মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ

যখন কোনো গোষ্ঠী ইসলাম, কোরআন, মহানবী (সা.) ও ইসলামের অন্যান্য বিষয় নিয়ে উপহাস করে অথবা কোনো মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালায়, তখন মুসলিম বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ওই গোষ্ঠী ও তাদের সহযোগীদের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার অথবা তাদের ব্যবসায়িক পণ্য বর্জন করার দাবি তোলে। তবে ইসলামে যেহেতু মুসলিম-অমুসলিম সবার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য অনুমোদিত, তাই কেউ কেউ দাবি করে থাকেন, ইসলামে বাণিজ্যিক বয়কটের কোনো ভিত্তি নেই; এটা ইসলামের মূল শিক্ষার সঙ্গে যায় না। ফলে বিষয়টি নিয়ে কারও কারও মনে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। আসলেই কি ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই? ইসলামের নীতিমালা এবং ইতিহাস কী বলে এ ব্যাপারে, আলোচ্য নিবন্ধে তা-ই আলোকপাত করা হয়েছে।
অমুসলিমদের সঙ্গে (স্বদেশি হোক বা ভিনদেশি) সব ধরনের বৈধ বেচাকেনা ইসলামে অনুমোদিত। রাসুল (সা.) মদিনার ইহুদিদের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করতেন। একইভাবে বাইরে থেকে আসা জনৈক পৌত্তলিক বণিকের কাছ থেকে ছাগল কিনেছেন এমন বর্ণনাও এসেছে হাদিসে। (বুখারি ও মুসলিম) তবে যুদ্ধাস্ত্র, যুদ্ধাস্ত্র তৈরির কাঁচামাল এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কাজে আসে এমন সব বস্তু অমুসলিমদের কাছে বিক্রি করা হারাম। ইমাম নববি (রহ.) বলেন, ‘কাফিরদের সঙ্গে সব ধরনের বৈধ বেচাকেনা সর্বসম্মতিক্রমে জায়েজ, তবে যুদ্ধের অস্ত্র ও সরঞ্জাম এবং তাদের ধর্ম ও মতবাদ প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করে এমন বস্তু বিক্রি করা জায়েজ নয়।’ (শরহে সহিহ মুসলিম) আল মাজমু গ্রন্থে তিনি একে সব মতের ফকিহগণের সর্বসম্মত মত বলে উল্লেখ করেছেন।
উল্লিখিত মাসআলা থেকে ইসলামি শরিয়তের একটি মূলনীতি স্পষ্ট হয়। তা হচ্ছে, যে ব্যবসায়িক লেনদেন মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত কাফির গোষ্ঠীকে সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করে, তা জায়েজ নয়। সুতরাং যেসব কোম্পানি ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে অর্থ সরবরাহ করে অথবা মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতনে সহযোগিতা করে, প্রতিবাদস্বরূপ তাদের পণ্য বর্জন করা শুধু বৈধই নয়, ক্ষেত্রবিশেষে মুসলমানদের ইমানের দাবিও বটে। ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, ‘যত পন্থা ও পদক্ষেপ (অর্থনৈতিক, সামাজিক বা অন্য যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ), যা মুসলমানদের উপকারে আসে, ইসলাম ও শরিয়তের ওপর আগত যে কোনো আক্রমণ প্রতিহত করে, মজলুম ও বিপদগ্রস্তদের সাহায্য করে এবং সত্যবিরোধী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে, তা উত্তম ও উপকারী।’ (ইগাসাতুল লাহফান)
অমুসলিমদের সঙ্গে (স্বদেশি হোক বা ভিনদেশি) সব ধরনের বৈধ বেচাকেনা ইসলামে অনুমোদিত। রাসুল (সা.) মদিনার ইহুদিদের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করতেন। একইভাবে বাইরে থেকে আসা জনৈক পৌত্তলিক বণিকের কাছ থেকে ছাগল কিনেছেন এমন বর্ণনাও
এসেছে হাদিসে।
মাওলানা আশরাফ আলি থানভি (রহ.) বলেন, ‘বয়কট ও অসহযোগ আন্দোলন মৌলিকভাবে যুদ্ধ নয়, তবে তা শত্রুকে দুর্বল করার একটি কৌশল, যা মুবাহ তথা বৈধ।’ (হাকিমুল উম্মত কি সিয়াসি আফকার) মাওলানা জফর আহমদ উসমানি (রহ.) বলেন, ‘যদি কোনো বৃহৎ স্বার্থের কারণে শত্রুরাষ্ট্রের পণ্য ছেড়ে দেশি পণ্য ব্যবহার করা হয়, তবে সেটা বৈধ। বরং বৃহৎ স্বার্থ বিবেচনায় এমনটি করা উত্তমও বটে। (ইমদাদুল আহকাম) সমকালীন আরব আলিমদের মধ্যে শায়েখ আবদুর রহমান ইবনে নাসির আস-সাদি (রহ.), শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানি (রহ.), আবদুল্লাহ ইবনে আবদুর রহমান ইবনে জিবরিন, ইউসুফ আল-কারজাভি (রহ.), শায়েখ হামুদ ইবনে উকালা আশ-শাবিসহ আরও অনেকে উপরিউক্ত ফতোয়া প্রদান করেছেন। (আল-মুকালামাতুল ইকতিসাদিয়্যাহ)
শত্রুপক্ষকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করার জন্য বাণিজ্যিক বয়কটের একাধিক ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে পাওয়া যায়। নিচে দুটি ঘটনা তুলে ধরা হলো—
এক. সহিহ বুখারির এক দীর্ঘ হাদিসে এসেছে, এক অভিযানে ইয়ামামাবাসীদের সরদার সুমামা ইবনে উসাল (রা.)কে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসার কয়েক দিন পর রাসুল (সা.) তাঁকে মুক্ত করে দিলে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। এরপর ওমরাহ আদায়ের জন্য মক্কায় গেলে মক্কার কাফিররা ইসলাম গ্রহণ করার জন্য তাঁকে উত্ত্যক্ত করে। এর জবাবে তিনি তাদের উদ্দেশে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, যতক্ষণ পর্যন্ত নবী (সা.) অনুমতি না দেবেন, ইয়ামামা থেকে একটা শস্যদানাও তোমাদের কাছে আসবে না।’ এরপর সুমামা (রা.) নিজ শহরে ফিরে গেলেন এবং মক্কায় শস্য রপ্তানি বন্ধ করে দিলেন। এতে মক্কাবাসী চরম দুর্ভোগে পড়ে। উপায় না পেয়ে তারা রাসুল (সা.)-এর কাছে অনুরোধ করলে তিনি সুমামাকে বয়কট তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
এ ঘটনা থেকে কয়েকটি বিষয় প্রমাণিত হয়। প্রথমত, ইসলামের প্রাথমিক যুগে অর্থনৈতিক বয়কটের প্রমাণ। দ্বিতীয়ত, শত্রুর অনিষ্টতার বিলোপ বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য অর্থনৈতিক বয়কটের বৈধতা। তৃতীয়ত, অর্থনৈতিক বয়কট শত্রুপক্ষকে নমনীয় করে তুলতে ভূমিকা পালন করে। শায়েখ হুসামুদ্দিন আফফানা বলেন, ‘সুমামা (রা.) যা করেছেন, তা ছিল অর্থনৈতিক বয়কট। রাসুল (সা.) তাঁর এই পদক্ষেপে বাধা দেননি। কোনো আপত্তি করেননি। এই বয়কট অব্যাহত ছিল রাসুল (সা.) উঠিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে চিঠি লেখা পর্যন্ত।’ (ফাতাওয়া ইয়াসআলুনাক)
দুই. খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মরওয়ানের যুগে রোম থেকে দিনার-দিরহাম আমদানি করা হতো। এর বিনিময়ে মুসলমানরা তাদের কাছে কাগজ রপ্তানি করত। মুসলমানরা যে কার্টনে করে কাগজ পাঠাত, তার গায়ে লেখা থাকত—‘মাসিহ (ইসা আ.) কখনো আল্লাহর বান্দা হওয়াতে লজ্জাবোধ করেন না; অনুরূপ নৈকট্যশীল ফেরেশতারাও না।’ (সুরা নিসা: ১৭২) একবার রোম সম্রাট লেখাটি দেখে ভীষণ রেগে যান। কারণ তাঁরা ইসা (আ.)কে আল্লাহর পুত্র বলে ধারণা করতেন। তিনি খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ানের কাছে চিঠি লিখলেন—যদি লেখাটি বাদ দেওয়া না হয়, তাহলে আমি দিনার-দিরহামের ওপর আপনাদের নবীর ব্যাপারে কটাক্ষমূলক কথা লিখে দেব। চিঠি পেয়ে আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ান চিন্তায় পড়ে গেলেন। ইত্যবসরে খালিদ ইবনে ইয়াজিদ (রহ.) উপস্থিত হলেন। তিনি খলিফার চিন্তার কারণ জানতে পেরে বললেন, ‘চিন্তা করবেন না, নিজেরা দিনার বানানো শুরু করুন এবং রোমে কাগজ রপ্তানি বন্ধ করে দিন। তাদের কাগজের প্রয়োজন হলে আপনি যেভাবে চান তারা সেভাবেই নিতে বাধ্য হবে।’ খলিফা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন। (বুগইয়াতুত তলব ফি তারিখি হালাব)
লেখক: শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক

যখন কোনো গোষ্ঠী ইসলাম, কোরআন, মহানবী (সা.) ও ইসলামের অন্যান্য বিষয় নিয়ে উপহাস করে অথবা কোনো মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালায়, তখন মুসলিম বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ওই গোষ্ঠী ও তাদের সহযোগীদের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার অথবা তাদের ব্যবসায়িক পণ্য বর্জন করার দাবি তোলে। তবে ইসলামে যেহেতু মুসলিম-অমুসলিম সবার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য অনুমোদিত, তাই কেউ কেউ দাবি করে থাকেন, ইসলামে বাণিজ্যিক বয়কটের কোনো ভিত্তি নেই; এটা ইসলামের মূল শিক্ষার সঙ্গে যায় না। ফলে বিষয়টি নিয়ে কারও কারও মনে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। আসলেই কি ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই? ইসলামের নীতিমালা এবং ইতিহাস কী বলে এ ব্যাপারে, আলোচ্য নিবন্ধে তা-ই আলোকপাত করা হয়েছে।
অমুসলিমদের সঙ্গে (স্বদেশি হোক বা ভিনদেশি) সব ধরনের বৈধ বেচাকেনা ইসলামে অনুমোদিত। রাসুল (সা.) মদিনার ইহুদিদের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করতেন। একইভাবে বাইরে থেকে আসা জনৈক পৌত্তলিক বণিকের কাছ থেকে ছাগল কিনেছেন এমন বর্ণনাও এসেছে হাদিসে। (বুখারি ও মুসলিম) তবে যুদ্ধাস্ত্র, যুদ্ধাস্ত্র তৈরির কাঁচামাল এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কাজে আসে এমন সব বস্তু অমুসলিমদের কাছে বিক্রি করা হারাম। ইমাম নববি (রহ.) বলেন, ‘কাফিরদের সঙ্গে সব ধরনের বৈধ বেচাকেনা সর্বসম্মতিক্রমে জায়েজ, তবে যুদ্ধের অস্ত্র ও সরঞ্জাম এবং তাদের ধর্ম ও মতবাদ প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করে এমন বস্তু বিক্রি করা জায়েজ নয়।’ (শরহে সহিহ মুসলিম) আল মাজমু গ্রন্থে তিনি একে সব মতের ফকিহগণের সর্বসম্মত মত বলে উল্লেখ করেছেন।
উল্লিখিত মাসআলা থেকে ইসলামি শরিয়তের একটি মূলনীতি স্পষ্ট হয়। তা হচ্ছে, যে ব্যবসায়িক লেনদেন মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত কাফির গোষ্ঠীকে সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করে, তা জায়েজ নয়। সুতরাং যেসব কোম্পানি ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে অর্থ সরবরাহ করে অথবা মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতনে সহযোগিতা করে, প্রতিবাদস্বরূপ তাদের পণ্য বর্জন করা শুধু বৈধই নয়, ক্ষেত্রবিশেষে মুসলমানদের ইমানের দাবিও বটে। ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, ‘যত পন্থা ও পদক্ষেপ (অর্থনৈতিক, সামাজিক বা অন্য যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ), যা মুসলমানদের উপকারে আসে, ইসলাম ও শরিয়তের ওপর আগত যে কোনো আক্রমণ প্রতিহত করে, মজলুম ও বিপদগ্রস্তদের সাহায্য করে এবং সত্যবিরোধী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে, তা উত্তম ও উপকারী।’ (ইগাসাতুল লাহফান)
অমুসলিমদের সঙ্গে (স্বদেশি হোক বা ভিনদেশি) সব ধরনের বৈধ বেচাকেনা ইসলামে অনুমোদিত। রাসুল (সা.) মদিনার ইহুদিদের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করতেন। একইভাবে বাইরে থেকে আসা জনৈক পৌত্তলিক বণিকের কাছ থেকে ছাগল কিনেছেন এমন বর্ণনাও
এসেছে হাদিসে।
মাওলানা আশরাফ আলি থানভি (রহ.) বলেন, ‘বয়কট ও অসহযোগ আন্দোলন মৌলিকভাবে যুদ্ধ নয়, তবে তা শত্রুকে দুর্বল করার একটি কৌশল, যা মুবাহ তথা বৈধ।’ (হাকিমুল উম্মত কি সিয়াসি আফকার) মাওলানা জফর আহমদ উসমানি (রহ.) বলেন, ‘যদি কোনো বৃহৎ স্বার্থের কারণে শত্রুরাষ্ট্রের পণ্য ছেড়ে দেশি পণ্য ব্যবহার করা হয়, তবে সেটা বৈধ। বরং বৃহৎ স্বার্থ বিবেচনায় এমনটি করা উত্তমও বটে। (ইমদাদুল আহকাম) সমকালীন আরব আলিমদের মধ্যে শায়েখ আবদুর রহমান ইবনে নাসির আস-সাদি (রহ.), শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানি (রহ.), আবদুল্লাহ ইবনে আবদুর রহমান ইবনে জিবরিন, ইউসুফ আল-কারজাভি (রহ.), শায়েখ হামুদ ইবনে উকালা আশ-শাবিসহ আরও অনেকে উপরিউক্ত ফতোয়া প্রদান করেছেন। (আল-মুকালামাতুল ইকতিসাদিয়্যাহ)
শত্রুপক্ষকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করার জন্য বাণিজ্যিক বয়কটের একাধিক ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে পাওয়া যায়। নিচে দুটি ঘটনা তুলে ধরা হলো—
এক. সহিহ বুখারির এক দীর্ঘ হাদিসে এসেছে, এক অভিযানে ইয়ামামাবাসীদের সরদার সুমামা ইবনে উসাল (রা.)কে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসার কয়েক দিন পর রাসুল (সা.) তাঁকে মুক্ত করে দিলে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। এরপর ওমরাহ আদায়ের জন্য মক্কায় গেলে মক্কার কাফিররা ইসলাম গ্রহণ করার জন্য তাঁকে উত্ত্যক্ত করে। এর জবাবে তিনি তাদের উদ্দেশে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, যতক্ষণ পর্যন্ত নবী (সা.) অনুমতি না দেবেন, ইয়ামামা থেকে একটা শস্যদানাও তোমাদের কাছে আসবে না।’ এরপর সুমামা (রা.) নিজ শহরে ফিরে গেলেন এবং মক্কায় শস্য রপ্তানি বন্ধ করে দিলেন। এতে মক্কাবাসী চরম দুর্ভোগে পড়ে। উপায় না পেয়ে তারা রাসুল (সা.)-এর কাছে অনুরোধ করলে তিনি সুমামাকে বয়কট তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
এ ঘটনা থেকে কয়েকটি বিষয় প্রমাণিত হয়। প্রথমত, ইসলামের প্রাথমিক যুগে অর্থনৈতিক বয়কটের প্রমাণ। দ্বিতীয়ত, শত্রুর অনিষ্টতার বিলোপ বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য অর্থনৈতিক বয়কটের বৈধতা। তৃতীয়ত, অর্থনৈতিক বয়কট শত্রুপক্ষকে নমনীয় করে তুলতে ভূমিকা পালন করে। শায়েখ হুসামুদ্দিন আফফানা বলেন, ‘সুমামা (রা.) যা করেছেন, তা ছিল অর্থনৈতিক বয়কট। রাসুল (সা.) তাঁর এই পদক্ষেপে বাধা দেননি। কোনো আপত্তি করেননি। এই বয়কট অব্যাহত ছিল রাসুল (সা.) উঠিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে চিঠি লেখা পর্যন্ত।’ (ফাতাওয়া ইয়াসআলুনাক)
দুই. খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মরওয়ানের যুগে রোম থেকে দিনার-দিরহাম আমদানি করা হতো। এর বিনিময়ে মুসলমানরা তাদের কাছে কাগজ রপ্তানি করত। মুসলমানরা যে কার্টনে করে কাগজ পাঠাত, তার গায়ে লেখা থাকত—‘মাসিহ (ইসা আ.) কখনো আল্লাহর বান্দা হওয়াতে লজ্জাবোধ করেন না; অনুরূপ নৈকট্যশীল ফেরেশতারাও না।’ (সুরা নিসা: ১৭২) একবার রোম সম্রাট লেখাটি দেখে ভীষণ রেগে যান। কারণ তাঁরা ইসা (আ.)কে আল্লাহর পুত্র বলে ধারণা করতেন। তিনি খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ানের কাছে চিঠি লিখলেন—যদি লেখাটি বাদ দেওয়া না হয়, তাহলে আমি দিনার-দিরহামের ওপর আপনাদের নবীর ব্যাপারে কটাক্ষমূলক কথা লিখে দেব। চিঠি পেয়ে আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ান চিন্তায় পড়ে গেলেন। ইত্যবসরে খালিদ ইবনে ইয়াজিদ (রহ.) উপস্থিত হলেন। তিনি খলিফার চিন্তার কারণ জানতে পেরে বললেন, ‘চিন্তা করবেন না, নিজেরা দিনার বানানো শুরু করুন এবং রোমে কাগজ রপ্তানি বন্ধ করে দিন। তাদের কাগজের প্রয়োজন হলে আপনি যেভাবে চান তারা সেভাবেই নিতে বাধ্য হবে।’ খলিফা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন। (বুগইয়াতুত তলব ফি তারিখি হালাব)
লেখক: শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক
মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ

যখন কোনো গোষ্ঠী ইসলাম, কোরআন, মহানবী (সা.) ও ইসলামের অন্যান্য বিষয় নিয়ে উপহাস করে অথবা কোনো মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালায়, তখন মুসলিম বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ওই গোষ্ঠী ও তাদের সহযোগীদের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার অথবা তাদের ব্যবসায়িক পণ্য বর্জন করার দাবি তোলে। তবে ইসলামে যেহেতু মুসলিম-অমুসলিম সবার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য অনুমোদিত, তাই কেউ কেউ দাবি করে থাকেন, ইসলামে বাণিজ্যিক বয়কটের কোনো ভিত্তি নেই; এটা ইসলামের মূল শিক্ষার সঙ্গে যায় না। ফলে বিষয়টি নিয়ে কারও কারও মনে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। আসলেই কি ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই? ইসলামের নীতিমালা এবং ইতিহাস কী বলে এ ব্যাপারে, আলোচ্য নিবন্ধে তা-ই আলোকপাত করা হয়েছে।
অমুসলিমদের সঙ্গে (স্বদেশি হোক বা ভিনদেশি) সব ধরনের বৈধ বেচাকেনা ইসলামে অনুমোদিত। রাসুল (সা.) মদিনার ইহুদিদের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করতেন। একইভাবে বাইরে থেকে আসা জনৈক পৌত্তলিক বণিকের কাছ থেকে ছাগল কিনেছেন এমন বর্ণনাও এসেছে হাদিসে। (বুখারি ও মুসলিম) তবে যুদ্ধাস্ত্র, যুদ্ধাস্ত্র তৈরির কাঁচামাল এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কাজে আসে এমন সব বস্তু অমুসলিমদের কাছে বিক্রি করা হারাম। ইমাম নববি (রহ.) বলেন, ‘কাফিরদের সঙ্গে সব ধরনের বৈধ বেচাকেনা সর্বসম্মতিক্রমে জায়েজ, তবে যুদ্ধের অস্ত্র ও সরঞ্জাম এবং তাদের ধর্ম ও মতবাদ প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করে এমন বস্তু বিক্রি করা জায়েজ নয়।’ (শরহে সহিহ মুসলিম) আল মাজমু গ্রন্থে তিনি একে সব মতের ফকিহগণের সর্বসম্মত মত বলে উল্লেখ করেছেন।
উল্লিখিত মাসআলা থেকে ইসলামি শরিয়তের একটি মূলনীতি স্পষ্ট হয়। তা হচ্ছে, যে ব্যবসায়িক লেনদেন মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত কাফির গোষ্ঠীকে সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করে, তা জায়েজ নয়। সুতরাং যেসব কোম্পানি ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে অর্থ সরবরাহ করে অথবা মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতনে সহযোগিতা করে, প্রতিবাদস্বরূপ তাদের পণ্য বর্জন করা শুধু বৈধই নয়, ক্ষেত্রবিশেষে মুসলমানদের ইমানের দাবিও বটে। ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, ‘যত পন্থা ও পদক্ষেপ (অর্থনৈতিক, সামাজিক বা অন্য যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ), যা মুসলমানদের উপকারে আসে, ইসলাম ও শরিয়তের ওপর আগত যে কোনো আক্রমণ প্রতিহত করে, মজলুম ও বিপদগ্রস্তদের সাহায্য করে এবং সত্যবিরোধী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে, তা উত্তম ও উপকারী।’ (ইগাসাতুল লাহফান)
অমুসলিমদের সঙ্গে (স্বদেশি হোক বা ভিনদেশি) সব ধরনের বৈধ বেচাকেনা ইসলামে অনুমোদিত। রাসুল (সা.) মদিনার ইহুদিদের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করতেন। একইভাবে বাইরে থেকে আসা জনৈক পৌত্তলিক বণিকের কাছ থেকে ছাগল কিনেছেন এমন বর্ণনাও
এসেছে হাদিসে।
মাওলানা আশরাফ আলি থানভি (রহ.) বলেন, ‘বয়কট ও অসহযোগ আন্দোলন মৌলিকভাবে যুদ্ধ নয়, তবে তা শত্রুকে দুর্বল করার একটি কৌশল, যা মুবাহ তথা বৈধ।’ (হাকিমুল উম্মত কি সিয়াসি আফকার) মাওলানা জফর আহমদ উসমানি (রহ.) বলেন, ‘যদি কোনো বৃহৎ স্বার্থের কারণে শত্রুরাষ্ট্রের পণ্য ছেড়ে দেশি পণ্য ব্যবহার করা হয়, তবে সেটা বৈধ। বরং বৃহৎ স্বার্থ বিবেচনায় এমনটি করা উত্তমও বটে। (ইমদাদুল আহকাম) সমকালীন আরব আলিমদের মধ্যে শায়েখ আবদুর রহমান ইবনে নাসির আস-সাদি (রহ.), শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানি (রহ.), আবদুল্লাহ ইবনে আবদুর রহমান ইবনে জিবরিন, ইউসুফ আল-কারজাভি (রহ.), শায়েখ হামুদ ইবনে উকালা আশ-শাবিসহ আরও অনেকে উপরিউক্ত ফতোয়া প্রদান করেছেন। (আল-মুকালামাতুল ইকতিসাদিয়্যাহ)
শত্রুপক্ষকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করার জন্য বাণিজ্যিক বয়কটের একাধিক ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে পাওয়া যায়। নিচে দুটি ঘটনা তুলে ধরা হলো—
এক. সহিহ বুখারির এক দীর্ঘ হাদিসে এসেছে, এক অভিযানে ইয়ামামাবাসীদের সরদার সুমামা ইবনে উসাল (রা.)কে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসার কয়েক দিন পর রাসুল (সা.) তাঁকে মুক্ত করে দিলে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। এরপর ওমরাহ আদায়ের জন্য মক্কায় গেলে মক্কার কাফিররা ইসলাম গ্রহণ করার জন্য তাঁকে উত্ত্যক্ত করে। এর জবাবে তিনি তাদের উদ্দেশে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, যতক্ষণ পর্যন্ত নবী (সা.) অনুমতি না দেবেন, ইয়ামামা থেকে একটা শস্যদানাও তোমাদের কাছে আসবে না।’ এরপর সুমামা (রা.) নিজ শহরে ফিরে গেলেন এবং মক্কায় শস্য রপ্তানি বন্ধ করে দিলেন। এতে মক্কাবাসী চরম দুর্ভোগে পড়ে। উপায় না পেয়ে তারা রাসুল (সা.)-এর কাছে অনুরোধ করলে তিনি সুমামাকে বয়কট তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
এ ঘটনা থেকে কয়েকটি বিষয় প্রমাণিত হয়। প্রথমত, ইসলামের প্রাথমিক যুগে অর্থনৈতিক বয়কটের প্রমাণ। দ্বিতীয়ত, শত্রুর অনিষ্টতার বিলোপ বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য অর্থনৈতিক বয়কটের বৈধতা। তৃতীয়ত, অর্থনৈতিক বয়কট শত্রুপক্ষকে নমনীয় করে তুলতে ভূমিকা পালন করে। শায়েখ হুসামুদ্দিন আফফানা বলেন, ‘সুমামা (রা.) যা করেছেন, তা ছিল অর্থনৈতিক বয়কট। রাসুল (সা.) তাঁর এই পদক্ষেপে বাধা দেননি। কোনো আপত্তি করেননি। এই বয়কট অব্যাহত ছিল রাসুল (সা.) উঠিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে চিঠি লেখা পর্যন্ত।’ (ফাতাওয়া ইয়াসআলুনাক)
দুই. খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মরওয়ানের যুগে রোম থেকে দিনার-দিরহাম আমদানি করা হতো। এর বিনিময়ে মুসলমানরা তাদের কাছে কাগজ রপ্তানি করত। মুসলমানরা যে কার্টনে করে কাগজ পাঠাত, তার গায়ে লেখা থাকত—‘মাসিহ (ইসা আ.) কখনো আল্লাহর বান্দা হওয়াতে লজ্জাবোধ করেন না; অনুরূপ নৈকট্যশীল ফেরেশতারাও না।’ (সুরা নিসা: ১৭২) একবার রোম সম্রাট লেখাটি দেখে ভীষণ রেগে যান। কারণ তাঁরা ইসা (আ.)কে আল্লাহর পুত্র বলে ধারণা করতেন। তিনি খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ানের কাছে চিঠি লিখলেন—যদি লেখাটি বাদ দেওয়া না হয়, তাহলে আমি দিনার-দিরহামের ওপর আপনাদের নবীর ব্যাপারে কটাক্ষমূলক কথা লিখে দেব। চিঠি পেয়ে আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ান চিন্তায় পড়ে গেলেন। ইত্যবসরে খালিদ ইবনে ইয়াজিদ (রহ.) উপস্থিত হলেন। তিনি খলিফার চিন্তার কারণ জানতে পেরে বললেন, ‘চিন্তা করবেন না, নিজেরা দিনার বানানো শুরু করুন এবং রোমে কাগজ রপ্তানি বন্ধ করে দিন। তাদের কাগজের প্রয়োজন হলে আপনি যেভাবে চান তারা সেভাবেই নিতে বাধ্য হবে।’ খলিফা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন। (বুগইয়াতুত তলব ফি তারিখি হালাব)
লেখক: শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক

যখন কোনো গোষ্ঠী ইসলাম, কোরআন, মহানবী (সা.) ও ইসলামের অন্যান্য বিষয় নিয়ে উপহাস করে অথবা কোনো মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালায়, তখন মুসলিম বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ওই গোষ্ঠী ও তাদের সহযোগীদের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার অথবা তাদের ব্যবসায়িক পণ্য বর্জন করার দাবি তোলে। তবে ইসলামে যেহেতু মুসলিম-অমুসলিম সবার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য অনুমোদিত, তাই কেউ কেউ দাবি করে থাকেন, ইসলামে বাণিজ্যিক বয়কটের কোনো ভিত্তি নেই; এটা ইসলামের মূল শিক্ষার সঙ্গে যায় না। ফলে বিষয়টি নিয়ে কারও কারও মনে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। আসলেই কি ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই? ইসলামের নীতিমালা এবং ইতিহাস কী বলে এ ব্যাপারে, আলোচ্য নিবন্ধে তা-ই আলোকপাত করা হয়েছে।
অমুসলিমদের সঙ্গে (স্বদেশি হোক বা ভিনদেশি) সব ধরনের বৈধ বেচাকেনা ইসলামে অনুমোদিত। রাসুল (সা.) মদিনার ইহুদিদের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করতেন। একইভাবে বাইরে থেকে আসা জনৈক পৌত্তলিক বণিকের কাছ থেকে ছাগল কিনেছেন এমন বর্ণনাও এসেছে হাদিসে। (বুখারি ও মুসলিম) তবে যুদ্ধাস্ত্র, যুদ্ধাস্ত্র তৈরির কাঁচামাল এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কাজে আসে এমন সব বস্তু অমুসলিমদের কাছে বিক্রি করা হারাম। ইমাম নববি (রহ.) বলেন, ‘কাফিরদের সঙ্গে সব ধরনের বৈধ বেচাকেনা সর্বসম্মতিক্রমে জায়েজ, তবে যুদ্ধের অস্ত্র ও সরঞ্জাম এবং তাদের ধর্ম ও মতবাদ প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করে এমন বস্তু বিক্রি করা জায়েজ নয়।’ (শরহে সহিহ মুসলিম) আল মাজমু গ্রন্থে তিনি একে সব মতের ফকিহগণের সর্বসম্মত মত বলে উল্লেখ করেছেন।
উল্লিখিত মাসআলা থেকে ইসলামি শরিয়তের একটি মূলনীতি স্পষ্ট হয়। তা হচ্ছে, যে ব্যবসায়িক লেনদেন মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত কাফির গোষ্ঠীকে সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করে, তা জায়েজ নয়। সুতরাং যেসব কোম্পানি ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে অর্থ সরবরাহ করে অথবা মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতনে সহযোগিতা করে, প্রতিবাদস্বরূপ তাদের পণ্য বর্জন করা শুধু বৈধই নয়, ক্ষেত্রবিশেষে মুসলমানদের ইমানের দাবিও বটে। ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, ‘যত পন্থা ও পদক্ষেপ (অর্থনৈতিক, সামাজিক বা অন্য যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ), যা মুসলমানদের উপকারে আসে, ইসলাম ও শরিয়তের ওপর আগত যে কোনো আক্রমণ প্রতিহত করে, মজলুম ও বিপদগ্রস্তদের সাহায্য করে এবং সত্যবিরোধী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে, তা উত্তম ও উপকারী।’ (ইগাসাতুল লাহফান)
অমুসলিমদের সঙ্গে (স্বদেশি হোক বা ভিনদেশি) সব ধরনের বৈধ বেচাকেনা ইসলামে অনুমোদিত। রাসুল (সা.) মদিনার ইহুদিদের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করতেন। একইভাবে বাইরে থেকে আসা জনৈক পৌত্তলিক বণিকের কাছ থেকে ছাগল কিনেছেন এমন বর্ণনাও
এসেছে হাদিসে।
মাওলানা আশরাফ আলি থানভি (রহ.) বলেন, ‘বয়কট ও অসহযোগ আন্দোলন মৌলিকভাবে যুদ্ধ নয়, তবে তা শত্রুকে দুর্বল করার একটি কৌশল, যা মুবাহ তথা বৈধ।’ (হাকিমুল উম্মত কি সিয়াসি আফকার) মাওলানা জফর আহমদ উসমানি (রহ.) বলেন, ‘যদি কোনো বৃহৎ স্বার্থের কারণে শত্রুরাষ্ট্রের পণ্য ছেড়ে দেশি পণ্য ব্যবহার করা হয়, তবে সেটা বৈধ। বরং বৃহৎ স্বার্থ বিবেচনায় এমনটি করা উত্তমও বটে। (ইমদাদুল আহকাম) সমকালীন আরব আলিমদের মধ্যে শায়েখ আবদুর রহমান ইবনে নাসির আস-সাদি (রহ.), শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানি (রহ.), আবদুল্লাহ ইবনে আবদুর রহমান ইবনে জিবরিন, ইউসুফ আল-কারজাভি (রহ.), শায়েখ হামুদ ইবনে উকালা আশ-শাবিসহ আরও অনেকে উপরিউক্ত ফতোয়া প্রদান করেছেন। (আল-মুকালামাতুল ইকতিসাদিয়্যাহ)
শত্রুপক্ষকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করার জন্য বাণিজ্যিক বয়কটের একাধিক ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে পাওয়া যায়। নিচে দুটি ঘটনা তুলে ধরা হলো—
এক. সহিহ বুখারির এক দীর্ঘ হাদিসে এসেছে, এক অভিযানে ইয়ামামাবাসীদের সরদার সুমামা ইবনে উসাল (রা.)কে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসার কয়েক দিন পর রাসুল (সা.) তাঁকে মুক্ত করে দিলে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। এরপর ওমরাহ আদায়ের জন্য মক্কায় গেলে মক্কার কাফিররা ইসলাম গ্রহণ করার জন্য তাঁকে উত্ত্যক্ত করে। এর জবাবে তিনি তাদের উদ্দেশে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, যতক্ষণ পর্যন্ত নবী (সা.) অনুমতি না দেবেন, ইয়ামামা থেকে একটা শস্যদানাও তোমাদের কাছে আসবে না।’ এরপর সুমামা (রা.) নিজ শহরে ফিরে গেলেন এবং মক্কায় শস্য রপ্তানি বন্ধ করে দিলেন। এতে মক্কাবাসী চরম দুর্ভোগে পড়ে। উপায় না পেয়ে তারা রাসুল (সা.)-এর কাছে অনুরোধ করলে তিনি সুমামাকে বয়কট তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
এ ঘটনা থেকে কয়েকটি বিষয় প্রমাণিত হয়। প্রথমত, ইসলামের প্রাথমিক যুগে অর্থনৈতিক বয়কটের প্রমাণ। দ্বিতীয়ত, শত্রুর অনিষ্টতার বিলোপ বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য অর্থনৈতিক বয়কটের বৈধতা। তৃতীয়ত, অর্থনৈতিক বয়কট শত্রুপক্ষকে নমনীয় করে তুলতে ভূমিকা পালন করে। শায়েখ হুসামুদ্দিন আফফানা বলেন, ‘সুমামা (রা.) যা করেছেন, তা ছিল অর্থনৈতিক বয়কট। রাসুল (সা.) তাঁর এই পদক্ষেপে বাধা দেননি। কোনো আপত্তি করেননি। এই বয়কট অব্যাহত ছিল রাসুল (সা.) উঠিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে চিঠি লেখা পর্যন্ত।’ (ফাতাওয়া ইয়াসআলুনাক)
দুই. খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মরওয়ানের যুগে রোম থেকে দিনার-দিরহাম আমদানি করা হতো। এর বিনিময়ে মুসলমানরা তাদের কাছে কাগজ রপ্তানি করত। মুসলমানরা যে কার্টনে করে কাগজ পাঠাত, তার গায়ে লেখা থাকত—‘মাসিহ (ইসা আ.) কখনো আল্লাহর বান্দা হওয়াতে লজ্জাবোধ করেন না; অনুরূপ নৈকট্যশীল ফেরেশতারাও না।’ (সুরা নিসা: ১৭২) একবার রোম সম্রাট লেখাটি দেখে ভীষণ রেগে যান। কারণ তাঁরা ইসা (আ.)কে আল্লাহর পুত্র বলে ধারণা করতেন। তিনি খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ানের কাছে চিঠি লিখলেন—যদি লেখাটি বাদ দেওয়া না হয়, তাহলে আমি দিনার-দিরহামের ওপর আপনাদের নবীর ব্যাপারে কটাক্ষমূলক কথা লিখে দেব। চিঠি পেয়ে আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ান চিন্তায় পড়ে গেলেন। ইত্যবসরে খালিদ ইবনে ইয়াজিদ (রহ.) উপস্থিত হলেন। তিনি খলিফার চিন্তার কারণ জানতে পেরে বললেন, ‘চিন্তা করবেন না, নিজেরা দিনার বানানো শুরু করুন এবং রোমে কাগজ রপ্তানি বন্ধ করে দিন। তাদের কাগজের প্রয়োজন হলে আপনি যেভাবে চান তারা সেভাবেই নিতে বাধ্য হবে।’ খলিফা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন। (বুগইয়াতুত তলব ফি তারিখি হালাব)
লেখক: শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক

হিজরতের উদ্দেশ্যে নবী (সা.) মক্কা থেকে বেরিয়ে তিন দিন পর্যন্ত সওর গুহায় আত্মগোপনে ছিলেন। শত্রুর ভয় কেটে গেলে নবী (সা.) তাঁর সঙ্গী আবু বকর (রা.)-কে নিয়ে মদিনার পথে রওনা হন। পথিমধ্যে অল্প সময় উম্মে মাবাদের বাড়িতে অবস্থান করেন। নবী (সা.) উম্মে মাবাদের নিকট মেহমানদারি তলব করেন।
১৪ মিনিট আগে
হাসি মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। এটি মনকে প্রফুল্ল রাখে, ক্লান্তি দূর করে এবং পারস্পরিক সম্পর্ককে মধুর করে তোলে। জীবনের অন্যান্য বিষয়ের মতো হাসি-কৌতুকেও পরিমিতি বোধের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। কেননা অতিরিক্ত হাসি যেমন হৃদয়কে কঠোর করে, তেমনি অশালীন রসিকতা মানুষের চরিত্র ও মর্যাদাকে কলুষিত করে তোলে।
১১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৭ ঘণ্টা আগে
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
১ দিন আগেআবরার নাঈম

মক্কার ১৩০ কিলোমিটার দূরে কাদিদের নিকটবর্তী মুশাল্লাল নামের স্থান। সেখানেই উম্মে মাবাদ খুজইয়ার বাড়ি। উম্মে মাবাদ হলেন আত্মমর্যাদাসম্পন্ন, অতিথিপরায়ণ এক বিদুষী নারী—যিনি নিজ বাড়ির আঙিনায় বসে থাকতেন মুসাফিরদের মেহমানদারি করার জন্য।
হিজরতের উদ্দেশ্যে নবী (সা.) মক্কা থেকে বেরিয়ে তিন দিন পর্যন্ত সওর গুহায় আত্মগোপনে ছিলেন। শত্রুর ভয় কেটে গেলে নবী (সা.) তাঁর সঙ্গী আবু বকর (রা.)-কে নিয়ে মদিনার পথে রওনা হন। পথিমধ্যে অল্প সময় উম্মে মাবাদের বাড়িতে অবস্থান করেন। নবী (সা.) উম্মে মাবাদের নিকট মেহমানদারি তলব করেন। উম্মে মাবাদ বলেন, ‘আল্লাহর কসম, আপনাকে দেওয়ার মতো কিছু থাকলে এতটুকু কার্পণ্য করতাম না।’
পালের বকরিগুলোও ছিল দুধশূন্য। এ সময় তাঁবুর এক কোণে নবী (সা.) জীর্ণশীর্ণ এক বকরি দেখে বললেন, ‘এটা কেমন?’ উম্মে মাবাদ বললেন, ‘শারীরিক দুর্বলতায় এটি পালের পেছনে পড়ে গেছে।’
নবী (সা.) বললেন, ‘এটি কি দুধ দেয়?’ উম্মে মাবাদ বললেন, ‘এটা তার পক্ষে অসম্ভব।’
নবী (সা.) বললেন, ‘তুমি আমাকে এটার দুধ দোহনের অনুমতি দেবে?’ তিনি বললেন, ‘আমার পিতামাতা আপনার ওপর কোরবান হোক! আপনি এটার মধ্যে দুধ দেখলে নির্বিঘ্নে দোহন করুন।’
নবী (সা.) বকরিটিকে কাছে এনে ওলানে তাঁর হাত বুলিয়ে দিলেন এবং আল্লাহর নিকট দোয়া করলেন।
শুরু হলো নবীজি (সা.)-এর মুজিজা। বকরিটি সঙ্গে সঙ্গে পা ছড়িয়ে দিল। দুধে ওলান ভরে গেল। নবী (সা.) বড় দেখে পাত্র চাইলেন। পাত্র আনা হলো। নবী (সা.) দুধ দোহালেন। প্রথমে উম্মে মাবাদ পান করে তৃপ্ত হলেন। পরে একে একে সবাই। সবশেষে নবীজি (সা.) নিজেও পান করে পরিতৃপ্ত হলেন। এরপর আবারও সেই পাত্রভর্তি দুধ দোহন করে বাড়িতে রেখে যাত্রা শুরু করলেন।
খানিক বাদে আবু মাবাদ বাড়িতে এসে পাত্রভর্তি দুধ দেখে অবাক হয়ে প্রশ্ন করলেন, ‘বকরির পাল তো ছিল দূরে। ঘরেও নেই দুধেল বকরি! তবে দুধ পেলে কোথায়?’
তখন উম্মে মাবাদ বললেন, ‘এ তো সেই বরকতের হাতের ছোঁয়া, যিনি অল্প সময়ের জন্য আমার মেহমান হয়েছিলেন।’
উম্মে মাবাদ খুব সুনিপুণভাবে স্বামীর কাছে নবীজির বর্ণনা দিলেন। আবু মাবাদ বললেন, ‘আল্লাহর কসম! তিনি তো সেই কুরাইশি ব্যক্তি—যাঁর কথা ইতিপূর্বে বহুত শুনেছি। শত্রুরা তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছে। খুব শখ ছিল তাঁর সঙ্গ দেওয়া। কখনো এ সুযোগ এলে তা হাতছাড়া করব না।’ (আর রাহিকুল মাখতুম: ২৮৯-২৯০, মুসতাদরাকে হাকেম: ৪৩২৬)

মক্কার ১৩০ কিলোমিটার দূরে কাদিদের নিকটবর্তী মুশাল্লাল নামের স্থান। সেখানেই উম্মে মাবাদ খুজইয়ার বাড়ি। উম্মে মাবাদ হলেন আত্মমর্যাদাসম্পন্ন, অতিথিপরায়ণ এক বিদুষী নারী—যিনি নিজ বাড়ির আঙিনায় বসে থাকতেন মুসাফিরদের মেহমানদারি করার জন্য।
হিজরতের উদ্দেশ্যে নবী (সা.) মক্কা থেকে বেরিয়ে তিন দিন পর্যন্ত সওর গুহায় আত্মগোপনে ছিলেন। শত্রুর ভয় কেটে গেলে নবী (সা.) তাঁর সঙ্গী আবু বকর (রা.)-কে নিয়ে মদিনার পথে রওনা হন। পথিমধ্যে অল্প সময় উম্মে মাবাদের বাড়িতে অবস্থান করেন। নবী (সা.) উম্মে মাবাদের নিকট মেহমানদারি তলব করেন। উম্মে মাবাদ বলেন, ‘আল্লাহর কসম, আপনাকে দেওয়ার মতো কিছু থাকলে এতটুকু কার্পণ্য করতাম না।’
পালের বকরিগুলোও ছিল দুধশূন্য। এ সময় তাঁবুর এক কোণে নবী (সা.) জীর্ণশীর্ণ এক বকরি দেখে বললেন, ‘এটা কেমন?’ উম্মে মাবাদ বললেন, ‘শারীরিক দুর্বলতায় এটি পালের পেছনে পড়ে গেছে।’
নবী (সা.) বললেন, ‘এটি কি দুধ দেয়?’ উম্মে মাবাদ বললেন, ‘এটা তার পক্ষে অসম্ভব।’
নবী (সা.) বললেন, ‘তুমি আমাকে এটার দুধ দোহনের অনুমতি দেবে?’ তিনি বললেন, ‘আমার পিতামাতা আপনার ওপর কোরবান হোক! আপনি এটার মধ্যে দুধ দেখলে নির্বিঘ্নে দোহন করুন।’
নবী (সা.) বকরিটিকে কাছে এনে ওলানে তাঁর হাত বুলিয়ে দিলেন এবং আল্লাহর নিকট দোয়া করলেন।
শুরু হলো নবীজি (সা.)-এর মুজিজা। বকরিটি সঙ্গে সঙ্গে পা ছড়িয়ে দিল। দুধে ওলান ভরে গেল। নবী (সা.) বড় দেখে পাত্র চাইলেন। পাত্র আনা হলো। নবী (সা.) দুধ দোহালেন। প্রথমে উম্মে মাবাদ পান করে তৃপ্ত হলেন। পরে একে একে সবাই। সবশেষে নবীজি (সা.) নিজেও পান করে পরিতৃপ্ত হলেন। এরপর আবারও সেই পাত্রভর্তি দুধ দোহন করে বাড়িতে রেখে যাত্রা শুরু করলেন।
খানিক বাদে আবু মাবাদ বাড়িতে এসে পাত্রভর্তি দুধ দেখে অবাক হয়ে প্রশ্ন করলেন, ‘বকরির পাল তো ছিল দূরে। ঘরেও নেই দুধেল বকরি! তবে দুধ পেলে কোথায়?’
তখন উম্মে মাবাদ বললেন, ‘এ তো সেই বরকতের হাতের ছোঁয়া, যিনি অল্প সময়ের জন্য আমার মেহমান হয়েছিলেন।’
উম্মে মাবাদ খুব সুনিপুণভাবে স্বামীর কাছে নবীজির বর্ণনা দিলেন। আবু মাবাদ বললেন, ‘আল্লাহর কসম! তিনি তো সেই কুরাইশি ব্যক্তি—যাঁর কথা ইতিপূর্বে বহুত শুনেছি। শত্রুরা তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছে। খুব শখ ছিল তাঁর সঙ্গ দেওয়া। কখনো এ সুযোগ এলে তা হাতছাড়া করব না।’ (আর রাহিকুল মাখতুম: ২৮৯-২৯০, মুসতাদরাকে হাকেম: ৪৩২৬)

যখন কোনো গোষ্ঠী ইসলাম, কোরআন, মহানবী (সা.) ও ইসলামের অন্যান্য বিষয় নিয়ে উপহাস করে অথবা কোনো মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালায়, তখন মুসলিম বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ওই গোষ্ঠী ও তাদের সহযোগীদের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার অথবা তাদের ব্যবসায়িক পণ্য বর্জন করার দাবি তোলে।
২২ ডিসেম্বর ২০২৩
হাসি মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। এটি মনকে প্রফুল্ল রাখে, ক্লান্তি দূর করে এবং পারস্পরিক সম্পর্ককে মধুর করে তোলে। জীবনের অন্যান্য বিষয়ের মতো হাসি-কৌতুকেও পরিমিতি বোধের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। কেননা অতিরিক্ত হাসি যেমন হৃদয়কে কঠোর করে, তেমনি অশালীন রসিকতা মানুষের চরিত্র ও মর্যাদাকে কলুষিত করে তোলে।
১১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৭ ঘণ্টা আগে
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
১ দিন আগেফয়জুল্লাহ রিয়াদ

