মেহরাব মাসাঈদ হাবিব
বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ির শুরুর দিকের কথা
১৮৮৬ সালে মোটরগাড়ি উদ্ভাবিত হওয়ার পরে সময়ের সঙ্গে মোটরগাড়ির অনেক উন্নতি সাধন হয়। শীর্ষস্থানীয় গাড়ি নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান তাদের বিভিন্ন বৈপ্লবিক ব্যবসায়িক ধারণা নিয়ে এসে আমূল বদলে দিয়েছে গাড়িশিল্পকে। সত্যি বলতে, বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি কিন্তু উদ্ভাবিত হয়েছিল মোটরগাড়ি উদ্ভাবনের কয়েক বছর পরেই। কিছুদিন বাজারজাতও হয়েছিল।
কিন্তু সে সময়ে একজন বিখ্যাত গাড়ি নির্মাতার ওকালতির কারণে বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি নির্মাণ ও বাজারজাত থেমে যায় এবং বহু বছর আর বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি নিয়ে কোনো কাজই হয়নি।
একুশ শতকের একদম শুরুতে বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি অনেকগুলো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। উল্লেখযোগ্য কারণগুলো ছিল কম দক্ষতাসম্পন্ন মোটর, ব্যাটারির স্থায়িত্বকাল নিয়ে সংশয়, দীর্ঘস্থায়ী চার্জিং প্রযুক্তির অভাব।
তবে নব্বইয়ের দশক থেকে গাড়ি নির্মাতারা অনুধাবন করে যে বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়িই নির্মাণ করা উচিত। অনেক বছর পর প্রথম উদ্যোগ নেন জেনারেল মোটরসের তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রজার স্মিথ। তাঁর উদ্যোগেই নব্বইয়ের দশকে জেনারেল মোটরস বাজারে আনে জিএমইভি ১। অবশ্য গাড়িটির শেষ পরিণতি সুখকর ছিল না। এরপর ১৯৯৭ সালে টয়োটা তাদের হাইব্রিড গাড়ি প্রিয়াসের প্রথম মডেল বাজারে আনলে ইলেকট্রিক গাড়ি সম্পর্কে নড়েচড়ে বসে সবাই। আর ইলন মাস্ক তাঁর টেসলা প্রতিষ্ঠা করে কী করেছেন, তা তো দেখতেই পারছেন আপনারা।
টেসলা-পরবর্তী যুগ
২০০৩ সালে টেসলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ির বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসতে শুরু করে। বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি জনপ্রিয় করার উদ্দেশ্যে নির্মাণ প্রতিষ্ঠান গাড়ি ব্যবহারকারীদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে আসছে। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের সরকার তেলের গাড়ির প্রতি নিরুৎসাহিত করে বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি কেনার ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়ার জন্যও কাজ করে আসছে। আশা করা যায় কয়েক দশকের ভেতরে সব গাড়ি হবে বিদ্য়ুৎ চালিত।
বাংলাদেশের অবস্থা
বৈশ্বিক অবস্থার হাত ধরে বাংলাদেশও বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে বসে নেই। ইতিমধ্যে কার্বন নিঃসরণ কমাতে এ ধরনের গাড়ি বাজারে আনতে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে প্রতিষ্ঠানটি বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেছে ২০১৮ সালে। তবে করোনাকালীন পরিস্থিতির জন্য এ প্রকল্পের কাজ কিছুটা পিছিয়েছে। জানা গেছে, বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে শুধু বৈদ্যুতিক গাড়িই নয়, মাইক্রোবাস, কাভার্ড ভ্যান ও মিনি ট্রাক, তিন চাকার যান এবং ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল উৎপাদিত হবে।
ইলেকট্রিক গাড়ির সুবিধা
নির্মল পৃথিবীর জন্য অবদান ইলেকট্রিক গাড়িতে জ্বালানি তেল প্রয়োজন হয় না বলে এ গাড়িগুলোতে টেইল পাইপ থাকে না। ফলে গ্যাস নির্গত ও পরিবেশ দূষিত হয় না।
ক্লিন এয়ার জোন ফির আওতামুক্ত
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ক্লিন এয়ার জোন উদ্বোধন হচ্ছে। সেসব জায়গায় তেলচালিত গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ। নিতান্তই প্রবেশ করতে হলে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হয়। ইলেকট্রিক গাড়ি ক্লিন এয়ার জোনে প্রবেশ করতে ফি দিতে হয় না।
সাশ্রয়ী
ইলেকট্রিক গাড়িগুলোর খরচ কম। ইডিএফের সূত্রমতে, একটি ইলেকট্রিক গাড়ি প্রতি ১০০ মাইল যেতে খরচ হয় মাত্র ১ ইউরো ৩০ সেন্ট। সেখানে একটি তেলচালিত গাড়ি ১০০ মাইল যেতে খরচ হবে প্রায় ১১ ইউরো। এ ছাড়া ইলেকট্রিক গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের খরচও অনেক কম।
ড্রাইভিংয়ে আনন্দ
ইলেকট্রিক গাড়ি যে শুধু খরচ বাঁচায়, পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখে, তা-ই নয়; গাড়িগুলো চালিয়ে চালকেরাও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তেলের গাড়ির তুলনায় এই গাড়িগুলো এক্সিলারেশনেও ভালো পারফরম্যান্স দেখায়। এ ছাড়া এই গাড়িগুলোর সেন্টার অব গ্রাভিটি কম থাকায়, হ্যান্ডলিং ও সেফটি ইস্যুও উন্নত থাকে।
সরকারি সুবিধা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার জনগণকে ইলেকট্রিক গাড়ি চালানো ও কেনায় উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন সুবিধা ও অফার দিয়ে থাকে, যা তেলের গাড়িতে পাওয়া যায় না।
ফ্রি পার্কিং-সুবিধা
অনেক দেশে ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য
ফ্রি পার্কিং-সুবিধা দেওয়া হয়। ইংল্যান্ডের মিল্টন কেইন্স এমন এক শহর, যেখানে
১৫ হাজার ফ্রি পার্কিং-সুবিধা রয়েছে ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য।
লেখক: ফাউন্ডার ও সিইও, বাংলা অটোমোবাইল স্কিলস
বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ির শুরুর দিকের কথা
১৮৮৬ সালে মোটরগাড়ি উদ্ভাবিত হওয়ার পরে সময়ের সঙ্গে মোটরগাড়ির অনেক উন্নতি সাধন হয়। শীর্ষস্থানীয় গাড়ি নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান তাদের বিভিন্ন বৈপ্লবিক ব্যবসায়িক ধারণা নিয়ে এসে আমূল বদলে দিয়েছে গাড়িশিল্পকে। সত্যি বলতে, বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি কিন্তু উদ্ভাবিত হয়েছিল মোটরগাড়ি উদ্ভাবনের কয়েক বছর পরেই। কিছুদিন বাজারজাতও হয়েছিল।
কিন্তু সে সময়ে একজন বিখ্যাত গাড়ি নির্মাতার ওকালতির কারণে বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি নির্মাণ ও বাজারজাত থেমে যায় এবং বহু বছর আর বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি নিয়ে কোনো কাজই হয়নি।
একুশ শতকের একদম শুরুতে বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি অনেকগুলো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। উল্লেখযোগ্য কারণগুলো ছিল কম দক্ষতাসম্পন্ন মোটর, ব্যাটারির স্থায়িত্বকাল নিয়ে সংশয়, দীর্ঘস্থায়ী চার্জিং প্রযুক্তির অভাব।
তবে নব্বইয়ের দশক থেকে গাড়ি নির্মাতারা অনুধাবন করে যে বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়িই নির্মাণ করা উচিত। অনেক বছর পর প্রথম উদ্যোগ নেন জেনারেল মোটরসের তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রজার স্মিথ। তাঁর উদ্যোগেই নব্বইয়ের দশকে জেনারেল মোটরস বাজারে আনে জিএমইভি ১। অবশ্য গাড়িটির শেষ পরিণতি সুখকর ছিল না। এরপর ১৯৯৭ সালে টয়োটা তাদের হাইব্রিড গাড়ি প্রিয়াসের প্রথম মডেল বাজারে আনলে ইলেকট্রিক গাড়ি সম্পর্কে নড়েচড়ে বসে সবাই। আর ইলন মাস্ক তাঁর টেসলা প্রতিষ্ঠা করে কী করেছেন, তা তো দেখতেই পারছেন আপনারা।
টেসলা-পরবর্তী যুগ
২০০৩ সালে টেসলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ির বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসতে শুরু করে। বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি জনপ্রিয় করার উদ্দেশ্যে নির্মাণ প্রতিষ্ঠান গাড়ি ব্যবহারকারীদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে আসছে। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের সরকার তেলের গাড়ির প্রতি নিরুৎসাহিত করে বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি কেনার ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়ার জন্যও কাজ করে আসছে। আশা করা যায় কয়েক দশকের ভেতরে সব গাড়ি হবে বিদ্য়ুৎ চালিত।
বাংলাদেশের অবস্থা
বৈশ্বিক অবস্থার হাত ধরে বাংলাদেশও বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে বসে নেই। ইতিমধ্যে কার্বন নিঃসরণ কমাতে এ ধরনের গাড়ি বাজারে আনতে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে প্রতিষ্ঠানটি বিদ্য়ুৎ চালিত গাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেছে ২০১৮ সালে। তবে করোনাকালীন পরিস্থিতির জন্য এ প্রকল্পের কাজ কিছুটা পিছিয়েছে। জানা গেছে, বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে শুধু বৈদ্যুতিক গাড়িই নয়, মাইক্রোবাস, কাভার্ড ভ্যান ও মিনি ট্রাক, তিন চাকার যান এবং ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল উৎপাদিত হবে।
ইলেকট্রিক গাড়ির সুবিধা
নির্মল পৃথিবীর জন্য অবদান ইলেকট্রিক গাড়িতে জ্বালানি তেল প্রয়োজন হয় না বলে এ গাড়িগুলোতে টেইল পাইপ থাকে না। ফলে গ্যাস নির্গত ও পরিবেশ দূষিত হয় না।
ক্লিন এয়ার জোন ফির আওতামুক্ত
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ক্লিন এয়ার জোন উদ্বোধন হচ্ছে। সেসব জায়গায় তেলচালিত গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ। নিতান্তই প্রবেশ করতে হলে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হয়। ইলেকট্রিক গাড়ি ক্লিন এয়ার জোনে প্রবেশ করতে ফি দিতে হয় না।
সাশ্রয়ী
ইলেকট্রিক গাড়িগুলোর খরচ কম। ইডিএফের সূত্রমতে, একটি ইলেকট্রিক গাড়ি প্রতি ১০০ মাইল যেতে খরচ হয় মাত্র ১ ইউরো ৩০ সেন্ট। সেখানে একটি তেলচালিত গাড়ি ১০০ মাইল যেতে খরচ হবে প্রায় ১১ ইউরো। এ ছাড়া ইলেকট্রিক গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের খরচও অনেক কম।
ড্রাইভিংয়ে আনন্দ
ইলেকট্রিক গাড়ি যে শুধু খরচ বাঁচায়, পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখে, তা-ই নয়; গাড়িগুলো চালিয়ে চালকেরাও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তেলের গাড়ির তুলনায় এই গাড়িগুলো এক্সিলারেশনেও ভালো পারফরম্যান্স দেখায়। এ ছাড়া এই গাড়িগুলোর সেন্টার অব গ্রাভিটি কম থাকায়, হ্যান্ডলিং ও সেফটি ইস্যুও উন্নত থাকে।
সরকারি সুবিধা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার জনগণকে ইলেকট্রিক গাড়ি চালানো ও কেনায় উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন সুবিধা ও অফার দিয়ে থাকে, যা তেলের গাড়িতে পাওয়া যায় না।
ফ্রি পার্কিং-সুবিধা
অনেক দেশে ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য
ফ্রি পার্কিং-সুবিধা দেওয়া হয়। ইংল্যান্ডের মিল্টন কেইন্স এমন এক শহর, যেখানে
১৫ হাজার ফ্রি পার্কিং-সুবিধা রয়েছে ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য।
লেখক: ফাউন্ডার ও সিইও, বাংলা অটোমোবাইল স্কিলস
কত নামে ডাকবেন তাকে। গুগলে সন্ধান করলে চমকে উঠতে হবে। এর নাম দেখাবে হেয়ার আইল্যান্ড। মনে হবে, আটলান্টিক মহাসাগর কিংবা ক্যারিবীয় কোনো নির্জন দ্বীপের নাম দেখছেন। কিন্তু আপনার ভুল ভাঙবে স্থানীয়দের ডাকা নামটি শুনলে। বুঝবেন, আপনি আছেন কলাগাছিয়ার চরে।
২ দিন আগেযতই উন্মুক্ত হচ্ছে, ততই যেন পুরো পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে সৌদি আরব। দেশটাই একটা চমকজাগানিয়া। মরুভূমি, প্রাচীন বৃক্ষের বন, প্রাচীন জনপদ ও সংস্কৃতি—সবই আছে সৌদি আরবে। আছে নিওম নামের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বিলাসবহুল মেগাসিটি।
২ দিন আগেচীনে চলছে বসন্ত উৎসব কিংবা চান্দ্র নববর্ষের আনন্দমুখর আয়োজন। সারা দেশে এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী প্রথা, বাহারি খাবার, সজ্জা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং নানান রীতি-রেওয়াজের মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হচ্ছে।
২ দিন আগেচীনা নববর্ষের ইতিহাস ৩ হাজার বছরেরও বেশি পুরোনো বলে ধারণা করা হয়। এটি শুরু হয়েছিল চীনের প্রাচীন কৃষি ভিত্তিক সমাজে। দেবতা এবং পূর্বপুরুষদের সম্মান, ভালো ফসলের প্রার্থনা এবং মন্দ আত্মা তাড়ানোর সামাজিক প্রথা থেকে এ উৎসবের সূচনা হয়েছিল। প্রায় ১৫ দিন ধরে চলা এ উৎসবের মূলে থাকে পরিবার।
৩ দিন আগে