মাহমুদ হাসান ফাহিম
দারিদ্র্য বিমোচন বলতে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বোঝানো হয়। ইসলাম মানবজাতিকে দারিদ্র্যের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত করে একটি সুখী, সমৃদ্ধ এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে চায়। কোনো ব্যক্তি তার মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে ব্যর্থ হলে, সহজেই অনৈতিকতার শিকার হতে পারে বা শোষণের ফাঁদে পড়ে যেতে পারে। এমন অবস্থায় তাকে শান্তি ও কল্যাণের বাণী শোনানোর কোনো মানে হয় না। তাই ইসলাম দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধের দুর্গ গড়ে তুলেছে ইসলাম, যাতে আকিদা-বিশ্বাস এবং চারিত্রিক নৈতিকতার ক্ষেত্রে দারিদ্র্যের হুমকি মোকাবিলা করা যায়, পরিবার ও সমাজকে রক্ষা করা যায় এবং সমাজের স্থিতিশীলতা ও সংহতি বজায় রেখে সমাজের ভেতরে ভ্রাতৃত্বের চেতনা অক্ষুণ্ন রাখা যায়।
এ কারণে ইসলাম সমাজে বসবাসকারী প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য এমন সব মৌলিক উপাদান নিশ্চিত করেছে, যার মাধ্যমে মানুষ মর্যাদার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারে। যেখানে কমপক্ষে তার জন্য জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানোর নিশ্চয়তা থাকবে। খাদ্য, বস্ত্র, পানীয়, বাসস্থান ইত্যাদি নিয়ে তাকে মাথা ঘামাতে হবে না। তাই ইসলাম নিম্নোক্ত উপায়ে সব শ্রেণির মানুষের ভরণ-পোষণ করে—
শ্রম ও কর্ম
ইসলামের ভাষ্য হলো, সমাজের সব শ্রেণির মানুষ কাজ করবে। রিজিকের অন্বেষণে পৃথিবীতে বিচরণ করা ইসলামের নির্দেশ। আল্লাহ বলেছেন, ‘তিনিই তো তোমাদের জন্য ভূমিকে সুগম করে দিয়েছেন। অতএব তোমরা এর দিগ্দিগন্তে বিচরণ করো এবং তাঁর দেওয়া জীবনোপকরণ থেকে আহার্য গ্রহণ করো।’ (সুরা মুলক: ১৫)
দরিদ্র আত্মীয়দের ভরণপোষণ
প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজ শ্রম ও কর্মের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করবে। কিন্তু যারা অক্ষম, কাজ করতে পারে না, কম বয়সী ছেলেমেয়ে, বৃদ্ধ, রোগী ও প্রতিবন্ধী বা যারা দুর্যোগে পড়ে উপার্জনে অক্ষম হয়ে পড়েছে; ইসলাম তাদের দারিদ্র্য ও অভাবের থাবা এবং ভিক্ষার লাঞ্ছনা থেকে রক্ষার ব্যবস্থা করেছে। আত্মীয়স্বজনকে ঐক্যবদ্ধ ও পরস্পরের পৃষ্ঠপোষক করে দিয়েছে। তারা একে অন্যের হাত শক্তিশালী করবে। সবল দুর্বলের ভরণপোষণ করবে। ধনী দরিদ্রের দেখাশোনা করবে। সক্ষম অক্ষমদের সাহায্য করবে।
জাকাত ব্যবস্থা
যে ব্যক্তি কাজ করতে অক্ষম, এতিম বালক, বিধবা নারী, বৃদ্ধ মা ও বয়সের ভারে ন্যুব্জ বৃদ্ধ ব্যক্তি, শারীরিক প্রতিবন্ধী, অন্ধ, অসুস্থ, অক্ষমদের দারিদ্র্যের কশাঘাত থেকে রক্ষা করতে ইসলামের ভূমিকা অতুলনীয়। ইসলাম তাদের ভুলে যায়নি। আল্লাহ তাদের জন্য ধনীদের অর্থ-সম্পদে সুনির্দিষ্ট ‘হক’ ফরজ করে দিয়েছেন। আর তা হচ্ছে জাকাত। এর প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে দরিদ্রকে সচ্ছল করা। (সুরা জারিয়াত: ১৯, সুরা মাআরিজ: ২৪-২৫)
রাষ্ট্রীয় কোষাগারের পৃষ্ঠপোষকতা
ইসলামি রাষ্ট্রের অধীনে যারা বসবাস করে, তাদের দেখভালের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কোনো নাগরিক যখন তার উপার্জনের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে, বাস্তবিক অর্থে যখন কোনো ব্যক্তি অক্ষম বলে প্রমাণিত হবে, তখন রাষ্ট্র তার ভরণপোষণের দায়িত্ব নেবে। কেননা, বায়তুলমাল প্রত্যেক দরিদ্র ও অভাবীর সর্বশেষ আশ্রয়স্থল। এর সঙ্গে নাগরিকদের অধিকার সম্পৃক্ত।
ঐচ্ছিক দান-সদকা
আবশ্যকীয় দান-সদকা ছাড়াও ইসলাম মানুষের পরোপকারী উদার দানশীল মন তৈরি করতে বিভিন্নভাবে উদ্বুদ্ধ করেছে। সমাজ থেকে দারিদ্র্য দূর করার তাগিদেই এসব করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘কে আছে, যে আল্লাহকে করজে হাসানা (নিঃস্বার্থ ঋণ) প্রদান করবে? তিনি তার জন্য তা বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেবেন। আর আল্লাহ সংকুচিত ও সম্প্রসারিত করেন এবং তাঁরই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে। (সুরা বাকারা: ২৪৫)
আমরা যদি এ বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে সমাজ থেকে দারিদ্র্য দূর হবে এবং অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় থাকবে।
লেখক: বাইতুল আকরাম মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্স, টঙ্গী, গাজীপুর
দারিদ্র্য বিমোচন বলতে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বোঝানো হয়। ইসলাম মানবজাতিকে দারিদ্র্যের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত করে একটি সুখী, সমৃদ্ধ এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে চায়। কোনো ব্যক্তি তার মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে ব্যর্থ হলে, সহজেই অনৈতিকতার শিকার হতে পারে বা শোষণের ফাঁদে পড়ে যেতে পারে। এমন অবস্থায় তাকে শান্তি ও কল্যাণের বাণী শোনানোর কোনো মানে হয় না। তাই ইসলাম দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধের দুর্গ গড়ে তুলেছে ইসলাম, যাতে আকিদা-বিশ্বাস এবং চারিত্রিক নৈতিকতার ক্ষেত্রে দারিদ্র্যের হুমকি মোকাবিলা করা যায়, পরিবার ও সমাজকে রক্ষা করা যায় এবং সমাজের স্থিতিশীলতা ও সংহতি বজায় রেখে সমাজের ভেতরে ভ্রাতৃত্বের চেতনা অক্ষুণ্ন রাখা যায়।
এ কারণে ইসলাম সমাজে বসবাসকারী প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য এমন সব মৌলিক উপাদান নিশ্চিত করেছে, যার মাধ্যমে মানুষ মর্যাদার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারে। যেখানে কমপক্ষে তার জন্য জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানোর নিশ্চয়তা থাকবে। খাদ্য, বস্ত্র, পানীয়, বাসস্থান ইত্যাদি নিয়ে তাকে মাথা ঘামাতে হবে না। তাই ইসলাম নিম্নোক্ত উপায়ে সব শ্রেণির মানুষের ভরণ-পোষণ করে—
শ্রম ও কর্ম
ইসলামের ভাষ্য হলো, সমাজের সব শ্রেণির মানুষ কাজ করবে। রিজিকের অন্বেষণে পৃথিবীতে বিচরণ করা ইসলামের নির্দেশ। আল্লাহ বলেছেন, ‘তিনিই তো তোমাদের জন্য ভূমিকে সুগম করে দিয়েছেন। অতএব তোমরা এর দিগ্দিগন্তে বিচরণ করো এবং তাঁর দেওয়া জীবনোপকরণ থেকে আহার্য গ্রহণ করো।’ (সুরা মুলক: ১৫)
দরিদ্র আত্মীয়দের ভরণপোষণ
প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজ শ্রম ও কর্মের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করবে। কিন্তু যারা অক্ষম, কাজ করতে পারে না, কম বয়সী ছেলেমেয়ে, বৃদ্ধ, রোগী ও প্রতিবন্ধী বা যারা দুর্যোগে পড়ে উপার্জনে অক্ষম হয়ে পড়েছে; ইসলাম তাদের দারিদ্র্য ও অভাবের থাবা এবং ভিক্ষার লাঞ্ছনা থেকে রক্ষার ব্যবস্থা করেছে। আত্মীয়স্বজনকে ঐক্যবদ্ধ ও পরস্পরের পৃষ্ঠপোষক করে দিয়েছে। তারা একে অন্যের হাত শক্তিশালী করবে। সবল দুর্বলের ভরণপোষণ করবে। ধনী দরিদ্রের দেখাশোনা করবে। সক্ষম অক্ষমদের সাহায্য করবে।
