হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর
মা তখনো জায়নামাজে বসে আছেন। ফজরের নামাজ আদায় শেষে তসবিহ পাঠ ও কোরআন তিলাওয়াতে মগ্ন। ইশরাকের নামাজ আদায় করেই হয়তো গৃহস্থালির কাজ শুরু করবেন। ইতিমধ্যে কলিজার টুকরা সন্তানের কোমল কণ্ঠে ভেসে আসে মায়াবী এক ডাক—‘মা, মক্তবের সময় হয়ে এসেছে। কিছু খেয়ে তাড়াতাড়ি মক্তবে যেতে হবে।’
এমন তাগাদায় মা যত দ্রুত সম্ভব কোমলমতি সন্তানকে মক্তবে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত করে দেন। মমতাময়ীর স্নেহ আর বাবার অভিভাবকত্বের শীতল ছায়ায় তারা ছুটে যায় সেই পবিত্র পাঠশালায়; যার নাম মক্তব। এটি যেন মুসলিম পরিবারের ঐতিহ্যের বনিয়াদি পাঠশালা, যেখানে কোমল হৃদয়ে নৈতিকতার বীজ বপন করা হয়। মক্তবের শিক্ষার্থীদের কোরআন তিলাওয়াতের সুর যেন প্রতিটি ভোরে ছড়িয়ে দেয় এক আলোকোজ্জ্বল নূর।
ভোরে মক্তবপানে ছুটে চলা এক পবিত্র দৃশ্য
কখনো ঘন কুয়াশা ভেদ করে শিশিরভেজা পথ দিয়ে, কখনো বৃষ্টিভেজা গ্রামীণ পথ মাড়িয়ে, আবার কখনো সূর্যরাঙা পথ পাড়ি দিয়ে শিশু-কিশোরের দল ছুটে চলে মক্তবের দিকে। দিনের সূচনালগ্নে মক্তবই যেন তাদের প্রথম গন্তব্য। ভোরবিহানে কায়দা, আমপারা, কোরআন বুকে মক্তবপানে শিশুদের ছুটে চলার এই পবিত্র দৃশ্য যেন আলোকিত ভবিষ্যতের ইঙ্গিত বহন করে। তাই তো বলা হয়, মক্তব আলোকিত প্রজন্ম গড়ার সূতিকাগার।
বনিয়াদি শিক্ষার আলোকধারা
মক্তবে শুধু কোরআন তিলাওয়াতই শেখানো হয় না। সংশ্লিষ্ট শিক্ষক কচিকাঁচা ছেলেমেয়েদের নামাজ, তায়াম্মুম, অজু ও গোসলের নিয়মসহ জীবনঘনিষ্ঠ দোয়া ও জরুরি বিধানের তালিম দেন। সেই সঙ্গে মা-বাবা ও প্রতিবেশীর হক, বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা, ছোটদের প্রতি স্নেহ, সামাজিক শিষ্টাচার, মানবিক মূল্যবোধ, কর্তব্যপরায়ণতা, দেশাত্মবোধসহ প্রয়োজনীয় আদব-সভ্যতার শিক্ষাও দেওয়া হয়।
সর্বোপরি, ইসলামি শিক্ষা-সংস্কৃতির আলোকধারায় আদর্শ সমাজ বিনির্মাণ ও আলোকিত প্রজন্ম গড়তে মক্তবের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনস্বীকার্য। মক্তবের চাহিদা পূরণে একসময় পাড়া-মহল্লার অনেক বাড়িতে, এমনকি আমগাছ তলায়ও মক্তবের আদলে শিক্ষা দেওয়া হতো। অনেক ধার্মিক শিক্ষিত নারী নিজেদের ঘরে পাড়ার ছোট ছেলেমেয়েদের কোরআন শেখাতেন। আমার নিজের বাল্যকালে মক্তবে পড়া এবং দাদির কালো ফ্রেমের চশমা চোখে কোরআন তিলাওয়াতের দৃশ্য আজও হৃদয়ে সজীব।
কোরআনের ঐতিহ্য: যা ছিল ঘরে ঘরে
কোরআন তিলাওয়াতের মতো সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত একসময় মুসলিম সমাজের প্রায় প্রতিটি ঘরে প্রচলিত ছিল এই মক্তবের অবদানেই। ফজরের নামাজ আদায় করে মুরব্বিরা কোরআন তিলাওয়াতে মশগুল হয়ে যেতেন। সকাল-সন্ধ্যায়ও ঘরে-বাড়িতে নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াত করা হতো এবং ছেলেমেয়েদের তিলাওয়াতে বসিয়ে দেওয়া হতো। ফলে প্রায় প্রতিটি ঘর থেকে সকাল-সাঁঝে কোরআন তিলাওয়াতের সুমধুর আওয়াজ ধ্বনিত হতো। পবিত্রতার সৌরভ ছড়িয়ে পড়ত ঘরে ঘরে আর স্বচ্ছ নৈতিক চেতনা সঞ্চারিত হতো অন্তরে।
কোরআন তিলাওয়াতের ফলে মুমিনের হৃদয়ে সৃষ্টি হয় তাকওয়ার আবহ, শাণিত হয় ইমানি স্পৃহা। যেমনটি আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘মুমিন তো তারাই, যাদের হৃদয় কম্পিত হয়, যখন আল্লাহকে স্মরণ করা হয় এবং যখন তার আয়াত তাদের কাছে তিলাওয়াত করা হয়, তখন তা তাদের ইমান বৃদ্ধি করে এবং তারা তাদের প্রতিপালকের ওপরই নির্ভর করে।’ (সুরা আনফাল: ০২)
বিলুপ্তির পথে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য
মক্তবকেন্দ্রিক বনিয়াদি শিক্ষার সুব্যবস্থা ছিল বলেই তখনকার শিশু-কিশোরদের মধ্যে আজকের মতো লাগামহীন দুরন্তপনা, তরুণদের বখাটেপনা আর আচার-অনুষ্ঠানে বেহায়াপনা ছিল না। সমুন্নত ছিল নৈতিক মূল্যবোধ, আদর্শিক চেতনা ও সামাজিক কর্তব্যপরায়ণতা। জীবনের শুরুতে মক্তবের শিক্ষা ধারণ করে বেড়ে ওঠার কারণেই অনেকে উচ্চ পদমর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েও ধর্মীয় অনুরাগ, নিরহংকারী চালচলন, বিনয়-ভদ্রতার গুণে বিভূষিত ছিলেন।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে কোমলমতি শিশু-কিশোরদের ভোরবিহানে কোরআন বুকে মক্তবপানে ছুটে চলার সেই পবিত্র দৃশ্য এখন আর আগের মতো দেখা যায় না। ছোট ছোট ছেলেমেয়ের কোমল কণ্ঠে সম্মিলিতভাবে কোরআন তিলাওয়াত এবং প্রয়োজনীয় দোয়া পাঠের সেই আওয়াজ এখন আর শোনা যায় না। মক্তবগুলোও এখন প্রাণবন্ত নয়। ঘরে ঘরে কোরআন তিলাওয়াতের যে আবহমান ঐতিহ্য জারি ছিল, তা এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। সকাল-সন্ধ্যায় পাড়া-মহল্লার ঘরবাড়ি থেকে কোরআন তিলাওয়াতের সুমধুর আওয়াজ ভেসে আসার বদলে এখন ভেসে আসে বিভিন্ন অযাচিত ধ্বনি-প্রতিধ্বনি।
তথ্যপ্রযুক্তির নগ্ন থাবায়, তথাকথিত আধুনিকতা ও অপসংস্কৃতির আগ্রাসনে কচি বয়সেই ছেলেমেয়েরা নৈতিকতাবিবর্জিত সংস্কৃতি ও কৌতুক শিখছে। এভাবে নবপ্রজন্ম নিমজ্জিত হচ্ছে অনৈতিকতার অতল গহ্বরে। ক্রমেই কোরআনের পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে চলেছে সমাজ।
সমাজকে আলোর পথে ফেরাতে মক্তবের পুনর্জাগরণ
এমন ক্রান্তিকালে নবপ্রজন্মকে আদর্শ মানুষরূপে গড়ে তুলে সমাজকে আলোর পথে ফিরিয়ে আনতে ঐতিহ্যের বনিয়াদি পাঠশালা মক্তবগুলোকে সজীব করে তুলতে হবে। প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় গড়ে তুলতে হবে মক্তব এবং এর ব্যবস্থাপনাকে সুসংহত করতে হবে।
দুনিয়াবি সাময়িক চাকচিক্য ও ভোগ-বিলাস নয়; বরং উভয় জগতের চিরশান্তি ও কল্যাণের ফল্গুধারায় অবগাহন করতে সন্তানদের কোরআন-সুন্নাহর শিক্ষাধারায় আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। সন্তানদের পুরো জীবনকে প্রকৃত আলোকধারায় উদ্ভাসিত করতে জীবনের সূচনাপর্বেই মক্তবের বনিয়াদি শিক্ষার প্রতি অধিকতর যত্নবান হতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে ঘরে ঘরে কোরআন তিলাওয়াতের সেই পবিত্র ঐতিহ্য।
লেখক: খতিব, শহীদ তিতুমীর ইনস্টিটিউট জামে মসজিদ, কক্সবাজার
মা তখনো জায়নামাজে বসে আছেন। ফজরের নামাজ আদায় শেষে তসবিহ পাঠ ও কোরআন তিলাওয়াতে মগ্ন। ইশরাকের নামাজ আদায় করেই হয়তো গৃহস্থালির কাজ শুরু করবেন। ইতিমধ্যে কলিজার টুকরা সন্তানের কোমল কণ্ঠে ভেসে আসে মায়াবী এক ডাক—‘মা, মক্তবের সময় হয়ে এসেছে। কিছু খেয়ে তাড়াতাড়ি মক্তবে যেতে হবে।’
এমন তাগাদায় মা যত দ্রুত সম্ভব কোমলমতি সন্তানকে মক্তবে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত করে দেন। মমতাময়ীর স্নেহ আর বাবার অভিভাবকত্বের শীতল ছায়ায় তারা ছুটে যায় সেই পবিত্র পাঠশালায়; যার নাম মক্তব। এটি যেন মুসলিম পরিবারের ঐতিহ্যের বনিয়াদি পাঠশালা, যেখানে কোমল হৃদয়ে নৈতিকতার বীজ বপন করা হয়। মক্তবের শিক্ষার্থীদের কোরআন তিলাওয়াতের সুর যেন প্রতিটি ভোরে ছড়িয়ে দেয় এক আলোকোজ্জ্বল নূর।
ভোরে মক্তবপানে ছুটে চলা এক পবিত্র দৃশ্য
কখনো ঘন কুয়াশা ভেদ করে শিশিরভেজা পথ দিয়ে, কখনো বৃষ্টিভেজা গ্রামীণ পথ মাড়িয়ে, আবার কখনো সূর্যরাঙা পথ পাড়ি দিয়ে শিশু-কিশোরের দল ছুটে চলে মক্তবের দিকে। দিনের সূচনালগ্নে মক্তবই যেন তাদের প্রথম গন্তব্য। ভোরবিহানে কায়দা, আমপারা, কোরআন বুকে মক্তবপানে শিশুদের ছুটে চলার এই পবিত্র দৃশ্য যেন আলোকিত ভবিষ্যতের ইঙ্গিত বহন করে। তাই তো বলা হয়, মক্তব আলোকিত প্রজন্ম গড়ার সূতিকাগার।
বনিয়াদি শিক্ষার আলোকধারা
মক্তবে শুধু কোরআন তিলাওয়াতই শেখানো হয় না। সংশ্লিষ্ট শিক্ষক কচিকাঁচা ছেলেমেয়েদের নামাজ, তায়াম্মুম, অজু ও গোসলের নিয়মসহ জীবনঘনিষ্ঠ দোয়া ও জরুরি বিধানের তালিম দেন। সেই সঙ্গে মা-বাবা ও প্রতিবেশীর হক, বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা, ছোটদের প্রতি স্নেহ, সামাজিক শিষ্টাচার, মানবিক মূল্যবোধ, কর্তব্যপরায়ণতা, দেশাত্মবোধসহ প্রয়োজনীয় আদব-সভ্যতার শিক্ষাও দেওয়া হয়।
সর্বোপরি, ইসলামি শিক্ষা-সংস্কৃতির আলোকধারায় আদর্শ সমাজ বিনির্মাণ ও আলোকিত প্রজন্ম গড়তে মক্তবের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনস্বীকার্য। মক্তবের চাহিদা পূরণে একসময় পাড়া-মহল্লার অনেক বাড়িতে, এমনকি আমগাছ তলায়ও মক্তবের আদলে শিক্ষা দেওয়া হতো। অনেক ধার্মিক শিক্ষিত নারী নিজেদের ঘরে পাড়ার ছোট ছেলেমেয়েদের কোরআন শেখাতেন। আমার নিজের বাল্যকালে মক্তবে পড়া এবং দাদির কালো ফ্রেমের চশমা চোখে কোরআন তিলাওয়াতের দৃশ্য আজও হৃদয়ে সজীব।
কোরআনের ঐতিহ্য: যা ছিল ঘরে ঘরে
কোরআন তিলাওয়াতের মতো সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত একসময় মুসলিম সমাজের প্রায় প্রতিটি ঘরে প্রচলিত ছিল এই মক্তবের অবদানেই। ফজরের নামাজ আদায় করে মুরব্বিরা কোরআন তিলাওয়াতে মশগুল হয়ে যেতেন। সকাল-সন্ধ্যায়ও ঘরে-বাড়িতে নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াত করা হতো এবং ছেলেমেয়েদের তিলাওয়াতে বসিয়ে দেওয়া হতো। ফলে প্রায় প্রতিটি ঘর থেকে সকাল-সাঁঝে কোরআন তিলাওয়াতের সুমধুর আওয়াজ ধ্বনিত হতো। পবিত্রতার সৌরভ ছড়িয়ে পড়ত ঘরে ঘরে আর স্বচ্ছ নৈতিক চেতনা সঞ্চারিত হতো অন্তরে।
কোরআন তিলাওয়াতের ফলে মুমিনের হৃদয়ে সৃষ্টি হয় তাকওয়ার আবহ, শাণিত হয় ইমানি স্পৃহা। যেমনটি আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘মুমিন তো তারাই, যাদের হৃদয় কম্পিত হয়, যখন আল্লাহকে স্মরণ করা হয় এবং যখন তার আয়াত তাদের কাছে তিলাওয়াত করা হয়, তখন তা তাদের ইমান বৃদ্ধি করে এবং তারা তাদের প্রতিপালকের ওপরই নির্ভর করে।’ (সুরা আনফাল: ০২)
বিলুপ্তির পথে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য
মক্তবকেন্দ্রিক বনিয়াদি শিক্ষার সুব্যবস্থা ছিল বলেই তখনকার শিশু-কিশোরদের মধ্যে আজকের মতো লাগামহীন দুরন্তপনা, তরুণদের বখাটেপনা আর আচার-অনুষ্ঠানে বেহায়াপনা ছিল না। সমুন্নত ছিল নৈতিক মূল্যবোধ, আদর্শিক চেতনা ও সামাজিক কর্তব্যপরায়ণতা। জীবনের শুরুতে মক্তবের শিক্ষা ধারণ করে বেড়ে ওঠার কারণেই অনেকে উচ্চ পদমর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েও ধর্মীয় অনুরাগ, নিরহংকারী চালচলন, বিনয়-ভদ্রতার গুণে বিভূষিত ছিলেন।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে কোমলমতি শিশু-কিশোরদের ভোরবিহানে কোরআন বুকে মক্তবপানে ছুটে চলার সেই পবিত্র দৃশ্য এখন আর আগের মতো দেখা যায় না। ছোট ছোট ছেলেমেয়ের কোমল কণ্ঠে সম্মিলিতভাবে কোরআন তিলাওয়াত এবং প্রয়োজনীয় দোয়া পাঠের সেই আওয়াজ এখন আর শোনা যায় না। মক্তবগুলোও এখন প্রাণবন্ত নয়। ঘরে ঘরে কোরআন তিলাওয়াতের যে আবহমান ঐতিহ্য জারি ছিল, তা এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। সকাল-সন্ধ্যায় পাড়া-মহল্লার ঘরবাড়ি থেকে কোরআন তিলাওয়াতের সুমধুর আওয়াজ ভেসে আসার বদলে এখন ভেসে আসে বিভিন্ন অযাচিত ধ্বনি-প্রতিধ্বনি।
তথ্যপ্রযুক্তির নগ্ন থাবায়, তথাকথিত আধুনিকতা ও অপসংস্কৃতির আগ্রাসনে কচি বয়সেই ছেলেমেয়েরা নৈতিকতাবিবর্জিত সংস্কৃতি ও কৌতুক শিখছে। এভাবে নবপ্রজন্ম নিমজ্জিত হচ্ছে অনৈতিকতার অতল গহ্বরে। ক্রমেই কোরআনের পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে চলেছে সমাজ।
সমাজকে আলোর পথে ফেরাতে মক্তবের পুনর্জাগরণ
এমন ক্রান্তিকালে নবপ্রজন্মকে আদর্শ মানুষরূপে গড়ে তুলে সমাজকে আলোর পথে ফিরিয়ে আনতে ঐতিহ্যের বনিয়াদি পাঠশালা মক্তবগুলোকে সজীব করে তুলতে হবে। প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় গড়ে তুলতে হবে মক্তব এবং এর ব্যবস্থাপনাকে সুসংহত করতে হবে।
দুনিয়াবি সাময়িক চাকচিক্য ও ভোগ-বিলাস নয়; বরং উভয় জগতের চিরশান্তি ও কল্যাণের ফল্গুধারায় অবগাহন করতে সন্তানদের কোরআন-সুন্নাহর শিক্ষাধারায় আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। সন্তানদের পুরো জীবনকে প্রকৃত আলোকধারায় উদ্ভাসিত করতে জীবনের সূচনাপর্বেই মক্তবের বনিয়াদি শিক্ষার প্রতি অধিকতর যত্নবান হতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে ঘরে ঘরে কোরআন তিলাওয়াতের সেই পবিত্র ঐতিহ্য।
লেখক: খতিব, শহীদ তিতুমীর ইনস্টিটিউট জামে মসজিদ, কক্সবাজার
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৬ ঘণ্টা আগেআপনার প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ‘বিসমিল্লাহ’ এবং ‘আউজুবিল্লাহ’ পাঠের স্থান ও বিধান নিয়ে অনেকেরই ধারণা অস্পষ্ট থাকে। সংক্ষেপে বলা যায়, প্রতিটি বৈধ ও ভালো কাজ আল্লাহর নামে শুরু করার জন্য ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ পাঠ করা সুন্নত ও বরকতের উৎস।
১ দিন আগেদারিদ্র্য বিমোচন বলতে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বোঝানো হয়। ইসলাম মানবজাতিকে দারিদ্র্যের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত করে একটি সুখী, সমৃদ্ধ এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে চায়। কোনো ব্যক্তি তার মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে ব্যর্থ হলে, সহজেই অনৈতিকতার শিকার হতে পারে বা শোষণের ফাঁদে পড়ে যেতে পারে।
১ দিন আগেএকসঙ্গে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের প্রথাটি ইসলাম-পূর্ব যুগেও বিশ্বের প্রায় সকল ধর্ম ও সমাজে প্রচলিত ছিল। আরব, ভারতীয় উপমহাদেশ, ইউরোপসহ বিভিন্ন সভ্যতায় এটি প্রচলিত ছিল কোনো প্রকার সংখ্যা নির্ধারণ বা বাধা-নিষেধ ছাড়াই। কিন্তু ইসলাম এই সীমাহীন প্রথায় নিয়ন্ত্রণ এনে নারী জাতির মর্যাদা রক্ষা...
১ দিন আগে