ইজাজুল হক

ইসলামের আগে-পরে
পবিত্র কাবাঘরকে কেন্দ্র করেই মক্কায় মানব বসতি গড়ে উঠেছিল। হজের প্রচলন শুরু হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত এখানে যাঁরাই বাস করেছেন, সবাই হাজিদের আদর-আপ্যায়ন ও মেহমানদারিকে বেশ গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রথম দিকে তো মক্কার ঘরগুলোতে কোনো দরজাই ছিল না। হাজিদের ‘আহলান সাহলান’ অভিবাদনে স্বাগত জানাতে সব সময় প্রস্তুত থাকতেন তাঁরা।
হজযাত্রীদের সেবায় মক্কায় বসবাসরত গোত্রগুলো নিজেদের দায়িত্ব ভাগ করে নিত। হাজিদের নিরাপত্তা, খাদ্য পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণের সব ব্যবস্থাই করতেন তাঁরা। বনি শায়বা কাবাঘরের চাবি সংরক্ষণ করত। বনি হাশিম পানি সরবরাহের দায়িত্ব পালন করত। কোরাইশ নেতা কুসাই ইবনে কিলাবই প্রথম হাজিদের খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করেছিলেন।
মহানবী (সা.)-এর জন্মের আগে কোনো এক বছর তাঁর দাদা আবদুল মুত্তালিব হাজিদের খাবার পরিবেশনের দায়িত্বে ছিলেন। সেবার মক্কায় কঠিন খরা ও দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। তিনি স্বপ্নে দেখলেন, ইসমাইল (আ.)-এর স্মৃতিবিজড়িত হারিয়ে যাওয়া জমজম কূপটি তিনি খুঁজে পেয়েছেন। সত্যিই তিনি কূপটি খুঁজে পেলেন এবং মক্কায় পানির সরবরাহ স্বাভাবিক হলো এবং হাজিরা খরার বিপদ থেকে রক্ষা পেলেন। এখনো পবিত্র কাবাঘরের আশপাশে জমজমই পানির প্রধান উৎস।
আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলাম ছড়িয়ে পড়ার পর হজযাত্রীর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে। প্রথম দিকে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ মক্কায় এসে বসতি স্থাপন করতে থাকে। সময়ের সঙ্গে তা বেড়েই চলেছে। মক্কার ঘরগুলোতে শুরুর দিকে বিনা মূল্যে হাজিদের থাকার ব্যবস্থা ছিল। পরে ভাড়া দিয়ে থাকার ব্যবস্থাও চালু ছিল কিছুদিন।
হাজিদের সেবায় মুসলিম শাসকেরা
হজরত ওমর (রা.)-এর শাসনামলে বন্যার আঘাতে কাবাঘরসহ অন্যান্য স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তিনি সব স্থাপনা মেরামত করে দেন। হাজিদের থাকার ঘরগুলোতে দরজা ও বাতি লাগিয়ে দেন। হজরত ওসমান (রা.) হাজিদের সুবিধা বিবেচনায় মসজিদুল হারামের আঙিনা প্রশস্ত করেছিলেন। হাজ্জাজের আক্রমণে কাবাঘর ভেঙে গেলে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.) পুনরায় তা নির্মাণ করেছিলেন। উমাইয়া আমলে হাজিদের সেবায় সরকারিভাবে সেবক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। আব্বাসি ও উসমানি আমলেও পবিত্র মসজিদুল হারামের ব্যাপক সম্প্রসারণ, সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হয়।
আব্বাসীয় খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী জোবাইদা ৭৮০ সালে হাজিদের জন্য ইরাকের কুফা থেকে মক্কা পর্যন্ত ৯০০ মাইলের একটি দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ করেছিলেন। পথে পথে ৫৪টি সরাইখানা এবং অসংখ্য ব্রিজ ও মসজিদ নির্মাণ করেন। এই সড়কের পাশেই আইনে জুবাইদা নামের কিছু কূপ খনন করেছিলেন তিনি, যা হজযাত্রীদের প্রশান্তির কারণ ছিল। কূপগুলোর ধ্বংসাবশেষ এখনো দেখা যায়।
সেকালে মুসলিম বিশ্বের হজযাত্রীরা দামেস্ক, কায়রো ও বাগদাদে জড়ো হতেন। সেখান থেকে খলিফার একজন প্রতিনিধি আমিরুল হজের নেতৃত্বে মক্কার উদ্দেশে রওনা করতেন। কাফেলার সুরক্ষা ও হাজিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং মক্কায় সুলতানের প্রতিনিধিত্ব করাই ছিল আমিরুল হজের প্রধান কাজ। উসমানি আমলের শেষ সময় পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল। এখনো প্রতিটি মুসলিম দেশ হজযাত্রা নিরাপদ করতে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
মালির ধনী শাসক মানসা মুসা ১৩২৪ সালে ৬০ হাজার লোক নিয়ে হজ করেছিলেন। বিপুল পরিমাণে স্বর্ণ নিয়ে তিনি আফ্রিকা পাড়ি দিয়ে মিসর হয়ে মক্কায় এসেছিলেন। তিনি মক্কা ও কায়রোয় এত পরিমাণ স্বর্ণ বিলিয়েছিলেন যে সেখানে স্বর্ণের দাম একেবারেই কমে গিয়েছিল।
ভারতের ভূপাল রাজ্যের রানি সিকান্দর বেগম ১৮৬৪ সালে হজ করেছিলেন। তিনিও পথে পথে অনেক দান-সদকা করেছিলেন। মক্কা-মদিনায় তিনি বেশ কিছু জমি কিনেছিলেন এবং সেখানে তাঁর দেশ থেকে যাওয়া হজযাত্রীদের বিনা মূল্যে তা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন। ভারতের তৎকালীন অন্যান্য রাজ্যের শাসকেরাও তাঁর এই নীতি অনুসরণ করেছিলেন।
একালের সেবা ও আতিথেয়তা
বর্তমানেও হাজিদের সেবা ও আতিথেয়তায় কোনো ধরনের কমতি রাখা হয় না। ৩০-৪০ লাখ হাজির জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়। উন্নতমানের খাবার-দাবার, সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্যসেবা, শপিং মল, হোটেল ও প্রযুক্তিগত সব সুবিধা হাজিদের সরবরাহ করা হয়।
তবে একালে হজের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। ফলে মক্কা-মদিনায় হাজিদের অবস্থানের জন্য অনেক বেশি ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের হজ করতে ইচ্ছুক অনেকের অভিযোগ, হাজিদের নিয়ে বাণিজ্যিক চিন্তা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভের আকাঙ্ক্ষার কারণেই হজের খরচ বেড়েছে। এভাবে বাণিজ্যিকীকরণের কারণে হজের ধর্মীয় মর্যাদা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এবং আরবদের হাজার বছরের আতিথেয়তা ও সেবার ঐতিহ্য ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।
হজকে ঘিরে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভের আকাঙ্ক্ষা কোনোভাবেই ইসলাম সমর্থন করে না। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘কাজের সওয়াব নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। মানুষ নিয়ত অনুযায়ীই ফল পাবে। যার হিজরত পার্থিব লাভ বা কোনো নারীকে বিয়ের জন্য হবে, সে যে উদ্দেশ্যে হিজরত করেছে, তা-ই সে পাবে।’ (বুখারি: ০১)

ইসলামের আগে-পরে
পবিত্র কাবাঘরকে কেন্দ্র করেই মক্কায় মানব বসতি গড়ে উঠেছিল। হজের প্রচলন শুরু হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত এখানে যাঁরাই বাস করেছেন, সবাই হাজিদের আদর-আপ্যায়ন ও মেহমানদারিকে বেশ গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রথম দিকে তো মক্কার ঘরগুলোতে কোনো দরজাই ছিল না। হাজিদের ‘আহলান সাহলান’ অভিবাদনে স্বাগত জানাতে সব সময় প্রস্তুত থাকতেন তাঁরা।
হজযাত্রীদের সেবায় মক্কায় বসবাসরত গোত্রগুলো নিজেদের দায়িত্ব ভাগ করে নিত। হাজিদের নিরাপত্তা, খাদ্য পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণের সব ব্যবস্থাই করতেন তাঁরা। বনি শায়বা কাবাঘরের চাবি সংরক্ষণ করত। বনি হাশিম পানি সরবরাহের দায়িত্ব পালন করত। কোরাইশ নেতা কুসাই ইবনে কিলাবই প্রথম হাজিদের খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করেছিলেন।
মহানবী (সা.)-এর জন্মের আগে কোনো এক বছর তাঁর দাদা আবদুল মুত্তালিব হাজিদের খাবার পরিবেশনের দায়িত্বে ছিলেন। সেবার মক্কায় কঠিন খরা ও দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। তিনি স্বপ্নে দেখলেন, ইসমাইল (আ.)-এর স্মৃতিবিজড়িত হারিয়ে যাওয়া জমজম কূপটি তিনি খুঁজে পেয়েছেন। সত্যিই তিনি কূপটি খুঁজে পেলেন এবং মক্কায় পানির সরবরাহ স্বাভাবিক হলো এবং হাজিরা খরার বিপদ থেকে রক্ষা পেলেন। এখনো পবিত্র কাবাঘরের আশপাশে জমজমই পানির প্রধান উৎস।
আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলাম ছড়িয়ে পড়ার পর হজযাত্রীর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে। প্রথম দিকে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ মক্কায় এসে বসতি স্থাপন করতে থাকে। সময়ের সঙ্গে তা বেড়েই চলেছে। মক্কার ঘরগুলোতে শুরুর দিকে বিনা মূল্যে হাজিদের থাকার ব্যবস্থা ছিল। পরে ভাড়া দিয়ে থাকার ব্যবস্থাও চালু ছিল কিছুদিন।
হাজিদের সেবায় মুসলিম শাসকেরা
হজরত ওমর (রা.)-এর শাসনামলে বন্যার আঘাতে কাবাঘরসহ অন্যান্য স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তিনি সব স্থাপনা মেরামত করে দেন। হাজিদের থাকার ঘরগুলোতে দরজা ও বাতি লাগিয়ে দেন। হজরত ওসমান (রা.) হাজিদের সুবিধা বিবেচনায় মসজিদুল হারামের আঙিনা প্রশস্ত করেছিলেন। হাজ্জাজের আক্রমণে কাবাঘর ভেঙে গেলে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.) পুনরায় তা নির্মাণ করেছিলেন। উমাইয়া আমলে হাজিদের সেবায় সরকারিভাবে সেবক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। আব্বাসি ও উসমানি আমলেও পবিত্র মসজিদুল হারামের ব্যাপক সম্প্রসারণ, সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হয়।
আব্বাসীয় খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী জোবাইদা ৭৮০ সালে হাজিদের জন্য ইরাকের কুফা থেকে মক্কা পর্যন্ত ৯০০ মাইলের একটি দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ করেছিলেন। পথে পথে ৫৪টি সরাইখানা এবং অসংখ্য ব্রিজ ও মসজিদ নির্মাণ করেন। এই সড়কের পাশেই আইনে জুবাইদা নামের কিছু কূপ খনন করেছিলেন তিনি, যা হজযাত্রীদের প্রশান্তির কারণ ছিল। কূপগুলোর ধ্বংসাবশেষ এখনো দেখা যায়।
সেকালে মুসলিম বিশ্বের হজযাত্রীরা দামেস্ক, কায়রো ও বাগদাদে জড়ো হতেন। সেখান থেকে খলিফার একজন প্রতিনিধি আমিরুল হজের নেতৃত্বে মক্কার উদ্দেশে রওনা করতেন। কাফেলার সুরক্ষা ও হাজিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং মক্কায় সুলতানের প্রতিনিধিত্ব করাই ছিল আমিরুল হজের প্রধান কাজ। উসমানি আমলের শেষ সময় পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল। এখনো প্রতিটি মুসলিম দেশ হজযাত্রা নিরাপদ করতে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
মালির ধনী শাসক মানসা মুসা ১৩২৪ সালে ৬০ হাজার লোক নিয়ে হজ করেছিলেন। বিপুল পরিমাণে স্বর্ণ নিয়ে তিনি আফ্রিকা পাড়ি দিয়ে মিসর হয়ে মক্কায় এসেছিলেন। তিনি মক্কা ও কায়রোয় এত পরিমাণ স্বর্ণ বিলিয়েছিলেন যে সেখানে স্বর্ণের দাম একেবারেই কমে গিয়েছিল।
ভারতের ভূপাল রাজ্যের রানি সিকান্দর বেগম ১৮৬৪ সালে হজ করেছিলেন। তিনিও পথে পথে অনেক দান-সদকা করেছিলেন। মক্কা-মদিনায় তিনি বেশ কিছু জমি কিনেছিলেন এবং সেখানে তাঁর দেশ থেকে যাওয়া হজযাত্রীদের বিনা মূল্যে তা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন। ভারতের তৎকালীন অন্যান্য রাজ্যের শাসকেরাও তাঁর এই নীতি অনুসরণ করেছিলেন।
একালের সেবা ও আতিথেয়তা
বর্তমানেও হাজিদের সেবা ও আতিথেয়তায় কোনো ধরনের কমতি রাখা হয় না। ৩০-৪০ লাখ হাজির জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়। উন্নতমানের খাবার-দাবার, সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্যসেবা, শপিং মল, হোটেল ও প্রযুক্তিগত সব সুবিধা হাজিদের সরবরাহ করা হয়।
তবে একালে হজের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। ফলে মক্কা-মদিনায় হাজিদের অবস্থানের জন্য অনেক বেশি ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের হজ করতে ইচ্ছুক অনেকের অভিযোগ, হাজিদের নিয়ে বাণিজ্যিক চিন্তা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভের আকাঙ্ক্ষার কারণেই হজের খরচ বেড়েছে। এভাবে বাণিজ্যিকীকরণের কারণে হজের ধর্মীয় মর্যাদা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এবং আরবদের হাজার বছরের আতিথেয়তা ও সেবার ঐতিহ্য ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।
হজকে ঘিরে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভের আকাঙ্ক্ষা কোনোভাবেই ইসলাম সমর্থন করে না। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘কাজের সওয়াব নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। মানুষ নিয়ত অনুযায়ীই ফল পাবে। যার হিজরত পার্থিব লাভ বা কোনো নারীকে বিয়ের জন্য হবে, সে যে উদ্দেশ্যে হিজরত করেছে, তা-ই সে পাবে।’ (বুখারি: ০১)
ইজাজুল হক

ইসলামের আগে-পরে
পবিত্র কাবাঘরকে কেন্দ্র করেই মক্কায় মানব বসতি গড়ে উঠেছিল। হজের প্রচলন শুরু হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত এখানে যাঁরাই বাস করেছেন, সবাই হাজিদের আদর-আপ্যায়ন ও মেহমানদারিকে বেশ গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রথম দিকে তো মক্কার ঘরগুলোতে কোনো দরজাই ছিল না। হাজিদের ‘আহলান সাহলান’ অভিবাদনে স্বাগত জানাতে সব সময় প্রস্তুত থাকতেন তাঁরা।
হজযাত্রীদের সেবায় মক্কায় বসবাসরত গোত্রগুলো নিজেদের দায়িত্ব ভাগ করে নিত। হাজিদের নিরাপত্তা, খাদ্য পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণের সব ব্যবস্থাই করতেন তাঁরা। বনি শায়বা কাবাঘরের চাবি সংরক্ষণ করত। বনি হাশিম পানি সরবরাহের দায়িত্ব পালন করত। কোরাইশ নেতা কুসাই ইবনে কিলাবই প্রথম হাজিদের খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করেছিলেন।
মহানবী (সা.)-এর জন্মের আগে কোনো এক বছর তাঁর দাদা আবদুল মুত্তালিব হাজিদের খাবার পরিবেশনের দায়িত্বে ছিলেন। সেবার মক্কায় কঠিন খরা ও দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। তিনি স্বপ্নে দেখলেন, ইসমাইল (আ.)-এর স্মৃতিবিজড়িত হারিয়ে যাওয়া জমজম কূপটি তিনি খুঁজে পেয়েছেন। সত্যিই তিনি কূপটি খুঁজে পেলেন এবং মক্কায় পানির সরবরাহ স্বাভাবিক হলো এবং হাজিরা খরার বিপদ থেকে রক্ষা পেলেন। এখনো পবিত্র কাবাঘরের আশপাশে জমজমই পানির প্রধান উৎস।
আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলাম ছড়িয়ে পড়ার পর হজযাত্রীর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে। প্রথম দিকে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ মক্কায় এসে বসতি স্থাপন করতে থাকে। সময়ের সঙ্গে তা বেড়েই চলেছে। মক্কার ঘরগুলোতে শুরুর দিকে বিনা মূল্যে হাজিদের থাকার ব্যবস্থা ছিল। পরে ভাড়া দিয়ে থাকার ব্যবস্থাও চালু ছিল কিছুদিন।
হাজিদের সেবায় মুসলিম শাসকেরা
হজরত ওমর (রা.)-এর শাসনামলে বন্যার আঘাতে কাবাঘরসহ অন্যান্য স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তিনি সব স্থাপনা মেরামত করে দেন। হাজিদের থাকার ঘরগুলোতে দরজা ও বাতি লাগিয়ে দেন। হজরত ওসমান (রা.) হাজিদের সুবিধা বিবেচনায় মসজিদুল হারামের আঙিনা প্রশস্ত করেছিলেন। হাজ্জাজের আক্রমণে কাবাঘর ভেঙে গেলে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.) পুনরায় তা নির্মাণ করেছিলেন। উমাইয়া আমলে হাজিদের সেবায় সরকারিভাবে সেবক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। আব্বাসি ও উসমানি আমলেও পবিত্র মসজিদুল হারামের ব্যাপক সম্প্রসারণ, সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হয়।
আব্বাসীয় খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী জোবাইদা ৭৮০ সালে হাজিদের জন্য ইরাকের কুফা থেকে মক্কা পর্যন্ত ৯০০ মাইলের একটি দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ করেছিলেন। পথে পথে ৫৪টি সরাইখানা এবং অসংখ্য ব্রিজ ও মসজিদ নির্মাণ করেন। এই সড়কের পাশেই আইনে জুবাইদা নামের কিছু কূপ খনন করেছিলেন তিনি, যা হজযাত্রীদের প্রশান্তির কারণ ছিল। কূপগুলোর ধ্বংসাবশেষ এখনো দেখা যায়।
সেকালে মুসলিম বিশ্বের হজযাত্রীরা দামেস্ক, কায়রো ও বাগদাদে জড়ো হতেন। সেখান থেকে খলিফার একজন প্রতিনিধি আমিরুল হজের নেতৃত্বে মক্কার উদ্দেশে রওনা করতেন। কাফেলার সুরক্ষা ও হাজিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং মক্কায় সুলতানের প্রতিনিধিত্ব করাই ছিল আমিরুল হজের প্রধান কাজ। উসমানি আমলের শেষ সময় পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল। এখনো প্রতিটি মুসলিম দেশ হজযাত্রা নিরাপদ করতে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
মালির ধনী শাসক মানসা মুসা ১৩২৪ সালে ৬০ হাজার লোক নিয়ে হজ করেছিলেন। বিপুল পরিমাণে স্বর্ণ নিয়ে তিনি আফ্রিকা পাড়ি দিয়ে মিসর হয়ে মক্কায় এসেছিলেন। তিনি মক্কা ও কায়রোয় এত পরিমাণ স্বর্ণ বিলিয়েছিলেন যে সেখানে স্বর্ণের দাম একেবারেই কমে গিয়েছিল।
ভারতের ভূপাল রাজ্যের রানি সিকান্দর বেগম ১৮৬৪ সালে হজ করেছিলেন। তিনিও পথে পথে অনেক দান-সদকা করেছিলেন। মক্কা-মদিনায় তিনি বেশ কিছু জমি কিনেছিলেন এবং সেখানে তাঁর দেশ থেকে যাওয়া হজযাত্রীদের বিনা মূল্যে তা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন। ভারতের তৎকালীন অন্যান্য রাজ্যের শাসকেরাও তাঁর এই নীতি অনুসরণ করেছিলেন।
একালের সেবা ও আতিথেয়তা
বর্তমানেও হাজিদের সেবা ও আতিথেয়তায় কোনো ধরনের কমতি রাখা হয় না। ৩০-৪০ লাখ হাজির জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়। উন্নতমানের খাবার-দাবার, সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্যসেবা, শপিং মল, হোটেল ও প্রযুক্তিগত সব সুবিধা হাজিদের সরবরাহ করা হয়।
তবে একালে হজের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। ফলে মক্কা-মদিনায় হাজিদের অবস্থানের জন্য অনেক বেশি ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের হজ করতে ইচ্ছুক অনেকের অভিযোগ, হাজিদের নিয়ে বাণিজ্যিক চিন্তা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভের আকাঙ্ক্ষার কারণেই হজের খরচ বেড়েছে। এভাবে বাণিজ্যিকীকরণের কারণে হজের ধর্মীয় মর্যাদা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এবং আরবদের হাজার বছরের আতিথেয়তা ও সেবার ঐতিহ্য ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।
হজকে ঘিরে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভের আকাঙ্ক্ষা কোনোভাবেই ইসলাম সমর্থন করে না। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘কাজের সওয়াব নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। মানুষ নিয়ত অনুযায়ীই ফল পাবে। যার হিজরত পার্থিব লাভ বা কোনো নারীকে বিয়ের জন্য হবে, সে যে উদ্দেশ্যে হিজরত করেছে, তা-ই সে পাবে।’ (বুখারি: ০১)

ইসলামের আগে-পরে
পবিত্র কাবাঘরকে কেন্দ্র করেই মক্কায় মানব বসতি গড়ে উঠেছিল। হজের প্রচলন শুরু হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত এখানে যাঁরাই বাস করেছেন, সবাই হাজিদের আদর-আপ্যায়ন ও মেহমানদারিকে বেশ গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রথম দিকে তো মক্কার ঘরগুলোতে কোনো দরজাই ছিল না। হাজিদের ‘আহলান সাহলান’ অভিবাদনে স্বাগত জানাতে সব সময় প্রস্তুত থাকতেন তাঁরা।
হজযাত্রীদের সেবায় মক্কায় বসবাসরত গোত্রগুলো নিজেদের দায়িত্ব ভাগ করে নিত। হাজিদের নিরাপত্তা, খাদ্য পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণের সব ব্যবস্থাই করতেন তাঁরা। বনি শায়বা কাবাঘরের চাবি সংরক্ষণ করত। বনি হাশিম পানি সরবরাহের দায়িত্ব পালন করত। কোরাইশ নেতা কুসাই ইবনে কিলাবই প্রথম হাজিদের খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করেছিলেন।
মহানবী (সা.)-এর জন্মের আগে কোনো এক বছর তাঁর দাদা আবদুল মুত্তালিব হাজিদের খাবার পরিবেশনের দায়িত্বে ছিলেন। সেবার মক্কায় কঠিন খরা ও দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। তিনি স্বপ্নে দেখলেন, ইসমাইল (আ.)-এর স্মৃতিবিজড়িত হারিয়ে যাওয়া জমজম কূপটি তিনি খুঁজে পেয়েছেন। সত্যিই তিনি কূপটি খুঁজে পেলেন এবং মক্কায় পানির সরবরাহ স্বাভাবিক হলো এবং হাজিরা খরার বিপদ থেকে রক্ষা পেলেন। এখনো পবিত্র কাবাঘরের আশপাশে জমজমই পানির প্রধান উৎস।
আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলাম ছড়িয়ে পড়ার পর হজযাত্রীর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে। প্রথম দিকে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ মক্কায় এসে বসতি স্থাপন করতে থাকে। সময়ের সঙ্গে তা বেড়েই চলেছে। মক্কার ঘরগুলোতে শুরুর দিকে বিনা মূল্যে হাজিদের থাকার ব্যবস্থা ছিল। পরে ভাড়া দিয়ে থাকার ব্যবস্থাও চালু ছিল কিছুদিন।
হাজিদের সেবায় মুসলিম শাসকেরা
হজরত ওমর (রা.)-এর শাসনামলে বন্যার আঘাতে কাবাঘরসহ অন্যান্য স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তিনি সব স্থাপনা মেরামত করে দেন। হাজিদের থাকার ঘরগুলোতে দরজা ও বাতি লাগিয়ে দেন। হজরত ওসমান (রা.) হাজিদের সুবিধা বিবেচনায় মসজিদুল হারামের আঙিনা প্রশস্ত করেছিলেন। হাজ্জাজের আক্রমণে কাবাঘর ভেঙে গেলে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.) পুনরায় তা নির্মাণ করেছিলেন। উমাইয়া আমলে হাজিদের সেবায় সরকারিভাবে সেবক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। আব্বাসি ও উসমানি আমলেও পবিত্র মসজিদুল হারামের ব্যাপক সম্প্রসারণ, সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হয়।
আব্বাসীয় খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী জোবাইদা ৭৮০ সালে হাজিদের জন্য ইরাকের কুফা থেকে মক্কা পর্যন্ত ৯০০ মাইলের একটি দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ করেছিলেন। পথে পথে ৫৪টি সরাইখানা এবং অসংখ্য ব্রিজ ও মসজিদ নির্মাণ করেন। এই সড়কের পাশেই আইনে জুবাইদা নামের কিছু কূপ খনন করেছিলেন তিনি, যা হজযাত্রীদের প্রশান্তির কারণ ছিল। কূপগুলোর ধ্বংসাবশেষ এখনো দেখা যায়।
সেকালে মুসলিম বিশ্বের হজযাত্রীরা দামেস্ক, কায়রো ও বাগদাদে জড়ো হতেন। সেখান থেকে খলিফার একজন প্রতিনিধি আমিরুল হজের নেতৃত্বে মক্কার উদ্দেশে রওনা করতেন। কাফেলার সুরক্ষা ও হাজিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং মক্কায় সুলতানের প্রতিনিধিত্ব করাই ছিল আমিরুল হজের প্রধান কাজ। উসমানি আমলের শেষ সময় পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল। এখনো প্রতিটি মুসলিম দেশ হজযাত্রা নিরাপদ করতে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
মালির ধনী শাসক মানসা মুসা ১৩২৪ সালে ৬০ হাজার লোক নিয়ে হজ করেছিলেন। বিপুল পরিমাণে স্বর্ণ নিয়ে তিনি আফ্রিকা পাড়ি দিয়ে মিসর হয়ে মক্কায় এসেছিলেন। তিনি মক্কা ও কায়রোয় এত পরিমাণ স্বর্ণ বিলিয়েছিলেন যে সেখানে স্বর্ণের দাম একেবারেই কমে গিয়েছিল।
ভারতের ভূপাল রাজ্যের রানি সিকান্দর বেগম ১৮৬৪ সালে হজ করেছিলেন। তিনিও পথে পথে অনেক দান-সদকা করেছিলেন। মক্কা-মদিনায় তিনি বেশ কিছু জমি কিনেছিলেন এবং সেখানে তাঁর দেশ থেকে যাওয়া হজযাত্রীদের বিনা মূল্যে তা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন। ভারতের তৎকালীন অন্যান্য রাজ্যের শাসকেরাও তাঁর এই নীতি অনুসরণ করেছিলেন।
একালের সেবা ও আতিথেয়তা
বর্তমানেও হাজিদের সেবা ও আতিথেয়তায় কোনো ধরনের কমতি রাখা হয় না। ৩০-৪০ লাখ হাজির জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়। উন্নতমানের খাবার-দাবার, সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্যসেবা, শপিং মল, হোটেল ও প্রযুক্তিগত সব সুবিধা হাজিদের সরবরাহ করা হয়।
তবে একালে হজের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। ফলে মক্কা-মদিনায় হাজিদের অবস্থানের জন্য অনেক বেশি ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের হজ করতে ইচ্ছুক অনেকের অভিযোগ, হাজিদের নিয়ে বাণিজ্যিক চিন্তা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভের আকাঙ্ক্ষার কারণেই হজের খরচ বেড়েছে। এভাবে বাণিজ্যিকীকরণের কারণে হজের ধর্মীয় মর্যাদা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এবং আরবদের হাজার বছরের আতিথেয়তা ও সেবার ঐতিহ্য ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।
হজকে ঘিরে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভের আকাঙ্ক্ষা কোনোভাবেই ইসলাম সমর্থন করে না। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘কাজের সওয়াব নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। মানুষ নিয়ত অনুযায়ীই ফল পাবে। যার হিজরত পার্থিব লাভ বা কোনো নারীকে বিয়ের জন্য হবে, সে যে উদ্দেশ্যে হিজরত করেছে, তা-ই সে পাবে।’ (বুখারি: ০১)

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৫ ঘণ্টা আগে
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৫ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

আল্লাহর নবী হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সময় থেকে হজের প্রচলন শুরু হয়। এর পর থেকে মহানবী (সা.)-এর নবী হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার আগ পর্যন্ত পবিত্র মক্কা নগরীতে হজের চল ছিল। গত দেড় হাজার বছরেও বিশেষ কারণ ছাড়া হজ বন্ধ হয়নি। হজকে ঘিরে যে বিষয়টি আরবদের সবচেয়ে বেশি মহান
০৯ জুন ২০২৩
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৫ ঘণ্টা আগে
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৫ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

আল্লাহর নবী হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সময় থেকে হজের প্রচলন শুরু হয়। এর পর থেকে মহানবী (সা.)-এর নবী হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার আগ পর্যন্ত পবিত্র মক্কা নগরীতে হজের চল ছিল। গত দেড় হাজার বছরেও বিশেষ কারণ ছাড়া হজ বন্ধ হয়নি। হজকে ঘিরে যে বিষয়টি আরবদের সবচেয়ে বেশি মহান
০৯ জুন ২০২৩
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৫ ঘণ্টা আগে
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৫ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

আল্লাহর নবী হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সময় থেকে হজের প্রচলন শুরু হয়। এর পর থেকে মহানবী (সা.)-এর নবী হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার আগ পর্যন্ত পবিত্র মক্কা নগরীতে হজের চল ছিল। গত দেড় হাজার বছরেও বিশেষ কারণ ছাড়া হজ বন্ধ হয়নি। হজকে ঘিরে যে বিষয়টি আরবদের সবচেয়ে বেশি মহান
০৯ জুন ২০২৩
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগে
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৫ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই বদনজরের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ছোট্ট ঈর্ষা, অনিচ্ছাকৃত আগ্রহ বা প্রশংসার দৃষ্টি, সবই বদনজরের মাধ্যমে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ইসলামি শিক্ষা আমাদের সতর্ক করে, আল্লাহর সাহায্য ও দোয়ার মাধ্যমে আমরা এ প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।
প্রাচীনকালে বদনজর লাগানোর জন্য সরাসরি দেখার প্রয়োজন হতো। কিন্তু আজকের প্রযুক্তিনির্ভর যুগে, বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ইত্যাদির মাধ্যমে বদনজরের প্রভাব অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া একটি ‘প্রদর্শনীর মঞ্চ’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মানুষ তাদের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো; দামি খাবার, নতুন গাড়ি, বিলাসবহুল অবকাশ, সন্তানের সাফল্য, নতুন চাকরি ইত্যাদি প্রচারের মাধ্যমে শেয়ার করে।
যখন কেউ নিজের আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করে, তখন হাজারো ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার তা দেখেন। এর মধ্যে কারও দৃষ্টিতে হিংসা বা নানাভাবে ক্ষতিকর অভিপ্রায় যে আছে, তা বলাই বাহুল্য। অনেকে নিজের জীবনের অভাব বা দুঃখের সঙ্গে তুলনা করে হিংসা বা আফসোস অনুভব করতে পারেন। এই অদৃশ্য হিংসুকদের দৃষ্টি বদনজরের কারণ হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই নিখুঁত জীবনের ছবি তুলে ধরেন। এটি অন্যদের মধ্যে হতাশা এবং অবচেতনভাবে সে নিয়ামতগুলো হারিয়ে যাওয়ার কামনা সৃষ্টি করতে পারে, যা বদনজরের প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখী দম্পতি হিসেবে পরিচিতদের কিছুদিন পর বিচ্ছেদ। সফল ব্যবসার ছবি পোস্ট করার পর হঠাৎ ব্যবসায় ক্ষতি বা শিশুর ভাইরাল ছবি দেখার পর তার অসুস্থতা। এ সবই বদনজরের সম্ভাব্য প্রভাবের উদাহরণ।
মুআজ বিন জাবাল (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রয়োজন পূরণে সফলতা লাভের জন্য তা গোপন রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা কর; কারণ প্রত্যেক নিয়ামতপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিংসিত হয়।’ (হাদিস সম্ভার: ২১৯১)
সোশ্যাল মিডিয়া এই হাদিসের সম্পূর্ণ বিপরীত পথ অনুসরণ করে। এখানে গোপনীয়তার বদলে জীবনের প্রতিটি নিয়ামত প্রকাশ্যভাবে প্রদর্শন করা হয়, যা মানুষকে সহজেই হিংসুক ও বদনজরের লক্ষ্য বানিয়ে দেয়।
বদনজর এমন এক অদৃশ্য বাস্তবতা, যার প্রভাব শুধু শরীরেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি মানুষের মন, পরিবার, অর্থনীতি, এমনকি ইমান ও আখিরাত পর্যন্ত গভীরভাবে আঘাত হানতে পারে। আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায়, কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, কাজকর্মে আগ্রহ হারাচ্ছে, ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে, পরিবারে অশান্তি বাড়ছে। অনেক সময় এসবের পেছনে বদনজরের প্রভাবই কাজ করে। রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘বদনজর সত্য।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
বদনজর প্রতিরোধ ও প্রতিকার
প্রথমত: বদনজরের চিকিৎসা বা প্রতিকার হলো রুকইয়াহ শারইয়্যাহ, অর্থাৎ শরিয়তসম্মত ঝাড়ফুঁক। এর পদ্ধতি হলো সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে আক্রান্ত স্থানে ফুঁ দেওয়া বা আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর নির্ধারিত দোয়াগুলো পড়া।
দ্বিতীয়ত: অজু বা গোসলের পানি দিয়েও প্রতিকার করা যায়। সাহল ইবনু হুনাইফ (রা.)-এর ঘটনায় প্রমাণিত যে, যার কারণে বদনজর লেগেছিল, তার অজুর পানি আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর ঢেলে দেওয়া হয়েছিল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি আরোগ্য লাভ করেন।
তৃতীয়ত: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাওয়াক্কুল, অর্থাৎ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে, একমাত্র আল্লাহই আরোগ্য দানকারী ও রক্ষাকারী। কোনো প্রতিকার বা চিকিৎসা নিজে থেকে কার্যকর হয় না; বরং আল্লাহর অনুমতিতে তাতে প্রভাব সৃষ্টি হয়। তাই মুমিন কখনো কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না; বরং আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখে।
লেখক: মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসউদ, শিক্ষক, জামিয়া নুরিয়া ইসলামিয়া, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা।

বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই বদনজরের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ছোট্ট ঈর্ষা, অনিচ্ছাকৃত আগ্রহ বা প্রশংসার দৃষ্টি, সবই বদনজরের মাধ্যমে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ইসলামি শিক্ষা আমাদের সতর্ক করে, আল্লাহর সাহায্য ও দোয়ার মাধ্যমে আমরা এ প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।
প্রাচীনকালে বদনজর লাগানোর জন্য সরাসরি দেখার প্রয়োজন হতো। কিন্তু আজকের প্রযুক্তিনির্ভর যুগে, বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ইত্যাদির মাধ্যমে বদনজরের প্রভাব অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া একটি ‘প্রদর্শনীর মঞ্চ’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মানুষ তাদের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো; দামি খাবার, নতুন গাড়ি, বিলাসবহুল অবকাশ, সন্তানের সাফল্য, নতুন চাকরি ইত্যাদি প্রচারের মাধ্যমে শেয়ার করে।
যখন কেউ নিজের আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করে, তখন হাজারো ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার তা দেখেন। এর মধ্যে কারও দৃষ্টিতে হিংসা বা নানাভাবে ক্ষতিকর অভিপ্রায় যে আছে, তা বলাই বাহুল্য। অনেকে নিজের জীবনের অভাব বা দুঃখের সঙ্গে তুলনা করে হিংসা বা আফসোস অনুভব করতে পারেন। এই অদৃশ্য হিংসুকদের দৃষ্টি বদনজরের কারণ হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই নিখুঁত জীবনের ছবি তুলে ধরেন। এটি অন্যদের মধ্যে হতাশা এবং অবচেতনভাবে সে নিয়ামতগুলো হারিয়ে যাওয়ার কামনা সৃষ্টি করতে পারে, যা বদনজরের প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখী দম্পতি হিসেবে পরিচিতদের কিছুদিন পর বিচ্ছেদ। সফল ব্যবসার ছবি পোস্ট করার পর হঠাৎ ব্যবসায় ক্ষতি বা শিশুর ভাইরাল ছবি দেখার পর তার অসুস্থতা। এ সবই বদনজরের সম্ভাব্য প্রভাবের উদাহরণ।
মুআজ বিন জাবাল (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রয়োজন পূরণে সফলতা লাভের জন্য তা গোপন রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা কর; কারণ প্রত্যেক নিয়ামতপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিংসিত হয়।’ (হাদিস সম্ভার: ২১৯১)
সোশ্যাল মিডিয়া এই হাদিসের সম্পূর্ণ বিপরীত পথ অনুসরণ করে। এখানে গোপনীয়তার বদলে জীবনের প্রতিটি নিয়ামত প্রকাশ্যভাবে প্রদর্শন করা হয়, যা মানুষকে সহজেই হিংসুক ও বদনজরের লক্ষ্য বানিয়ে দেয়।
বদনজর এমন এক অদৃশ্য বাস্তবতা, যার প্রভাব শুধু শরীরেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি মানুষের মন, পরিবার, অর্থনীতি, এমনকি ইমান ও আখিরাত পর্যন্ত গভীরভাবে আঘাত হানতে পারে। আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায়, কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, কাজকর্মে আগ্রহ হারাচ্ছে, ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে, পরিবারে অশান্তি বাড়ছে। অনেক সময় এসবের পেছনে বদনজরের প্রভাবই কাজ করে। রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘বদনজর সত্য।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
বদনজর প্রতিরোধ ও প্রতিকার
প্রথমত: বদনজরের চিকিৎসা বা প্রতিকার হলো রুকইয়াহ শারইয়্যাহ, অর্থাৎ শরিয়তসম্মত ঝাড়ফুঁক। এর পদ্ধতি হলো সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে আক্রান্ত স্থানে ফুঁ দেওয়া বা আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর নির্ধারিত দোয়াগুলো পড়া।
দ্বিতীয়ত: অজু বা গোসলের পানি দিয়েও প্রতিকার করা যায়। সাহল ইবনু হুনাইফ (রা.)-এর ঘটনায় প্রমাণিত যে, যার কারণে বদনজর লেগেছিল, তার অজুর পানি আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর ঢেলে দেওয়া হয়েছিল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি আরোগ্য লাভ করেন।
তৃতীয়ত: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাওয়াক্কুল, অর্থাৎ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে, একমাত্র আল্লাহই আরোগ্য দানকারী ও রক্ষাকারী। কোনো প্রতিকার বা চিকিৎসা নিজে থেকে কার্যকর হয় না; বরং আল্লাহর অনুমতিতে তাতে প্রভাব সৃষ্টি হয়। তাই মুমিন কখনো কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না; বরং আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখে।
লেখক: মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসউদ, শিক্ষক, জামিয়া নুরিয়া ইসলামিয়া, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা।

আল্লাহর নবী হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সময় থেকে হজের প্রচলন শুরু হয়। এর পর থেকে মহানবী (সা.)-এর নবী হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার আগ পর্যন্ত পবিত্র মক্কা নগরীতে হজের চল ছিল। গত দেড় হাজার বছরেও বিশেষ কারণ ছাড়া হজ বন্ধ হয়নি। হজকে ঘিরে যে বিষয়টি আরবদের সবচেয়ে বেশি মহান
০৯ জুন ২০২৩
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগে
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
৫ ঘণ্টা আগে