আসআদ শাহীন
তওবা একটি শক্তিশালী আশ্রয়স্থল, যেখানে পাপী ব্যক্তি আশ্রয় নিতে পারে। সে যদি নিজের অপরাধ স্বীকার করে, অন্তরের গভীর থেকে অনুতপ্ত হয় এবং ভবিষ্যতে আর গুনাহ না করার দৃঢ় সংকল্প করে, তবে আল্লাহ তার পাপসমূহ মোচন করেন এবং তার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। এই প্রসঙ্গে নবী করিম (সা.) আমাদের জন্য এক অনন্য গল্প বর্ণনা করেছেন।
হজরত আবু সাঈদ আল খুদরী (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন, বনি ইসরাইলের এমন এক ব্যক্তি ছিলেন, যিনি নিরানব্বই জন মানুষ হত্যা করেছিলেন। এরপর বের হয়ে একজন পাদ্রিকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমার তওবা কবুল হওয়ার আশা আছে কি?’ পাদ্রি বললেন, ‘না।’ তখন তিনি পাদরিকেও হত্যা করলেন। এরপর পুনরায় তিনি অন্যদের জিজ্ঞাসা করতে লাগলেন। তখন এক ব্যক্তি তাঁকে বললেন, ‘তুমি অমুক স্থানে চলে যাও।’ তিনি রওয়ানা হলেন এবং পথিমধ্যে তাঁর মৃত্যু এসে গেল। তিনি বক্ষদেশ দ্বারা সে স্থানটির দিকে ঘুরে গেলেন। মৃত্যুর পর রহমত ও আজাবের ফেরেশতারা তার রুহকে নিয়ে বাদানুবাদে লিপ্ত হলেন। আল্লাহ সামনের ভূমিকে আদেশ করলেন, তুমি মৃত ব্যক্তির নিকটবর্তী হয়ে যাও এবং পেছনের স্থানকে (যেখানে হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল) আদেশ দিলেন, তুমি দূরে সরে যাও। এরপর ফেরেশতাদের উভয় দলকে নির্দেশ দিলেন, তোমরা এখান থেকে উভয় দিকের দূরত্ব পরিমাপ করো। পরিমাপ করা হলে দেখা গেল, মৃত লোকটি সামনের দিকে এক বিঘত বেশি এগিয়ে আছে। কাজেই তাকে ক্ষমা করা হলো। (বুখারি, হাদিস: ৩৪৭০, মুসলিম, হাদিস: ২৭৬৬)
গল্প থেকে শিক্ষা
আল্লাহর করুণার বিশালতা: আল্লাহ তাঁর অপরিসীম দয়ায় অনুতপ্ত বান্দার তওবা কবুল করেন, যত পাপই সে করে থাকুক না কেন। সুতরাং যারা আল্লাহর দয়া থেকে নিরাশ হয়ে পড়ে, তারা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহকে চেনে না, তাঁর অনন্ত করুণা সম্পর্কে অজ্ঞ।
হত্যাকারীর তওবা কবুল হয়: একজন খুনির তওবা যদি খাঁটি হয়, তবে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য। যদিও কিছু আলেম এ বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন, তবে হাদিস স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন। এটি কেবল অতীত জাতিগুলোর জন্য সীমাবদ্ধ নয়, বরং ইসলামের সাধারণ বিধান।
শিরক ব্যতীত সব পাপ ক্ষমার যোগ্য: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের বিশ্বাস হলো, শিরক ব্যতীত সকল পাপ আল্লাহর ইচ্ছায় ক্ষমার যোগ্য। যদি আল্লাহ চান, তিনি অপরাধীকে শাস্তি দেবেন, আর যদি চান, তাকে ক্ষমা করবেন। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সঙ্গে শিরক করে; তবে এর নিচে যেকোনো গুনাহ তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন।’ (সুরা নিসা: ৪৮)
তওবার পথ দেখানো আলেমের দায়িত্ব: একজন আলেমের দায়িত্ব হলো তওবাকারীকে এমন পথনির্দেশ দেওয়া, যা তার ইমানকে সুদৃঢ় করবে এবং তাকে পূর্ববর্তী পাপের জীবন থেকে মুক্তি দেবে। যেমন, ওই আলেম খুনি ব্যক্তিটিকে তার তওবার পথ সুগম করতে নির্দেশ দেন, যাতে সে সৎ ও ধার্মিক লোকদের সমাজে গিয়ে আল্লাহর ইবাদতে মনোনিবেশ করতে পারে।
জান কবজে দুই শ্রেণির ফেরেশতা: আল্লাহ বিশেষ ফেরেশতাদের নিয়োজিত করেছেন যারা মুমিনদের আত্মা কবজ করেন; এরা ‘রহমতের ফেরেশতা’ নামে পরিচিত। আর কাফের ও পাপিষ্ঠদের আত্মা যারা কবজ করেন, তারা ‘আজাবের ফেরেশতা’।
বিচারকের দায়িত্ব ছাড়া শাস্তি প্রয়োগ করা অনুচিত: যে ব্যক্তি বিচারপতি নয়, তার জন্য নিজ দায়িত্বে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া বৈধ নয়। যেমন, এখানে আলেম ব্যক্তিটি স্বীকারোক্তি শোনার পরও খুনিকে বন্দি করেননি বা কোনো বিচার পরিচালনা করেননি; বরং তিনি তাকে তওবা ও সংশোধনের পথ দেখিয়েছেন।
তওবা একটি শক্তিশালী আশ্রয়স্থল, যেখানে পাপী ব্যক্তি আশ্রয় নিতে পারে। সে যদি নিজের অপরাধ স্বীকার করে, অন্তরের গভীর থেকে অনুতপ্ত হয় এবং ভবিষ্যতে আর গুনাহ না করার দৃঢ় সংকল্প করে, তবে আল্লাহ তার পাপসমূহ মোচন করেন এবং তার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। এই প্রসঙ্গে নবী করিম (সা.) আমাদের জন্য এক অনন্য গল্প বর্ণনা করেছেন।
হজরত আবু সাঈদ আল খুদরী (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন, বনি ইসরাইলের এমন এক ব্যক্তি ছিলেন, যিনি নিরানব্বই জন মানুষ হত্যা করেছিলেন। এরপর বের হয়ে একজন পাদ্রিকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমার তওবা কবুল হওয়ার আশা আছে কি?’ পাদ্রি বললেন, ‘না।’ তখন তিনি পাদরিকেও হত্যা করলেন। এরপর পুনরায় তিনি অন্যদের জিজ্ঞাসা করতে লাগলেন। তখন এক ব্যক্তি তাঁকে বললেন, ‘তুমি অমুক স্থানে চলে যাও।’ তিনি রওয়ানা হলেন এবং পথিমধ্যে তাঁর মৃত্যু এসে গেল। তিনি বক্ষদেশ দ্বারা সে স্থানটির দিকে ঘুরে গেলেন। মৃত্যুর পর রহমত ও আজাবের ফেরেশতারা তার রুহকে নিয়ে বাদানুবাদে লিপ্ত হলেন। আল্লাহ সামনের ভূমিকে আদেশ করলেন, তুমি মৃত ব্যক্তির নিকটবর্তী হয়ে যাও এবং পেছনের স্থানকে (যেখানে হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল) আদেশ দিলেন, তুমি দূরে সরে যাও। এরপর ফেরেশতাদের উভয় দলকে নির্দেশ দিলেন, তোমরা এখান থেকে উভয় দিকের দূরত্ব পরিমাপ করো। পরিমাপ করা হলে দেখা গেল, মৃত লোকটি সামনের দিকে এক বিঘত বেশি এগিয়ে আছে। কাজেই তাকে ক্ষমা করা হলো। (বুখারি, হাদিস: ৩৪৭০, মুসলিম, হাদিস: ২৭৬৬)
গল্প থেকে শিক্ষা
আল্লাহর করুণার বিশালতা: আল্লাহ তাঁর অপরিসীম দয়ায় অনুতপ্ত বান্দার তওবা কবুল করেন, যত পাপই সে করে থাকুক না কেন। সুতরাং যারা আল্লাহর দয়া থেকে নিরাশ হয়ে পড়ে, তারা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহকে চেনে না, তাঁর অনন্ত করুণা সম্পর্কে অজ্ঞ।
হত্যাকারীর তওবা কবুল হয়: একজন খুনির তওবা যদি খাঁটি হয়, তবে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য। যদিও কিছু আলেম এ বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন, তবে হাদিস স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন। এটি কেবল অতীত জাতিগুলোর জন্য সীমাবদ্ধ নয়, বরং ইসলামের সাধারণ বিধান।
শিরক ব্যতীত সব পাপ ক্ষমার যোগ্য: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের বিশ্বাস হলো, শিরক ব্যতীত সকল পাপ আল্লাহর ইচ্ছায় ক্ষমার যোগ্য। যদি আল্লাহ চান, তিনি অপরাধীকে শাস্তি দেবেন, আর যদি চান, তাকে ক্ষমা করবেন। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সঙ্গে শিরক করে; তবে এর নিচে যেকোনো গুনাহ তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন।’ (সুরা নিসা: ৪৮)
তওবার পথ দেখানো আলেমের দায়িত্ব: একজন আলেমের দায়িত্ব হলো তওবাকারীকে এমন পথনির্দেশ দেওয়া, যা তার ইমানকে সুদৃঢ় করবে এবং তাকে পূর্ববর্তী পাপের জীবন থেকে মুক্তি দেবে। যেমন, ওই আলেম খুনি ব্যক্তিটিকে তার তওবার পথ সুগম করতে নির্দেশ দেন, যাতে সে সৎ ও ধার্মিক লোকদের সমাজে গিয়ে আল্লাহর ইবাদতে মনোনিবেশ করতে পারে।
জান কবজে দুই শ্রেণির ফেরেশতা: আল্লাহ বিশেষ ফেরেশতাদের নিয়োজিত করেছেন যারা মুমিনদের আত্মা কবজ করেন; এরা ‘রহমতের ফেরেশতা’ নামে পরিচিত। আর কাফের ও পাপিষ্ঠদের আত্মা যারা কবজ করেন, তারা ‘আজাবের ফেরেশতা’।
বিচারকের দায়িত্ব ছাড়া শাস্তি প্রয়োগ করা অনুচিত: যে ব্যক্তি বিচারপতি নয়, তার জন্য নিজ দায়িত্বে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া বৈধ নয়। যেমন, এখানে আলেম ব্যক্তিটি স্বীকারোক্তি শোনার পরও খুনিকে বন্দি করেননি বা কোনো বিচার পরিচালনা করেননি; বরং তিনি তাকে তওবা ও সংশোধনের পথ দেখিয়েছেন।
জীবনের প্রয়োজনে আমরা কখনো কখনো ঋণগ্রস্ত হই। ঋণগ্রস্ত হওয়া জীবন নানা সময় কুফল ডেকে আনে। ঋণের চাপ উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা তৈরি করে। নবী করিম (সা.)-এর শেখানো কিছু দোয়ার মাধ্যমে আমরা ঋণ থেকে মুক্তি পেতে পারি।
১১ ঘণ্টা আগেসুখময় পরিবার জীবনের অমূল্য সম্পদ। সুখী সংসারকে বলা হয় দুনিয়ার জান্নাত। পরিবার আমাদের আশ্রয়, ভালোবাসা ও সাহসের উৎস। পরিবারে একে অপরের পাশে থাকলে সব বাধা সহজে অতিক্রম করা যায়। ছোঁয়া যায় ভালোবাসার আকাশ। মাখা যায় সুখের আবেশ। এ ক্ষেত্রে মহানবী (সা.) হতে পারেন উত্তম আদর্শ। কীভাবে তিনি পারিবারিক ও...
১ দিন আগেজুমার দিন মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে আল্লাহর বিশেষ রহমত বর্ষিত হয়। ইসলামে জুমার দিন সপ্তাহের সেরা হিসেবে বিবেচিত। নবী করিম (সা.) বলেন, পৃথিবীতে যত দিন সূর্য উদিত হবে, তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো জুমার দিন। (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৪)। অন্য এক হাদিসে তিনি বলেন, দিবসসমূহের মধ্যে...
১ দিন আগেকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে ঘিবলি স্টাইল কার্টুন তৈরির বিষয়টি ইসলাম কীভাবে দেখে?
১ দিন আগে