মুফতি আইয়ুব নাদীম
মহানবী (সা.) পুরো পৃথিবীবাসীর জন্য দয়া, মায়া-মমতা ও ভালোবাসার মহাসাগর ছিলেন। মানব ইতিহাসের সূচনাকাল থেকে আজ অবধি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মতো মানবদরদি কোনো নেতা আসেননি, কিয়ামত পর্যন্ত আসবেনও না। উম্মতের প্রতি তাঁর অগাধ ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসা উপমাহীন। উম্মতের নাজাত-মুক্তি ও সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনায় তাঁর হৃদয় সদা ব্যাকুল ও অস্থির থাকত। কোরআন-হাদিসের বিশাল অংশজুড়ে এর বিবরণ এসেছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘(হে মানুষ) তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের কাছে এক রাসুল এসেছে। তোমাদের যেকোনো কষ্ট তাঁর জন্য অতি পীড়াদায়ক। সে সতত তোমাদের কল্যাণকামী, মুমিনদের প্রতি অত্যন্ত সদয়, পরম দয়ালু।’ (সুরা তাওবা: ১২৮) এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, নবী (সা.) সৃষ্টিজীবের প্রতি বিশেষত তাঁর উম্মতের প্রতি তাঁর দয়া-মায়া ও স্নেহশীলতা কতটা গভীর ছিল। আমাদের মতো উম্মতকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য মহান আল্লাহ নিজের দুটি নাম প্রিয় নবীর সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছেন, একটি ‘রউফ’, আরেকটি ‘রহিম’।
এত মায়া-দয়ার পরেও যখন মক্কার কাফিররা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে বৈরী আচরণ করতে থাকল এবং নানাভাবে কষ্ট দিতে থাকল এবং নবীজি মনঃকষ্ট পেলেন, তখন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় নবীকে সান্ত্বনার বাণী শোনালেন। এরশাদ হয়েছে, ‘(হে নবী, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে) তারা (কোরআনের প্রতি) ইমান না আনলে যেন আপনি আক্ষেপ করে করে তাদের পেছনে নিজের প্রাণনাশ করে ফেলবেন!’ (সুরা কাহাফ: ৬)
আরেক আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘লোকজন কী বলে, এটা নবী নিজে রচনা করেছে? না, (হে নবী) এটা তো সত্য, যা আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে এসেছে, যাতে আপনি এর মাধ্যমে সতর্ক করেন এমন এক সম্প্রদায়কে, যাদের কাছে আপনার আগে কোনো সতর্ককারী আসেনি, যাতে তারা সঠিক পথে এসে যায়।’ (সুরা আহজাব: ৩)
আরেক আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার প্রতিপালক, ওই সব প্রতিমা বিপুল মানুষকে পথভ্রষ্ট করেছে। সুতরাং যে কেউ আমার অনুসরণ করবে, সে আমার দলভুক্ত। আর যে কেউ আমাকে অমান্য করবে (তার বিষয়টা আমি আপনার ওপর ছেড়ে দিচ্ছি)। আপনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা ইবরাহিম: ৩৬)
বোঝা গেল, আমি আমার সন্তান-সন্ততি ও অন্য লোকজনকে মূর্তিপূজা থেকে বেঁচে থাকার আদেশ করতে থাকব। যারা আমার আদেশমতো কাজ করবে, তারা আমার অনুসারী বলে দাবি করার অধিকার রাখবে। কিন্তু যারা আমার কথা মানবে না, তারা আমার দলে থাকবে না। তবে আমি তাদের জন্য বদদোয়া করি না। তাদের বিষয়টা আমি আপনার ওপর ছেড়ে দিচ্ছি। আপনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। সুতরাং আপনি তাদের হিদায়েত দিয়ে মাগফিরাতের ব্যবস্থাও করতে পারেন।
এ ব্যাপারে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত—রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি তোমাদের জন্য পিতৃতুল্য। আমি দ্বীনের বিষয়গুলো তোমাদের শিক্ষা দিয়ে থাকি।’ (আবু দাউদ: ৮) হাদিস থেকে বোঝা যায়, রাসুলুল্লাহ (সা.) উম্মতের জন্য পিতৃতুল্য। অর্থাৎ আমি উম্মতের ভালো-মন্দ সব বিষয়ে চিন্তাভাবনা করি এবং তাদের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি ও সফলতা কামনা করি।
একই সঙ্গে উম্মত যেন পরকালীন জীবনে কিয়ামতের দিনে এবং জাহান্নামের নানাবিধ কষ্ট থেকে বাঁচতে পারে সে জন্য তাদের নানাভাবে সতর্ক ও সচেতন করেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘আমার ও মানুষের উদাহরণ এমন লোকের মতো, যে আগুন জ্বালাল, যখন তার চার দিক আলোকিত হয়ে গেল, কীটপতঙ্গ তাতে পড়তে লাগল, তখন সে সেগুলোকে ফেরানোর চেষ্টা করল, কিন্তু সেগুলো তাকে পরাজিত করে আগুনে পতিত হলো অনুরূপভাবে আমি তোমাদের কোমর ধরে ধরে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করি, কিন্তু তোমরা তাতেই (শয়তানের প্ররোচনায়) পতিত হয়ে যাও।’ (বুখারি: ৬৪৮৩)
আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মহান আল্লাহ প্রত্যেক নবীকে এমন একটি বিশেষ দোয়ার অধিকার দিয়েছেন যা কবুল করা হবে, প্রত্যেক নবী সেই দোয়া দুনিয়ায় করেছেন এবং তা কবুলও হয়েছে। আর আমি সেই বিশেষ দোয়াটি কিয়ামতের দিন আমার উম্মতের সুপারিশের জন্য রেখে দিয়েছি।’ (বুখারি: ৬৩০৪)
লেখক: শিক্ষক ও মুহাদ্দিস
মহানবী (সা.) পুরো পৃথিবীবাসীর জন্য দয়া, মায়া-মমতা ও ভালোবাসার মহাসাগর ছিলেন। মানব ইতিহাসের সূচনাকাল থেকে আজ অবধি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মতো মানবদরদি কোনো নেতা আসেননি, কিয়ামত পর্যন্ত আসবেনও না। উম্মতের প্রতি তাঁর অগাধ ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসা উপমাহীন। উম্মতের নাজাত-মুক্তি ও সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনায় তাঁর হৃদয় সদা ব্যাকুল ও অস্থির থাকত। কোরআন-হাদিসের বিশাল অংশজুড়ে এর বিবরণ এসেছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘(হে মানুষ) তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের কাছে এক রাসুল এসেছে। তোমাদের যেকোনো কষ্ট তাঁর জন্য অতি পীড়াদায়ক। সে সতত তোমাদের কল্যাণকামী, মুমিনদের প্রতি অত্যন্ত সদয়, পরম দয়ালু।’ (সুরা তাওবা: ১২৮) এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, নবী (সা.) সৃষ্টিজীবের প্রতি বিশেষত তাঁর উম্মতের প্রতি তাঁর দয়া-মায়া ও স্নেহশীলতা কতটা গভীর ছিল। আমাদের মতো উম্মতকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য মহান আল্লাহ নিজের দুটি নাম প্রিয় নবীর সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছেন, একটি ‘রউফ’, আরেকটি ‘রহিম’।
এত মায়া-দয়ার পরেও যখন মক্কার কাফিররা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে বৈরী আচরণ করতে থাকল এবং নানাভাবে কষ্ট দিতে থাকল এবং নবীজি মনঃকষ্ট পেলেন, তখন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় নবীকে সান্ত্বনার বাণী শোনালেন। এরশাদ হয়েছে, ‘(হে নবী, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে) তারা (কোরআনের প্রতি) ইমান না আনলে যেন আপনি আক্ষেপ করে করে তাদের পেছনে নিজের প্রাণনাশ করে ফেলবেন!’ (সুরা কাহাফ: ৬)
আরেক আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘লোকজন কী বলে, এটা নবী নিজে রচনা করেছে? না, (হে নবী) এটা তো সত্য, যা আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে এসেছে, যাতে আপনি এর মাধ্যমে সতর্ক করেন এমন এক সম্প্রদায়কে, যাদের কাছে আপনার আগে কোনো সতর্ককারী আসেনি, যাতে তারা সঠিক পথে এসে যায়।’ (সুরা আহজাব: ৩)
আরেক আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার প্রতিপালক, ওই সব প্রতিমা বিপুল মানুষকে পথভ্রষ্ট করেছে। সুতরাং যে কেউ আমার অনুসরণ করবে, সে আমার দলভুক্ত। আর যে কেউ আমাকে অমান্য করবে (তার বিষয়টা আমি আপনার ওপর ছেড়ে দিচ্ছি)। আপনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা ইবরাহিম: ৩৬)
