ইজাজুল হক, ঢাকা

নশ্বর পৃথিবীতে বিরামহীন বয়ে চলে সময়। দিন যায়, রাত আসে। সপ্তাহ-মাস পেরিয়ে এক সময় ফুরিয়ে যায় বছরও। পৃথিবীর সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত এ নিয়মেই ঘুরছে সময়ের চাকা। মহান আল্লাহ চাঁদ-সূর্যের গতির সঙ্গে জুড়ে দেন সময়ের হিসাব। পৃথিবী যত দিন টিকে থাকবে, চাঁদ-সূর্যের নিয়মিত পথচলাও থামবে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই সূর্যকে উজ্জ্বল আলোময় ও চাঁদকে স্নিগ্ধ আলোময় করেছেন এবং তাদের গতিপথ নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যেন তোমরা বছর গুনতে পারো এবং সময়ের হিসাব করতে পারো।’ (সুরা ইউনুস: ৫)
সময়ের এই অমোঘ নিয়ম লঙ্ঘিত হওয়ার নয়। তবে কখনো-কখনো মহান আল্লাহ তাঁর অসীম ক্ষমতার প্রকাশ ঘটাতে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন বলে কোরআন-হাদিসের ভাষ্য থেকে জানা যায়। সেসব ঘটনার একটি উজাইর (আ.)-এর ঘটনা। তিনি ছিলেন এমন এক মহান ব্যক্তি, যাঁর জন্য সময় এক শ বছর থেমে গিয়েছিল। এক শ বছর পর্যন্ত সময়ের কোনো প্রভাব তাঁকে স্পর্শ করেনি। এই ঘটনা ঘটেছে ইসা (আ.)–এর জন্মের বেশ আগে কোনো এক সময়ে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা পরকালে বিশ্বাসের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে কয়েকটি ঘটনা বয়ান করেছেন—উজাইর (আ.)-এর এ ঘটনা সেগুলোর একটি।
কোরআনের বর্ণনায় উজাইর (আ.)-এর ঘটনা
পরকাল সম্পর্কে মানুষের কৌতূহল নতুন নয়। এমনকি নবীদের অনেকেই পরকাল সম্পর্কে মহান আল্লাহকে জিজ্ঞেস করেছেন। যা মরে যায়, পচে-গলে মাটির সঙ্গে মিশে যায় এবং পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, তা কীভাবে ফের হুবহু আগের মতো করে হাশরের ময়দানে জীবিত করা হবে, তা নিয়ে মানুষের সংশয়, কৌতূহল ও অবিশ্বাসের অন্ত নেই। তবে মানুষের এই সংশয় দূর করতে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন আঙ্গিকে যুক্তি তুলে ধরেছেন। তুলে এনেছেন অতীতের অনেক ঘটনাও।
তেমনি একটি ঘটনার অবতারণা করে আল্লাহ তাআলা বলেন— অথবা সেই ব্যক্তির মতো, যে বাড়িঘর ভেঙে ছাদের ওপর বিধ্বস্ত হয়ে থাকা এক জনপদ হয়ে যাচ্ছিল। সে বলল, ‘মরে যাওয়ার পর আল্লাহ একে কীভাবে জীবিত করবেন?’ এরপর আল্লাহ তাঁকে এক শ বছর মৃত রাখলেন। এরপর ফের জীবিত করলেন এবং বললেন, ‘তুমি কত দিন এভাবে ছিলে?’ সে বলল, ‘একদিন বা একদিনেরও কিছু কম সময়।’ তিনি বললেন, ‘বরং তুমি এক শ বছর এভাবে ছিলে। তোমার পানাহারের উপকরণগুলো দেখো, পচেনি। আর তোমার গাধাকে দেখো, আর আমি যেন তোমাকে মানুষের জন্য উদাহরণ বানাতে পারি, হাড়গুলো দেখো, কীভাবে আমি তা জুড়ে দেই এবং তাতে মাংসের আবরণ পরিয়ে দেই।’ পরে যখন তার কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হলো, তখন সে বলল, ‘আমি জানি, আল্লাহ সবকিছুই করার ক্ষমতা রাখেন।’ (সুরা বাকারা: ২৫৯)
ইবনে কাসির (রহ.) আয়াতের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন
আয়াতে উজাইর (আ.)-এর কথা উল্লেখ না থাকলেও প্রসিদ্ধ মতে তাঁর সম্পর্কেই এ আয়াত নাজিল হয়েছে। বুখতানাসসার নামের এক জালিম শাসক ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসে গণহত্যা চালান এবং পুরো বসতি ধ্বংস করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেন। একজন মানুষও জীবিত ছাড়েননি। সেই বিরান জেরুজালেম হয়েই যাচ্ছিলেন উজাইর (আ.)। তখন জনশূন্য বসতির এই ধ্বংসস্তূপ দেখে তাঁর মনে কৌতূহল জেগেছিল, এমন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া জনপদকে কেমন করে মহান আল্লাহ হাশরের ময়দানে ফের জীবিত করবেন। তখন আল্লাহ তাঁকেই মৃত্যু দেন এবং সেই স্থানে রেখে দেন।
এরপর কেটে যায় এক শ বছর। শহরটি আবার নতুন প্রাণে সজীব হয়ে ওঠে। বনি ইসরাইল শহরে ফিরে এসে নতুনভাবে বাঁচতে শুরু করে। তখন আল্লাহ তাআলা উজাইর (আ.)-কে ফের জীবিত করেন। প্রথমে তাঁর দুই চোখে প্রাণ ফিরিয়ে দেন, যাতে দেহের বাকি অংশ কীভাবে ফের প্রাণ ফিরে পাচ্ছে, তা দেখে তিনি শিখতে পারেন।
পুরো দেহে প্রাণ ফিরলে আল্লাহ তাআলা ফেরেশতার মাধ্যমে তাঁকে প্রশ্ন শুরু করেন—কত দিন এভাবে ছিলে। যেহেতু দিনের শুরুতেই মারা গিয়েছিলেন এবং এখনো দিনের কিছু অংশ বাকি আছে, তাই স্বাভাবিকভাবেই তাঁর উত্তর ছিল—একদিন বা তারও কম সময়। কিন্তু আল্লাহ তাঁর দাবি নাকচ করে দিয়ে বললেন—এক শ বছর পর তোমাকে জীবিত করেছি। সুতরাং পরকালেও এভাবেই জীবিত করা হবে।
উজাইর (আ.)-এর চোখ বিস্ময়ে ছানাবড়া হওয়ার আগেই আল্লাহ দলিল উপস্থাপন করে দিলেন। বললেন, দেখো, তোমার দেহের মতো এখানে যে আঙুর, তীনফল ও শরবত ছিল, তা হুবহুই রেখে দিয়েছি, এগুলোর স্বাদ-গন্ধে কোনো পরিবর্তন আনিনি, তবে তোমার যে গাধাটি ছিল, তা দেখো পচে-গলে একাকার হয়ে গেছে এবং কীভাবে তা আমি ফের জীবিত করছি; দেখো, কীভাবে হাড়গুলো জোড়া লাগিয়ে মাংসের প্রলেপ দিয়ে দিচ্ছি। চোখের সামনে এমন আশ্চর্য ঘটনা দেখে উজাইর (আ.)-এর কাছে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায় যে, আল্লাহ সবকিছুই পারেন। (তাফসিরে ইবনে কাসির: ১ / ৬৮৭-৬৮৯)
উজাইর (আ.) কি নবী ছিলেন
উজাইর (আ.) একজন আল্লাহর প্রিয় বান্দা ছিলেন এটুকুতে কারও দ্বিমত নেই। নবী ছিলেন কি না তা নিয়ে মুফাসসিরদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। প্রসিদ্ধ মতে, তিনি নবী ছিলেন। ইবনে কাসির (রহ.) এই মত গ্রহণ করেছেন। (আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া)
তবে অনেকের মতে, তিনি যে নবী ছিলেন, এর পক্ষে কোরআন-হাদিসে কোনো দলিল পাওয়া যায় না। বরং হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমি জানি না তুব্বা বাদশাহ অভিশপ্ত, নাকি নয়। আমি জানি না উজাইর নবী; নাকি নয়।’ তাই তাঁকে নবী বলা উচিত হবে না। তবে এই হাদিসের সনদ অনেকেই দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। যাই হোক, এ ঘটনার শিক্ষার সঙ্গে তাঁর নবী হওয়া-না হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।
ঘটনার শিক্ষা হলো, সময়ের নিয়ন্ত্রণ আল্লাহরই হাতে। তিনি যা ইচ্ছা করতে পারেন। পরকালে তিনি সব সৃষ্টিকে ফের জীবিত করে কর্মফল দেবেন। তাই সময় থাকতে পরকালের প্রস্তুতি নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। একটি বছর ফুরিয়ে নতুন বছরের যাত্রা শুরু হলো, এই বছরটিও একদিন ফুরিয়ে যাবে। এভাবেই আমরা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তাই মৃত্যুর পরের জীবনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এখনই। আল্লাহ বলেন, ‘যেদিন চোখ স্থির হয়ে যাবে, চাঁদ আলো হারাবে, সূর্য ও চাঁদকে এক জায়গায় করা হবে, সেদিন মানুষ বলবে—পালাব কোথায়?’ (সুরা কিয়ামা: ৭-১০)

নশ্বর পৃথিবীতে বিরামহীন বয়ে চলে সময়। দিন যায়, রাত আসে। সপ্তাহ-মাস পেরিয়ে এক সময় ফুরিয়ে যায় বছরও। পৃথিবীর সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত এ নিয়মেই ঘুরছে সময়ের চাকা। মহান আল্লাহ চাঁদ-সূর্যের গতির সঙ্গে জুড়ে দেন সময়ের হিসাব। পৃথিবী যত দিন টিকে থাকবে, চাঁদ-সূর্যের নিয়মিত পথচলাও থামবে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই সূর্যকে উজ্জ্বল আলোময় ও চাঁদকে স্নিগ্ধ আলোময় করেছেন এবং তাদের গতিপথ নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যেন তোমরা বছর গুনতে পারো এবং সময়ের হিসাব করতে পারো।’ (সুরা ইউনুস: ৫)
সময়ের এই অমোঘ নিয়ম লঙ্ঘিত হওয়ার নয়। তবে কখনো-কখনো মহান আল্লাহ তাঁর অসীম ক্ষমতার প্রকাশ ঘটাতে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন বলে কোরআন-হাদিসের ভাষ্য থেকে জানা যায়। সেসব ঘটনার একটি উজাইর (আ.)-এর ঘটনা। তিনি ছিলেন এমন এক মহান ব্যক্তি, যাঁর জন্য সময় এক শ বছর থেমে গিয়েছিল। এক শ বছর পর্যন্ত সময়ের কোনো প্রভাব তাঁকে স্পর্শ করেনি। এই ঘটনা ঘটেছে ইসা (আ.)–এর জন্মের বেশ আগে কোনো এক সময়ে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা পরকালে বিশ্বাসের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে কয়েকটি ঘটনা বয়ান করেছেন—উজাইর (আ.)-এর এ ঘটনা সেগুলোর একটি।
কোরআনের বর্ণনায় উজাইর (আ.)-এর ঘটনা
পরকাল সম্পর্কে মানুষের কৌতূহল নতুন নয়। এমনকি নবীদের অনেকেই পরকাল সম্পর্কে মহান আল্লাহকে জিজ্ঞেস করেছেন। যা মরে যায়, পচে-গলে মাটির সঙ্গে মিশে যায় এবং পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, তা কীভাবে ফের হুবহু আগের মতো করে হাশরের ময়দানে জীবিত করা হবে, তা নিয়ে মানুষের সংশয়, কৌতূহল ও অবিশ্বাসের অন্ত নেই। তবে মানুষের এই সংশয় দূর করতে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন আঙ্গিকে যুক্তি তুলে ধরেছেন। তুলে এনেছেন অতীতের অনেক ঘটনাও।
তেমনি একটি ঘটনার অবতারণা করে আল্লাহ তাআলা বলেন— অথবা সেই ব্যক্তির মতো, যে বাড়িঘর ভেঙে ছাদের ওপর বিধ্বস্ত হয়ে থাকা এক জনপদ হয়ে যাচ্ছিল। সে বলল, ‘মরে যাওয়ার পর আল্লাহ একে কীভাবে জীবিত করবেন?’ এরপর আল্লাহ তাঁকে এক শ বছর মৃত রাখলেন। এরপর ফের জীবিত করলেন এবং বললেন, ‘তুমি কত দিন এভাবে ছিলে?’ সে বলল, ‘একদিন বা একদিনেরও কিছু কম সময়।’ তিনি বললেন, ‘বরং তুমি এক শ বছর এভাবে ছিলে। তোমার পানাহারের উপকরণগুলো দেখো, পচেনি। আর তোমার গাধাকে দেখো, আর আমি যেন তোমাকে মানুষের জন্য উদাহরণ বানাতে পারি, হাড়গুলো দেখো, কীভাবে আমি তা জুড়ে দেই এবং তাতে মাংসের আবরণ পরিয়ে দেই।’ পরে যখন তার কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হলো, তখন সে বলল, ‘আমি জানি, আল্লাহ সবকিছুই করার ক্ষমতা রাখেন।’ (সুরা বাকারা: ২৫৯)
ইবনে কাসির (রহ.) আয়াতের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন
আয়াতে উজাইর (আ.)-এর কথা উল্লেখ না থাকলেও প্রসিদ্ধ মতে তাঁর সম্পর্কেই এ আয়াত নাজিল হয়েছে। বুখতানাসসার নামের এক জালিম শাসক ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসে গণহত্যা চালান এবং পুরো বসতি ধ্বংস করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেন। একজন মানুষও জীবিত ছাড়েননি। সেই বিরান জেরুজালেম হয়েই যাচ্ছিলেন উজাইর (আ.)। তখন জনশূন্য বসতির এই ধ্বংসস্তূপ দেখে তাঁর মনে কৌতূহল জেগেছিল, এমন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া জনপদকে কেমন করে মহান আল্লাহ হাশরের ময়দানে ফের জীবিত করবেন। তখন আল্লাহ তাঁকেই মৃত্যু দেন এবং সেই স্থানে রেখে দেন।
এরপর কেটে যায় এক শ বছর। শহরটি আবার নতুন প্রাণে সজীব হয়ে ওঠে। বনি ইসরাইল শহরে ফিরে এসে নতুনভাবে বাঁচতে শুরু করে। তখন আল্লাহ তাআলা উজাইর (আ.)-কে ফের জীবিত করেন। প্রথমে তাঁর দুই চোখে প্রাণ ফিরিয়ে দেন, যাতে দেহের বাকি অংশ কীভাবে ফের প্রাণ ফিরে পাচ্ছে, তা দেখে তিনি শিখতে পারেন।
পুরো দেহে প্রাণ ফিরলে আল্লাহ তাআলা ফেরেশতার মাধ্যমে তাঁকে প্রশ্ন শুরু করেন—কত দিন এভাবে ছিলে। যেহেতু দিনের শুরুতেই মারা গিয়েছিলেন এবং এখনো দিনের কিছু অংশ বাকি আছে, তাই স্বাভাবিকভাবেই তাঁর উত্তর ছিল—একদিন বা তারও কম সময়। কিন্তু আল্লাহ তাঁর দাবি নাকচ করে দিয়ে বললেন—এক শ বছর পর তোমাকে জীবিত করেছি। সুতরাং পরকালেও এভাবেই জীবিত করা হবে।
উজাইর (আ.)-এর চোখ বিস্ময়ে ছানাবড়া হওয়ার আগেই আল্লাহ দলিল উপস্থাপন করে দিলেন। বললেন, দেখো, তোমার দেহের মতো এখানে যে আঙুর, তীনফল ও শরবত ছিল, তা হুবহুই রেখে দিয়েছি, এগুলোর স্বাদ-গন্ধে কোনো পরিবর্তন আনিনি, তবে তোমার যে গাধাটি ছিল, তা দেখো পচে-গলে একাকার হয়ে গেছে এবং কীভাবে তা আমি ফের জীবিত করছি; দেখো, কীভাবে হাড়গুলো জোড়া লাগিয়ে মাংসের প্রলেপ দিয়ে দিচ্ছি। চোখের সামনে এমন আশ্চর্য ঘটনা দেখে উজাইর (আ.)-এর কাছে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায় যে, আল্লাহ সবকিছুই পারেন। (তাফসিরে ইবনে কাসির: ১ / ৬৮৭-৬৮৯)
উজাইর (আ.) কি নবী ছিলেন
উজাইর (আ.) একজন আল্লাহর প্রিয় বান্দা ছিলেন এটুকুতে কারও দ্বিমত নেই। নবী ছিলেন কি না তা নিয়ে মুফাসসিরদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। প্রসিদ্ধ মতে, তিনি নবী ছিলেন। ইবনে কাসির (রহ.) এই মত গ্রহণ করেছেন। (আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া)
তবে অনেকের মতে, তিনি যে নবী ছিলেন, এর পক্ষে কোরআন-হাদিসে কোনো দলিল পাওয়া যায় না। বরং হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমি জানি না তুব্বা বাদশাহ অভিশপ্ত, নাকি নয়। আমি জানি না উজাইর নবী; নাকি নয়।’ তাই তাঁকে নবী বলা উচিত হবে না। তবে এই হাদিসের সনদ অনেকেই দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। যাই হোক, এ ঘটনার শিক্ষার সঙ্গে তাঁর নবী হওয়া-না হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।
ঘটনার শিক্ষা হলো, সময়ের নিয়ন্ত্রণ আল্লাহরই হাতে। তিনি যা ইচ্ছা করতে পারেন। পরকালে তিনি সব সৃষ্টিকে ফের জীবিত করে কর্মফল দেবেন। তাই সময় থাকতে পরকালের প্রস্তুতি নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। একটি বছর ফুরিয়ে নতুন বছরের যাত্রা শুরু হলো, এই বছরটিও একদিন ফুরিয়ে যাবে। এভাবেই আমরা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তাই মৃত্যুর পরের জীবনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এখনই। আল্লাহ বলেন, ‘যেদিন চোখ স্থির হয়ে যাবে, চাঁদ আলো হারাবে, সূর্য ও চাঁদকে এক জায়গায় করা হবে, সেদিন মানুষ বলবে—পালাব কোথায়?’ (সুরা কিয়ামা: ৭-১০)
ইজাজুল হক, ঢাকা

নশ্বর পৃথিবীতে বিরামহীন বয়ে চলে সময়। দিন যায়, রাত আসে। সপ্তাহ-মাস পেরিয়ে এক সময় ফুরিয়ে যায় বছরও। পৃথিবীর সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত এ নিয়মেই ঘুরছে সময়ের চাকা। মহান আল্লাহ চাঁদ-সূর্যের গতির সঙ্গে জুড়ে দেন সময়ের হিসাব। পৃথিবী যত দিন টিকে থাকবে, চাঁদ-সূর্যের নিয়মিত পথচলাও থামবে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই সূর্যকে উজ্জ্বল আলোময় ও চাঁদকে স্নিগ্ধ আলোময় করেছেন এবং তাদের গতিপথ নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যেন তোমরা বছর গুনতে পারো এবং সময়ের হিসাব করতে পারো।’ (সুরা ইউনুস: ৫)
সময়ের এই অমোঘ নিয়ম লঙ্ঘিত হওয়ার নয়। তবে কখনো-কখনো মহান আল্লাহ তাঁর অসীম ক্ষমতার প্রকাশ ঘটাতে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন বলে কোরআন-হাদিসের ভাষ্য থেকে জানা যায়। সেসব ঘটনার একটি উজাইর (আ.)-এর ঘটনা। তিনি ছিলেন এমন এক মহান ব্যক্তি, যাঁর জন্য সময় এক শ বছর থেমে গিয়েছিল। এক শ বছর পর্যন্ত সময়ের কোনো প্রভাব তাঁকে স্পর্শ করেনি। এই ঘটনা ঘটেছে ইসা (আ.)–এর জন্মের বেশ আগে কোনো এক সময়ে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা পরকালে বিশ্বাসের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে কয়েকটি ঘটনা বয়ান করেছেন—উজাইর (আ.)-এর এ ঘটনা সেগুলোর একটি।
কোরআনের বর্ণনায় উজাইর (আ.)-এর ঘটনা
পরকাল সম্পর্কে মানুষের কৌতূহল নতুন নয়। এমনকি নবীদের অনেকেই পরকাল সম্পর্কে মহান আল্লাহকে জিজ্ঞেস করেছেন। যা মরে যায়, পচে-গলে মাটির সঙ্গে মিশে যায় এবং পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, তা কীভাবে ফের হুবহু আগের মতো করে হাশরের ময়দানে জীবিত করা হবে, তা নিয়ে মানুষের সংশয়, কৌতূহল ও অবিশ্বাসের অন্ত নেই। তবে মানুষের এই সংশয় দূর করতে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন আঙ্গিকে যুক্তি তুলে ধরেছেন। তুলে এনেছেন অতীতের অনেক ঘটনাও।
তেমনি একটি ঘটনার অবতারণা করে আল্লাহ তাআলা বলেন— অথবা সেই ব্যক্তির মতো, যে বাড়িঘর ভেঙে ছাদের ওপর বিধ্বস্ত হয়ে থাকা এক জনপদ হয়ে যাচ্ছিল। সে বলল, ‘মরে যাওয়ার পর আল্লাহ একে কীভাবে জীবিত করবেন?’ এরপর আল্লাহ তাঁকে এক শ বছর মৃত রাখলেন। এরপর ফের জীবিত করলেন এবং বললেন, ‘তুমি কত দিন এভাবে ছিলে?’ সে বলল, ‘একদিন বা একদিনেরও কিছু কম সময়।’ তিনি বললেন, ‘বরং তুমি এক শ বছর এভাবে ছিলে। তোমার পানাহারের উপকরণগুলো দেখো, পচেনি। আর তোমার গাধাকে দেখো, আর আমি যেন তোমাকে মানুষের জন্য উদাহরণ বানাতে পারি, হাড়গুলো দেখো, কীভাবে আমি তা জুড়ে দেই এবং তাতে মাংসের আবরণ পরিয়ে দেই।’ পরে যখন তার কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হলো, তখন সে বলল, ‘আমি জানি, আল্লাহ সবকিছুই করার ক্ষমতা রাখেন।’ (সুরা বাকারা: ২৫৯)
ইবনে কাসির (রহ.) আয়াতের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন
আয়াতে উজাইর (আ.)-এর কথা উল্লেখ না থাকলেও প্রসিদ্ধ মতে তাঁর সম্পর্কেই এ আয়াত নাজিল হয়েছে। বুখতানাসসার নামের এক জালিম শাসক ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসে গণহত্যা চালান এবং পুরো বসতি ধ্বংস করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেন। একজন মানুষও জীবিত ছাড়েননি। সেই বিরান জেরুজালেম হয়েই যাচ্ছিলেন উজাইর (আ.)। তখন জনশূন্য বসতির এই ধ্বংসস্তূপ দেখে তাঁর মনে কৌতূহল জেগেছিল, এমন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া জনপদকে কেমন করে মহান আল্লাহ হাশরের ময়দানে ফের জীবিত করবেন। তখন আল্লাহ তাঁকেই মৃত্যু দেন এবং সেই স্থানে রেখে দেন।
এরপর কেটে যায় এক শ বছর। শহরটি আবার নতুন প্রাণে সজীব হয়ে ওঠে। বনি ইসরাইল শহরে ফিরে এসে নতুনভাবে বাঁচতে শুরু করে। তখন আল্লাহ তাআলা উজাইর (আ.)-কে ফের জীবিত করেন। প্রথমে তাঁর দুই চোখে প্রাণ ফিরিয়ে দেন, যাতে দেহের বাকি অংশ কীভাবে ফের প্রাণ ফিরে পাচ্ছে, তা দেখে তিনি শিখতে পারেন।
পুরো দেহে প্রাণ ফিরলে আল্লাহ তাআলা ফেরেশতার মাধ্যমে তাঁকে প্রশ্ন শুরু করেন—কত দিন এভাবে ছিলে। যেহেতু দিনের শুরুতেই মারা গিয়েছিলেন এবং এখনো দিনের কিছু অংশ বাকি আছে, তাই স্বাভাবিকভাবেই তাঁর উত্তর ছিল—একদিন বা তারও কম সময়। কিন্তু আল্লাহ তাঁর দাবি নাকচ করে দিয়ে বললেন—এক শ বছর পর তোমাকে জীবিত করেছি। সুতরাং পরকালেও এভাবেই জীবিত করা হবে।
উজাইর (আ.)-এর চোখ বিস্ময়ে ছানাবড়া হওয়ার আগেই আল্লাহ দলিল উপস্থাপন করে দিলেন। বললেন, দেখো, তোমার দেহের মতো এখানে যে আঙুর, তীনফল ও শরবত ছিল, তা হুবহুই রেখে দিয়েছি, এগুলোর স্বাদ-গন্ধে কোনো পরিবর্তন আনিনি, তবে তোমার যে গাধাটি ছিল, তা দেখো পচে-গলে একাকার হয়ে গেছে এবং কীভাবে তা আমি ফের জীবিত করছি; দেখো, কীভাবে হাড়গুলো জোড়া লাগিয়ে মাংসের প্রলেপ দিয়ে দিচ্ছি। চোখের সামনে এমন আশ্চর্য ঘটনা দেখে উজাইর (আ.)-এর কাছে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায় যে, আল্লাহ সবকিছুই পারেন। (তাফসিরে ইবনে কাসির: ১ / ৬৮৭-৬৮৯)
উজাইর (আ.) কি নবী ছিলেন
উজাইর (আ.) একজন আল্লাহর প্রিয় বান্দা ছিলেন এটুকুতে কারও দ্বিমত নেই। নবী ছিলেন কি না তা নিয়ে মুফাসসিরদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। প্রসিদ্ধ মতে, তিনি নবী ছিলেন। ইবনে কাসির (রহ.) এই মত গ্রহণ করেছেন। (আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া)
তবে অনেকের মতে, তিনি যে নবী ছিলেন, এর পক্ষে কোরআন-হাদিসে কোনো দলিল পাওয়া যায় না। বরং হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমি জানি না তুব্বা বাদশাহ অভিশপ্ত, নাকি নয়। আমি জানি না উজাইর নবী; নাকি নয়।’ তাই তাঁকে নবী বলা উচিত হবে না। তবে এই হাদিসের সনদ অনেকেই দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। যাই হোক, এ ঘটনার শিক্ষার সঙ্গে তাঁর নবী হওয়া-না হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।
ঘটনার শিক্ষা হলো, সময়ের নিয়ন্ত্রণ আল্লাহরই হাতে। তিনি যা ইচ্ছা করতে পারেন। পরকালে তিনি সব সৃষ্টিকে ফের জীবিত করে কর্মফল দেবেন। তাই সময় থাকতে পরকালের প্রস্তুতি নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। একটি বছর ফুরিয়ে নতুন বছরের যাত্রা শুরু হলো, এই বছরটিও একদিন ফুরিয়ে যাবে। এভাবেই আমরা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তাই মৃত্যুর পরের জীবনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এখনই। আল্লাহ বলেন, ‘যেদিন চোখ স্থির হয়ে যাবে, চাঁদ আলো হারাবে, সূর্য ও চাঁদকে এক জায়গায় করা হবে, সেদিন মানুষ বলবে—পালাব কোথায়?’ (সুরা কিয়ামা: ৭-১০)

নশ্বর পৃথিবীতে বিরামহীন বয়ে চলে সময়। দিন যায়, রাত আসে। সপ্তাহ-মাস পেরিয়ে এক সময় ফুরিয়ে যায় বছরও। পৃথিবীর সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত এ নিয়মেই ঘুরছে সময়ের চাকা। মহান আল্লাহ চাঁদ-সূর্যের গতির সঙ্গে জুড়ে দেন সময়ের হিসাব। পৃথিবী যত দিন টিকে থাকবে, চাঁদ-সূর্যের নিয়মিত পথচলাও থামবে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই সূর্যকে উজ্জ্বল আলোময় ও চাঁদকে স্নিগ্ধ আলোময় করেছেন এবং তাদের গতিপথ নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যেন তোমরা বছর গুনতে পারো এবং সময়ের হিসাব করতে পারো।’ (সুরা ইউনুস: ৫)
সময়ের এই অমোঘ নিয়ম লঙ্ঘিত হওয়ার নয়। তবে কখনো-কখনো মহান আল্লাহ তাঁর অসীম ক্ষমতার প্রকাশ ঘটাতে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন বলে কোরআন-হাদিসের ভাষ্য থেকে জানা যায়। সেসব ঘটনার একটি উজাইর (আ.)-এর ঘটনা। তিনি ছিলেন এমন এক মহান ব্যক্তি, যাঁর জন্য সময় এক শ বছর থেমে গিয়েছিল। এক শ বছর পর্যন্ত সময়ের কোনো প্রভাব তাঁকে স্পর্শ করেনি। এই ঘটনা ঘটেছে ইসা (আ.)–এর জন্মের বেশ আগে কোনো এক সময়ে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা পরকালে বিশ্বাসের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে কয়েকটি ঘটনা বয়ান করেছেন—উজাইর (আ.)-এর এ ঘটনা সেগুলোর একটি।
কোরআনের বর্ণনায় উজাইর (আ.)-এর ঘটনা
পরকাল সম্পর্কে মানুষের কৌতূহল নতুন নয়। এমনকি নবীদের অনেকেই পরকাল সম্পর্কে মহান আল্লাহকে জিজ্ঞেস করেছেন। যা মরে যায়, পচে-গলে মাটির সঙ্গে মিশে যায় এবং পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, তা কীভাবে ফের হুবহু আগের মতো করে হাশরের ময়দানে জীবিত করা হবে, তা নিয়ে মানুষের সংশয়, কৌতূহল ও অবিশ্বাসের অন্ত নেই। তবে মানুষের এই সংশয় দূর করতে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন আঙ্গিকে যুক্তি তুলে ধরেছেন। তুলে এনেছেন অতীতের অনেক ঘটনাও।
তেমনি একটি ঘটনার অবতারণা করে আল্লাহ তাআলা বলেন— অথবা সেই ব্যক্তির মতো, যে বাড়িঘর ভেঙে ছাদের ওপর বিধ্বস্ত হয়ে থাকা এক জনপদ হয়ে যাচ্ছিল। সে বলল, ‘মরে যাওয়ার পর আল্লাহ একে কীভাবে জীবিত করবেন?’ এরপর আল্লাহ তাঁকে এক শ বছর মৃত রাখলেন। এরপর ফের জীবিত করলেন এবং বললেন, ‘তুমি কত দিন এভাবে ছিলে?’ সে বলল, ‘একদিন বা একদিনেরও কিছু কম সময়।’ তিনি বললেন, ‘বরং তুমি এক শ বছর এভাবে ছিলে। তোমার পানাহারের উপকরণগুলো দেখো, পচেনি। আর তোমার গাধাকে দেখো, আর আমি যেন তোমাকে মানুষের জন্য উদাহরণ বানাতে পারি, হাড়গুলো দেখো, কীভাবে আমি তা জুড়ে দেই এবং তাতে মাংসের আবরণ পরিয়ে দেই।’ পরে যখন তার কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হলো, তখন সে বলল, ‘আমি জানি, আল্লাহ সবকিছুই করার ক্ষমতা রাখেন।’ (সুরা বাকারা: ২৫৯)
ইবনে কাসির (রহ.) আয়াতের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন
আয়াতে উজাইর (আ.)-এর কথা উল্লেখ না থাকলেও প্রসিদ্ধ মতে তাঁর সম্পর্কেই এ আয়াত নাজিল হয়েছে। বুখতানাসসার নামের এক জালিম শাসক ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসে গণহত্যা চালান এবং পুরো বসতি ধ্বংস করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেন। একজন মানুষও জীবিত ছাড়েননি। সেই বিরান জেরুজালেম হয়েই যাচ্ছিলেন উজাইর (আ.)। তখন জনশূন্য বসতির এই ধ্বংসস্তূপ দেখে তাঁর মনে কৌতূহল জেগেছিল, এমন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া জনপদকে কেমন করে মহান আল্লাহ হাশরের ময়দানে ফের জীবিত করবেন। তখন আল্লাহ তাঁকেই মৃত্যু দেন এবং সেই স্থানে রেখে দেন।
এরপর কেটে যায় এক শ বছর। শহরটি আবার নতুন প্রাণে সজীব হয়ে ওঠে। বনি ইসরাইল শহরে ফিরে এসে নতুনভাবে বাঁচতে শুরু করে। তখন আল্লাহ তাআলা উজাইর (আ.)-কে ফের জীবিত করেন। প্রথমে তাঁর দুই চোখে প্রাণ ফিরিয়ে দেন, যাতে দেহের বাকি অংশ কীভাবে ফের প্রাণ ফিরে পাচ্ছে, তা দেখে তিনি শিখতে পারেন।
পুরো দেহে প্রাণ ফিরলে আল্লাহ তাআলা ফেরেশতার মাধ্যমে তাঁকে প্রশ্ন শুরু করেন—কত দিন এভাবে ছিলে। যেহেতু দিনের শুরুতেই মারা গিয়েছিলেন এবং এখনো দিনের কিছু অংশ বাকি আছে, তাই স্বাভাবিকভাবেই তাঁর উত্তর ছিল—একদিন বা তারও কম সময়। কিন্তু আল্লাহ তাঁর দাবি নাকচ করে দিয়ে বললেন—এক শ বছর পর তোমাকে জীবিত করেছি। সুতরাং পরকালেও এভাবেই জীবিত করা হবে।
উজাইর (আ.)-এর চোখ বিস্ময়ে ছানাবড়া হওয়ার আগেই আল্লাহ দলিল উপস্থাপন করে দিলেন। বললেন, দেখো, তোমার দেহের মতো এখানে যে আঙুর, তীনফল ও শরবত ছিল, তা হুবহুই রেখে দিয়েছি, এগুলোর স্বাদ-গন্ধে কোনো পরিবর্তন আনিনি, তবে তোমার যে গাধাটি ছিল, তা দেখো পচে-গলে একাকার হয়ে গেছে এবং কীভাবে তা আমি ফের জীবিত করছি; দেখো, কীভাবে হাড়গুলো জোড়া লাগিয়ে মাংসের প্রলেপ দিয়ে দিচ্ছি। চোখের সামনে এমন আশ্চর্য ঘটনা দেখে উজাইর (আ.)-এর কাছে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায় যে, আল্লাহ সবকিছুই পারেন। (তাফসিরে ইবনে কাসির: ১ / ৬৮৭-৬৮৯)
উজাইর (আ.) কি নবী ছিলেন
উজাইর (আ.) একজন আল্লাহর প্রিয় বান্দা ছিলেন এটুকুতে কারও দ্বিমত নেই। নবী ছিলেন কি না তা নিয়ে মুফাসসিরদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। প্রসিদ্ধ মতে, তিনি নবী ছিলেন। ইবনে কাসির (রহ.) এই মত গ্রহণ করেছেন। (আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া)
তবে অনেকের মতে, তিনি যে নবী ছিলেন, এর পক্ষে কোরআন-হাদিসে কোনো দলিল পাওয়া যায় না। বরং হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমি জানি না তুব্বা বাদশাহ অভিশপ্ত, নাকি নয়। আমি জানি না উজাইর নবী; নাকি নয়।’ তাই তাঁকে নবী বলা উচিত হবে না। তবে এই হাদিসের সনদ অনেকেই দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। যাই হোক, এ ঘটনার শিক্ষার সঙ্গে তাঁর নবী হওয়া-না হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।
ঘটনার শিক্ষা হলো, সময়ের নিয়ন্ত্রণ আল্লাহরই হাতে। তিনি যা ইচ্ছা করতে পারেন। পরকালে তিনি সব সৃষ্টিকে ফের জীবিত করে কর্মফল দেবেন। তাই সময় থাকতে পরকালের প্রস্তুতি নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। একটি বছর ফুরিয়ে নতুন বছরের যাত্রা শুরু হলো, এই বছরটিও একদিন ফুরিয়ে যাবে। এভাবেই আমরা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তাই মৃত্যুর পরের জীবনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এখনই। আল্লাহ বলেন, ‘যেদিন চোখ স্থির হয়ে যাবে, চাঁদ আলো হারাবে, সূর্য ও চাঁদকে এক জায়গায় করা হবে, সেদিন মানুষ বলবে—পালাব কোথায়?’ (সুরা কিয়ামা: ৭-১০)

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৬ ঘণ্টা আগে
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
১৯ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
২১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১১ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৫ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৬ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৮ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৯ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১১ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৫ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৬ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৮ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৯ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

পৃথিবীর সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত এ নিয়মেই ঘুরছে সময়ের চাকা। মহান আল্লাহ চাঁদ-সূর্যের গতির সঙ্গে জুড়ে দেন সময়ের হিসাব। পৃথিবী যত দিন টিকে থাকবে, চাঁদ-সূর্যের নিয়মিত পথচলাও থামবে না।
০১ জানুয়ারি ২০২৩
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
১৯ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
২১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:
এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।
দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।
মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।
কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:
এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।
দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)
তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।
যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’
মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’
ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।
লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:
এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।
দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।
মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।
কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:
এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।
দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)
তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।
যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’
মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’
ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।
লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

পৃথিবীর সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত এ নিয়মেই ঘুরছে সময়ের চাকা। মহান আল্লাহ চাঁদ-সূর্যের গতির সঙ্গে জুড়ে দেন সময়ের হিসাব। পৃথিবী যত দিন টিকে থাকবে, চাঁদ-সূর্যের নিয়মিত পথচলাও থামবে না।
০১ জানুয়ারি ২০২৩
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৬ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
২১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

পৃথিবীর সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত এ নিয়মেই ঘুরছে সময়ের চাকা। মহান আল্লাহ চাঁদ-সূর্যের গতির সঙ্গে জুড়ে দেন সময়ের হিসাব। পৃথিবী যত দিন টিকে থাকবে, চাঁদ-সূর্যের নিয়মিত পথচলাও থামবে না।
০১ জানুয়ারি ২০২৩
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৬ ঘণ্টা আগে
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
১৯ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৬ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৭ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

পৃথিবীর সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত এ নিয়মেই ঘুরছে সময়ের চাকা। মহান আল্লাহ চাঁদ-সূর্যের গতির সঙ্গে জুড়ে দেন সময়ের হিসাব। পৃথিবী যত দিন টিকে থাকবে, চাঁদ-সূর্যের নিয়মিত পথচলাও থামবে না।
০১ জানুয়ারি ২০২৩
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৬ ঘণ্টা আগে
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
১৯ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
২১ ঘণ্টা আগে