ইজাজুল হক, ঢাকা
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ আরবি ক্যালিগ্রাফার আব্বাস আল-বাগদাদি ২ মে মঙ্গলবার ইন্তেকাল করেছেন। বিশ্বজুড়ে আরবি লিপি ও ক্যালিগ্রাফি চর্চাকারীদের কাছে আস্থার ঠিকানা ছিলেন তিনি। ক্ল্যাসিক্যাল ধারার নিখুঁত ক্যালিগ্রাফি তৈরি করে খ্যাতি অর্জন করেন। আরবি শিল্পকলায় তাঁর অসামান্য অবদান এবং মুসলিম বিশ্বে তাঁর প্রভাবের কারণে একাধিকবার বিশ্বের ৫০০ প্রভাবশালী মুসলমানের তালিকায় স্থান পেয়েছেন।
পুরো নাম আব্বাস শাকির জুদি আল-বাগদাদি। জন্ম ১৯৫১ সালে, বাগদাদে। পাঁচ দশকের কর্মজীবনে নিজেকে একাধারে ক্যালিগ্রাফার, লেখক ও ইসলামি শিল্পকলার শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ১৯৬৯ সালে বাগদাদের সেরা তরুণ চিত্রশিল্পীর পুরস্কার পান। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ইরাকের বিখ্যাত কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থায় কাজ করেন। প্রায় একই সময়ে ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ইরাকি ক্যালিগ্রাফার’-এ আরবি লিপির শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন।
১৯৮৮ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ইরাকি ক্যালিগ্রাফার’-এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আমেরিকা ইরাকে আক্রমণ করলে তিনি জর্ডান চলে যান। সেখানে আরবি লিপি ও ক্যালিগ্রাফির শিক্ষক হিসেবে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কাজ করেন। ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থট’-এ আরবি লিপির শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ইরাক ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক ছিলেন।
আধুনিক নিয়মনীতির আলোকে সময়োপযোগী করে ঐতিহ্যবাহী ক্যালিগ্রাফিশৈলীগুলোর পুনর্জাগরণ তাঁর সেরা কীর্তি। কয়েকটি লিখনশৈলীতে তিনি ক্যালিগ্রাফি করতেন। এর মধ্যে খত্ব আল-সুলুস ও খত্ব আল-নুসখ অন্যতম। আধুনিক ক্যালিগ্রাফির নামে ক্যালিগ্রাফির নিয়মভাঙার প্রকল্পগুলোর ঘোর বিরোধী ছিলেন আব্বাস। আরবি ক্যালিগ্রাফিবিষয়ক বই ‘মিজানুল খত্ব আল-আরবি’ তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা।
আব্বাস আল-বাগদাদির উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে—ইরাকের জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মসনদ, পাসপোর্ট, ইরাকি মুদ্রা দিনার, রাষ্ট্রীয় মনোগ্রামসহ অসংখ্য জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতীকের নকশা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি মুদ্রার নকশাও করেছেন তিনি। তবে তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ঘটনা নিঃসন্দেহে ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের আদেশে কোরআনের প্রতিলিপি তৈরি।
১৯৯৭ সালে সাদ্দাম নিজের রক্ত দিয়ে পবিত্র কোরআনের একটি প্রতিলিপি তৈরির পরিকল্পনা করেন। এ কাজে নিয়োগ দেওয়া হয় আব্বাস আল-বাগদাদিকে। তিনি কয়েকজন ছাত্রকে নিয়ে নিজস্ব শৈলীতে এ কাজ সম্পন্ন করেন এবং সাদ্দামের কাছ থেকে পুরস্কৃত হন। অবশ্য তখন সাদ্দামের এমন কাজের নিন্দা করেছিল সৌদি আরবসহ কয়েকটি আরব দেশ। পরে সাদ্দামের পতনের পর সেই প্রতিলিপিও জাদুঘর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। (বিবিসি, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০০০; অ্যারাবিক নিউজ, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০০০)
আব্বাস আল-বাগদাদি জানান, কাজটি সম্পন্ন করতে ২ বছর সময় লেগেছিল। ২ বছরে সাদ্দাম ২৪ থেকে ২৭ লিটার রক্ত দেন। সেই রক্ত বিশেষ কেমিক্যালে মিশিয়ে পবিত্র কোরআনের ৬ হাজার আয়াত ও ৩ লাখ ৩৬ হাজার শব্দ লেখা হয়। (গার্ডিয়ান, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১০) অবশ্য পশ্চিমা অনেক চিকিৎসক ও সাংবাদিকেরা এই তথ্যের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
আব্বাস এই অনুলিপি তৈরির কারণ সম্পর্কে বলেন, ‘সাদ্দাম আমাকে বাগদাদের ইবনে সিনা হাসপাতালে ডেকে পাঠান। সেখানে হত্যাচেষ্টায় আহত হওয়ার পর চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তাঁর ছেলে উদয় সাদ্দাম। তিনি সুস্থ হয়ে উঠলে সাদ্দাম নিজের রক্ত দিয়ে কোরআন লেখার শপথ করেন। ২০০০ সালে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁর হাতে আমি কোরআনের কপিটি হস্তান্তর করি।’ (অ্যারাবিক নিউজ, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪)
আব্বাস শাকিরের জীবনে অপ্রাপ্তি ছিল। সাদ্দামের আমলে রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন। তবে যথাযথ সম্মান তিনি পাননি। তিনি বলেন, ‘কর্মকর্তারা আমাকে ‘‘দেশের রত্নভান্ডার’’ বলতেন। তাঁরা আমাকে দিয়ে রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দলিল লিখিয়েছিলেন, তবে আমি যথাযথ পারিশ্রমিক পাইনি।’
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ আরবি ক্যালিগ্রাফার আব্বাস আল-বাগদাদি ২ মে মঙ্গলবার ইন্তেকাল করেছেন। বিশ্বজুড়ে আরবি লিপি ও ক্যালিগ্রাফি চর্চাকারীদের কাছে আস্থার ঠিকানা ছিলেন তিনি। ক্ল্যাসিক্যাল ধারার নিখুঁত ক্যালিগ্রাফি তৈরি করে খ্যাতি অর্জন করেন। আরবি শিল্পকলায় তাঁর অসামান্য অবদান এবং মুসলিম বিশ্বে তাঁর প্রভাবের কারণে একাধিকবার বিশ্বের ৫০০ প্রভাবশালী মুসলমানের তালিকায় স্থান পেয়েছেন।
পুরো নাম আব্বাস শাকির জুদি আল-বাগদাদি। জন্ম ১৯৫১ সালে, বাগদাদে। পাঁচ দশকের কর্মজীবনে নিজেকে একাধারে ক্যালিগ্রাফার, লেখক ও ইসলামি শিল্পকলার শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ১৯৬৯ সালে বাগদাদের সেরা তরুণ চিত্রশিল্পীর পুরস্কার পান। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ইরাকের বিখ্যাত কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থায় কাজ করেন। প্রায় একই সময়ে ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ইরাকি ক্যালিগ্রাফার’-এ আরবি লিপির শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন।
১৯৮৮ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ইরাকি ক্যালিগ্রাফার’-এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আমেরিকা ইরাকে আক্রমণ করলে তিনি জর্ডান চলে যান। সেখানে আরবি লিপি ও ক্যালিগ্রাফির শিক্ষক হিসেবে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কাজ করেন। ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থট’-এ আরবি লিপির শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ইরাক ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক ছিলেন।
আধুনিক নিয়মনীতির আলোকে সময়োপযোগী করে ঐতিহ্যবাহী ক্যালিগ্রাফিশৈলীগুলোর পুনর্জাগরণ তাঁর সেরা কীর্তি। কয়েকটি লিখনশৈলীতে তিনি ক্যালিগ্রাফি করতেন। এর মধ্যে খত্ব আল-সুলুস ও খত্ব আল-নুসখ অন্যতম। আধুনিক ক্যালিগ্রাফির নামে ক্যালিগ্রাফির নিয়মভাঙার প্রকল্পগুলোর ঘোর বিরোধী ছিলেন আব্বাস। আরবি ক্যালিগ্রাফিবিষয়ক বই ‘মিজানুল খত্ব আল-আরবি’ তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা।
আব্বাস আল-বাগদাদির উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে—ইরাকের জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মসনদ, পাসপোর্ট, ইরাকি মুদ্রা দিনার, রাষ্ট্রীয় মনোগ্রামসহ অসংখ্য জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতীকের নকশা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি মুদ্রার নকশাও করেছেন তিনি। তবে তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ঘটনা নিঃসন্দেহে ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের আদেশে কোরআনের প্রতিলিপি তৈরি।
১৯৯৭ সালে সাদ্দাম নিজের রক্ত দিয়ে পবিত্র কোরআনের একটি প্রতিলিপি তৈরির পরিকল্পনা করেন। এ কাজে নিয়োগ দেওয়া হয় আব্বাস আল-বাগদাদিকে। তিনি কয়েকজন ছাত্রকে নিয়ে নিজস্ব শৈলীতে এ কাজ সম্পন্ন করেন এবং সাদ্দামের কাছ থেকে পুরস্কৃত হন। অবশ্য তখন সাদ্দামের এমন কাজের নিন্দা করেছিল সৌদি আরবসহ কয়েকটি আরব দেশ। পরে সাদ্দামের পতনের পর সেই প্রতিলিপিও জাদুঘর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। (বিবিসি, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০০০; অ্যারাবিক নিউজ, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০০০)
আব্বাস আল-বাগদাদি জানান, কাজটি সম্পন্ন করতে ২ বছর সময় লেগেছিল। ২ বছরে সাদ্দাম ২৪ থেকে ২৭ লিটার রক্ত দেন। সেই রক্ত বিশেষ কেমিক্যালে মিশিয়ে পবিত্র কোরআনের ৬ হাজার আয়াত ও ৩ লাখ ৩৬ হাজার শব্দ লেখা হয়। (গার্ডিয়ান, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১০) অবশ্য পশ্চিমা অনেক চিকিৎসক ও সাংবাদিকেরা এই তথ্যের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
আব্বাস এই অনুলিপি তৈরির কারণ সম্পর্কে বলেন, ‘সাদ্দাম আমাকে বাগদাদের ইবনে সিনা হাসপাতালে ডেকে পাঠান। সেখানে হত্যাচেষ্টায় আহত হওয়ার পর চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তাঁর ছেলে উদয় সাদ্দাম। তিনি সুস্থ হয়ে উঠলে সাদ্দাম নিজের রক্ত দিয়ে কোরআন লেখার শপথ করেন। ২০০০ সালে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁর হাতে আমি কোরআনের কপিটি হস্তান্তর করি।’ (অ্যারাবিক নিউজ, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪)
আব্বাস শাকিরের জীবনে অপ্রাপ্তি ছিল। সাদ্দামের আমলে রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন। তবে যথাযথ সম্মান তিনি পাননি। তিনি বলেন, ‘কর্মকর্তারা আমাকে ‘‘দেশের রত্নভান্ডার’’ বলতেন। তাঁরা আমাকে দিয়ে রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দলিল লিখিয়েছিলেন, তবে আমি যথাযথ পারিশ্রমিক পাইনি।’
নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ এবং মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি শুধু একটি আনুষ্ঠানিক ইবাদত নয়; বরং মুমিনের আত্মিক প্রশান্তি, চারিত্রিক পরিশুদ্ধি ও জীবনের ভারসাম্য রক্ষার একটি মহান উপায়। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।
৬ ঘণ্টা আগেআমাদের দৈনন্দিন জীবনে নতুন কাপড় কেনা ও তা পরিধান করা একটি সাধারণ ঘটনা। কেউ ঈদের জন্য কেনে, কেউ বিয়ে-সাদির জন্য, কেউ বা নিজের প্রয়োজনে। নতুন কাপড় কিনে পরিধান করার সময় দোয়া পড়লে আল্লাহর বিশেষ রহমত পাওয়া যায়।
১ দিন আগেসপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম ও সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ দিন। এই দিনটি মুসলমানদের জন্য একটি সাপ্তাহিক ঈদের মতো, যা আত্মশুদ্ধি, ইবাদত এবং কল্যাণ অর্জনের বিশেষ সুযোগ এনে দেয়। এই বরকতময় দিনে কী কী করণীয় তা জানা এবং তা মেনে চলা একজন মুমিনের দায়িত্ব।
২ দিন আগেমানুষের জীবনে সবচেয়ে কষ্টকর মুহূর্তগুলোর একটি হলো আপনজন হারানোর বেদনা। এমন শোকের সময় মানুষ থাকে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত, দুর্বল ও অনেকটা একা। ঠিক তখনই সে আশায় থাকে কারও সহানুভূতির, সান্ত্বনার কিংবা একটু অনুভব করার মতো মানবিক উপস্থিতির। এই বিপদ ও কষ্টের সময়টিতে...
২ দিন আগে