মাওলানা ইসমাইল নাজিম
মানবতার মুক্তির দূত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন গণমানুষের ত্রাণকর্তা। সমাজের সব স্তরের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি প্রায়োগিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ইসলামপূর্ব আরবে দাস, গৃহকর্মী, সেবক শ্রেণির কোনো অধিকারই ছিল না। তাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় রাসুল (সা.) তুলনারহিত মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। গৃহকর্মী ও সেবকদের সঙ্গে তিনি কখনো মনিবসুলভ ও কর্তৃত্বপরায়ণ আচরণ করেননি। তাদের চোখে তিনি ছিলেন একজন ছায়াতুল্য বাবা, দরদি অভিভাবক, আদর্শ শিক্ষক, সহমর্মী বন্ধু, স্নেহপরায়ণ ভাই এবং সুখ-দুঃখের চিরসঙ্গী।
রাসুল (সা.)-এর সেবকদের মধ্যে যারা ক্রীতদাস ছিল, সবাইকেই তিনি মুক্ত করে দেন। যারা অবিবাহিত ছিল, তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করেন। তাদের যথাযথ শিক্ষাদানে অন্যদের সঙ্গে কখনোই কোনো ফারাক করেননি তিনি। এ কারণেই তাঁর সেবকদের মধ্য থেকে আনাস ইবনে মালিক, বিলাল ইবনে রাবাহ ও আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর মতো শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী সাহাবিরা তৈরি হয়েছেন।
ভৃত্য-গৃহকর্মীদের মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও যথাযথ সম্মানদানে কখনোই কার্পণ্য করেননি তিনি। নিজে যা পরেছেন, তাদেরও তা পরিয়েছেন। নিজে যা খেয়েছেন, তাদেরও তা খাইয়েছেন। আর সাহাবিদেরও এমন আচরণের আদেশ দিয়েছেন। তাঁর অন্যতম সেবক আবুজর গিফারির ঘটনা বর্ণনা করে মারুর ইবনু সুওয়াদা বলেন, একবার আমি আবুজর গিফারি (রা.)-এর দেখা পেলাম। তাঁর গায়ে তখন এক জোড়া কাপড় আর তাঁর ক্রীতদাসের গায়েও (অনুরূপ) এক জোড়া কাপড় ছিল। তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, একবার এক ক্রীতদাস সাহাবিকে আমি গালি দিয়েছিলাম। সে প্রিয় নবী (সা.)-এর কাছে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করল। তখন নবী (সা.) আমাকে বলেন, ‘তুমি তার মায়ের প্রতি কটাক্ষ করে লজ্জা দিলে?’ তিনি আরও বলেন, ‘শোনো, তোমাদের দাসেরা তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীন করেছেন। কারও ভাই যদি তার অধীনে থাকে, তাহলে সে যা খায়, তা থেকে যেন তাকে খেতে দেয় এবং সে যা পরিধান করে, তা থেকে যেন তাকে পরিধান করায় এবং তাদের সাধ্যাতীত কোনো কাজে যেন বাধ্য না করে। তোমরা যদি তাদের সামর্থ্যের বাইরে কোনো কাজ দাও, তবে তাদের সহযোগিতা কোরো।’ (বুখারি: ৬০৫০)
নবীজির দীর্ঘ ১০ বছরের সেবক আনাস (রা.) আল্লাহর কসম করে তাঁর মানবিকতার সাক্ষ্য দিয়েছেন। ১০ বছরে কখনো তিনি তাঁর প্রতি রুষ্ট হননি, শাসনের নামে নির্যাতনের হাত বাড়াননি। তিনি বলেন, ‘আমি ১০ বছর ধরে রাসুল (সা.)-এর খেদমত করেছি। আল্লাহর কসম, তিনি কোনো দিন আমাকে বকা দেননি। কোনো দিন উফ শব্দ বলেননি। কখনো বলেননি, এই কাজটি কেন করেছ? এই কাজটি কেন করোনি?’ (বুখারি: ৬৪৩০)
কাজের লোকজনের খোঁজখবর নিতে নবীজি কখনো অবহেলা করতেন না। এক ইহুদি বালক তাঁর সেবা করত। সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি নিজেই তাকে দেখতে গিয়েছেন মর্মে হাদিসে উল্লেখ আছে। উম্মু আয়মান নবীজির মুক্ত দাসী ছিলেন, ঘরের কাজকর্ম করতেন। তাঁকে তিনি মায়ের মতো সম্মান করতেন। তাঁর খোঁজখবর নিতেন। নবীজির ভালোবাসায় তিনি নিজের স্বামী-সন্তানকে আল্লাহর পথে কোরবান করে দেন।
প্রিয় নবী (সা.) কাজের লোকজনের প্রতি সদয় আচরণে জোর দিয়েছেন সব সময়। বাস্তবতার বিচারে তারাও ভুল-দুর্বলতার ঊর্ধ্বে নয়। এ ক্ষেত্রে তাদের দুর্বলতাগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, এক লোক একবার রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বলে, ‘গৃহকর্মীদের আমরা আর কতবার ক্ষমা করব?’ তখন তিনি চুপ থাকেন। লোকটি আবার একই প্রশ্ন করে। এভাবে তিনবার প্রশ্ন করার পর রাসুল (সা.) বলেন, ‘তাদের দৈনিক ৭০ বার করে ক্ষমা কোরো।’ (আবু দাউদ: ৪৪৯৬)
মানবতার মুক্তির দূত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন গণমানুষের ত্রাণকর্তা। সমাজের সব স্তরের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি প্রায়োগিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ইসলামপূর্ব আরবে দাস, গৃহকর্মী, সেবক শ্রেণির কোনো অধিকারই ছিল না। তাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় রাসুল (সা.) তুলনারহিত মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। গৃহকর্মী ও সেবকদের সঙ্গে তিনি কখনো মনিবসুলভ ও কর্তৃত্বপরায়ণ আচরণ করেননি। তাদের চোখে তিনি ছিলেন একজন ছায়াতুল্য বাবা, দরদি অভিভাবক, আদর্শ শিক্ষক, সহমর্মী বন্ধু, স্নেহপরায়ণ ভাই এবং সুখ-দুঃখের চিরসঙ্গী।
রাসুল (সা.)-এর সেবকদের মধ্যে যারা ক্রীতদাস ছিল, সবাইকেই তিনি মুক্ত করে দেন। যারা অবিবাহিত ছিল, তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করেন। তাদের যথাযথ শিক্ষাদানে অন্যদের সঙ্গে কখনোই কোনো ফারাক করেননি তিনি। এ কারণেই তাঁর সেবকদের মধ্য থেকে আনাস ইবনে মালিক, বিলাল ইবনে রাবাহ ও আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর মতো শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী সাহাবিরা তৈরি হয়েছেন।
ভৃত্য-গৃহকর্মীদের মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও যথাযথ সম্মানদানে কখনোই কার্পণ্য করেননি তিনি। নিজে যা পরেছেন, তাদেরও তা পরিয়েছেন। নিজে যা খেয়েছেন, তাদেরও তা খাইয়েছেন। আর সাহাবিদেরও এমন আচরণের আদেশ দিয়েছেন। তাঁর অন্যতম সেবক আবুজর গিফারির ঘটনা বর্ণনা করে মারুর ইবনু সুওয়াদা বলেন, একবার আমি আবুজর গিফারি (রা.)-এর দেখা পেলাম। তাঁর গায়ে তখন এক জোড়া কাপড় আর তাঁর ক্রীতদাসের গায়েও (অনুরূপ) এক জোড়া কাপড় ছিল। তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, একবার এক ক্রীতদাস সাহাবিকে আমি গালি দিয়েছিলাম। সে প্রিয় নবী (সা.)-এর কাছে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করল। তখন নবী (সা.) আমাকে বলেন, ‘তুমি তার মায়ের প্রতি কটাক্ষ করে লজ্জা দিলে?’ তিনি আরও বলেন, ‘শোনো, তোমাদের দাসেরা তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীন করেছেন। কারও ভাই যদি তার অধীনে থাকে, তাহলে সে যা খায়, তা থেকে যেন তাকে খেতে দেয় এবং সে যা পরিধান করে, তা থেকে যেন তাকে পরিধান করায় এবং তাদের সাধ্যাতীত কোনো কাজে যেন বাধ্য না করে। তোমরা যদি তাদের সামর্থ্যের বাইরে কোনো কাজ দাও, তবে তাদের সহযোগিতা কোরো।’ (বুখারি: ৬০৫০)
নবীজির দীর্ঘ ১০ বছরের সেবক আনাস (রা.) আল্লাহর কসম করে তাঁর মানবিকতার সাক্ষ্য দিয়েছেন। ১০ বছরে কখনো তিনি তাঁর প্রতি রুষ্ট হননি, শাসনের নামে নির্যাতনের হাত বাড়াননি। তিনি বলেন, ‘আমি ১০ বছর ধরে রাসুল (সা.)-এর খেদমত করেছি। আল্লাহর কসম, তিনি কোনো দিন আমাকে বকা দেননি। কোনো দিন উফ শব্দ বলেননি। কখনো বলেননি, এই কাজটি কেন করেছ? এই কাজটি কেন করোনি?’ (বুখারি: ৬৪৩০)
কাজের লোকজনের খোঁজখবর নিতে নবীজি কখনো অবহেলা করতেন না। এক ইহুদি বালক তাঁর সেবা করত। সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি নিজেই তাকে দেখতে গিয়েছেন মর্মে হাদিসে উল্লেখ আছে। উম্মু আয়মান নবীজির মুক্ত দাসী ছিলেন, ঘরের কাজকর্ম করতেন। তাঁকে তিনি মায়ের মতো সম্মান করতেন। তাঁর খোঁজখবর নিতেন। নবীজির ভালোবাসায় তিনি নিজের স্বামী-সন্তানকে আল্লাহর পথে কোরবান করে দেন।
প্রিয় নবী (সা.) কাজের লোকজনের প্রতি সদয় আচরণে জোর দিয়েছেন সব সময়। বাস্তবতার বিচারে তারাও ভুল-দুর্বলতার ঊর্ধ্বে নয়। এ ক্ষেত্রে তাদের দুর্বলতাগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, এক লোক একবার রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বলে, ‘গৃহকর্মীদের আমরা আর কতবার ক্ষমা করব?’ তখন তিনি চুপ থাকেন। লোকটি আবার একই প্রশ্ন করে। এভাবে তিনবার প্রশ্ন করার পর রাসুল (সা.) বলেন, ‘তাদের দৈনিক ৭০ বার করে ক্ষমা কোরো।’ (আবু দাউদ: ৪৪৯৬)
নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ এবং মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি শুধু একটি আনুষ্ঠানিক ইবাদত নয়; বরং মুমিনের আত্মিক প্রশান্তি, চারিত্রিক পরিশুদ্ধি ও জীবনের ভারসাম্য রক্ষার একটি মহান উপায়। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।
৪ ঘণ্টা আগেআমাদের দৈনন্দিন জীবনে নতুন কাপড় কেনা ও তা পরিধান করা একটি সাধারণ ঘটনা। কেউ ঈদের জন্য কেনে, কেউ বিয়ে-সাদির জন্য, কেউ বা নিজের প্রয়োজনে। নতুন কাপড় কিনে পরিধান করার সময় দোয়া পড়লে আল্লাহর বিশেষ রহমত পাওয়া যায়।
১ দিন আগেসপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম ও সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ দিন। এই দিনটি মুসলমানদের জন্য একটি সাপ্তাহিক ঈদের মতো, যা আত্মশুদ্ধি, ইবাদত এবং কল্যাণ অর্জনের বিশেষ সুযোগ এনে দেয়। এই বরকতময় দিনে কী কী করণীয় তা জানা এবং তা মেনে চলা একজন মুমিনের দায়িত্ব।
২ দিন আগেমানুষের জীবনে সবচেয়ে কষ্টকর মুহূর্তগুলোর একটি হলো আপনজন হারানোর বেদনা। এমন শোকের সময় মানুষ থাকে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত, দুর্বল ও অনেকটা একা। ঠিক তখনই সে আশায় থাকে কারও সহানুভূতির, সান্ত্বনার কিংবা একটু অনুভব করার মতো মানবিক উপস্থিতির। এই বিপদ ও কষ্টের সময়টিতে...
২ দিন আগে