Ajker Patrika

৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি

Thumbnail image

সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক চাকরির পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষা। এ পরীক্ষার তিনটি ধাপের মধ্যে লিখিত পরীক্ষা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই পরীক্ষার্থীদের ভালো ফল করার জন্য গুরুত্বের সঙ্গে প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি ও পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেছেন ৪৩তম বিসিএসে তথ্য ক্যাডার হিসেবে নির্বাচিত মো: আব্দুল্লাহ শেখ। 

বিগত প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ
লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বিগত বছরের প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রশ্নপত্রের ধরন বুঝতে পারলে প্রস্তুতির কৌশল নির্ধারণ করা সহজ হয়। এ ছাড়া বর্তমান সময়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বেশি গুরুত্ব দিয়ে পড়বেন। এ ক্ষেত্রে প্রতিদিনের পত্রিকা পড়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো মিলিয়ে পড়া সহায়ক হতে পারে।

বিষয় ভিত্তিক পরামর্শ
বাংলা: বাংলা সাহিত্যে প্রস্তুতির জন্য ‘অগ্রদূত’ এবং ড. সৌমিত্র শেখরের লেখা ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা’ বই অনুসরণ করতে পারেন। ব্যাকরণের জন্য বিগত বছরের প্রশ্নগুলো ভালোভাবে সমাধান করতে হবে। এ ছাড়া নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ (পুরোনো ভার্সনের) এবং ড. হায়াৎ মামুদের লেখা ‘উচ্চতর স্বনির্ভর বিশুদ্ধ ভাষা–শিক্ষা’ বই থেকে সিলেবাসের সঙ্গে মিলিয়ে পড়তে পারেন। 

ইংরেজি: ইংরেজিতে ভালো করতে হলে Sentence making structure, vocabulary, synonym, antonyms, idiom phrases, linking verb, grammatical rules ইত্যাদি আয়ত্ত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি বাংলা ও ইংরেজি অনুবাদে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। ইংরেজি সাহিত্যের জন্য ‘A Handbook on English Literature’ বইটি বেশ সহায়ক, আর ভোকাবুলারির জন্য ‘Saifur’s Student Vocabulary’ এবং T.J. Fitikides-এর ‘Common Mistakes in English’ বই পড়া যেতে পারে।

তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান: তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিষয়ের জন্য আগের প্রশ্ন ও সিলেবাস দেখে সমন্বয় করে পড়তে হবে। পরীক্ষায় সময় কম হওয়ায় অপ্রাসঙ্গিক কথা না লেখার বদলে সংক্ষেপে প্রাসঙ্গিক উত্তর করা উচিত। 

গণিত: গণিতে ভালো নম্বর পেতে বিগত বছরের প্রশ্নগুলো সমাধান করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ‘খাইরুল’স বেসিক ম্যাথ’ বই থেকে অনুশীলন করতে পারেন। পাশাপাশি সিলেবাস অনুযায়ী নবম-দশম শ্রেণির ‘সাধারণ গণিত ও উচ্চতর গণিত’ বই অনুসরণ করলেই হবে। 

মানসিক দক্ষতা: এই অংশের অনুশীলনের জন্য ‘IQ Doctor’ বইটি অনুসরণ করা যেতে পারে।

বাংলাদেশ বিষয়ক প্রস্তুতি: বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও চিরাচরিত বিষয় যেমন ভূগোল, নদী, মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, অর্থনীতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি বিষয়ে ভালো ধারণা রাখতে হবে। পরীক্ষার খাতায় এই বিষয়গুলোতে গ্রাফ, চার্ট, টেবিল ইত্যাদি ব্যবহার করে উপস্থাপনা করলে ভালো নম্বর পাওয়া যায়। 

আন্তর্জাতিক বিষয়: আন্তর্জাতিক পরিসরে আলোচিত বিষয়গুলো পড়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন, রাশিয়া-ইউক্রেন, মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনা, ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বিষয়, জাতিসংঘ ইত্যাদি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বাংলাদেশকে ঘিরে বৈশ্বিক ভূমিকা, সমস্যা, সুবিধা-অসুবিধা, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়ে ভালো ধারণা রাখতে হবে।

নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন: অনেকেই মনে করে যে নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন অংশে নম্বর তোলা যায় না। এটি ভুল ধারণা। শুধু বিগত প্রশ্ন পড়লেও এই অংশ থেকে তিন থেকে চার নম্বর কমন পাওয়া যায়। এ বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বিগত বছরের প্রশ্নগুলো ভালোভাবে অনুশীলনের পাশাপাশি ‘Basic View’ বইটি সহায়ক হতে পারে। 

ভূগোল ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা: এই অংশে ভালো করতে হলে নবম-দশম শ্রেণির ভূগোল বইয়ের পাশাপাশি ‘এমপি থ্রি’ বইটি পড়া যেতে পারে। পাশাপাশি Basic View’ বইটিও সহায়ক হতে পারে।

সাধারণ বিজ্ঞান: তরঙ্গ ও শব্দ, স্থির এবং চল তড়িৎ, ইলেকট্রনিকস, শক্তির উৎস এবং এর প্রয়োগ, খাদ্য ও পুষ্টি, রক্ত ও রক্ত সঞ্চালন, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য, সংক্রামক রোগ এবং আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান—সাধারণ বিজ্ঞানে এই সব বিষয় থেকে প্রতিবারই কোনো না কোনো প্রশ্ন আসছে। তাই এই বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। এ ছাড়া সিলেবাসের বিষয় অনুযায়ী নবম-দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞান, রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞান বই থেকে নোট করে পড়বেন। পাশাপাশি সহায়ক বই হিসেবে ‘এমপি থ্রি’ ভালো কাজে দিতে পারে। 

কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি: এই অংশে ভালো করার জন্য ‘আলাল’স কম্পিউটার আওয়ার’ বইটি বেশ সহায়ক। 

অনুলিখন: শাহ বিলিয়া জুলফিকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত