জাহাঙ্গীর আলম

কোভিডের বিরুদ্ধে টিকাগুলোর বেশির ভাগই আগেভাগে কিনে গুদামজাত করে ফেলেছে ধনী রাষ্ট্রগুলো। তাদের কারণে ঝুঁকির মুখে পড়েছে দরিদ্ররা। অথচ তারাই এখনো আশানুরূপ টিকা দান নিশ্চিত করতে পারেনি। ফলে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের লাগামহীন সংক্রমণ ধনী দেশগুলোকে নতুন করে বিধিনিষেধের পথে হাঁটতে বাধ্য করছে।
আর ওদিকে যে দ্বীপ দেশটি আলো জ্বালাতেই হিমশিম খায় তারা এরই মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি জনগণকে টিকা দিয়ে ফেলেছে।
উনিশ শতকে স্পেনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম নায়ক জেনারেল ম্যাক্সিমো গোমেজ একসময় বলেছিলেন, ‘কিউবানরা হয় লক্ষ্য ছোঁয় না- নয়তো লক্ষ্যকে অতিক্রম করে চলে যায়!’
দেড় শতাব্দী পরে তাঁর সেই বাণীই সত্য হলো! দুর্দশাগ্রস্ত অর্থনীতির দ্বীপটির হয়তো আলো জ্বালানোর সামর্থ্য নেই, কিন্তু তারাই এখন বিশ্বের যেকোনো বড় দেশের তুলনায় কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি সফলতা দেখিয়েছে।
সরকারি তথ্য এবং পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, জনসংখ্যার ৯০ শতাংশের বেশি কিউবান অন্তত একটি ডোজ টিকা পেয়েছেন। আর ৮৩ শতাংশ জনগণ পেয়েছে পূর্ণ ডোজ। দেশে উদ্ভাবিত কোভিড টিকাই দিয়েছে কিউবা। ১০ লাখের বেশি জনসংখ্যার দেশগুলির মধ্যে একমাত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতেরই ব্যাপকভিত্তিক টিকা নিশ্চিত করার রেকর্ড রয়েছে।
কানাডার ডালহৌসি ইউনিভার্সিটির ল্যাটিন আমেরিকান স্টাডিজের ইমেরিটাস অধ্যাপক জন কার্ক বলেন, ‘কিউবা এক জাদু বাস্তবতার দেশ! মাত্র ১ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যা এবং সীমিত আয় নিয়ে কিউবা একটি প্রাণপ্রযুক্তিতে শক্তিধর দেশ হতে পারে, এমন ধারণা ফাইজারে কর্মরত কারও পক্ষে বোধগম্য হবে না। কিন্তু কিউবার পক্ষেই এটি সম্ভব!’
বেশিরভাগ লাতিন আমেরিকার দেশের মতো, কিউবাও জানত যে টিকা কিনতে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়তে হবে। তাই ২০২০ সালের মার্চে, পর্যটন রাজস্ব হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার বিপর্যয় সঙ্গী করে দ্বীপ রাষ্ট্রটির বিজ্ঞানীরা কোমর বেঁধে নেমেছিলেন।
বলতে গেলে তাঁরা জুয়া খেলতে নেমেছিলেন: জিতেও গেছেন। ২০২১-এর বসন্তের মধ্যে কিউবা বিশ্বের সবচেয়ে ছোট দেশ হিসেবে সফলভাবে নিজস্ব কোভিড টিকা উদ্ভাবন ও উৎপাদন শুরু করে। এরপর থেকেই দক্ষ ও আন্তরিক স্বাস্থ্যকর্মী, সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবার বিপর্যয়ের ঝুঁকি কাঁধে নিয়ে দ্রুত টিকা দান কর্মসূচি শুরু করে। এমনকি শিশুদেরও টিকা দিয়েছে কিউবা। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে, এখানে জনগণ স্বেচ্ছায় টিকা নিয়েছে। যেখানে পশ্চিমা দেশগুলোতে টিকা বিরোধিতা বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত বসন্তে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফল অনুসারে, কিউবার দুটি কোভিড টিকাই ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকর। সফল টিকাদান কর্মসূচিই দেশটিতে সংক্রমণের হার ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়েছে। যেখানে গত গ্রীষ্মে পশ্চিম গোলার্ধের দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণের দেশগুলোর মধ্যে ছিল কিউবা।
গত আগস্টে কিউবা প্রতি সপ্তাহেই কোভিডে শত শত মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যেখানে গত সপ্তাহে মৃত্যু ছিল তিনজন।
সর্বজনীন টিকা দানে কিউবার এই সাফল্য আলাদা করে উল্লেখ করার মতো ঘটনা, যখন অবরোধে জেরবার দেশটিতে স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য খাতের অবস্থা অত্যন্ত ভঙ্গুর। গত দুই বছরে অভ্যন্তরীণ মুদ্রা প্রবাহ অর্ধেকে নেমে গেছে, দেশটিতে অ্যান্টিবায়োটিক এখন এতটাই দুষ্প্রাপ্য যে অ্যামোক্সিসিলিনের ২০টি ট্যাবলেট কালোবাজার থেকে কিনতে এক মাসের ন্যূনতম সরকারি বেতনের সমান টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
ভাঙা হাড়ের চিকিৎসায় প্লাস্টার করতে কিছু প্রদেশের ডাক্তারেরা এখন ব্যবহৃত কার্ডবোর্ডের ওপর নির্ভর করছেন!
হাভানা-ভিত্তিক আইনজীবী গ্রেগরি বিনিওস্কি ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘১৯৫৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে, কিউবানরা এই মহান ক্রুসেডগুলো শুরু করেছে। খুবই অবাস্তব, তবুও প্রায়ই সফল হই।’
উদাহরণ হিসেবে বিনিওস্কি বলেন, ‘সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর প্রাণপ্রযুক্তিতে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের এক স্বপ্ন ফিদেল কাস্ত্রোর পরিকল্পনার পাইপলাইনে ছিল। ওই সময় যেকোনো যুক্তিবাদী পরামর্শকই বলতেন, যে প্রকল্পের ফল পেতে ২৫ বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে সেখানে সম্পদ বিনিয়োগ করার সময় এটি নয়। তবুও আমরা কিন্তু এখন এখানে… যেখানে প্রাণপ্রযুক্তিতে বিনিয়োগের ফলই এখন জীবন বাঁচাচ্ছে।’
অবশ্য কাস্ত্রোর সব পরিকল্পনাই কাজ করেছে এমন নয়। বেশ কিছু উদ্যোগই নাটকীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। যেমন, ১৯৭০ সালে ১ কোটি টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যে আখ চাষ উৎসাহিত করার উদ্যোগের কথা বলা যায়। শ্রমিকদের নিয়মিত কাজ থেকে এনে আখ কাটতে লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই পদক্ষেপ শিল্পকে পঙ্গু করে দেয়। ফলত অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়ায়।
গত বছর কিউবা ১৯৫৯ সালের তুলনায় সাত গুণ কম চিনি সংগ্রহ করেছে।
কানাডার রয়্যাল মিলিটারি কলেজের ইতিহাস ও কৌশলের ইমেরিটাস অধ্যাপক হ্যাল ক্লেপাক বলেন, ‘একটি জাতি হিসেবে বড় জিনিসগুলোতে বেশি ভালো করার প্রবণতা থাকে। আর সাধারণ বিষয়গুলোর ব্যাপারে উদাসীনতার কারণে ভয়ংকর ফল হয়। যেমন, এক দশকের কম সময়ের মধ্যে পুরো দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা, আড়াই বছরে নিরক্ষরতা দূর করা এবং চিকিৎসা আন্তর্জাতিকীকরণ- এগুলো সবই ছিল পাগলামি। কিন্তু তারা (কিউবা) এটা করেছে।’
আজ কিউবা হাজার হাজার চিকিৎসক এবং নার্স তৈরি করছে। তাঁরা বিদেশে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে মানবিক কাজ করছেন। কিন্তু দেশের জনগণের জন্য পর্যাপ্ত আলু উৎপাদনে ব্যর্থ হচ্ছে কিউবা। এটা সত্যিই একটা ট্র্যাজেডি!
এর জন্য দায়ী করা যেতে পারে কিউবার অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত এবং রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা ব্যবস্থাকেই। বিশ্বে এ ধরনের রাষ্ট্র ব্যবস্থার সর্বশেষ দৃষ্টান্তগুলো একটি হয়ে আছে কিউবা। উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের প্যারাডক্স (কূটাভাস) ব্যাখ্যা করার কিছু উপাদান হয়তো তারা রেখে যাচ্ছে। শীর্ষ পর্যায়ে যখন রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকে তখন ইতিবাচক লক্ষ্যগুলোকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। যখন সঠিক দিকনির্দেশের অভাব হয়, তখন দ্বীপ দেশটির কঠোর অনমনীয় সরকার ব্যবস্থার হাল ধরতে সামনে এসে হাজির হয় কাফকায়েস্ক আমলাতন্ত্র। যাদের প্রকৃত কোনো লক্ষ্য উদ্দেশ্য, দায় কিছুই না থাকার মতো এক ভয়ংকর কদর্য রূপ অনেক দেশে মাঝে মধ্যে প্রকাশিত হয়ে পড়ে।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিন একজন কোভিড রোগী শনাক্ত হচ্ছে কিউবায়। অত্যন্ত সংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণেই সংক্রমণের হার এখন বাড়ছে। কিউবার বিজ্ঞানীরা ওমিক্রনের বিরুদ্ধে তাঁদের টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে এখনো তথ্য প্রকাশ করেননি। টিকাটি হালনাগাদ করার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
এরই মধ্যে, কিউবার জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করেছে। চলতি জানুয়ারি মাসেই প্রায় শতভাগ বুস্টার ডোজ দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে কিউবা।

কোভিডের বিরুদ্ধে টিকাগুলোর বেশির ভাগই আগেভাগে কিনে গুদামজাত করে ফেলেছে ধনী রাষ্ট্রগুলো। তাদের কারণে ঝুঁকির মুখে পড়েছে দরিদ্ররা। অথচ তারাই এখনো আশানুরূপ টিকা দান নিশ্চিত করতে পারেনি। ফলে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের লাগামহীন সংক্রমণ ধনী দেশগুলোকে নতুন করে বিধিনিষেধের পথে হাঁটতে বাধ্য করছে।
আর ওদিকে যে দ্বীপ দেশটি আলো জ্বালাতেই হিমশিম খায় তারা এরই মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি জনগণকে টিকা দিয়ে ফেলেছে।
উনিশ শতকে স্পেনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম নায়ক জেনারেল ম্যাক্সিমো গোমেজ একসময় বলেছিলেন, ‘কিউবানরা হয় লক্ষ্য ছোঁয় না- নয়তো লক্ষ্যকে অতিক্রম করে চলে যায়!’
দেড় শতাব্দী পরে তাঁর সেই বাণীই সত্য হলো! দুর্দশাগ্রস্ত অর্থনীতির দ্বীপটির হয়তো আলো জ্বালানোর সামর্থ্য নেই, কিন্তু তারাই এখন বিশ্বের যেকোনো বড় দেশের তুলনায় কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি সফলতা দেখিয়েছে।
সরকারি তথ্য এবং পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, জনসংখ্যার ৯০ শতাংশের বেশি কিউবান অন্তত একটি ডোজ টিকা পেয়েছেন। আর ৮৩ শতাংশ জনগণ পেয়েছে পূর্ণ ডোজ। দেশে উদ্ভাবিত কোভিড টিকাই দিয়েছে কিউবা। ১০ লাখের বেশি জনসংখ্যার দেশগুলির মধ্যে একমাত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতেরই ব্যাপকভিত্তিক টিকা নিশ্চিত করার রেকর্ড রয়েছে।
কানাডার ডালহৌসি ইউনিভার্সিটির ল্যাটিন আমেরিকান স্টাডিজের ইমেরিটাস অধ্যাপক জন কার্ক বলেন, ‘কিউবা এক জাদু বাস্তবতার দেশ! মাত্র ১ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যা এবং সীমিত আয় নিয়ে কিউবা একটি প্রাণপ্রযুক্তিতে শক্তিধর দেশ হতে পারে, এমন ধারণা ফাইজারে কর্মরত কারও পক্ষে বোধগম্য হবে না। কিন্তু কিউবার পক্ষেই এটি সম্ভব!’
বেশিরভাগ লাতিন আমেরিকার দেশের মতো, কিউবাও জানত যে টিকা কিনতে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়তে হবে। তাই ২০২০ সালের মার্চে, পর্যটন রাজস্ব হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার বিপর্যয় সঙ্গী করে দ্বীপ রাষ্ট্রটির বিজ্ঞানীরা কোমর বেঁধে নেমেছিলেন।
বলতে গেলে তাঁরা জুয়া খেলতে নেমেছিলেন: জিতেও গেছেন। ২০২১-এর বসন্তের মধ্যে কিউবা বিশ্বের সবচেয়ে ছোট দেশ হিসেবে সফলভাবে নিজস্ব কোভিড টিকা উদ্ভাবন ও উৎপাদন শুরু করে। এরপর থেকেই দক্ষ ও আন্তরিক স্বাস্থ্যকর্মী, সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবার বিপর্যয়ের ঝুঁকি কাঁধে নিয়ে দ্রুত টিকা দান কর্মসূচি শুরু করে। এমনকি শিশুদেরও টিকা দিয়েছে কিউবা। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে, এখানে জনগণ স্বেচ্ছায় টিকা নিয়েছে। যেখানে পশ্চিমা দেশগুলোতে টিকা বিরোধিতা বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত বসন্তে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফল অনুসারে, কিউবার দুটি কোভিড টিকাই ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকর। সফল টিকাদান কর্মসূচিই দেশটিতে সংক্রমণের হার ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়েছে। যেখানে গত গ্রীষ্মে পশ্চিম গোলার্ধের দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণের দেশগুলোর মধ্যে ছিল কিউবা।
গত আগস্টে কিউবা প্রতি সপ্তাহেই কোভিডে শত শত মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যেখানে গত সপ্তাহে মৃত্যু ছিল তিনজন।
সর্বজনীন টিকা দানে কিউবার এই সাফল্য আলাদা করে উল্লেখ করার মতো ঘটনা, যখন অবরোধে জেরবার দেশটিতে স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য খাতের অবস্থা অত্যন্ত ভঙ্গুর। গত দুই বছরে অভ্যন্তরীণ মুদ্রা প্রবাহ অর্ধেকে নেমে গেছে, দেশটিতে অ্যান্টিবায়োটিক এখন এতটাই দুষ্প্রাপ্য যে অ্যামোক্সিসিলিনের ২০টি ট্যাবলেট কালোবাজার থেকে কিনতে এক মাসের ন্যূনতম সরকারি বেতনের সমান টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
ভাঙা হাড়ের চিকিৎসায় প্লাস্টার করতে কিছু প্রদেশের ডাক্তারেরা এখন ব্যবহৃত কার্ডবোর্ডের ওপর নির্ভর করছেন!
হাভানা-ভিত্তিক আইনজীবী গ্রেগরি বিনিওস্কি ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘১৯৫৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে, কিউবানরা এই মহান ক্রুসেডগুলো শুরু করেছে। খুবই অবাস্তব, তবুও প্রায়ই সফল হই।’
উদাহরণ হিসেবে বিনিওস্কি বলেন, ‘সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর প্রাণপ্রযুক্তিতে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের এক স্বপ্ন ফিদেল কাস্ত্রোর পরিকল্পনার পাইপলাইনে ছিল। ওই সময় যেকোনো যুক্তিবাদী পরামর্শকই বলতেন, যে প্রকল্পের ফল পেতে ২৫ বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে সেখানে সম্পদ বিনিয়োগ করার সময় এটি নয়। তবুও আমরা কিন্তু এখন এখানে… যেখানে প্রাণপ্রযুক্তিতে বিনিয়োগের ফলই এখন জীবন বাঁচাচ্ছে।’
অবশ্য কাস্ত্রোর সব পরিকল্পনাই কাজ করেছে এমন নয়। বেশ কিছু উদ্যোগই নাটকীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। যেমন, ১৯৭০ সালে ১ কোটি টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যে আখ চাষ উৎসাহিত করার উদ্যোগের কথা বলা যায়। শ্রমিকদের নিয়মিত কাজ থেকে এনে আখ কাটতে লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই পদক্ষেপ শিল্পকে পঙ্গু করে দেয়। ফলত অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়ায়।
গত বছর কিউবা ১৯৫৯ সালের তুলনায় সাত গুণ কম চিনি সংগ্রহ করেছে।
কানাডার রয়্যাল মিলিটারি কলেজের ইতিহাস ও কৌশলের ইমেরিটাস অধ্যাপক হ্যাল ক্লেপাক বলেন, ‘একটি জাতি হিসেবে বড় জিনিসগুলোতে বেশি ভালো করার প্রবণতা থাকে। আর সাধারণ বিষয়গুলোর ব্যাপারে উদাসীনতার কারণে ভয়ংকর ফল হয়। যেমন, এক দশকের কম সময়ের মধ্যে পুরো দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা, আড়াই বছরে নিরক্ষরতা দূর করা এবং চিকিৎসা আন্তর্জাতিকীকরণ- এগুলো সবই ছিল পাগলামি। কিন্তু তারা (কিউবা) এটা করেছে।’
আজ কিউবা হাজার হাজার চিকিৎসক এবং নার্স তৈরি করছে। তাঁরা বিদেশে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে মানবিক কাজ করছেন। কিন্তু দেশের জনগণের জন্য পর্যাপ্ত আলু উৎপাদনে ব্যর্থ হচ্ছে কিউবা। এটা সত্যিই একটা ট্র্যাজেডি!
এর জন্য দায়ী করা যেতে পারে কিউবার অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত এবং রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা ব্যবস্থাকেই। বিশ্বে এ ধরনের রাষ্ট্র ব্যবস্থার সর্বশেষ দৃষ্টান্তগুলো একটি হয়ে আছে কিউবা। উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের প্যারাডক্স (কূটাভাস) ব্যাখ্যা করার কিছু উপাদান হয়তো তারা রেখে যাচ্ছে। শীর্ষ পর্যায়ে যখন রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকে তখন ইতিবাচক লক্ষ্যগুলোকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। যখন সঠিক দিকনির্দেশের অভাব হয়, তখন দ্বীপ দেশটির কঠোর অনমনীয় সরকার ব্যবস্থার হাল ধরতে সামনে এসে হাজির হয় কাফকায়েস্ক আমলাতন্ত্র। যাদের প্রকৃত কোনো লক্ষ্য উদ্দেশ্য, দায় কিছুই না থাকার মতো এক ভয়ংকর কদর্য রূপ অনেক দেশে মাঝে মধ্যে প্রকাশিত হয়ে পড়ে।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিন একজন কোভিড রোগী শনাক্ত হচ্ছে কিউবায়। অত্যন্ত সংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণেই সংক্রমণের হার এখন বাড়ছে। কিউবার বিজ্ঞানীরা ওমিক্রনের বিরুদ্ধে তাঁদের টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে এখনো তথ্য প্রকাশ করেননি। টিকাটি হালনাগাদ করার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
এরই মধ্যে, কিউবার জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করেছে। চলতি জানুয়ারি মাসেই প্রায় শতভাগ বুস্টার ডোজ দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে কিউবা।
জাহাঙ্গীর আলম

কোভিডের বিরুদ্ধে টিকাগুলোর বেশির ভাগই আগেভাগে কিনে গুদামজাত করে ফেলেছে ধনী রাষ্ট্রগুলো। তাদের কারণে ঝুঁকির মুখে পড়েছে দরিদ্ররা। অথচ তারাই এখনো আশানুরূপ টিকা দান নিশ্চিত করতে পারেনি। ফলে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের লাগামহীন সংক্রমণ ধনী দেশগুলোকে নতুন করে বিধিনিষেধের পথে হাঁটতে বাধ্য করছে।
আর ওদিকে যে দ্বীপ দেশটি আলো জ্বালাতেই হিমশিম খায় তারা এরই মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি জনগণকে টিকা দিয়ে ফেলেছে।
উনিশ শতকে স্পেনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম নায়ক জেনারেল ম্যাক্সিমো গোমেজ একসময় বলেছিলেন, ‘কিউবানরা হয় লক্ষ্য ছোঁয় না- নয়তো লক্ষ্যকে অতিক্রম করে চলে যায়!’
দেড় শতাব্দী পরে তাঁর সেই বাণীই সত্য হলো! দুর্দশাগ্রস্ত অর্থনীতির দ্বীপটির হয়তো আলো জ্বালানোর সামর্থ্য নেই, কিন্তু তারাই এখন বিশ্বের যেকোনো বড় দেশের তুলনায় কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি সফলতা দেখিয়েছে।
সরকারি তথ্য এবং পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, জনসংখ্যার ৯০ শতাংশের বেশি কিউবান অন্তত একটি ডোজ টিকা পেয়েছেন। আর ৮৩ শতাংশ জনগণ পেয়েছে পূর্ণ ডোজ। দেশে উদ্ভাবিত কোভিড টিকাই দিয়েছে কিউবা। ১০ লাখের বেশি জনসংখ্যার দেশগুলির মধ্যে একমাত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতেরই ব্যাপকভিত্তিক টিকা নিশ্চিত করার রেকর্ড রয়েছে।
কানাডার ডালহৌসি ইউনিভার্সিটির ল্যাটিন আমেরিকান স্টাডিজের ইমেরিটাস অধ্যাপক জন কার্ক বলেন, ‘কিউবা এক জাদু বাস্তবতার দেশ! মাত্র ১ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যা এবং সীমিত আয় নিয়ে কিউবা একটি প্রাণপ্রযুক্তিতে শক্তিধর দেশ হতে পারে, এমন ধারণা ফাইজারে কর্মরত কারও পক্ষে বোধগম্য হবে না। কিন্তু কিউবার পক্ষেই এটি সম্ভব!’
বেশিরভাগ লাতিন আমেরিকার দেশের মতো, কিউবাও জানত যে টিকা কিনতে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়তে হবে। তাই ২০২০ সালের মার্চে, পর্যটন রাজস্ব হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার বিপর্যয় সঙ্গী করে দ্বীপ রাষ্ট্রটির বিজ্ঞানীরা কোমর বেঁধে নেমেছিলেন।
বলতে গেলে তাঁরা জুয়া খেলতে নেমেছিলেন: জিতেও গেছেন। ২০২১-এর বসন্তের মধ্যে কিউবা বিশ্বের সবচেয়ে ছোট দেশ হিসেবে সফলভাবে নিজস্ব কোভিড টিকা উদ্ভাবন ও উৎপাদন শুরু করে। এরপর থেকেই দক্ষ ও আন্তরিক স্বাস্থ্যকর্মী, সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবার বিপর্যয়ের ঝুঁকি কাঁধে নিয়ে দ্রুত টিকা দান কর্মসূচি শুরু করে। এমনকি শিশুদেরও টিকা দিয়েছে কিউবা। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে, এখানে জনগণ স্বেচ্ছায় টিকা নিয়েছে। যেখানে পশ্চিমা দেশগুলোতে টিকা বিরোধিতা বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত বসন্তে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফল অনুসারে, কিউবার দুটি কোভিড টিকাই ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকর। সফল টিকাদান কর্মসূচিই দেশটিতে সংক্রমণের হার ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়েছে। যেখানে গত গ্রীষ্মে পশ্চিম গোলার্ধের দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণের দেশগুলোর মধ্যে ছিল কিউবা।
গত আগস্টে কিউবা প্রতি সপ্তাহেই কোভিডে শত শত মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যেখানে গত সপ্তাহে মৃত্যু ছিল তিনজন।
সর্বজনীন টিকা দানে কিউবার এই সাফল্য আলাদা করে উল্লেখ করার মতো ঘটনা, যখন অবরোধে জেরবার দেশটিতে স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য খাতের অবস্থা অত্যন্ত ভঙ্গুর। গত দুই বছরে অভ্যন্তরীণ মুদ্রা প্রবাহ অর্ধেকে নেমে গেছে, দেশটিতে অ্যান্টিবায়োটিক এখন এতটাই দুষ্প্রাপ্য যে অ্যামোক্সিসিলিনের ২০টি ট্যাবলেট কালোবাজার থেকে কিনতে এক মাসের ন্যূনতম সরকারি বেতনের সমান টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
ভাঙা হাড়ের চিকিৎসায় প্লাস্টার করতে কিছু প্রদেশের ডাক্তারেরা এখন ব্যবহৃত কার্ডবোর্ডের ওপর নির্ভর করছেন!
হাভানা-ভিত্তিক আইনজীবী গ্রেগরি বিনিওস্কি ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘১৯৫৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে, কিউবানরা এই মহান ক্রুসেডগুলো শুরু করেছে। খুবই অবাস্তব, তবুও প্রায়ই সফল হই।’
উদাহরণ হিসেবে বিনিওস্কি বলেন, ‘সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর প্রাণপ্রযুক্তিতে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের এক স্বপ্ন ফিদেল কাস্ত্রোর পরিকল্পনার পাইপলাইনে ছিল। ওই সময় যেকোনো যুক্তিবাদী পরামর্শকই বলতেন, যে প্রকল্পের ফল পেতে ২৫ বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে সেখানে সম্পদ বিনিয়োগ করার সময় এটি নয়। তবুও আমরা কিন্তু এখন এখানে… যেখানে প্রাণপ্রযুক্তিতে বিনিয়োগের ফলই এখন জীবন বাঁচাচ্ছে।’
অবশ্য কাস্ত্রোর সব পরিকল্পনাই কাজ করেছে এমন নয়। বেশ কিছু উদ্যোগই নাটকীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। যেমন, ১৯৭০ সালে ১ কোটি টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যে আখ চাষ উৎসাহিত করার উদ্যোগের কথা বলা যায়। শ্রমিকদের নিয়মিত কাজ থেকে এনে আখ কাটতে লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই পদক্ষেপ শিল্পকে পঙ্গু করে দেয়। ফলত অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়ায়।
গত বছর কিউবা ১৯৫৯ সালের তুলনায় সাত গুণ কম চিনি সংগ্রহ করেছে।
কানাডার রয়্যাল মিলিটারি কলেজের ইতিহাস ও কৌশলের ইমেরিটাস অধ্যাপক হ্যাল ক্লেপাক বলেন, ‘একটি জাতি হিসেবে বড় জিনিসগুলোতে বেশি ভালো করার প্রবণতা থাকে। আর সাধারণ বিষয়গুলোর ব্যাপারে উদাসীনতার কারণে ভয়ংকর ফল হয়। যেমন, এক দশকের কম সময়ের মধ্যে পুরো দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা, আড়াই বছরে নিরক্ষরতা দূর করা এবং চিকিৎসা আন্তর্জাতিকীকরণ- এগুলো সবই ছিল পাগলামি। কিন্তু তারা (কিউবা) এটা করেছে।’
আজ কিউবা হাজার হাজার চিকিৎসক এবং নার্স তৈরি করছে। তাঁরা বিদেশে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে মানবিক কাজ করছেন। কিন্তু দেশের জনগণের জন্য পর্যাপ্ত আলু উৎপাদনে ব্যর্থ হচ্ছে কিউবা। এটা সত্যিই একটা ট্র্যাজেডি!
এর জন্য দায়ী করা যেতে পারে কিউবার অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত এবং রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা ব্যবস্থাকেই। বিশ্বে এ ধরনের রাষ্ট্র ব্যবস্থার সর্বশেষ দৃষ্টান্তগুলো একটি হয়ে আছে কিউবা। উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের প্যারাডক্স (কূটাভাস) ব্যাখ্যা করার কিছু উপাদান হয়তো তারা রেখে যাচ্ছে। শীর্ষ পর্যায়ে যখন রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকে তখন ইতিবাচক লক্ষ্যগুলোকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। যখন সঠিক দিকনির্দেশের অভাব হয়, তখন দ্বীপ দেশটির কঠোর অনমনীয় সরকার ব্যবস্থার হাল ধরতে সামনে এসে হাজির হয় কাফকায়েস্ক আমলাতন্ত্র। যাদের প্রকৃত কোনো লক্ষ্য উদ্দেশ্য, দায় কিছুই না থাকার মতো এক ভয়ংকর কদর্য রূপ অনেক দেশে মাঝে মধ্যে প্রকাশিত হয়ে পড়ে।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিন একজন কোভিড রোগী শনাক্ত হচ্ছে কিউবায়। অত্যন্ত সংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণেই সংক্রমণের হার এখন বাড়ছে। কিউবার বিজ্ঞানীরা ওমিক্রনের বিরুদ্ধে তাঁদের টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে এখনো তথ্য প্রকাশ করেননি। টিকাটি হালনাগাদ করার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
এরই মধ্যে, কিউবার জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করেছে। চলতি জানুয়ারি মাসেই প্রায় শতভাগ বুস্টার ডোজ দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে কিউবা।

কোভিডের বিরুদ্ধে টিকাগুলোর বেশির ভাগই আগেভাগে কিনে গুদামজাত করে ফেলেছে ধনী রাষ্ট্রগুলো। তাদের কারণে ঝুঁকির মুখে পড়েছে দরিদ্ররা। অথচ তারাই এখনো আশানুরূপ টিকা দান নিশ্চিত করতে পারেনি। ফলে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের লাগামহীন সংক্রমণ ধনী দেশগুলোকে নতুন করে বিধিনিষেধের পথে হাঁটতে বাধ্য করছে।
আর ওদিকে যে দ্বীপ দেশটি আলো জ্বালাতেই হিমশিম খায় তারা এরই মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি জনগণকে টিকা দিয়ে ফেলেছে।
উনিশ শতকে স্পেনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম নায়ক জেনারেল ম্যাক্সিমো গোমেজ একসময় বলেছিলেন, ‘কিউবানরা হয় লক্ষ্য ছোঁয় না- নয়তো লক্ষ্যকে অতিক্রম করে চলে যায়!’
দেড় শতাব্দী পরে তাঁর সেই বাণীই সত্য হলো! দুর্দশাগ্রস্ত অর্থনীতির দ্বীপটির হয়তো আলো জ্বালানোর সামর্থ্য নেই, কিন্তু তারাই এখন বিশ্বের যেকোনো বড় দেশের তুলনায় কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি সফলতা দেখিয়েছে।
সরকারি তথ্য এবং পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, জনসংখ্যার ৯০ শতাংশের বেশি কিউবান অন্তত একটি ডোজ টিকা পেয়েছেন। আর ৮৩ শতাংশ জনগণ পেয়েছে পূর্ণ ডোজ। দেশে উদ্ভাবিত কোভিড টিকাই দিয়েছে কিউবা। ১০ লাখের বেশি জনসংখ্যার দেশগুলির মধ্যে একমাত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতেরই ব্যাপকভিত্তিক টিকা নিশ্চিত করার রেকর্ড রয়েছে।
কানাডার ডালহৌসি ইউনিভার্সিটির ল্যাটিন আমেরিকান স্টাডিজের ইমেরিটাস অধ্যাপক জন কার্ক বলেন, ‘কিউবা এক জাদু বাস্তবতার দেশ! মাত্র ১ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যা এবং সীমিত আয় নিয়ে কিউবা একটি প্রাণপ্রযুক্তিতে শক্তিধর দেশ হতে পারে, এমন ধারণা ফাইজারে কর্মরত কারও পক্ষে বোধগম্য হবে না। কিন্তু কিউবার পক্ষেই এটি সম্ভব!’
বেশিরভাগ লাতিন আমেরিকার দেশের মতো, কিউবাও জানত যে টিকা কিনতে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়তে হবে। তাই ২০২০ সালের মার্চে, পর্যটন রাজস্ব হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার বিপর্যয় সঙ্গী করে দ্বীপ রাষ্ট্রটির বিজ্ঞানীরা কোমর বেঁধে নেমেছিলেন।
বলতে গেলে তাঁরা জুয়া খেলতে নেমেছিলেন: জিতেও গেছেন। ২০২১-এর বসন্তের মধ্যে কিউবা বিশ্বের সবচেয়ে ছোট দেশ হিসেবে সফলভাবে নিজস্ব কোভিড টিকা উদ্ভাবন ও উৎপাদন শুরু করে। এরপর থেকেই দক্ষ ও আন্তরিক স্বাস্থ্যকর্মী, সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবার বিপর্যয়ের ঝুঁকি কাঁধে নিয়ে দ্রুত টিকা দান কর্মসূচি শুরু করে। এমনকি শিশুদেরও টিকা দিয়েছে কিউবা। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে, এখানে জনগণ স্বেচ্ছায় টিকা নিয়েছে। যেখানে পশ্চিমা দেশগুলোতে টিকা বিরোধিতা বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত বসন্তে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফল অনুসারে, কিউবার দুটি কোভিড টিকাই ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকর। সফল টিকাদান কর্মসূচিই দেশটিতে সংক্রমণের হার ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়েছে। যেখানে গত গ্রীষ্মে পশ্চিম গোলার্ধের দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণের দেশগুলোর মধ্যে ছিল কিউবা।
গত আগস্টে কিউবা প্রতি সপ্তাহেই কোভিডে শত শত মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যেখানে গত সপ্তাহে মৃত্যু ছিল তিনজন।
সর্বজনীন টিকা দানে কিউবার এই সাফল্য আলাদা করে উল্লেখ করার মতো ঘটনা, যখন অবরোধে জেরবার দেশটিতে স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য খাতের অবস্থা অত্যন্ত ভঙ্গুর। গত দুই বছরে অভ্যন্তরীণ মুদ্রা প্রবাহ অর্ধেকে নেমে গেছে, দেশটিতে অ্যান্টিবায়োটিক এখন এতটাই দুষ্প্রাপ্য যে অ্যামোক্সিসিলিনের ২০টি ট্যাবলেট কালোবাজার থেকে কিনতে এক মাসের ন্যূনতম সরকারি বেতনের সমান টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
ভাঙা হাড়ের চিকিৎসায় প্লাস্টার করতে কিছু প্রদেশের ডাক্তারেরা এখন ব্যবহৃত কার্ডবোর্ডের ওপর নির্ভর করছেন!
হাভানা-ভিত্তিক আইনজীবী গ্রেগরি বিনিওস্কি ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘১৯৫৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে, কিউবানরা এই মহান ক্রুসেডগুলো শুরু করেছে। খুবই অবাস্তব, তবুও প্রায়ই সফল হই।’
উদাহরণ হিসেবে বিনিওস্কি বলেন, ‘সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর প্রাণপ্রযুক্তিতে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের এক স্বপ্ন ফিদেল কাস্ত্রোর পরিকল্পনার পাইপলাইনে ছিল। ওই সময় যেকোনো যুক্তিবাদী পরামর্শকই বলতেন, যে প্রকল্পের ফল পেতে ২৫ বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে সেখানে সম্পদ বিনিয়োগ করার সময় এটি নয়। তবুও আমরা কিন্তু এখন এখানে… যেখানে প্রাণপ্রযুক্তিতে বিনিয়োগের ফলই এখন জীবন বাঁচাচ্ছে।’
অবশ্য কাস্ত্রোর সব পরিকল্পনাই কাজ করেছে এমন নয়। বেশ কিছু উদ্যোগই নাটকীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। যেমন, ১৯৭০ সালে ১ কোটি টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যে আখ চাষ উৎসাহিত করার উদ্যোগের কথা বলা যায়। শ্রমিকদের নিয়মিত কাজ থেকে এনে আখ কাটতে লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই পদক্ষেপ শিল্পকে পঙ্গু করে দেয়। ফলত অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়ায়।
গত বছর কিউবা ১৯৫৯ সালের তুলনায় সাত গুণ কম চিনি সংগ্রহ করেছে।
কানাডার রয়্যাল মিলিটারি কলেজের ইতিহাস ও কৌশলের ইমেরিটাস অধ্যাপক হ্যাল ক্লেপাক বলেন, ‘একটি জাতি হিসেবে বড় জিনিসগুলোতে বেশি ভালো করার প্রবণতা থাকে। আর সাধারণ বিষয়গুলোর ব্যাপারে উদাসীনতার কারণে ভয়ংকর ফল হয়। যেমন, এক দশকের কম সময়ের মধ্যে পুরো দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা, আড়াই বছরে নিরক্ষরতা দূর করা এবং চিকিৎসা আন্তর্জাতিকীকরণ- এগুলো সবই ছিল পাগলামি। কিন্তু তারা (কিউবা) এটা করেছে।’
আজ কিউবা হাজার হাজার চিকিৎসক এবং নার্স তৈরি করছে। তাঁরা বিদেশে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে মানবিক কাজ করছেন। কিন্তু দেশের জনগণের জন্য পর্যাপ্ত আলু উৎপাদনে ব্যর্থ হচ্ছে কিউবা। এটা সত্যিই একটা ট্র্যাজেডি!
এর জন্য দায়ী করা যেতে পারে কিউবার অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত এবং রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা ব্যবস্থাকেই। বিশ্বে এ ধরনের রাষ্ট্র ব্যবস্থার সর্বশেষ দৃষ্টান্তগুলো একটি হয়ে আছে কিউবা। উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের প্যারাডক্স (কূটাভাস) ব্যাখ্যা করার কিছু উপাদান হয়তো তারা রেখে যাচ্ছে। শীর্ষ পর্যায়ে যখন রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকে তখন ইতিবাচক লক্ষ্যগুলোকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। যখন সঠিক দিকনির্দেশের অভাব হয়, তখন দ্বীপ দেশটির কঠোর অনমনীয় সরকার ব্যবস্থার হাল ধরতে সামনে এসে হাজির হয় কাফকায়েস্ক আমলাতন্ত্র। যাদের প্রকৃত কোনো লক্ষ্য উদ্দেশ্য, দায় কিছুই না থাকার মতো এক ভয়ংকর কদর্য রূপ অনেক দেশে মাঝে মধ্যে প্রকাশিত হয়ে পড়ে।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিন একজন কোভিড রোগী শনাক্ত হচ্ছে কিউবায়। অত্যন্ত সংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণেই সংক্রমণের হার এখন বাড়ছে। কিউবার বিজ্ঞানীরা ওমিক্রনের বিরুদ্ধে তাঁদের টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে এখনো তথ্য প্রকাশ করেননি। টিকাটি হালনাগাদ করার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
এরই মধ্যে, কিউবার জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করেছে। চলতি জানুয়ারি মাসেই প্রায় শতভাগ বুস্টার ডোজ দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে কিউবা।

ইস্তাম্বুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনা চলছে। এর মধ্যেই দুই দেশের সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষের খবর এসেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার আফগান সীমান্ত পেরিয়ে আসা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে পাঁচ সেনা ও ২৫ সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিহত হয়েছ
৪ ঘণ্টা আগে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস জানিয়েছেন, তিনি আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কথা বিবেচনা করছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে হ্যারিস বলেন—ভবিষ্যতে একদিন তিনি নিজেই হয়তো হোয়াইট হাউসে বসবেন এবং কোনো এক সময় যে একজন নারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হবেন, সেই বিষয়ে
৪ ঘণ্টা আগে
বিদেশি নাগরিকদের আগমন ও প্রস্থান নজরদারিতে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, সব বিদেশি নাগরিককে বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলসীমান্তে মুখের ছবি তুলতে বাধ্য করা হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর লক্ষ্য ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণের পর থেকে যাওয়া ও পাসপোর্ট জালিয়াতি রোধ করা।
৫ ঘণ্টা আগে
ইউক্রেনের জীববিজ্ঞানী লিওনিদ পশেনিচনভকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার জের ধরে শুরু হয়েছে তীব্র কূটনৈতিক বিরোধ। ইউক্রেন দাবি করেছে, অ্যান্টার্কটিকায় ক্রিল মাছ ধরায় নিয়ন্ত্রণ আরোপের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণেই পশেনিচনভকে ‘মিথ্যা’ অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইস্তাম্বুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনা চলছে। এর মধ্যেই দুই দেশের সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষের খবর এসেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার আফগান সীমান্ত পেরিয়ে আসা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে পাঁচ সেনা ও ২৫ সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ শাখার (আইএসপিআর) বিবৃতির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান থেকে সশস্ত্র ব্যক্তিরা খুররম ও উত্তর ওয়াজিরিস্তান অঞ্চলে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। পাহাড়ি ও দুর্গম এই দুই জেলায় সংঘর্ষটি ঘটে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সীমান্ত অতিক্রমের এই চেষ্টা প্রমাণ করে যে আফগান সরকারের সন্ত্রাসবাদ দমনে প্রকৃত অবস্থান নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
এ সংঘর্ষের পর আফগানিস্তানের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ বিষয়ে জানতে তালেবান সরকারের মুখপাত্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছিল, কিন্তু তারা মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
এদিকে, এ সংঘর্ষের সময়ই দুই দেশের প্রতিনিধিদল ইস্তাম্বুলে আলোচনায় বসেছে, যাতে সীমান্তে উত্তেজনা কমানো যায়। চলতি মাসের শুরুর দিকে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়, তা ছিল ২০২১ সালে কাবুলে তালেবানের ক্ষমতা নেওয়ার পর সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ঘটনা। পাকিস্তানের দাবি, তালেবান সরকার সীমান্তে সন্ত্রাসীদের দমন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই অভিযোগ ঘিরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি ও পাকিস্তান আফগানিস্তানে বিমান হামলা করে। পরে দোহায় এক চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়।
তবে তালেবান সরকার বরাবরই পাকিস্তানের এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। বরং তারা অভিযোগ করেছে, পাকিস্তানি সামরিক অভিযানে তাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হয়েছে।
গতকাল পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি টিকে আছে এবং তিনি বিশ্বাস করেন, আফগানিস্তানও শান্তি চায়। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ইস্তাম্বুলে কোনো সমঝোতা না হলে যুদ্ধ অনিবার্য।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গত শুক্রবার ও গতকাল যাঁরা সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা করেছিলেন, তাঁরা ‘ফিতনা আল খারিজ’ নামের এক সংগঠনের সদস্য। সেনাবাহিনী বলেছে, এই সশস্ত্র গোষ্ঠী বিদেশি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত এবং উগ্রবাদী মতাদর্শে অনুপ্রাণিত।

ইস্তাম্বুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনা চলছে। এর মধ্যেই দুই দেশের সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষের খবর এসেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার আফগান সীমান্ত পেরিয়ে আসা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে পাঁচ সেনা ও ২৫ সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ শাখার (আইএসপিআর) বিবৃতির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান থেকে সশস্ত্র ব্যক্তিরা খুররম ও উত্তর ওয়াজিরিস্তান অঞ্চলে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। পাহাড়ি ও দুর্গম এই দুই জেলায় সংঘর্ষটি ঘটে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সীমান্ত অতিক্রমের এই চেষ্টা প্রমাণ করে যে আফগান সরকারের সন্ত্রাসবাদ দমনে প্রকৃত অবস্থান নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
এ সংঘর্ষের পর আফগানিস্তানের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ বিষয়ে জানতে তালেবান সরকারের মুখপাত্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছিল, কিন্তু তারা মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
এদিকে, এ সংঘর্ষের সময়ই দুই দেশের প্রতিনিধিদল ইস্তাম্বুলে আলোচনায় বসেছে, যাতে সীমান্তে উত্তেজনা কমানো যায়। চলতি মাসের শুরুর দিকে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়, তা ছিল ২০২১ সালে কাবুলে তালেবানের ক্ষমতা নেওয়ার পর সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ঘটনা। পাকিস্তানের দাবি, তালেবান সরকার সীমান্তে সন্ত্রাসীদের দমন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই অভিযোগ ঘিরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি ও পাকিস্তান আফগানিস্তানে বিমান হামলা করে। পরে দোহায় এক চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়।
তবে তালেবান সরকার বরাবরই পাকিস্তানের এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। বরং তারা অভিযোগ করেছে, পাকিস্তানি সামরিক অভিযানে তাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হয়েছে।
গতকাল পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি টিকে আছে এবং তিনি বিশ্বাস করেন, আফগানিস্তানও শান্তি চায়। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ইস্তাম্বুলে কোনো সমঝোতা না হলে যুদ্ধ অনিবার্য।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গত শুক্রবার ও গতকাল যাঁরা সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা করেছিলেন, তাঁরা ‘ফিতনা আল খারিজ’ নামের এক সংগঠনের সদস্য। সেনাবাহিনী বলেছে, এই সশস্ত্র গোষ্ঠী বিদেশি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত এবং উগ্রবাদী মতাদর্শে অনুপ্রাণিত।

দেড় শতাব্দী পরে তাঁর সেই বাণীই সত্য হলো! দুর্দশাগ্রস্ত অর্থনীতির দ্বীপটির হয়তো আলো জ্বালানোর সামর্থ্য নেই, কিন্তু তারাই এখন বিশ্বের যেকোনো বড় দেশের তুলনায় কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি সফলতা দেখিয়েছে।
০৬ জানুয়ারি ২০২২
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস জানিয়েছেন, তিনি আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কথা বিবেচনা করছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে হ্যারিস বলেন—ভবিষ্যতে একদিন তিনি নিজেই হয়তো হোয়াইট হাউসে বসবেন এবং কোনো এক সময় যে একজন নারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হবেন, সেই বিষয়ে
৪ ঘণ্টা আগে
বিদেশি নাগরিকদের আগমন ও প্রস্থান নজরদারিতে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, সব বিদেশি নাগরিককে বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলসীমান্তে মুখের ছবি তুলতে বাধ্য করা হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর লক্ষ্য ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণের পর থেকে যাওয়া ও পাসপোর্ট জালিয়াতি রোধ করা।
৫ ঘণ্টা আগে
ইউক্রেনের জীববিজ্ঞানী লিওনিদ পশেনিচনভকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার জের ধরে শুরু হয়েছে তীব্র কূটনৈতিক বিরোধ। ইউক্রেন দাবি করেছে, অ্যান্টার্কটিকায় ক্রিল মাছ ধরায় নিয়ন্ত্রণ আরোপের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণেই পশেনিচনভকে ‘মিথ্যা’ অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগেবিবিসির সাক্ষাৎকার
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস জানিয়েছেন, তিনি আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কথা বিবেচনা করছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে হ্যারিস বলেন—ভবিষ্যতে একদিন তিনি নিজেই হয়তো হোয়াইট হাউসে বসবেন এবং কোনো এক সময় যে একজন নারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হবেন, সেই বিষয়ে তিনি আত্মবিশ্বাসী।
২০২৪ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে পরাজয়ের পর কমলা হ্যারিস এবারই প্রথম প্রকাশ্যে ইঙ্গিত দিলেন, ২০২৮ সালে তিনি আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। এমনকি বিভিন্ন জরিপে ডেমোক্র্যাট দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তাঁকে অনেক পিছিয়ে দেখানো হলেও তিনি তা গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
হ্যারিস বলেন, ‘যদি আমি জরিপের ফল শুনতাম, তবে জীবনে কোনো নির্বাচনে অংশ নিতাম না। আমি এখনো শেষ হইনি—সারা জীবন জনসেবায় কাটিয়েছি, সেটাই আমার রক্তে মিশে আছে।’
সাক্ষাৎকারে হ্যারিস তাঁর সাবেক প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পকে ‘একজন স্বৈরাচারী’ হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি দাবি করেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প সম্পর্কে যেসব সতর্কবার্তা তিনি দিয়েছিলেন, তা এখন সত্য প্রমাণিত হচ্ছে। কমলা বলেন, ‘আমি বলেছিলাম তিনি (ট্রাম্প) বিচার বিভাগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করবেন—এবং সেটাই তিনি এখন করছেন।’
উদাহরণ হিসেবে কমলা কৌতুক অভিনেতা জিমি কিমেলকে ট্রাম্প-নিযুক্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থার চাপের মুখে টেলিভিশন থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা উল্লেখ করেন। হ্যারিসের ভাষায়, ‘ট্রাম্পের চামড়া এতটাই পাতলা যে একটি রসিকতাও সহ্য করতে পারেন না।’
মার্কিন ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকেই ট্রাম্পের ক্ষমতার সামনে নতি স্বীকার করেছে উল্লেখ করে কমলা বলেন, ‘অনেকে ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে চায়, কোনো তদন্ত এড়াতে চায়, কিংবা নিজের স্বার্থে কিছু অনুমোদন করাতে চায়।’
হোয়াইট হাউস অবশ্য কমলা হ্যারিসের এসব মন্তব্যকে গুরুত্ব দেয়নি। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র অ্যাবিগেইল জ্যাকসন বলেছেন, ‘কমলা হ্যারিস যখন বিপুল ব্যবধানে নির্বাচনে হেরে যান, তখনই আমেরিকান জনগণ তার প্রতি মত জানিয়ে দিয়েছে।’
সম্প্রতি কমলা প্রকাশ করেছেন তার নির্বাচনী স্মৃতিকথা ‘১০৭ ডেজ’। তিনি বাইডেনের পদত্যাগের পর মাত্র ১০৭ দিন সময় পান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য। সাক্ষাৎকারে সাংবাদিকেরা তাঁকে প্রশ্ন করেন—যদি বাইডেন আগে সরে দাঁড়াতেন, তাহলে কি এখন ট্রাম্পের বদলে আপনিই প্রেসিডেন্ট হতেন? জবাবে কমলা বলেছেন, ‘ওটা এক অনিশ্চিত প্রশ্ন—যা আমেরিকার ভাগ্য বদলাতে পারত।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস জানিয়েছেন, তিনি আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কথা বিবেচনা করছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে হ্যারিস বলেন—ভবিষ্যতে একদিন তিনি নিজেই হয়তো হোয়াইট হাউসে বসবেন এবং কোনো এক সময় যে একজন নারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হবেন, সেই বিষয়ে তিনি আত্মবিশ্বাসী।
২০২৪ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে পরাজয়ের পর কমলা হ্যারিস এবারই প্রথম প্রকাশ্যে ইঙ্গিত দিলেন, ২০২৮ সালে তিনি আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। এমনকি বিভিন্ন জরিপে ডেমোক্র্যাট দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তাঁকে অনেক পিছিয়ে দেখানো হলেও তিনি তা গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
হ্যারিস বলেন, ‘যদি আমি জরিপের ফল শুনতাম, তবে জীবনে কোনো নির্বাচনে অংশ নিতাম না। আমি এখনো শেষ হইনি—সারা জীবন জনসেবায় কাটিয়েছি, সেটাই আমার রক্তে মিশে আছে।’
সাক্ষাৎকারে হ্যারিস তাঁর সাবেক প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পকে ‘একজন স্বৈরাচারী’ হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি দাবি করেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প সম্পর্কে যেসব সতর্কবার্তা তিনি দিয়েছিলেন, তা এখন সত্য প্রমাণিত হচ্ছে। কমলা বলেন, ‘আমি বলেছিলাম তিনি (ট্রাম্প) বিচার বিভাগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করবেন—এবং সেটাই তিনি এখন করছেন।’
উদাহরণ হিসেবে কমলা কৌতুক অভিনেতা জিমি কিমেলকে ট্রাম্প-নিযুক্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থার চাপের মুখে টেলিভিশন থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা উল্লেখ করেন। হ্যারিসের ভাষায়, ‘ট্রাম্পের চামড়া এতটাই পাতলা যে একটি রসিকতাও সহ্য করতে পারেন না।’
মার্কিন ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকেই ট্রাম্পের ক্ষমতার সামনে নতি স্বীকার করেছে উল্লেখ করে কমলা বলেন, ‘অনেকে ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে চায়, কোনো তদন্ত এড়াতে চায়, কিংবা নিজের স্বার্থে কিছু অনুমোদন করাতে চায়।’
হোয়াইট হাউস অবশ্য কমলা হ্যারিসের এসব মন্তব্যকে গুরুত্ব দেয়নি। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র অ্যাবিগেইল জ্যাকসন বলেছেন, ‘কমলা হ্যারিস যখন বিপুল ব্যবধানে নির্বাচনে হেরে যান, তখনই আমেরিকান জনগণ তার প্রতি মত জানিয়ে দিয়েছে।’
সম্প্রতি কমলা প্রকাশ করেছেন তার নির্বাচনী স্মৃতিকথা ‘১০৭ ডেজ’। তিনি বাইডেনের পদত্যাগের পর মাত্র ১০৭ দিন সময় পান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য। সাক্ষাৎকারে সাংবাদিকেরা তাঁকে প্রশ্ন করেন—যদি বাইডেন আগে সরে দাঁড়াতেন, তাহলে কি এখন ট্রাম্পের বদলে আপনিই প্রেসিডেন্ট হতেন? জবাবে কমলা বলেছেন, ‘ওটা এক অনিশ্চিত প্রশ্ন—যা আমেরিকার ভাগ্য বদলাতে পারত।’

দেড় শতাব্দী পরে তাঁর সেই বাণীই সত্য হলো! দুর্দশাগ্রস্ত অর্থনীতির দ্বীপটির হয়তো আলো জ্বালানোর সামর্থ্য নেই, কিন্তু তারাই এখন বিশ্বের যেকোনো বড় দেশের তুলনায় কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি সফলতা দেখিয়েছে।
০৬ জানুয়ারি ২০২২
ইস্তাম্বুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনা চলছে। এর মধ্যেই দুই দেশের সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষের খবর এসেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার আফগান সীমান্ত পেরিয়ে আসা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে পাঁচ সেনা ও ২৫ সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিহত হয়েছ
৪ ঘণ্টা আগে
বিদেশি নাগরিকদের আগমন ও প্রস্থান নজরদারিতে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, সব বিদেশি নাগরিককে বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলসীমান্তে মুখের ছবি তুলতে বাধ্য করা হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর লক্ষ্য ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণের পর থেকে যাওয়া ও পাসপোর্ট জালিয়াতি রোধ করা।
৫ ঘণ্টা আগে
ইউক্রেনের জীববিজ্ঞানী লিওনিদ পশেনিচনভকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার জের ধরে শুরু হয়েছে তীব্র কূটনৈতিক বিরোধ। ইউক্রেন দাবি করেছে, অ্যান্টার্কটিকায় ক্রিল মাছ ধরায় নিয়ন্ত্রণ আরোপের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণেই পশেনিচনভকে ‘মিথ্যা’ অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিদেশি নাগরিকদের আগমন ও প্রস্থান নজরদারিতে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, সব বিদেশি নাগরিককে বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলসীমান্তে মুখের ছবি তুলতে বাধ্য করা হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর লক্ষ্য ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণের পর থেকে যাওয়া ও পাসপোর্ট জালিয়াতি রোধ করা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন এই বিধান কার্যকর হবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে। এতে বলা হয়েছে, মার্কিন সীমান্ত কর্তৃপক্ষ চাইলে বিদেশিদের কাছ থেকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ডিএনএসহ অন্যান্য বায়োমেট্রিক তথ্যও সংগ্রহ করতে পারবে।
নতুন নীতিতে আরও বলা হয়েছে, এখন থেকে ১৪ বছরের নিচে শিশু ও ৭৯ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স্কদেরও ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রক্রিয়ার আওতায় আনা যাবে। এত দিন এই দুই শ্রেণির মানুষ এ ব্যবস্থার বাইরে ছিল।
এই উদ্যোগকে অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অবস্থানের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র–মেক্সিকো সীমান্তে নজরদারি জোরদার করার পাশাপাশি ট্রাম্প প্রশাসন এবার ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণের পর থেকে যাওয়া ব্যক্তিদের শনাক্তকরণেও গুরুত্ব দিচ্ছে।
তবে বিমানবন্দরগুলোতে ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তির বাড়তি ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অধিকারকর্মীরা। তাঁদের আশঙ্কা, এই প্রযুক্তির ভুল শনাক্তকরণ হার এখনো বেশি এবং এটি কৃষ্ণাঙ্গ বা সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে বৈষম্যপূর্ণ ফলাফল দিতে পারে।
২০২৪ সালের এক প্রতিবেদনে মার্কিন নাগরিক অধিকার কমিশন (US Commission on Civil Rights) জানিয়েছিল, পরীক্ষায় দেখা গেছে, ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার কৃষ্ণাঙ্গ ও সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে ভুল শনাক্তের সম্ভাবনা তুলনামূলক বেশি।
২০২৩ সালের এক প্রতিবেদনে কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস অনুমান করেছিল, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ অভিবাসীর মধ্যে ৪২ শতাংশেরই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।
এমনকি ১৯৯৬ সালে কংগ্রেস একটি স্বয়ংক্রিয় ‘এন্ট্রি-এক্সিট সিস্টেম’ তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল, কিন্তু তা কখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হয়নি।
বর্তমানে মার্কিন কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (সিবিপি) সংস্থা সব বাণিজ্যিক ফ্লাইটে আসা যাত্রীদের জন্য ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। তবে বাইর হওয়ার ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা এখনো কেবল নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানে সীমিত।
নতুন বিধিমালায় বলা হয়েছে, আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে সব বাণিজ্যিক বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দরে প্রবেশ ও প্রস্থানের ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ বায়োমেট্রিক এন্ট্রি-এক্সিট সিস্টেম চালু করা হবে।

বিদেশি নাগরিকদের আগমন ও প্রস্থান নজরদারিতে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, সব বিদেশি নাগরিককে বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলসীমান্তে মুখের ছবি তুলতে বাধ্য করা হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর লক্ষ্য ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণের পর থেকে যাওয়া ও পাসপোর্ট জালিয়াতি রোধ করা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন এই বিধান কার্যকর হবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে। এতে বলা হয়েছে, মার্কিন সীমান্ত কর্তৃপক্ষ চাইলে বিদেশিদের কাছ থেকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ডিএনএসহ অন্যান্য বায়োমেট্রিক তথ্যও সংগ্রহ করতে পারবে।
নতুন নীতিতে আরও বলা হয়েছে, এখন থেকে ১৪ বছরের নিচে শিশু ও ৭৯ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স্কদেরও ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রক্রিয়ার আওতায় আনা যাবে। এত দিন এই দুই শ্রেণির মানুষ এ ব্যবস্থার বাইরে ছিল।
এই উদ্যোগকে অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অবস্থানের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র–মেক্সিকো সীমান্তে নজরদারি জোরদার করার পাশাপাশি ট্রাম্প প্রশাসন এবার ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণের পর থেকে যাওয়া ব্যক্তিদের শনাক্তকরণেও গুরুত্ব দিচ্ছে।
তবে বিমানবন্দরগুলোতে ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তির বাড়তি ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অধিকারকর্মীরা। তাঁদের আশঙ্কা, এই প্রযুক্তির ভুল শনাক্তকরণ হার এখনো বেশি এবং এটি কৃষ্ণাঙ্গ বা সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে বৈষম্যপূর্ণ ফলাফল দিতে পারে।
২০২৪ সালের এক প্রতিবেদনে মার্কিন নাগরিক অধিকার কমিশন (US Commission on Civil Rights) জানিয়েছিল, পরীক্ষায় দেখা গেছে, ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার কৃষ্ণাঙ্গ ও সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে ভুল শনাক্তের সম্ভাবনা তুলনামূলক বেশি।
২০২৩ সালের এক প্রতিবেদনে কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস অনুমান করেছিল, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ অভিবাসীর মধ্যে ৪২ শতাংশেরই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।
এমনকি ১৯৯৬ সালে কংগ্রেস একটি স্বয়ংক্রিয় ‘এন্ট্রি-এক্সিট সিস্টেম’ তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল, কিন্তু তা কখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হয়নি।
বর্তমানে মার্কিন কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (সিবিপি) সংস্থা সব বাণিজ্যিক ফ্লাইটে আসা যাত্রীদের জন্য ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। তবে বাইর হওয়ার ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা এখনো কেবল নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানে সীমিত।
নতুন বিধিমালায় বলা হয়েছে, আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে সব বাণিজ্যিক বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দরে প্রবেশ ও প্রস্থানের ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ বায়োমেট্রিক এন্ট্রি-এক্সিট সিস্টেম চালু করা হবে।

দেড় শতাব্দী পরে তাঁর সেই বাণীই সত্য হলো! দুর্দশাগ্রস্ত অর্থনীতির দ্বীপটির হয়তো আলো জ্বালানোর সামর্থ্য নেই, কিন্তু তারাই এখন বিশ্বের যেকোনো বড় দেশের তুলনায় কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি সফলতা দেখিয়েছে।
০৬ জানুয়ারি ২০২২
ইস্তাম্বুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনা চলছে। এর মধ্যেই দুই দেশের সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষের খবর এসেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার আফগান সীমান্ত পেরিয়ে আসা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে পাঁচ সেনা ও ২৫ সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিহত হয়েছ
৪ ঘণ্টা আগে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস জানিয়েছেন, তিনি আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কথা বিবেচনা করছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে হ্যারিস বলেন—ভবিষ্যতে একদিন তিনি নিজেই হয়তো হোয়াইট হাউসে বসবেন এবং কোনো এক সময় যে একজন নারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হবেন, সেই বিষয়ে
৪ ঘণ্টা আগে
ইউক্রেনের জীববিজ্ঞানী লিওনিদ পশেনিচনভকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার জের ধরে শুরু হয়েছে তীব্র কূটনৈতিক বিরোধ। ইউক্রেন দাবি করেছে, অ্যান্টার্কটিকায় ক্রিল মাছ ধরায় নিয়ন্ত্রণ আরোপের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণেই পশেনিচনভকে ‘মিথ্যা’ অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইউক্রেনের জীববিজ্ঞানী লিওনিদ পশেনিচনভকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার জের ধরে শুরু হয়েছে তীব্র কূটনৈতিক বিরোধ। ইউক্রেন দাবি করেছে, অ্যান্টার্কটিকায় ক্রিল মাছ ধরায় নিয়ন্ত্রণ আরোপের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণেই পশেনিচনভকে ‘মিথ্যা’ অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, লিওনিদ পশেনিচনভ অ্যান্টার্কটিকা বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এক জীববিজ্ঞানী। ১৯৮৩ সাল থেকে তিনি ‘অ্যান্টার্কটিক সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিশন’-এর গবেষণায় যুক্ত আছেন। ১৯৯৪ সাল থেকে তিনি ইউক্রেনের প্রতিনিধি হিসেবে ওই কমিশনের কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার হোবার্টে আয়োজিত একটি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পশেনিচনভ। ওই সম্মেলনে অ্যান্টার্কটিকার সামুদ্রিক প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও ক্রিল মাছ ধরার সীমা নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। ঠিক এমন সময়ই রাশিয়ার দখল করা ক্রিমিয়া থেকে তাঁকে আটক করা হয়েছে।
রুশ কর্তৃপক্ষের এক নথিতে দাবি করা হয়েছে, পশেনিচনভ ‘রাশিয়ার নাগরিক’ হিসেবে ইউক্রেনের পক্ষ নিয়ে কাজ করেছেন এবং শত্রুপক্ষের সহায়তা করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, তিনি তাঁর গবেষণাকে ব্যবহার করেছেন রাশিয়ার অ্যান্টার্কটিক ক্রিল ধরার কার্যক্রমকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে। ইউক্রেনীয় প্রস্তাবের মাধ্যমে ক্রিল আহরণে সীমা আরোপের আহ্বান জানানোয় রাশিয়ার অর্থনৈতিক স্বার্থ নষ্ট হয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অ্যান্টার্কটিকার উপদ্বীপ ঘিরে একটি সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা গঠনের প্রস্তাব নিয়েই মূলত এই বিতর্ক। বহু বছর ধরে রাশিয়া ও চীন এমন সংরক্ষিত এলাকা গঠনের বিরোধিতা করে আসছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বছর প্রথমবারের মতো অ্যান্টার্কটিক অঞ্চলে ক্রিল আহরণের পরিমাণ টেকসই সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
পশেনিচনভের আটক নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, আর যুক্তরাজ্য আহ্বান করেছে, রাশিয়া যেন ইচ্ছাকৃতভাবে আটক সব বেসামরিক নাগরিককে মুক্তি দেয়। পশেনিচনভ সম্পর্কে ইউক্রেনের অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ভাসিল মিরোশনিচেঙ্কো বলেছেন, ‘তিনি একজন বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ নন। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
সহকর্মীরা জানিয়েছেন, ৭০ বছর বয়সী এই বিজ্ঞানী শারীরিকভাবে অসুস্থ এবং হাঁটুর সমস্যায় ভুগছেন। কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী ইভজেনি পাখোমভ বলেছেন, ‘তিনি (পশেনিচনভ) অতি সদালাপী ও সহৃদয় মানুষ। তাঁর নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা সবাই গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
ব্লু মেরিন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড্যান ক্রকেট মন্তব্য করেছেন, ‘পশেনিচনভকে কারাবন্দী করা হয়েছে শুধু এই কারণে যে, তিনি ক্রিল আহরণের পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক তথ্য উপস্থাপন করেছেন।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০২৩ সালে রাষ্ট্রদ্রোহের সর্বোচ্চ শাস্তি ২০ বছর থেকে বাড়িয়ে যাবজ্জীবন করেন। এখন এই বৃদ্ধ বিজ্ঞানীর জীবনও সেই আইনের ঝুঁকিতে পড়েছে।

ইউক্রেনের জীববিজ্ঞানী লিওনিদ পশেনিচনভকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার জের ধরে শুরু হয়েছে তীব্র কূটনৈতিক বিরোধ। ইউক্রেন দাবি করেছে, অ্যান্টার্কটিকায় ক্রিল মাছ ধরায় নিয়ন্ত্রণ আরোপের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণেই পশেনিচনভকে ‘মিথ্যা’ অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, লিওনিদ পশেনিচনভ অ্যান্টার্কটিকা বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এক জীববিজ্ঞানী। ১৯৮৩ সাল থেকে তিনি ‘অ্যান্টার্কটিক সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিশন’-এর গবেষণায় যুক্ত আছেন। ১৯৯৪ সাল থেকে তিনি ইউক্রেনের প্রতিনিধি হিসেবে ওই কমিশনের কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার হোবার্টে আয়োজিত একটি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পশেনিচনভ। ওই সম্মেলনে অ্যান্টার্কটিকার সামুদ্রিক প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও ক্রিল মাছ ধরার সীমা নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। ঠিক এমন সময়ই রাশিয়ার দখল করা ক্রিমিয়া থেকে তাঁকে আটক করা হয়েছে।
রুশ কর্তৃপক্ষের এক নথিতে দাবি করা হয়েছে, পশেনিচনভ ‘রাশিয়ার নাগরিক’ হিসেবে ইউক্রেনের পক্ষ নিয়ে কাজ করেছেন এবং শত্রুপক্ষের সহায়তা করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, তিনি তাঁর গবেষণাকে ব্যবহার করেছেন রাশিয়ার অ্যান্টার্কটিক ক্রিল ধরার কার্যক্রমকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে। ইউক্রেনীয় প্রস্তাবের মাধ্যমে ক্রিল আহরণে সীমা আরোপের আহ্বান জানানোয় রাশিয়ার অর্থনৈতিক স্বার্থ নষ্ট হয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অ্যান্টার্কটিকার উপদ্বীপ ঘিরে একটি সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা গঠনের প্রস্তাব নিয়েই মূলত এই বিতর্ক। বহু বছর ধরে রাশিয়া ও চীন এমন সংরক্ষিত এলাকা গঠনের বিরোধিতা করে আসছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বছর প্রথমবারের মতো অ্যান্টার্কটিক অঞ্চলে ক্রিল আহরণের পরিমাণ টেকসই সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
পশেনিচনভের আটক নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, আর যুক্তরাজ্য আহ্বান করেছে, রাশিয়া যেন ইচ্ছাকৃতভাবে আটক সব বেসামরিক নাগরিককে মুক্তি দেয়। পশেনিচনভ সম্পর্কে ইউক্রেনের অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ভাসিল মিরোশনিচেঙ্কো বলেছেন, ‘তিনি একজন বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ নন। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
সহকর্মীরা জানিয়েছেন, ৭০ বছর বয়সী এই বিজ্ঞানী শারীরিকভাবে অসুস্থ এবং হাঁটুর সমস্যায় ভুগছেন। কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী ইভজেনি পাখোমভ বলেছেন, ‘তিনি (পশেনিচনভ) অতি সদালাপী ও সহৃদয় মানুষ। তাঁর নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা সবাই গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
ব্লু মেরিন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড্যান ক্রকেট মন্তব্য করেছেন, ‘পশেনিচনভকে কারাবন্দী করা হয়েছে শুধু এই কারণে যে, তিনি ক্রিল আহরণের পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক তথ্য উপস্থাপন করেছেন।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০২৩ সালে রাষ্ট্রদ্রোহের সর্বোচ্চ শাস্তি ২০ বছর থেকে বাড়িয়ে যাবজ্জীবন করেন। এখন এই বৃদ্ধ বিজ্ঞানীর জীবনও সেই আইনের ঝুঁকিতে পড়েছে।

দেড় শতাব্দী পরে তাঁর সেই বাণীই সত্য হলো! দুর্দশাগ্রস্ত অর্থনীতির দ্বীপটির হয়তো আলো জ্বালানোর সামর্থ্য নেই, কিন্তু তারাই এখন বিশ্বের যেকোনো বড় দেশের তুলনায় কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি সফলতা দেখিয়েছে।
০৬ জানুয়ারি ২০২২
ইস্তাম্বুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনা চলছে। এর মধ্যেই দুই দেশের সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষের খবর এসেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার আফগান সীমান্ত পেরিয়ে আসা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে পাঁচ সেনা ও ২৫ সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিহত হয়েছ
৪ ঘণ্টা আগে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস জানিয়েছেন, তিনি আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কথা বিবেচনা করছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে হ্যারিস বলেন—ভবিষ্যতে একদিন তিনি নিজেই হয়তো হোয়াইট হাউসে বসবেন এবং কোনো এক সময় যে একজন নারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হবেন, সেই বিষয়ে
৪ ঘণ্টা আগে
বিদেশি নাগরিকদের আগমন ও প্রস্থান নজরদারিতে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, সব বিদেশি নাগরিককে বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলসীমান্তে মুখের ছবি তুলতে বাধ্য করা হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর লক্ষ্য ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণের পর থেকে যাওয়া ও পাসপোর্ট জালিয়াতি রোধ করা।
৫ ঘণ্টা আগে