হাসি মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। এটি মনকে প্রফুল্ল রাখে, ক্লান্তি দূর করে এবং পারস্পরিক সম্পর্ককে মধুর করে তোলে। জীবনের অন্যান্য বিষয়ের মতো হাসি-কৌতুকেও পরিমিতি বোধের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। কেননা অতিরিক্ত হাসি যেমন হৃদয়কে কঠোর করে, তেমনি অশালীন রসিকতা মানুষের চরিত্র ও মর্যাদাকে কলুষিত করে তোলে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন অত্যন্ত হাস্যোজ্জ্বল ও মিশুক স্বভাবের মানুষ। সাহাবায়ে-কেরামের সঙ্গে তিনি কখনো হালকা রসিকতা করতেন; কিন্তু কখনোই তাঁর মুখ থেকে অসত্য বা আঘাতমূলক কোনো কথা বের হতো না। হাদিস শরিফে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আমি তো মজা করেও সত্য ছাড়া কিছু বলি না।’ (জামে তিরমিজি: ১৯৯০)। এই হাদিসে শিক্ষণীয় বিষয় হলো—মজার মধ্যেও সত্যতা বজায় রাখতে হবে। আমাদের সমাজে অনেকেই হাস্যরসের নামে মিথ্যা, গালি কিংবা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করেন, যা ইসলামে নিষিদ্ধ।
হাসি-কৌতুক নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে হৃদয়ের কোমলতা নষ্ট হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘অতিরিক্ত হাসি হৃদয়কে মেরে ফেলে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪১৯৩)। অনবরত হাসাহাসি ও কৌতুক অনুচিত কাজ। ইসলাম মানুষকে আনন্দ থেকে বঞ্চিত করেনি; বরং আনন্দকে করেছে সংযমের মাধ্যমে সুন্দর ও অর্থবহ। কারও দোষ, আকৃতি, জাতি, ভাষা বা আর্থিক অবস্থা নিয়ে উপহাস করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! কোনো সম্প্রদায় যেন অন্য সম্প্রদায়কে উপহাস না করে। হতে পারে তারা তাদের চেয়ে উত্তম।’ (সুরা হুজুরাত: ১১)
বর্তমান সময়ে বিনোদনের নামে টিভি-অনুষ্ঠান, ইউটিউব-ভিডিও কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন কৌতুক ছড়িয়ে পড়ছে। প্র্যাংকের নামে অন্যের সম্মান নষ্ট করতেও মানুষের দ্বিধাবোধ হচ্ছে না। অথচ একজন মুমিনের হাসি-কৌতুক হওয়া উচিত বিনয়ী, শালীন ও কল্যাণমুখী, যা কাউকে আঘাত না করে; বরং ভালোবাসা ও সম্প্রীতি বাড়ায়।
অতএব একজন সচেতন মুসলিম হিসেবে আমাদের জন্য হাসি-কৌতুকে পরিমিতি বোধ বজায় রাখা জরুরি।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

হাসি মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। এটি মনকে প্রফুল্ল রাখে, ক্লান্তি দূর করে এবং পারস্পরিক সম্পর্ককে মধুর করে তোলে। জীবনের অন্যান্য বিষয়ের মতো হাসি-কৌতুকেও পরিমিতি বোধের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। কেননা অতিরিক্ত হাসি যেমন হৃদয়কে কঠোর করে, তেমনি অশালীন রসিকতা মানুষের চরিত্র ও মর্যাদাকে কলুষিত করে তোলে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন অত্যন্ত হাস্যোজ্জ্বল ও মিশুক স্বভাবের মানুষ। সাহাবায়ে-কেরামের সঙ্গে তিনি কখনো হালকা রসিকতা করতেন; কিন্তু কখনোই তাঁর মুখ থেকে অসত্য বা আঘাতমূলক কোনো কথা বের হতো না। হাদিস শরিফে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আমি তো মজা করেও সত্য ছাড়া কিছু বলি না।’ (জামে তিরমিজি: ১৯৯০)। এই হাদিসে শিক্ষণীয় বিষয় হলো—মজার মধ্যেও সত্যতা বজায় রাখতে হবে। আমাদের সমাজে অনেকেই হাস্যরসের নামে মিথ্যা, গালি কিংবা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করেন, যা ইসলামে নিষিদ্ধ।
হাসি-কৌতুক নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে হৃদয়ের কোমলতা নষ্ট হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘অতিরিক্ত হাসি হৃদয়কে মেরে ফেলে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪১৯৩)। অনবরত হাসাহাসি ও কৌতুক অনুচিত কাজ। ইসলাম মানুষকে আনন্দ থেকে বঞ্চিত করেনি; বরং আনন্দকে করেছে সংযমের মাধ্যমে সুন্দর ও অর্থবহ। কারও দোষ, আকৃতি, জাতি, ভাষা বা আর্থিক অবস্থা নিয়ে উপহাস করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! কোনো সম্প্রদায় যেন অন্য সম্প্রদায়কে উপহাস না করে। হতে পারে তারা তাদের চেয়ে উত্তম।’ (সুরা হুজুরাত: ১১)
বর্তমান সময়ে বিনোদনের নামে টিভি-অনুষ্ঠান, ইউটিউব-ভিডিও কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন কৌতুক ছড়িয়ে পড়ছে। প্র্যাংকের নামে অন্যের সম্মান নষ্ট করতেও মানুষের দ্বিধাবোধ হচ্ছে না। অথচ একজন মুমিনের হাসি-কৌতুক হওয়া উচিত বিনয়ী, শালীন ও কল্যাণমুখী, যা কাউকে আঘাত না করে; বরং ভালোবাসা ও সম্প্রীতি বাড়ায়।
অতএব একজন সচেতন মুসলিম হিসেবে আমাদের জন্য হাসি-কৌতুকে পরিমিতি বোধ বজায় রাখা জরুরি।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

যখন কোনো গোষ্ঠী ইসলাম, কোরআন, মহানবী (সা.) ও ইসলামের অন্যান্য বিষয় নিয়ে উপহাস করে অথবা কোনো মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালায়, তখন মুসলিম বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ওই গোষ্ঠী ও তাদের সহযোগীদের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার অথবা তাদের ব্যবসায়িক পণ্য বর্জন করার দাবি তোলে।
২২ ডিসেম্বর ২০২৩
হিজরতের উদ্দেশ্যে নবী (সা.) মক্কা থেকে বেরিয়ে তিন দিন পর্যন্ত সওর গুহায় আত্মগোপনে ছিলেন। শত্রুর ভয় কেটে গেলে নবী (সা.) তাঁর সঙ্গী আবু বকর (রা.)-কে নিয়ে মদিনার পথে রওনা হন। পথিমধ্যে অল্প সময় উম্মে মাবাদের বাড়িতে অবস্থান করেন। নবী (সা.) উম্মে মাবাদের নিকট মেহমানদারি তলব করেন।
১৪ মিনিট আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৭ ঘণ্টা আগে
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১৩ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৫ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৬ মিনিট | ০৬: ০১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৪ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৫ মিনিট | ০৫: ২০ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২২ মিনিট | ০৬: ৩৭ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৮ মিনিট | ০৪: ৪৫ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১৩ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৫ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৬ মিনিট | ০৬: ০১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৪ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৫ মিনিট | ০৫: ২০ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২২ মিনিট | ০৬: ৩৭ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৮ মিনিট | ০৪: ৪৫ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

যখন কোনো গোষ্ঠী ইসলাম, কোরআন, মহানবী (সা.) ও ইসলামের অন্যান্য বিষয় নিয়ে উপহাস করে অথবা কোনো মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালায়, তখন মুসলিম বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ওই গোষ্ঠী ও তাদের সহযোগীদের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার অথবা তাদের ব্যবসায়িক পণ্য বর্জন করার দাবি তোলে।
২২ ডিসেম্বর ২০২৩
হিজরতের উদ্দেশ্যে নবী (সা.) মক্কা থেকে বেরিয়ে তিন দিন পর্যন্ত সওর গুহায় আত্মগোপনে ছিলেন। শত্রুর ভয় কেটে গেলে নবী (সা.) তাঁর সঙ্গী আবু বকর (রা.)-কে নিয়ে মদিনার পথে রওনা হন। পথিমধ্যে অল্প সময় উম্মে মাবাদের বাড়িতে অবস্থান করেন। নবী (সা.) উম্মে মাবাদের নিকট মেহমানদারি তলব করেন।
১৪ মিনিট আগে
হাসি মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। এটি মনকে প্রফুল্ল রাখে, ক্লান্তি দূর করে এবং পারস্পরিক সম্পর্ককে মধুর করে তোলে। জীবনের অন্যান্য বিষয়ের মতো হাসি-কৌতুকেও পরিমিতি বোধের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। কেননা অতিরিক্ত হাসি যেমন হৃদয়কে কঠোর করে, তেমনি অশালীন রসিকতা মানুষের চরিত্র ও মর্যাদাকে কলুষিত করে তোলে।
১১ ঘণ্টা আগে
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
১ দিন আগেসাকী মাহবুব

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আর নামাজ হলো এই ব্যবস্থার প্রাণ। নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি মানুষের আত্মার প্রশান্তি, নৈতিকতার ভিত্তি এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। তাই সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম পাঠই হওয়া উচিত নামাজের শিক্ষা।
প্রশ্ন হলো, কীভাবে মা-বাবা সন্তানকে নামাজপ্রিয় ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন?
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি হাদিসে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের ৭ বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে তা না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ)
অতএব ছোটবেলা থেকে সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলার নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে।
সন্তান কখনো এক দিনে নামাজি হয় না। এটি একটি ধৈর্য, ভালোবাসা ও উদাহরণের দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রার প্রথম ধাপ হলো, নিজে নামাজি হওয়া। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে, তা-ই শেখে। মা-বাবার নিয়মিত নামাজ তাদের চোখে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। একটি পরিবারে নামাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর উপায় হলো, ঘরে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা।
আজানের সময় আজান দেওয়া এবং সবাইকে একত্রে নামাজে আহ্বান করা। ছোটদের জন্য আলাদা জায়নামাজ, টুপি ও ওড়না দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ পায়। নামাজ শেষে সবাই মিলে দোয়া করা, এতে শিশুর মনে নামাজের প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। শিশুর কাছে নামাজ যেন ভয় বা শাস্তি নয়, বরং আনন্দের একটি অভ্যাস হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’ এইভাবে ভালোবাসা ও পুরস্কারের ভাষায় সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তুলুন।
সন্তান যে পরিবেশে বড় হয়, তা তার চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই নামাজি বন্ধু ও সঙ্গ তৈরি করুন। মসজিদভিত্তিক শিশু কার্যক্রম বা ইসলামিক সংগঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। স্কুল ও সমাজে নামাজবান্ধব পরিবেশের জন্য উদ্যোগ নিন। সন্তানকে নামাজি বানানো মানে শুধু তাকে নামাজ শেখানো নয়; বরং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি, নৈতিকতা ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, ভালোবাসা ও সঠিক দিকনির্দেশনা।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে মা-বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে স্থির থাকো।’ (সুরা তোহা: ১৩২)
সুতরাং মা-বাবা যদি নিজের ঘরে নামাজের আলো জ্বালান, তবে সেই আলো একদিন পুরো সমাজকে আলোকিত করবে নামাজি প্রজন্মের মাধ্যমে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সন্তানদের নামাজি হিসেবে কবুল করে নিন।
লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী।

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আর নামাজ হলো এই ব্যবস্থার প্রাণ। নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি মানুষের আত্মার প্রশান্তি, নৈতিকতার ভিত্তি এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। তাই সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম পাঠই হওয়া উচিত নামাজের শিক্ষা।
প্রশ্ন হলো, কীভাবে মা-বাবা সন্তানকে নামাজপ্রিয় ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন?
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি হাদিসে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের ৭ বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে তা না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ)
অতএব ছোটবেলা থেকে সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলার নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে।
সন্তান কখনো এক দিনে নামাজি হয় না। এটি একটি ধৈর্য, ভালোবাসা ও উদাহরণের দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রার প্রথম ধাপ হলো, নিজে নামাজি হওয়া। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে, তা-ই শেখে। মা-বাবার নিয়মিত নামাজ তাদের চোখে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। একটি পরিবারে নামাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর উপায় হলো, ঘরে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা।
আজানের সময় আজান দেওয়া এবং সবাইকে একত্রে নামাজে আহ্বান করা। ছোটদের জন্য আলাদা জায়নামাজ, টুপি ও ওড়না দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ পায়। নামাজ শেষে সবাই মিলে দোয়া করা, এতে শিশুর মনে নামাজের প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। শিশুর কাছে নামাজ যেন ভয় বা শাস্তি নয়, বরং আনন্দের একটি অভ্যাস হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’ এইভাবে ভালোবাসা ও পুরস্কারের ভাষায় সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তুলুন।
সন্তান যে পরিবেশে বড় হয়, তা তার চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই নামাজি বন্ধু ও সঙ্গ তৈরি করুন। মসজিদভিত্তিক শিশু কার্যক্রম বা ইসলামিক সংগঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। স্কুল ও সমাজে নামাজবান্ধব পরিবেশের জন্য উদ্যোগ নিন। সন্তানকে নামাজি বানানো মানে শুধু তাকে নামাজ শেখানো নয়; বরং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি, নৈতিকতা ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, ভালোবাসা ও সঠিক দিকনির্দেশনা।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে মা-বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে স্থির থাকো।’ (সুরা তোহা: ১৩২)
সুতরাং মা-বাবা যদি নিজের ঘরে নামাজের আলো জ্বালান, তবে সেই আলো একদিন পুরো সমাজকে আলোকিত করবে নামাজি প্রজন্মের মাধ্যমে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সন্তানদের নামাজি হিসেবে কবুল করে নিন।
লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী।

যখন কোনো গোষ্ঠী ইসলাম, কোরআন, মহানবী (সা.) ও ইসলামের অন্যান্য বিষয় নিয়ে উপহাস করে অথবা কোনো মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালায়, তখন মুসলিম বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ওই গোষ্ঠী ও তাদের সহযোগীদের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার অথবা তাদের ব্যবসায়িক পণ্য বর্জন করার দাবি তোলে।
২২ ডিসেম্বর ২০২৩
হিজরতের উদ্দেশ্যে নবী (সা.) মক্কা থেকে বেরিয়ে তিন দিন পর্যন্ত সওর গুহায় আত্মগোপনে ছিলেন। শত্রুর ভয় কেটে গেলে নবী (সা.) তাঁর সঙ্গী আবু বকর (রা.)-কে নিয়ে মদিনার পথে রওনা হন। পথিমধ্যে অল্প সময় উম্মে মাবাদের বাড়িতে অবস্থান করেন। নবী (সা.) উম্মে মাবাদের নিকট মেহমানদারি তলব করেন।
১৪ মিনিট আগে
হাসি মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। এটি মনকে প্রফুল্ল রাখে, ক্লান্তি দূর করে এবং পারস্পরিক সম্পর্ককে মধুর করে তোলে। জীবনের অন্যান্য বিষয়ের মতো হাসি-কৌতুকেও পরিমিতি বোধের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। কেননা অতিরিক্ত হাসি যেমন হৃদয়কে কঠোর করে, তেমনি অশালীন রসিকতা মানুষের চরিত্র ও মর্যাদাকে কলুষিত করে তোলে।
১১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৭ ঘণ্টা আগে