মুনীরুল ইসলাম
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পরম ক্ষমাশীল। তিনি বান্দাকে ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। ক্ষমা করার বাহানা খোঁজেন। তাঁর সুন্দরতম গুণবাচক নামসমূহের মধ্যে ক্ষমা সম্পর্কিত অনেক নাম রয়েছে। এখানে তেমনই কয়েকটি নামের বিশ্লেষণ তুলে ধরা হলো—
আল-গাফুর
আল্লাহ তাআলার একটি গুণবাচক নাম ‘আল-গাফুর’। এর অর্থ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। গাফুর তিনি, যিনি সবসময় গুনাহ মাফ করেন। যাঁরাই তওবা করেন, সবার তওবা কবুল করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমার রব ক্ষমার ব্যাপারে উদার।’ (সুরা নাজম: ৩২)
হাদিসে এসেছে, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে আদমসন্তান, যদি তোমরা কেউ পৃথিবী সমপরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার কাছে আসো এবং আমার সঙ্গে কাউকে শরিক না করে মিলিত হও, তাহলে আমি পৃথিবী সমপরিমাণ গুনাহও ক্ষমা করে দিব।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৫ / ১৪৭; তিরমিজি: ৩৫৪০; ইবনে মাজাহ: ২ / ১২৫৫)
আল-গাফফার
মহান আল্লাহর আরেকটি নাম ‘আল-গাফফার’। এর অর্থ অতি ক্ষমাশীল, পরম ক্ষমাশীল। গাফফার তিনি, যিনি সবসময় ক্ষমাকারী ও গুনাহ মার্জনাকারী হিসেবে সুপরিচিত। সবাই তাঁর ক্ষমা ও মার্জনার প্রতি মুখাপেক্ষী ও নিরুপায়; যেমনিভাবে সবাই তাঁর রহমত ও দানের প্রতি নিরুপায়। যাঁরা ক্ষমা ও মার্জনাকারী আমল করবেন, তাদের তিনি ক্ষমা ও মার্জনা করবেন বলে ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর অবশ্যই আমি তার প্রতি ক্ষমাশীল, যে তাওবা করে, ইমান আনে এবং সৎকর্ম করে এরপর সৎ পথে চলতে থাকে।’ (সুরা ত্বহা: ৮২)
আত-তাওয়াব
মহান আল্লাহর আরেকটি নাম ‘আত-তাওয়াব’। এর অর্থ তওবা কবুলকারী, ক্ষমাকারী। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই তিনি তওবা কবুলকারী, অতি দয়ালু।’ (সুরা বাকারা: ৩৭)
ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেছেন, ‘তাওয়াব—যিনি সবসময় তওবাকারীর তওবা কবুল করেন, আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তনকারীকে ক্ষমা করেন।’
অতএব যাঁরা আল্লাহর কাছে খাঁটি তওবা করেন, তিনি তাঁদের তওবা কবুল করেন এবং ক্ষমা করে দেন। বান্দার ব্যাপারে আল্লাহর তওবা কবুল করা দুই ধরনের। প্রথমত তিনি তাঁর বান্দার অন্তরে তাঁর কাছে ফিরে আসার তওবার মনোভাব ঢেলে দেন। ফলে বান্দা তওবা ও তওবার শর্তাবলি পালনের মাধ্যমে গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকে, সে তার কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করে, ওই কাজে ফিরে না যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় করে এবং আল্লাহ তাকে খারাপ কাজকে ভালো কাজে বদলে দেন।
দ্বিতীয়ত, বান্দার তওবা গ্রহণ করেন এবং বান্দা যদি খাঁটি তওবা করে তাহলে তিনি তার আগের গুনাহ মাফ করে দেন। খাঁটি তওবার কারণে আগের গুনাহ মাফ হওয়া অত্যাবশ্যকীয়। (আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবিন, পৃষ্ঠা ৭৩; তাওদিহুল কাফিয়া আশ-শাফিয়া, পৃষ্ঠা ১২৬)
আল-আফুউ
মহান আল্লাহর আরেকটি নাম ‘আল-আফুউ’। এর অর্থ শাস্তি মওকুফকারী, গুনাহ ক্ষমাকারী, পাপ মোচনকারী। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ পাপ মোচনকারী, অতীব ক্ষমাশীল।’ (সুরা হজ: ৬০) আল্লাহ তাআলা সহনশীল ও ক্ষমাশীল। তাঁর রয়েছে পূর্ণ ধৈর্য ও সহনশীলতা। এ মহান গুণটি গুনাহগারের গুনাহ ও জালিমের জুলুমের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কারণ, অপরাধের শাস্তি তাৎক্ষণিক হওয়াই উচিত। তবে আল্লাহর সহনশীলতার দাবি হলো, অপরাধীকে সুযোগ দেওয়া ও তাৎক্ষণিক শাস্তি না দেওয়া, যাতে তারা তওবা করতে পারে। আল্লাহর ক্ষমার গুণ তাদের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়ার দাবি করে। আল্লাহর ধৈর্য আসমান ও জমিন সর্বত্র ব্যাপৃত। তাঁর ক্ষমা না থাকলে তিনি জমিনে একটি প্রাণীকেও ছেড়ে দিতেন না।
আল্লাহর পূর্ণ ক্ষমার বহিঃপ্রকাশ হলো, যে ব্যক্তি নিজের প্রতি বারবার জুলুম করেছে, আল্লাহর অবাধ্যতা করেছে, সে তাওবা করলে তিনি তার ছোট-বড় সব গুনাহ ক্ষমা করে দেন। তিনি ইসলাম গ্রহণের কারণে অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেন। একইভাবে তওবাও অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়। (আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবিন, পৃষ্ঠা ৫৬)
আল্লাহ তাআলার এমন আরও অনেক গুণবাচক নাম রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে তাঁর ক্ষমা করার গুণ প্রমাণিত হয়। মহান আল্লাহ তওবা, ইসতিগফার, ইমান, নেক আমল, তাঁর ইবাদতে ইহসান, তাঁর কাছে ক্ষমা চাওয়া, তাঁর দয়া কামনা করা ও আল্লাহর ব্যাপারে ভালো ধারণা করা ইত্যাদিকে মাগফিরাত লাভের মাধ্যম। পবিত্র মাহে রমজানে এসব মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার ক্ষমা পেলে আমরা ইহকাল ও পরকালে সফলতা লাভ করতে পারব।
লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরাম
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পরম ক্ষমাশীল। তিনি বান্দাকে ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। ক্ষমা করার বাহানা খোঁজেন। তাঁর সুন্দরতম গুণবাচক নামসমূহের মধ্যে ক্ষমা সম্পর্কিত অনেক নাম রয়েছে। এখানে তেমনই কয়েকটি নামের বিশ্লেষণ তুলে ধরা হলো—
আল-গাফুর
আল্লাহ তাআলার একটি গুণবাচক নাম ‘আল-গাফুর’। এর অর্থ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। গাফুর তিনি, যিনি সবসময় গুনাহ মাফ করেন। যাঁরাই তওবা করেন, সবার তওবা কবুল করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমার রব ক্ষমার ব্যাপারে উদার।’ (সুরা নাজম: ৩২)
হাদিসে এসেছে, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে আদমসন্তান, যদি তোমরা কেউ পৃথিবী সমপরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার কাছে আসো এবং আমার সঙ্গে কাউকে শরিক না করে মিলিত হও, তাহলে আমি পৃথিবী সমপরিমাণ গুনাহও ক্ষমা করে দিব।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৫ / ১৪৭; তিরমিজি: ৩৫৪০; ইবনে মাজাহ: ২ / ১২৫৫)
আল-গাফফার
মহান আল্লাহর আরেকটি নাম ‘আল-গাফফার’। এর অর্থ অতি ক্ষমাশীল, পরম ক্ষমাশীল। গাফফার তিনি, যিনি সবসময় ক্ষমাকারী ও গুনাহ মার্জনাকারী হিসেবে সুপরিচিত। সবাই তাঁর ক্ষমা ও মার্জনার প্রতি মুখাপেক্ষী ও নিরুপায়; যেমনিভাবে সবাই তাঁর রহমত ও দানের প্রতি নিরুপায়। যাঁরা ক্ষমা ও মার্জনাকারী আমল করবেন, তাদের তিনি ক্ষমা ও মার্জনা করবেন বলে ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর অবশ্যই আমি তার প্রতি ক্ষমাশীল, যে তাওবা করে, ইমান আনে এবং সৎকর্ম করে এরপর সৎ পথে চলতে থাকে।’ (সুরা ত্বহা: ৮২)
আত-তাওয়াব
মহান আল্লাহর আরেকটি নাম ‘আত-তাওয়াব’। এর অর্থ তওবা কবুলকারী, ক্ষমাকারী। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই তিনি তওবা কবুলকারী, অতি দয়ালু।’ (সুরা বাকারা: ৩৭)
ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেছেন, ‘তাওয়াব—যিনি সবসময় তওবাকারীর তওবা কবুল করেন, আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তনকারীকে ক্ষমা করেন।’
অতএব যাঁরা আল্লাহর কাছে খাঁটি তওবা করেন, তিনি তাঁদের তওবা কবুল করেন এবং ক্ষমা করে দেন। বান্দার ব্যাপারে আল্লাহর তওবা কবুল করা দুই ধরনের। প্রথমত তিনি তাঁর বান্দার অন্তরে তাঁর কাছে ফিরে আসার তওবার মনোভাব ঢেলে দেন। ফলে বান্দা তওবা ও তওবার শর্তাবলি পালনের মাধ্যমে গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকে, সে তার কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করে, ওই কাজে ফিরে না যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় করে এবং আল্লাহ তাকে খারাপ কাজকে ভালো কাজে বদলে দেন।
দ্বিতীয়ত, বান্দার তওবা গ্রহণ করেন এবং বান্দা যদি খাঁটি তওবা করে তাহলে তিনি তার আগের গুনাহ মাফ করে দেন। খাঁটি তওবার কারণে আগের গুনাহ মাফ হওয়া অত্যাবশ্যকীয়। (আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবিন, পৃষ্ঠা ৭৩; তাওদিহুল কাফিয়া আশ-শাফিয়া, পৃষ্ঠা ১২৬)
আল-আফুউ
মহান আল্লাহর আরেকটি নাম ‘আল-আফুউ’। এর অর্থ শাস্তি মওকুফকারী, গুনাহ ক্ষমাকারী, পাপ মোচনকারী। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ পাপ মোচনকারী, অতীব ক্ষমাশীল।’ (সুরা হজ: ৬০) আল্লাহ তাআলা সহনশীল ও ক্ষমাশীল। তাঁর রয়েছে পূর্ণ ধৈর্য ও সহনশীলতা। এ মহান গুণটি গুনাহগারের গুনাহ ও জালিমের জুলুমের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কারণ, অপরাধের শাস্তি তাৎক্ষণিক হওয়াই উচিত। তবে আল্লাহর সহনশীলতার দাবি হলো, অপরাধীকে সুযোগ দেওয়া ও তাৎক্ষণিক শাস্তি না দেওয়া, যাতে তারা তওবা করতে পারে। আল্লাহর ক্ষমার গুণ তাদের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়ার দাবি করে। আল্লাহর ধৈর্য আসমান ও জমিন সর্বত্র ব্যাপৃত। তাঁর ক্ষমা না থাকলে তিনি জমিনে একটি প্রাণীকেও ছেড়ে দিতেন না।
আল্লাহর পূর্ণ ক্ষমার বহিঃপ্রকাশ হলো, যে ব্যক্তি নিজের প্রতি বারবার জুলুম করেছে, আল্লাহর অবাধ্যতা করেছে, সে তাওবা করলে তিনি তার ছোট-বড় সব গুনাহ ক্ষমা করে দেন। তিনি ইসলাম গ্রহণের কারণে অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেন। একইভাবে তওবাও অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়। (আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবিন, পৃষ্ঠা ৫৬)
আল্লাহ তাআলার এমন আরও অনেক গুণবাচক নাম রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে তাঁর ক্ষমা করার গুণ প্রমাণিত হয়। মহান আল্লাহ তওবা, ইসতিগফার, ইমান, নেক আমল, তাঁর ইবাদতে ইহসান, তাঁর কাছে ক্ষমা চাওয়া, তাঁর দয়া কামনা করা ও আল্লাহর ব্যাপারে ভালো ধারণা করা ইত্যাদিকে মাগফিরাত লাভের মাধ্যম। পবিত্র মাহে রমজানে এসব মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার ক্ষমা পেলে আমরা ইহকাল ও পরকালে সফলতা লাভ করতে পারব।
লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরাম
তওবা মানে ক্ষমা চেয়ে সঠিক পথে ফিরে আসা। তওবা মানে নিজের ভুল স্বীকার করে প্রায়শ্চিত্ত গড়ার চেষ্টা করা। সহজে বললে—পাপের পথ ছেড়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসা, তাঁর নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করা এবং ভবিষ্যতে সেই পাপে না ফেরার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা করা।
২ ঘণ্টা আগেজীবনের প্রয়োজনে আমরা কখনো কখনো ঋণগ্রস্ত হই। ঋণগ্রস্ত হওয়া জীবন নানা সময় কুফল ডেকে আনে। ঋণের চাপ উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা তৈরি করে। নবী করিম (সা.)-এর শেখানো কিছু দোয়ার মাধ্যমে আমরা ঋণ থেকে মুক্তি পেতে পারি।
১ দিন আগেসুখময় পরিবার জীবনের অমূল্য সম্পদ। সুখী সংসারকে বলা হয় দুনিয়ার জান্নাত। পরিবার আমাদের আশ্রয়, ভালোবাসা ও সাহসের উৎস। পরিবারে একে অপরের পাশে থাকলে সব বাধা সহজে অতিক্রম করা যায়। ছোঁয়া যায় ভালোবাসার আকাশ। মাখা যায় সুখের আবেশ। এ ক্ষেত্রে মহানবী (সা.) হতে পারেন উত্তম আদর্শ। কীভাবে তিনি পারিবারিক ও...
২ দিন আগেজুমার দিন মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে আল্লাহর বিশেষ রহমত বর্ষিত হয়। ইসলামে জুমার দিন সপ্তাহের সেরা হিসেবে বিবেচিত। নবী করিম (সা.) বলেন, পৃথিবীতে যত দিন সূর্য উদিত হবে, তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো জুমার দিন। (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৪)। অন্য এক হাদিসে তিনি বলেন, দিবসসমূহের মধ্যে...
২ দিন আগে