বোঝা গেল, আমি আমার সন্তান-সন্ততি ও অন্য লোকজনকে মূর্তিপূজা থেকে বেঁচে থাকার আদেশ করতে থাকব। যারা আমার আদেশমতো কাজ করবে, তারা আমার অনুসারী বলে দাবি করার অধিকার রাখবে। কিন্তু যারা আমার কথা মানবে না, তারা আমার দলে থাকবে না। তবে আমি তাদের জন্য বদদোয়া করি না। তাদের বিষয়টা আমি আপনার ওপর ছেড়ে দিচ্ছি। আপনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। সুতরাং আপনি তাদের হিদায়েত দিয়ে মাগফিরাতের ব্যবস্থাও করতে পারেন।
এ ব্যাপারে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত—রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি তোমাদের জন্য পিতৃতুল্য। আমি দ্বীনের বিষয়গুলো তোমাদের শিক্ষা দিয়ে থাকি।’ (আবু দাউদ: ৮) হাদিস থেকে বোঝা যায়, রাসুলুল্লাহ (সা.) উম্মতের জন্য পিতৃতুল্য। অর্থাৎ আমি উম্মতের ভালো-মন্দ সব বিষয়ে চিন্তাভাবনা করি এবং তাদের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি ও সফলতা কামনা করি।
একই সঙ্গে উম্মত যেন পরকালীন জীবনে কিয়ামতের দিনে এবং জাহান্নামের নানাবিধ কষ্ট থেকে বাঁচতে পারে সে জন্য তাদের নানাভাবে সতর্ক ও সচেতন করেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘আমার ও মানুষের উদাহরণ এমন লোকের মতো, যে আগুন জ্বালাল, যখন তার চার দিক আলোকিত হয়ে গেল, কীটপতঙ্গ তাতে পড়তে লাগল, তখন সে সেগুলোকে ফেরানোর চেষ্টা করল, কিন্তু সেগুলো তাকে পরাজিত করে আগুনে পতিত হলো অনুরূপভাবে আমি তোমাদের কোমর ধরে ধরে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করি, কিন্তু তোমরা তাতেই (শয়তানের প্ররোচনায়) পতিত হয়ে যাও।’ (বুখারি: ৬৪৮৩)
আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মহান আল্লাহ প্রত্যেক নবীকে এমন একটি বিশেষ দোয়ার অধিকার দিয়েছেন যা কবুল করা হবে, প্রত্যেক নবী সেই দোয়া দুনিয়ায় করেছেন এবং তা কবুলও হয়েছে। আর আমি সেই বিশেষ দোয়াটি কিয়ামতের দিন আমার উম্মতের সুপারিশের জন্য রেখে দিয়েছি।’ (বুখারি: ৬৩০৪)
লেখক: শিক্ষক ও মুহাদ্দিস
এই পাহাড় দেখে মনে হয় যেন মহান কোনো শিল্পীর রংতুলি দিয়ে সযত্নে আঁকা। তবে এই রঙিন শিলার ঢেউ শুধু সৌন্দর্য নয়—ইমানদারদের কাছে এটি এক পরম সত্যের নিদর্শন, যাকে আমরা কোরআনের আলোকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি।
৮ ঘণ্টা আগেকৃতজ্ঞ বান্দা আল্লাহর কাছে প্রিয়। নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করলে তিনি খুশি হন। জীবন আরও সুন্দর করে সাজিয়ে দেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো এবং ইমান আনো, তাহলে তোমাদের শাস্তি দিয়ে আল্লাহ কী করবেন? আল্লাহ (সৎ কাজের বড়ই) পুরস্কারদাতা, সর্ববিষয়ে জ্ঞাত।’ (সুরা নিসা: ১৪৭)। অন্য এক আয়াত
১৬ ঘণ্টা আগেলজ্জা মোমিনের ভূষণ বা অলংকার। বাহ্যিক সৌন্দর্যের চেয়ে তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। লজ্জাশীলতা কল্যাণ বয়ে আনে। হজরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, লজ্জা মঙ্গল বয়ে আনে। (সহিহ্ মুসলিমের অন্য বর্ণনায় আছে, লজ্জার সবটুকু মঙ্গলই মঙ্গল। (রিয়াজুস সালেহিন: ৬৮৭)
১ দিন আগেমানবতার এক মহান কাজ ক্ষুধার্তদের মুখে খাবার তুলে দেওয়া । ইসলামে একে অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাজ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে । এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ ( সা . ) - কে প্রশ্ন করলেন , ‘ ইসলামে কোন কাজটি শ্রেষ্ঠ ? ” তিনি বললেন , ‘ ইসলামে সবচেয়ে ভালো কাজ হচ্ছে ক্ষুধার্তকে খাবার খাওয়ানো । ' ( সহিহ্ বুখারি : ১২ ,
২ দিন আগে