Ajker Patrika

কর্মসংস্থানের হার কমায় ক্ষুব্ধ ট্রাম্প, চাকরি গেল পরিসংখ্যান কর্মকর্তার

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২৫, ১২: ৫৯
এরিকা ম্যাকএনটারফার ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
এরিকা ম্যাকএনটারফার ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

চাকরির পরিসংখ্যানে ‘অনিয়ম’ ও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত জালিয়াতির’ অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য সংস্থা ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিকসের কমিশনার এরিকা ম্যাকএনটারফারকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তে ওয়াল স্ট্রিটসহ অর্থনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে লেখেন, ‘আমরা সঠিক চাকরির সংখ্যা চাই। আমি আমার টিমকে নির্দেশ দিয়েছি—এই বাইডেনঘেঁষা রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবিলম্বে বরখাস্ত করতে।’

তিনি এরিকার বিরুদ্ধে চাকরির সংখ্যা ‘ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত’ করার অভিযোগ আনেন, যদিও কোনো তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করেননি। এ নিয়ে হোয়াইট হাউস কর্তৃক অর্থনৈতিক তথ্য সংস্থায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। অনেক বিশ্লেষক বলছেন, সরকারি পরিসংখ্যান ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

বরখাস্তের প্রতিক্রিয়ায় এরিকা ম্যাকএনটারফার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই সংস্থার নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পাওয়া ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্মান। আমরা সব সময়ই নিরপেক্ষতা ও তথ্যের সত্যতা বজায় রেখেছি।’ এরিকা ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে কাজ করেছেন এবং ২০২৩ সালে মার্কিন সিনেট প্রায় সর্বসম্মতভাবে তাঁকে শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়।

এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম দপ্তর জানিয়েছে, সংস্থার ডেপুটি কমিশনার উইলিয়াম উইয়াত্রোস্কিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নতুন কমিশনার নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত তিনি দপ্তরের দায়িত্ব পালন করবেন।

বিশ্লেষকদের মতে, চাকরির পরিসংখ্যানে বড় ধরনের সংশোধনই ট্রাম্পের ক্ষোভের মূল কারণ। গত শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ৭৩ হাজার নতুন চাকরি তৈরি হয়েছে, যা বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের তুলনায় অনেক কম। পাশাপাশি মে ও জুন মাসের হিসাবও বড় পরিসরে সংশোধন করে প্রকাশ করেছে BLS—পূর্বের তুলনায় ২ লাখ ৫০ হাজার কম চাকরি দেখানো হয়েছে।

অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের প্রধান অর্থনীতিবিদ রায়ান সুইট বলেন, ‘উচ্চমানের অর্থনৈতিক তথ্য ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত ও নীতিনির্ধারণের জন্য অপরিহার্য। এই ধরনের হস্তক্ষেপ খুবই বিপজ্জনক দিক নির্দেশ করছে।’

পিটারসন ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক জেড কোলকো বলেন, ‘সরকারি পরিসংখ্যান ব্যবস্থায় এটি সরাসরি আঘাত। আমি এত দিন বলতাম, এসব ছিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া; এখন আর তা নয়। শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রধানকে বরখাস্ত করা মানে পরিসংখ্যান ব্যবস্থার ওপর ইচ্ছাকৃত হামলা।’

ডানপন্থী থিংক ট্যাংক আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের অর্থনৈতিক নীতিবিষয়ক পরিচালক মাইকেল স্ট্রেইন বলেন, ‘ম্যাকএনটারফার তাঁর দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। সরকারি পরিসংখ্যানের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক।’

তবে ট্রাম্প বরাবরের মতো তাঁর সিদ্ধান্তের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, ‘আমি মনে করি এই পরিসংখ্যান ভুয়া, যেমনটা নির্বাচনেও হয়েছিল। তাই আমি তাঁকে বরখাস্ত করেছি। এটা সঠিক কাজ ছিল।’ বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এ ধরনের পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক তথ্য ব্যবস্থার ওপর দেশি-বিদেশি আস্থা দুর্বল করে দিতে পারে। বর্তমানে বৈশ্বিক বাজারে ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়েও তীব্র উদ্বেগ বিরাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ব্যবসায়ীকে বালুতে পুঁতে রেখে ‘৪ কোটি টাকা আদায়’

ঢাবিতে ‘তুর্কি এনজিও সমর্থিত’ সংগঠনের ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’ মানচিত্রে ভারতের অংশ, বললেন জয়শঙ্কর

কালো জাদুর অভিযোগে মবের তাণ্ডব, এক পরিবারে পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা

একে একে আট বিয়ে, নয়বারের বেলায় গ্রেপ্তার ‘লুটেরা দুলহান’

অদৃশ্য শর্তে বাংলাদেশের জন্য ট্রাম্পের ১৫% শুল্ক ছাড়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত