ইসলাম ডেস্ক

‘হক’ শব্দের অর্থ অধিকার, অংশ ও প্রাপ্য। হক দুই প্রকার। ১. হাক্কুল্লাহ বা আল্লাহর হক ২. হাক্কুল ইবাদ বা বান্দার হক।
হাক্কুল্লাহ বা আল্লাহর হক হলো যা মহান আল্লাহ তাঁর বান্দার কাছে প্রাপ্য। বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে বড় হক হচ্ছে ইমান আনা এবং আকিদা পরিশুদ্ধ করা।
প্রথমে আকিদা বিশুদ্ধ করতে হয়, এরপর বিশুদ্ধ আকিদার ওপর ইমান আনতে হয়। আকিদার বিশুদ্ধতা ছাড়া ইমানের কোনো সুযোগ ও বাস্তবতা ইসলামে নেই। তাই প্রথম কাজ হিসেবে আকিদার বিশুদ্ধতা নিয়ে অনেক আলোচনা ও লেখালেখি হলেও ইমানের ওপর আলোচনা ও কাজ খুবই কম হয়। তা ছাড়া ইমানের আলোচনায় সমসাময়িক বিষয়গুলো আলোকপাত করা অত্যন্ত জরুরি।
মহান আল্লাহ তাঁর হক সম্পর্কে বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখো।’ (সুরা নিসা: ১৩৬)
আরও বলেন, ‘আর তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না।’ (সুরা নিসা: ৩৬)
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যতক্ষণ মানুষ এ সাক্ষ্য না দেবে—আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আদিষ্ট হয়েছি। কাজেই যে ব্যক্তি স্বীকার করে নেবে যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই, সে আমার থেকে তার জীবন ও সম্পদকে নিরাপদ করে নিল। তবে শরিয়তসম্মত কোনো কারণ ঘটলে তা ভিন্ন কথা। আর তার (কৃতকর্মের) হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
হজরত মুআজ (রা.) বলেন, ‘উফাইর নামক একটি গাধার পিঠে আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পেছনে আরোহী ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন, ‘হে মুআজ, তুমি কি জানো বান্দার ওপর আল্লাহর হক কী এবং আল্লাহর ওপর বান্দার হক কী?’ আমি বললাম, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভালো জানেন।’
তখন তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই বান্দার ওপর আল্লাহর হক হলো বান্দা তাঁর ইবাদত করবে এবং তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না। আর আল্লাহর ওপর বান্দার হক হলো তাঁর ইবাদতে কাউকে শরিক না করলে আল্লাহ তাকে শাস্তি দেবেন না। (সহিহ্ বুখারি: ২৮৫৬)
উক্ত আয়াত ও হাদিস থেকে বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার কয়েকটি হক প্রমাণিত হলো। তার মধ্যে সর্বপ্রধান হক হলো, আল্লাহ তাআলার প্রতি বান্দার ইমান আনা।
সুতরাং বান্দার প্রতি মহান আল্লাহর প্রধান হক হলো বান্দা একমাত্র তাঁর তার প্রতি ইমান আনবে এবং তারই ইবাদত করবে।
লেখক: মুফতি ইবরাহীম আল খলীল, শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক

‘হক’ শব্দের অর্থ অধিকার, অংশ ও প্রাপ্য। হক দুই প্রকার। ১. হাক্কুল্লাহ বা আল্লাহর হক ২. হাক্কুল ইবাদ বা বান্দার হক।
হাক্কুল্লাহ বা আল্লাহর হক হলো যা মহান আল্লাহ তাঁর বান্দার কাছে প্রাপ্য। বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে বড় হক হচ্ছে ইমান আনা এবং আকিদা পরিশুদ্ধ করা।
প্রথমে আকিদা বিশুদ্ধ করতে হয়, এরপর বিশুদ্ধ আকিদার ওপর ইমান আনতে হয়। আকিদার বিশুদ্ধতা ছাড়া ইমানের কোনো সুযোগ ও বাস্তবতা ইসলামে নেই। তাই প্রথম কাজ হিসেবে আকিদার বিশুদ্ধতা নিয়ে অনেক আলোচনা ও লেখালেখি হলেও ইমানের ওপর আলোচনা ও কাজ খুবই কম হয়। তা ছাড়া ইমানের আলোচনায় সমসাময়িক বিষয়গুলো আলোকপাত করা অত্যন্ত জরুরি।
মহান আল্লাহ তাঁর হক সম্পর্কে বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখো।’ (সুরা নিসা: ১৩৬)
আরও বলেন, ‘আর তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না।’ (সুরা নিসা: ৩৬)
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যতক্ষণ মানুষ এ সাক্ষ্য না দেবে—আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আদিষ্ট হয়েছি। কাজেই যে ব্যক্তি স্বীকার করে নেবে যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই, সে আমার থেকে তার জীবন ও সম্পদকে নিরাপদ করে নিল। তবে শরিয়তসম্মত কোনো কারণ ঘটলে তা ভিন্ন কথা। আর তার (কৃতকর্মের) হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
হজরত মুআজ (রা.) বলেন, ‘উফাইর নামক একটি গাধার পিঠে আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পেছনে আরোহী ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন, ‘হে মুআজ, তুমি কি জানো বান্দার ওপর আল্লাহর হক কী এবং আল্লাহর ওপর বান্দার হক কী?’ আমি বললাম, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভালো জানেন।’
তখন তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই বান্দার ওপর আল্লাহর হক হলো বান্দা তাঁর ইবাদত করবে এবং তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না। আর আল্লাহর ওপর বান্দার হক হলো তাঁর ইবাদতে কাউকে শরিক না করলে আল্লাহ তাকে শাস্তি দেবেন না। (সহিহ্ বুখারি: ২৮৫৬)
উক্ত আয়াত ও হাদিস থেকে বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার কয়েকটি হক প্রমাণিত হলো। তার মধ্যে সর্বপ্রধান হক হলো, আল্লাহ তাআলার প্রতি বান্দার ইমান আনা।
সুতরাং বান্দার প্রতি মহান আল্লাহর প্রধান হক হলো বান্দা একমাত্র তাঁর তার প্রতি ইমান আনবে এবং তারই ইবাদত করবে।
লেখক: মুফতি ইবরাহীম আল খলীল, শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক
ইসলাম ডেস্ক

‘হক’ শব্দের অর্থ অধিকার, অংশ ও প্রাপ্য। হক দুই প্রকার। ১. হাক্কুল্লাহ বা আল্লাহর হক ২. হাক্কুল ইবাদ বা বান্দার হক।
হাক্কুল্লাহ বা আল্লাহর হক হলো যা মহান আল্লাহ তাঁর বান্দার কাছে প্রাপ্য। বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে বড় হক হচ্ছে ইমান আনা এবং আকিদা পরিশুদ্ধ করা।
প্রথমে আকিদা বিশুদ্ধ করতে হয়, এরপর বিশুদ্ধ আকিদার ওপর ইমান আনতে হয়। আকিদার বিশুদ্ধতা ছাড়া ইমানের কোনো সুযোগ ও বাস্তবতা ইসলামে নেই। তাই প্রথম কাজ হিসেবে আকিদার বিশুদ্ধতা নিয়ে অনেক আলোচনা ও লেখালেখি হলেও ইমানের ওপর আলোচনা ও কাজ খুবই কম হয়। তা ছাড়া ইমানের আলোচনায় সমসাময়িক বিষয়গুলো আলোকপাত করা অত্যন্ত জরুরি।
মহান আল্লাহ তাঁর হক সম্পর্কে বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখো।’ (সুরা নিসা: ১৩৬)
আরও বলেন, ‘আর তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না।’ (সুরা নিসা: ৩৬)
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যতক্ষণ মানুষ এ সাক্ষ্য না দেবে—আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আদিষ্ট হয়েছি। কাজেই যে ব্যক্তি স্বীকার করে নেবে যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই, সে আমার থেকে তার জীবন ও সম্পদকে নিরাপদ করে নিল। তবে শরিয়তসম্মত কোনো কারণ ঘটলে তা ভিন্ন কথা। আর তার (কৃতকর্মের) হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
হজরত মুআজ (রা.) বলেন, ‘উফাইর নামক একটি গাধার পিঠে আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পেছনে আরোহী ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন, ‘হে মুআজ, তুমি কি জানো বান্দার ওপর আল্লাহর হক কী এবং আল্লাহর ওপর বান্দার হক কী?’ আমি বললাম, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভালো জানেন।’
তখন তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই বান্দার ওপর আল্লাহর হক হলো বান্দা তাঁর ইবাদত করবে এবং তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না। আর আল্লাহর ওপর বান্দার হক হলো তাঁর ইবাদতে কাউকে শরিক না করলে আল্লাহ তাকে শাস্তি দেবেন না। (সহিহ্ বুখারি: ২৮৫৬)
উক্ত আয়াত ও হাদিস থেকে বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার কয়েকটি হক প্রমাণিত হলো। তার মধ্যে সর্বপ্রধান হক হলো, আল্লাহ তাআলার প্রতি বান্দার ইমান আনা।
সুতরাং বান্দার প্রতি মহান আল্লাহর প্রধান হক হলো বান্দা একমাত্র তাঁর তার প্রতি ইমান আনবে এবং তারই ইবাদত করবে।
লেখক: মুফতি ইবরাহীম আল খলীল, শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক

‘হক’ শব্দের অর্থ অধিকার, অংশ ও প্রাপ্য। হক দুই প্রকার। ১. হাক্কুল্লাহ বা আল্লাহর হক ২. হাক্কুল ইবাদ বা বান্দার হক।
হাক্কুল্লাহ বা আল্লাহর হক হলো যা মহান আল্লাহ তাঁর বান্দার কাছে প্রাপ্য। বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে বড় হক হচ্ছে ইমান আনা এবং আকিদা পরিশুদ্ধ করা।
প্রথমে আকিদা বিশুদ্ধ করতে হয়, এরপর বিশুদ্ধ আকিদার ওপর ইমান আনতে হয়। আকিদার বিশুদ্ধতা ছাড়া ইমানের কোনো সুযোগ ও বাস্তবতা ইসলামে নেই। তাই প্রথম কাজ হিসেবে আকিদার বিশুদ্ধতা নিয়ে অনেক আলোচনা ও লেখালেখি হলেও ইমানের ওপর আলোচনা ও কাজ খুবই কম হয়। তা ছাড়া ইমানের আলোচনায় সমসাময়িক বিষয়গুলো আলোকপাত করা অত্যন্ত জরুরি।
মহান আল্লাহ তাঁর হক সম্পর্কে বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখো।’ (সুরা নিসা: ১৩৬)
আরও বলেন, ‘আর তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না।’ (সুরা নিসা: ৩৬)
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যতক্ষণ মানুষ এ সাক্ষ্য না দেবে—আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আদিষ্ট হয়েছি। কাজেই যে ব্যক্তি স্বীকার করে নেবে যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই, সে আমার থেকে তার জীবন ও সম্পদকে নিরাপদ করে নিল। তবে শরিয়তসম্মত কোনো কারণ ঘটলে তা ভিন্ন কথা। আর তার (কৃতকর্মের) হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
হজরত মুআজ (রা.) বলেন, ‘উফাইর নামক একটি গাধার পিঠে আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পেছনে আরোহী ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন, ‘হে মুআজ, তুমি কি জানো বান্দার ওপর আল্লাহর হক কী এবং আল্লাহর ওপর বান্দার হক কী?’ আমি বললাম, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভালো জানেন।’
তখন তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই বান্দার ওপর আল্লাহর হক হলো বান্দা তাঁর ইবাদত করবে এবং তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না। আর আল্লাহর ওপর বান্দার হক হলো তাঁর ইবাদতে কাউকে শরিক না করলে আল্লাহ তাকে শাস্তি দেবেন না। (সহিহ্ বুখারি: ২৮৫৬)
উক্ত আয়াত ও হাদিস থেকে বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার কয়েকটি হক প্রমাণিত হলো। তার মধ্যে সর্বপ্রধান হক হলো, আল্লাহ তাআলার প্রতি বান্দার ইমান আনা।
সুতরাং বান্দার প্রতি মহান আল্লাহর প্রধান হক হলো বান্দা একমাত্র তাঁর তার প্রতি ইমান আনবে এবং তারই ইবাদত করবে।
লেখক: মুফতি ইবরাহীম আল খলীল, শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক

নামাজের মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে বাকি নামাজটুকু কি শেষ করা যাবে? কিছু মানুষ বলে—‘সিজদার জায়গাটি যদি হালকাভাবেও বোঝা যায়, তাহলেও বাকি নামাজ আদায় করা যাবে। তবে সম্পূর্ণ অন্ধকার হয়ে গেলে আর নামাজ আদায় করা ঠিক হবে না।’ সঠিক উত্তর জানালে উপকৃত হব।
১১ মিনিট আগে
কলকাতার জাকারিয়া স্ট্রিট। ভ্রমণকারীদের চিরচেনা জনপদ। পর্যটকদের পদচারণে মুখর এক ব্যস্ত নগর। সুবিশাল ও প্রশস্ত পথঘাট পেরিয়ে এখানে এলেই মনে হয় যেন একরাশ নীরবতা ভেদ করে প্রবেশ করা হয়েছে কোনো কোলাহলময় জনপদে। রাস্তার দুই পাশে ঝোলানো দোকানের বাহারি সাইনবোর্ড, হরেক রকম খাবারের দোকান, উড়তে থাকা কাবাবের....
২৩ মিনিট আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৮ ঘণ্টা আগে
বিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যে ফররুখ আহমদ (১৯১৮-৭৪) এক স্বতন্ত্র ও উজ্জ্বল প্রতিভার নাম। তাঁকে তাঁর কাব্যিক মিশনের কারণে সাধারণত ‘মুসলিম রেনেসাঁর কবি’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তাঁর কাব্যচেতনা ছিল মূলত একটি সামাজিক ও আত্মিক পুনর্জাগরণের ডাক, যেখানে ইসলামি আদর্শ ও বাঙালি মুসলিমের আত্মপরিচয় নির্মাণের...
১৪ ঘণ্টা আগেআপনার জিজ্ঞাসা
ইসলাম ডেস্ক

প্রশ্ন: নামাজের মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে বাকি নামাজটুকু কি শেষ করা যাবে? কিছু মানুষ বলে—‘সিজদার জায়গাটি যদি হালকাভাবেও বোঝা যায়, তাহলেও বাকি নামাজ আদায় করা যাবে। তবে সম্পূর্ণ অন্ধকার হয়ে গেলে আর নামাজ আদায় করা ঠিক হবে না।’ সঠিক উত্তর জানালে উপকৃত হব।
আনাছ ইখতেখার, বাগিচাগাঁও, কুমিল্লা।
উত্তর: আপনার সময়োপযোগী এবং গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা জানার আগ্রহের জন্য ধন্যবাদ। নামাজ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত এবং এর খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞান থাকা আবশ্যক। বিশেষ করে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে নামাজ আদায় নিয়ে যে সংশয় দেখা দেয়, তার একটি সঠিক ইসলামি সমাধান রয়েছে।
ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে এ বিষয়ে সঠিক মাসআলা এবং নির্দেশনা নিম্নরূপ:
নামাজ চলাকালীন যদি বিদ্যুৎ চলে যায় এবং স্থানটি সম্পূর্ণ অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে, তবু বাকি নামাজটুকু চালিয়ে যেতে কোনো অসুবিধা নেই এবং নামাজ আদায় করা সম্পূর্ণভাবে বৈধ। সাধারণ মানুষের মধ্যে যে ধারণা প্রচলিত আছে যে সিজদার জায়গা হালকাভাবে না দেখা গেলে নামাজ হবে না, এটি সঠিক নয়।
সঠিক মাসআলা হলো—যদি আপনার কিবলা ঠিক থাকে এবং আপনি যদি সঠিকভাবে রুকু-সিজদা ইত্যাদি আদায় করতে পারেন, তবে অন্ধকারে নামাজ আদায় করতে কোনো সমস্যা নেই। এমনকি এটি মাকরুহও হবে না।
এর সপক্ষে একাধিক সহিহ হাদিস রয়েছে। উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সামনে ঘুমাতাম, আমার পা দুখানা তাঁর কিবলার দিকে ছিল। তিনি সিজদায় গেলে আমার পায়ে মৃদু চাপ দিতেন, তখন আমি পা দুটি গুটিয়ে নিতাম। আর তিনি দাঁড়িয়ে গেলে আমি পা প্রসারিত করতাম। সে সময় ঘরগুলোতে বাতি ছিল না।’ (সহিহ বুখারি: ৩৮২)
অন্য এক হাদিসে হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘এক রাতে আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বিছানায় পাচ্ছিলাম না। তখন আমি আমার হাত দিয়ে তাঁকে খুঁজতে লাগলাম। তখন আমার হাত তাঁর পদযুগলের ওপর পড়ে। তাঁর পা খাড়া ছিল আর তিনি ছিলেন সিজদারত। (সুনান নাসায়ি: ১৬৯)। এই হাদিসগুলো প্রমাণ করে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) সম্পূর্ণরূপে অন্ধকার ঘরেও নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করেছেন।
মনে রাখার বিষয় হলো, নামাজে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় সিজদার জায়গার দিকে নজর রাখা সুন্নত, এটি নামাজের একটি আদব। কিন্তু এই সুন্নত পালনের জন্য সিজদার জায়গাটি দেখতে পাওয়া বা দেখতে থাকা অপরিহার্য নয় এবং এটি নামাজের শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্তও নয়। তাই বিদ্যুৎ চলে গিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকার হলেও, যেহেতু নামাজের বাকি আরকান বা ফরজসমূহ যেমন দাঁড়ানো, রুকু, সিজদা ইত্যাদি আদায় করা সম্ভব, তাই নামাজ চালিয়ে যাওয়া যাবে।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

প্রশ্ন: নামাজের মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে বাকি নামাজটুকু কি শেষ করা যাবে? কিছু মানুষ বলে—‘সিজদার জায়গাটি যদি হালকাভাবেও বোঝা যায়, তাহলেও বাকি নামাজ আদায় করা যাবে। তবে সম্পূর্ণ অন্ধকার হয়ে গেলে আর নামাজ আদায় করা ঠিক হবে না।’ সঠিক উত্তর জানালে উপকৃত হব।
আনাছ ইখতেখার, বাগিচাগাঁও, কুমিল্লা।
উত্তর: আপনার সময়োপযোগী এবং গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা জানার আগ্রহের জন্য ধন্যবাদ। নামাজ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত এবং এর খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞান থাকা আবশ্যক। বিশেষ করে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে নামাজ আদায় নিয়ে যে সংশয় দেখা দেয়, তার একটি সঠিক ইসলামি সমাধান রয়েছে।
ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে এ বিষয়ে সঠিক মাসআলা এবং নির্দেশনা নিম্নরূপ:
নামাজ চলাকালীন যদি বিদ্যুৎ চলে যায় এবং স্থানটি সম্পূর্ণ অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে, তবু বাকি নামাজটুকু চালিয়ে যেতে কোনো অসুবিধা নেই এবং নামাজ আদায় করা সম্পূর্ণভাবে বৈধ। সাধারণ মানুষের মধ্যে যে ধারণা প্রচলিত আছে যে সিজদার জায়গা হালকাভাবে না দেখা গেলে নামাজ হবে না, এটি সঠিক নয়।
সঠিক মাসআলা হলো—যদি আপনার কিবলা ঠিক থাকে এবং আপনি যদি সঠিকভাবে রুকু-সিজদা ইত্যাদি আদায় করতে পারেন, তবে অন্ধকারে নামাজ আদায় করতে কোনো সমস্যা নেই। এমনকি এটি মাকরুহও হবে না।
এর সপক্ষে একাধিক সহিহ হাদিস রয়েছে। উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সামনে ঘুমাতাম, আমার পা দুখানা তাঁর কিবলার দিকে ছিল। তিনি সিজদায় গেলে আমার পায়ে মৃদু চাপ দিতেন, তখন আমি পা দুটি গুটিয়ে নিতাম। আর তিনি দাঁড়িয়ে গেলে আমি পা প্রসারিত করতাম। সে সময় ঘরগুলোতে বাতি ছিল না।’ (সহিহ বুখারি: ৩৮২)
অন্য এক হাদিসে হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘এক রাতে আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বিছানায় পাচ্ছিলাম না। তখন আমি আমার হাত দিয়ে তাঁকে খুঁজতে লাগলাম। তখন আমার হাত তাঁর পদযুগলের ওপর পড়ে। তাঁর পা খাড়া ছিল আর তিনি ছিলেন সিজদারত। (সুনান নাসায়ি: ১৬৯)। এই হাদিসগুলো প্রমাণ করে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) সম্পূর্ণরূপে অন্ধকার ঘরেও নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করেছেন।
মনে রাখার বিষয় হলো, নামাজে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় সিজদার জায়গার দিকে নজর রাখা সুন্নত, এটি নামাজের একটি আদব। কিন্তু এই সুন্নত পালনের জন্য সিজদার জায়গাটি দেখতে পাওয়া বা দেখতে থাকা অপরিহার্য নয় এবং এটি নামাজের শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্তও নয়। তাই বিদ্যুৎ চলে গিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকার হলেও, যেহেতু নামাজের বাকি আরকান বা ফরজসমূহ যেমন দাঁড়ানো, রুকু, সিজদা ইত্যাদি আদায় করা সম্ভব, তাই নামাজ চালিয়ে যাওয়া যাবে।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

প্রথমে আকিদা বিশুদ্ধ করতে হয়, এরপর বিশুদ্ধ আকিদার ওপর ইমান আনতে হয়। আকিদার বিশুদ্ধতা ছাড়া ইমানের কোনো সুযোগ ও বাস্তবতা ইসলামে নেই। তাই প্রথম কাজ হিসেবে আকিদার বিশুদ্ধতা নিয়ে অনেক আলোচনা ও লেখালেখি হলেও ইমানের ওপর আলোচনা ও কাজ খুবই কম হয়। তা ছাড়া ইমানের আলোচনায় সমসাময়িক বিষয়গুলো আলোকপাত করা...
২৫ আগস্ট ২০২৫
কলকাতার জাকারিয়া স্ট্রিট। ভ্রমণকারীদের চিরচেনা জনপদ। পর্যটকদের পদচারণে মুখর এক ব্যস্ত নগর। সুবিশাল ও প্রশস্ত পথঘাট পেরিয়ে এখানে এলেই মনে হয় যেন একরাশ নীরবতা ভেদ করে প্রবেশ করা হয়েছে কোনো কোলাহলময় জনপদে। রাস্তার দুই পাশে ঝোলানো দোকানের বাহারি সাইনবোর্ড, হরেক রকম খাবারের দোকান, উড়তে থাকা কাবাবের....
২৩ মিনিট আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৮ ঘণ্টা আগে
বিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যে ফররুখ আহমদ (১৯১৮-৭৪) এক স্বতন্ত্র ও উজ্জ্বল প্রতিভার নাম। তাঁকে তাঁর কাব্যিক মিশনের কারণে সাধারণত ‘মুসলিম রেনেসাঁর কবি’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তাঁর কাব্যচেতনা ছিল মূলত একটি সামাজিক ও আত্মিক পুনর্জাগরণের ডাক, যেখানে ইসলামি আদর্শ ও বাঙালি মুসলিমের আত্মপরিচয় নির্মাণের...
১৪ ঘণ্টা আগেতাওহীদ আদনান ইয়াকুব

কলকাতার জাকারিয়া স্ট্রিট। ভ্রমণকারীদের চিরচেনা জনপদ। পর্যটকদের পদচারণে মুখর এক ব্যস্ত নগর। সুবিশাল ও প্রশস্ত পথঘাট পেরিয়ে এখানে এলেই মনে হয় যেন একরাশ নীরবতা ভেদ করে প্রবেশ করা হয়েছে কোনো কোলাহলময় জনপদে। রাস্তার দুই পাশে ঝোলানো দোকানের বাহারি সাইনবোর্ড, হরেক রকম খাবারের দোকান, উড়তে থাকা কাবাবের ধোঁয়া আর মসলার সুগন্ধে ভারী হয়ে ওঠা বাতাস, হকারদের হাঁকডাক, মানুষের ব্যস্ত পায়চারি—সব মিলিয়ে যেন অবিরাম এক গুঞ্জন। এই গুঞ্জন ভেদ করে সামনে এগোলেই নজরে পড়ে সুবিশাল এক স্থাপনা—নাখোদা মসজিদ। আঙিনায় ঢুকতেই অনুভব হয় এ যেন কোলাহলের শহরে এক শান্তির নিবাস।
প্রথম দেখাতেই মসজিদের গাম্ভীর্য মনকে স্তব্ধ করে দেয়। লাল বেলেপাথরের দেয়াল, উঁচু উঁচু মিনার আর সুবিশাল ফটক দেখে মনে হবে এটি নিছক কোনো মসজিদই নয়, ইতিহাসেরও জীবন্ত সাক্ষী। ফটকের দিকে তাকালে মনে হবে আগ্রার ফতেহপুর সিক্রির ‘বুলন্দ দরওয়াজা’। নিমেষেই মনে পড়ে যাবে সেই স্মৃতি। ভেতরে ঢুকলে শ্বেতপাথরের সৌন্দর্য মনে করিয়ে দেবে তাজমহলের কথা। জনারণ্য আর ভিড় পেরিয়ে মসজিদের ভেতরে ঢুকলেই মনে হবে, সব কোলাহল যেন হঠাৎ থমকে গেছে অজানা কোথাও। অসাধারণ এই স্থাপত্য দেখতে মানুষ দলে দলে ছুটে আসে দূর-দূরান্ত থেকে। নিঃশব্দে তাকিয়ে থাকে মসজিদের গাম্ভীর্যে; মুগ্ধ নয়নে হারিয়ে যায় সেই অপার সৌন্দর্যে।
নাখোদা মসজিদের ভেতরে ঢুকলেই অনুভূত হয় চারপাশে ছড়িয়ে থাকা মনোমুগ্ধকর শান্তি ও স্নিগ্ধ প্রশান্তি, যা মনকে ছুঁয়ে যায় নিমেষেই। এখানে নামাজ আদায় করতে গেলে মনে হয়, এ যেন এক সুবিশাল মিলনমেলা। জুমা আদায়ের সময় তো কথাই নেই। হাজারো মানুষের ভিড়ে মসজিদের প্রাঙ্গণ তৈরি হয় এক বিস্তীর্ণ মিলনায়তনে। ঈদের নামাজে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় আরও বহু গুণ। মানুষের উপচে পড়া ভিড়ে তিল ধারণেরও জায়গা থাকে না তখন।
মসজিদের বাইরেও যেন দেখা মেলে এক ভিন্ন জগতের। প্রবেশদ্বারের পাশে সারি সারি রেস্তোরাঁ, মিষ্টির দোকান। এক পাশে কিছু চায়ের স্টল, আরেক পাশে কাবাবের ধোঁয়ার ওড়াউড়ি। নামাজ শেষে কিংবা ঘোরাঘুরির ফাঁকে অনেকেই থেমে যায় সেখানে। কেউ গরম চায়ের কাপে চুমুক দেয়, কেউবা উদাস ভঙ্গিতে কাবাবের ধোঁয়ায় হারিয়ে যায়। সেই প্রাণচঞ্চল পরিবেশেও অনেকের মনে ভেসে ওঠে একটি প্রশ্ন—মসজিদ তো খোদার ঘর, তবে এই মসজিদের নাম কেন ‘নাখোদা!’

উত্তর খুঁজতে গেলে হারিয়ে যেতে হবে ইতিহাসের পাতায়। প্রায় এক শতাব্দী আগে গুজরাটের এক ধনবান নাবিক আবদুর রহিম উসমান নিজের অর্থে নির্মাণ করেছিলেন এই মসজিদ। নাবিকের ফারসি হলো ‘নাখোদা’। তাঁর পেশার প্রতি সম্মান জানাতেই স্থানীয়রা মসজিদের নাম রাখেন ‘নাখোদা’। তখন ছিল ব্রিটিশ শাসনামল। ইংরেজির পাশাপাশি ফারসিও ছিল প্রশাসনিক ভাষা। সমাজের সংস্কৃতিতে ফারসির ছিল গভীর প্রভাব। সেই সময়ের ঐতিহ্যের প্রতিফলনে নাবিকের নামে স্থায়ী হয়ে যায় এই নাম—‘নাখোদা মসজিদ’।
মসজিদটির স্থাপত্যে যেমন ফুটে উঠেছে ইতিহাসের গাম্ভীর্য, তেমনি মিশে আছে স্থানীয় সংস্কৃতির রং ও গন্ধও। গম্বুজ, খিলান আর অলংকরণে শুধু অতীতের ছোঁয়া নয়, দেখা মেলে সেই সময়ের স্থানীয়দের জীবনযাত্রা, শিল্পবোধ ও নান্দনিকতার প্রতিফলন। তাই নাখোদা মসজিদে প্রবেশ করলে মনে হয় যেন ইতিহাস কথা বলছে, আর তার সঙ্গে মিশে আছে স্থানীয় সংস্কৃতি।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া ইসলামিয়া কওমিয়া (নশাসন মাদরাসা), শরীয়তপুর

কলকাতার জাকারিয়া স্ট্রিট। ভ্রমণকারীদের চিরচেনা জনপদ। পর্যটকদের পদচারণে মুখর এক ব্যস্ত নগর। সুবিশাল ও প্রশস্ত পথঘাট পেরিয়ে এখানে এলেই মনে হয় যেন একরাশ নীরবতা ভেদ করে প্রবেশ করা হয়েছে কোনো কোলাহলময় জনপদে। রাস্তার দুই পাশে ঝোলানো দোকানের বাহারি সাইনবোর্ড, হরেক রকম খাবারের দোকান, উড়তে থাকা কাবাবের ধোঁয়া আর মসলার সুগন্ধে ভারী হয়ে ওঠা বাতাস, হকারদের হাঁকডাক, মানুষের ব্যস্ত পায়চারি—সব মিলিয়ে যেন অবিরাম এক গুঞ্জন। এই গুঞ্জন ভেদ করে সামনে এগোলেই নজরে পড়ে সুবিশাল এক স্থাপনা—নাখোদা মসজিদ। আঙিনায় ঢুকতেই অনুভব হয় এ যেন কোলাহলের শহরে এক শান্তির নিবাস।
প্রথম দেখাতেই মসজিদের গাম্ভীর্য মনকে স্তব্ধ করে দেয়। লাল বেলেপাথরের দেয়াল, উঁচু উঁচু মিনার আর সুবিশাল ফটক দেখে মনে হবে এটি নিছক কোনো মসজিদই নয়, ইতিহাসেরও জীবন্ত সাক্ষী। ফটকের দিকে তাকালে মনে হবে আগ্রার ফতেহপুর সিক্রির ‘বুলন্দ দরওয়াজা’। নিমেষেই মনে পড়ে যাবে সেই স্মৃতি। ভেতরে ঢুকলে শ্বেতপাথরের সৌন্দর্য মনে করিয়ে দেবে তাজমহলের কথা। জনারণ্য আর ভিড় পেরিয়ে মসজিদের ভেতরে ঢুকলেই মনে হবে, সব কোলাহল যেন হঠাৎ থমকে গেছে অজানা কোথাও। অসাধারণ এই স্থাপত্য দেখতে মানুষ দলে দলে ছুটে আসে দূর-দূরান্ত থেকে। নিঃশব্দে তাকিয়ে থাকে মসজিদের গাম্ভীর্যে; মুগ্ধ নয়নে হারিয়ে যায় সেই অপার সৌন্দর্যে।
নাখোদা মসজিদের ভেতরে ঢুকলেই অনুভূত হয় চারপাশে ছড়িয়ে থাকা মনোমুগ্ধকর শান্তি ও স্নিগ্ধ প্রশান্তি, যা মনকে ছুঁয়ে যায় নিমেষেই। এখানে নামাজ আদায় করতে গেলে মনে হয়, এ যেন এক সুবিশাল মিলনমেলা। জুমা আদায়ের সময় তো কথাই নেই। হাজারো মানুষের ভিড়ে মসজিদের প্রাঙ্গণ তৈরি হয় এক বিস্তীর্ণ মিলনায়তনে। ঈদের নামাজে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় আরও বহু গুণ। মানুষের উপচে পড়া ভিড়ে তিল ধারণেরও জায়গা থাকে না তখন।
মসজিদের বাইরেও যেন দেখা মেলে এক ভিন্ন জগতের। প্রবেশদ্বারের পাশে সারি সারি রেস্তোরাঁ, মিষ্টির দোকান। এক পাশে কিছু চায়ের স্টল, আরেক পাশে কাবাবের ধোঁয়ার ওড়াউড়ি। নামাজ শেষে কিংবা ঘোরাঘুরির ফাঁকে অনেকেই থেমে যায় সেখানে। কেউ গরম চায়ের কাপে চুমুক দেয়, কেউবা উদাস ভঙ্গিতে কাবাবের ধোঁয়ায় হারিয়ে যায়। সেই প্রাণচঞ্চল পরিবেশেও অনেকের মনে ভেসে ওঠে একটি প্রশ্ন—মসজিদ তো খোদার ঘর, তবে এই মসজিদের নাম কেন ‘নাখোদা!’

উত্তর খুঁজতে গেলে হারিয়ে যেতে হবে ইতিহাসের পাতায়। প্রায় এক শতাব্দী আগে গুজরাটের এক ধনবান নাবিক আবদুর রহিম উসমান নিজের অর্থে নির্মাণ করেছিলেন এই মসজিদ। নাবিকের ফারসি হলো ‘নাখোদা’। তাঁর পেশার প্রতি সম্মান জানাতেই স্থানীয়রা মসজিদের নাম রাখেন ‘নাখোদা’। তখন ছিল ব্রিটিশ শাসনামল। ইংরেজির পাশাপাশি ফারসিও ছিল প্রশাসনিক ভাষা। সমাজের সংস্কৃতিতে ফারসির ছিল গভীর প্রভাব। সেই সময়ের ঐতিহ্যের প্রতিফলনে নাবিকের নামে স্থায়ী হয়ে যায় এই নাম—‘নাখোদা মসজিদ’।
মসজিদটির স্থাপত্যে যেমন ফুটে উঠেছে ইতিহাসের গাম্ভীর্য, তেমনি মিশে আছে স্থানীয় সংস্কৃতির রং ও গন্ধও। গম্বুজ, খিলান আর অলংকরণে শুধু অতীতের ছোঁয়া নয়, দেখা মেলে সেই সময়ের স্থানীয়দের জীবনযাত্রা, শিল্পবোধ ও নান্দনিকতার প্রতিফলন। তাই নাখোদা মসজিদে প্রবেশ করলে মনে হয় যেন ইতিহাস কথা বলছে, আর তার সঙ্গে মিশে আছে স্থানীয় সংস্কৃতি।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া ইসলামিয়া কওমিয়া (নশাসন মাদরাসা), শরীয়তপুর

প্রথমে আকিদা বিশুদ্ধ করতে হয়, এরপর বিশুদ্ধ আকিদার ওপর ইমান আনতে হয়। আকিদার বিশুদ্ধতা ছাড়া ইমানের কোনো সুযোগ ও বাস্তবতা ইসলামে নেই। তাই প্রথম কাজ হিসেবে আকিদার বিশুদ্ধতা নিয়ে অনেক আলোচনা ও লেখালেখি হলেও ইমানের ওপর আলোচনা ও কাজ খুবই কম হয়। তা ছাড়া ইমানের আলোচনায় সমসাময়িক বিষয়গুলো আলোকপাত করা...
২৫ আগস্ট ২০২৫
নামাজের মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে বাকি নামাজটুকু কি শেষ করা যাবে? কিছু মানুষ বলে—‘সিজদার জায়গাটি যদি হালকাভাবেও বোঝা যায়, তাহলেও বাকি নামাজ আদায় করা যাবে। তবে সম্পূর্ণ অন্ধকার হয়ে গেলে আর নামাজ আদায় করা ঠিক হবে না।’ সঠিক উত্তর জানালে উপকৃত হব।
১১ মিনিট আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৮ ঘণ্টা আগে
বিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যে ফররুখ আহমদ (১৯১৮-৭৪) এক স্বতন্ত্র ও উজ্জ্বল প্রতিভার নাম। তাঁকে তাঁর কাব্যিক মিশনের কারণে সাধারণত ‘মুসলিম রেনেসাঁর কবি’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তাঁর কাব্যচেতনা ছিল মূলত একটি সামাজিক ও আত্মিক পুনর্জাগরণের ডাক, যেখানে ইসলামি আদর্শ ও বাঙালি মুসলিমের আত্মপরিচয় নির্মাণের...
১৪ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৮ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৩ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৪ মিনিট | ০৫: ৫৯ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৮ মিনিট | ০৫: ২৪ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৬ মিনিট | ০৬: ৪০ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪১ মিনিট | ০৪: ৪৩ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৮ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৩ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৪ মিনিট | ০৫: ৫৯ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৮ মিনিট | ০৫: ২৪ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৬ মিনিট | ০৬: ৪০ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪১ মিনিট | ০৪: ৪৩ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

প্রথমে আকিদা বিশুদ্ধ করতে হয়, এরপর বিশুদ্ধ আকিদার ওপর ইমান আনতে হয়। আকিদার বিশুদ্ধতা ছাড়া ইমানের কোনো সুযোগ ও বাস্তবতা ইসলামে নেই। তাই প্রথম কাজ হিসেবে আকিদার বিশুদ্ধতা নিয়ে অনেক আলোচনা ও লেখালেখি হলেও ইমানের ওপর আলোচনা ও কাজ খুবই কম হয়। তা ছাড়া ইমানের আলোচনায় সমসাময়িক বিষয়গুলো আলোকপাত করা...
২৫ আগস্ট ২০২৫
নামাজের মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে বাকি নামাজটুকু কি শেষ করা যাবে? কিছু মানুষ বলে—‘সিজদার জায়গাটি যদি হালকাভাবেও বোঝা যায়, তাহলেও বাকি নামাজ আদায় করা যাবে। তবে সম্পূর্ণ অন্ধকার হয়ে গেলে আর নামাজ আদায় করা ঠিক হবে না।’ সঠিক উত্তর জানালে উপকৃত হব।
১১ মিনিট আগে
কলকাতার জাকারিয়া স্ট্রিট। ভ্রমণকারীদের চিরচেনা জনপদ। পর্যটকদের পদচারণে মুখর এক ব্যস্ত নগর। সুবিশাল ও প্রশস্ত পথঘাট পেরিয়ে এখানে এলেই মনে হয় যেন একরাশ নীরবতা ভেদ করে প্রবেশ করা হয়েছে কোনো কোলাহলময় জনপদে। রাস্তার দুই পাশে ঝোলানো দোকানের বাহারি সাইনবোর্ড, হরেক রকম খাবারের দোকান, উড়তে থাকা কাবাবের....
২৩ মিনিট আগে
বিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যে ফররুখ আহমদ (১৯১৮-৭৪) এক স্বতন্ত্র ও উজ্জ্বল প্রতিভার নাম। তাঁকে তাঁর কাব্যিক মিশনের কারণে সাধারণত ‘মুসলিম রেনেসাঁর কবি’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তাঁর কাব্যচেতনা ছিল মূলত একটি সামাজিক ও আত্মিক পুনর্জাগরণের ডাক, যেখানে ইসলামি আদর্শ ও বাঙালি মুসলিমের আত্মপরিচয় নির্মাণের...
১৪ ঘণ্টা আগেমুহাম্মাদ রাহাতুল ইসলাম

বিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যে ফররুখ আহমদ (১৯১৮-৭৪) এক স্বতন্ত্র ও উজ্জ্বল প্রতিভার নাম। তাঁকে তাঁর কাব্যিক মিশনের কারণে সাধারণত ‘মুসলিম রেনেসাঁর কবি’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তাঁর কাব্যচেতনা ছিল মূলত একটি সামাজিক ও আত্মিক পুনর্জাগরণের ডাক, যেখানে ইসলামি আদর্শ ও বাঙালি মুসলিমের আত্মপরিচয় নির্মাণের আকাঙ্ক্ষা এক শিল্পিত রূপ লাভ করেছিল।
এটি ছিল গভীর মননশীল সাহিত্য-আন্দোলন, যা আত্মবিস্মৃত জাতিকে তার স্বকীয়তা পুনরুদ্ধারে অনুপ্রাণিত করে।
ফররুখ আহমদের আবির্ভাবকাল ছিল বাংলার মুসলিম সমাজের জন্য এক ঘোর সংকটকাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, পঞ্চাশের মন্বন্তর, ঔপনিবেশিক শোষণ ও মুসলিম সমাজের অভ্যন্তরীণ আত্মবিস্মৃতি—এই চতুর্মুখী অন্ধকারে কবি অনুভব করেছিলেন জাতির গভীর নিস্তব্ধতা। এই জরাগ্রস্ত ও হতাশাজনক বাস্তবতা তাঁকে স্থির থাকতে দেয়নি। তাঁর কবিতায় তিনি এই ঐতিহাসিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে এক বিপ্লবী দামামা বাজিয়েছেন।
কবির দৃষ্টিতে, মুসলিমদের অতীত ইতিহাস ছিল শৌর্য, বীরত্ব ও মানবতার। সেই ঐতিহ্য ভেঙে যাওয়ায় জাতির যে অধঃপতন, তা কবিকে ব্যথিত ও উদ্বেলিত করে তোলে।
তিনি উপলব্ধি করেন, এই জাতিকে জাগাতে হলে শুধু রোমান্টিকতা নয়, চাই এমন এক ‘পাঞ্জেরি’ (দিকনির্দেশক), যে অন্ধকার পেরিয়ে মঞ্জিলে পৌঁছানোর পথ দেখাবে। তাঁর শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ ‘সাত সাগরের মাঝি’ (১৯৪৪)-এর কালজয়ী কবিতা ‘পাঞ্জেরি’তে এই আর্তিই ধ্বনিত হয়:
‘রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে?
সেতারা, হেলার এখনো ওঠেনি জেগে?’
এই ‘পাঞ্জেরি’ কবিতা কেবল একটি আশার বাণী নয়, বরং তা একটি জাতীয় আত্মসচেতনতার প্রতীক—যা বাঙালি মুসলিম সমাজকে তার সমৃদ্ধ অতীত ও ইসলামি সভ্যতা-সংস্কৃতির দিকে ফিরে তাকিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শেখায়। এটি ছিল অস্তিত্ব রক্ষার এক তীব্র ব্যাকুলতা।
রেনেসাঁর দার্শনিক ভিত্তি: ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধন
ফররুখ আহমদের রেনেসাঁ চেতনা কেবল অতীত রোমন্থন ছিল না, বরং তা ছিল প্রাচীনকে ধ্বংস না করে পুরোনো ঐতিহ্যের ভিত্তির ওপর নতুন আদর্শ সৃষ্টি করার এক তাত্ত্বিক প্রয়াস। তাঁর চিন্তা ছিল আল্লামা ইকবালের মতো, যিনি পতনোন্মুখ মুসলিমদের মধ্যে আত্মমর্যাদা ও নতুন জীবনবোধ সঞ্চার করতে চেয়েছিলেন। ফররুখ বিশ্বাস করতেন, ইসলামের আদর্শই মানবমুক্তি, স্বাধীনতা ও চিন্তার মুক্তির প্রথম উদ্যোক্তা।
তাঁর এই বিশ্বাস কবিকে মানবতাবাদের প্রেরণা জুগিয়েছে, যা তাঁকে তৎকালীন ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার নির্মম শোষণ ও অমানবিকতার বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ হতে সাহায্য করেছে। ‘লাশ’ কবিতায় তিনি যে অমানবিকতার চিত্র এঁকেছেন, তা প্রমাণ করে তাঁর কাব্য শুধু ধর্মীয় নয়, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মানবিক মুক্তির জন্যও নিবেদিত ছিল। তিনি লেখেন:
‘আজ এই উৎপীড়িত মৃত্যু-দীর্ণ নিখিলের অভিশাপ বও
ধ্বংস হও, তুমি ধ্বংস হও।’
তাঁর কাব্যচেতনা ছিল একটি বিশ্বজনীন আদর্শের প্রতিচ্ছবি, যা নিম্নোক্ত দুটি ধারায় প্রস্ফুটিত হয়েছে—
ফররুখ আহমদের কাব্যচেতনার একটি মৌলিক দিক হলো—তাঁর কাব্যভাষা নির্মাণে স্বাতন্ত্র্যবাদী অবস্থান। তিনি সচেতনভাবে বাংলা ভাষায় আরবি-ফারসি শব্দের প্রয়োগে নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। এই শব্দভান্ডার কেবল ভাষার অলংকার ছিল না, বরং তা ছিল তাঁর সংস্কৃতি ও তাহজিব-তামাদ্দুনের প্রতি গভীর আস্থার বহিঃপ্রকাশ। তিনি বিশ্বাস করতেন, একটি জাতির স্বকীয় সাহিত্য নির্মাণের জন্য তার নিজস্ব শব্দভান্ডার ও ঐতিহ্যের মিশ্রণ অপরিহার্য। এই প্রয়াস ছিল কাজী নজরুল ইসলামের হাতে শুরু হওয়া বাংলা কাব্যের সেই ধারার সম্প্রসারণ, যেখানে আরবি-ফারসি মিশ্রিত একটি প্রাণের ভাষা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়েছিল।
সবশেষে বলা যায়, কবি ফররুখ আহমদের কাব্যচেতনা ছিল বস্তুত এক বৈপ্লবিক প্রত্যয় ও শৈল্পিক সংগ্রাম। তাঁর সাহিত্যকর্ম সেই সময়ের বাঙালি মুসলিম সমাজকে আত্ম-অনুসন্ধান ও আত্ম-প্রত্যয়ের পথে চালিত করেছিল। একদিকে তিনি ছিলেন ইসলামি আদর্শ ও ঐতিহ্যের প্রতি দ্বিধাহীনভাবে অনুরক্ত, অন্যদিকে ছিলেন আধুনিক কাব্যশৈলী ও মানবিক মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় আপসহীন। এই দুই আপাত-বিপরীতমুখী চিন্তাধারার শৈল্পিক ও দার্শনিক সমন্বয়ের ফলেই ফররুখ আহমদ বাংলা সাহিত্যে ‘মুসলিম রেনেসাঁর কণ্ঠস্বর’ হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর কবিতা প্রমাণ করে—আত্মপরিচয় ও আধুনিকতা একে অপরের পরিপূরক হতে পারে, যা একটি জাতির জাগরণের পথ দেখায়।
লেখক: রিসার্চ ফেলো, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট

বিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যে ফররুখ আহমদ (১৯১৮-৭৪) এক স্বতন্ত্র ও উজ্জ্বল প্রতিভার নাম। তাঁকে তাঁর কাব্যিক মিশনের কারণে সাধারণত ‘মুসলিম রেনেসাঁর কবি’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তাঁর কাব্যচেতনা ছিল মূলত একটি সামাজিক ও আত্মিক পুনর্জাগরণের ডাক, যেখানে ইসলামি আদর্শ ও বাঙালি মুসলিমের আত্মপরিচয় নির্মাণের আকাঙ্ক্ষা এক শিল্পিত রূপ লাভ করেছিল।
এটি ছিল গভীর মননশীল সাহিত্য-আন্দোলন, যা আত্মবিস্মৃত জাতিকে তার স্বকীয়তা পুনরুদ্ধারে অনুপ্রাণিত করে।
ফররুখ আহমদের আবির্ভাবকাল ছিল বাংলার মুসলিম সমাজের জন্য এক ঘোর সংকটকাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, পঞ্চাশের মন্বন্তর, ঔপনিবেশিক শোষণ ও মুসলিম সমাজের অভ্যন্তরীণ আত্মবিস্মৃতি—এই চতুর্মুখী অন্ধকারে কবি অনুভব করেছিলেন জাতির গভীর নিস্তব্ধতা। এই জরাগ্রস্ত ও হতাশাজনক বাস্তবতা তাঁকে স্থির থাকতে দেয়নি। তাঁর কবিতায় তিনি এই ঐতিহাসিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে এক বিপ্লবী দামামা বাজিয়েছেন।
কবির দৃষ্টিতে, মুসলিমদের অতীত ইতিহাস ছিল শৌর্য, বীরত্ব ও মানবতার। সেই ঐতিহ্য ভেঙে যাওয়ায় জাতির যে অধঃপতন, তা কবিকে ব্যথিত ও উদ্বেলিত করে তোলে।
তিনি উপলব্ধি করেন, এই জাতিকে জাগাতে হলে শুধু রোমান্টিকতা নয়, চাই এমন এক ‘পাঞ্জেরি’ (দিকনির্দেশক), যে অন্ধকার পেরিয়ে মঞ্জিলে পৌঁছানোর পথ দেখাবে। তাঁর শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ ‘সাত সাগরের মাঝি’ (১৯৪৪)-এর কালজয়ী কবিতা ‘পাঞ্জেরি’তে এই আর্তিই ধ্বনিত হয়:
‘রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে?
সেতারা, হেলার এখনো ওঠেনি জেগে?’
এই ‘পাঞ্জেরি’ কবিতা কেবল একটি আশার বাণী নয়, বরং তা একটি জাতীয় আত্মসচেতনতার প্রতীক—যা বাঙালি মুসলিম সমাজকে তার সমৃদ্ধ অতীত ও ইসলামি সভ্যতা-সংস্কৃতির দিকে ফিরে তাকিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শেখায়। এটি ছিল অস্তিত্ব রক্ষার এক তীব্র ব্যাকুলতা।
রেনেসাঁর দার্শনিক ভিত্তি: ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধন
ফররুখ আহমদের রেনেসাঁ চেতনা কেবল অতীত রোমন্থন ছিল না, বরং তা ছিল প্রাচীনকে ধ্বংস না করে পুরোনো ঐতিহ্যের ভিত্তির ওপর নতুন আদর্শ সৃষ্টি করার এক তাত্ত্বিক প্রয়াস। তাঁর চিন্তা ছিল আল্লামা ইকবালের মতো, যিনি পতনোন্মুখ মুসলিমদের মধ্যে আত্মমর্যাদা ও নতুন জীবনবোধ সঞ্চার করতে চেয়েছিলেন। ফররুখ বিশ্বাস করতেন, ইসলামের আদর্শই মানবমুক্তি, স্বাধীনতা ও চিন্তার মুক্তির প্রথম উদ্যোক্তা।
তাঁর এই বিশ্বাস কবিকে মানবতাবাদের প্রেরণা জুগিয়েছে, যা তাঁকে তৎকালীন ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার নির্মম শোষণ ও অমানবিকতার বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ হতে সাহায্য করেছে। ‘লাশ’ কবিতায় তিনি যে অমানবিকতার চিত্র এঁকেছেন, তা প্রমাণ করে তাঁর কাব্য শুধু ধর্মীয় নয়, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মানবিক মুক্তির জন্যও নিবেদিত ছিল। তিনি লেখেন:
‘আজ এই উৎপীড়িত মৃত্যু-দীর্ণ নিখিলের অভিশাপ বও
ধ্বংস হও, তুমি ধ্বংস হও।’
তাঁর কাব্যচেতনা ছিল একটি বিশ্বজনীন আদর্শের প্রতিচ্ছবি, যা নিম্নোক্ত দুটি ধারায় প্রস্ফুটিত হয়েছে—
ফররুখ আহমদের কাব্যচেতনার একটি মৌলিক দিক হলো—তাঁর কাব্যভাষা নির্মাণে স্বাতন্ত্র্যবাদী অবস্থান। তিনি সচেতনভাবে বাংলা ভাষায় আরবি-ফারসি শব্দের প্রয়োগে নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। এই শব্দভান্ডার কেবল ভাষার অলংকার ছিল না, বরং তা ছিল তাঁর সংস্কৃতি ও তাহজিব-তামাদ্দুনের প্রতি গভীর আস্থার বহিঃপ্রকাশ। তিনি বিশ্বাস করতেন, একটি জাতির স্বকীয় সাহিত্য নির্মাণের জন্য তার নিজস্ব শব্দভান্ডার ও ঐতিহ্যের মিশ্রণ অপরিহার্য। এই প্রয়াস ছিল কাজী নজরুল ইসলামের হাতে শুরু হওয়া বাংলা কাব্যের সেই ধারার সম্প্রসারণ, যেখানে আরবি-ফারসি মিশ্রিত একটি প্রাণের ভাষা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়েছিল।
সবশেষে বলা যায়, কবি ফররুখ আহমদের কাব্যচেতনা ছিল বস্তুত এক বৈপ্লবিক প্রত্যয় ও শৈল্পিক সংগ্রাম। তাঁর সাহিত্যকর্ম সেই সময়ের বাঙালি মুসলিম সমাজকে আত্ম-অনুসন্ধান ও আত্ম-প্রত্যয়ের পথে চালিত করেছিল। একদিকে তিনি ছিলেন ইসলামি আদর্শ ও ঐতিহ্যের প্রতি দ্বিধাহীনভাবে অনুরক্ত, অন্যদিকে ছিলেন আধুনিক কাব্যশৈলী ও মানবিক মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় আপসহীন। এই দুই আপাত-বিপরীতমুখী চিন্তাধারার শৈল্পিক ও দার্শনিক সমন্বয়ের ফলেই ফররুখ আহমদ বাংলা সাহিত্যে ‘মুসলিম রেনেসাঁর কণ্ঠস্বর’ হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর কবিতা প্রমাণ করে—আত্মপরিচয় ও আধুনিকতা একে অপরের পরিপূরক হতে পারে, যা একটি জাতির জাগরণের পথ দেখায়।
লেখক: রিসার্চ ফেলো, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট

প্রথমে আকিদা বিশুদ্ধ করতে হয়, এরপর বিশুদ্ধ আকিদার ওপর ইমান আনতে হয়। আকিদার বিশুদ্ধতা ছাড়া ইমানের কোনো সুযোগ ও বাস্তবতা ইসলামে নেই। তাই প্রথম কাজ হিসেবে আকিদার বিশুদ্ধতা নিয়ে অনেক আলোচনা ও লেখালেখি হলেও ইমানের ওপর আলোচনা ও কাজ খুবই কম হয়। তা ছাড়া ইমানের আলোচনায় সমসাময়িক বিষয়গুলো আলোকপাত করা...
২৫ আগস্ট ২০২৫
নামাজের মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে বাকি নামাজটুকু কি শেষ করা যাবে? কিছু মানুষ বলে—‘সিজদার জায়গাটি যদি হালকাভাবেও বোঝা যায়, তাহলেও বাকি নামাজ আদায় করা যাবে। তবে সম্পূর্ণ অন্ধকার হয়ে গেলে আর নামাজ আদায় করা ঠিক হবে না।’ সঠিক উত্তর জানালে উপকৃত হব।
১১ মিনিট আগে
কলকাতার জাকারিয়া স্ট্রিট। ভ্রমণকারীদের চিরচেনা জনপদ। পর্যটকদের পদচারণে মুখর এক ব্যস্ত নগর। সুবিশাল ও প্রশস্ত পথঘাট পেরিয়ে এখানে এলেই মনে হয় যেন একরাশ নীরবতা ভেদ করে প্রবেশ করা হয়েছে কোনো কোলাহলময় জনপদে। রাস্তার দুই পাশে ঝোলানো দোকানের বাহারি সাইনবোর্ড, হরেক রকম খাবারের দোকান, উড়তে থাকা কাবাবের....
২৩ মিনিট আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৮ ঘণ্টা আগে