
মাইকেল মধুসূদন দত্তকে বিবেচনা করা হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি ও নাট্যকার হিসেবে। বাংলা ভাষায় সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতা ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক তিনি। বাংলা সাহিত্যে পাশ্চাত্যের ভাবধারা সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন মধুসূদন। ১৮২৪ সালের আজকের দিনে জন্ম নেন তিনি।
যশোর জেলার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম। বাবা রাজনারায়ণ দত্ত ছিলেন কলকাতার প্রতিষ্ঠিত উকিল। মায়ের নাম জাহ্নবী দেবী। প্রথমে মধুসূদন সাগরদাঁড়ির পাঠশালায় পড়াশোনা করেন। পরে কলকাতায় খিদিরপুর স্কুলে পড়েন। ১৮৩৩ সালে হিন্দু কলেজে (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি হন। সেখানে বাংলা, সংস্কৃত ও ফারসি ভাষা শেখেন।
মেধাবী ছাত্র মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন ডি এল রিচার্ডসনের প্রিয় ছাত্র হয়ে ওঠেন। রিচার্ডসন মধুসূদনের মনে কাব্যের প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তোলায় ভূমিকা রাখেন। কলেজে তাঁর সহপাঠী ছিলেন ভূদেব মুখোপাধ্যায়, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, রাজনারায়ণ বসু, গৌরদাস বসাক প্রমুখ, যাঁরা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যেই মধুসূদন নিজের আলাদা একটি অবস্থান তৈরি করে নিয়েছিলেন। কলেজের পরীক্ষায় বরাবর বৃত্তি পেতেন। এ সময় নারী শিক্ষা বিষয়ে প্রবন্ধ রচনা করে স্বর্ণপদক পান।
হিন্দু কলেজে পড়ার সময় মধুসূদন কাব্যচর্চা শুরু করেন। তখন তাঁর কবিতা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হতো। এ সময় থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখতেন বিলেতে (ইংল্যান্ড) যাওয়ার। তাঁর ধারণা ছিল সেখানে গেলে বড় কবি হওয়া যাবে। ১৮৪৩ সালে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেন এবং নামের আগে ‘মাইকেল’ শব্দটি যোগ করেন। হিন্দু কলেজে খ্রিষ্টানরা পড়ালেখা করতে না পারায় মধুসূদনকে কলেজ ছাড়তে হয়। ১৮৪৪ সালে তিনি বিশপস কলেজে ভর্তি হন। ইংরেজি ছাড়াও গ্রিক, ল্যাটিন ও সংস্কৃত ভাষা শেখার সুযোগ পান বিশপস কলেজে।
এ সময় ধর্মান্তরের কারণে মধুসূদন আত্মীয়স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। বাবাও অর্থ পাঠানো বন্ধ করে দেন। তখন বিশপস কলেজের মাদ্রাজি বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ্যান্বেষণে মাদ্রাজে (এখনকার চেন্নাই) চলে যান। এটি ১৮৪৮ সালের ঘটনা। সেখানে তিনি দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেন। প্রথমে মাদ্রাজ মেইল অরফ্যান অ্যাসাইলাম স্কুলে এবং পরে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি হাইস্কুলে।
মাদ্রাজের সঙ্গে মধুসূদনের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা জড়িয়ে আছে। এখানেই তিনি সাংবাদিক ও কবি হিসেবে পরিচিতি পান। মাদ্রাজ সার্কুলেটর, হিন্দু ক্রনিকলসসহ বিভিন্ন পত্রিকা সম্পাদনা করেন। বেশ কয়েক বছর মাদ্রাজ স্পেক্টেটরের সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৪৮ সালে টিমোথি পেনপয়েম ছদ্মনামে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘দ্য কেপ্টিভ লেডি’ প্রকাশিত হয়।
মাদ্রাজেই মধুসূদন রেবেকা ম্যাকটিভিস নামে এক ইংরেজ নারীকে বিয়ে করেন। আট বছর স্থায়ী হয়েছিল তাঁদের সংসার। রেবেকার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মধুসূদন এমিলিয়া হেনরিয়েটা সোফিয়া নামে এক ফরাসি তরুণীকে বিয়ে করেন।
এর মধ্যে মধুসূদনের মা ও বাবার মৃত্যু হয়। বাবার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে হেনরিয়েটাকে নিয়ে ১৮৫৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলকাতায় আসেন। সেখানে তিনি পুলিশ কোর্টের কেরানি এবং পরে দোভাষীর কাজ করেন। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রবন্ধ লিখেও কিছু আয় করেন। বন্ধুবান্ধব এ সময় বাংলায় সাহিত্যচর্চা করতে উৎসাহ দেন মধুসূদনকে। নিজের মধ্যও একটি তাগিদ অনুভব করছিলেন। বাংলা সাহিত্যে উপযুক্ত নাটকের অভাব অনুভব করেন তিনি। একপর্যায়ে কলকাতার পাইকপাড়ার রাজাদের বেলগাছিয়া থিয়েটারের সঙ্গে জড়িত হন। তার পরই বলা চলে নাট্যকার হিসেবেই বাংলা সাহিত্যাঙ্গনে পদার্পণ হয় মধুসূদনের। মহাভারতের কাহিনি অবলম্বনে ১৮৫৮ সালে পাশ্চাত্য রীতিতে রচনা করেন নাটক ‘শর্মিষ্ঠা’। একে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম সার্থক ও আধুনিক মৌলিক নাটক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
পরের বছর মধুসূদন রচনা করেন দুটি প্রহসন। ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ ও ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’। কাহিনি, সংলাপ ও চরিত্র সৃষ্টির দিক থেকে এগুলো ছিল অনন্য। মধুসূদনের রচনাগুলোর নতুনত্ব সবার নজর কাড়ে। পাশ্চাত্য সাহিত্যের আদর্শ বাংলা সাহিত্যে প্রথম সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন তিনি।
১৮৬০ সালে গ্রিক পুরাণের কাহিনি অবলম্বনে রচনা করেন ‘পদ্মাবতী’ নাটক। এ নাটকে ইংরেজি কাব্যের অনুকরণে অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন। বাংলা কাব্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের ব্যবহার এই প্রথম। এর মাধ্যমে বাংলা কাব্যকে ছন্দের বন্ধন থেকে মুক্তি দেন। অমিত্রাক্ষর ছন্দে সে বছরই রচনা করেন ‘তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য’। পরের বছর ১৮৬১ সালে রামায়ণের কাহিনি নিয়ে একই ছন্দে লেখেন ‘মেঘনাদবধ কাব্য’। এটি বাংলা ভাষায় প্রথম মৌলিক মহাকাব্য। এই কাব্যের মাধ্যমেই মহাকবির মর্যাদা পান। তাঁর অমিত্রাক্ষর ছন্দও বাংলা সাহিত্যে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
মধুসূদনের কাব্যে নারী বিদ্রোহের সুর চোখে পড়ে। তাঁর ‘বীরাঙ্গনা’ (১৮৬২) পত্রকাব্যের নায়িকাদের দিকে তাকালে বিষয়টি পরিষ্কার হয়। পরবর্তী সময়ে মধুসূদন দীনবন্ধু মিত্রের নীল দর্পণ নাটকটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। ১৮৬২ সালে ব্যারিস্টারি পড়তে ইংল্যান্ডে যান। সেখান থেকে ১৮৬৩ সালে প্যারিস হয়ে ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে যান। সেখানে থাকার সময় ইতালীয় কবি পেত্রার্কের অনুকরণে বাংলায় সনেট লিখতে শুরু করেন। এর আগে বাংলা ভাষায় সনেটের প্রচলন ছিল না। ভার্সাই নগরীতে থাকার সময় নিজের দেশ ও মাতৃভাষাকে নতুনভাবে দেখতে ও বুঝতে পারেন। যার প্রকাশ ঘটে তাঁর ‘বঙ্গভাষা’, ‘কপোতাক্ষ নদে’র মতো সনেটে। এই সনেটগুলো প্রকাশিত হয় ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ নামে।
১৮৬৫ সালে পুনরায় ইংল্যান্ডে যান এবং ব্যারিস্টারি পাস করেন। ১৮৬৭ সালে দেশে ফিরে কলকাতা হাইকোর্টে আইন পেশায় যোগ দেন। ওকালতিতে সুবিধা করতে না পেরে ১৮৭০ সালে হাইকোর্টের অনুবাদ বিভাগে যোগ দেন। দুই বছর পর এ চাকরি ছেড়ে পুনরায় ওকালতি শুরু করেন। এবার সফলতা পেলেও অমিতব্যয়িতার কারণে ঋণে জড়ান।
তবে এই সবকিছুর মধ্যেও মধুসূদন কাব্যচর্চা চালিয়ে যান। হোমারের ইলিয়াড অবলম্বনে ১৮৭১ সালে রচনা করেন ‘হেক্টরবধ’। তাঁর শেষ রচনা ‘মায়াকানন’ (১৮৭৩) নামের একটি নাটক।
জীবনের শেষ দিনগুলো মোটেই ভালো কাটেনি মাইকেল মধুসূদনের। ঋণ, অর্থাভাব, অসুস্থতা, চিকিৎসাহীনতা—সবকিছু মিলিয়ে কঠিন সময় পার করেন। স্ত্রী হেনরিয়েটার মৃত্যুর কয়েক দিন পর ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন কপর্দকহীন অবস্থায় আলিপুর জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন বাংলা সাহিত্যে ‘মধুকবি’ নামে পরিচিত মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
সূত্র. বাংলাপিডিয়া, উইকিপিডিয়া।

মাইকেল মধুসূদন দত্তকে বিবেচনা করা হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি ও নাট্যকার হিসেবে। বাংলা ভাষায় সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতা ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক তিনি। বাংলা সাহিত্যে পাশ্চাত্যের ভাবধারা সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন মধুসূদন। ১৮২৪ সালের আজকের দিনে জন্ম নেন তিনি।
যশোর জেলার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম। বাবা রাজনারায়ণ দত্ত ছিলেন কলকাতার প্রতিষ্ঠিত উকিল। মায়ের নাম জাহ্নবী দেবী। প্রথমে মধুসূদন সাগরদাঁড়ির পাঠশালায় পড়াশোনা করেন। পরে কলকাতায় খিদিরপুর স্কুলে পড়েন। ১৮৩৩ সালে হিন্দু কলেজে (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি হন। সেখানে বাংলা, সংস্কৃত ও ফারসি ভাষা শেখেন।
মেধাবী ছাত্র মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন ডি এল রিচার্ডসনের প্রিয় ছাত্র হয়ে ওঠেন। রিচার্ডসন মধুসূদনের মনে কাব্যের প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তোলায় ভূমিকা রাখেন। কলেজে তাঁর সহপাঠী ছিলেন ভূদেব মুখোপাধ্যায়, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, রাজনারায়ণ বসু, গৌরদাস বসাক প্রমুখ, যাঁরা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যেই মধুসূদন নিজের আলাদা একটি অবস্থান তৈরি করে নিয়েছিলেন। কলেজের পরীক্ষায় বরাবর বৃত্তি পেতেন। এ সময় নারী শিক্ষা বিষয়ে প্রবন্ধ রচনা করে স্বর্ণপদক পান।
হিন্দু কলেজে পড়ার সময় মধুসূদন কাব্যচর্চা শুরু করেন। তখন তাঁর কবিতা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হতো। এ সময় থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখতেন বিলেতে (ইংল্যান্ড) যাওয়ার। তাঁর ধারণা ছিল সেখানে গেলে বড় কবি হওয়া যাবে। ১৮৪৩ সালে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেন এবং নামের আগে ‘মাইকেল’ শব্দটি যোগ করেন। হিন্দু কলেজে খ্রিষ্টানরা পড়ালেখা করতে না পারায় মধুসূদনকে কলেজ ছাড়তে হয়। ১৮৪৪ সালে তিনি বিশপস কলেজে ভর্তি হন। ইংরেজি ছাড়াও গ্রিক, ল্যাটিন ও সংস্কৃত ভাষা শেখার সুযোগ পান বিশপস কলেজে।
এ সময় ধর্মান্তরের কারণে মধুসূদন আত্মীয়স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। বাবাও অর্থ পাঠানো বন্ধ করে দেন। তখন বিশপস কলেজের মাদ্রাজি বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ্যান্বেষণে মাদ্রাজে (এখনকার চেন্নাই) চলে যান। এটি ১৮৪৮ সালের ঘটনা। সেখানে তিনি দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেন। প্রথমে মাদ্রাজ মেইল অরফ্যান অ্যাসাইলাম স্কুলে এবং পরে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি হাইস্কুলে।
মাদ্রাজের সঙ্গে মধুসূদনের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা জড়িয়ে আছে। এখানেই তিনি সাংবাদিক ও কবি হিসেবে পরিচিতি পান। মাদ্রাজ সার্কুলেটর, হিন্দু ক্রনিকলসসহ বিভিন্ন পত্রিকা সম্পাদনা করেন। বেশ কয়েক বছর মাদ্রাজ স্পেক্টেটরের সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৪৮ সালে টিমোথি পেনপয়েম ছদ্মনামে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘দ্য কেপ্টিভ লেডি’ প্রকাশিত হয়।
মাদ্রাজেই মধুসূদন রেবেকা ম্যাকটিভিস নামে এক ইংরেজ নারীকে বিয়ে করেন। আট বছর স্থায়ী হয়েছিল তাঁদের সংসার। রেবেকার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মধুসূদন এমিলিয়া হেনরিয়েটা সোফিয়া নামে এক ফরাসি তরুণীকে বিয়ে করেন।
এর মধ্যে মধুসূদনের মা ও বাবার মৃত্যু হয়। বাবার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে হেনরিয়েটাকে নিয়ে ১৮৫৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলকাতায় আসেন। সেখানে তিনি পুলিশ কোর্টের কেরানি এবং পরে দোভাষীর কাজ করেন। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রবন্ধ লিখেও কিছু আয় করেন। বন্ধুবান্ধব এ সময় বাংলায় সাহিত্যচর্চা করতে উৎসাহ দেন মধুসূদনকে। নিজের মধ্যও একটি তাগিদ অনুভব করছিলেন। বাংলা সাহিত্যে উপযুক্ত নাটকের অভাব অনুভব করেন তিনি। একপর্যায়ে কলকাতার পাইকপাড়ার রাজাদের বেলগাছিয়া থিয়েটারের সঙ্গে জড়িত হন। তার পরই বলা চলে নাট্যকার হিসেবেই বাংলা সাহিত্যাঙ্গনে পদার্পণ হয় মধুসূদনের। মহাভারতের কাহিনি অবলম্বনে ১৮৫৮ সালে পাশ্চাত্য রীতিতে রচনা করেন নাটক ‘শর্মিষ্ঠা’। একে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম সার্থক ও আধুনিক মৌলিক নাটক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
পরের বছর মধুসূদন রচনা করেন দুটি প্রহসন। ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ ও ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’। কাহিনি, সংলাপ ও চরিত্র সৃষ্টির দিক থেকে এগুলো ছিল অনন্য। মধুসূদনের রচনাগুলোর নতুনত্ব সবার নজর কাড়ে। পাশ্চাত্য সাহিত্যের আদর্শ বাংলা সাহিত্যে প্রথম সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন তিনি।
১৮৬০ সালে গ্রিক পুরাণের কাহিনি অবলম্বনে রচনা করেন ‘পদ্মাবতী’ নাটক। এ নাটকে ইংরেজি কাব্যের অনুকরণে অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন। বাংলা কাব্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের ব্যবহার এই প্রথম। এর মাধ্যমে বাংলা কাব্যকে ছন্দের বন্ধন থেকে মুক্তি দেন। অমিত্রাক্ষর ছন্দে সে বছরই রচনা করেন ‘তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য’। পরের বছর ১৮৬১ সালে রামায়ণের কাহিনি নিয়ে একই ছন্দে লেখেন ‘মেঘনাদবধ কাব্য’। এটি বাংলা ভাষায় প্রথম মৌলিক মহাকাব্য। এই কাব্যের মাধ্যমেই মহাকবির মর্যাদা পান। তাঁর অমিত্রাক্ষর ছন্দও বাংলা সাহিত্যে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
মধুসূদনের কাব্যে নারী বিদ্রোহের সুর চোখে পড়ে। তাঁর ‘বীরাঙ্গনা’ (১৮৬২) পত্রকাব্যের নায়িকাদের দিকে তাকালে বিষয়টি পরিষ্কার হয়। পরবর্তী সময়ে মধুসূদন দীনবন্ধু মিত্রের নীল দর্পণ নাটকটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। ১৮৬২ সালে ব্যারিস্টারি পড়তে ইংল্যান্ডে যান। সেখান থেকে ১৮৬৩ সালে প্যারিস হয়ে ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে যান। সেখানে থাকার সময় ইতালীয় কবি পেত্রার্কের অনুকরণে বাংলায় সনেট লিখতে শুরু করেন। এর আগে বাংলা ভাষায় সনেটের প্রচলন ছিল না। ভার্সাই নগরীতে থাকার সময় নিজের দেশ ও মাতৃভাষাকে নতুনভাবে দেখতে ও বুঝতে পারেন। যার প্রকাশ ঘটে তাঁর ‘বঙ্গভাষা’, ‘কপোতাক্ষ নদে’র মতো সনেটে। এই সনেটগুলো প্রকাশিত হয় ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ নামে।
১৮৬৫ সালে পুনরায় ইংল্যান্ডে যান এবং ব্যারিস্টারি পাস করেন। ১৮৬৭ সালে দেশে ফিরে কলকাতা হাইকোর্টে আইন পেশায় যোগ দেন। ওকালতিতে সুবিধা করতে না পেরে ১৮৭০ সালে হাইকোর্টের অনুবাদ বিভাগে যোগ দেন। দুই বছর পর এ চাকরি ছেড়ে পুনরায় ওকালতি শুরু করেন। এবার সফলতা পেলেও অমিতব্যয়িতার কারণে ঋণে জড়ান।
তবে এই সবকিছুর মধ্যেও মধুসূদন কাব্যচর্চা চালিয়ে যান। হোমারের ইলিয়াড অবলম্বনে ১৮৭১ সালে রচনা করেন ‘হেক্টরবধ’। তাঁর শেষ রচনা ‘মায়াকানন’ (১৮৭৩) নামের একটি নাটক।
জীবনের শেষ দিনগুলো মোটেই ভালো কাটেনি মাইকেল মধুসূদনের। ঋণ, অর্থাভাব, অসুস্থতা, চিকিৎসাহীনতা—সবকিছু মিলিয়ে কঠিন সময় পার করেন। স্ত্রী হেনরিয়েটার মৃত্যুর কয়েক দিন পর ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন কপর্দকহীন অবস্থায় আলিপুর জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন বাংলা সাহিত্যে ‘মধুকবি’ নামে পরিচিত মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
সূত্র. বাংলাপিডিয়া, উইকিপিডিয়া।

মাইকেল মধুসূদন দত্তকে বিবেচনা করা হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি ও নাট্যকার হিসেবে। বাংলা ভাষায় সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতা ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক তিনি। বাংলা সাহিত্যে পাশ্চাত্যের ভাবধারা সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন মধুসূদন। ১৮২৪ সালের আজকের দিনে জন্ম নেন তিনি।
যশোর জেলার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম। বাবা রাজনারায়ণ দত্ত ছিলেন কলকাতার প্রতিষ্ঠিত উকিল। মায়ের নাম জাহ্নবী দেবী। প্রথমে মধুসূদন সাগরদাঁড়ির পাঠশালায় পড়াশোনা করেন। পরে কলকাতায় খিদিরপুর স্কুলে পড়েন। ১৮৩৩ সালে হিন্দু কলেজে (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি হন। সেখানে বাংলা, সংস্কৃত ও ফারসি ভাষা শেখেন।
মেধাবী ছাত্র মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন ডি এল রিচার্ডসনের প্রিয় ছাত্র হয়ে ওঠেন। রিচার্ডসন মধুসূদনের মনে কাব্যের প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তোলায় ভূমিকা রাখেন। কলেজে তাঁর সহপাঠী ছিলেন ভূদেব মুখোপাধ্যায়, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, রাজনারায়ণ বসু, গৌরদাস বসাক প্রমুখ, যাঁরা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যেই মধুসূদন নিজের আলাদা একটি অবস্থান তৈরি করে নিয়েছিলেন। কলেজের পরীক্ষায় বরাবর বৃত্তি পেতেন। এ সময় নারী শিক্ষা বিষয়ে প্রবন্ধ রচনা করে স্বর্ণপদক পান।
হিন্দু কলেজে পড়ার সময় মধুসূদন কাব্যচর্চা শুরু করেন। তখন তাঁর কবিতা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হতো। এ সময় থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখতেন বিলেতে (ইংল্যান্ড) যাওয়ার। তাঁর ধারণা ছিল সেখানে গেলে বড় কবি হওয়া যাবে। ১৮৪৩ সালে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেন এবং নামের আগে ‘মাইকেল’ শব্দটি যোগ করেন। হিন্দু কলেজে খ্রিষ্টানরা পড়ালেখা করতে না পারায় মধুসূদনকে কলেজ ছাড়তে হয়। ১৮৪৪ সালে তিনি বিশপস কলেজে ভর্তি হন। ইংরেজি ছাড়াও গ্রিক, ল্যাটিন ও সংস্কৃত ভাষা শেখার সুযোগ পান বিশপস কলেজে।
এ সময় ধর্মান্তরের কারণে মধুসূদন আত্মীয়স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। বাবাও অর্থ পাঠানো বন্ধ করে দেন। তখন বিশপস কলেজের মাদ্রাজি বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ্যান্বেষণে মাদ্রাজে (এখনকার চেন্নাই) চলে যান। এটি ১৮৪৮ সালের ঘটনা। সেখানে তিনি দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেন। প্রথমে মাদ্রাজ মেইল অরফ্যান অ্যাসাইলাম স্কুলে এবং পরে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি হাইস্কুলে।
মাদ্রাজের সঙ্গে মধুসূদনের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা জড়িয়ে আছে। এখানেই তিনি সাংবাদিক ও কবি হিসেবে পরিচিতি পান। মাদ্রাজ সার্কুলেটর, হিন্দু ক্রনিকলসসহ বিভিন্ন পত্রিকা সম্পাদনা করেন। বেশ কয়েক বছর মাদ্রাজ স্পেক্টেটরের সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৪৮ সালে টিমোথি পেনপয়েম ছদ্মনামে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘দ্য কেপ্টিভ লেডি’ প্রকাশিত হয়।
মাদ্রাজেই মধুসূদন রেবেকা ম্যাকটিভিস নামে এক ইংরেজ নারীকে বিয়ে করেন। আট বছর স্থায়ী হয়েছিল তাঁদের সংসার। রেবেকার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মধুসূদন এমিলিয়া হেনরিয়েটা সোফিয়া নামে এক ফরাসি তরুণীকে বিয়ে করেন।
এর মধ্যে মধুসূদনের মা ও বাবার মৃত্যু হয়। বাবার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে হেনরিয়েটাকে নিয়ে ১৮৫৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলকাতায় আসেন। সেখানে তিনি পুলিশ কোর্টের কেরানি এবং পরে দোভাষীর কাজ করেন। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রবন্ধ লিখেও কিছু আয় করেন। বন্ধুবান্ধব এ সময় বাংলায় সাহিত্যচর্চা করতে উৎসাহ দেন মধুসূদনকে। নিজের মধ্যও একটি তাগিদ অনুভব করছিলেন। বাংলা সাহিত্যে উপযুক্ত নাটকের অভাব অনুভব করেন তিনি। একপর্যায়ে কলকাতার পাইকপাড়ার রাজাদের বেলগাছিয়া থিয়েটারের সঙ্গে জড়িত হন। তার পরই বলা চলে নাট্যকার হিসেবেই বাংলা সাহিত্যাঙ্গনে পদার্পণ হয় মধুসূদনের। মহাভারতের কাহিনি অবলম্বনে ১৮৫৮ সালে পাশ্চাত্য রীতিতে রচনা করেন নাটক ‘শর্মিষ্ঠা’। একে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম সার্থক ও আধুনিক মৌলিক নাটক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
পরের বছর মধুসূদন রচনা করেন দুটি প্রহসন। ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ ও ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’। কাহিনি, সংলাপ ও চরিত্র সৃষ্টির দিক থেকে এগুলো ছিল অনন্য। মধুসূদনের রচনাগুলোর নতুনত্ব সবার নজর কাড়ে। পাশ্চাত্য সাহিত্যের আদর্শ বাংলা সাহিত্যে প্রথম সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন তিনি।
১৮৬০ সালে গ্রিক পুরাণের কাহিনি অবলম্বনে রচনা করেন ‘পদ্মাবতী’ নাটক। এ নাটকে ইংরেজি কাব্যের অনুকরণে অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন। বাংলা কাব্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের ব্যবহার এই প্রথম। এর মাধ্যমে বাংলা কাব্যকে ছন্দের বন্ধন থেকে মুক্তি দেন। অমিত্রাক্ষর ছন্দে সে বছরই রচনা করেন ‘তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য’। পরের বছর ১৮৬১ সালে রামায়ণের কাহিনি নিয়ে একই ছন্দে লেখেন ‘মেঘনাদবধ কাব্য’। এটি বাংলা ভাষায় প্রথম মৌলিক মহাকাব্য। এই কাব্যের মাধ্যমেই মহাকবির মর্যাদা পান। তাঁর অমিত্রাক্ষর ছন্দও বাংলা সাহিত্যে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
মধুসূদনের কাব্যে নারী বিদ্রোহের সুর চোখে পড়ে। তাঁর ‘বীরাঙ্গনা’ (১৮৬২) পত্রকাব্যের নায়িকাদের দিকে তাকালে বিষয়টি পরিষ্কার হয়। পরবর্তী সময়ে মধুসূদন দীনবন্ধু মিত্রের নীল দর্পণ নাটকটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। ১৮৬২ সালে ব্যারিস্টারি পড়তে ইংল্যান্ডে যান। সেখান থেকে ১৮৬৩ সালে প্যারিস হয়ে ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে যান। সেখানে থাকার সময় ইতালীয় কবি পেত্রার্কের অনুকরণে বাংলায় সনেট লিখতে শুরু করেন। এর আগে বাংলা ভাষায় সনেটের প্রচলন ছিল না। ভার্সাই নগরীতে থাকার সময় নিজের দেশ ও মাতৃভাষাকে নতুনভাবে দেখতে ও বুঝতে পারেন। যার প্রকাশ ঘটে তাঁর ‘বঙ্গভাষা’, ‘কপোতাক্ষ নদে’র মতো সনেটে। এই সনেটগুলো প্রকাশিত হয় ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ নামে।
১৮৬৫ সালে পুনরায় ইংল্যান্ডে যান এবং ব্যারিস্টারি পাস করেন। ১৮৬৭ সালে দেশে ফিরে কলকাতা হাইকোর্টে আইন পেশায় যোগ দেন। ওকালতিতে সুবিধা করতে না পেরে ১৮৭০ সালে হাইকোর্টের অনুবাদ বিভাগে যোগ দেন। দুই বছর পর এ চাকরি ছেড়ে পুনরায় ওকালতি শুরু করেন। এবার সফলতা পেলেও অমিতব্যয়িতার কারণে ঋণে জড়ান।
তবে এই সবকিছুর মধ্যেও মধুসূদন কাব্যচর্চা চালিয়ে যান। হোমারের ইলিয়াড অবলম্বনে ১৮৭১ সালে রচনা করেন ‘হেক্টরবধ’। তাঁর শেষ রচনা ‘মায়াকানন’ (১৮৭৩) নামের একটি নাটক।
জীবনের শেষ দিনগুলো মোটেই ভালো কাটেনি মাইকেল মধুসূদনের। ঋণ, অর্থাভাব, অসুস্থতা, চিকিৎসাহীনতা—সবকিছু মিলিয়ে কঠিন সময় পার করেন। স্ত্রী হেনরিয়েটার মৃত্যুর কয়েক দিন পর ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন কপর্দকহীন অবস্থায় আলিপুর জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন বাংলা সাহিত্যে ‘মধুকবি’ নামে পরিচিত মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
সূত্র. বাংলাপিডিয়া, উইকিপিডিয়া।

মাইকেল মধুসূদন দত্তকে বিবেচনা করা হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি ও নাট্যকার হিসেবে। বাংলা ভাষায় সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতা ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক তিনি। বাংলা সাহিত্যে পাশ্চাত্যের ভাবধারা সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন মধুসূদন। ১৮২৪ সালের আজকের দিনে জন্ম নেন তিনি।
যশোর জেলার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম। বাবা রাজনারায়ণ দত্ত ছিলেন কলকাতার প্রতিষ্ঠিত উকিল। মায়ের নাম জাহ্নবী দেবী। প্রথমে মধুসূদন সাগরদাঁড়ির পাঠশালায় পড়াশোনা করেন। পরে কলকাতায় খিদিরপুর স্কুলে পড়েন। ১৮৩৩ সালে হিন্দু কলেজে (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি হন। সেখানে বাংলা, সংস্কৃত ও ফারসি ভাষা শেখেন।
মেধাবী ছাত্র মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন ডি এল রিচার্ডসনের প্রিয় ছাত্র হয়ে ওঠেন। রিচার্ডসন মধুসূদনের মনে কাব্যের প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তোলায় ভূমিকা রাখেন। কলেজে তাঁর সহপাঠী ছিলেন ভূদেব মুখোপাধ্যায়, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, রাজনারায়ণ বসু, গৌরদাস বসাক প্রমুখ, যাঁরা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যেই মধুসূদন নিজের আলাদা একটি অবস্থান তৈরি করে নিয়েছিলেন। কলেজের পরীক্ষায় বরাবর বৃত্তি পেতেন। এ সময় নারী শিক্ষা বিষয়ে প্রবন্ধ রচনা করে স্বর্ণপদক পান।
হিন্দু কলেজে পড়ার সময় মধুসূদন কাব্যচর্চা শুরু করেন। তখন তাঁর কবিতা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হতো। এ সময় থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখতেন বিলেতে (ইংল্যান্ড) যাওয়ার। তাঁর ধারণা ছিল সেখানে গেলে বড় কবি হওয়া যাবে। ১৮৪৩ সালে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেন এবং নামের আগে ‘মাইকেল’ শব্দটি যোগ করেন। হিন্দু কলেজে খ্রিষ্টানরা পড়ালেখা করতে না পারায় মধুসূদনকে কলেজ ছাড়তে হয়। ১৮৪৪ সালে তিনি বিশপস কলেজে ভর্তি হন। ইংরেজি ছাড়াও গ্রিক, ল্যাটিন ও সংস্কৃত ভাষা শেখার সুযোগ পান বিশপস কলেজে।
এ সময় ধর্মান্তরের কারণে মধুসূদন আত্মীয়স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। বাবাও অর্থ পাঠানো বন্ধ করে দেন। তখন বিশপস কলেজের মাদ্রাজি বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ্যান্বেষণে মাদ্রাজে (এখনকার চেন্নাই) চলে যান। এটি ১৮৪৮ সালের ঘটনা। সেখানে তিনি দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেন। প্রথমে মাদ্রাজ মেইল অরফ্যান অ্যাসাইলাম স্কুলে এবং পরে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি হাইস্কুলে।
মাদ্রাজের সঙ্গে মধুসূদনের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা জড়িয়ে আছে। এখানেই তিনি সাংবাদিক ও কবি হিসেবে পরিচিতি পান। মাদ্রাজ সার্কুলেটর, হিন্দু ক্রনিকলসসহ বিভিন্ন পত্রিকা সম্পাদনা করেন। বেশ কয়েক বছর মাদ্রাজ স্পেক্টেটরের সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৪৮ সালে টিমোথি পেনপয়েম ছদ্মনামে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘দ্য কেপ্টিভ লেডি’ প্রকাশিত হয়।
মাদ্রাজেই মধুসূদন রেবেকা ম্যাকটিভিস নামে এক ইংরেজ নারীকে বিয়ে করেন। আট বছর স্থায়ী হয়েছিল তাঁদের সংসার। রেবেকার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মধুসূদন এমিলিয়া হেনরিয়েটা সোফিয়া নামে এক ফরাসি তরুণীকে বিয়ে করেন।
এর মধ্যে মধুসূদনের মা ও বাবার মৃত্যু হয়। বাবার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে হেনরিয়েটাকে নিয়ে ১৮৫৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলকাতায় আসেন। সেখানে তিনি পুলিশ কোর্টের কেরানি এবং পরে দোভাষীর কাজ করেন। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রবন্ধ লিখেও কিছু আয় করেন। বন্ধুবান্ধব এ সময় বাংলায় সাহিত্যচর্চা করতে উৎসাহ দেন মধুসূদনকে। নিজের মধ্যও একটি তাগিদ অনুভব করছিলেন। বাংলা সাহিত্যে উপযুক্ত নাটকের অভাব অনুভব করেন তিনি। একপর্যায়ে কলকাতার পাইকপাড়ার রাজাদের বেলগাছিয়া থিয়েটারের সঙ্গে জড়িত হন। তার পরই বলা চলে নাট্যকার হিসেবেই বাংলা সাহিত্যাঙ্গনে পদার্পণ হয় মধুসূদনের। মহাভারতের কাহিনি অবলম্বনে ১৮৫৮ সালে পাশ্চাত্য রীতিতে রচনা করেন নাটক ‘শর্মিষ্ঠা’। একে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম সার্থক ও আধুনিক মৌলিক নাটক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
পরের বছর মধুসূদন রচনা করেন দুটি প্রহসন। ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ ও ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’। কাহিনি, সংলাপ ও চরিত্র সৃষ্টির দিক থেকে এগুলো ছিল অনন্য। মধুসূদনের রচনাগুলোর নতুনত্ব সবার নজর কাড়ে। পাশ্চাত্য সাহিত্যের আদর্শ বাংলা সাহিত্যে প্রথম সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন তিনি।
১৮৬০ সালে গ্রিক পুরাণের কাহিনি অবলম্বনে রচনা করেন ‘পদ্মাবতী’ নাটক। এ নাটকে ইংরেজি কাব্যের অনুকরণে অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন। বাংলা কাব্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের ব্যবহার এই প্রথম। এর মাধ্যমে বাংলা কাব্যকে ছন্দের বন্ধন থেকে মুক্তি দেন। অমিত্রাক্ষর ছন্দে সে বছরই রচনা করেন ‘তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য’। পরের বছর ১৮৬১ সালে রামায়ণের কাহিনি নিয়ে একই ছন্দে লেখেন ‘মেঘনাদবধ কাব্য’। এটি বাংলা ভাষায় প্রথম মৌলিক মহাকাব্য। এই কাব্যের মাধ্যমেই মহাকবির মর্যাদা পান। তাঁর অমিত্রাক্ষর ছন্দও বাংলা সাহিত্যে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
মধুসূদনের কাব্যে নারী বিদ্রোহের সুর চোখে পড়ে। তাঁর ‘বীরাঙ্গনা’ (১৮৬২) পত্রকাব্যের নায়িকাদের দিকে তাকালে বিষয়টি পরিষ্কার হয়। পরবর্তী সময়ে মধুসূদন দীনবন্ধু মিত্রের নীল দর্পণ নাটকটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। ১৮৬২ সালে ব্যারিস্টারি পড়তে ইংল্যান্ডে যান। সেখান থেকে ১৮৬৩ সালে প্যারিস হয়ে ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে যান। সেখানে থাকার সময় ইতালীয় কবি পেত্রার্কের অনুকরণে বাংলায় সনেট লিখতে শুরু করেন। এর আগে বাংলা ভাষায় সনেটের প্রচলন ছিল না। ভার্সাই নগরীতে থাকার সময় নিজের দেশ ও মাতৃভাষাকে নতুনভাবে দেখতে ও বুঝতে পারেন। যার প্রকাশ ঘটে তাঁর ‘বঙ্গভাষা’, ‘কপোতাক্ষ নদে’র মতো সনেটে। এই সনেটগুলো প্রকাশিত হয় ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ নামে।
১৮৬৫ সালে পুনরায় ইংল্যান্ডে যান এবং ব্যারিস্টারি পাস করেন। ১৮৬৭ সালে দেশে ফিরে কলকাতা হাইকোর্টে আইন পেশায় যোগ দেন। ওকালতিতে সুবিধা করতে না পেরে ১৮৭০ সালে হাইকোর্টের অনুবাদ বিভাগে যোগ দেন। দুই বছর পর এ চাকরি ছেড়ে পুনরায় ওকালতি শুরু করেন। এবার সফলতা পেলেও অমিতব্যয়িতার কারণে ঋণে জড়ান।
তবে এই সবকিছুর মধ্যেও মধুসূদন কাব্যচর্চা চালিয়ে যান। হোমারের ইলিয়াড অবলম্বনে ১৮৭১ সালে রচনা করেন ‘হেক্টরবধ’। তাঁর শেষ রচনা ‘মায়াকানন’ (১৮৭৩) নামের একটি নাটক।
জীবনের শেষ দিনগুলো মোটেই ভালো কাটেনি মাইকেল মধুসূদনের। ঋণ, অর্থাভাব, অসুস্থতা, চিকিৎসাহীনতা—সবকিছু মিলিয়ে কঠিন সময় পার করেন। স্ত্রী হেনরিয়েটার মৃত্যুর কয়েক দিন পর ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন কপর্দকহীন অবস্থায় আলিপুর জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন বাংলা সাহিত্যে ‘মধুকবি’ নামে পরিচিত মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
সূত্র. বাংলাপিডিয়া, উইকিপিডিয়া।

তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা।
২ ঘণ্টা আগে
এ বছর হেমন্তে শহরেও শীতের আগমন খানিকটা টের পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার বাইরে কিন্তু কোনো কোনো জায়গায় ঠান্ডা পড়ে গেছে। দিনে না হলেও রাতে কম্বল বা কাঁথা গায়ে তুলতে হচ্ছে। তাই সপ্তাহান্তে কদিন আগের মতো ব্যাকপ্যাকে দুটো টি-শার্ট আর দুটো শর্টস নিয়ে বেরিয়ে পড়ার সুযোগ আর থাকছে না।
৪ ঘণ্টা আগে
বস আজ আপনার কাঁধে এমন একটা গুরুদায়িত্ব চাপিয়ে দেবেন, যাকে তিনি 'অভূতপূর্ব সুযোগ' বলে ব্যাখ্যা করবেন। মনে মনে বুঝবেন, এটি আসলে অতিরিক্ত কাজের ভার। তবে মন খারাপ করবেন না, আপনার আর্থিক ভাগ্য আজ বেশ চনমনে।
৪ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনশিল্পের এখন রমরমা চলছে। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়াসহ অনেক দেশের পর্যটনশিল্পের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। ভ্রমণ নিয়ে প্রচারণা, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং ভিসা সহজীকরণের কারণে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান ন্যাশনস (আসিয়ান) দেশগুলোতে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা...
৪ ঘণ্টা আগেরজত কান্তি রায়, ঢাকা

তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা। কুরুলিয়া নদী যেখানে তিতাসের সঙ্গে মিলিত হলো, সেটাই গোকর্ণ গ্রাম তথা এখনকার গোকর্ণ ঘাট—অদ্বৈত মল্লবর্মণের জন্মভিটা। এখন আর বস্তুগত চিহ্ন নেই, আছে স্মৃতি। শোনা গেল, তাঁর দূরসম্পর্কের এক নাতি আছেন সেখানে। আর কেউ নেই। মল্লবাবু বহু আগে তখনকার রাজধানী শহর কলকাতায় চলে গিয়েছিলেন, ভাগ্যের অন্বেষণে। আমরা যেমন এখন দূরদূরান্ত থেকে রাজধানী ঢাকায় এসে ভিড় জমাই।
এখানে নদীর ওপর মস্ত প্রাচীরঘেরা গুদাম। সেটির ছোট ছোট মিনারে বসে আছে তিনটি বালক আর একটি কাক। অদ্বৈত মল্লবর্মণ একদিন সম্ভবত এই বালকদের মতোই ছিলেন—দুরন্ত। অথবা এই বালকেরাই হয়তো তাঁর কিশোর, সুবল, অনন্ত কিংবা বনমালীদের এই প্রজন্মের সংস্করণ।
কেমন ছিল অদ্বৈতের তিতাস? তিনি লিখেছেন, ‘তার কূলজোড়া জল, বুকভরা ঢেউ, প্রাণভরা উচ্ছ্বাস। স্বপ্নের ছন্দে সে বহিয়া যায়। ভোরের হাওয়ায় তার তন্দ্রা ভাঙ্গে, দিনের সূর্য তাকে তাতায়; রাতে চাঁদ ও তাঁরারা তাকে নিয়া ঘুম পাড়াইতে বসে, কিন্তু পারে না।’ বর্ষা থেকে হেমন্ত তিতাস হয়তো তেমনই থাকে। অন্তত হেমন্তের তিতাস দেখে তাই মনে হলো। কিন্তু বছরের বাকি সময় সে যক্ষ্মার রোগী—শুনেছি তার বুকে তখন গরু চরে।
গোকর্ণ ঘাট ছাড়তেই তিতাসের আকার সাগরের মতো! সঙ্গে মিশেছে হাওর। স্থানীয়দের সহায়তা ছাড়া চেনার উপায় নেই—কোনটা হাওর আর কোনটা নদী। এই বিশাল বিস্তারেই বসতি ছিল অদ্বৈত মল্লবর্মণের। নইলে তেমন নভেল লেখা যায়!
আমরা এগিয়ে চলেছি। সূর্য তখনো কুয়াশা আর মেঘের সঙ্গে লড়াই করছে। সকাল আটটাও বাজেনি। আমাদের পাড়ি দিতে হবে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ। তিতাস থেকে বুড়িগঙ্গা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকার সদরঘাট। এত দীর্ঘ পথ এর আগে কখনো পাড়ি দিইনি নৌকায়। ভয়, উত্তেজনা আর রোমাঞ্চ—সব একসঙ্গে ঘিরে আছে। কারণ, সামনে পাড়ি দিতে হবে মেঘনা—দ্য গ্রেট মেঘনা!
নদীর নাম পাগলা। তিতাসের শরীর থেকে বেরিয়ে ডানে চলে গেছে। এখানে গ্রামের নাম রসুলপুর, রতনপুর ইত্যাদি। নদী থেকে আটপৌরে দৃশ্যের বাইরে গ্রাম বা শহর দেখা যায়। তার একটা মজা আছে। তবে নদীতে বসে জলজ জীবন দেখাই দস্তুর। তাই দেখতে দেখতে আমরা এগিয়ে চলেছি।
পাগলা নদী পেরিয়ে গেলাম। তিতাস এখানে বেশ প্রশস্ত। আমাদের উল্টো দিক থেকে অনেক নৌকা আসছে। গতিতে আমাদের পেছনে ফেলেও এগিয়ে যাচ্ছে অনেক নৌকা। তার বেশির ভাগই মালবাহী। প্রচুর কচুরিপানা। তাতে এখনো ফুল ফোটেনি। কৌতূহলী হয়ে দেখলাম, সেগুলো মূলত ঘের। মাছ ধরার প্রাকৃতিক ব্যবস্থা। ছোট ছোট নৌকায় জেলেরা সেগুলোতে মাছ ধরছে।
আমরা এগিয়ে চলেছি সদরঘাটের দিকে। ইঞ্চি ইঞ্চি করে দূরত্ব কমছে। কমলে কী হবে, এ পথ ফুরোতে সময় লাগবে পাক্কা দশ ঘণ্টা। মোবাইল ফোনের ঘড়ি দেখি—মাত্র ঘণ্টাখানেক এগিয়েছি। শোনা গেল, সামনেই যমুনা। উত্তেজনার পারদ বাড়ল খানিক।
এই যাত্রার আয়োজন করেছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নদী রক্ষা আন্দোলনের অনন্যসাধারণ সংগঠন ‘তরী’। তাদের দাবি, পুরোনো এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া নৌপথ আবার সচল করতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার? আইইউসিএনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬০ সালে দেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার। পরের তিন দশকে তা কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার কিলোমিটারে। বিআইডব্লিউটিএর তথ্য, ষাটের দশকে নদীপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৪ হাজার কিলোমিটার। গত ছয় দশকে তা নেমে এসেছে মাত্র ৬ হাজার কিলোমিটারে। শুকনো মৌসুমে তা-ও কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৩৪৭ কিলোমিটারে। তরীর দাবি, নৌপথগুলো পুনরুদ্ধার করতে হবে, দেশ বাঁচাতে। সেই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ঢাকা থেকে ট্রেনযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সেখান থেকে নৌকাযোগে ঢাকা উদ্দেশে যাত্রা।
জায়গাটা বিশাল। চারদিকে পানি আর পানি। বাল্কহেডের সংখ্যা যেন বেড়ে গেছে হঠাৎ করে। মাছ ধরার নৌকাগুলোর আকারও বদলেছে। বোটের অভিজ্ঞরা জানালেন, আমরা মেঘনায় চলে এসেছি। অর্থাৎ তিতাস পাড়ি দেওয়া শেষ। এখন আমাদের মেঘনা পাড়ি দিতে হবে।
অথই জলে এখানে ভাসছে প্লাস্টিকের তৈরি দিকনির্দেশক। রাতে তাতে বাতি জ্বলে। বড় বড় ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বাল্কহেডে ভরা হচ্ছে। শত শত বাল্কহেড সেই বালু নিয়ে পাড়ি দিচ্ছে বিভিন্ন দিকে। বেশির ভাগের গন্তব্য ঢাকা। আমাদের বোট এগিয়ে চলেছে। মহাসড়কে যেমন বাস-ট্রাক আর ছোট ছোট ব্যক্তিগত গাড়ির সারি থাকে, এখানে বাল্ডহেডের সারিও অনেকটা তেমনই। একটার পেছনে একটা, শত শত! মাঝি দক্ষ হাতে বোট সামলে চলেছেন। মাঝে কদাচিৎ দেখা যাচ্ছে যাত্রী ও পণ্যবাহী ইঞ্জিনচালিত নৌকা আর স্পিডবোট। কোথাও ঘাটে বাঁধা দেখলাম পুরোনো এক গয়না নৌকা। একসময় এগুলো নদীপথে দাপিয়ে বেড়াত পণ্য নিয়ে। এখন সে বিগত যৌবনা।
মেঘনা এক পবিত্র নদী। বরাক উপত্যকার সুরমা ও কুশিয়ারা এক হয়ে যে প্রবাহ তৈরি করেছে, তার নাম কালনী। ভাটিতে এর নাম মেঘনা। তাতে এসে মিশেছে হিমালয়ের মানস সরোবরের জল, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র হয়ে। তারও ভাটিতে মেঘনার সঙ্গে মিলেছে পদ্মা। তারপর চলে গেছে সাগরপানে। আমরা এই পদ্মাসঙ্গমের আগেই হাতের ডানে চলে গেলাম। সেখানে দুটি নদী দুদিকে বেরিয়ে গেছে—একটি শীতলক্ষ্যা, অন্যটি ধলেশ্বরী। এখানে অসংখ্য বাল্কহেড আর মাদার ভ্যাসেলের টার্মিনাল। ধলেশ্বরী ধরে এগিয়ে গিয়ে পড়লাম বুড়িগঙ্গায়। সে পথে সদরঘাট।
টানা ১০ ঘণ্টার যাত্রা। পথে নৌকাতেই রান্না ও খাওয়া। সদরঘাটের দিকে যতই এগিয়ে চলেছি, পানির রং ততই কালো হয়ে উঠছে। বুঝতে পারছি, বহু ব্যবহারে জীর্ণ বুড়িগঙ্গা। কিন্তু নদী থেকে রাজধানী শহর দেখতে সুন্দর।

তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা। কুরুলিয়া নদী যেখানে তিতাসের সঙ্গে মিলিত হলো, সেটাই গোকর্ণ গ্রাম তথা এখনকার গোকর্ণ ঘাট—অদ্বৈত মল্লবর্মণের জন্মভিটা। এখন আর বস্তুগত চিহ্ন নেই, আছে স্মৃতি। শোনা গেল, তাঁর দূরসম্পর্কের এক নাতি আছেন সেখানে। আর কেউ নেই। মল্লবাবু বহু আগে তখনকার রাজধানী শহর কলকাতায় চলে গিয়েছিলেন, ভাগ্যের অন্বেষণে। আমরা যেমন এখন দূরদূরান্ত থেকে রাজধানী ঢাকায় এসে ভিড় জমাই।
এখানে নদীর ওপর মস্ত প্রাচীরঘেরা গুদাম। সেটির ছোট ছোট মিনারে বসে আছে তিনটি বালক আর একটি কাক। অদ্বৈত মল্লবর্মণ একদিন সম্ভবত এই বালকদের মতোই ছিলেন—দুরন্ত। অথবা এই বালকেরাই হয়তো তাঁর কিশোর, সুবল, অনন্ত কিংবা বনমালীদের এই প্রজন্মের সংস্করণ।
কেমন ছিল অদ্বৈতের তিতাস? তিনি লিখেছেন, ‘তার কূলজোড়া জল, বুকভরা ঢেউ, প্রাণভরা উচ্ছ্বাস। স্বপ্নের ছন্দে সে বহিয়া যায়। ভোরের হাওয়ায় তার তন্দ্রা ভাঙ্গে, দিনের সূর্য তাকে তাতায়; রাতে চাঁদ ও তাঁরারা তাকে নিয়া ঘুম পাড়াইতে বসে, কিন্তু পারে না।’ বর্ষা থেকে হেমন্ত তিতাস হয়তো তেমনই থাকে। অন্তত হেমন্তের তিতাস দেখে তাই মনে হলো। কিন্তু বছরের বাকি সময় সে যক্ষ্মার রোগী—শুনেছি তার বুকে তখন গরু চরে।
গোকর্ণ ঘাট ছাড়তেই তিতাসের আকার সাগরের মতো! সঙ্গে মিশেছে হাওর। স্থানীয়দের সহায়তা ছাড়া চেনার উপায় নেই—কোনটা হাওর আর কোনটা নদী। এই বিশাল বিস্তারেই বসতি ছিল অদ্বৈত মল্লবর্মণের। নইলে তেমন নভেল লেখা যায়!
আমরা এগিয়ে চলেছি। সূর্য তখনো কুয়াশা আর মেঘের সঙ্গে লড়াই করছে। সকাল আটটাও বাজেনি। আমাদের পাড়ি দিতে হবে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ। তিতাস থেকে বুড়িগঙ্গা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকার সদরঘাট। এত দীর্ঘ পথ এর আগে কখনো পাড়ি দিইনি নৌকায়। ভয়, উত্তেজনা আর রোমাঞ্চ—সব একসঙ্গে ঘিরে আছে। কারণ, সামনে পাড়ি দিতে হবে মেঘনা—দ্য গ্রেট মেঘনা!
নদীর নাম পাগলা। তিতাসের শরীর থেকে বেরিয়ে ডানে চলে গেছে। এখানে গ্রামের নাম রসুলপুর, রতনপুর ইত্যাদি। নদী থেকে আটপৌরে দৃশ্যের বাইরে গ্রাম বা শহর দেখা যায়। তার একটা মজা আছে। তবে নদীতে বসে জলজ জীবন দেখাই দস্তুর। তাই দেখতে দেখতে আমরা এগিয়ে চলেছি।
পাগলা নদী পেরিয়ে গেলাম। তিতাস এখানে বেশ প্রশস্ত। আমাদের উল্টো দিক থেকে অনেক নৌকা আসছে। গতিতে আমাদের পেছনে ফেলেও এগিয়ে যাচ্ছে অনেক নৌকা। তার বেশির ভাগই মালবাহী। প্রচুর কচুরিপানা। তাতে এখনো ফুল ফোটেনি। কৌতূহলী হয়ে দেখলাম, সেগুলো মূলত ঘের। মাছ ধরার প্রাকৃতিক ব্যবস্থা। ছোট ছোট নৌকায় জেলেরা সেগুলোতে মাছ ধরছে।
আমরা এগিয়ে চলেছি সদরঘাটের দিকে। ইঞ্চি ইঞ্চি করে দূরত্ব কমছে। কমলে কী হবে, এ পথ ফুরোতে সময় লাগবে পাক্কা দশ ঘণ্টা। মোবাইল ফোনের ঘড়ি দেখি—মাত্র ঘণ্টাখানেক এগিয়েছি। শোনা গেল, সামনেই যমুনা। উত্তেজনার পারদ বাড়ল খানিক।
এই যাত্রার আয়োজন করেছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নদী রক্ষা আন্দোলনের অনন্যসাধারণ সংগঠন ‘তরী’। তাদের দাবি, পুরোনো এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া নৌপথ আবার সচল করতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার? আইইউসিএনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬০ সালে দেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার। পরের তিন দশকে তা কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার কিলোমিটারে। বিআইডব্লিউটিএর তথ্য, ষাটের দশকে নদীপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৪ হাজার কিলোমিটার। গত ছয় দশকে তা নেমে এসেছে মাত্র ৬ হাজার কিলোমিটারে। শুকনো মৌসুমে তা-ও কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৩৪৭ কিলোমিটারে। তরীর দাবি, নৌপথগুলো পুনরুদ্ধার করতে হবে, দেশ বাঁচাতে। সেই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ঢাকা থেকে ট্রেনযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সেখান থেকে নৌকাযোগে ঢাকা উদ্দেশে যাত্রা।
জায়গাটা বিশাল। চারদিকে পানি আর পানি। বাল্কহেডের সংখ্যা যেন বেড়ে গেছে হঠাৎ করে। মাছ ধরার নৌকাগুলোর আকারও বদলেছে। বোটের অভিজ্ঞরা জানালেন, আমরা মেঘনায় চলে এসেছি। অর্থাৎ তিতাস পাড়ি দেওয়া শেষ। এখন আমাদের মেঘনা পাড়ি দিতে হবে।
অথই জলে এখানে ভাসছে প্লাস্টিকের তৈরি দিকনির্দেশক। রাতে তাতে বাতি জ্বলে। বড় বড় ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বাল্কহেডে ভরা হচ্ছে। শত শত বাল্কহেড সেই বালু নিয়ে পাড়ি দিচ্ছে বিভিন্ন দিকে। বেশির ভাগের গন্তব্য ঢাকা। আমাদের বোট এগিয়ে চলেছে। মহাসড়কে যেমন বাস-ট্রাক আর ছোট ছোট ব্যক্তিগত গাড়ির সারি থাকে, এখানে বাল্ডহেডের সারিও অনেকটা তেমনই। একটার পেছনে একটা, শত শত! মাঝি দক্ষ হাতে বোট সামলে চলেছেন। মাঝে কদাচিৎ দেখা যাচ্ছে যাত্রী ও পণ্যবাহী ইঞ্জিনচালিত নৌকা আর স্পিডবোট। কোথাও ঘাটে বাঁধা দেখলাম পুরোনো এক গয়না নৌকা। একসময় এগুলো নদীপথে দাপিয়ে বেড়াত পণ্য নিয়ে। এখন সে বিগত যৌবনা।
মেঘনা এক পবিত্র নদী। বরাক উপত্যকার সুরমা ও কুশিয়ারা এক হয়ে যে প্রবাহ তৈরি করেছে, তার নাম কালনী। ভাটিতে এর নাম মেঘনা। তাতে এসে মিশেছে হিমালয়ের মানস সরোবরের জল, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র হয়ে। তারও ভাটিতে মেঘনার সঙ্গে মিলেছে পদ্মা। তারপর চলে গেছে সাগরপানে। আমরা এই পদ্মাসঙ্গমের আগেই হাতের ডানে চলে গেলাম। সেখানে দুটি নদী দুদিকে বেরিয়ে গেছে—একটি শীতলক্ষ্যা, অন্যটি ধলেশ্বরী। এখানে অসংখ্য বাল্কহেড আর মাদার ভ্যাসেলের টার্মিনাল। ধলেশ্বরী ধরে এগিয়ে গিয়ে পড়লাম বুড়িগঙ্গায়। সে পথে সদরঘাট।
টানা ১০ ঘণ্টার যাত্রা। পথে নৌকাতেই রান্না ও খাওয়া। সদরঘাটের দিকে যতই এগিয়ে চলেছি, পানির রং ততই কালো হয়ে উঠছে। বুঝতে পারছি, বহু ব্যবহারে জীর্ণ বুড়িগঙ্গা। কিন্তু নদী থেকে রাজধানী শহর দেখতে সুন্দর।

মাইকেল মধুসূদন দত্তকে বিবেচনা করা হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি ও নাট্যকার হিসেবে। বাংলা ভাষায় সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতা ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক তিনি। বাংলা সাহিত্যে পাশ্চাত্যের ভাবধারা সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন মধুসূদন। মহাভারতের কাহিনি অবলম্বনে ১৮৫৮ সালে পাশ্চাত্য রীতিতে রচনা করেন
২৫ জানুয়ারি ২০২৩
এ বছর হেমন্তে শহরেও শীতের আগমন খানিকটা টের পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার বাইরে কিন্তু কোনো কোনো জায়গায় ঠান্ডা পড়ে গেছে। দিনে না হলেও রাতে কম্বল বা কাঁথা গায়ে তুলতে হচ্ছে। তাই সপ্তাহান্তে কদিন আগের মতো ব্যাকপ্যাকে দুটো টি-শার্ট আর দুটো শর্টস নিয়ে বেরিয়ে পড়ার সুযোগ আর থাকছে না।
৪ ঘণ্টা আগে
বস আজ আপনার কাঁধে এমন একটা গুরুদায়িত্ব চাপিয়ে দেবেন, যাকে তিনি 'অভূতপূর্ব সুযোগ' বলে ব্যাখ্যা করবেন। মনে মনে বুঝবেন, এটি আসলে অতিরিক্ত কাজের ভার। তবে মন খারাপ করবেন না, আপনার আর্থিক ভাগ্য আজ বেশ চনমনে।
৪ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনশিল্পের এখন রমরমা চলছে। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়াসহ অনেক দেশের পর্যটনশিল্পের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। ভ্রমণ নিয়ে প্রচারণা, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং ভিসা সহজীকরণের কারণে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান ন্যাশনস (আসিয়ান) দেশগুলোতে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা...
৪ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

এ বছর হেমন্তে শহরেও শীতের আগমন খানিকটা টের পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার বাইরে কিন্তু কোনো কোনো জায়গায় ঠান্ডা পড়ে গেছে। দিনে না হলেও রাতে কম্বল বা কাঁথা গায়ে তুলতে হচ্ছে। তাই সপ্তাহান্তে কদিন আগের মতো ব্যাকপ্যাকে দুটো টি-শার্ট আর দুটো শর্টস নিয়ে বেরিয়ে পড়ার সুযোগ আর থাকছে না। শহরের বাইরে গিয়ে ঠান্ডায় যেন বেকায়দায় না পড়তে হয়, তাই কিছুটা প্রস্তুতি নিয়ে ঘর ছাড়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। পা-ঢাকা জুতা, মোজা, স্কার্ফ ও টুপির মতো অন্যান্য শীতকালীন পোশাকও প্যাক করার কথা বিবেচনায় নিতে হবে। শীত মোকাবিলার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে থাকবে, আবার ব্যাগও ভারী হবে না, এমন কিছু টিপস রইল।
লেয়ারিং টপস নিন
এখনো যেহেতু অত শীত পড়েনি, তাই লেয়ারিং করে পরা যায় এমন টপস নিতে হবে। টার্টেল নেকের ফুলস্লিভ গেঞ্জি, হাতাকাটা কয়েকটি টি-শার্ট আর দুটি হাফস্লিভ টি-শার্ট সঙ্গে নিন। আবহাওয়া বুঝে একটার ওপর আরেকটা লেয়ার করে পরলেন। এসব টপসের রং কালো, সাদা অথবা বেইজ হলে ভালো হয়। তাহলে লেয়ারিং করার সময় দেখতে ভালো লাগবে।
গন্তব্যে যাওয়ার সময় ভারী প্যান্ট পরুন
ঠান্ডার জন্য একটা ভারী প্যান্ট তো নিতেই হবে। ব্যাগের জায়গা বাঁচাতে এবং ব্যাগ যেন ভারী না হয়, এ জন্য যাওয়ার সময় ভারী প্যান্টটা পরে নিন। যদি ব্লেজার বা বুট নিত হয়, তাহলে সেগুলোও পরে বের হোন। তাতে ব্যাগ হালকা লাগবে।
হালকা এবং গরম কাপড় বেছে নিন
যদি আগে থেকে জানা থাকে গন্তব্যের আবহাওয়া কেমন, সে ক্ষেত্রে একটু উষ্ণ কাপড় নেওয়ার আগ্রহ থাকলে এমন কাপড় বেছে নিন, যা ওজনে হালকা কিন্তু পরলে শরীর উষ্ণতা পাবে।
ভ্যাকুয়াম সিল ব্যাগ ব্যবহার করুন
ভ্যাকুয়াম সিল ব্যাগ বা কম্প্রেশন ব্যাগ থাকলে অনেক ভারী কাপড়ও কম জায়গায় বহন করা যায়। পোশাকগুলো সুন্দর করে ভাঁজ করে এই ব্যাগে রাখুন। এবার ব্যাগটি বন্ধ করুন এবং বাতাস বের করে দিন। এই ব্যাগগুলো বিভিন্ন আকারে পাওয়া যায়। এসব ব্যাগে কাপড় ভরে তারপর বড় ব্যাগে নিলে অনেক কাপড় নেওয়া যায় অল্প জায়গায়।
সূত্র: দ্য ট্রাভেল হ্যাক ও অন্যান্য

এ বছর হেমন্তে শহরেও শীতের আগমন খানিকটা টের পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার বাইরে কিন্তু কোনো কোনো জায়গায় ঠান্ডা পড়ে গেছে। দিনে না হলেও রাতে কম্বল বা কাঁথা গায়ে তুলতে হচ্ছে। তাই সপ্তাহান্তে কদিন আগের মতো ব্যাকপ্যাকে দুটো টি-শার্ট আর দুটো শর্টস নিয়ে বেরিয়ে পড়ার সুযোগ আর থাকছে না। শহরের বাইরে গিয়ে ঠান্ডায় যেন বেকায়দায় না পড়তে হয়, তাই কিছুটা প্রস্তুতি নিয়ে ঘর ছাড়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। পা-ঢাকা জুতা, মোজা, স্কার্ফ ও টুপির মতো অন্যান্য শীতকালীন পোশাকও প্যাক করার কথা বিবেচনায় নিতে হবে। শীত মোকাবিলার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে থাকবে, আবার ব্যাগও ভারী হবে না, এমন কিছু টিপস রইল।
লেয়ারিং টপস নিন
এখনো যেহেতু অত শীত পড়েনি, তাই লেয়ারিং করে পরা যায় এমন টপস নিতে হবে। টার্টেল নেকের ফুলস্লিভ গেঞ্জি, হাতাকাটা কয়েকটি টি-শার্ট আর দুটি হাফস্লিভ টি-শার্ট সঙ্গে নিন। আবহাওয়া বুঝে একটার ওপর আরেকটা লেয়ার করে পরলেন। এসব টপসের রং কালো, সাদা অথবা বেইজ হলে ভালো হয়। তাহলে লেয়ারিং করার সময় দেখতে ভালো লাগবে।
গন্তব্যে যাওয়ার সময় ভারী প্যান্ট পরুন
ঠান্ডার জন্য একটা ভারী প্যান্ট তো নিতেই হবে। ব্যাগের জায়গা বাঁচাতে এবং ব্যাগ যেন ভারী না হয়, এ জন্য যাওয়ার সময় ভারী প্যান্টটা পরে নিন। যদি ব্লেজার বা বুট নিত হয়, তাহলে সেগুলোও পরে বের হোন। তাতে ব্যাগ হালকা লাগবে।
হালকা এবং গরম কাপড় বেছে নিন
যদি আগে থেকে জানা থাকে গন্তব্যের আবহাওয়া কেমন, সে ক্ষেত্রে একটু উষ্ণ কাপড় নেওয়ার আগ্রহ থাকলে এমন কাপড় বেছে নিন, যা ওজনে হালকা কিন্তু পরলে শরীর উষ্ণতা পাবে।
ভ্যাকুয়াম সিল ব্যাগ ব্যবহার করুন
ভ্যাকুয়াম সিল ব্যাগ বা কম্প্রেশন ব্যাগ থাকলে অনেক ভারী কাপড়ও কম জায়গায় বহন করা যায়। পোশাকগুলো সুন্দর করে ভাঁজ করে এই ব্যাগে রাখুন। এবার ব্যাগটি বন্ধ করুন এবং বাতাস বের করে দিন। এই ব্যাগগুলো বিভিন্ন আকারে পাওয়া যায়। এসব ব্যাগে কাপড় ভরে তারপর বড় ব্যাগে নিলে অনেক কাপড় নেওয়া যায় অল্প জায়গায়।
সূত্র: দ্য ট্রাভেল হ্যাক ও অন্যান্য

মাইকেল মধুসূদন দত্তকে বিবেচনা করা হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি ও নাট্যকার হিসেবে। বাংলা ভাষায় সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতা ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক তিনি। বাংলা সাহিত্যে পাশ্চাত্যের ভাবধারা সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন মধুসূদন। মহাভারতের কাহিনি অবলম্বনে ১৮৫৮ সালে পাশ্চাত্য রীতিতে রচনা করেন
২৫ জানুয়ারি ২০২৩
তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা।
২ ঘণ্টা আগে
বস আজ আপনার কাঁধে এমন একটা গুরুদায়িত্ব চাপিয়ে দেবেন, যাকে তিনি 'অভূতপূর্ব সুযোগ' বলে ব্যাখ্যা করবেন। মনে মনে বুঝবেন, এটি আসলে অতিরিক্ত কাজের ভার। তবে মন খারাপ করবেন না, আপনার আর্থিক ভাগ্য আজ বেশ চনমনে।
৪ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনশিল্পের এখন রমরমা চলছে। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়াসহ অনেক দেশের পর্যটনশিল্পের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। ভ্রমণ নিয়ে প্রচারণা, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং ভিসা সহজীকরণের কারণে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান ন্যাশনস (আসিয়ান) দেশগুলোতে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা...
৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মেষ
বস আজ আপনার কাঁধে এমন একটা গুরুদায়িত্ব চাপিয়ে দেবেন, যাকে তিনি 'অভূতপূর্ব সুযোগ' বলে ব্যাখ্যা করবেন। মনে মনে বুঝবেন, এটি আসলে অতিরিক্ত কাজের ভার। তবে মন খারাপ করবেন না, আপনার আর্থিক ভাগ্য আজ বেশ চনমনে। অপ্রত্যাশিত অর্থ প্রাপ্তির যোগ আছে, যা দিয়ে সাধের 'শখের জিনিস'টি কিনতে পারবেন (কিন্তু ইএমআই কিস্তির কথাও একটু মাথায় রাখুন)। প্রেমের ক্ষেত্রে ভুল-বোঝাবুঝির সম্ভাবনা প্রবল। হয়তো গভীর দার্শনিক কথা বলছেন, আর প্রিয়জন ভাবছেন আপনি বিড়বিড় করছেন। সুতরাং গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার সময় একটি ফ্লিপচার্ট ব্যবহার করুন অথবা অন্তত একটি ডিকশনারি পাশে রাখুন। কাজের চাপ বাড়লে কফির কাপকে আপনার থেরাপিস্ট ভাবুন।
বৃষ
আপনার রাশিফল বলছে, 'অপ্রয়োজনীয় খরচ' কমাতে হবে। অথচ আপনার শপিং লিস্টে অপ্রয়োজনীয় জিনিসই বেশি! আজ একটি অর্থনৈতিক ধ্যানের মুডে থাকবেন, অর্থাৎ মানিব্যাগটি আলমারিতে তালাবদ্ধ করে রাখুন। দূরদেশ থেকে কোনো সুখবর আসতে পারে—হয়তো সেই বন্ধুটি, যে আপনার কাছ থেকে টাকা ধার করেছিল, সে আজ ফোন করে ক্ষমা চাইবে (টাকাটা দেবে না, শুধু ক্ষমা)। রাস্তায় চলাফেরার সময় একটু সাবধানে থাকুন। বিশেষ করে যদি কোনো পুলিশি ঝামেলা দেখেন, তাহলে উল্টো দিকের ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যান। আজ দুধ আর চিনি দান করুন। তবে নিজেই কফি বানিয়ে খান, তাতে অন্তত খরচটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
মিথুন
আজ কর্মস্থলে আপনার পরিশ্রম দেখে সবাই অবাক হবে। আসলে আপনি এত বেশি দৌড়াদৌড়ি করবেন যে অফিসেই একটা ছোটখাটো ম্যারাথন হয়ে যাবে। ভালো খবর হলো, ব্যবসায় নতুন সুযোগ আসছে, হয়তো 'পার্টনারশিপে শিঙাড়া বিক্রি'র প্ল্যান এবার সফল হবে। কিন্তু দাম্পত্য জীবনে সামান্য মতভেদ আসতে পারে। সঙ্গী হয়তো আপনাকে 'সাইলেন্ট ট্রিটমেন্ট' দেবেন, যা বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন কূটনৈতিক সংঘাতের চেয়েও মারাত্মক। সন্তানের পড়াশোনা নিয়ে চিন্তা বাড়বে, বিশেষ করে যখন দেখবেন সে বইয়ের বদলে ফোন দেখছে। উচ্চ রক্তচাপ এড়াতে মাঝেমধ্যে অফিসের ছাদে গিয়ে জোরে শ্বাস নিন।
কর্কট
আজ অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হয়ে উঠবেন। চোখের জল যেন হিমবাহের মতো গলে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। ব্যবসায়ীদের জন্য সময় ততটা অনুকূল নয়। তাই আজ ঋণ নিয়ে হুট করে মঙ্গল গ্রহে জমি কেনার সিদ্ধান্ত নেবেন না। ঘনিষ্ঠ বন্ধুর পরামর্শ জীবন বদলে দিতে পারে, যদি না সেই বন্ধুটি নিজেই ডিপ্রেসড থাকে। প্রেমিক/প্রেমিকার সঙ্গে ভুল-বোঝাবুঝি হওয়ার আশঙ্কা আছে। সম্ভবত তাকে গোলাপ দিতে যাবেন, আর সে ভাববে আপনি তার দিকে মশা মারার স্প্রে ছুড়েছেন। সন্ধ্যায় প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটান। শান্ত থাকার জন্য চাঁদের আলোয় কিছুক্ষণ ধ্যান করুন (যদি মেঘ না থাকে)।
সিংহ
আজ আপনার রাশিতে একেবারে 'লক্ষ্মীর যোগ'! লটারি বা স্পেকুলেশন (শেয়ার মার্কেট) থেকে হুট করে অনেক টাকা আসতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে সেই টাকা সঞ্চয়ের দিকে মন দিন। এত সহজে পাওয়া টাকা কিন্তু উড়তে সময় নেয় না। কর্মক্ষেত্রে আপনার গতি আসবে, তবে সহকর্মীদের ওপর অতিরিক্ত বিশ্বাস রাখবেন না। মনে রাখবেন, আজকের দিনে আপনার কফি মগ থেকে কেক চুরি যাওয়ার ষড়যন্ত্র হতে পারে! প্রেমপ্রীতি ও বিয়ের যোগ রয়েছে। যদি কাউকে প্রপোজ করার থাকে, আজই করে ফেলুন—গ্রহ যেহেতু অনুকূলে, প্রত্যাখ্যানের ভয় কম। খাবারদাবার সাবধানে খান। আজ খাবারে বিষক্রিয়ার যোগ আছে (হয়তো অফিসের ক্যানটিনের রান্নার জন্য)।
কন্যা
আজ যোগ্যতা ও দক্ষতা দেখানোর দিন। আপনার বুদ্ধিমত্তার কাছে ঊর্ধ্বতনরা মুগ্ধ হয়ে যাবেন (যা শেষ পর্যন্ত আপনার কাজের বোঝা বাড়াবে)। আপনি লাভের একাধিক সুযোগ পাবেন, বিশেষ করে বই, পোশাক বা ওষুধের ব্যবসায়ীরা। আজ বাড়িতে প্রিয়জনের সমাগম হতে পারে। কিন্তু সাবধান, মনের কোনো ইচ্ছা আজ প্রকাশ না করাই ভালো। কেন জানেন? কারণ, হয়তো ভাবছেন একটা গোপন ইচ্ছা, আর আত্মীয়রা সেটাকে গোটা পাড়ার আলোচ্য বিষয় বানিয়ে ফেলবে। অকারণে সুনামহানি হতে পারে, তাই বেফাঁস মন্তব্য থেকে বিরত থাকুন। কারও কাছে কোনো ধার চাইবেন না। সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগান, ধার নয়।
তুলা
আজ সবার ইমোশনাল কোচ হয়ে উঠবেন। আপনি আবেগগতভাবে মানুষের সঙ্গে বোঝাপড়ার চেষ্টা করবেন এবং সবার ব্যক্তিত্বের প্রতি সম্মান দেখাবেন। অন্যের গোপনীয়তা ফাঁস না করলেই হলো। পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার চেষ্টা করুন। অবিবাহিত আত্মীয়স্বজনের জন্য আজ বিয়ের কথা পাকা হতে পারে! পাত্র/পাত্রীর সঙ্গে দেখা হলে হাসিখুশি থাকুন, কিন্তু বেফাঁস মন্তব্য করে বিড়ম্বনায় পড়বেন না। কারণ, আজকের দিনে আপনার মুখ ফসকে বেরিয়ে যাওয়া একটা কথা সারা জীবন পিছু ছাড়বে না। লৌকিকতা পরিহার করে মন থেকে কথা বলুন। (তবে বেফাঁস কথা বাদ দিয়ে!)
বৃশ্চিক
তরুণ বৃশ্চিক জাতকদের পারফরম্যান্স আজ প্রত্যাশার চেয়েও ভালো হবে। উৎসাহ আজ এতটাই বেশি থাকবে যে একই সঙ্গে কফি খেতে, কম্পিউটার কোড লিখতে আর গান শুনতে পারবেন। বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দদায়ক ভ্রমণের যোগ রয়েছে। এমন একটা জায়গায় যান যেখানে ইন্টারনেটের ছিটেফোঁটাও নেই! লক্ষ্যের দিকে দ্রুত এগোনোর চেষ্টা করুন, কিন্তু তাড়াহুড়া করে দেয়ালে ধাক্কা খাবেন না। ভুল এড়াতে সচেষ্ট থাকুন। বন্ধুদের সঙ্গে আন্তরিক চিন্তা শেয়ার করুন। তবে আপনার ব্যাংক ব্যালেন্স নয়!
ধনু
আজ সবাই আপনার কাজে সহযোগিতা করবেন। আজ 'ঐক্যের প্রতীক' হয়ে উঠবেন। গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন হবে। আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়বে এবং তাঁদের সমর্থন আপনাকে অবাক করে দেবে। তবে এই সমর্থনকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের কাছে টাকা ধার চাওয়ার আগে দুবার ভাবুন। সঠিক পথ বেছে নিতে সাহায্য পাবেন। আপনার সবচেয়ে বড় কাজ হবে, যে সুযোগগুলো আসবে, সেগুলোকে কাজে লাগানো। লোভে প্রলুব্ধ হওয়া থেকে বিরত থাকুন। (ফ্রি পিৎজার অফার দেখলেও!)
মকর
কর্মক্ষেত্রে দুম করে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না। আপনার রাশিফল বলছে, ‘ভাবনাচিন্তা করে পা ফেলুন’। অর্থাৎ বসের দেওয়া নতুন প্রজেক্টে সই করার আগে ফাইন প্রিন্টগুলো চারবার পড়ুন। আজকের দিনটি সঠিক সঙ্গী খুঁজে পাওয়ার জন্য একটা ভালো সময়। সামাজিক অনুষ্ঠান বা কোনো কার্যক্রমে অংশ নিন। তবে সাবধান, হয়তো ভেবেছেন জীবনসঙ্গী খুঁজছেন, আর শেষ পর্যন্ত পেলেন একটা কুকুরছানা! নিজের বিমা পলিসিগুলোর দিকে নজর দিন, বিশেষ করে গাড়ি বা বাইকের বিষয়ে। বিমা পলিসি পড়ুন। এটা সিনেমার চেয়েও রোমাঞ্চকর হতে পারে।
কুম্ভ
আজ আপনি আত্মবিশ্বাসের এক নতুন শিখরে পৌঁছাবেন। প্রতিটি কাজ আজ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অতীতের একটি 'আজগুবি' অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে আর্থিক দিকটি শক্তিশালী হতে পারে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের কথা ভাবলে অবশ্যই কোনো আর্থিক উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শ করুন। অবিবাহিতরা আজ কোনো পার্টি বা সামাজিক ইভেন্টে একটি বিশেষ সঙ্গী খুঁজে পেতে পারেন। প্রেমের জীবনে সতর্ক থাকুন। পুরোনো সম্পর্ক থেকে দূরে থাকাই ভালো। আত্মবিশ্বাসে ভরপুর থাকুন। আজ চাইলে জলপথে ভ্রমণ করতে পারেন (কিন্তু লাইফ জ্যাকেট নিয়ে)।
মীন
আজ আপনার সৃজনশীলতা একেবারে উথলে উঠবে! নিজের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে আরও আগ্রহ বোধ করবেন। হয়তো আজ রান্নাঘরে গিয়ে একটা নতুন রেসিপি আবিষ্কার করে ফেলবেন। অবশ্য খেতে ভয়ংকর হতে পারে! চাকরির সাক্ষাৎকারের সময় বা প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়ার সময় আপনার দক্ষতা দেখাতে দ্বিধা করবেন না। তবে আপনার মনের মধ্যে যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব চলছে, তা প্রকাশ না করাই ভালো। আজ নিজে ঠিক করতে পারবেন না, নীল শার্ট পরবেন নাকি সবুজ! আপনার সমস্ত নথিপত্র আজ গুছিয়ে নিন। জীবন যদি না গোছানো যায়, অন্তত কাগজগুলো গোছান!

মেষ
বস আজ আপনার কাঁধে এমন একটা গুরুদায়িত্ব চাপিয়ে দেবেন, যাকে তিনি 'অভূতপূর্ব সুযোগ' বলে ব্যাখ্যা করবেন। মনে মনে বুঝবেন, এটি আসলে অতিরিক্ত কাজের ভার। তবে মন খারাপ করবেন না, আপনার আর্থিক ভাগ্য আজ বেশ চনমনে। অপ্রত্যাশিত অর্থ প্রাপ্তির যোগ আছে, যা দিয়ে সাধের 'শখের জিনিস'টি কিনতে পারবেন (কিন্তু ইএমআই কিস্তির কথাও একটু মাথায় রাখুন)। প্রেমের ক্ষেত্রে ভুল-বোঝাবুঝির সম্ভাবনা প্রবল। হয়তো গভীর দার্শনিক কথা বলছেন, আর প্রিয়জন ভাবছেন আপনি বিড়বিড় করছেন। সুতরাং গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার সময় একটি ফ্লিপচার্ট ব্যবহার করুন অথবা অন্তত একটি ডিকশনারি পাশে রাখুন। কাজের চাপ বাড়লে কফির কাপকে আপনার থেরাপিস্ট ভাবুন।
বৃষ
আপনার রাশিফল বলছে, 'অপ্রয়োজনীয় খরচ' কমাতে হবে। অথচ আপনার শপিং লিস্টে অপ্রয়োজনীয় জিনিসই বেশি! আজ একটি অর্থনৈতিক ধ্যানের মুডে থাকবেন, অর্থাৎ মানিব্যাগটি আলমারিতে তালাবদ্ধ করে রাখুন। দূরদেশ থেকে কোনো সুখবর আসতে পারে—হয়তো সেই বন্ধুটি, যে আপনার কাছ থেকে টাকা ধার করেছিল, সে আজ ফোন করে ক্ষমা চাইবে (টাকাটা দেবে না, শুধু ক্ষমা)। রাস্তায় চলাফেরার সময় একটু সাবধানে থাকুন। বিশেষ করে যদি কোনো পুলিশি ঝামেলা দেখেন, তাহলে উল্টো দিকের ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যান। আজ দুধ আর চিনি দান করুন। তবে নিজেই কফি বানিয়ে খান, তাতে অন্তত খরচটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
মিথুন
আজ কর্মস্থলে আপনার পরিশ্রম দেখে সবাই অবাক হবে। আসলে আপনি এত বেশি দৌড়াদৌড়ি করবেন যে অফিসেই একটা ছোটখাটো ম্যারাথন হয়ে যাবে। ভালো খবর হলো, ব্যবসায় নতুন সুযোগ আসছে, হয়তো 'পার্টনারশিপে শিঙাড়া বিক্রি'র প্ল্যান এবার সফল হবে। কিন্তু দাম্পত্য জীবনে সামান্য মতভেদ আসতে পারে। সঙ্গী হয়তো আপনাকে 'সাইলেন্ট ট্রিটমেন্ট' দেবেন, যা বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন কূটনৈতিক সংঘাতের চেয়েও মারাত্মক। সন্তানের পড়াশোনা নিয়ে চিন্তা বাড়বে, বিশেষ করে যখন দেখবেন সে বইয়ের বদলে ফোন দেখছে। উচ্চ রক্তচাপ এড়াতে মাঝেমধ্যে অফিসের ছাদে গিয়ে জোরে শ্বাস নিন।
কর্কট
আজ অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হয়ে উঠবেন। চোখের জল যেন হিমবাহের মতো গলে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। ব্যবসায়ীদের জন্য সময় ততটা অনুকূল নয়। তাই আজ ঋণ নিয়ে হুট করে মঙ্গল গ্রহে জমি কেনার সিদ্ধান্ত নেবেন না। ঘনিষ্ঠ বন্ধুর পরামর্শ জীবন বদলে দিতে পারে, যদি না সেই বন্ধুটি নিজেই ডিপ্রেসড থাকে। প্রেমিক/প্রেমিকার সঙ্গে ভুল-বোঝাবুঝি হওয়ার আশঙ্কা আছে। সম্ভবত তাকে গোলাপ দিতে যাবেন, আর সে ভাববে আপনি তার দিকে মশা মারার স্প্রে ছুড়েছেন। সন্ধ্যায় প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটান। শান্ত থাকার জন্য চাঁদের আলোয় কিছুক্ষণ ধ্যান করুন (যদি মেঘ না থাকে)।
সিংহ
আজ আপনার রাশিতে একেবারে 'লক্ষ্মীর যোগ'! লটারি বা স্পেকুলেশন (শেয়ার মার্কেট) থেকে হুট করে অনেক টাকা আসতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে সেই টাকা সঞ্চয়ের দিকে মন দিন। এত সহজে পাওয়া টাকা কিন্তু উড়তে সময় নেয় না। কর্মক্ষেত্রে আপনার গতি আসবে, তবে সহকর্মীদের ওপর অতিরিক্ত বিশ্বাস রাখবেন না। মনে রাখবেন, আজকের দিনে আপনার কফি মগ থেকে কেক চুরি যাওয়ার ষড়যন্ত্র হতে পারে! প্রেমপ্রীতি ও বিয়ের যোগ রয়েছে। যদি কাউকে প্রপোজ করার থাকে, আজই করে ফেলুন—গ্রহ যেহেতু অনুকূলে, প্রত্যাখ্যানের ভয় কম। খাবারদাবার সাবধানে খান। আজ খাবারে বিষক্রিয়ার যোগ আছে (হয়তো অফিসের ক্যানটিনের রান্নার জন্য)।
কন্যা
আজ যোগ্যতা ও দক্ষতা দেখানোর দিন। আপনার বুদ্ধিমত্তার কাছে ঊর্ধ্বতনরা মুগ্ধ হয়ে যাবেন (যা শেষ পর্যন্ত আপনার কাজের বোঝা বাড়াবে)। আপনি লাভের একাধিক সুযোগ পাবেন, বিশেষ করে বই, পোশাক বা ওষুধের ব্যবসায়ীরা। আজ বাড়িতে প্রিয়জনের সমাগম হতে পারে। কিন্তু সাবধান, মনের কোনো ইচ্ছা আজ প্রকাশ না করাই ভালো। কেন জানেন? কারণ, হয়তো ভাবছেন একটা গোপন ইচ্ছা, আর আত্মীয়রা সেটাকে গোটা পাড়ার আলোচ্য বিষয় বানিয়ে ফেলবে। অকারণে সুনামহানি হতে পারে, তাই বেফাঁস মন্তব্য থেকে বিরত থাকুন। কারও কাছে কোনো ধার চাইবেন না। সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগান, ধার নয়।
তুলা
আজ সবার ইমোশনাল কোচ হয়ে উঠবেন। আপনি আবেগগতভাবে মানুষের সঙ্গে বোঝাপড়ার চেষ্টা করবেন এবং সবার ব্যক্তিত্বের প্রতি সম্মান দেখাবেন। অন্যের গোপনীয়তা ফাঁস না করলেই হলো। পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার চেষ্টা করুন। অবিবাহিত আত্মীয়স্বজনের জন্য আজ বিয়ের কথা পাকা হতে পারে! পাত্র/পাত্রীর সঙ্গে দেখা হলে হাসিখুশি থাকুন, কিন্তু বেফাঁস মন্তব্য করে বিড়ম্বনায় পড়বেন না। কারণ, আজকের দিনে আপনার মুখ ফসকে বেরিয়ে যাওয়া একটা কথা সারা জীবন পিছু ছাড়বে না। লৌকিকতা পরিহার করে মন থেকে কথা বলুন। (তবে বেফাঁস কথা বাদ দিয়ে!)
বৃশ্চিক
তরুণ বৃশ্চিক জাতকদের পারফরম্যান্স আজ প্রত্যাশার চেয়েও ভালো হবে। উৎসাহ আজ এতটাই বেশি থাকবে যে একই সঙ্গে কফি খেতে, কম্পিউটার কোড লিখতে আর গান শুনতে পারবেন। বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দদায়ক ভ্রমণের যোগ রয়েছে। এমন একটা জায়গায় যান যেখানে ইন্টারনেটের ছিটেফোঁটাও নেই! লক্ষ্যের দিকে দ্রুত এগোনোর চেষ্টা করুন, কিন্তু তাড়াহুড়া করে দেয়ালে ধাক্কা খাবেন না। ভুল এড়াতে সচেষ্ট থাকুন। বন্ধুদের সঙ্গে আন্তরিক চিন্তা শেয়ার করুন। তবে আপনার ব্যাংক ব্যালেন্স নয়!
ধনু
আজ সবাই আপনার কাজে সহযোগিতা করবেন। আজ 'ঐক্যের প্রতীক' হয়ে উঠবেন। গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন হবে। আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়বে এবং তাঁদের সমর্থন আপনাকে অবাক করে দেবে। তবে এই সমর্থনকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের কাছে টাকা ধার চাওয়ার আগে দুবার ভাবুন। সঠিক পথ বেছে নিতে সাহায্য পাবেন। আপনার সবচেয়ে বড় কাজ হবে, যে সুযোগগুলো আসবে, সেগুলোকে কাজে লাগানো। লোভে প্রলুব্ধ হওয়া থেকে বিরত থাকুন। (ফ্রি পিৎজার অফার দেখলেও!)
মকর
কর্মক্ষেত্রে দুম করে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না। আপনার রাশিফল বলছে, ‘ভাবনাচিন্তা করে পা ফেলুন’। অর্থাৎ বসের দেওয়া নতুন প্রজেক্টে সই করার আগে ফাইন প্রিন্টগুলো চারবার পড়ুন। আজকের দিনটি সঠিক সঙ্গী খুঁজে পাওয়ার জন্য একটা ভালো সময়। সামাজিক অনুষ্ঠান বা কোনো কার্যক্রমে অংশ নিন। তবে সাবধান, হয়তো ভেবেছেন জীবনসঙ্গী খুঁজছেন, আর শেষ পর্যন্ত পেলেন একটা কুকুরছানা! নিজের বিমা পলিসিগুলোর দিকে নজর দিন, বিশেষ করে গাড়ি বা বাইকের বিষয়ে। বিমা পলিসি পড়ুন। এটা সিনেমার চেয়েও রোমাঞ্চকর হতে পারে।
কুম্ভ
আজ আপনি আত্মবিশ্বাসের এক নতুন শিখরে পৌঁছাবেন। প্রতিটি কাজ আজ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অতীতের একটি 'আজগুবি' অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে আর্থিক দিকটি শক্তিশালী হতে পারে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের কথা ভাবলে অবশ্যই কোনো আর্থিক উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শ করুন। অবিবাহিতরা আজ কোনো পার্টি বা সামাজিক ইভেন্টে একটি বিশেষ সঙ্গী খুঁজে পেতে পারেন। প্রেমের জীবনে সতর্ক থাকুন। পুরোনো সম্পর্ক থেকে দূরে থাকাই ভালো। আত্মবিশ্বাসে ভরপুর থাকুন। আজ চাইলে জলপথে ভ্রমণ করতে পারেন (কিন্তু লাইফ জ্যাকেট নিয়ে)।
মীন
আজ আপনার সৃজনশীলতা একেবারে উথলে উঠবে! নিজের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে আরও আগ্রহ বোধ করবেন। হয়তো আজ রান্নাঘরে গিয়ে একটা নতুন রেসিপি আবিষ্কার করে ফেলবেন। অবশ্য খেতে ভয়ংকর হতে পারে! চাকরির সাক্ষাৎকারের সময় বা প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়ার সময় আপনার দক্ষতা দেখাতে দ্বিধা করবেন না। তবে আপনার মনের মধ্যে যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব চলছে, তা প্রকাশ না করাই ভালো। আজ নিজে ঠিক করতে পারবেন না, নীল শার্ট পরবেন নাকি সবুজ! আপনার সমস্ত নথিপত্র আজ গুছিয়ে নিন। জীবন যদি না গোছানো যায়, অন্তত কাগজগুলো গোছান!

মাইকেল মধুসূদন দত্তকে বিবেচনা করা হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি ও নাট্যকার হিসেবে। বাংলা ভাষায় সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতা ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক তিনি। বাংলা সাহিত্যে পাশ্চাত্যের ভাবধারা সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন মধুসূদন। মহাভারতের কাহিনি অবলম্বনে ১৮৫৮ সালে পাশ্চাত্য রীতিতে রচনা করেন
২৫ জানুয়ারি ২০২৩
তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা।
২ ঘণ্টা আগে
এ বছর হেমন্তে শহরেও শীতের আগমন খানিকটা টের পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার বাইরে কিন্তু কোনো কোনো জায়গায় ঠান্ডা পড়ে গেছে। দিনে না হলেও রাতে কম্বল বা কাঁথা গায়ে তুলতে হচ্ছে। তাই সপ্তাহান্তে কদিন আগের মতো ব্যাকপ্যাকে দুটো টি-শার্ট আর দুটো শর্টস নিয়ে বেরিয়ে পড়ার সুযোগ আর থাকছে না।
৪ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনশিল্পের এখন রমরমা চলছে। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়াসহ অনেক দেশের পর্যটনশিল্পের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। ভ্রমণ নিয়ে প্রচারণা, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং ভিসা সহজীকরণের কারণে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান ন্যাশনস (আসিয়ান) দেশগুলোতে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা...
৪ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনশিল্পের এখন রমরমা চলছে। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়াসহ অনেক দেশের পর্যটনশিল্পের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। ভ্রমণ নিয়ে প্রচারণা, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং ভিসা সহজীকরণের কারণে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান ন্যাশনস (আসিয়ান) দেশগুলোতে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে।
একসময় যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষে জর্জরিত এই অঞ্চলের সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে এখন বিশ্বের নানান প্রান্ত থেকে পর্যটক এসে ভিড় জমাচ্ছে। চলতি বছরের প্রথম দিকের হিসাবে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনশিল্প ইতিবাচকভাবে এগিয়ে গেছে।
নতুনভাবে গড়ে উঠছে মালয়েশিয়া
এ বছরের মে পর্যন্ত মালয়েশিয়া ভ্রমণ করেছে প্রায় ১ কোটি ৬৯ লাখ বিদেশি পর্যটক। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। এভাবে থাইল্যান্ডকে পেছনে ফেলে মালয়েশিয়া এখন আসিয়ানের সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করা দেশ। চীনা পর্যটক বৃদ্ধি, ভিসাপ্রক্রিয়া সহজ করা ও প্রচারণা দেশটির এই সাফল্যের অন্যতম কারণ। পর্যটকদের গড় ব্যয় বেড়েছে, যা মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে।
দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে ভিয়েতনাম
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ভিয়েতনাম ভ্রমণ করেছে প্রায় ১ কোটি ৭ লাখ বিদেশি পর্যটক, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি। ভিসানীতি শিথিল করা এবং ডিজিটাল প্রচারণায় জোর দেওয়ার ফলে ভিয়েতনাম এখন এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে দ্রুত বেড়ে ওঠা পর্যটন গন্তব্যগুলোর একটি।
ধীরগতিতে এগোচ্ছে থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ডে এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা ২ কোটি ২ লাখ। এটি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৬ দশমিক ৯ শতাংশ কম। সীমান্ত উত্তেজনা এবং মুদ্রার মান বৃদ্ধি এই অবস্থার অন্যতম কারণ। তবু ব্যাংকক, পাতায়া ও ফুকেট এখনো পর্যটকে ভরপুর। দেশটিতে বেশি সময় অবস্থান করে দক্ষিণ কোরিয়ার পর্যটকেরা। এর পরেই অবস্থান জাপান ও মালয়েশিয়ার পর্যটকদের।
স্থিতিশীল ফিলিপাইন
এ বছরের জুন পর্যন্ত ফিলিপাইনে বিদেশি পর্যটক গিয়েছিল প্রায় ৩০ লাখ। যদিও এই সংখ্যা গত বছরের মতোই। তবু পর্যটন খাতে দেশটির আয় বেড়েছে এবং মহামারির আগের সময়ের চেয়ে বেশি রাজস্ব এসেছে। দেশটিতে বেশি ভ্রমণে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের পর্যটকেরা।
ধারাবাহিক সাফল্যে সিঙ্গাপুর
এ বছর ৯ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন বিদেশি সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করেছে। এ সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ কম। তারপরও দেশটি ব্যবসা ও প্রিমিয়াম ট্রাভেল হাব হিসেবে জনপ্রিয়।
ইন্দোনেশিয়ার উন্নয়ন
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ করেছে ৭ দশমিক শূন্য ৫ মিলিয়নের বেশি বিদেশি পর্যটক। এই সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়েছে। যদিও এর মধ্যে শুধু বালি ভ্রমণ করেছিল ৪ মিলিয়নের বেশি পর্যটক।
ধীরে এগোচ্ছে কম্বোডিয়া ও লাওস
কম্বোডিয়ায় এ বছরের প্রথম ছয় মাসে ভ্রমণ করেছে প্রায় ৩ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন বিদেশি পর্যটক। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এই সংখ্যা বেড়েছে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে লাওস ভ্রমণ করেছে প্রায় ২৩ দশমিক ৫ লাখ পর্যটক; যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি। দেশটি এ বছর ৪ দশমিক ৩ মিলিয়ন পর্যটক এবং এক বিলিয়ন ডলার রাজস্বের লক্ষ্য স্পর্শ করতে চলেছে।
মিয়ানমার ও ব্রুনেই ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না
এই দুই দেশে পর্যটন এখনো পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। রাজনৈতিক ও বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা এখনো প্রভাব ফেলছে তাদের পর্যটন শিল্পে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো মিলিতভাবে পর্যটন পুনরুদ্ধারে কাজ করছে। বেশ কয়েকটি দেশে এখন ভিসা-ফ্রি বা ভিসা-অন-অ্যারাইভাল চালু হয়েছে। এতে পর্যটকেরা একাধিক দেশ ঘুরে দেখার সুযোগ পাচ্ছে।
সূত্র: গালফ নিউজ

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনশিল্পের এখন রমরমা চলছে। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়াসহ অনেক দেশের পর্যটনশিল্পের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। ভ্রমণ নিয়ে প্রচারণা, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং ভিসা সহজীকরণের কারণে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান ন্যাশনস (আসিয়ান) দেশগুলোতে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে।
একসময় যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষে জর্জরিত এই অঞ্চলের সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে এখন বিশ্বের নানান প্রান্ত থেকে পর্যটক এসে ভিড় জমাচ্ছে। চলতি বছরের প্রথম দিকের হিসাবে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনশিল্প ইতিবাচকভাবে এগিয়ে গেছে।
নতুনভাবে গড়ে উঠছে মালয়েশিয়া
এ বছরের মে পর্যন্ত মালয়েশিয়া ভ্রমণ করেছে প্রায় ১ কোটি ৬৯ লাখ বিদেশি পর্যটক। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। এভাবে থাইল্যান্ডকে পেছনে ফেলে মালয়েশিয়া এখন আসিয়ানের সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করা দেশ। চীনা পর্যটক বৃদ্ধি, ভিসাপ্রক্রিয়া সহজ করা ও প্রচারণা দেশটির এই সাফল্যের অন্যতম কারণ। পর্যটকদের গড় ব্যয় বেড়েছে, যা মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে।
দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে ভিয়েতনাম
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ভিয়েতনাম ভ্রমণ করেছে প্রায় ১ কোটি ৭ লাখ বিদেশি পর্যটক, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি। ভিসানীতি শিথিল করা এবং ডিজিটাল প্রচারণায় জোর দেওয়ার ফলে ভিয়েতনাম এখন এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে দ্রুত বেড়ে ওঠা পর্যটন গন্তব্যগুলোর একটি।
ধীরগতিতে এগোচ্ছে থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ডে এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা ২ কোটি ২ লাখ। এটি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৬ দশমিক ৯ শতাংশ কম। সীমান্ত উত্তেজনা এবং মুদ্রার মান বৃদ্ধি এই অবস্থার অন্যতম কারণ। তবু ব্যাংকক, পাতায়া ও ফুকেট এখনো পর্যটকে ভরপুর। দেশটিতে বেশি সময় অবস্থান করে দক্ষিণ কোরিয়ার পর্যটকেরা। এর পরেই অবস্থান জাপান ও মালয়েশিয়ার পর্যটকদের।
স্থিতিশীল ফিলিপাইন
এ বছরের জুন পর্যন্ত ফিলিপাইনে বিদেশি পর্যটক গিয়েছিল প্রায় ৩০ লাখ। যদিও এই সংখ্যা গত বছরের মতোই। তবু পর্যটন খাতে দেশটির আয় বেড়েছে এবং মহামারির আগের সময়ের চেয়ে বেশি রাজস্ব এসেছে। দেশটিতে বেশি ভ্রমণে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের পর্যটকেরা।
ধারাবাহিক সাফল্যে সিঙ্গাপুর
এ বছর ৯ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন বিদেশি সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করেছে। এ সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ কম। তারপরও দেশটি ব্যবসা ও প্রিমিয়াম ট্রাভেল হাব হিসেবে জনপ্রিয়।
ইন্দোনেশিয়ার উন্নয়ন
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ করেছে ৭ দশমিক শূন্য ৫ মিলিয়নের বেশি বিদেশি পর্যটক। এই সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়েছে। যদিও এর মধ্যে শুধু বালি ভ্রমণ করেছিল ৪ মিলিয়নের বেশি পর্যটক।
ধীরে এগোচ্ছে কম্বোডিয়া ও লাওস
কম্বোডিয়ায় এ বছরের প্রথম ছয় মাসে ভ্রমণ করেছে প্রায় ৩ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন বিদেশি পর্যটক। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এই সংখ্যা বেড়েছে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে লাওস ভ্রমণ করেছে প্রায় ২৩ দশমিক ৫ লাখ পর্যটক; যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি। দেশটি এ বছর ৪ দশমিক ৩ মিলিয়ন পর্যটক এবং এক বিলিয়ন ডলার রাজস্বের লক্ষ্য স্পর্শ করতে চলেছে।
মিয়ানমার ও ব্রুনেই ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না
এই দুই দেশে পর্যটন এখনো পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। রাজনৈতিক ও বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা এখনো প্রভাব ফেলছে তাদের পর্যটন শিল্পে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো মিলিতভাবে পর্যটন পুনরুদ্ধারে কাজ করছে। বেশ কয়েকটি দেশে এখন ভিসা-ফ্রি বা ভিসা-অন-অ্যারাইভাল চালু হয়েছে। এতে পর্যটকেরা একাধিক দেশ ঘুরে দেখার সুযোগ পাচ্ছে।
সূত্র: গালফ নিউজ

মাইকেল মধুসূদন দত্তকে বিবেচনা করা হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি ও নাট্যকার হিসেবে। বাংলা ভাষায় সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতা ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক তিনি। বাংলা সাহিত্যে পাশ্চাত্যের ভাবধারা সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন মধুসূদন। মহাভারতের কাহিনি অবলম্বনে ১৮৫৮ সালে পাশ্চাত্য রীতিতে রচনা করেন
২৫ জানুয়ারি ২০২৩
তিতাস একটি নদীর নাম। এই নদীতীরে গোকর্ণ গ্রাম। এখন অবশ্য তা গোকর্ণ ঘাট নামে পরিচিত। সেই ঘাটে এসে ভিড়ল আমাদের বহনকারী বোট। তবে যাত্রার শুরুটা হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে। সেখান থেকে শুরু করে কুরুলিয়া নদী হয়ে আবার তিতাসে—কিছুটা শর্টকাট রাস্তা।
২ ঘণ্টা আগে
এ বছর হেমন্তে শহরেও শীতের আগমন খানিকটা টের পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার বাইরে কিন্তু কোনো কোনো জায়গায় ঠান্ডা পড়ে গেছে। দিনে না হলেও রাতে কম্বল বা কাঁথা গায়ে তুলতে হচ্ছে। তাই সপ্তাহান্তে কদিন আগের মতো ব্যাকপ্যাকে দুটো টি-শার্ট আর দুটো শর্টস নিয়ে বেরিয়ে পড়ার সুযোগ আর থাকছে না।
৪ ঘণ্টা আগে
বস আজ আপনার কাঁধে এমন একটা গুরুদায়িত্ব চাপিয়ে দেবেন, যাকে তিনি 'অভূতপূর্ব সুযোগ' বলে ব্যাখ্যা করবেন। মনে মনে বুঝবেন, এটি আসলে অতিরিক্ত কাজের ভার। তবে মন খারাপ করবেন না, আপনার আর্থিক ভাগ্য আজ বেশ চনমনে।
৪ ঘণ্টা আগে