ইসলাম ডেস্ক
হজরত বারিরাহ বিনতে সফওয়ান (রা.) প্রসিদ্ধ নারী সাহাবিদের একজন। তিনি মহানবী (সা.) ও তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী আয়েশা (রা.)-এর সেবক হিসেবে ইসলামের ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছেন। ইসলামের বিভিন্ন যুদ্ধে তিনি অংশ নেন এবং মুসলিম যোদ্ধাদের সেবা-শুশ্রূষায় নিয়োজিত থাকেন। অসামান্য সাহসী নারী ছিলেন। দান-দক্ষিণায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার। ইসলামের অনুশাসন কঠোরভাবে মেনে চলতেন।
বারিরাহ বেশ কয়েকটি কারণে ইসলামের ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। সবচেয়ে চমকপ্রদ কারণটি হলো—মহানবী (সা.)-এর সুপারিশ নাকচ করে তিনি প্রেমিক স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছিলেন। সহিহ্ বুখারিতে ঘটনার বিবরণ এসেছে। এখানে ঘটনাটি তুলে ধরা হলো—
বারিরাহ এক সময় আরবের হিলাল গোত্রের কোনো এক ব্যক্তির দাসী ছিলেন। মুগিস নামের এক ক্রীতদাসের সঙ্গে তাঁকে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই সংসারে তিনি সুখী ছিলেন না। বারিরাহ ছিলেন স্বাধীনচেতা ও বুদ্ধিমান। স্বামী মুগিসকে তিনি পছন্দ করতেন না। তবে দাসী হওয়ার কারণে বারিরাহর বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার ছিল না।
বারিরাহ দাসত্বের শেকল থেকে মুক্ত হওয়ার ব্যাপারে ভাবতেন। কিস্তিতে অর্থ দেওয়ার বিনিময়ে মুক্ত হওয়ার একটি চুক্তিও করেন মালিকের সঙ্গে। সেই দিনগুলোতে মাঝেমধ্যে আয়েশা (রা.)-এর কাছে আসতেন। তাঁর কাছে অর্থসাহায্য চান বারিরাহ। মহানবী (সা.)-এর নির্দেশে আয়েশা (রা.) এককালীন অর্থের বিনিময়ে তাঁকে মুক্ত করে দেন এবং ইসলামি আইন অনুযায়ী তাঁর অভিভাবকের দায়িত্ব পান। (বুখারি: ২৫৬৩)
মুক্ত হওয়ার পর বারিরাহ আয়েশা (রা.)-এর সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। তাঁর ও মহানবী (সা.)-এর সেবা করতেন। তখন বারিরাহ সিদ্ধান্ত নেন যে, তিনি স্বামী মুগিসের সঙ্গে সংসার করবেন না। কারণ, ইসলামি আইন অনুসারে দাসত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার পর নারীর জন্য ক্রীতদাস স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ থাকা জরুরি নয়। চাইলে থাকতে পারেন, অথবা বিচ্ছেদও করতে পারেন।
সংসারে বারিরাহর কোনো আগ্রহ না থাকলেও স্বামী মুগিস তাঁকে খুব ভালোবাসতেন। বারিরাহর বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত মুগিস সহজে মেনে নিতে পারেননি। তিনি পাগলপ্রায় হয়ে গিয়েছিলেন। মদিনার অলিগলি-বাজারে বারিরাহর পেছন-পেছন ঘুরতেন।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) মুগিসের অসহায়ত্বের কথা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘অমুক গোত্রের দাস বারিরাহর স্বামী মুগিসকে আমি যেন এখনও মদিনার অলিগলিতে কেঁদে-কেঁদে বারিরাহর পেছন-পেছন ঘুরতে দেখছি।’ (বুখারি: ৫২৮১)
অন্য বর্ণনায় ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘বারিরাহর স্বামী ক্রীতদাস ছিলেন। নাম ছিল মুগিস। আমি যেন এখন তাঁকে বারিরাহর পেছনে কেঁদে-কেঁদে ঘুরতে দেখছি এবং তাঁর দাঁড়ি বেয়ে চোখের পানি ঝরছে।’ (বুখারি: ৫২৮৩)
এই ঘটনা মহানবী (সা.)-এর চোখ এড়ায়নি। মুগিসের প্রতি মায়া হলো তাঁর। একই সঙ্গে তিনি বারিরাহর ব্যক্তিত্বে অবাক ও মুগ্ধ হলেন। আব্বাস (রা.)-কে ডেকে বললেন, ‘হে আব্বাস, বারিরাহর প্রতি মুগিসের ভালোবাসা এবং মুগিসের প্রতি বারিরাহর অনাসক্তি দেখে তুমি অবাক হও না?’
এরপর মহানবী (সা.) মুগিসের ভালোবাসার মূল্যায়ন করার অনুরোধ করে বারিরাহকে বললেন, ‘তুমি যদি তার কাছে আবার ফিরে যেতে!’
বারিরাহ এ কথা ভালো করে জানতেন যে, এটি মহানবী (সা.)-এর আদেশ নয়। কারণ ইসলামের বিধান মোতাবেক, বারিরাহর সিদ্ধান্তে কোনো ভুল নেই। তাই বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার জন্য নবী (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আপনি কি আমাকে আদেশ করছেন?’
মহানবী (সা.) বারিরাহর বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নের কারণ বুঝতে পারলেন এবং জবাবে বললেন, ‘আমি কেবল সুপারিশ করছি।’
তখন বারিরাহ সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘তাকে দিয়ে আমার কোনো কাজ নেই।’ (বুখারি: ৫২৮৩)
হজরত বারিরাহ বিনতে সফওয়ান (রা.) প্রসিদ্ধ নারী সাহাবিদের একজন। তিনি মহানবী (সা.) ও তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী আয়েশা (রা.)-এর সেবক হিসেবে ইসলামের ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছেন। ইসলামের বিভিন্ন যুদ্ধে তিনি অংশ নেন এবং মুসলিম যোদ্ধাদের সেবা-শুশ্রূষায় নিয়োজিত থাকেন। অসামান্য সাহসী নারী ছিলেন। দান-দক্ষিণায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার। ইসলামের অনুশাসন কঠোরভাবে মেনে চলতেন।
বারিরাহ বেশ কয়েকটি কারণে ইসলামের ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। সবচেয়ে চমকপ্রদ কারণটি হলো—মহানবী (সা.)-এর সুপারিশ নাকচ করে তিনি প্রেমিক স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছিলেন। সহিহ্ বুখারিতে ঘটনার বিবরণ এসেছে। এখানে ঘটনাটি তুলে ধরা হলো—
বারিরাহ এক সময় আরবের হিলাল গোত্রের কোনো এক ব্যক্তির দাসী ছিলেন। মুগিস নামের এক ক্রীতদাসের সঙ্গে তাঁকে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই সংসারে তিনি সুখী ছিলেন না। বারিরাহ ছিলেন স্বাধীনচেতা ও বুদ্ধিমান। স্বামী মুগিসকে তিনি পছন্দ করতেন না। তবে দাসী হওয়ার কারণে বারিরাহর বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার ছিল না।
বারিরাহ দাসত্বের শেকল থেকে মুক্ত হওয়ার ব্যাপারে ভাবতেন। কিস্তিতে অর্থ দেওয়ার বিনিময়ে মুক্ত হওয়ার একটি চুক্তিও করেন মালিকের সঙ্গে। সেই দিনগুলোতে মাঝেমধ্যে আয়েশা (রা.)-এর কাছে আসতেন। তাঁর কাছে অর্থসাহায্য চান বারিরাহ। মহানবী (সা.)-এর নির্দেশে আয়েশা (রা.) এককালীন অর্থের বিনিময়ে তাঁকে মুক্ত করে দেন এবং ইসলামি আইন অনুযায়ী তাঁর অভিভাবকের দায়িত্ব পান। (বুখারি: ২৫৬৩)
মুক্ত হওয়ার পর বারিরাহ আয়েশা (রা.)-এর সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। তাঁর ও মহানবী (সা.)-এর সেবা করতেন। তখন বারিরাহ সিদ্ধান্ত নেন যে, তিনি স্বামী মুগিসের সঙ্গে সংসার করবেন না। কারণ, ইসলামি আইন অনুসারে দাসত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার পর নারীর জন্য ক্রীতদাস স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ থাকা জরুরি নয়। চাইলে থাকতে পারেন, অথবা বিচ্ছেদও করতে পারেন।
সংসারে বারিরাহর কোনো আগ্রহ না থাকলেও স্বামী মুগিস তাঁকে খুব ভালোবাসতেন। বারিরাহর বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত মুগিস সহজে মেনে নিতে পারেননি। তিনি পাগলপ্রায় হয়ে গিয়েছিলেন। মদিনার অলিগলি-বাজারে বারিরাহর পেছন-পেছন ঘুরতেন।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) মুগিসের অসহায়ত্বের কথা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘অমুক গোত্রের দাস বারিরাহর স্বামী মুগিসকে আমি যেন এখনও মদিনার অলিগলিতে কেঁদে-কেঁদে বারিরাহর পেছন-পেছন ঘুরতে দেখছি।’ (বুখারি: ৫২৮১)
অন্য বর্ণনায় ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘বারিরাহর স্বামী ক্রীতদাস ছিলেন। নাম ছিল মুগিস। আমি যেন এখন তাঁকে বারিরাহর পেছনে কেঁদে-কেঁদে ঘুরতে দেখছি এবং তাঁর দাঁড়ি বেয়ে চোখের পানি ঝরছে।’ (বুখারি: ৫২৮৩)
এই ঘটনা মহানবী (সা.)-এর চোখ এড়ায়নি। মুগিসের প্রতি মায়া হলো তাঁর। একই সঙ্গে তিনি বারিরাহর ব্যক্তিত্বে অবাক ও মুগ্ধ হলেন। আব্বাস (রা.)-কে ডেকে বললেন, ‘হে আব্বাস, বারিরাহর প্রতি মুগিসের ভালোবাসা এবং মুগিসের প্রতি বারিরাহর অনাসক্তি দেখে তুমি অবাক হও না?’
এরপর মহানবী (সা.) মুগিসের ভালোবাসার মূল্যায়ন করার অনুরোধ করে বারিরাহকে বললেন, ‘তুমি যদি তার কাছে আবার ফিরে যেতে!’
বারিরাহ এ কথা ভালো করে জানতেন যে, এটি মহানবী (সা.)-এর আদেশ নয়। কারণ ইসলামের বিধান মোতাবেক, বারিরাহর সিদ্ধান্তে কোনো ভুল নেই। তাই বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার জন্য নবী (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আপনি কি আমাকে আদেশ করছেন?’
মহানবী (সা.) বারিরাহর বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নের কারণ বুঝতে পারলেন এবং জবাবে বললেন, ‘আমি কেবল সুপারিশ করছি।’
তখন বারিরাহ সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘তাকে দিয়ে আমার কোনো কাজ নেই।’ (বুখারি: ৫২৮৩)
সম্পদ মানুষের জীবন পরিচালনার একটি অপরিহার্য উপকরণ। দৈনন্দিন প্রয়োজন পূরণ, পারিবারিক শান্তি বজায় রাখা ও সামাজিক দায়িত্ব পালনের জন্য এটি অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ।
৩ ঘণ্টা আগেমানুষ মানুষের জন্য। একজনের বিপদে আরেকজন এগিয়ে আসা মানবতার পরিচয়। অসুস্থতা, দুর্ঘটনা বা অন্য কোনো কারণে মানুষের রক্তের প্রয়োজন হয়। প্রয়োজনের সময় রক্তের কোনো বিকল্প নেই—তাই অন্য কারও কাছ থেকে রক্ত নিতে হয়। সেই সংকটময় সময়ে একজন সুস্থ সবল মানুষ স্বেচ্ছায় রক্তদান করে একটি প্রাণ বাঁচাতে এগিয়ে আসতে পারেন।
১৬ ঘণ্টা আগেজীবন ও মৃত্যু একমাত্র আল্লাহর হাতে। কিন্তু কার মৃত্যু কেমনভাবে ঘটবে এবং সেই মৃত্যু কী মর্যাদা বহন করবে—ইসলাম তা ব্যাখ্যা করেছে অত্যন্ত মানবিক ও অর্থপূর্ণভাবে। বিশেষ করে যে মৃত্যুগুলোতে রয়েছে শারীরিক কষ্ট, আত্মত্যাগ ও ধৈর্যের পরীক্ষার ছাপ; ইসলাম সেগুলোর জন্য রেখেছে বিশেষ পুরস্কার ও মর্যাদা।
১৭ ঘণ্টা আগেরোগী গুরুতর অসুস্থ হোক কিংবা কম। তাকে সান্ত্বনা দেওয়া। হতাশ না করা কিংবা ভয় না দেখানো। অসুস্থ ব্যক্তিকে কী বলে সান্ত্বনা দিতে হয় তা হাদিস অনুসন্ধান পাওয়া যায়। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) এক বেদুইনের ঘরে প্রবেশ করলেন তার রোগের খোঁজখবর নিতে। তিনি বললেন—‘তোমার চিন্তার...
১৭ ঘণ্টা আগে