জাকাত ব্যবস্থা
যে ব্যক্তি কাজ করতে অক্ষম, এতিম বালক, বিধবা নারী, বৃদ্ধ মা ও বয়সের ভারে ন্যুব্জ বৃদ্ধ ব্যক্তি, শারীরিক প্রতিবন্ধী, অন্ধ, অসুস্থ, অক্ষমদের দারিদ্র্যের কশাঘাত থেকে রক্ষা করতে ইসলামের ভূমিকা অতুলনীয়। ইসলাম তাদের ভুলে যায়নি। আল্লাহ তাদের জন্য ধনীদের অর্থ-সম্পদে সুনির্দিষ্ট ‘হক’ ফরজ করে দিয়েছেন। আর তা হচ্ছে জাকাত। এর প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে দরিদ্রকে সচ্ছল করা। (সুরা জারিয়াত: ১৯, সুরা মাআরিজ: ২৪-২৫)
রাষ্ট্রীয় কোষাগারের পৃষ্ঠপোষকতা
ইসলামি রাষ্ট্রের অধীনে যারা বসবাস করে, তাদের দেখভালের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কোনো নাগরিক যখন তার উপার্জনের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে, বাস্তবিক অর্থে যখন কোনো ব্যক্তি অক্ষম বলে প্রমাণিত হবে, তখন রাষ্ট্র তার ভরণপোষণের দায়িত্ব নেবে। কেননা, বায়তুলমাল প্রত্যেক দরিদ্র ও অভাবীর সর্বশেষ আশ্রয়স্থল। এর সঙ্গে নাগরিকদের অধিকার সম্পৃক্ত।
ঐচ্ছিক দান-সদকা
আবশ্যকীয় দান-সদকা ছাড়াও ইসলাম মানুষের পরোপকারী উদার দানশীল মন তৈরি করতে বিভিন্নভাবে উদ্বুদ্ধ করেছে। সমাজ থেকে দারিদ্র্য দূর করার তাগিদেই এসব করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘কে আছে, যে আল্লাহকে করজে হাসানা (নিঃস্বার্থ ঋণ) প্রদান করবে? তিনি তার জন্য তা বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেবেন। আর আল্লাহ সংকুচিত ও সম্প্রসারিত করেন এবং তাঁরই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে। (সুরা বাকারা: ২৪৫)
আমরা যদি এ বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে সমাজ থেকে দারিদ্র্য দূর হবে এবং অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় থাকবে।
লেখক: বাইতুল আকরাম মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্স, টঙ্গী, গাজীপুর
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৬ ঘণ্টা আগেমা তখনো জায়নামাজে বসে আছেন। ফজরের নামাজ আদায় শেষে তসবিহ পাঠ ও কোরআন তিলাওয়াতে মগ্ন। ইশরাকের নামাজ আদায় করেই হয়তো গৃহস্থালির কাজ শুরু করবেন। ইতিমধ্যে কলিজার টুকরা সন্তানের কোমল কণ্ঠে ভেসে আসে মায়াবী এক ডাক—‘মা, মক্তবের সময় হয়ে এসেছে। কিছু খেয়ে তাড়াতাড়ি মক্তবে যেতে হবে।’
১ দিন আগেআপনার প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ‘বিসমিল্লাহ’ এবং ‘আউজুবিল্লাহ’ পাঠের স্থান ও বিধান নিয়ে অনেকেরই ধারণা অস্পষ্ট থাকে। সংক্ষেপে বলা যায়, প্রতিটি বৈধ ও ভালো কাজ আল্লাহর নামে শুরু করার জন্য ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ পাঠ করা সুন্নত ও বরকতের উৎস।
১ দিন আগেএকসঙ্গে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের প্রথাটি ইসলাম-পূর্ব যুগেও বিশ্বের প্রায় সকল ধর্ম ও সমাজে প্রচলিত ছিল। আরব, ভারতীয় উপমহাদেশ, ইউরোপসহ বিভিন্ন সভ্যতায় এটি প্রচলিত ছিল কোনো প্রকার সংখ্যা নির্ধারণ বা বাধা-নিষেধ ছাড়াই। কিন্তু ইসলাম এই সীমাহীন প্রথায় নিয়ন্ত্রণ এনে নারী জাতির মর্যাদা রক্ষা...
১ দিন আগে