Ajker Patrika

হিজরি সনের সূচনা যেভাবে

মোহাম্মদ আবদুল্লাহ
হিজরি সনের সূচনা যেভাবে

ইসলামি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনের সূচনা নিয়ে দুটি মত পাওয়া যায়। এক. হিজরতের পরপরই মহানবী (সা.)-এর প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় এটির সূচনা হয়। দুই. ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর শাসনামলে এটির সূচনা হয়। ইবনে শিহাব জুহরি বলেন, এ দিন থেকেই রাসুল (সা.)-এর নির্দেশে ইসলামি বর্ষপঞ্জির সূচনা হয়। মদিনায় আগমনের পর সবাইকে তাঁর হিজরতের মাস রবিউল আউয়াল থেকে দিন গণনার নির্দেশ দেন। বর্ণনাটি ইমাম হাকেম ‘ইকলিল’ নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। তবে এই বর্ণনার সত্যতা নিয়ে আপত্তি থাকায় ইসলামি চিন্তাবিদগণ গ্রহণ করেননি।

পক্ষান্তরে দ্বিতীয় মতটিই নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রমাণিত, সর্বাধিক প্রসিদ্ধ এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। শাবি ও মুহাম্মদ ইবনে সিরিন বর্ণনা করেন, একবার হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) হজরত ওমর (রা.)-এর খেলাফতকালে তাঁকে লিখে পাঠান—আপনার বিভিন্ন আদেশনামা আমাদের হস্তগত হয়, কিন্তু কোনোটিতেই কোনো তারিখ উল্লেখ করা থাকে না। তখন একটি নতুন বর্ষপঞ্জি প্রণয়ন নিয়ে পরামর্শ করার জন্য ওমর (রা.) কয়েকজন সাহাবিকে ডাকেন। একেকজন একেকটি পরামর্শ দেন। ওমর (রা.) হিজরতের সময় থেকে গণনা শুরু করার মতটি পছন্দ করেন। তিনি বলেন, ‘হিজরতের মাধ্যমে ইসলামি বর্ষের সূচনা হওয়াই আমার দৃষ্টিতে যথাযথ। কেননা, হিজরতের মাধ্যমে সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য সুস্পষ্ট হয়ে গেছে এবং ইসলামের সম্মান, মর্যাদা ও বিজয়ের সূচনা হয়েছে।’ সবাই তাঁর এই মতামত পছন্দ করেন।

যেহেতু রাসুল (সা.) রবিউল আউয়াল মাসে মদিনায় হিজরত করেছিলেন, তাই হিসাব অনুযায়ী হিজরি বর্ষের সূচনা রবিউল আউয়াল মাস থেকে হওয়ার কথা। কিন্তু তা না করে মহররম থেকে হিসাব করা হয়েছে। কারণ রাসুলুল্লাহ (সা.) মহররম মাসেই হিজরতের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন। জিলহজ মাসের ১০ তারিখে মদিনা থেকে আগত সাহাবিগণ তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেছিলেন এবং মাসব্যাপী হজের কার্যক্রম সমাপ্ত করে মদিনায় ফিরে যান। তারা চলে যাওয়ার কিছুদিন পরই হুজুর (সা.) হিজরতের মনোভাব ব্যক্ত করেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে হিজরতের অনুমতি প্রদান করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হিজরি বর্ষের সূচনা মহররম থেকেই হিসাব করা হয়েছে। হজরত ওসমান ও আলি (রা.) ওমরকে মহররম থেকে বর্ষ শুরুর পরামর্শ প্রদান করেছিলেন। অবশ্য কারও কারও প্রস্তাব ছিল, রমজান মাস থেকে বর্ষ শুরুর হিসাব করা হোক। কিন্তু হজরত ওমর জবাবে বলেন, ‘বরং মহররমই হিসাব রাখার জন্য অধিক শোভনীয়। কেননা, লোকজন হজ সমাপ্ত করে মহররম মাসেই বাড়িঘরে ফিরে যায়। তাঁর এই জবাব সবাই পছন্দ করেন এবং মহররম থেকে বর্ষ শুরু করার বিষয়ে সবাই একমত হন।

ইমাম সারাখসি (রহ.) সিয়ারে কবির গ্রন্থের ব্যাখ্যায় আরেকটু বিস্তারিত বয়ান করে লেখেন, হজরত ওমর (রা.) যখন ইসলামি বর্ষ নির্ধারণকল্পে সাহাবায়ে কেরামের সঙ্গে পরামর্শ সভায় বসেন, তখন কারও পক্ষ থেকে এই পরামর্শ দেওয়া হয় যে রাসুল (সা.)-এর জন্মমুহূর্ত থেকে বর্ষ গণনার সূচনা হোক। কিন্তু হজরত ওমর (রা.) তা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘তাহলে বিষয়টি খ্রিষ্টানদের সঙ্গে মিলে যায়। কেননা, তারা খ্রিষ্টীয় সাল ঈসা (আ.)-এর জন্মমুহূর্ত থেকে গণনা করে।’ এ বিষয়ে কারও প্রস্তাব ছিল, নবীজির ইন্তেকালের ঘটনা থেকে বর্ষ গণনা শুরু করা হোক। কিন্তু হজরত ওমর (রা.) এটিও পছন্দ করলেন না। তিনি বললেন, ‘এটি এক বিরাট দুঃখজনক শোকাবহ ঘটনা এবং আমাদের জন্য বড় বিপর্যয়ের দিন। তাই বর্ষ শুরুর মতো এক বিশেষ ঘটনাকে এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত না করাই উত্তম।’ এভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা শেষে হিজরতের সূচনাকালেই সবাই ঐকমত্য পোষণ করেন। 

লেখক: প্রশিক্ষক, ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি, রাজশাহী

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

শিক্ষার্থীদের অর্থ আত্মসাৎ: বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালতে মারধর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৯ অক্টোবর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১৩ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৪: ৪৫ মিনিট
ফজর০৪: ৪৬ মিনিট০৬: ০১ মিনিট
জোহর১১: ৪৩ মিনিট০৩: ৪৪ মিনিট
আসর০৩: ৪৫ মিনিট০৫: ২০ মিনিট
মাগরিব০৫: ২২ মিনিট০৬: ৩৭ মিনিট
এশা০৬: ৩৮ মিনিট০৪: ৪৫ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—

চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট

সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—

খুলনা: ০৩ মিনিট

রাজশাহী: ০৭ মিনিট

রংপুর: ০৮ মিনিট

বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

শিক্ষার্থীদের অর্থ আত্মসাৎ: বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালতে মারধর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্তানকে নামাজি বানাবেন যেভাবে

সাকী মাহবুব
পরিবার। ছবি: সংগৃহীত
পরিবার। ছবি: সংগৃহীত

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আর নামাজ হলো এই ব্যবস্থার প্রাণ। নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি মানুষের আত্মার প্রশান্তি, নৈতিকতার ভিত্তি এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। তাই সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম পাঠই হওয়া উচিত নামাজের শিক্ষা।

প্রশ্ন হলো, কীভাবে মা-বাবা সন্তানকে নামাজপ্রিয় ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন?

আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি হাদিসে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের ৭ বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে তা না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ)

অতএব ছোটবেলা থেকে সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলার নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে।

সন্তান কখনো এক দিনে নামাজি হয় না। এটি একটি ধৈর্য, ভালোবাসা ও উদাহরণের দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রার প্রথম ধাপ হলো, নিজে নামাজি হওয়া। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে, তা-ই শেখে। মা-বাবার নিয়মিত নামাজ তাদের চোখে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। একটি পরিবারে নামাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর উপায় হলো, ঘরে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা।

আজানের সময় আজান দেওয়া এবং সবাইকে একত্রে নামাজে আহ্বান করা। ছোটদের জন্য আলাদা জায়নামাজ, টুপি ও ওড়না দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ পায়। নামাজ শেষে সবাই মিলে দোয়া করা, এতে শিশুর মনে নামাজের প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। শিশুর কাছে নামাজ যেন ভয় বা শাস্তি নয়, বরং আনন্দের একটি অভ্যাস হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।

নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’ এইভাবে ভালোবাসা ও পুরস্কারের ভাষায় সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তুলুন।

সন্তান যে পরিবেশে বড় হয়, তা তার চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই নামাজি বন্ধু ও সঙ্গ তৈরি করুন। মসজিদভিত্তিক শিশু কার্যক্রম বা ইসলামিক সংগঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। স্কুল ও সমাজে নামাজবান্ধব পরিবেশের জন্য উদ্যোগ নিন। সন্তানকে নামাজি বানানো মানে শুধু তাকে নামাজ শেখানো নয়; বরং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি, নৈতিকতা ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, ভালোবাসা ও সঠিক দিকনির্দেশনা।

আল্লাহ তাআলা কোরআনে মা-বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে স্থির থাকো।’ (সুরা তোহা: ১৩২)

সুতরাং মা-বাবা যদি নিজের ঘরে নামাজের আলো জ্বালান, তবে সেই আলো একদিন পুরো সমাজকে আলোকিত করবে নামাজি প্রজন্মের মাধ্যমে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সন্তানদের নামাজি হিসেবে কবুল করে নিন।

লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

শিক্ষার্থীদের অর্থ আত্মসাৎ: বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালতে মারধর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় তিনবারের চ্যাম্পিয়ন হাফেজের ডেঙ্গুতে মৃত্যু

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৩৬
বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী। ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী। ছবি: সংগৃহীত

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের গৌরব ছড়িয়ে দেওয়া তিনবারের বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী।

আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।

জানা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর হাফেজ ত্বকীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

বিশ্বজয়ী এই হাফেজ জর্ডান, কুয়েত ও বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। দেশে-বিদেশে অসংখ্য কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অর্জন করেন অসামান্য সাফল্য।

২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।

প্রতিভাবান এই হাফেজ ২০০০ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ডালপা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন। তাঁর বাবা মাওলানা বদিউল আলম একজন মাদ্রাসাশিক্ষক।

হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই শোক প্রকাশ করছেন তরুণ এই হাফেজের জন্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

শিক্ষার্থীদের অর্থ আত্মসাৎ: বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালতে মারধর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আমানত রক্ষা যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ

মুফতি খালিদ কাসেমি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

আরবি আমানত শব্দের অর্থ বিশ্বস্ততা, নিরাপত্তা, আশ্রয় ইত্যাদি। পরিভাষায় এমন হককে আমানত বলা হয়, যা আদায় করা এবং রক্ষা করা আবশ্যক। হাদিসে আমানত রক্ষা করাকে ইমানের নিদর্শন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার আমানতদারি নেই, তার ইমানও নেই; যার কাছে অঙ্গীকারের মূল্য নেই, তার দ্বীনদারি নেই।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ)

আমানত রক্ষা করার অনেক ফজিলত কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এখানে কয়েকটি তুলে ধরা হলো—

এক. আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর রাসুল (সা.)-এর নির্দেশ পালন: এরশাদ হচ্ছে, ‘(হে মুসলিমগণ) নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করছেন, তোমরা আমানতসমূহ তার হকদারকে আদায় করে দেবে এবং যখন মানুষের মধ্যে বিচার করবে, তখন ইনসাফের সঙ্গে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদের যে বিষয়ে উপদেশ দেন, তা কতই-না উৎকৃষ্ট! নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন।’ (সুরা নিসা: ৫৮) মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘কেউ তোমার কাছে আমানত রাখলে তা তাকে ফেরত দাও। যে ব্যক্তি তোমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তার সঙ্গে তুমি বিশ্বাসঘাতকতা কোরো না।’ (জামে তিরমিজি)

দুই. রাসুলগণের গুণে গুণান্বিত হওয়া: রাসুলগণ আপন সম্প্রদায়ের লোকজনকে লক্ষ করে বলতেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসুল।’ (সুরা শুআরা: ১০৭)

তিন. ইমানদার ও সফলদের গুণ অর্জন: যারা আমানত রক্ষা করে, মহান আল্লাহ তাদের ‘সফলকাম’ আখ্যা দিয়েছেন। এবং তাদের জন্য জান্নাতুল ফেরদাউসের সুসংবাদ দিয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘...এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। এবং যারা নিজেদের নামাজের প্রতি যত্নবান থাকে। এরাই হলো সেই ওয়ারিশ, যারা জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিকারী হবে। তারা তাতে সর্বদা থাকবে।’ (সুরা মুমিনুন: ৮-১১)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, ভাইরাল সেই তরুণী গ্রেপ্তার

বিসিএসে রিপিট ক্যাডারে নিয়োগের পথ বন্ধ

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে অনৈক্যের প্রচেষ্টার জন্য কমিশনকে ধন্যবাদ: সালাহউদ্দিন

প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন আসিফ নজরুল: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

শিক্ষার্থীদের অর্থ আত্মসাৎ: বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালতে মারধর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত