ইসলাম ডেস্ক
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। ছিলেন দয়া ও ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক। জাতি, ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে সবার জন্য ছিল তাঁর বুকভরা দরদ আর ভালোবাসা। তাঁর চরিত্রের অতি বিস্ময়কর একটি দিক ছিল, সবার সঙ্গে তিনি ভালো ব্যবহার করতেন। সুন্দর আচরণ করতেন। বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াতেন।
দুঃখ ও কষ্টের কথা যে কেউ তাঁর কাছে প্রাণ খুলে বলতে পারত। তিনি শুনতেন মানুষের দুর্দিন ও দুঃসময়ের কথা। পাশে দাঁড়াতেন একান্ত আপন মানুষ হয়ে। কেননা তিনি হলেন রহমাতাল্লিল আলামিন এবং সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্রের অধিকারী। তাঁর সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্র সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহান চরিত্রের ওপর অধিষ্ঠিত।’ (সুরা কলম: ৪)
আল্লাহ তাআলা মহানবী (সা.)-কে এমন মহৎ স্বভাব-প্রকৃতি ও শ্রেষ্ঠ গুণাবলি দান করেন, যার মাধ্যমে পৃথিবীর সকল মানুষ থেকে তিনি হয়ে ওঠেন সম্পূর্ণ ভিন্ন, অনন্য ও অদ্বিতীয়। একটি জাতির যাবতীয় নেককাজে সর্বোত্তম আদর্শ। ছোট-বড় এবং মুমিন-কাফির তথা সকল মানুষের সঙ্গে সদাচার ও উত্তম ব্যবহারে অপূর্ব দৃষ্টান্ত।
নবীজি (সা.) মজলুমকে সাহায্য করতেন, অসহায়ের পাশে দাঁড়াতেন, নির্বোধের আচরণে ধৈর্যের পরিচয় দিতেন, মন্দকে ভালো দ্বারা প্রতিহত করতেন এবং সহাস্যবদনে সাক্ষাৎ করতেন। তিনি ছিলেন সদা হাসিমুখ ও হাস্যোজ্জ্বল, মহানুভব ও উদারহৃদয়।
মহানবী (সা.)-এর নাতি হজরত হাসান (রা.) বলেন, আমি নবীজি (সা.)-এর সাথিদের সঙ্গে তাঁর আচরণ সম্পর্কে আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করলাম, উত্তরে তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) হাস্যোজ্জ্বল চেহারাসম্পন্ন, অমায়িক চরিত্রের অধিকারী ও বিনয়ী ছিলেন। কঠোর ছিলেন না। তাঁর কাছে আগত ব্যক্তি নিরাশ ও হতাশ হতো না। তিনি নিজের মধ্য থেকে তিনটি জিনিস পরিত্যাগ করেছিলেন—এক. রিয়া বা আত্মপ্রকাশ। দুই. অতিরঞ্জন। তিন. অনর্থক কার্যকলাপ। আর মানুষের জন্য তিনি তিনটি জিনিসকে পরিত্যাগ করেন—এক. তিনি কাউকে নিন্দা করতেন না। দুই. কাউকে দোষারোপ করতেন না। তিন. সওয়াবের প্রত্যাশা ব্যতীত কোনো কথাই বলতেন না।
যখন নবীজি (সা.) কথা বলতেন, শ্রবণকারীরা এমনভাবে কান পেতে শুনত, যেন তাদের মাথায় পাখি বসে আছে। অতঃপর যখন তিনি কথা শেষ করতেন, তখন তারা কথা বলত। তারা তাঁর সামনে কখনো ঝগড়া বা কথা-কাটাকাটি করত না। তাঁর নিকট কেউ কথা বলা আরম্ভ করলে তারা তার কথা শেষ হওয়া পর্যন্ত চুপ থাকত। তাঁর উপস্থিতিতে তাদেরই কথা বলার অধিকার থাকত, যারা প্রথম কথা বলা শুরু করত। লোকেরা যাতে হাসে তিনিও তাতে হাসতেন। মানুষ যাতে আশ্চর্য হয়, তিনিও তাতে আশ্চর্য হতেন এবং বলতেন—যখন তোমরা কোনো অভাবীকে তার প্রয়োজনীয় কিছু প্রার্থনা করতে দেখো, তার প্রার্থনায় তাকে সাহায্য করো। তিনি মাত্রাতিরিক্ত প্রশংসা পছন্দ করতেন না। কারও কথা বলার সময় তার কথার মাঝে বাধা দিতেন না। তবে সীমা অতিক্রম করলে তাকে হয়তো আদেশ বা নিষেধ করতেন। (শামায়েলে তিরমিজি: ২৬৯)
নবীজির (সা.) মহৎ আচরণ দেখে শত্রুর হৃদয়ে সহজেই উদ্ভাসিত হতো ইমানের আলো, মুখে উচ্চারিত হতো সত্যের সুমহান কালিমা।
মানুষের জন্মলগ্ন থেকে শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য, যৌবন ও বার্ধক্য তথা জীবনের সকল পর্ব ও পর্যায়ের করণীয় ও বর্জনীয় নিখুঁতভাবে চিত্রিত হয়েছে তাঁর বাণী ও কর্মে, আদর্শ ও চরিত্রে। তাঁর নিখুঁত জীবন ও জীবনাদর্শকে পশ্চাতে রেখে মুসলমানদের ইহ ও পরকালীন কামিয়াবি কিছুতেই সম্ভব নয়।
মুসলিম সমাজের ক্রমবর্ধমান চারিত্রিক অবক্ষয়, পারিবারিক ও সামাজিক জীর্ণতা দূর করতে তাঁর আদর্শের বিকল্প অন্য কিছু নেই। ধ্বংসের পথে ধাবমান মুসলিম সমাজকে উদ্ধার করতে হলে তাঁর আদর্শকে আঁকড়ে ধরতে হবে। তাঁর আদর্শেই মুক্তি মিলবে অন্ধকারাচ্ছন্ন গোটা সমাজের।
লেখক: মুফতি ইবরাহীম আল খলীল, সহকারী শিক্ষাসচিব, মাদরাসা আশরাফুল মাদারিস, তেজগাঁও, ঢাকা
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। ছিলেন দয়া ও ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক। জাতি, ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে সবার জন্য ছিল তাঁর বুকভরা দরদ আর ভালোবাসা। তাঁর চরিত্রের অতি বিস্ময়কর একটি দিক ছিল, সবার সঙ্গে তিনি ভালো ব্যবহার করতেন। সুন্দর আচরণ করতেন। বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াতেন।
দুঃখ ও কষ্টের কথা যে কেউ তাঁর কাছে প্রাণ খুলে বলতে পারত। তিনি শুনতেন মানুষের দুর্দিন ও দুঃসময়ের কথা। পাশে দাঁড়াতেন একান্ত আপন মানুষ হয়ে। কেননা তিনি হলেন রহমাতাল্লিল আলামিন এবং সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্রের অধিকারী। তাঁর সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্র সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহান চরিত্রের ওপর অধিষ্ঠিত।’ (সুরা কলম: ৪)
আল্লাহ তাআলা মহানবী (সা.)-কে এমন মহৎ স্বভাব-প্রকৃতি ও শ্রেষ্ঠ গুণাবলি দান করেন, যার মাধ্যমে পৃথিবীর সকল মানুষ থেকে তিনি হয়ে ওঠেন সম্পূর্ণ ভিন্ন, অনন্য ও অদ্বিতীয়। একটি জাতির যাবতীয় নেককাজে সর্বোত্তম আদর্শ। ছোট-বড় এবং মুমিন-কাফির তথা সকল মানুষের সঙ্গে সদাচার ও উত্তম ব্যবহারে অপূর্ব দৃষ্টান্ত।
নবীজি (সা.) মজলুমকে সাহায্য করতেন, অসহায়ের পাশে দাঁড়াতেন, নির্বোধের আচরণে ধৈর্যের পরিচয় দিতেন, মন্দকে ভালো দ্বারা প্রতিহত করতেন এবং সহাস্যবদনে সাক্ষাৎ করতেন। তিনি ছিলেন সদা হাসিমুখ ও হাস্যোজ্জ্বল, মহানুভব ও উদারহৃদয়।
মহানবী (সা.)-এর নাতি হজরত হাসান (রা.) বলেন, আমি নবীজি (সা.)-এর সাথিদের সঙ্গে তাঁর আচরণ সম্পর্কে আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করলাম, উত্তরে তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) হাস্যোজ্জ্বল চেহারাসম্পন্ন, অমায়িক চরিত্রের অধিকারী ও বিনয়ী ছিলেন। কঠোর ছিলেন না। তাঁর কাছে আগত ব্যক্তি নিরাশ ও হতাশ হতো না। তিনি নিজের মধ্য থেকে তিনটি জিনিস পরিত্যাগ করেছিলেন—এক. রিয়া বা আত্মপ্রকাশ। দুই. অতিরঞ্জন। তিন. অনর্থক কার্যকলাপ। আর মানুষের জন্য তিনি তিনটি জিনিসকে পরিত্যাগ করেন—এক. তিনি কাউকে নিন্দা করতেন না। দুই. কাউকে দোষারোপ করতেন না। তিন. সওয়াবের প্রত্যাশা ব্যতীত কোনো কথাই বলতেন না।
যখন নবীজি (সা.) কথা বলতেন, শ্রবণকারীরা এমনভাবে কান পেতে শুনত, যেন তাদের মাথায় পাখি বসে আছে। অতঃপর যখন তিনি কথা শেষ করতেন, তখন তারা কথা বলত। তারা তাঁর সামনে কখনো ঝগড়া বা কথা-কাটাকাটি করত না। তাঁর নিকট কেউ কথা বলা আরম্ভ করলে তারা তার কথা শেষ হওয়া পর্যন্ত চুপ থাকত। তাঁর উপস্থিতিতে তাদেরই কথা বলার অধিকার থাকত, যারা প্রথম কথা বলা শুরু করত। লোকেরা যাতে হাসে তিনিও তাতে হাসতেন। মানুষ যাতে আশ্চর্য হয়, তিনিও তাতে আশ্চর্য হতেন এবং বলতেন—যখন তোমরা কোনো অভাবীকে তার প্রয়োজনীয় কিছু প্রার্থনা করতে দেখো, তার প্রার্থনায় তাকে সাহায্য করো। তিনি মাত্রাতিরিক্ত প্রশংসা পছন্দ করতেন না। কারও কথা বলার সময় তার কথার মাঝে বাধা দিতেন না। তবে সীমা অতিক্রম করলে তাকে হয়তো আদেশ বা নিষেধ করতেন। (শামায়েলে তিরমিজি: ২৬৯)
নবীজির (সা.) মহৎ আচরণ দেখে শত্রুর হৃদয়ে সহজেই উদ্ভাসিত হতো ইমানের আলো, মুখে উচ্চারিত হতো সত্যের সুমহান কালিমা।
মানুষের জন্মলগ্ন থেকে শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য, যৌবন ও বার্ধক্য তথা জীবনের সকল পর্ব ও পর্যায়ের করণীয় ও বর্জনীয় নিখুঁতভাবে চিত্রিত হয়েছে তাঁর বাণী ও কর্মে, আদর্শ ও চরিত্রে। তাঁর নিখুঁত জীবন ও জীবনাদর্শকে পশ্চাতে রেখে মুসলমানদের ইহ ও পরকালীন কামিয়াবি কিছুতেই সম্ভব নয়।
মুসলিম সমাজের ক্রমবর্ধমান চারিত্রিক অবক্ষয়, পারিবারিক ও সামাজিক জীর্ণতা দূর করতে তাঁর আদর্শের বিকল্প অন্য কিছু নেই। ধ্বংসের পথে ধাবমান মুসলিম সমাজকে উদ্ধার করতে হলে তাঁর আদর্শকে আঁকড়ে ধরতে হবে। তাঁর আদর্শেই মুক্তি মিলবে অন্ধকারাচ্ছন্ন গোটা সমাজের।
লেখক: মুফতি ইবরাহীম আল খলীল, সহকারী শিক্ষাসচিব, মাদরাসা আশরাফুল মাদারিস, তেজগাঁও, ঢাকা
ইসলাম ডেস্ক
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। ছিলেন দয়া ও ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক। জাতি, ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে সবার জন্য ছিল তাঁর বুকভরা দরদ আর ভালোবাসা। তাঁর চরিত্রের অতি বিস্ময়কর একটি দিক ছিল, সবার সঙ্গে তিনি ভালো ব্যবহার করতেন। সুন্দর আচরণ করতেন। বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াতেন।
দুঃখ ও কষ্টের কথা যে কেউ তাঁর কাছে প্রাণ খুলে বলতে পারত। তিনি শুনতেন মানুষের দুর্দিন ও দুঃসময়ের কথা। পাশে দাঁড়াতেন একান্ত আপন মানুষ হয়ে। কেননা তিনি হলেন রহমাতাল্লিল আলামিন এবং সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্রের অধিকারী। তাঁর সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্র সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহান চরিত্রের ওপর অধিষ্ঠিত।’ (সুরা কলম: ৪)
আল্লাহ তাআলা মহানবী (সা.)-কে এমন মহৎ স্বভাব-প্রকৃতি ও শ্রেষ্ঠ গুণাবলি দান করেন, যার মাধ্যমে পৃথিবীর সকল মানুষ থেকে তিনি হয়ে ওঠেন সম্পূর্ণ ভিন্ন, অনন্য ও অদ্বিতীয়। একটি জাতির যাবতীয় নেককাজে সর্বোত্তম আদর্শ। ছোট-বড় এবং মুমিন-কাফির তথা সকল মানুষের সঙ্গে সদাচার ও উত্তম ব্যবহারে অপূর্ব দৃষ্টান্ত।
নবীজি (সা.) মজলুমকে সাহায্য করতেন, অসহায়ের পাশে দাঁড়াতেন, নির্বোধের আচরণে ধৈর্যের পরিচয় দিতেন, মন্দকে ভালো দ্বারা প্রতিহত করতেন এবং সহাস্যবদনে সাক্ষাৎ করতেন। তিনি ছিলেন সদা হাসিমুখ ও হাস্যোজ্জ্বল, মহানুভব ও উদারহৃদয়।
মহানবী (সা.)-এর নাতি হজরত হাসান (রা.) বলেন, আমি নবীজি (সা.)-এর সাথিদের সঙ্গে তাঁর আচরণ সম্পর্কে আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করলাম, উত্তরে তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) হাস্যোজ্জ্বল চেহারাসম্পন্ন, অমায়িক চরিত্রের অধিকারী ও বিনয়ী ছিলেন। কঠোর ছিলেন না। তাঁর কাছে আগত ব্যক্তি নিরাশ ও হতাশ হতো না। তিনি নিজের মধ্য থেকে তিনটি জিনিস পরিত্যাগ করেছিলেন—এক. রিয়া বা আত্মপ্রকাশ। দুই. অতিরঞ্জন। তিন. অনর্থক কার্যকলাপ। আর মানুষের জন্য তিনি তিনটি জিনিসকে পরিত্যাগ করেন—এক. তিনি কাউকে নিন্দা করতেন না। দুই. কাউকে দোষারোপ করতেন না। তিন. সওয়াবের প্রত্যাশা ব্যতীত কোনো কথাই বলতেন না।
যখন নবীজি (সা.) কথা বলতেন, শ্রবণকারীরা এমনভাবে কান পেতে শুনত, যেন তাদের মাথায় পাখি বসে আছে। অতঃপর যখন তিনি কথা শেষ করতেন, তখন তারা কথা বলত। তারা তাঁর সামনে কখনো ঝগড়া বা কথা-কাটাকাটি করত না। তাঁর নিকট কেউ কথা বলা আরম্ভ করলে তারা তার কথা শেষ হওয়া পর্যন্ত চুপ থাকত। তাঁর উপস্থিতিতে তাদেরই কথা বলার অধিকার থাকত, যারা প্রথম কথা বলা শুরু করত। লোকেরা যাতে হাসে তিনিও তাতে হাসতেন। মানুষ যাতে আশ্চর্য হয়, তিনিও তাতে আশ্চর্য হতেন এবং বলতেন—যখন তোমরা কোনো অভাবীকে তার প্রয়োজনীয় কিছু প্রার্থনা করতে দেখো, তার প্রার্থনায় তাকে সাহায্য করো। তিনি মাত্রাতিরিক্ত প্রশংসা পছন্দ করতেন না। কারও কথা বলার সময় তার কথার মাঝে বাধা দিতেন না। তবে সীমা অতিক্রম করলে তাকে হয়তো আদেশ বা নিষেধ করতেন। (শামায়েলে তিরমিজি: ২৬৯)
নবীজির (সা.) মহৎ আচরণ দেখে শত্রুর হৃদয়ে সহজেই উদ্ভাসিত হতো ইমানের আলো, মুখে উচ্চারিত হতো সত্যের সুমহান কালিমা।
মানুষের জন্মলগ্ন থেকে শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য, যৌবন ও বার্ধক্য তথা জীবনের সকল পর্ব ও পর্যায়ের করণীয় ও বর্জনীয় নিখুঁতভাবে চিত্রিত হয়েছে তাঁর বাণী ও কর্মে, আদর্শ ও চরিত্রে। তাঁর নিখুঁত জীবন ও জীবনাদর্শকে পশ্চাতে রেখে মুসলমানদের ইহ ও পরকালীন কামিয়াবি কিছুতেই সম্ভব নয়।
মুসলিম সমাজের ক্রমবর্ধমান চারিত্রিক অবক্ষয়, পারিবারিক ও সামাজিক জীর্ণতা দূর করতে তাঁর আদর্শের বিকল্প অন্য কিছু নেই। ধ্বংসের পথে ধাবমান মুসলিম সমাজকে উদ্ধার করতে হলে তাঁর আদর্শকে আঁকড়ে ধরতে হবে। তাঁর আদর্শেই মুক্তি মিলবে অন্ধকারাচ্ছন্ন গোটা সমাজের।
লেখক: মুফতি ইবরাহীম আল খলীল, সহকারী শিক্ষাসচিব, মাদরাসা আশরাফুল মাদারিস, তেজগাঁও, ঢাকা
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। ছিলেন দয়া ও ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক। জাতি, ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে সবার জন্য ছিল তাঁর বুকভরা দরদ আর ভালোবাসা। তাঁর চরিত্রের অতি বিস্ময়কর একটি দিক ছিল, সবার সঙ্গে তিনি ভালো ব্যবহার করতেন। সুন্দর আচরণ করতেন। বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াতেন।
দুঃখ ও কষ্টের কথা যে কেউ তাঁর কাছে প্রাণ খুলে বলতে পারত। তিনি শুনতেন মানুষের দুর্দিন ও দুঃসময়ের কথা। পাশে দাঁড়াতেন একান্ত আপন মানুষ হয়ে। কেননা তিনি হলেন রহমাতাল্লিল আলামিন এবং সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্রের অধিকারী। তাঁর সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্র সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি মহান চরিত্রের ওপর অধিষ্ঠিত।’ (সুরা কলম: ৪)
আল্লাহ তাআলা মহানবী (সা.)-কে এমন মহৎ স্বভাব-প্রকৃতি ও শ্রেষ্ঠ গুণাবলি দান করেন, যার মাধ্যমে পৃথিবীর সকল মানুষ থেকে তিনি হয়ে ওঠেন সম্পূর্ণ ভিন্ন, অনন্য ও অদ্বিতীয়। একটি জাতির যাবতীয় নেককাজে সর্বোত্তম আদর্শ। ছোট-বড় এবং মুমিন-কাফির তথা সকল মানুষের সঙ্গে সদাচার ও উত্তম ব্যবহারে অপূর্ব দৃষ্টান্ত।
নবীজি (সা.) মজলুমকে সাহায্য করতেন, অসহায়ের পাশে দাঁড়াতেন, নির্বোধের আচরণে ধৈর্যের পরিচয় দিতেন, মন্দকে ভালো দ্বারা প্রতিহত করতেন এবং সহাস্যবদনে সাক্ষাৎ করতেন। তিনি ছিলেন সদা হাসিমুখ ও হাস্যোজ্জ্বল, মহানুভব ও উদারহৃদয়।
মহানবী (সা.)-এর নাতি হজরত হাসান (রা.) বলেন, আমি নবীজি (সা.)-এর সাথিদের সঙ্গে তাঁর আচরণ সম্পর্কে আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করলাম, উত্তরে তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) হাস্যোজ্জ্বল চেহারাসম্পন্ন, অমায়িক চরিত্রের অধিকারী ও বিনয়ী ছিলেন। কঠোর ছিলেন না। তাঁর কাছে আগত ব্যক্তি নিরাশ ও হতাশ হতো না। তিনি নিজের মধ্য থেকে তিনটি জিনিস পরিত্যাগ করেছিলেন—এক. রিয়া বা আত্মপ্রকাশ। দুই. অতিরঞ্জন। তিন. অনর্থক কার্যকলাপ। আর মানুষের জন্য তিনি তিনটি জিনিসকে পরিত্যাগ করেন—এক. তিনি কাউকে নিন্দা করতেন না। দুই. কাউকে দোষারোপ করতেন না। তিন. সওয়াবের প্রত্যাশা ব্যতীত কোনো কথাই বলতেন না।
যখন নবীজি (সা.) কথা বলতেন, শ্রবণকারীরা এমনভাবে কান পেতে শুনত, যেন তাদের মাথায় পাখি বসে আছে। অতঃপর যখন তিনি কথা শেষ করতেন, তখন তারা কথা বলত। তারা তাঁর সামনে কখনো ঝগড়া বা কথা-কাটাকাটি করত না। তাঁর নিকট কেউ কথা বলা আরম্ভ করলে তারা তার কথা শেষ হওয়া পর্যন্ত চুপ থাকত। তাঁর উপস্থিতিতে তাদেরই কথা বলার অধিকার থাকত, যারা প্রথম কথা বলা শুরু করত। লোকেরা যাতে হাসে তিনিও তাতে হাসতেন। মানুষ যাতে আশ্চর্য হয়, তিনিও তাতে আশ্চর্য হতেন এবং বলতেন—যখন তোমরা কোনো অভাবীকে তার প্রয়োজনীয় কিছু প্রার্থনা করতে দেখো, তার প্রার্থনায় তাকে সাহায্য করো। তিনি মাত্রাতিরিক্ত প্রশংসা পছন্দ করতেন না। কারও কথা বলার সময় তার কথার মাঝে বাধা দিতেন না। তবে সীমা অতিক্রম করলে তাকে হয়তো আদেশ বা নিষেধ করতেন। (শামায়েলে তিরমিজি: ২৬৯)
নবীজির (সা.) মহৎ আচরণ দেখে শত্রুর হৃদয়ে সহজেই উদ্ভাসিত হতো ইমানের আলো, মুখে উচ্চারিত হতো সত্যের সুমহান কালিমা।
মানুষের জন্মলগ্ন থেকে শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য, যৌবন ও বার্ধক্য তথা জীবনের সকল পর্ব ও পর্যায়ের করণীয় ও বর্জনীয় নিখুঁতভাবে চিত্রিত হয়েছে তাঁর বাণী ও কর্মে, আদর্শ ও চরিত্রে। তাঁর নিখুঁত জীবন ও জীবনাদর্শকে পশ্চাতে রেখে মুসলমানদের ইহ ও পরকালীন কামিয়াবি কিছুতেই সম্ভব নয়।
মুসলিম সমাজের ক্রমবর্ধমান চারিত্রিক অবক্ষয়, পারিবারিক ও সামাজিক জীর্ণতা দূর করতে তাঁর আদর্শের বিকল্প অন্য কিছু নেই। ধ্বংসের পথে ধাবমান মুসলিম সমাজকে উদ্ধার করতে হলে তাঁর আদর্শকে আঁকড়ে ধরতে হবে। তাঁর আদর্শেই মুক্তি মিলবে অন্ধকারাচ্ছন্ন গোটা সমাজের।
লেখক: মুফতি ইবরাহীম আল খলীল, সহকারী শিক্ষাসচিব, মাদরাসা আশরাফুল মাদারিস, তেজগাঁও, ঢাকা
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১২ ঘণ্টা আগেঅগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা।
২১ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৫ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৯ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫০ মিনিট | ০৫: ২৬ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৮ মিনিট | ০৬: ৪২ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৩ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৫ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৯ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫০ মিনিট | ০৫: ২৬ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৮ মিনিট | ০৬: ৪২ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৩ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। ছিলেন দয়া ও ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক। জাতি, ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে সবার জন্য ছিল তাঁর বুকভরা দরদ আর ভালোবাসা। তাঁর চরিত্রের অতি বিস্ময়কর একটি দিক ছিল, সবার সঙ্গে তিনি ভালো ব্যবহার করতেন। সুন্দর আচরণ করতেন। বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াতেন।
২২ দিন আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১২ ঘণ্টা আগেঅগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা।
২১ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেরায়হান আল ইমরান
যশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
আবু হানিফা (রহ.)-এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
তাঁর পুরো নাম, নুমান বিন সাবেত বিন মারজুবান আল-কুফি। তবে ‘আবু হানিফা’ উপাধিতেই বেশি পরিচিত। বর্ণনা অনুযায়ী, তৎকালীন কুফায় ‘হানিফা’ শব্দটি দোয়াত বা কলমের কালি বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। যেহেতু তিনি অধিকাংশ সময় গবেষণা ও লেখালেখিতে ব্যস্ত থাকতেন, তাই তিনি ‘আবু হানিফা’ উপাধি লাভ করেন।
তিনি ৮০ হিজরি বর্তমান ইরাকের কুফায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি তীক্ষ্ণ মেধাবী ও অধ্যবসায়ী ছিলেন। মেধা ও সাধনার সমন্বয়েই একসময় তিনি নিজেকে সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ, মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে গড়ে তোলেন।
হানাফি মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা
তিনি ইসলামি ফিকহ তথা আইনশাস্ত্রের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। ফিকহ গবেষণায় তাঁর গভীর যুক্তি, তীক্ষ্ণ চিন্তাশক্তি ও উপলব্ধিই একদিন তাঁকে পরিণত করে হানাফি মাজহাবের স্থপতিতে, যা আজও বিশ্বের বহু দেশে অনুসৃত।
তিনি একজন তাবেয়ি
তিনি ছিলেন একজন তাবেয়ি, যা তাঁর মর্যাদাকে ফুটিয়ে তোলে। তিনি কয়েকজন উল্লেখযোগ্য সাহাবির সাক্ষাৎ পেয়ে ধন্য হোন। যাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করেন, তাঁরা হলেন হজরত আনাস বিন মালিক, আবদুল্লাহ বিন হারিস, আমর বিন হুরাইস, জাবির বিন আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ বিন আবি আওফা, সাহল বিন সাদ, আবু তোফাইল, ওয়াসেলা বিন আসকা, আবদুল্লাহ বিন উনাইস, মাকিল বিন ইয়াসার, আয়েশা বিনতে আজরাদ (রা.)।
বিচারপতি পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি
তখন ক্ষমতার মসনদে ছিলেন উমাইয়া খলিফা ইয়াজিদ বিন হুবায়রা। তিনি একদিন সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ ইমাম আবু হানিফা (রা.)-কে ডেকে পাঠান রাজপ্রসাদে। সেখানে এলে তিনি তাঁকে কুফার বিচারপতি (কাজি) হওয়ার প্রস্তাব দেন।
এ প্রস্তাব বাহ্যিকভাবে যদিও সম্মানের; কিন্তু এর পেছনে ছিল খলিফার চতুর রাজনীতি। খলিফা মনে করতেন—তিনি বিচারপতি হলে খিলাফতের ভিত মজবুত হবে, খলিফার বৈধতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
কিন্তু এ দায়িত্ব যে এতটা মসৃণ নয়; তা আবু হানিফা (রহ.) আগে থেকেই বুঝতে সক্ষম হোন। তাই তিনি স্পষ্টভাবে অস্বীকৃতি জানান।
ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর এই স্পষ্ট অস্বীকৃতিতে থমকে যায় পুরো রাজদরবার। কিন্তু শাসকের ক্রোধ থামেনি। তিনি ইমামকে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেন।
শাসকের আদেশ লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। তাই শুরু হয় মর্মান্তিক শাস্তি। প্রতিদিন ১০টি করে মোট ১০০টি বেত্রাঘাত করা হয় তাঁকে। তবু তিনি ন্যায়ের পথ থেকে একচুলও নড়েননি।
আবারও প্রস্তাব, আবারও প্রত্যাখ্যান
সময় গড়ায়। ক্ষমতায় আসেন আব্বাসি খলিফা আবু জাফর আল-মানসুর। এবার তিনিও আবু হানিফা (রহ.)-কে একই পদের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আবু হানিফা (রহ.) আগের মতোই দৃঢ়ভাবে নাকচ করেন এবং খলিফার রোষানলে পড়েন। খলিফা তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারের জীবদ্দশায় খলিফা একদিন আবু হানিফা (রহ.)-কে ডেকে নেন এবং জিজ্ঞেস করেন, এ দায়িত্ব গ্রহণে কেন আপনি অনিচ্ছুক? তিনি জবাব দেন—আমি নিজেকে এ দায়িত্বের যোগ্য মনে করি না। তাঁর এ কথায় খলিফা ক্ষুব্ধ হন। বললেন, তুমি মিথ্যা বলছ! আবু হানিফা (রহ.) দৃঢ়ভাবে জবাব দেন, যদি আমি সত্য বলি, তবে আমি অযোগ্য; আর যদি মিথ্যা বলি, তবে আপনি একজন মিথ্যাবাদীকে বিচারপতি বানাতে চাচ্ছেন। খলিফা তাঁর এমন যুক্তিসংগত কথায় খুব বেশি ক্ষিপ্ত হন এবং তাঁকে পুনরায় কারাগারে বন্দী ও বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেন।
খলিফার কথামতো বেত্রাঘাতসহ নানা নিপীড়ন শুরু হয় তাঁর ওপর। ফলে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। অতঃপর ১৫০ হিজরিতে, বন্দিদশায়ই আপন প্রভুর সান্নিধ্যে গমন করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা
সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে, তবুও সত্য বলাই শ্রেয়। সম্মান বা পদ নয়, একজন মানুষের আসল পরিচয়—তার নীতি ও আদর্শ। ক্ষমতার মোহ সবাইকে পায় না; বরং কেউ হন ব্যতিক্রম, যিনি যুগে যুগে স্মরণীয় হয়ে থাকেন।
তথ্যসূত্র: উকুদুল জুমান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান ও আল-খাইরাতুল হিসান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
যশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
আবু হানিফা (রহ.)-এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
তাঁর পুরো নাম, নুমান বিন সাবেত বিন মারজুবান আল-কুফি। তবে ‘আবু হানিফা’ উপাধিতেই বেশি পরিচিত। বর্ণনা অনুযায়ী, তৎকালীন কুফায় ‘হানিফা’ শব্দটি দোয়াত বা কলমের কালি বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। যেহেতু তিনি অধিকাংশ সময় গবেষণা ও লেখালেখিতে ব্যস্ত থাকতেন, তাই তিনি ‘আবু হানিফা’ উপাধি লাভ করেন।
তিনি ৮০ হিজরি বর্তমান ইরাকের কুফায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি তীক্ষ্ণ মেধাবী ও অধ্যবসায়ী ছিলেন। মেধা ও সাধনার সমন্বয়েই একসময় তিনি নিজেকে সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ, মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে গড়ে তোলেন।
হানাফি মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা
তিনি ইসলামি ফিকহ তথা আইনশাস্ত্রের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। ফিকহ গবেষণায় তাঁর গভীর যুক্তি, তীক্ষ্ণ চিন্তাশক্তি ও উপলব্ধিই একদিন তাঁকে পরিণত করে হানাফি মাজহাবের স্থপতিতে, যা আজও বিশ্বের বহু দেশে অনুসৃত।
তিনি একজন তাবেয়ি
তিনি ছিলেন একজন তাবেয়ি, যা তাঁর মর্যাদাকে ফুটিয়ে তোলে। তিনি কয়েকজন উল্লেখযোগ্য সাহাবির সাক্ষাৎ পেয়ে ধন্য হোন। যাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করেন, তাঁরা হলেন হজরত আনাস বিন মালিক, আবদুল্লাহ বিন হারিস, আমর বিন হুরাইস, জাবির বিন আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ বিন আবি আওফা, সাহল বিন সাদ, আবু তোফাইল, ওয়াসেলা বিন আসকা, আবদুল্লাহ বিন উনাইস, মাকিল বিন ইয়াসার, আয়েশা বিনতে আজরাদ (রা.)।
বিচারপতি পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি
তখন ক্ষমতার মসনদে ছিলেন উমাইয়া খলিফা ইয়াজিদ বিন হুবায়রা। তিনি একদিন সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ ইমাম আবু হানিফা (রা.)-কে ডেকে পাঠান রাজপ্রসাদে। সেখানে এলে তিনি তাঁকে কুফার বিচারপতি (কাজি) হওয়ার প্রস্তাব দেন।
এ প্রস্তাব বাহ্যিকভাবে যদিও সম্মানের; কিন্তু এর পেছনে ছিল খলিফার চতুর রাজনীতি। খলিফা মনে করতেন—তিনি বিচারপতি হলে খিলাফতের ভিত মজবুত হবে, খলিফার বৈধতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
কিন্তু এ দায়িত্ব যে এতটা মসৃণ নয়; তা আবু হানিফা (রহ.) আগে থেকেই বুঝতে সক্ষম হোন। তাই তিনি স্পষ্টভাবে অস্বীকৃতি জানান।
ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর এই স্পষ্ট অস্বীকৃতিতে থমকে যায় পুরো রাজদরবার। কিন্তু শাসকের ক্রোধ থামেনি। তিনি ইমামকে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেন।
শাসকের আদেশ লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। তাই শুরু হয় মর্মান্তিক শাস্তি। প্রতিদিন ১০টি করে মোট ১০০টি বেত্রাঘাত করা হয় তাঁকে। তবু তিনি ন্যায়ের পথ থেকে একচুলও নড়েননি।
আবারও প্রস্তাব, আবারও প্রত্যাখ্যান
সময় গড়ায়। ক্ষমতায় আসেন আব্বাসি খলিফা আবু জাফর আল-মানসুর। এবার তিনিও আবু হানিফা (রহ.)-কে একই পদের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আবু হানিফা (রহ.) আগের মতোই দৃঢ়ভাবে নাকচ করেন এবং খলিফার রোষানলে পড়েন। খলিফা তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারের জীবদ্দশায় খলিফা একদিন আবু হানিফা (রহ.)-কে ডেকে নেন এবং জিজ্ঞেস করেন, এ দায়িত্ব গ্রহণে কেন আপনি অনিচ্ছুক? তিনি জবাব দেন—আমি নিজেকে এ দায়িত্বের যোগ্য মনে করি না। তাঁর এ কথায় খলিফা ক্ষুব্ধ হন। বললেন, তুমি মিথ্যা বলছ! আবু হানিফা (রহ.) দৃঢ়ভাবে জবাব দেন, যদি আমি সত্য বলি, তবে আমি অযোগ্য; আর যদি মিথ্যা বলি, তবে আপনি একজন মিথ্যাবাদীকে বিচারপতি বানাতে চাচ্ছেন। খলিফা তাঁর এমন যুক্তিসংগত কথায় খুব বেশি ক্ষিপ্ত হন এবং তাঁকে পুনরায় কারাগারে বন্দী ও বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেন।
খলিফার কথামতো বেত্রাঘাতসহ নানা নিপীড়ন শুরু হয় তাঁর ওপর। ফলে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। অতঃপর ১৫০ হিজরিতে, বন্দিদশায়ই আপন প্রভুর সান্নিধ্যে গমন করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা
সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে, তবুও সত্য বলাই শ্রেয়। সম্মান বা পদ নয়, একজন মানুষের আসল পরিচয়—তার নীতি ও আদর্শ। ক্ষমতার মোহ সবাইকে পায় না; বরং কেউ হন ব্যতিক্রম, যিনি যুগে যুগে স্মরণীয় হয়ে থাকেন।
তথ্যসূত্র: উকুদুল জুমান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান ও আল-খাইরাতুল হিসান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। ছিলেন দয়া ও ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক। জাতি, ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে সবার জন্য ছিল তাঁর বুকভরা দরদ আর ভালোবাসা। তাঁর চরিত্রের অতি বিস্ময়কর একটি দিক ছিল, সবার সঙ্গে তিনি ভালো ব্যবহার করতেন। সুন্দর আচরণ করতেন। বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াতেন।
২২ দিন আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগেঅগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা।
২১ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেশাব্বির আহমদ
অগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা। এই আমলগুলো কেবল মানসিক শক্তি জোগায় না, বরং আল্লাহর রহমতে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে।
১. উচ্চ স্বরে তাকবির দেওয়া: অগ্নিকাণ্ড দেখলে সর্বাগ্রে যে আমলটি রয়েছে, তা হলো তাকবির দেওয়া। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা যখন কোথাও আগুন (লাগতে) দেখো, তখন (উচ্চ স্বরে) তাকবির দাও।’ (তাবরানি: ১ / ৩০৭)
২. কোরআনের আয়াত পাঠ: বিপদের সময় কোরআনের সাহায্য প্রার্থনা করা মুমিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। পবিত্র কোরআনে এমন একটি আয়াত রয়েছে, যা আল্লাহর নবী ইবরাহিম (আ.)-এর জন্য আগুনের ক্রিয়া নিস্তেজ করে দিয়েছিল। অগ্নিকাণ্ডের সময় এই আয়াতটি পাঠ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ: ‘ইয়া না-রু কু-নি বারদাও ওয়া সালামান আলা ইবরাহিম।’ অর্থ: ‘হে আগুন, তুমি ইবরাহিমের জন্য শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও।’ (সুরা আম্বিয়া: ৬৯)
৩. আল্লাহর কাছে সাহায্য ও আজান: তাকবির এবং আয়াত পাঠের পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডের সময় আগুন নেভানোর নিয়তে উচ্চ স্বরে আজান দেওয়াও অনেক আলেম উত্তম বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ আজানের ধ্বনিও শয়তানকে বিতাড়িত করে। এ ছাড়া, সব ধরনের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) ও তওবা করা জরুরি।
আগুন মানুষকে মুহূর্তেই নিঃস্ব করে দিতে পারে, কিন্তু মুমিন কখনো নিরাশ হয় না। কারণ সে জানে, সব বিপদের নিয়ন্ত্রণ আল্লাহর হাতেই। অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়ংকর দুর্যোগেও একজন ইমানদার আল্লাহর স্মরণে আশ্রয় নেয়, তাকবির ও কোরআনের আয়াত পাঠে মন স্থির রাখে এবং দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য কামনা করে। পার্থিব চেষ্টা ও আধ্যাত্মিক আমলের এই সমন্বয়ই হলো প্রকৃত ইমানদারের পথ। কেননা, আগুন নেভানোর যন্ত্র যেমন বাহ্যিক আগুন নেভায়, তেমনি আল্লাহর স্মরণ অন্তরের ভয় ও অস্থিরতা নিভিয়ে দেয়।
অগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা। এই আমলগুলো কেবল মানসিক শক্তি জোগায় না, বরং আল্লাহর রহমতে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে।
১. উচ্চ স্বরে তাকবির দেওয়া: অগ্নিকাণ্ড দেখলে সর্বাগ্রে যে আমলটি রয়েছে, তা হলো তাকবির দেওয়া। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা যখন কোথাও আগুন (লাগতে) দেখো, তখন (উচ্চ স্বরে) তাকবির দাও।’ (তাবরানি: ১ / ৩০৭)
২. কোরআনের আয়াত পাঠ: বিপদের সময় কোরআনের সাহায্য প্রার্থনা করা মুমিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। পবিত্র কোরআনে এমন একটি আয়াত রয়েছে, যা আল্লাহর নবী ইবরাহিম (আ.)-এর জন্য আগুনের ক্রিয়া নিস্তেজ করে দিয়েছিল। অগ্নিকাণ্ডের সময় এই আয়াতটি পাঠ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ: ‘ইয়া না-রু কু-নি বারদাও ওয়া সালামান আলা ইবরাহিম।’ অর্থ: ‘হে আগুন, তুমি ইবরাহিমের জন্য শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও।’ (সুরা আম্বিয়া: ৬৯)
৩. আল্লাহর কাছে সাহায্য ও আজান: তাকবির এবং আয়াত পাঠের পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডের সময় আগুন নেভানোর নিয়তে উচ্চ স্বরে আজান দেওয়াও অনেক আলেম উত্তম বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ আজানের ধ্বনিও শয়তানকে বিতাড়িত করে। এ ছাড়া, সব ধরনের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) ও তওবা করা জরুরি।
আগুন মানুষকে মুহূর্তেই নিঃস্ব করে দিতে পারে, কিন্তু মুমিন কখনো নিরাশ হয় না। কারণ সে জানে, সব বিপদের নিয়ন্ত্রণ আল্লাহর হাতেই। অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়ংকর দুর্যোগেও একজন ইমানদার আল্লাহর স্মরণে আশ্রয় নেয়, তাকবির ও কোরআনের আয়াত পাঠে মন স্থির রাখে এবং দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য কামনা করে। পার্থিব চেষ্টা ও আধ্যাত্মিক আমলের এই সমন্বয়ই হলো প্রকৃত ইমানদারের পথ। কেননা, আগুন নেভানোর যন্ত্র যেমন বাহ্যিক আগুন নেভায়, তেমনি আল্লাহর স্মরণ অন্তরের ভয় ও অস্থিরতা নিভিয়ে দেয়।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। ছিলেন দয়া ও ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক। জাতি, ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে সবার জন্য ছিল তাঁর বুকভরা দরদ আর ভালোবাসা। তাঁর চরিত্রের অতি বিস্ময়কর একটি দিক ছিল, সবার সঙ্গে তিনি ভালো ব্যবহার করতেন। সুন্দর আচরণ করতেন। বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াতেন।
২২ দিন আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১২ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৪ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪১ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪২ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৫০ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫১ মিনিট | ০৫: ২৭ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৯ মিনিট | ০৬: ৪৩ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৪ মিনিট | ০৪: ৪১ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৪ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪১ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪২ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৫০ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫১ মিনিট | ০৫: ২৭ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৯ মিনিট | ০৬: ৪৩ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৪ মিনিট | ০৪: ৪১ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। ছিলেন দয়া ও ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক। জাতি, ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে সবার জন্য ছিল তাঁর বুকভরা দরদ আর ভালোবাসা। তাঁর চরিত্রের অতি বিস্ময়কর একটি দিক ছিল, সবার সঙ্গে তিনি ভালো ব্যবহার করতেন। সুন্দর আচরণ করতেন। বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াতেন।
২২ দিন আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৪ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১২ ঘণ্টা আগেঅগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা।
২১ ঘণ্টা আগে