Ajker Patrika

রবের সন্তুষ্টি অর্জনে হোক কোরবানি

হুসাইন আহমদ
কোরবানির পশুর সঙ্গে খেলায় মেতে উঠেছে এক শিশু। ছবি: সংগৃহীত
কোরবানির পশুর সঙ্গে খেলায় মেতে উঠেছে এক শিশু। ছবি: সংগৃহীত

ঈদুল আজহা আমাদের সামনে ফজিলতপূর্ণ অনেকগুলো ইবাদতের সুযোগ নিয়ে আসছে। এর মধ্যে বরকতময় ফজিলতপূর্ণ একটি ইবাদত হচ্ছে কোরবানি করা। ইসলামে এই কোরবানি করার গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে নবী, আহলে কিতাবদের তুমি আদমের দুই পুত্র হাবিল ও কাবিলের ঘটনা ভালো করে বর্ণনা করো। তারা যখন কোরবানি করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো। কিন্তু অন্যজনের কোরবানি কবুল হলো না। ক্ষিপ্ত হয়ে সে বলল, আমি তোমাকে খুন করব। অপরজন বলল, প্রভু তো শুধু আল্লাহ-সচেতনদের কোরবানিই কবুল করেন। (সুরা মায়েদা: ২৭)

অন্যত্র বলেছেন, ‘হে নবী, ওদের বলুন, আমার সালাত, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মরণ, আমার সবকিছুই বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। তিনি একক ও অদ্বিতীয়। এ আদেশই আমি পেয়েছি। আমি সমর্পিতদের মধ্যে প্রথম। (সুরা আনআম: ১৬২-১৬৩)

এক হাদিসে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় ১০ বছর থেকেছেন এবং প্রতি বছর কোরবানি করেছেন। (সুনানে তিরমিজি: ১৫০৭)

অন্যত্র রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোরবানির দিন মানুষ যে কাজ করে তার মধ্যে আল্লাহ তাআলার নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় হচ্ছে রক্ত প্রবাহিত করা। অর্থাৎ কোরবানি করা। (সুনানে তিরমিজি: ১৪৯৩)

অপর এক হাদিসে হজরত জায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এর সাহাবিগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, এতে কি আমাদের জন্য সওয়াব আছে?

তিনি বললেন, কোরবানির পশুর প্রত্যেকটি পশমের পরিবর্তে একটি করে প্রতিদান রয়েছে। সাহাবিগণ আবার জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, পশমওয়ালা পশুদের ব্যাপারে কী হবে? অর্থাৎ এদের পশম তো অনেক বেশি?

তিনি বললেন, পশমওয়ালা পশুদের প্রতিটি পশমের পরিবর্তে একটি করে নেকি রয়েছে। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১২৭)

অতঃপর ফজিলতপূর্ণ এই কোরবানির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বিশুদ্ধ নিয়ত। এ জন্য যার নিয়ত বিশুদ্ধ ও খালেস হবে না—তার কোরবানিও কবুল হবে না।

কেননা, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সমস্ত কাজের ফলাফল নিয়তের ওপরেই নির্ভরশীল। আর প্রতিটি লোক তাই পাবে, যা সে নিয়ত করবে।’

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা তোমাদের সৌন্দর্য ও সম্পদের দিকে লক্ষ্য করেন না, বরং তোমাদের অন্তঃকরণ ও কাজের দিকে লক্ষ্য করেন। (সহিহ্ বুখারি: ৫১৪৪, সহিহ্ মুসলিম: ২৫৬৪)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বলে দাও, প্রত্যেকেই নিজ নিজ নিয়ত অনুযায়ী কাজ করে।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ৮৪)

লেখক: মাদরাসা শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত