Ajker Patrika

মিরাজে গিয়ে যাদের ভয়ংকর পরিণতি দেখেছেন মহানবী (সা.)

ইসলাম ডেস্ক
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১: ০২
মিরাজে গিয়ে যাদের ভয়ংকর পরিণতি দেখেছেন মহানবী (সা.)

মিরাজ মহানবী (সা.)-এর জীবনের অন্যতম সেরা তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। মিরাজের রাতের আল্লাহ তাআলা মহানবী (সা.)-কে তাঁর অসংখ্য নিদর্শন দেখিয়েছেন। অদৃশ্য জগতের অনেক কিছুই তাঁকে নিজ চোখে দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন। এই সফরে মহানবী (সা.) কয়েক শ্রেণির মানুষের ভয়ংকর পরিণতি দেখেছেন। তাদের কঠিন সাজার দৃশ্য তাঁকে দেখানো হয়েছে। হাদিসের আলোকে তেমনই কিছু মানুষের কথা এখানে তুলে ধরা হলো—

 ১. নামাজে অবহেলাকারী
হাদিসে এসেছে, মিরাজের রাতে ঊর্ধ্বাকাশ ভ্রমণের সময় মহানবী (সা.) দেখলেন, কিছু মানুষের মাথা পাথর দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হচ্ছে। যতবারই থেঁতলে দেওয়া হচ্ছে, ততবারই সেগুলো আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। এভাবে অবিরাম তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছিল। নবী (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘ভাই জিবরাইল, এরা কারা? তাদের পেশা কী ছিল? কেন তাদের এমন শাস্তি দেওয়া হচ্ছে?’ জবাবে জিবরাইল বললেন, ‘তারা নামাজ আদায়কে ভারী মনে করত এবং সময় মতো নামাজ আদায়ে গাফিলতি করত।’ (মুসনাদে বাজ্জার: ৯৫১৮; আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব: ৪ / ৪৫৬)  

২. সুদখোর
হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) ইসরা ও মিরাজের সময় দেখলেন, এক ব্যক্তি রক্তের নদীতে সাঁতরাচ্ছে এবং তাকে পাথর গেলানো হচ্ছে। নবী (সা.) বললেন, ‘ভাই জিবরাইল, এই লোক কে?’ কেন তাকে রক্তের নদীতে আজাব দেওয়া হচ্ছে এবং পাথর গেলানো হচ্ছে।’ জিবরাইল বললেন, ‘সে সুদখোর। সুদি কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিল।’ (মুসনাদে আহমদ: ২০১০১) 

 ৩. গিবতকারী
হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘মিরাজের রাতে আমি এমন কিছু লোকের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম, যাদের নখগুলো তামার তৈরি, তা দিয়ে তারা অনবরত নিজেদের মুখমণ্ডল ও বুকে আঁচড় কাটছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে জিবরাইল, এরা কারা? জবাবে জিবরাইল বললেন, এরা মানুষের গোশত খেত (গিবত করত) এবং তাঁদের মানসম্মানে আঘাত করত।’ (আবু দাউদ: ৪৮৭৮) 

বুখারির এক হাদিসেও এই তিন শ্রেণির মানুষের কঠিন শাস্তির বয়ান এসেছে। সেখানে মিথ্যুক ও ব্যভিচারীর কথাও এসেছে। তবে এতে মিরাজের রাতের কথা সরাসরি উল্লেখ নেই। সেই দীর্ঘ হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমি (ফেরেশতাদের) জিজ্ঞেস করলাম, এই রাতে অনেক বিস্ময়কর বিষয় দেখতে পেলাম, এগুলোর তাৎপর্য কী? তাঁরা আমাকে বললেন, আচ্ছা, আপনাকে ব্যাখ্যা বলে দিচ্ছি। আপনার দেখা প্রথম ব্যক্তি, যার মাথা পাথর দিয়ে চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হচ্ছিল, সে কোরআন গ্রহণ করে ছেড়ে দিয়েছিল এবং ফরজ নামাজ ছেড়ে ঘুমিয়ে থাকত। যার মুখের এক ভাগ মাথার পেছন দিক পর্যন্ত এবং নাকের ছিদ্র ও চোখ মাথার পেছন দিক পর্যন্ত চিড়ে ফেলা হচ্ছিল, সে সকালে নিজ ঘর থেকে বের হয়ে মিথ্যা কথা বলে চারদিকে ছড়িয়ে দিত। চুলার মতো গর্তে থাকা উলঙ্গ নারী-পুরুষেরা হলো ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণী। যে ব্যক্তি নদীতে সাঁতার কাটছিল এবং তাকে পাথর গেলানো হচ্ছিল, সে সুদখোর।’ (বুখারি: ৭০৪৭)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত