা একেবারেই উচিত নয়। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই বিবেচনায় রাখতে হবে এর পরবর্তী সময়ের প্রভাবের কথা।

অন্যদিকে প্রাকৃতিক স্কিনকেয়ার সৌন্দর্য এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার একটি ট্রেন্ড এরই মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বলা চলে, প্রাকৃতিক পদ্ধতির এ চর্চা মানুষের কাছে থেকে গেছে ‘নানি-দাদি কিংবা মায়ের টোটকা’ হিসেবে। এই উপাদানগুলোর মধ্যে এমন অনেক শক্তিশালী উপাদান রয়েছে, যেগুলো আমরা এরই মধ্যে জানা হয়েছে এবং ভালোবাসি।

২০২৫ সালে রান্নাঘরের বিভিন্ন উপাদান আরও বেশি করে আমাদের বিউটি ক্যাবিনেটে যুক্ত হতে চলেছে। এই উপাদানগুলো শক্তিশালী পুষ্টি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরা, যা ত্বকে পুষ্টি দেয় এবং রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। ত্বকের যত্নে হলুদ, ডাবের পানি, গোলাপজল ইত্যাদি ব্যবহার করার চল বহু প্রাচীন। এগুলোর রয়েছে ত্বক উজ্জ্বল এবং মসৃণ করার অপার ক্ষমতা। এই উপাদানগুলো ত্বক পুষ্ট ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে।

ত্বক ও চুলের মাস্ক

গত বছর মাস্কিংয়ের প্রতি মানুষের আকর্ষণ দেখা গেছে। শুধু স্কিনকেয়ারেই নয়, হেয়ারকেয়ারেও মানুষ মাস্ক ব্যবহার শুরু করেছে। এটি সোশ্যাল মিডিয়ায় সৌন্দর্যপ্রেমীদের মধ্যে একটি দারুণ আলোচনার বিষয় ছিল। ২০২৫ সালেও স্কিনকেয়ার ট্রেন্ডগুলোয় মাস্ক অন্তর্ভুক্ত থাকবে। রাতের মাস্ক সম্পর্কে ভোগ ম্যাগাজিনে ড. কনির ওয়াং বলেছেন, এগুলো বিশেষভাবে সাহায্য করে স্কিনকেয়ারের উপাদানগুলোর শোষণ এবং ত্বকে সেগুলোর কার্যকারিতা বাড়াতে। তবে এই মাস্কগুলো ব্যবহারের সময় মাথায় রাখতে হবে, সেগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না। এ ছাড়া অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে, ব্যবহৃত মাস্কটি আপনার ত্বকের ধরনের সঙ্গে উপযুক্ত কি না। বিশেষজ্ঞরা বলেন, হাইড্রেটিং মাস্কগুলো প্রতিদিন ব্যবহার করা যেতে পারে, বিশেষত শীতকালে যখন ত্বক শুষ্ক থাকে। এক্সফোলিয়েটিং বা অ্যান্টি-এজিং মাস্কগুলো সপ্তাহে ১ থেকে ২ বারের বেশি ব্যবহার করা কোনোভাবেই উচিত নয়। কারণ, ত্বকের সহনশীলতা ও সংবেদনশীলতার ওপর নির্ভর করে এগুলোর ব্যবহার।

মডেল তিথি, ছবি: মজ্ঞু আলম
মডেল তিথি, ছবি: মজ্ঞু আলম

সৌন্দর্য রক্ষায় মনোজাগতিক সৌন্দর্য

২০২৫ সালে স্কিনকেয়ার রুটিনে একটি ওয়েলনেস মেকওভার আসছে। সুইডিশ ডার্মাটোলজিস্ট লিনিয়া ওয়াগনাস বলছেন, স্কিনকেয়ার এখন ক্রমবর্ধমানভাবে সামগ্রিক ওয়েলনেসের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। এটি শুধু ত্বকের স্বাস্থ্য নয়, মানসিক সুস্থতার কথাও বলে।

যেমন অ্যারোমাথেরাপি ক্রিম, লিম্ফেটিক ড্রেনেজ টুলস এবং মাইন্ডফুলনেস-ওরিয়েন্টেড স্কিনকেয়ার রুটিনগুলো আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই ট্রেন্ড তাদের জন্য পারফেক্ট, যারা তাদের সকালের রুটিনে মাইন্ডফুলনেস কিংবা প্রাণোচ্ছলতা যুক্ত করতে চায়। স্কিনকেয়ার পণ্যগুলো তাদের গন্ধ, উপাদান এবং টেক্সচারের

মধ্য দিয়ে মানসিক সুস্থতা উন্নত করতে তৈরি হয়। এই পণ্যগুলো প্রশান্তিদায়ক ফরমুলেশন এবং এমন উপাদান, যা ত্বকে স্ট্রেস হরমোনগুলো সক্রিয়ভাবে কমিয়ে দেবে। যারা প্রতিদিনের চাপের সঙ্গে লড়াই করছে, এই ট্রেন্ড তাদের জন্য উপযুক্ত; বিশেষ করে যারা মানসিক কারণে স্ট্রেস, বার্ন আউট কিংবা ত্বকের সংবেদনশীলতা নিয়ে সমস্যায় আছে।

সূত্র: ভোগ ম্যাগাজিন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত