Ajker Patrika

ইসলামের দৃষ্টিতে মালিক–শ্রমিক সম্পর্ক যেমন হবে

আবদুল্লাহ নুর
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে ইসলাম অনন্য। ইসলাম সমাজের সব স্তরের মানুষের অধিকার ও মর্যাদা সুনিশ্চিত করেছে। মালিক-শ্রমিক একজনকে অপরজনের ভাইয়ের মর্যাদা দিয়েছে। এবং শ্রমিকের ঘাম শুকানোর পূর্বেই মালিককে তার মজুরি পরিশোধের নির্দেশও দিয়েছে। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা শ্রমিককে তার শরীরের ঘাম শুকানোর আগেই পারিশ্রমিক দিয়ে দাও।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ২৯৮৭)

নিজে উপার্জিত সম্পদ সর্বোত্তম

প্রত্যেক নবী-রাসুলই বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। কেউ ব্যবসা করতেন, আবার কেউ ভেড়া-দুম্বা লালনপালন করে দিনাতিপাত করতেন। সাহাবায়ে কেরামকেও নবীজি (সা.) বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থেকে উপার্জনের জন্য উৎসাহিত করতেন। আর হাদিসে নিজ হাতে উপার্জিত সম্পদ সর্বোত্তম সম্পদ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। হজরত মিকদাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, এর চেয়ে উত্তম খাদ্য আর নেই, যা মানুষ নিজ হাতে উপার্জনের মাধ্যমে ক্রয় করে। নবী দাউদ (আ.) নিজ হাতে উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। (সহিহ্ বুখারি: ২০২৭)

মালিক-শ্রমিক ভাই ভাই

ইসলামে বৈষম্যের কোনো স্থান নেই। ইসলাম সকল বৈষম্য দূর করে ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে। মালিক-শ্রমিক একে অপরের ভাইয়ের মর্যাদা দিয়েছে। এবং অনৈতিক ভাবে কোনো কাজ চাপিয়ে না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তারা তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাদের তোমাদের অধীন করেছেন। সুতরাং যার ভাইকে তার অধীন করেছেন, সে যেন তাকে তাই খাওয়ায়, যা সে খায়। সেই কাপড় পরিধান করায়, যা সে নিজে পরিধান করে। তাকে সামর্থ্যরে অধিক কোনো কাজের দায়িত্ব দেবে না। যদি এমনটা করতেই হয়, তাহলে সে যেন তাকে সাহায্য করে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৬১৭)

মালিক-শ্রমিকের গুণাবলি

ইসলাম মালিক-শ্রমিক উভয়ের ওপরে কিছু নির্দিষ্ট দায়িত্ব প্রদান করেছে। শ্রমিকের দায়িত্ব হল তার উপার্জিত সম্পদ হালাল ভাবে গ্রহণ করা। আর সম্পদ হালাল তখনই হবে যখন আমানতদারিতা, ন্যায়পরায়ণতা ও কাজের পূর্ণ দক্ষতা নিয়ে সে কাজ করবে। কেননা কিয়ামতের দিন প্রত্যেককে প্রত্যেকের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল। আর তোমাদের প্রত্যেককে সে দায়িত্ব সম্পর্কে জবাব দিতে হবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৭১৩৮)

আর মালিকের দায়িত্ব হল শ্রমিকের প্রতি সর্বদা সহনশীল হওয়া। জুলুম-অত্যাচার না করে তার ভুল-ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখা। হাদিসে এসেছে, এক ব্যক্তি এসে রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, কর্মচারীকে কতবার ক্ষমা করব? রাসুল (সা.) কোনো উত্তর না দিয়ে নীরব থাকলেন। তিনি আবারও জিজ্ঞেস করলে নবীজি (সা.) এবারও কোনো উত্তর দিলেন না। তৃতীয়বার জিজ্ঞেস করার পর উত্তরে বললেন, ‘প্রতিদিন ৭০ বার ক্ষমা করবে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৫১৬৬)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রুয়া নির্বাচন: বিএনপিপন্থীদের বর্জন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জামায়াতপন্থী ২৭ জন নির্বাচিত

সৌদি আরবের কেনা ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলকে দেওয়ার অনুরোধ যুক্তরাষ্ট্রের, প্রত্যাখ্যান করে কিসের ইঙ্গিত দিল রিয়াদ

বীর্যে বিরল অ্যালার্জি, নারীর বন্ধ্যাত্ব নিয়ে চিকিৎসকদের নতুন সতর্কতা

‘পাপ কাহিনী’র হাত ধরে দেশের ওটিটিতে ফিরল অশ্লীলতা

কক্সবাজারে যাওয়ার পথে ২৩ মামলার আসামিকে কুপিয়ে হত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত