ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা
মানব ইতিহাসের কিছু মুহূর্ত সমগ্র বিশ্বের জন্য যুগান্তকারী হয়ে দাঁড়ায়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্ম সেইরূপ এক ঘটনা। প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী, তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময় পবিত্র মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশের হাশেমি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মের মাধ্যমে বিশ্বজগৎ পেয়েছে মুক্তি, রহমত ও আলো।
আল্লাহ তাআলা নবীজির জন্মকে সাধারণ কোনো জন্ম হিসেবে রাখেননি; বরং এর সঙ্গে যুক্ত করেছেন একাধিক অলৌকিক ও ঐতিহাসিক ঘটনা, যা এই মহান জন্মকে অনন্য মহিমায় সমুজ্জ্বল করেছে।
১. হস্তিবাহিনীর ধ্বংস হওয়া: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মের ৫০-৫৫ দিন আগে হস্তিবাহিনীর ধ্বংসের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা ছিল নবী (সা.)-এর আবির্ভাবের অলৌকিক ইঙ্গিত ও ঘোষণা। হাবশার সম্রাট নাজ্জাসির পক্ষ থেকে ইয়েমেনের গভর্নর ছিল আবরাহা। সে রাজধানী সানায় খুব সুন্দর ও বড় গির্জা নির্মাণ করে চেষ্টা করল, যেন লোকেরা কাবাগৃহ ত্যাগ করে ইবাদত ও হজ-ওমরাহর জন্য সেখানে যায়।
এ কাজ মক্কাবাসী তথা অন্য আরবদের পছন্দ হয়নি। তারা কাবা ছেড়ে অন্য কোনো স্থানে যেতে রাজি হয়নি। এতে আবরাহা রাগান্বিত হয়ে কাবা ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে হাতির দল নিয়ে মক্কার দিকে অগ্রসর হয়। মক্কার কাছে পৌঁছে তারা মক্কার প্রধান [নবী (সা.)-এর দাদা] আবদুল মুত্তালিবের উটগুলো দখল করে নেয়। আবদুল মুত্তালিব আবরাহার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কেবল তাঁর উটগুলো ফেরত চায় আর কাবার বিষয়ে আল্লাহর ওপর ভরসা প্রকাশ করে।
অতঃপর যখন এই সেনাদল মিনাসংলগ্ন ‘মুহাসসার’ উপত্যকায় পৌঁছে, তখন আল্লাহ তাআলা একটি পাখির দলকে প্রেরণ করেন, যাদের ঠোঁটে ও পায়ে পোড়া মাটির কাঁকর ছিল। পাখিগুলো ওপর থেকে সেই কাঁকর বর্ষণ করে। ফলে তারা ধ্বংস হয়ে যায়।
আল্লাহ বলেন, ‘তুমি কি দেখোনি, তোমার প্রতিপালক হাতিওয়ালাদের সঙ্গে কী করেছিলেন? তাদের কৌশল কি তিনি বিফল করেননি? তিনি তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি। যারা নিক্ষেপ করছিল তাদের ওপর পোড়া মাটির পাথর। অতঃপর তিনি তাদের করলেন ভক্ষিত তৃণসাদৃশ।’ (সুরা ফিল: ১-৫)
২. দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্তি: নবী (সা.)-এর জন্মের পূর্ববর্তী কয়েক বছর আরব উপদ্বীপ বিশেষ করে হিজাজ অঞ্চলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ নেমে এসেছিল। মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাত। কুরাইশ গোত্রসহ আরবের অধিকাংশ গোত্র চরম সংকটে পতিত হয়েছিল।
নবীজির জন্মের বছর আরবের সেই দুর্ভিক্ষ কেটে যায়। আরবের ঘরে ঘরে আনন্দের ফল্গুধারা বইতে থাকে। যেহেতু একই বছরে কুরাইশরা আবরাহার বিরুদ্ধে জয়লাভ করেছিল এবং দুর্ভিক্ষ থেকে পরিত্রাণ পেয়েছিল, তাই বছরটিকে আরববাসী ‘সানাতুল ফাতহ ওয়াল ইবতিহাজ’ অর্থাৎ ‘বিজয় ও আনন্দের বছর’ নাম দিয়েছিল। (ইবনে কাসির, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৬৫; আস-সিরাতুল হালাবিয়া, ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৮)
৩. নবীজির আগমনী বার্তা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে ছড়িয়ে পড়া: নবী (সা.)-এর জন্মের খবর শুধু আরবেই নয়, বরং ইহুদি-নাসারা আলেমদের মধ্যেও আলোচিত হয়েছিল। তৎকালীন ইহুদি-নাসারা তাঁদের কিতাবে নবী (সা.)-এর সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী পেতেন। নবী (সা.)-এর আগমনের মাধ্যমে আরব, বিশেষ করে কুরাইশ গোত্রের মর্যাদা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, মক্কা শরিফে এক ইহুদি বাস করতেন। যে রাতে নবী (সা.) জন্মগ্রহণ করেন, সে রাতে তিনি বললেন, ‘হে কুরাইশ দল, আজ রাতে কি তোমাদের কোনো শিশু জন্মগ্রহণ করেছে?’ তারা বলল, ‘আমাদের জানা নেই।’ তখন তিনি বললেন, ‘দেখো, আজ এই উম্মতের নবী আগমন করেছেন। যাঁর দুই কাঁধের মাঝখানে নবুওয়াতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি দুই রাত পর্যন্ত দুধ পান করবেন না।’ লোকজন দ্রুত ওই সভা থেকে উঠে অনুসন্ধান শুরু করল। জানা গেল যে আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিবের ঘরে একটি পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করেছে।
ওই ইহুদি বললেন, ‘তোমরা আমাকে নিয়ে গিয়ে দেখাও।’ ইহুদি তাঁর দুই বাহুর মাঝখানের মোহরে নবুওয়াতের চিহ্ন দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন। জ্ঞান ফেরার পর তিনি বললেন, ‘নবুওয়াত বনি ইসরাইল থেকে চলে গেছে। হে কুরাইশ সম্প্রদায়, শোনো, এই নবীর মাধ্যমে তোমাদের প্রভাব প্রতিপত্তি এতই বৃদ্ধি পেয়েছে যে তাঁর শুভাগমনের সংবাদ পৃথিবীর প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে ছড়িয়ে পড়েছে।’ (মুস্তাদরাকে হাকিম: ৪১৭৭)
৪. নবীজির জন্মক্ষণ ভবিষ্যৎ বিজয়ের ইঙ্গিত: রাসুল (সা.)-এর জন্ম কোনো সাধারণ জন্ম ছিল না, বরং মহান আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর মানুষের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণের নিদর্শনস্বরূপ বিভিন্ন মুজিজা ও আশ্চর্য চিহ্ন দ্বারা তা প্রকাশ করেছিলেন। নবী (সা.)-এর শুভ জন্মের সময় তাঁর মা একটি আলোকচ্ছটা দেখতে পেয়েছিলেন, যার মাধ্যমে সিরিয়ার প্রাসাদগুলো আলোকিত হয়ে গিয়েছিল। সিরিয়ায় প্রাসাদ আলোকিত হওয়া দ্বারা ভবিষ্যতের ইসলামি সভ্যতার প্রসার এবং রোমান সাম্রাজ্যের পতনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
বাস্তবেও তা-ই হয়েছিল। ইরবাস ইবনে সারিয়্যা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-এর শুভ জন্মের সময় তাঁর মা একটি আলোকচ্ছটা দেখতে পান, এর মাধ্যমে সিরিয়ার প্রাসাদগুলো আলোকিত হয়ে যায়। (মুসতাদরাকে হাকিম: ৪১৭৮; মিশকাতুল মাসাবিহ: ৫৭৫৯)
৫. নবীজির জন্মক্ষণে রহমতের নূর: নবীজির জন্মকালে এমন আলো দেখা গিয়েছিল, যা সাধারণ কোনো আলো ছিল না, বরং তা ছিল এক অলৌকিক নিদর্শন। আকাশের তারকারাজি নিকটে চলে আসার যে বিষয়টি পাওয়া যায়, তা ভবিষ্যতের মহান পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে। এর মাধ্যমে বোঝানো হয় যে নবী (সা.)-এর আগমনের মাধ্যমে আসমান ও জমিন উভয়ই এক নতুন অধ্যায়ের সাক্ষী হয়েছিল।
ফাতিমা বিনতে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, যখন নবী (সা.)-এর শুভাগমন ঘটে, তখন আমি আমিনার (নবীজির মা) কাছে উপস্থিত ছিলাম। আমি দেখলাম, প্রতিটি ঘর উজ্জ্বল আলোতে ভরে গেছে। আরও দেখলাম, আসমানের তারকারাজি এত কাছে এসেছে যে আমার মনে হলো—এই তারকা আমার ওপর পতিত হবে।’ (ফাতহুল বারি, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৪২৬)
এই বর্ণনাটি ইমাম ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ফাতহুল বারিতে উল্লেখ করেছেন। তবে সনদের দিক থেকে এটি শক্তিশালী না হলেও নবীজির জন্মের অলৌকিকতা বর্ণনা করা অন্যান্য সহিহ্ হাদিসের সঙ্গে এর বিষয়বস্তু সামঞ্জস্যপূর্ণ।
পরিশেষে বলা যায়, নবীজির জন্মবর্ষের ঘটনাবলি প্রমাণ করে, তিনি ছিলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য বিশেষ রহমত। তাঁর জন্মের বছর আরববাসী পেয়েছিল বিজয়, মুক্তি ও সমৃদ্ধি। তাই সেই বছরকে যথার্থভাবেই বলা হয় ‘সানাতুল ফাতহ ওয়াল ইবতিহাজ’ বা বিজয় ও আনন্দের বছর। এই মহান জন্ম ছিল ইসলামের সূর্যোদয়ের প্রস্তুতি, যা পরবর্তীকালে বিশ্বসভ্যতার দিকনির্দেশক শক্তি হয়ে ওঠে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
মানব ইতিহাসের কিছু মুহূর্ত সমগ্র বিশ্বের জন্য যুগান্তকারী হয়ে দাঁড়ায়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্ম সেইরূপ এক ঘটনা। প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী, তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময় পবিত্র মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশের হাশেমি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মের মাধ্যমে বিশ্বজগৎ পেয়েছে মুক্তি, রহমত ও আলো।
আল্লাহ তাআলা নবীজির জন্মকে সাধারণ কোনো জন্ম হিসেবে রাখেননি; বরং এর সঙ্গে যুক্ত করেছেন একাধিক অলৌকিক ও ঐতিহাসিক ঘটনা, যা এই মহান জন্মকে অনন্য মহিমায় সমুজ্জ্বল করেছে।
১. হস্তিবাহিনীর ধ্বংস হওয়া: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মের ৫০-৫৫ দিন আগে হস্তিবাহিনীর ধ্বংসের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা ছিল নবী (সা.)-এর আবির্ভাবের অলৌকিক ইঙ্গিত ও ঘোষণা। হাবশার সম্রাট নাজ্জাসির পক্ষ থেকে ইয়েমেনের গভর্নর ছিল আবরাহা। সে রাজধানী সানায় খুব সুন্দর ও বড় গির্জা নির্মাণ করে চেষ্টা করল, যেন লোকেরা কাবাগৃহ ত্যাগ করে ইবাদত ও হজ-ওমরাহর জন্য সেখানে যায়।
এ কাজ মক্কাবাসী তথা অন্য আরবদের পছন্দ হয়নি। তারা কাবা ছেড়ে অন্য কোনো স্থানে যেতে রাজি হয়নি। এতে আবরাহা রাগান্বিত হয়ে কাবা ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে হাতির দল নিয়ে মক্কার দিকে অগ্রসর হয়। মক্কার কাছে পৌঁছে তারা মক্কার প্রধান [নবী (সা.)-এর দাদা] আবদুল মুত্তালিবের উটগুলো দখল করে নেয়। আবদুল মুত্তালিব আবরাহার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কেবল তাঁর উটগুলো ফেরত চায় আর কাবার বিষয়ে আল্লাহর ওপর ভরসা প্রকাশ করে।
অতঃপর যখন এই সেনাদল মিনাসংলগ্ন ‘মুহাসসার’ উপত্যকায় পৌঁছে, তখন আল্লাহ তাআলা একটি পাখির দলকে প্রেরণ করেন, যাদের ঠোঁটে ও পায়ে পোড়া মাটির কাঁকর ছিল। পাখিগুলো ওপর থেকে সেই কাঁকর বর্ষণ করে। ফলে তারা ধ্বংস হয়ে যায়।
আল্লাহ বলেন, ‘তুমি কি দেখোনি, তোমার প্রতিপালক হাতিওয়ালাদের সঙ্গে কী করেছিলেন? তাদের কৌশল কি তিনি বিফল করেননি? তিনি তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি। যারা নিক্ষেপ করছিল তাদের ওপর পোড়া মাটির পাথর। অতঃপর তিনি তাদের করলেন ভক্ষিত তৃণসাদৃশ।’ (সুরা ফিল: ১-৫)
২. দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্তি: নবী (সা.)-এর জন্মের পূর্ববর্তী কয়েক বছর আরব উপদ্বীপ বিশেষ করে হিজাজ অঞ্চলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ নেমে এসেছিল। মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাত। কুরাইশ গোত্রসহ আরবের অধিকাংশ গোত্র চরম সংকটে পতিত হয়েছিল।
নবীজির জন্মের বছর আরবের সেই দুর্ভিক্ষ কেটে যায়। আরবের ঘরে ঘরে আনন্দের ফল্গুধারা বইতে থাকে। যেহেতু একই বছরে কুরাইশরা আবরাহার বিরুদ্ধে জয়লাভ করেছিল এবং দুর্ভিক্ষ থেকে পরিত্রাণ পেয়েছিল, তাই বছরটিকে আরববাসী ‘সানাতুল ফাতহ ওয়াল ইবতিহাজ’ অর্থাৎ ‘বিজয় ও আনন্দের বছর’ নাম দিয়েছিল। (ইবনে কাসির, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৬৫; আস-সিরাতুল হালাবিয়া, ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৮)
৩. নবীজির আগমনী বার্তা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে ছড়িয়ে পড়া: নবী (সা.)-এর জন্মের খবর শুধু আরবেই নয়, বরং ইহুদি-নাসারা আলেমদের মধ্যেও আলোচিত হয়েছিল। তৎকালীন ইহুদি-নাসারা তাঁদের কিতাবে নবী (সা.)-এর সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী পেতেন। নবী (সা.)-এর আগমনের মাধ্যমে আরব, বিশেষ করে কুরাইশ গোত্রের মর্যাদা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, মক্কা শরিফে এক ইহুদি বাস করতেন। যে রাতে নবী (সা.) জন্মগ্রহণ করেন, সে রাতে তিনি বললেন, ‘হে কুরাইশ দল, আজ রাতে কি তোমাদের কোনো শিশু জন্মগ্রহণ করেছে?’ তারা বলল, ‘আমাদের জানা নেই।’ তখন তিনি বললেন, ‘দেখো, আজ এই উম্মতের নবী আগমন করেছেন। যাঁর দুই কাঁধের মাঝখানে নবুওয়াতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি দুই রাত পর্যন্ত দুধ পান করবেন না।’ লোকজন দ্রুত ওই সভা থেকে উঠে অনুসন্ধান শুরু করল। জানা গেল যে আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিবের ঘরে একটি পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করেছে।
ওই ইহুদি বললেন, ‘তোমরা আমাকে নিয়ে গিয়ে দেখাও।’ ইহুদি তাঁর দুই বাহুর মাঝখানের মোহরে নবুওয়াতের চিহ্ন দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন। জ্ঞান ফেরার পর তিনি বললেন, ‘নবুওয়াত বনি ইসরাইল থেকে চলে গেছে। হে কুরাইশ সম্প্রদায়, শোনো, এই নবীর মাধ্যমে তোমাদের প্রভাব প্রতিপত্তি এতই বৃদ্ধি পেয়েছে যে তাঁর শুভাগমনের সংবাদ পৃথিবীর প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে ছড়িয়ে পড়েছে।’ (মুস্তাদরাকে হাকিম: ৪১৭৭)
৪. নবীজির জন্মক্ষণ ভবিষ্যৎ বিজয়ের ইঙ্গিত: রাসুল (সা.)-এর জন্ম কোনো সাধারণ জন্ম ছিল না, বরং মহান আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর মানুষের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণের নিদর্শনস্বরূপ বিভিন্ন মুজিজা ও আশ্চর্য চিহ্ন দ্বারা তা প্রকাশ করেছিলেন। নবী (সা.)-এর শুভ জন্মের সময় তাঁর মা একটি আলোকচ্ছটা দেখতে পেয়েছিলেন, যার মাধ্যমে সিরিয়ার প্রাসাদগুলো আলোকিত হয়ে গিয়েছিল। সিরিয়ায় প্রাসাদ আলোকিত হওয়া দ্বারা ভবিষ্যতের ইসলামি সভ্যতার প্রসার এবং রোমান সাম্রাজ্যের পতনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
বাস্তবেও তা-ই হয়েছিল। ইরবাস ইবনে সারিয়্যা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-এর শুভ জন্মের সময় তাঁর মা একটি আলোকচ্ছটা দেখতে পান, এর মাধ্যমে সিরিয়ার প্রাসাদগুলো আলোকিত হয়ে যায়। (মুসতাদরাকে হাকিম: ৪১৭৮; মিশকাতুল মাসাবিহ: ৫৭৫৯)
৫. নবীজির জন্মক্ষণে রহমতের নূর: নবীজির জন্মকালে এমন আলো দেখা গিয়েছিল, যা সাধারণ কোনো আলো ছিল না, বরং তা ছিল এক অলৌকিক নিদর্শন। আকাশের তারকারাজি নিকটে চলে আসার যে বিষয়টি পাওয়া যায়, তা ভবিষ্যতের মহান পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে। এর মাধ্যমে বোঝানো হয় যে নবী (সা.)-এর আগমনের মাধ্যমে আসমান ও জমিন উভয়ই এক নতুন অধ্যায়ের সাক্ষী হয়েছিল।
ফাতিমা বিনতে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, যখন নবী (সা.)-এর শুভাগমন ঘটে, তখন আমি আমিনার (নবীজির মা) কাছে উপস্থিত ছিলাম। আমি দেখলাম, প্রতিটি ঘর উজ্জ্বল আলোতে ভরে গেছে। আরও দেখলাম, আসমানের তারকারাজি এত কাছে এসেছে যে আমার মনে হলো—এই তারকা আমার ওপর পতিত হবে।’ (ফাতহুল বারি, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৪২৬)
এই বর্ণনাটি ইমাম ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ফাতহুল বারিতে উল্লেখ করেছেন। তবে সনদের দিক থেকে এটি শক্তিশালী না হলেও নবীজির জন্মের অলৌকিকতা বর্ণনা করা অন্যান্য সহিহ্ হাদিসের সঙ্গে এর বিষয়বস্তু সামঞ্জস্যপূর্ণ।
পরিশেষে বলা যায়, নবীজির জন্মবর্ষের ঘটনাবলি প্রমাণ করে, তিনি ছিলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য বিশেষ রহমত। তাঁর জন্মের বছর আরববাসী পেয়েছিল বিজয়, মুক্তি ও সমৃদ্ধি। তাই সেই বছরকে যথার্থভাবেই বলা হয় ‘সানাতুল ফাতহ ওয়াল ইবতিহাজ’ বা বিজয় ও আনন্দের বছর। এই মহান জন্ম ছিল ইসলামের সূর্যোদয়ের প্রস্তুতি, যা পরবর্তীকালে বিশ্বসভ্যতার দিকনির্দেশক শক্তি হয়ে ওঠে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা
মানব ইতিহাসের কিছু মুহূর্ত সমগ্র বিশ্বের জন্য যুগান্তকারী হয়ে দাঁড়ায়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্ম সেইরূপ এক ঘটনা। প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী, তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময় পবিত্র মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশের হাশেমি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মের মাধ্যমে বিশ্বজগৎ পেয়েছে মুক্তি, রহমত ও আলো।
আল্লাহ তাআলা নবীজির জন্মকে সাধারণ কোনো জন্ম হিসেবে রাখেননি; বরং এর সঙ্গে যুক্ত করেছেন একাধিক অলৌকিক ও ঐতিহাসিক ঘটনা, যা এই মহান জন্মকে অনন্য মহিমায় সমুজ্জ্বল করেছে।
১. হস্তিবাহিনীর ধ্বংস হওয়া: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মের ৫০-৫৫ দিন আগে হস্তিবাহিনীর ধ্বংসের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা ছিল নবী (সা.)-এর আবির্ভাবের অলৌকিক ইঙ্গিত ও ঘোষণা। হাবশার সম্রাট নাজ্জাসির পক্ষ থেকে ইয়েমেনের গভর্নর ছিল আবরাহা। সে রাজধানী সানায় খুব সুন্দর ও বড় গির্জা নির্মাণ করে চেষ্টা করল, যেন লোকেরা কাবাগৃহ ত্যাগ করে ইবাদত ও হজ-ওমরাহর জন্য সেখানে যায়।
এ কাজ মক্কাবাসী তথা অন্য আরবদের পছন্দ হয়নি। তারা কাবা ছেড়ে অন্য কোনো স্থানে যেতে রাজি হয়নি। এতে আবরাহা রাগান্বিত হয়ে কাবা ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে হাতির দল নিয়ে মক্কার দিকে অগ্রসর হয়। মক্কার কাছে পৌঁছে তারা মক্কার প্রধান [নবী (সা.)-এর দাদা] আবদুল মুত্তালিবের উটগুলো দখল করে নেয়। আবদুল মুত্তালিব আবরাহার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কেবল তাঁর উটগুলো ফেরত চায় আর কাবার বিষয়ে আল্লাহর ওপর ভরসা প্রকাশ করে।
অতঃপর যখন এই সেনাদল মিনাসংলগ্ন ‘মুহাসসার’ উপত্যকায় পৌঁছে, তখন আল্লাহ তাআলা একটি পাখির দলকে প্রেরণ করেন, যাদের ঠোঁটে ও পায়ে পোড়া মাটির কাঁকর ছিল। পাখিগুলো ওপর থেকে সেই কাঁকর বর্ষণ করে। ফলে তারা ধ্বংস হয়ে যায়।
আল্লাহ বলেন, ‘তুমি কি দেখোনি, তোমার প্রতিপালক হাতিওয়ালাদের সঙ্গে কী করেছিলেন? তাদের কৌশল কি তিনি বিফল করেননি? তিনি তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি। যারা নিক্ষেপ করছিল তাদের ওপর পোড়া মাটির পাথর। অতঃপর তিনি তাদের করলেন ভক্ষিত তৃণসাদৃশ।’ (সুরা ফিল: ১-৫)
২. দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্তি: নবী (সা.)-এর জন্মের পূর্ববর্তী কয়েক বছর আরব উপদ্বীপ বিশেষ করে হিজাজ অঞ্চলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ নেমে এসেছিল। মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাত। কুরাইশ গোত্রসহ আরবের অধিকাংশ গোত্র চরম সংকটে পতিত হয়েছিল।
নবীজির জন্মের বছর আরবের সেই দুর্ভিক্ষ কেটে যায়। আরবের ঘরে ঘরে আনন্দের ফল্গুধারা বইতে থাকে। যেহেতু একই বছরে কুরাইশরা আবরাহার বিরুদ্ধে জয়লাভ করেছিল এবং দুর্ভিক্ষ থেকে পরিত্রাণ পেয়েছিল, তাই বছরটিকে আরববাসী ‘সানাতুল ফাতহ ওয়াল ইবতিহাজ’ অর্থাৎ ‘বিজয় ও আনন্দের বছর’ নাম দিয়েছিল। (ইবনে কাসির, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৬৫; আস-সিরাতুল হালাবিয়া, ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৮)
৩. নবীজির আগমনী বার্তা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে ছড়িয়ে পড়া: নবী (সা.)-এর জন্মের খবর শুধু আরবেই নয়, বরং ইহুদি-নাসারা আলেমদের মধ্যেও আলোচিত হয়েছিল। তৎকালীন ইহুদি-নাসারা তাঁদের কিতাবে নবী (সা.)-এর সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী পেতেন। নবী (সা.)-এর আগমনের মাধ্যমে আরব, বিশেষ করে কুরাইশ গোত্রের মর্যাদা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, মক্কা শরিফে এক ইহুদি বাস করতেন। যে রাতে নবী (সা.) জন্মগ্রহণ করেন, সে রাতে তিনি বললেন, ‘হে কুরাইশ দল, আজ রাতে কি তোমাদের কোনো শিশু জন্মগ্রহণ করেছে?’ তারা বলল, ‘আমাদের জানা নেই।’ তখন তিনি বললেন, ‘দেখো, আজ এই উম্মতের নবী আগমন করেছেন। যাঁর দুই কাঁধের মাঝখানে নবুওয়াতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি দুই রাত পর্যন্ত দুধ পান করবেন না।’ লোকজন দ্রুত ওই সভা থেকে উঠে অনুসন্ধান শুরু করল। জানা গেল যে আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিবের ঘরে একটি পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করেছে।
ওই ইহুদি বললেন, ‘তোমরা আমাকে নিয়ে গিয়ে দেখাও।’ ইহুদি তাঁর দুই বাহুর মাঝখানের মোহরে নবুওয়াতের চিহ্ন দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন। জ্ঞান ফেরার পর তিনি বললেন, ‘নবুওয়াত বনি ইসরাইল থেকে চলে গেছে। হে কুরাইশ সম্প্রদায়, শোনো, এই নবীর মাধ্যমে তোমাদের প্রভাব প্রতিপত্তি এতই বৃদ্ধি পেয়েছে যে তাঁর শুভাগমনের সংবাদ পৃথিবীর প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে ছড়িয়ে পড়েছে।’ (মুস্তাদরাকে হাকিম: ৪১৭৭)
৪. নবীজির জন্মক্ষণ ভবিষ্যৎ বিজয়ের ইঙ্গিত: রাসুল (সা.)-এর জন্ম কোনো সাধারণ জন্ম ছিল না, বরং মহান আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর মানুষের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণের নিদর্শনস্বরূপ বিভিন্ন মুজিজা ও আশ্চর্য চিহ্ন দ্বারা তা প্রকাশ করেছিলেন। নবী (সা.)-এর শুভ জন্মের সময় তাঁর মা একটি আলোকচ্ছটা দেখতে পেয়েছিলেন, যার মাধ্যমে সিরিয়ার প্রাসাদগুলো আলোকিত হয়ে গিয়েছিল। সিরিয়ায় প্রাসাদ আলোকিত হওয়া দ্বারা ভবিষ্যতের ইসলামি সভ্যতার প্রসার এবং রোমান সাম্রাজ্যের পতনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
বাস্তবেও তা-ই হয়েছিল। ইরবাস ইবনে সারিয়্যা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-এর শুভ জন্মের সময় তাঁর মা একটি আলোকচ্ছটা দেখতে পান, এর মাধ্যমে সিরিয়ার প্রাসাদগুলো আলোকিত হয়ে যায়। (মুসতাদরাকে হাকিম: ৪১৭৮; মিশকাতুল মাসাবিহ: ৫৭৫৯)
৫. নবীজির জন্মক্ষণে রহমতের নূর: নবীজির জন্মকালে এমন আলো দেখা গিয়েছিল, যা সাধারণ কোনো আলো ছিল না, বরং তা ছিল এক অলৌকিক নিদর্শন। আকাশের তারকারাজি নিকটে চলে আসার যে বিষয়টি পাওয়া যায়, তা ভবিষ্যতের মহান পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে। এর মাধ্যমে বোঝানো হয় যে নবী (সা.)-এর আগমনের মাধ্যমে আসমান ও জমিন উভয়ই এক নতুন অধ্যায়ের সাক্ষী হয়েছিল।
ফাতিমা বিনতে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, যখন নবী (সা.)-এর শুভাগমন ঘটে, তখন আমি আমিনার (নবীজির মা) কাছে উপস্থিত ছিলাম। আমি দেখলাম, প্রতিটি ঘর উজ্জ্বল আলোতে ভরে গেছে। আরও দেখলাম, আসমানের তারকারাজি এত কাছে এসেছে যে আমার মনে হলো—এই তারকা আমার ওপর পতিত হবে।’ (ফাতহুল বারি, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৪২৬)
এই বর্ণনাটি ইমাম ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ফাতহুল বারিতে উল্লেখ করেছেন। তবে সনদের দিক থেকে এটি শক্তিশালী না হলেও নবীজির জন্মের অলৌকিকতা বর্ণনা করা অন্যান্য সহিহ্ হাদিসের সঙ্গে এর বিষয়বস্তু সামঞ্জস্যপূর্ণ।
পরিশেষে বলা যায়, নবীজির জন্মবর্ষের ঘটনাবলি প্রমাণ করে, তিনি ছিলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য বিশেষ রহমত। তাঁর জন্মের বছর আরববাসী পেয়েছিল বিজয়, মুক্তি ও সমৃদ্ধি। তাই সেই বছরকে যথার্থভাবেই বলা হয় ‘সানাতুল ফাতহ ওয়াল ইবতিহাজ’ বা বিজয় ও আনন্দের বছর। এই মহান জন্ম ছিল ইসলামের সূর্যোদয়ের প্রস্তুতি, যা পরবর্তীকালে বিশ্বসভ্যতার দিকনির্দেশক শক্তি হয়ে ওঠে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
মানব ইতিহাসের কিছু মুহূর্ত সমগ্র বিশ্বের জন্য যুগান্তকারী হয়ে দাঁড়ায়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্ম সেইরূপ এক ঘটনা। প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী, তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময় পবিত্র মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশের হাশেমি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মের মাধ্যমে বিশ্বজগৎ পেয়েছে মুক্তি, রহমত ও আলো।
আল্লাহ তাআলা নবীজির জন্মকে সাধারণ কোনো জন্ম হিসেবে রাখেননি; বরং এর সঙ্গে যুক্ত করেছেন একাধিক অলৌকিক ও ঐতিহাসিক ঘটনা, যা এই মহান জন্মকে অনন্য মহিমায় সমুজ্জ্বল করেছে।
১. হস্তিবাহিনীর ধ্বংস হওয়া: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মের ৫০-৫৫ দিন আগে হস্তিবাহিনীর ধ্বংসের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা ছিল নবী (সা.)-এর আবির্ভাবের অলৌকিক ইঙ্গিত ও ঘোষণা। হাবশার সম্রাট নাজ্জাসির পক্ষ থেকে ইয়েমেনের গভর্নর ছিল আবরাহা। সে রাজধানী সানায় খুব সুন্দর ও বড় গির্জা নির্মাণ করে চেষ্টা করল, যেন লোকেরা কাবাগৃহ ত্যাগ করে ইবাদত ও হজ-ওমরাহর জন্য সেখানে যায়।
এ কাজ মক্কাবাসী তথা অন্য আরবদের পছন্দ হয়নি। তারা কাবা ছেড়ে অন্য কোনো স্থানে যেতে রাজি হয়নি। এতে আবরাহা রাগান্বিত হয়ে কাবা ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে হাতির দল নিয়ে মক্কার দিকে অগ্রসর হয়। মক্কার কাছে পৌঁছে তারা মক্কার প্রধান [নবী (সা.)-এর দাদা] আবদুল মুত্তালিবের উটগুলো দখল করে নেয়। আবদুল মুত্তালিব আবরাহার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কেবল তাঁর উটগুলো ফেরত চায় আর কাবার বিষয়ে আল্লাহর ওপর ভরসা প্রকাশ করে।
অতঃপর যখন এই সেনাদল মিনাসংলগ্ন ‘মুহাসসার’ উপত্যকায় পৌঁছে, তখন আল্লাহ তাআলা একটি পাখির দলকে প্রেরণ করেন, যাদের ঠোঁটে ও পায়ে পোড়া মাটির কাঁকর ছিল। পাখিগুলো ওপর থেকে সেই কাঁকর বর্ষণ করে। ফলে তারা ধ্বংস হয়ে যায়।
আল্লাহ বলেন, ‘তুমি কি দেখোনি, তোমার প্রতিপালক হাতিওয়ালাদের সঙ্গে কী করেছিলেন? তাদের কৌশল কি তিনি বিফল করেননি? তিনি তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি। যারা নিক্ষেপ করছিল তাদের ওপর পোড়া মাটির পাথর। অতঃপর তিনি তাদের করলেন ভক্ষিত তৃণসাদৃশ।’ (সুরা ফিল: ১-৫)
২. দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্তি: নবী (সা.)-এর জন্মের পূর্ববর্তী কয়েক বছর আরব উপদ্বীপ বিশেষ করে হিজাজ অঞ্চলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ নেমে এসেছিল। মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাত। কুরাইশ গোত্রসহ আরবের অধিকাংশ গোত্র চরম সংকটে পতিত হয়েছিল।
নবীজির জন্মের বছর আরবের সেই দুর্ভিক্ষ কেটে যায়। আরবের ঘরে ঘরে আনন্দের ফল্গুধারা বইতে থাকে। যেহেতু একই বছরে কুরাইশরা আবরাহার বিরুদ্ধে জয়লাভ করেছিল এবং দুর্ভিক্ষ থেকে পরিত্রাণ পেয়েছিল, তাই বছরটিকে আরববাসী ‘সানাতুল ফাতহ ওয়াল ইবতিহাজ’ অর্থাৎ ‘বিজয় ও আনন্দের বছর’ নাম দিয়েছিল। (ইবনে কাসির, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৬৫; আস-সিরাতুল হালাবিয়া, ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৮)
৩. নবীজির আগমনী বার্তা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে ছড়িয়ে পড়া: নবী (সা.)-এর জন্মের খবর শুধু আরবেই নয়, বরং ইহুদি-নাসারা আলেমদের মধ্যেও আলোচিত হয়েছিল। তৎকালীন ইহুদি-নাসারা তাঁদের কিতাবে নবী (সা.)-এর সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী পেতেন। নবী (সা.)-এর আগমনের মাধ্যমে আরব, বিশেষ করে কুরাইশ গোত্রের মর্যাদা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, মক্কা শরিফে এক ইহুদি বাস করতেন। যে রাতে নবী (সা.) জন্মগ্রহণ করেন, সে রাতে তিনি বললেন, ‘হে কুরাইশ দল, আজ রাতে কি তোমাদের কোনো শিশু জন্মগ্রহণ করেছে?’ তারা বলল, ‘আমাদের জানা নেই।’ তখন তিনি বললেন, ‘দেখো, আজ এই উম্মতের নবী আগমন করেছেন। যাঁর দুই কাঁধের মাঝখানে নবুওয়াতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি দুই রাত পর্যন্ত দুধ পান করবেন না।’ লোকজন দ্রুত ওই সভা থেকে উঠে অনুসন্ধান শুরু করল। জানা গেল যে আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিবের ঘরে একটি পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করেছে।
ওই ইহুদি বললেন, ‘তোমরা আমাকে নিয়ে গিয়ে দেখাও।’ ইহুদি তাঁর দুই বাহুর মাঝখানের মোহরে নবুওয়াতের চিহ্ন দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন। জ্ঞান ফেরার পর তিনি বললেন, ‘নবুওয়াত বনি ইসরাইল থেকে চলে গেছে। হে কুরাইশ সম্প্রদায়, শোনো, এই নবীর মাধ্যমে তোমাদের প্রভাব প্রতিপত্তি এতই বৃদ্ধি পেয়েছে যে তাঁর শুভাগমনের সংবাদ পৃথিবীর প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে ছড়িয়ে পড়েছে।’ (মুস্তাদরাকে হাকিম: ৪১৭৭)
৪. নবীজির জন্মক্ষণ ভবিষ্যৎ বিজয়ের ইঙ্গিত: রাসুল (সা.)-এর জন্ম কোনো সাধারণ জন্ম ছিল না, বরং মহান আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর মানুষের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণের নিদর্শনস্বরূপ বিভিন্ন মুজিজা ও আশ্চর্য চিহ্ন দ্বারা তা প্রকাশ করেছিলেন। নবী (সা.)-এর শুভ জন্মের সময় তাঁর মা একটি আলোকচ্ছটা দেখতে পেয়েছিলেন, যার মাধ্যমে সিরিয়ার প্রাসাদগুলো আলোকিত হয়ে গিয়েছিল। সিরিয়ায় প্রাসাদ আলোকিত হওয়া দ্বারা ভবিষ্যতের ইসলামি সভ্যতার প্রসার এবং রোমান সাম্রাজ্যের পতনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
বাস্তবেও তা-ই হয়েছিল। ইরবাস ইবনে সারিয়্যা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-এর শুভ জন্মের সময় তাঁর মা একটি আলোকচ্ছটা দেখতে পান, এর মাধ্যমে সিরিয়ার প্রাসাদগুলো আলোকিত হয়ে যায়। (মুসতাদরাকে হাকিম: ৪১৭৮; মিশকাতুল মাসাবিহ: ৫৭৫৯)
৫. নবীজির জন্মক্ষণে রহমতের নূর: নবীজির জন্মকালে এমন আলো দেখা গিয়েছিল, যা সাধারণ কোনো আলো ছিল না, বরং তা ছিল এক অলৌকিক নিদর্শন। আকাশের তারকারাজি নিকটে চলে আসার যে বিষয়টি পাওয়া যায়, তা ভবিষ্যতের মহান পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে। এর মাধ্যমে বোঝানো হয় যে নবী (সা.)-এর আগমনের মাধ্যমে আসমান ও জমিন উভয়ই এক নতুন অধ্যায়ের সাক্ষী হয়েছিল।
ফাতিমা বিনতে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, যখন নবী (সা.)-এর শুভাগমন ঘটে, তখন আমি আমিনার (নবীজির মা) কাছে উপস্থিত ছিলাম। আমি দেখলাম, প্রতিটি ঘর উজ্জ্বল আলোতে ভরে গেছে। আরও দেখলাম, আসমানের তারকারাজি এত কাছে এসেছে যে আমার মনে হলো—এই তারকা আমার ওপর পতিত হবে।’ (ফাতহুল বারি, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৪২৬)
এই বর্ণনাটি ইমাম ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ফাতহুল বারিতে উল্লেখ করেছেন। তবে সনদের দিক থেকে এটি শক্তিশালী না হলেও নবীজির জন্মের অলৌকিকতা বর্ণনা করা অন্যান্য সহিহ্ হাদিসের সঙ্গে এর বিষয়বস্তু সামঞ্জস্যপূর্ণ।
পরিশেষে বলা যায়, নবীজির জন্মবর্ষের ঘটনাবলি প্রমাণ করে, তিনি ছিলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য বিশেষ রহমত। তাঁর জন্মের বছর আরববাসী পেয়েছিল বিজয়, মুক্তি ও সমৃদ্ধি। তাই সেই বছরকে যথার্থভাবেই বলা হয় ‘সানাতুল ফাতহ ওয়াল ইবতিহাজ’ বা বিজয় ও আনন্দের বছর। এই মহান জন্ম ছিল ইসলামের সূর্যোদয়ের প্রস্তুতি, যা পরবর্তীকালে বিশ্বসভ্যতার দিকনির্দেশক শক্তি হয়ে ওঠে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
মানবসমাজের অর্ধেক অংশ হলো নারী। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে কন্যা, বোন, স্ত্রী ও মা হিসেবে নারীরা মানুষের জীবনে অপরিসীম প্রভাব রাখে। তাই তাদের সঙ্গে উত্তম আচরণের নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তাদের (নারীদের) সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে জীবনযাপন করো।’ (সুরা নিসা: ১৯)
৯ মিনিট আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগেএকটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, এমনকি রাস্তায় চলাচল এবং এর ব্যবস্থাপনায়ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নিরাপদ সড়ক ও জনপথ গড়ে তোলাকে যেমন রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে দেখে, আবার এটিকে প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হিসেবেও চিহ্নিত করে।
১ দিন আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেফয়জুল্লাহ রিয়াদ
মানবসমাজের অর্ধেক অংশ হলো নারী। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে কন্যা, বোন, স্ত্রী ও মা হিসেবে নারীরা মানুষের জীবনে অপরিসীম প্রভাব রাখে। তাই তাদের সঙ্গে উত্তম আচরণের নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তাদের (নারীদের) সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে জীবনযাপন করো।’ (সুরা নিসা: ১৯)
এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইমানদার পুরুষদের কেবল ভরণপোষণের দায়িত্ব দেননি, বরং নারীদের সঙ্গে হৃদ্যতা, স্নেহ ও সম্মানের আচরণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। মহানবী (সা.) নারীদের প্রতি সদ্ব্যবহারকে উত্তম চরিত্রের নিদর্শন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম, যে তার পরিবারের কাছে উত্তম। আর আমি আমার পরিবারের কাছে তোমাদের সবার চেয়ে উত্তম।’ (জামে তিরমিজি)
ইসলাম আগমনের পূর্বে নারীদের কোনো মর্যাদা ছিল না। আরব সমাজে কন্যাসন্তানকে জীবন্ত কবর দেওয়ার কুপ্রথা ছিল। সেই অন্ধকার যুগে ইসলাম নারীদের দিয়েছে সম্মান, অধিকার ও নিরাপত্তা। শিক্ষা, উত্তরাধিকার, বিয়ে ও মতামত দেওয়ার ক্ষেত্রেও ইসলাম নারীর যথাযোগ্য অধিকার নিশ্চিত করেছে।
হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.) নারীদের কাচের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কাচ যেমন ভঙ্গুর, তেমনি নারীর মনও কোমল; ভালোবাসা ও যত্নেই তারা টিকে থাকে। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘নারীকে পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। তুমি যদি তা সোজা করতে চাও, তা ভেঙে যাবে; আর যদি ছেড়ে দাও, বাঁকাই থাকবে। তাই তাদের সদুপদেশ দাও।’ (সহিহ বুখারি)
একজন পুরুষের উচিত নারীর সঙ্গে কথা বলার সময় কোমল ভাষা ব্যবহার করা, পারিবারিক সিদ্ধান্তে তার মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া এবং তাকে মানসিক প্রশান্তি দেওয়া। কারণ পরিবারে ভালোবাসা ও স্থিতি আসে পারস্পরিক সম্মান ও উত্তম আচরণের মাধ্যমে। স্ত্রীকে জীবনের সহযাত্রী হিসেবে দেখা এবং তার সঙ্গে উত্তম আচরণ করাই ইমানদারের বৈশিষ্ট্য।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।
মানবসমাজের অর্ধেক অংশ হলো নারী। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে কন্যা, বোন, স্ত্রী ও মা হিসেবে নারীরা মানুষের জীবনে অপরিসীম প্রভাব রাখে। তাই তাদের সঙ্গে উত্তম আচরণের নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তাদের (নারীদের) সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে জীবনযাপন করো।’ (সুরা নিসা: ১৯)
এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইমানদার পুরুষদের কেবল ভরণপোষণের দায়িত্ব দেননি, বরং নারীদের সঙ্গে হৃদ্যতা, স্নেহ ও সম্মানের আচরণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। মহানবী (সা.) নারীদের প্রতি সদ্ব্যবহারকে উত্তম চরিত্রের নিদর্শন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম, যে তার পরিবারের কাছে উত্তম। আর আমি আমার পরিবারের কাছে তোমাদের সবার চেয়ে উত্তম।’ (জামে তিরমিজি)
ইসলাম আগমনের পূর্বে নারীদের কোনো মর্যাদা ছিল না। আরব সমাজে কন্যাসন্তানকে জীবন্ত কবর দেওয়ার কুপ্রথা ছিল। সেই অন্ধকার যুগে ইসলাম নারীদের দিয়েছে সম্মান, অধিকার ও নিরাপত্তা। শিক্ষা, উত্তরাধিকার, বিয়ে ও মতামত দেওয়ার ক্ষেত্রেও ইসলাম নারীর যথাযোগ্য অধিকার নিশ্চিত করেছে।
হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.) নারীদের কাচের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কাচ যেমন ভঙ্গুর, তেমনি নারীর মনও কোমল; ভালোবাসা ও যত্নেই তারা টিকে থাকে। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘নারীকে পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। তুমি যদি তা সোজা করতে চাও, তা ভেঙে যাবে; আর যদি ছেড়ে দাও, বাঁকাই থাকবে। তাই তাদের সদুপদেশ দাও।’ (সহিহ বুখারি)
একজন পুরুষের উচিত নারীর সঙ্গে কথা বলার সময় কোমল ভাষা ব্যবহার করা, পারিবারিক সিদ্ধান্তে তার মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া এবং তাকে মানসিক প্রশান্তি দেওয়া। কারণ পরিবারে ভালোবাসা ও স্থিতি আসে পারস্পরিক সম্মান ও উত্তম আচরণের মাধ্যমে। স্ত্রীকে জীবনের সহযাত্রী হিসেবে দেখা এবং তার সঙ্গে উত্তম আচরণ করাই ইমানদারের বৈশিষ্ট্য।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।
মানব ইতিহাসের কিছু মুহূর্ত সমগ্র বিশ্বের জন্য যুগান্তকারী হয়ে দাঁড়ায়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্ম সেইরূপ এক ঘটনা। প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী, তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময় পবিত্র মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশের হাশেমি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন।
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগেএকটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, এমনকি রাস্তায় চলাচল এবং এর ব্যবস্থাপনায়ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নিরাপদ সড়ক ও জনপথ গড়ে তোলাকে যেমন রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে দেখে, আবার এটিকে প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হিসেবেও চিহ্নিত করে।
১ দিন আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৭ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ৩০ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৮ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৮ মিনিট |
আসর | ০৩: ৪৯ মিনিট | ০৫: ২৫ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৭ মিনিট | ০৬: ৪১ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪২ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৭ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ৩০ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৮ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৮ মিনিট |
আসর | ০৩: ৪৯ মিনিট | ০৫: ২৫ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৭ মিনিট | ০৬: ৪১ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪২ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
মানব ইতিহাসের কিছু মুহূর্ত সমগ্র বিশ্বের জন্য যুগান্তকারী হয়ে দাঁড়ায়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্ম সেইরূপ এক ঘটনা। প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী, তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময় পবিত্র মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশের হাশেমি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন।
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫মানবসমাজের অর্ধেক অংশ হলো নারী। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে কন্যা, বোন, স্ত্রী ও মা হিসেবে নারীরা মানুষের জীবনে অপরিসীম প্রভাব রাখে। তাই তাদের সঙ্গে উত্তম আচরণের নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তাদের (নারীদের) সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে জীবনযাপন করো।’ (সুরা নিসা: ১৯)
৯ মিনিট আগেএকটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, এমনকি রাস্তায় চলাচল এবং এর ব্যবস্থাপনায়ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নিরাপদ সড়ক ও জনপথ গড়ে তোলাকে যেমন রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে দেখে, আবার এটিকে প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হিসেবেও চিহ্নিত করে।
১ দিন আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেশাব্বির আহমদ
একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, এমনকি রাস্তায় চলাচল এবং এর ব্যবস্থাপনায়ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নিরাপদ সড়ক ও জনপথ গড়ে তোলাকে যেমন রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে দেখে, আবার এটিকে প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হিসেবেও চিহ্নিত করে।
নিরাপদ সড়ক গড়ে তোলাকে নবী (সা.) ইমানের শাখা বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইমানের ৭০টির বেশি শাখা আছে...। আর সবচেয়ে নিচের শাখাটি হলো সড়কে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা সরিয়ে দেওয়া।’ (সহিহ বুখারি)।
এমনকি রাস্তা থেকে কাঁটা, ময়লা বা প্রতিবন্ধকতা সরানোকে ইসলামে সদকা বা দান হিসেবে গণ্য করা হয়েছে; যা পরকালে একজন মুমিনের ক্ষমা ও জান্নাত পাওয়ার অসিলা হতে পারে। এ ছাড়া সড়ক দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করা এবং যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা ইসলামে সুস্পষ্ট জুলুম ও গুনাহের কাজ।
ইসলাম ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু যান চলাচল নিশ্চিত করাকে বিশেষ সওয়াব লাভের উপায় হিসেবে উল্লেখ করেছে। তাই নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলতে ট্রাফিক পুলিশ, চালক ও সাধারণ নাগরিক—সবারই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
চালকদের একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে—বেপরোয়া গতি, অদক্ষতা বা অসতর্কতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটানো গুরুতর অপরাধ। আর ইচ্ছাকৃত বা স্বেচ্ছায় হত্যাকাণ্ডের পরিণাম যেমন জাহান্নাম, তেমনি অসতর্কতাবশত কাউকে হত্যা করলে সে জন্যও কঠিন শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে ইসলামে।
সাধারণ নাগরিকদের কর্তব্য হলো চলাচলের সময় রাস্তার প্রধান হকগুলো মেনে চলা। যেমন, দৃষ্টি সংযত রাখা, কাউকে কষ্ট না দেওয়া, নিজে সালাম দেওয়া, কেউ সালাম দিলে তার উত্তর দেওয়া, অন্ধ, বৃদ্ধ, শিশু বা বিপদে পড়া ব্যক্তিকে সাহায্য করা।
আর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁদের উচিত সড়ক নিরাপদ রাখতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা, অযথা কাউকে হয়রানি না করা, অসদুপায় গ্রহণের সুযোগ কাউকে না দেওয়া, নিজেও গ্রহণ না করা, আইনের প্রতি মানুষকে উৎসাহিত করা।
একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, এমনকি রাস্তায় চলাচল এবং এর ব্যবস্থাপনায়ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নিরাপদ সড়ক ও জনপথ গড়ে তোলাকে যেমন রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে দেখে, আবার এটিকে প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হিসেবেও চিহ্নিত করে।
নিরাপদ সড়ক গড়ে তোলাকে নবী (সা.) ইমানের শাখা বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইমানের ৭০টির বেশি শাখা আছে...। আর সবচেয়ে নিচের শাখাটি হলো সড়কে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা সরিয়ে দেওয়া।’ (সহিহ বুখারি)।
এমনকি রাস্তা থেকে কাঁটা, ময়লা বা প্রতিবন্ধকতা সরানোকে ইসলামে সদকা বা দান হিসেবে গণ্য করা হয়েছে; যা পরকালে একজন মুমিনের ক্ষমা ও জান্নাত পাওয়ার অসিলা হতে পারে। এ ছাড়া সড়ক দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করা এবং যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা ইসলামে সুস্পষ্ট জুলুম ও গুনাহের কাজ।
ইসলাম ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু যান চলাচল নিশ্চিত করাকে বিশেষ সওয়াব লাভের উপায় হিসেবে উল্লেখ করেছে। তাই নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলতে ট্রাফিক পুলিশ, চালক ও সাধারণ নাগরিক—সবারই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
চালকদের একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে—বেপরোয়া গতি, অদক্ষতা বা অসতর্কতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটানো গুরুতর অপরাধ। আর ইচ্ছাকৃত বা স্বেচ্ছায় হত্যাকাণ্ডের পরিণাম যেমন জাহান্নাম, তেমনি অসতর্কতাবশত কাউকে হত্যা করলে সে জন্যও কঠিন শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে ইসলামে।
সাধারণ নাগরিকদের কর্তব্য হলো চলাচলের সময় রাস্তার প্রধান হকগুলো মেনে চলা। যেমন, দৃষ্টি সংযত রাখা, কাউকে কষ্ট না দেওয়া, নিজে সালাম দেওয়া, কেউ সালাম দিলে তার উত্তর দেওয়া, অন্ধ, বৃদ্ধ, শিশু বা বিপদে পড়া ব্যক্তিকে সাহায্য করা।
আর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁদের উচিত সড়ক নিরাপদ রাখতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা, অযথা কাউকে হয়রানি না করা, অসদুপায় গ্রহণের সুযোগ কাউকে না দেওয়া, নিজেও গ্রহণ না করা, আইনের প্রতি মানুষকে উৎসাহিত করা।
মানব ইতিহাসের কিছু মুহূর্ত সমগ্র বিশ্বের জন্য যুগান্তকারী হয়ে দাঁড়ায়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্ম সেইরূপ এক ঘটনা। প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী, তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময় পবিত্র মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশের হাশেমি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন।
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫মানবসমাজের অর্ধেক অংশ হলো নারী। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে কন্যা, বোন, স্ত্রী ও মা হিসেবে নারীরা মানুষের জীবনে অপরিসীম প্রভাব রাখে। তাই তাদের সঙ্গে উত্তম আচরণের নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তাদের (নারীদের) সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে জীবনযাপন করো।’ (সুরা নিসা: ১৯)
৯ মিনিট আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৬ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৮ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৯ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫০ মিনিট | ০৫: ২৫ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৭ মিনিট | ০৬: ৪১ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪২ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৬ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৮ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৯ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫০ মিনিট | ০৫: ২৫ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৭ মিনিট | ০৬: ৪১ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪২ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
মানব ইতিহাসের কিছু মুহূর্ত সমগ্র বিশ্বের জন্য যুগান্তকারী হয়ে দাঁড়ায়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্ম সেইরূপ এক ঘটনা। প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী, তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময় পবিত্র মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশের হাশেমি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন।
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫মানবসমাজের অর্ধেক অংশ হলো নারী। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে কন্যা, বোন, স্ত্রী ও মা হিসেবে নারীরা মানুষের জীবনে অপরিসীম প্রভাব রাখে। তাই তাদের সঙ্গে উত্তম আচরণের নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তাদের (নারীদের) সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে জীবনযাপন করো।’ (সুরা নিসা: ১৯)
৯ মিনিট আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগেএকটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান হিসেবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, এমনকি রাস্তায় চলাচল এবং এর ব্যবস্থাপনায়ও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম নিরাপদ সড়ক ও জনপথ গড়ে তোলাকে যেমন রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে দেখে, আবার এটিকে প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হিসেবেও চিহ্নিত করে।
১ দিন আগে