ইজাজুল হক, ঢাকা
হজ আদায় করতে মক্কায় যাওয়ার সময় হাজিদের কাফেলায় উটের পিঠে করে একটি যাত্রীহীন সাজানো পালকি নিয়ে যাওয়া হতো, একেই মাহমাল বলা হয়। ইসলামের পবিত্র স্থানগুলোর প্রতি সুলতানদের দায়বদ্ধতা প্রকাশের জন্য তাঁদের ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে হাজিদের সঙ্গে মাহমাল পাঠাতেন তাঁরা। সব মাহমালেরই একটি গাম্ভীর্যপূর্ণ কারুকাজ করা আবরণ থাকত, যাকে কিসওয়া বা সিতর বলা হতো। ১৩ শতক থেকে ২০ শতকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত এই ঐতিহ্যের প্রচলন ছিল।
আরবি মাহমাল শব্দের অর্থ বহনকৃত। উটের পিঠে বহনযোগ্য কাঠের ফ্রেমে এটি তৈরি করা হতো। ওপরের দিকে চাঁদ খচিত একটি শীর্ষ বিন্দু থাকত। সবচেয়ে পুরোনো (মামলুক আমল) মাহমালগুলোর কিসওয়ার রং হলুদ ছিল; পরে লাল ও সবুজ সেই স্থান দখলে নেয়। কিসওয়ার কারুকাজে কোরআনের আয়াত এবং সুলতানদের মনোগ্রাম আঁকা থাকত। তবে যাত্রাপথের ধুলাবালু থেকে রক্ষা পেতে আসল কিসওয়ার ওপর একটি সাধারণ নকল কিসওয়া পরিয়ে দেওয়া হতো।
লিখিত দলিত মতে, মামলুক আমলের মিসরীয় শাসক সুলতান রুকুনুদ্দিন বাইবার্স কায়রো থেকে প্রথম মাহমাল পাঠান। এরপর দামেস্ক, ইয়েমেন, দারফুর, হায়দরাবাদ ও ইরানের তিমুরিদ সাম্রাজ্য থেকেও বিভিন্ন সময়ে মাহমাল পাঠানো হয়। এ ছাড়া ১৪ শতকের শেষের দিকে মিসরের আসয়ুত থেকেও স্বতন্ত্র একটি কাফেলার সঙ্গে মাহমাল পাঠানো হয়। ১৯২৬ সালে মক্কায় মাহমাল পাঠানোর এই ঐতিহ্যের ইতি ঘটলেও কায়রোতে তা ১৯৫২ সাল পর্যন্ত সাড়ম্বরে প্রদর্শন করা হয়।
বিভিন্ন স্থান থেকে মাহমাল পৌঁছালে মক্কায় উৎসবের আমেজ দেখা যেত। স্থানীয় লোকজন ও হাজিরা তা দেখতে পথের দুই পাশে ভিড় করতেন। শহরে প্রবেশের আগমুহূর্তে ওপরের সাধারণ ধুলোময় কিসওয়াটি খুলে ভেতরের সুন্দর কারুকাজে শোভিত আসলটি উন্মোচন করা হতো। পবিত্র কাবাঘরের সামনে জুতসই জায়গা পেতে বিভিন্ন দেশের মাহমালগুলোর মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলত। হজ শেষে যখন মাহমালগুলো নিজ নিজ দেশে ফেরত নেওয়া হতো, তখন মানুষ তা স্পর্শ করে বরকত নিত। কাফেলা শহরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের নিয়ে তা স্পর্শ করতে বেরিয়ে পড়তেন। অনেকে মাহমালের ভেতরে রুমাল রেখে বরকত নিতেন।
কখন থেকে মাহমালের প্রচলন শুরু হয়েছিল, তা ঠিক জানা যায় না। তবে তুর্কি পরিব্রাজক ইভলিয়া চেলেবি লিখেছেন, সবচেয়ে প্রাচীন মাহমালটিতে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জুতা, জামা, বাটিসহ বিভিন্ন পবিত্র স্মৃতিচিহ্ন বহন করা হয়েছিল এবং এ কারণে এটিকে মহানবীর রওজার প্রতিনিধি হিসেবে দেখা হয়েছিল। আরেকটি সূত্রমতে, মিসরের সুলতানাখ্যাত নারী শাসক সাজার আল-দুর হজে যেতে একটি রঙিন পালকি বানিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে নেতারা খালি পালকিটি প্রতিবছর হজে নিয়ে যেতেন। এভাবে মাহমালের প্রচলন হয়।
কেউ কেউ বলেন, মাহমালের ভেতর কিছুই থাকত না। তবে অনেকে পবিত্র কোরআন থাকার কথা বলেছেন। ১৫৭৫ সালের একটি ঐতিহাসিক দলিলে বড় সোনার অক্ষরে লেখা কোরআন বহন করা একটি মাহমালের কথা বলা হয়েছে। আনিসুল হুজ্জাজ বইয়ে ১৬৭৭ সালের হজের বিবরণে দামেস্কের মাহমালকে কোরআনসহ চিত্রিত করা হয়েছে। সুইস পর্যটক জন লুইস বার্কহার্ট ১৮১৪ সালে মিসরের একটি হজ কাফেলা পর্যবেক্ষণ করে লেখেন, মাহমালে একটি ধর্মীয় বই ছিল, সেটি কোরআন নয়। মক্কা থেকে ফেরার সময় লোকজন সেই বইয়ে চুমু খেয়ে এবং হাত লাগিয়ে বরকত নিত। ১৮৩০ সালে ব্রিটিশ পর্যটক অ্যাডওয়ার্ড উইলিয়াম লেইন একটি মাহমাল সম্পর্কে লিখেছেন, মাহমালটি খালি ছিল, তবে বাইরের দিকে ওপরে রুপার খাপে দুটি কোরআন ছিল—একটি খোলা এবং আরেকটি গোটানো।
সূত্র: ইউরোপিয়ানা ডট ইইউ, নুনপোস্ট ডটকম, খলিলি কালেকশনস, দ্য হজ: কালেক্টেড এসেজ, হজ: জার্নি টু দ্য হার্ট অব ইসলাম।
হজ আদায় করতে মক্কায় যাওয়ার সময় হাজিদের কাফেলায় উটের পিঠে করে একটি যাত্রীহীন সাজানো পালকি নিয়ে যাওয়া হতো, একেই মাহমাল বলা হয়। ইসলামের পবিত্র স্থানগুলোর প্রতি সুলতানদের দায়বদ্ধতা প্রকাশের জন্য তাঁদের ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে হাজিদের সঙ্গে মাহমাল পাঠাতেন তাঁরা। সব মাহমালেরই একটি গাম্ভীর্যপূর্ণ কারুকাজ করা আবরণ থাকত, যাকে কিসওয়া বা সিতর বলা হতো। ১৩ শতক থেকে ২০ শতকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত এই ঐতিহ্যের প্রচলন ছিল।
আরবি মাহমাল শব্দের অর্থ বহনকৃত। উটের পিঠে বহনযোগ্য কাঠের ফ্রেমে এটি তৈরি করা হতো। ওপরের দিকে চাঁদ খচিত একটি শীর্ষ বিন্দু থাকত। সবচেয়ে পুরোনো (মামলুক আমল) মাহমালগুলোর কিসওয়ার রং হলুদ ছিল; পরে লাল ও সবুজ সেই স্থান দখলে নেয়। কিসওয়ার কারুকাজে কোরআনের আয়াত এবং সুলতানদের মনোগ্রাম আঁকা থাকত। তবে যাত্রাপথের ধুলাবালু থেকে রক্ষা পেতে আসল কিসওয়ার ওপর একটি সাধারণ নকল কিসওয়া পরিয়ে দেওয়া হতো।
লিখিত দলিত মতে, মামলুক আমলের মিসরীয় শাসক সুলতান রুকুনুদ্দিন বাইবার্স কায়রো থেকে প্রথম মাহমাল পাঠান। এরপর দামেস্ক, ইয়েমেন, দারফুর, হায়দরাবাদ ও ইরানের তিমুরিদ সাম্রাজ্য থেকেও বিভিন্ন সময়ে মাহমাল পাঠানো হয়। এ ছাড়া ১৪ শতকের শেষের দিকে মিসরের আসয়ুত থেকেও স্বতন্ত্র একটি কাফেলার সঙ্গে মাহমাল পাঠানো হয়। ১৯২৬ সালে মক্কায় মাহমাল পাঠানোর এই ঐতিহ্যের ইতি ঘটলেও কায়রোতে তা ১৯৫২ সাল পর্যন্ত সাড়ম্বরে প্রদর্শন করা হয়।
বিভিন্ন স্থান থেকে মাহমাল পৌঁছালে মক্কায় উৎসবের আমেজ দেখা যেত। স্থানীয় লোকজন ও হাজিরা তা দেখতে পথের দুই পাশে ভিড় করতেন। শহরে প্রবেশের আগমুহূর্তে ওপরের সাধারণ ধুলোময় কিসওয়াটি খুলে ভেতরের সুন্দর কারুকাজে শোভিত আসলটি উন্মোচন করা হতো। পবিত্র কাবাঘরের সামনে জুতসই জায়গা পেতে বিভিন্ন দেশের মাহমালগুলোর মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলত। হজ শেষে যখন মাহমালগুলো নিজ নিজ দেশে ফেরত নেওয়া হতো, তখন মানুষ তা স্পর্শ করে বরকত নিত। কাফেলা শহরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের নিয়ে তা স্পর্শ করতে বেরিয়ে পড়তেন। অনেকে মাহমালের ভেতরে রুমাল রেখে বরকত নিতেন।
কখন থেকে মাহমালের প্রচলন শুরু হয়েছিল, তা ঠিক জানা যায় না। তবে তুর্কি পরিব্রাজক ইভলিয়া চেলেবি লিখেছেন, সবচেয়ে প্রাচীন মাহমালটিতে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জুতা, জামা, বাটিসহ বিভিন্ন পবিত্র স্মৃতিচিহ্ন বহন করা হয়েছিল এবং এ কারণে এটিকে মহানবীর রওজার প্রতিনিধি হিসেবে দেখা হয়েছিল। আরেকটি সূত্রমতে, মিসরের সুলতানাখ্যাত নারী শাসক সাজার আল-দুর হজে যেতে একটি রঙিন পালকি বানিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে নেতারা খালি পালকিটি প্রতিবছর হজে নিয়ে যেতেন। এভাবে মাহমালের প্রচলন হয়।
কেউ কেউ বলেন, মাহমালের ভেতর কিছুই থাকত না। তবে অনেকে পবিত্র কোরআন থাকার কথা বলেছেন। ১৫৭৫ সালের একটি ঐতিহাসিক দলিলে বড় সোনার অক্ষরে লেখা কোরআন বহন করা একটি মাহমালের কথা বলা হয়েছে। আনিসুল হুজ্জাজ বইয়ে ১৬৭৭ সালের হজের বিবরণে দামেস্কের মাহমালকে কোরআনসহ চিত্রিত করা হয়েছে। সুইস পর্যটক জন লুইস বার্কহার্ট ১৮১৪ সালে মিসরের একটি হজ কাফেলা পর্যবেক্ষণ করে লেখেন, মাহমালে একটি ধর্মীয় বই ছিল, সেটি কোরআন নয়। মক্কা থেকে ফেরার সময় লোকজন সেই বইয়ে চুমু খেয়ে এবং হাত লাগিয়ে বরকত নিত। ১৮৩০ সালে ব্রিটিশ পর্যটক অ্যাডওয়ার্ড উইলিয়াম লেইন একটি মাহমাল সম্পর্কে লিখেছেন, মাহমালটি খালি ছিল, তবে বাইরের দিকে ওপরে রুপার খাপে দুটি কোরআন ছিল—একটি খোলা এবং আরেকটি গোটানো।
সূত্র: ইউরোপিয়ানা ডট ইইউ, নুনপোস্ট ডটকম, খলিলি কালেকশনস, দ্য হজ: কালেক্টেড এসেজ, হজ: জার্নি টু দ্য হার্ট অব ইসলাম।
ইজাজুল হক, ঢাকা
হজ আদায় করতে মক্কায় যাওয়ার সময় হাজিদের কাফেলায় উটের পিঠে করে একটি যাত্রীহীন সাজানো পালকি নিয়ে যাওয়া হতো, একেই মাহমাল বলা হয়। ইসলামের পবিত্র স্থানগুলোর প্রতি সুলতানদের দায়বদ্ধতা প্রকাশের জন্য তাঁদের ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে হাজিদের সঙ্গে মাহমাল পাঠাতেন তাঁরা। সব মাহমালেরই একটি গাম্ভীর্যপূর্ণ কারুকাজ করা আবরণ থাকত, যাকে কিসওয়া বা সিতর বলা হতো। ১৩ শতক থেকে ২০ শতকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত এই ঐতিহ্যের প্রচলন ছিল।
আরবি মাহমাল শব্দের অর্থ বহনকৃত। উটের পিঠে বহনযোগ্য কাঠের ফ্রেমে এটি তৈরি করা হতো। ওপরের দিকে চাঁদ খচিত একটি শীর্ষ বিন্দু থাকত। সবচেয়ে পুরোনো (মামলুক আমল) মাহমালগুলোর কিসওয়ার রং হলুদ ছিল; পরে লাল ও সবুজ সেই স্থান দখলে নেয়। কিসওয়ার কারুকাজে কোরআনের আয়াত এবং সুলতানদের মনোগ্রাম আঁকা থাকত। তবে যাত্রাপথের ধুলাবালু থেকে রক্ষা পেতে আসল কিসওয়ার ওপর একটি সাধারণ নকল কিসওয়া পরিয়ে দেওয়া হতো।
লিখিত দলিত মতে, মামলুক আমলের মিসরীয় শাসক সুলতান রুকুনুদ্দিন বাইবার্স কায়রো থেকে প্রথম মাহমাল পাঠান। এরপর দামেস্ক, ইয়েমেন, দারফুর, হায়দরাবাদ ও ইরানের তিমুরিদ সাম্রাজ্য থেকেও বিভিন্ন সময়ে মাহমাল পাঠানো হয়। এ ছাড়া ১৪ শতকের শেষের দিকে মিসরের আসয়ুত থেকেও স্বতন্ত্র একটি কাফেলার সঙ্গে মাহমাল পাঠানো হয়। ১৯২৬ সালে মক্কায় মাহমাল পাঠানোর এই ঐতিহ্যের ইতি ঘটলেও কায়রোতে তা ১৯৫২ সাল পর্যন্ত সাড়ম্বরে প্রদর্শন করা হয়।
বিভিন্ন স্থান থেকে মাহমাল পৌঁছালে মক্কায় উৎসবের আমেজ দেখা যেত। স্থানীয় লোকজন ও হাজিরা তা দেখতে পথের দুই পাশে ভিড় করতেন। শহরে প্রবেশের আগমুহূর্তে ওপরের সাধারণ ধুলোময় কিসওয়াটি খুলে ভেতরের সুন্দর কারুকাজে শোভিত আসলটি উন্মোচন করা হতো। পবিত্র কাবাঘরের সামনে জুতসই জায়গা পেতে বিভিন্ন দেশের মাহমালগুলোর মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলত। হজ শেষে যখন মাহমালগুলো নিজ নিজ দেশে ফেরত নেওয়া হতো, তখন মানুষ তা স্পর্শ করে বরকত নিত। কাফেলা শহরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের নিয়ে তা স্পর্শ করতে বেরিয়ে পড়তেন। অনেকে মাহমালের ভেতরে রুমাল রেখে বরকত নিতেন।
কখন থেকে মাহমালের প্রচলন শুরু হয়েছিল, তা ঠিক জানা যায় না। তবে তুর্কি পরিব্রাজক ইভলিয়া চেলেবি লিখেছেন, সবচেয়ে প্রাচীন মাহমালটিতে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জুতা, জামা, বাটিসহ বিভিন্ন পবিত্র স্মৃতিচিহ্ন বহন করা হয়েছিল এবং এ কারণে এটিকে মহানবীর রওজার প্রতিনিধি হিসেবে দেখা হয়েছিল। আরেকটি সূত্রমতে, মিসরের সুলতানাখ্যাত নারী শাসক সাজার আল-দুর হজে যেতে একটি রঙিন পালকি বানিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে নেতারা খালি পালকিটি প্রতিবছর হজে নিয়ে যেতেন। এভাবে মাহমালের প্রচলন হয়।
কেউ কেউ বলেন, মাহমালের ভেতর কিছুই থাকত না। তবে অনেকে পবিত্র কোরআন থাকার কথা বলেছেন। ১৫৭৫ সালের একটি ঐতিহাসিক দলিলে বড় সোনার অক্ষরে লেখা কোরআন বহন করা একটি মাহমালের কথা বলা হয়েছে। আনিসুল হুজ্জাজ বইয়ে ১৬৭৭ সালের হজের বিবরণে দামেস্কের মাহমালকে কোরআনসহ চিত্রিত করা হয়েছে। সুইস পর্যটক জন লুইস বার্কহার্ট ১৮১৪ সালে মিসরের একটি হজ কাফেলা পর্যবেক্ষণ করে লেখেন, মাহমালে একটি ধর্মীয় বই ছিল, সেটি কোরআন নয়। মক্কা থেকে ফেরার সময় লোকজন সেই বইয়ে চুমু খেয়ে এবং হাত লাগিয়ে বরকত নিত। ১৮৩০ সালে ব্রিটিশ পর্যটক অ্যাডওয়ার্ড উইলিয়াম লেইন একটি মাহমাল সম্পর্কে লিখেছেন, মাহমালটি খালি ছিল, তবে বাইরের দিকে ওপরে রুপার খাপে দুটি কোরআন ছিল—একটি খোলা এবং আরেকটি গোটানো।
সূত্র: ইউরোপিয়ানা ডট ইইউ, নুনপোস্ট ডটকম, খলিলি কালেকশনস, দ্য হজ: কালেক্টেড এসেজ, হজ: জার্নি টু দ্য হার্ট অব ইসলাম।
হজ আদায় করতে মক্কায় যাওয়ার সময় হাজিদের কাফেলায় উটের পিঠে করে একটি যাত্রীহীন সাজানো পালকি নিয়ে যাওয়া হতো, একেই মাহমাল বলা হয়। ইসলামের পবিত্র স্থানগুলোর প্রতি সুলতানদের দায়বদ্ধতা প্রকাশের জন্য তাঁদের ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে হাজিদের সঙ্গে মাহমাল পাঠাতেন তাঁরা। সব মাহমালেরই একটি গাম্ভীর্যপূর্ণ কারুকাজ করা আবরণ থাকত, যাকে কিসওয়া বা সিতর বলা হতো। ১৩ শতক থেকে ২০ শতকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত এই ঐতিহ্যের প্রচলন ছিল।
আরবি মাহমাল শব্দের অর্থ বহনকৃত। উটের পিঠে বহনযোগ্য কাঠের ফ্রেমে এটি তৈরি করা হতো। ওপরের দিকে চাঁদ খচিত একটি শীর্ষ বিন্দু থাকত। সবচেয়ে পুরোনো (মামলুক আমল) মাহমালগুলোর কিসওয়ার রং হলুদ ছিল; পরে লাল ও সবুজ সেই স্থান দখলে নেয়। কিসওয়ার কারুকাজে কোরআনের আয়াত এবং সুলতানদের মনোগ্রাম আঁকা থাকত। তবে যাত্রাপথের ধুলাবালু থেকে রক্ষা পেতে আসল কিসওয়ার ওপর একটি সাধারণ নকল কিসওয়া পরিয়ে দেওয়া হতো।
লিখিত দলিত মতে, মামলুক আমলের মিসরীয় শাসক সুলতান রুকুনুদ্দিন বাইবার্স কায়রো থেকে প্রথম মাহমাল পাঠান। এরপর দামেস্ক, ইয়েমেন, দারফুর, হায়দরাবাদ ও ইরানের তিমুরিদ সাম্রাজ্য থেকেও বিভিন্ন সময়ে মাহমাল পাঠানো হয়। এ ছাড়া ১৪ শতকের শেষের দিকে মিসরের আসয়ুত থেকেও স্বতন্ত্র একটি কাফেলার সঙ্গে মাহমাল পাঠানো হয়। ১৯২৬ সালে মক্কায় মাহমাল পাঠানোর এই ঐতিহ্যের ইতি ঘটলেও কায়রোতে তা ১৯৫২ সাল পর্যন্ত সাড়ম্বরে প্রদর্শন করা হয়।
বিভিন্ন স্থান থেকে মাহমাল পৌঁছালে মক্কায় উৎসবের আমেজ দেখা যেত। স্থানীয় লোকজন ও হাজিরা তা দেখতে পথের দুই পাশে ভিড় করতেন। শহরে প্রবেশের আগমুহূর্তে ওপরের সাধারণ ধুলোময় কিসওয়াটি খুলে ভেতরের সুন্দর কারুকাজে শোভিত আসলটি উন্মোচন করা হতো। পবিত্র কাবাঘরের সামনে জুতসই জায়গা পেতে বিভিন্ন দেশের মাহমালগুলোর মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলত। হজ শেষে যখন মাহমালগুলো নিজ নিজ দেশে ফেরত নেওয়া হতো, তখন মানুষ তা স্পর্শ করে বরকত নিত। কাফেলা শহরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের নিয়ে তা স্পর্শ করতে বেরিয়ে পড়তেন। অনেকে মাহমালের ভেতরে রুমাল রেখে বরকত নিতেন।
কখন থেকে মাহমালের প্রচলন শুরু হয়েছিল, তা ঠিক জানা যায় না। তবে তুর্কি পরিব্রাজক ইভলিয়া চেলেবি লিখেছেন, সবচেয়ে প্রাচীন মাহমালটিতে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জুতা, জামা, বাটিসহ বিভিন্ন পবিত্র স্মৃতিচিহ্ন বহন করা হয়েছিল এবং এ কারণে এটিকে মহানবীর রওজার প্রতিনিধি হিসেবে দেখা হয়েছিল। আরেকটি সূত্রমতে, মিসরের সুলতানাখ্যাত নারী শাসক সাজার আল-দুর হজে যেতে একটি রঙিন পালকি বানিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে নেতারা খালি পালকিটি প্রতিবছর হজে নিয়ে যেতেন। এভাবে মাহমালের প্রচলন হয়।
কেউ কেউ বলেন, মাহমালের ভেতর কিছুই থাকত না। তবে অনেকে পবিত্র কোরআন থাকার কথা বলেছেন। ১৫৭৫ সালের একটি ঐতিহাসিক দলিলে বড় সোনার অক্ষরে লেখা কোরআন বহন করা একটি মাহমালের কথা বলা হয়েছে। আনিসুল হুজ্জাজ বইয়ে ১৬৭৭ সালের হজের বিবরণে দামেস্কের মাহমালকে কোরআনসহ চিত্রিত করা হয়েছে। সুইস পর্যটক জন লুইস বার্কহার্ট ১৮১৪ সালে মিসরের একটি হজ কাফেলা পর্যবেক্ষণ করে লেখেন, মাহমালে একটি ধর্মীয় বই ছিল, সেটি কোরআন নয়। মক্কা থেকে ফেরার সময় লোকজন সেই বইয়ে চুমু খেয়ে এবং হাত লাগিয়ে বরকত নিত। ১৮৩০ সালে ব্রিটিশ পর্যটক অ্যাডওয়ার্ড উইলিয়াম লেইন একটি মাহমাল সম্পর্কে লিখেছেন, মাহমালটি খালি ছিল, তবে বাইরের দিকে ওপরে রুপার খাপে দুটি কোরআন ছিল—একটি খোলা এবং আরেকটি গোটানো।
সূত্র: ইউরোপিয়ানা ডট ইইউ, নুনপোস্ট ডটকম, খলিলি কালেকশনস, দ্য হজ: কালেক্টেড এসেজ, হজ: জার্নি টু দ্য হার্ট অব ইসলাম।
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১০ ঘণ্টা আগেঅগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা।
২০ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৫ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৯ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫০ মিনিট | ০৫: ২৬ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৮ মিনিট | ০৬: ৪২ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৩ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৫ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৯ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫০ মিনিট | ০৫: ২৬ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৮ মিনিট | ০৬: ৪২ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৩ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
হজ আদায় করতে মক্কায় যাওয়ার সময় হাজিদের কাফেলায় উটের পিঠে করে একটি যাত্রীহীন সাজানো পালকি নিয়ে যাওয়া হতো, একেই মাহমাল বলা হয়। ইসলামের পবিত্র স্থানগুলোর প্রতি সুলতানদের দায়বদ্ধতা প্রকাশের জন্য তাঁদের ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে হাজিদের সঙ্গে মাহমাল পাঠাতেন তাঁরা। সব মাহমালেরই একটি গাম্ভীর্যপূর্ণ কারুকাজ করা
১৯ মে ২০২৩যশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১০ ঘণ্টা আগেঅগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা।
২০ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেরায়হান আল ইমরান
যশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
আবু হানিফা (রহ.)-এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
তাঁর পুরো নাম, নুমান বিন সাবেত বিন মারজুবান আল-কুফি। তবে ‘আবু হানিফা’ উপাধিতেই বেশি পরিচিত। বর্ণনা অনুযায়ী, তৎকালীন কুফায় ‘হানিফা’ শব্দটি দোয়াত বা কলমের কালি বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। যেহেতু তিনি অধিকাংশ সময় গবেষণা ও লেখালেখিতে ব্যস্ত থাকতেন, তাই তিনি ‘আবু হানিফা’ উপাধি লাভ করেন।
তিনি ৮০ হিজরি বর্তমান ইরাকের কুফায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি তীক্ষ্ণ মেধাবী ও অধ্যবসায়ী ছিলেন। মেধা ও সাধনার সমন্বয়েই একসময় তিনি নিজেকে সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ, মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে গড়ে তোলেন।
হানাফি মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা
তিনি ইসলামি ফিকহ তথা আইনশাস্ত্রের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। ফিকহ গবেষণায় তাঁর গভীর যুক্তি, তীক্ষ্ণ চিন্তাশক্তি ও উপলব্ধিই একদিন তাঁকে পরিণত করে হানাফি মাজহাবের স্থপতিতে, যা আজও বিশ্বের বহু দেশে অনুসৃত।
তিনি একজন তাবেয়ি
তিনি ছিলেন একজন তাবেয়ি, যা তাঁর মর্যাদাকে ফুটিয়ে তোলে। তিনি কয়েকজন উল্লেখযোগ্য সাহাবির সাক্ষাৎ পেয়ে ধন্য হোন। যাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করেন, তাঁরা হলেন হজরত আনাস বিন মালিক, আবদুল্লাহ বিন হারিস, আমর বিন হুরাইস, জাবির বিন আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ বিন আবি আওফা, সাহল বিন সাদ, আবু তোফাইল, ওয়াসেলা বিন আসকা, আবদুল্লাহ বিন উনাইস, মাকিল বিন ইয়াসার, আয়েশা বিনতে আজরাদ (রা.)।
বিচারপতি পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি
তখন ক্ষমতার মসনদে ছিলেন উমাইয়া খলিফা ইয়াজিদ বিন হুবায়রা। তিনি একদিন সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ ইমাম আবু হানিফা (রা.)-কে ডেকে পাঠান রাজপ্রসাদে। সেখানে এলে তিনি তাঁকে কুফার বিচারপতি (কাজি) হওয়ার প্রস্তাব দেন।
এ প্রস্তাব বাহ্যিকভাবে যদিও সম্মানের; কিন্তু এর পেছনে ছিল খলিফার চতুর রাজনীতি। খলিফা মনে করতেন—তিনি বিচারপতি হলে খিলাফতের ভিত মজবুত হবে, খলিফার বৈধতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
কিন্তু এ দায়িত্ব যে এতটা মসৃণ নয়; তা আবু হানিফা (রহ.) আগে থেকেই বুঝতে সক্ষম হোন। তাই তিনি স্পষ্টভাবে অস্বীকৃতি জানান।
ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর এই স্পষ্ট অস্বীকৃতিতে থমকে যায় পুরো রাজদরবার। কিন্তু শাসকের ক্রোধ থামেনি। তিনি ইমামকে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেন।
শাসকের আদেশ লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। তাই শুরু হয় মর্মান্তিক শাস্তি। প্রতিদিন ১০টি করে মোট ১০০টি বেত্রাঘাত করা হয় তাঁকে। তবু তিনি ন্যায়ের পথ থেকে একচুলও নড়েননি।
আবারও প্রস্তাব, আবারও প্রত্যাখ্যান
সময় গড়ায়। ক্ষমতায় আসেন আব্বাসি খলিফা আবু জাফর আল-মানসুর। এবার তিনিও আবু হানিফা (রহ.)-কে একই পদের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আবু হানিফা (রহ.) আগের মতোই দৃঢ়ভাবে নাকচ করেন এবং খলিফার রোষানলে পড়েন। খলিফা তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারের জীবদ্দশায় খলিফা একদিন আবু হানিফা (রহ.)-কে ডেকে নেন এবং জিজ্ঞেস করেন, এ দায়িত্ব গ্রহণে কেন আপনি অনিচ্ছুক? তিনি জবাব দেন—আমি নিজেকে এ দায়িত্বের যোগ্য মনে করি না। তাঁর এ কথায় খলিফা ক্ষুব্ধ হন। বললেন, তুমি মিথ্যা বলছ! আবু হানিফা (রহ.) দৃঢ়ভাবে জবাব দেন, যদি আমি সত্য বলি, তবে আমি অযোগ্য; আর যদি মিথ্যা বলি, তবে আপনি একজন মিথ্যাবাদীকে বিচারপতি বানাতে চাচ্ছেন। খলিফা তাঁর এমন যুক্তিসংগত কথায় খুব বেশি ক্ষিপ্ত হন এবং তাঁকে পুনরায় কারাগারে বন্দী ও বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেন।
খলিফার কথামতো বেত্রাঘাতসহ নানা নিপীড়ন শুরু হয় তাঁর ওপর। ফলে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। অতঃপর ১৫০ হিজরিতে, বন্দিদশায়ই আপন প্রভুর সান্নিধ্যে গমন করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা
সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে, তবুও সত্য বলাই শ্রেয়। সম্মান বা পদ নয়, একজন মানুষের আসল পরিচয়—তার নীতি ও আদর্শ। ক্ষমতার মোহ সবাইকে পায় না; বরং কেউ হন ব্যতিক্রম, যিনি যুগে যুগে স্মরণীয় হয়ে থাকেন।
তথ্যসূত্র: উকুদুল জুমান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান ও আল-খাইরাতুল হিসান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
যশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
আবু হানিফা (রহ.)-এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
তাঁর পুরো নাম, নুমান বিন সাবেত বিন মারজুবান আল-কুফি। তবে ‘আবু হানিফা’ উপাধিতেই বেশি পরিচিত। বর্ণনা অনুযায়ী, তৎকালীন কুফায় ‘হানিফা’ শব্দটি দোয়াত বা কলমের কালি বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। যেহেতু তিনি অধিকাংশ সময় গবেষণা ও লেখালেখিতে ব্যস্ত থাকতেন, তাই তিনি ‘আবু হানিফা’ উপাধি লাভ করেন।
তিনি ৮০ হিজরি বর্তমান ইরাকের কুফায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি তীক্ষ্ণ মেধাবী ও অধ্যবসায়ী ছিলেন। মেধা ও সাধনার সমন্বয়েই একসময় তিনি নিজেকে সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ, মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে গড়ে তোলেন।
হানাফি মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা
তিনি ইসলামি ফিকহ তথা আইনশাস্ত্রের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। ফিকহ গবেষণায় তাঁর গভীর যুক্তি, তীক্ষ্ণ চিন্তাশক্তি ও উপলব্ধিই একদিন তাঁকে পরিণত করে হানাফি মাজহাবের স্থপতিতে, যা আজও বিশ্বের বহু দেশে অনুসৃত।
তিনি একজন তাবেয়ি
তিনি ছিলেন একজন তাবেয়ি, যা তাঁর মর্যাদাকে ফুটিয়ে তোলে। তিনি কয়েকজন উল্লেখযোগ্য সাহাবির সাক্ষাৎ পেয়ে ধন্য হোন। যাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করেন, তাঁরা হলেন হজরত আনাস বিন মালিক, আবদুল্লাহ বিন হারিস, আমর বিন হুরাইস, জাবির বিন আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ বিন আবি আওফা, সাহল বিন সাদ, আবু তোফাইল, ওয়াসেলা বিন আসকা, আবদুল্লাহ বিন উনাইস, মাকিল বিন ইয়াসার, আয়েশা বিনতে আজরাদ (রা.)।
বিচারপতি পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি
তখন ক্ষমতার মসনদে ছিলেন উমাইয়া খলিফা ইয়াজিদ বিন হুবায়রা। তিনি একদিন সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ ইমাম আবু হানিফা (রা.)-কে ডেকে পাঠান রাজপ্রসাদে। সেখানে এলে তিনি তাঁকে কুফার বিচারপতি (কাজি) হওয়ার প্রস্তাব দেন।
এ প্রস্তাব বাহ্যিকভাবে যদিও সম্মানের; কিন্তু এর পেছনে ছিল খলিফার চতুর রাজনীতি। খলিফা মনে করতেন—তিনি বিচারপতি হলে খিলাফতের ভিত মজবুত হবে, খলিফার বৈধতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
কিন্তু এ দায়িত্ব যে এতটা মসৃণ নয়; তা আবু হানিফা (রহ.) আগে থেকেই বুঝতে সক্ষম হোন। তাই তিনি স্পষ্টভাবে অস্বীকৃতি জানান।
ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর এই স্পষ্ট অস্বীকৃতিতে থমকে যায় পুরো রাজদরবার। কিন্তু শাসকের ক্রোধ থামেনি। তিনি ইমামকে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেন।
শাসকের আদেশ লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। তাই শুরু হয় মর্মান্তিক শাস্তি। প্রতিদিন ১০টি করে মোট ১০০টি বেত্রাঘাত করা হয় তাঁকে। তবু তিনি ন্যায়ের পথ থেকে একচুলও নড়েননি।
আবারও প্রস্তাব, আবারও প্রত্যাখ্যান
সময় গড়ায়। ক্ষমতায় আসেন আব্বাসি খলিফা আবু জাফর আল-মানসুর। এবার তিনিও আবু হানিফা (রহ.)-কে একই পদের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আবু হানিফা (রহ.) আগের মতোই দৃঢ়ভাবে নাকচ করেন এবং খলিফার রোষানলে পড়েন। খলিফা তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারের জীবদ্দশায় খলিফা একদিন আবু হানিফা (রহ.)-কে ডেকে নেন এবং জিজ্ঞেস করেন, এ দায়িত্ব গ্রহণে কেন আপনি অনিচ্ছুক? তিনি জবাব দেন—আমি নিজেকে এ দায়িত্বের যোগ্য মনে করি না। তাঁর এ কথায় খলিফা ক্ষুব্ধ হন। বললেন, তুমি মিথ্যা বলছ! আবু হানিফা (রহ.) দৃঢ়ভাবে জবাব দেন, যদি আমি সত্য বলি, তবে আমি অযোগ্য; আর যদি মিথ্যা বলি, তবে আপনি একজন মিথ্যাবাদীকে বিচারপতি বানাতে চাচ্ছেন। খলিফা তাঁর এমন যুক্তিসংগত কথায় খুব বেশি ক্ষিপ্ত হন এবং তাঁকে পুনরায় কারাগারে বন্দী ও বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেন।
খলিফার কথামতো বেত্রাঘাতসহ নানা নিপীড়ন শুরু হয় তাঁর ওপর। ফলে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। অতঃপর ১৫০ হিজরিতে, বন্দিদশায়ই আপন প্রভুর সান্নিধ্যে গমন করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা
সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে, তবুও সত্য বলাই শ্রেয়। সম্মান বা পদ নয়, একজন মানুষের আসল পরিচয়—তার নীতি ও আদর্শ। ক্ষমতার মোহ সবাইকে পায় না; বরং কেউ হন ব্যতিক্রম, যিনি যুগে যুগে স্মরণীয় হয়ে থাকেন।
তথ্যসূত্র: উকুদুল জুমান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান ও আল-খাইরাতুল হিসান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
হজ আদায় করতে মক্কায় যাওয়ার সময় হাজিদের কাফেলায় উটের পিঠে করে একটি যাত্রীহীন সাজানো পালকি নিয়ে যাওয়া হতো, একেই মাহমাল বলা হয়। ইসলামের পবিত্র স্থানগুলোর প্রতি সুলতানদের দায়বদ্ধতা প্রকাশের জন্য তাঁদের ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে হাজিদের সঙ্গে মাহমাল পাঠাতেন তাঁরা। সব মাহমালেরই একটি গাম্ভীর্যপূর্ণ কারুকাজ করা
১৯ মে ২০২৩নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২ ঘণ্টা আগেঅগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা।
২০ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেশাব্বির আহমদ
অগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা। এই আমলগুলো কেবল মানসিক শক্তি জোগায় না, বরং আল্লাহর রহমতে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে।
১. উচ্চ স্বরে তাকবির দেওয়া: অগ্নিকাণ্ড দেখলে সর্বাগ্রে যে আমলটি রয়েছে, তা হলো তাকবির দেওয়া। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা যখন কোথাও আগুন (লাগতে) দেখো, তখন (উচ্চ স্বরে) তাকবির দাও।’ (তাবরানি: ১ / ৩০৭)
২. কোরআনের আয়াত পাঠ: বিপদের সময় কোরআনের সাহায্য প্রার্থনা করা মুমিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। পবিত্র কোরআনে এমন একটি আয়াত রয়েছে, যা আল্লাহর নবী ইবরাহিম (আ.)-এর জন্য আগুনের ক্রিয়া নিস্তেজ করে দিয়েছিল। অগ্নিকাণ্ডের সময় এই আয়াতটি পাঠ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ: ‘ইয়া না-রু কু-নি বারদাও ওয়া সালামান আলা ইবরাহিম।’ অর্থ: ‘হে আগুন, তুমি ইবরাহিমের জন্য শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও।’ (সুরা আম্বিয়া: ৬৯)
৩. আল্লাহর কাছে সাহায্য ও আজান: তাকবির এবং আয়াত পাঠের পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডের সময় আগুন নেভানোর নিয়তে উচ্চ স্বরে আজান দেওয়াও অনেক আলেম উত্তম বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ আজানের ধ্বনিও শয়তানকে বিতাড়িত করে। এ ছাড়া, সব ধরনের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) ও তওবা করা জরুরি।
আগুন মানুষকে মুহূর্তেই নিঃস্ব করে দিতে পারে, কিন্তু মুমিন কখনো নিরাশ হয় না। কারণ সে জানে, সব বিপদের নিয়ন্ত্রণ আল্লাহর হাতেই। অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়ংকর দুর্যোগেও একজন ইমানদার আল্লাহর স্মরণে আশ্রয় নেয়, তাকবির ও কোরআনের আয়াত পাঠে মন স্থির রাখে এবং দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য কামনা করে। পার্থিব চেষ্টা ও আধ্যাত্মিক আমলের এই সমন্বয়ই হলো প্রকৃত ইমানদারের পথ। কেননা, আগুন নেভানোর যন্ত্র যেমন বাহ্যিক আগুন নেভায়, তেমনি আল্লাহর স্মরণ অন্তরের ভয় ও অস্থিরতা নিভিয়ে দেয়।
অগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা। এই আমলগুলো কেবল মানসিক শক্তি জোগায় না, বরং আল্লাহর রহমতে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে।
১. উচ্চ স্বরে তাকবির দেওয়া: অগ্নিকাণ্ড দেখলে সর্বাগ্রে যে আমলটি রয়েছে, তা হলো তাকবির দেওয়া। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা যখন কোথাও আগুন (লাগতে) দেখো, তখন (উচ্চ স্বরে) তাকবির দাও।’ (তাবরানি: ১ / ৩০৭)
২. কোরআনের আয়াত পাঠ: বিপদের সময় কোরআনের সাহায্য প্রার্থনা করা মুমিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। পবিত্র কোরআনে এমন একটি আয়াত রয়েছে, যা আল্লাহর নবী ইবরাহিম (আ.)-এর জন্য আগুনের ক্রিয়া নিস্তেজ করে দিয়েছিল। অগ্নিকাণ্ডের সময় এই আয়াতটি পাঠ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ: ‘ইয়া না-রু কু-নি বারদাও ওয়া সালামান আলা ইবরাহিম।’ অর্থ: ‘হে আগুন, তুমি ইবরাহিমের জন্য শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও।’ (সুরা আম্বিয়া: ৬৯)
৩. আল্লাহর কাছে সাহায্য ও আজান: তাকবির এবং আয়াত পাঠের পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডের সময় আগুন নেভানোর নিয়তে উচ্চ স্বরে আজান দেওয়াও অনেক আলেম উত্তম বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ আজানের ধ্বনিও শয়তানকে বিতাড়িত করে। এ ছাড়া, সব ধরনের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) ও তওবা করা জরুরি।
আগুন মানুষকে মুহূর্তেই নিঃস্ব করে দিতে পারে, কিন্তু মুমিন কখনো নিরাশ হয় না। কারণ সে জানে, সব বিপদের নিয়ন্ত্রণ আল্লাহর হাতেই। অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়ংকর দুর্যোগেও একজন ইমানদার আল্লাহর স্মরণে আশ্রয় নেয়, তাকবির ও কোরআনের আয়াত পাঠে মন স্থির রাখে এবং দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য কামনা করে। পার্থিব চেষ্টা ও আধ্যাত্মিক আমলের এই সমন্বয়ই হলো প্রকৃত ইমানদারের পথ। কেননা, আগুন নেভানোর যন্ত্র যেমন বাহ্যিক আগুন নেভায়, তেমনি আল্লাহর স্মরণ অন্তরের ভয় ও অস্থিরতা নিভিয়ে দেয়।
হজ আদায় করতে মক্কায় যাওয়ার সময় হাজিদের কাফেলায় উটের পিঠে করে একটি যাত্রীহীন সাজানো পালকি নিয়ে যাওয়া হতো, একেই মাহমাল বলা হয়। ইসলামের পবিত্র স্থানগুলোর প্রতি সুলতানদের দায়বদ্ধতা প্রকাশের জন্য তাঁদের ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে হাজিদের সঙ্গে মাহমাল পাঠাতেন তাঁরা। সব মাহমালেরই একটি গাম্ভীর্যপূর্ণ কারুকাজ করা
১৯ মে ২০২৩নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১০ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৪ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪১ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪২ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৫০ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫১ মিনিট | ০৫: ২৭ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৯ মিনিট | ০৬: ৪৩ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৪ মিনিট | ০৪: ৪১ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৪ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪১ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪২ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৫০ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫১ মিনিট | ০৫: ২৭ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৯ মিনিট | ০৬: ৪৩ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৪ মিনিট | ০৪: ৪১ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
হজ আদায় করতে মক্কায় যাওয়ার সময় হাজিদের কাফেলায় উটের পিঠে করে একটি যাত্রীহীন সাজানো পালকি নিয়ে যাওয়া হতো, একেই মাহমাল বলা হয়। ইসলামের পবিত্র স্থানগুলোর প্রতি সুলতানদের দায়বদ্ধতা প্রকাশের জন্য তাঁদের ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে হাজিদের সঙ্গে মাহমাল পাঠাতেন তাঁরা। সব মাহমালেরই একটি গাম্ভীর্যপূর্ণ কারুকাজ করা
১৯ মে ২০২৩নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
২ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১০ ঘণ্টা আগেঅগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা।
২০ ঘণ্টা আগে