Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ দম্পতি অভিজিৎ ও দুফলো

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ১১
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও এস্থার দুফলো। ছবি: সংগৃহীত
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও এস্থার দুফলো। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ছেন বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী অর্থনীতিবিদ দম্পতি, নোবেলজয়ী এস্থার দুফলো ও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) ছেড়ে সুইজারল্যান্ডের জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিচ্ছেন। আগামী বছর জুলাই থেকে তাঁরা জুরিখের অর্থনীতি অনুষদে কাজ শুরু করবেন।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ফরাসি-মার্কিন নাগরিক দুফলো এমন এক সময়ে এই সিদ্ধান্ত নিলেন, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন গবেষণা তহবিলে ব্যাপক কাটছাঁট এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা ও গবেষণায় স্বাধীনতার ওপর ধারাবাহিক আক্রমণ শুরু করেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রে ‘ব্রেইন ড্রেন’ বা মেধা পাচারের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

মার্কিন নীতির কঠোর সমালোচক দুফলো নিজেও এই উদ্বেগের কথা স্বীকার করেছেন। এর আগে মার্চ মাসে তিনি ফরাসি সংবাদপত্র লা মঁদে একটি সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞান গবেষণার ‘নজিরবিহীন হস্তক্ষেপের’ তীব্র নিন্দা জানান। এই পরিস্থিতিতে জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রখ্যাত দম্পতিকে আকৃষ্ট করতে সফল হলো। অবশ্য জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন পদে যোগ দিলেও এই দম্পতি এমআইটিতে খণ্ডকালীন পদে যুক্ত থাকবেন।

এস্থার দুফলো ও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৯ সালে মাইকেল ক্রেমারের সঙ্গে যৌথভাবে অর্থনীতিতে নোবেল পান। ‘বিশ্বে দারিদ্র্য লাঘবে পরীক্ষামূলক পদ্ধতি’ প্রয়োগের জন্য তাঁরা নোবেল পান। তাঁদের গবেষণা উন্নয়ন অর্থনীতির ক্ষেত্রে র‍্যান্ডমাইজড কন্ট্রোলড ট্রায়াল পদ্ধতি ব্যবহারের পথ উন্মুক্ত করে। এই পদ্ধতি কঠোর বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণে কোন পদক্ষেপ কাজ করে এবং কোনটি করে না, তা যাচাই করতে সাহায্য করে।

জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর লেম্যান ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে দুজনেই বিশেষ অধ্যাপক পদ লাভ করবেন। তাঁরা সেখানে একটি নতুন গবেষণা কেন্দ্র—‘লেম্যান সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট, এডুকেশন অ্যান্ড পাবলিক পলিসি’ প্রতিষ্ঠা ও যৌথভাবে নেতৃত্ব দেবেন। লেম্যান ফাউন্ডেশন এই কর্মসূচিতে সহায়তা করার জন্য ২৬ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ অনুদান দিয়েছে।

জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট মাইকেল শ্যাপম্যান এই যোগদানকে ‘বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী দুই অর্থনীতিবিদের আগমন’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন।

ড. ডুফলো জানান, এই নতুন কেন্দ্র তাঁদের কাজকে আরও সম্প্রসারিত করতে সাহায্য করবে। লেম্যান সেন্টারের মূল লক্ষ্য থাকবে: গবেষণালব্ধ জ্ঞানকে সরাসরি জননীতি প্রণয়নে কাজে লাগানো; উন্নয়ন অর্থনীতিতে আগ্রহী পরবর্তী প্রজন্মের গবেষকদের মেন্টরশিপ দেওয়া; বিশ্বজুড়ে গবেষক এবং শিক্ষা নীতিনির্ধারকদের মধ্যে একটি শক্তিশালী সংযোগ তৈরি করা, যাতে তাঁদের গবেষণা বাস্তবে নীতিগত প্রভাব ফেলতে পারে।

বর্তমানে দুফলো এমআইটিতে উন্নয়ন অর্থনীতি এবং দারিদ্র্য বিমোচনের ‘আব্দুল লতিফ জামিল অধ্যাপক’। তিনি কলেজ ডি ফ্রান্সের দারিদ্র্য ও জননীতি বিভাগের চেয়ারম্যান। এ ছাড়া দুফলো প্যারিস স্কুল অব ইকোনমিকসের সভাপতি। তিনি ইকোনমেট্রিক সোসাইটি, আমেরিকান একাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস এবং ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসের ফেলো।

অভিজিৎ ভারতের মুম্বাইয়ে অর্থনীতির শিক্ষাবিদদের একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৯৮ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি প্রিন্সটন এবং হার্ভার্ডে অধ্যাপক হন।

এরপর তিনি এমআইটিতে ফোর্ড ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল প্রফেসর অব ইকোনমিকস হন। ২০১৫ সালে বিয়ের পর অভিজিৎ এবং দুফলো ‘আব্দুল লতিফ জামিল পোভার্টি অ্যাকশন ল্যাব’ প্রতিষ্ঠায় সেন্দিল মুল্লাইনাথনের সঙ্গে যোগ দেন।

এ ছাড়া অভিজিৎ ইকোনমেট্রিক সোসাইটি, আমেরিকান একাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস এবং ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসের ফেলো।

উল্লেখ্য, এবারের অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম আগামীকাল সোমবার ঘোষণা করা হবে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যুক্তরাষ্ট্রে প্রভাবশালী ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ গ্রেপ্তার

বিহার নির্বাচন: লড়বেন না প্রশান্ত কিশোর, ‘নিশ্চিত পরাজয়’ দেখছেন বিজেপি জোটের

প্রাপ্তবয়স্কদের কনটেন্ট চালু করছে চ্যাটজিপিটি, শিশুদের নিরাপত্তা কোথায়

স্ত্রীর সম্পদ পুনরুদ্ধারে মামলা করা যায়

হামাসকে নিরস্ত্র হতে বাধ্য করা হবে, প্রয়োজনে আমরাই করব সহিংসভাবে: ট্রাম্প

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত