Ajker Patrika

আদালত অবৈধ ঘোষণার পর ট্রাম্পের শুল্কের ভবিষ্যৎ কী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২৫, ১০: ৪৪
মার্কিন আদালত ট্রাম্পে শুল্ক আরোপের আইনি ভিত্তিকে অবৈধ বলায় শুল্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন আদালত ট্রাম্পে শুল্ক আরোপের আইনি ভিত্তিকে অবৈধ বলায় শুল্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আপিল আদালত রায় দিয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা অধিকাংশ শুল্কই প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর জরুরি ক্ষমতার এখতিয়ারের বাইরে বা অতিরিক্ত ব্যবহার। গত শুক্রবার আদালত জানায়, প্রায় সব দেশের ওপর আরোপিত তথাকথিত ‘রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ বা পাল্টাপাল্টি শুল্ক’ অবৈধভাবে আরোপ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে গত মে মাসে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতও একই সিদ্ধান্ত দেয়। আদালত সে সময় জানায়, ট্রাম্প বৈশ্বিক শুল্ক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইনের অধীনে অনুমোদিত বলে যুক্তি দেখিয়ে যে শুল্ক আরোপ করেছেন, তা ঠিক নয়।

তবে মার্কিন ফেডারেল আপিল আদালত এখনো শুল্ক বাতিল করেনি। রায়ে বলা হয়েছে, এসব শুল্ক অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বহাল থাকবে। এরপর বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে তোলা হবে। এখনো অনেক কিছু স্পষ্ট নয়। তবে এতটুকু বোঝা যাচ্ছে, এ রায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের অন্যতম প্রধান নীতির জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আপিল আদালত কী বলেছে?

আদালতের ১১ জন বিচারকের মধ্যে সাতজন নিম্ন আদালতের রায়কে সমর্থন করেন। নিম্ন আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল, ট্রাম্প বৈশ্বিক শুল্ক আরোপের ক্ষমতা রাখেন না। চারজন বিচারক এই অবস্থানের বিরোধিতা করেন। ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে আইনকে তাঁর শুল্কনীতি বাস্তবায়নের ভিত্তি করেছিলেন, সেটির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিচারকেরা শুল্ক আরোপের বিষয়টিকে অবৈধ বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল ইমারজেন্সি ইকোনমিক পাওয়ারস অ্যাক্টের (আইইইপিএ) ব্যাখ্যায় বিচারকেরা বলেন, এ আইনে শুল্ক, কর বা সেরকম কিছু আরোপের ক্ষমতা দেওয়া হয়নি প্রেসিডেন্টকে।

আর এ এ কারণেই মার্কিন আপিল আদালত ট্রাম্পের যুক্তি খারিজ করে দেয়। আদালত রায়ে বলেছে, এই শুল্ক ‘আইনের পরিপন্থী হওয়ায় অবৈধ।’ রায় ঘোষণার পরপরই ট্রাম্প তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। রায় ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, আপিল আদালত ‘চরম পক্ষপাতদুষ্ট’ এবং এই রায় দেশের জন্য ‘বড় বিপর্যয়’। তিনি আরও লেখেন, ‘যদি এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকে, তাহলে তা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করে দেবে।’

আইইইপিএ কী?

দীর্ঘ কয়েক দশক আগে প্রণীত ইন্টারন্যাশনাল ইমারজেন্সি ইকোনমিক পাওয়ারস অ্যাক্ট (আইইইপিএ) আইনটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দুই দফায় ক্ষমতায় থাকার সময় বারবার ব্যবহার করেছেন। আইইইপিএ প্রেসিডেন্টকে উল্লেখযোগ্য ক্ষমতা দেয়, যাতে তিনি জাতীয় জরুরি অবস্থা বা বিদেশ থেকে আসা বড় ধরনের হুমকির জবাব দিতে পারেন।

১৯৭৭ সালে প্রণীত এই আইনে বলা আছে, প্রেসিডেন্ট বিভিন্ন অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নিতে পারবেন, যদি এমন কোনো ‘অস্বাভাবিক ও গুরুতর হুমকি’ তৈরি হয়, যা পুরোপুরি বা আংশিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে আসে এবং তা দেশের জাতীয় নিরাপত্তা, পররাষ্ট্রনীতি বা অর্থনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ হয়।

আইনটি সাবেক দুই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও জো বাইডেনও ব্যবহার করেছেন। ২০১৪ সালে রাশিয়া অবৈধভাবে ক্রিমিয়া দখল করলে ওবামা এই আইনের মাধ্যমে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। আট বছর পর রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় হামলা চালালে বাইডেন একই আইন ব্যবহার করে আবার নিষেধাজ্ঞা দেন।

তবে আপিল আদালত রায়ে জানিয়েছে, এই জরুরি আইন প্রেসিডেন্টকে শুল্ক আরোপের মতো ব্যাপক ক্ষমতা দেয় না। আদালত বলেছে, আইইইপিএতে কোথাও ‘শুল্ক’ (বা এর সমার্থক কোনো শব্দ) উল্লেখ নেই এবং এমন কোনো প্রক্রিয়াগত শর্তও নেই, যা প্রেসিডেন্টকে শুল্ক আরোপের সীমা নির্ধারণ করে দেয়।

তবে ট্রাম্প যুক্তি দিয়েছিলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্য ঘাটতি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর। তাই এটিকে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে তিনি বৈশ্বিক শুল্ক আরোপ করেছিলেন। কিন্তু আদালত রায়ে জানায়, শুল্ক আরোপ প্রেসিডেন্টের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না এবং ‘অর্থ ব্যয়ের ক্ষমতা (যার মধ্যে কর আরোপও অন্তর্ভুক্ত) কংগ্রেসের হাতে ন্যস্ত।’

এ রায় এত গুরুত্বপূর্ণ কেন

ট্রাম্পের এজেন্ডার অন্যতম প্রধান পরিকল্পনায় বড় ধরনের ধাক্কা দেওয়ার পাশাপাশি ফেডারেল আপিল আদালতের এই রায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলতে পারে। এর ধারাবাহিক প্রভাব বিশ্ববাজারেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

শুল্ক আসলে একধরনের কর, যা বিদেশ থেকে নির্দিষ্ট পণ্য আমদানির সময় কোম্পানিগুলোকে দিতে হয়। ফলে এগুলো বিক্রি এবং লাভের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং লন্ডন বিজনেস স্কুলের অর্থনীতিবিদ ড. লিন্ডা ইউহ বিবিসি রেডিও ফোরের টুডে অনুষ্ঠানে বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে।’

শুল্ক আরোপের উদ্দেশ্য হলো দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিদেশি পণ্য কেনা থেকে নিরুৎসাহিত করা, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে প্রভাবিত করে। এখন দেশগুলো অপেক্ষা করছে, যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি গ্রহণ করবে কি না, যা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এ সময়ে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা করা থেকে বিরত থাকতে পারে।

ড. ইউহের মতে, এমন হলে তা ‘অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে স্থবির করে দিতে পারে।’ এ ছাড়া রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও এর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়তে পারে। যেমন—যদি সুপ্রিম কোর্ট ফেডারেল আপিল আদালতের রায় উল্টে দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে দাঁড়ায়, তাহলে এটি এমন একটি নজির তৈরি করবে, যা প্রেসিডেন্টকে আইইইপিএ আইন আরও আক্রমণাত্মকভাবে ব্যবহার করতে উৎসাহিত করবে।

এরপর কী?

এখন মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালতে গড়ানোর সম্ভাবনাই বেশি। ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে শেয়ার করা এক পোস্টে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, জনগণের প্রতি ‘অযত্নশীল ও অজ্ঞ রাজনীতিবিদেরা আমাদের বিরুদ্ধে শুল্ক ব্যবহার করতে দিয়েছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের সহায়তায় আমরা সেগুলো আমাদের দেশের কল্যাণে ব্যবহার করব এবং আমেরিকাকে আবারও ধনী, শক্তিশালী ও ক্ষমতাশালী করে তুলব!’

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে রক্ষণশীল বিচারপতিদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় প্রেসিডেন্টের অবস্থানকে সমর্থন করার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে বেশি। নয় বিচারপতির মধ্যে ছয়জন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টদের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে নিয়োগ দিয়েছিলেন ট্রাম্প নিজেই, তাঁর প্রথম মেয়াদকালে।

তবে আদালত একই সঙ্গে প্রেসিডেন্টদের সমালোচনাও করেছে। বিচারকেরা সতর্ক করে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট কংগ্রেস অনুমোদিত ক্ষমতার বাইরে গিয়ে নীতি প্রয়োগের চেষ্টা করছেন। উদাহরণস্বরূপ, জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট থাকাকালে আদালত ‘মেজর কোয়েশ্চনস ডকট্রিনকে’ আরও প্রসারিত করে। এর মাধ্যমে বিদ্যমান আইন ব্যবহার করে ডেমোক্র্যাটদের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন সীমিত করার উদ্যোগ ও কোটি কোটি আমেরিকানের শিক্ষাঋণ মওকুফের পরিকল্পনা বাতিল করে দেয় আদালত।

শুল্ক অবৈধ ঘোষণা হলে কী হবে?

ফেডারেল আপিল আদালত ৭-৪ ভোটের রায়ে জানিয়েছে, ট্রাম্পের প্রায় সর্বজনীন শুল্ক আরোপ ‘অবৈধ।’ এখন যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার জন্য। এই মামলার রায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এবং বিশ্বের বাকি দেশের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

যদি সুপ্রিম কোর্ট আপিল আদালতের রায় বহাল রাখে, তাহলে বাজারে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে। প্রশ্ন উঠতে পারে, আমদানি শুল্ক থেকে যে কয়েক বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করা হয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্রকে ফেরত দিতে হবে কি না।

এ ছাড়া বড় অর্থনীতির দেশগুলো যেমন—যুক্তরাজ্য, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া যেসব দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করেছে, সেগুলোও অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে। এমনকি যেসব বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে, সেগুলোও অচলাবস্থায় পড়তে পারে।

আপিল আদালতের রায় বহাল থাকলে তা ট্রাম্পের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব এবং ‘ডিলমেকার’ হিসেবে তাঁর খ্যাতির জন্য বড় ধাক্কা হবে। তবে যদি সুপ্রিম কোর্ট রায় উল্টে দেয়, তাহলে তার বিপরীত প্রভাব পড়বে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

এবার ৪.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষককে বরখাস্ত, পাঁচ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

জাপানের ‘লৌহমানবী’ কি দেশকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজায় যুদ্ধবিরতি খুব ভালোভাবে চলছে, দ্বিতীয় ধাপ শুরু শিগগির: ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যুক্তরাষ্ট্র চায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে একটি ‘শান্তি পরিষদ’ আগামী দুই বছর গাজা শাসন করুক। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র চায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে একটি ‘শান্তি পরিষদ’ আগামী দুই বছর গাজা শাসন করুক। ছবি: সংগৃহীত

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার দ্বিতীয় পর্যায়টি ‘খুব তাড়াতাড়ি শুরু হবে।’ স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কথা জানান। হোয়াইট হাউসে তিনি বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি ‘খুব ভালোভাবে’ চলছে।

তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায় কবে শুরু হবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প সরাসরি কিছু বলেননি। তিনি শুধু বলেছেন, সবকিছু ‘ভালোভাবেই চলছে।’

হোয়াইট হাউসে তিনি বলেন, ‘আজ ওদের একটি বোমার কারণে সমস্যা হয়েছে, বেশ কয়েকজন গুরুতর জখম হয়েছেন, সম্ভবত কিছু লোক মারাও গিয়েছেন।’

ট্রাম্প সে সময় ইসরায়েলের গাজা উপত্যকার দক্ষিণে চালানো বিমান হামলার কথা বলছিলেন। বুধবার সন্ধ্যার ওই হামলায় অন্তত পাঁচ ফিলিস্তিনি মারা যান। ট্রাম্প আরও বলেন, ‘ওরা আমাকে বলছে এটা এইমাত্র ঘটেছে। কিন্তু পরিস্থিতি খুব ভালোভাবে চলছে। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি বিরাজ করছে। লোকজন তা বুঝতে পারছে না।’

রাফাহে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে ইসরায়েলি সেনা জখম হওয়ার কিছু পরেই দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘সেই মতো জবাব দেওয়ার’ হুমকি দিয়েছিলেন। তার পর পরই এই হামলাগুলো হয়। এর মধ্যে দিয়ে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতির চুক্তিটি নতুন করে ভাঙল ইসরায়েল।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্বে ইসরায়েলি জিম্মিদের বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। এই পরিকল্পনায় গাজা পুনর্গঠন এবং হামাসকে বাদ দিয়ে একটি নতুন শাসন ব্যবস্থা তৈরির কথাও ভাবা হয়েছে। এরই মধ্যে, হামাস সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। এমনকি তাদের হাতে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের যেসব মরদেহ ছিল সেগুলোও ফেরত দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৭০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। সেই সঙ্গে জখম হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার মানুষ।

এদিকে, জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলি হামলায় পুরোপুরি বিধ্বস্ত গাজা পুনর্গঠনে সময় লাগবে অন্তত কয়েক দশক। আগামী কয়েক দশকে এই পুনর্গঠনের জন্য প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার লাগবে। পাশাপাশি সতর্ক করেছে, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আসন্ন অর্থনৈতিক ধসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলন (আঙ্কটাড) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণে গাজায় সৃষ্টি হয়েছে এক ‘মানবসৃষ্ট অতল গহ্বর।’ ২০২৩–২৪ সময়কালে এখানকার অর্থনীতি ৮৭ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। ইসরায়েলের পদ্ধতিগত ধ্বংসযজ্ঞ ও অর্থনৈতিক অবরোধ গাজার মাথাপিছু জিডিপিকে ঠেলে দিয়েছে মাত্র ১৬১ ডলারে, যা বিশ্বের সর্বনিম্নগুলোর মধ্যে একটি।

অপরদিকে, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনা ও বসতি স্থাপনকারীদের লাগাতার হামলাও ফিলিস্তিনি অর্থনীতিকে গভীর সংকটে ঠেলে দিচ্ছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের কয়েক দশকের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এক আঘাতে মুছে গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ফলে যে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, তা ১৯৬০ সালের পর বৈশ্বিকভাবে সবচেয়ে ভয়াবহ দশটির একটি। গাজার পরিস্থিতি আরও আলাদা; এটি নথিভুক্ত ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুতর অর্থনৈতিক বিপর্যয়।’

জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি-প্রক্রিয়ার উপ বিশেষ সমন্বয়কারী রামিজ আলাকবারভ বলেন, গাজায় পরিস্থিতি এখনও ‘ভয়ংকরভাবে অন্ধকারাচ্ছন্ন।’ তিনি দ্রুত আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানান, কারণ মানুষ এখনো ‘অসহনীয় জীবনযাপন’ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

এবার ৪.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষককে বরখাস্ত, পাঁচ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

জাপানের ‘লৌহমানবী’ কি দেশকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এইচ-১বি ভিসার ফি বাড়ানোর পর এবার যাচাই প্রক্রিয়াও কঠোর করল ট্রাম্প প্রশাসন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৫৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন গতকাল বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বিদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য এইচ-১বি ভিসা আবেদনকারীদের যাচাই-বাছাইয়ের মাত্রা আরও বাড়াল। একই সঙ্গে স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক অভ্যন্তরীণ স্মারকে বলা হয়েছে, যাঁরা স্বাধীন মতপ্রকাশে ‘সেন্সরশিপ’-এর সঙ্গে জড়িয়ে আছেন, তাঁদের আবেদন বাতিল করা যেতে পারে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এইচ-১বি ভিসা হলো সেই পথ, যার মাধ্যমে মার্কিন নিয়োগকর্তারা বিশেষায়িত ক্ষেত্রে বিদেশি কর্মী নিয়োগ করেন। ভারত এবং চীনসহ বহু দেশ থেকে কর্মী টানার ক্ষেত্রে এই ভিসা মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশ্চর্য বিষয় হলো, গতবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সেই সংস্থাগুলোর অনেক কর্ণধারই ট্রাম্পের প্রতি তাঁদের সমর্থন জানিয়েছিলেন।

২ ডিসেম্বরের বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সব মিশনে পাঠানো ওই গোপন তারবার্তায় (cable) বলা হয়েছে, মার্কিন কনস্যুলার অফিসারদের এইচ-১বি আবেদনকারী এবং তাঁদের সঙ্গে ভ্রমণকারী পরিবারের সদস্যদের বায়োডাটা বা লিংকডইন প্রোফাইল খতিয়ে দেখতে হবে। দেখতে হবে, তাঁরা ভুয়া তথ্য, ভুল তথ্য, কনটেন্ট মডারেশন, ফ্যাক্ট-চেকিং, কমপ্লায়েন্স এবং অনলাইন নিরাপত্তার মতো কাজে যুক্ত ছিলেন কি না।

তারবার্তায় আরও বলা হয়েছে, ‘যদি আপনি এমন প্রমাণ পান যে, কোনো আবেদনকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুরক্ষিত মতপ্রকাশের সেন্সরশিপ বা সেন্সরশিপের চেষ্টায় দায়ী বা জড়িত ছিলেন, তবে ইমিগ্রেশন ও ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের একটি নির্দিষ্ট ধারা অনুযায়ী ওই আবেদনকারীকে অযোগ্য বলে গণ্য করার প্রক্রিয়া শুরু করবেন।’

এইচ-১বি ভিসার এই বর্ধিত যাচাই-বাছাইয়ের, বিশেষত সেন্সরশিপ এবং স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর জোর দেওয়ার বিষয়টির বিস্তারিত খবর আগে প্রকাশিত হয়নি। স্টেট ডিপার্টমেন্ট তারবার্তার বিষয়বস্তু নিয়ে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

তারবার্তায় বলা হয়েছে, সব ধরনের ভিসার আবেদনকারীর ক্ষেত্রেই এই নীতি প্রযোজ্য, তবে এইচ-১বি আবেদনকারীদের জন্য কঠোর পর্যালোচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ, তাঁরা প্রায়ই প্রযুক্তি খাতে কাজ করেন, ‘যার মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা আর্থিক পরিষেবা সংস্থাগুলোও আছে, যারা সুরক্ষিত মতপ্রকাশকে দমন করার কাজে লিপ্ত।’ এতে আরও বলা হয়, ‘আপনাকে তাঁদের কর্মজীবনের ইতিহাস গভীরভাবে অনুসন্ধান করতে হবে, যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে তাঁরা এমন কোনো কার্যকলাপে অংশ নেননি।’ নতুন এই যাচাইয়ের শর্তাবলি নতুন এবং পুরোনো—উভয় ধরনের আবেদনকারীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

ট্রাম্প প্রশাসন স্বাধীন মতপ্রকাশকে, বিশেষত অনলাইনে রক্ষণশীল কণ্ঠস্বরকে রুদ্ধ করার প্রচেষ্টাকে, তাদের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে এনেছে। কর্মকর্তারা বারবার ইউরোপের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে যাচ্ছিলেন এবং সেখানে ডানপন্থী রাজনীতিবিদদের দমন করার নিন্দা করে গেছেন। তাঁদের মধ্যে রোমানিয়া, জার্মানি এবং ফ্রান্সের রাজনীতিবিদরাও আছেন। তাঁরা ইউরোপীয় কর্তৃপক্ষকে ভুল তথ্য মোকাবিলার নামে অভিবাসনবিরোধী সমালোচনার মতো মতবাদকে সেন্সর করার অভিযোগ আনেন।

মে মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও হুমকি দিয়েছিলেন যে, যেসব লোক আমেরিকানদের মতপ্রকাশে বাধা দেবে, এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায়ও, তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। তিনি আরও ইঙ্গিত দেন যে এই নীতি মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোকে নিয়ন্ত্রণকারী বিদেশি কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যে শিক্ষার্থী ভিসার আবেদনকারীদের যাচাই-বাছাই যথেষ্ট কড়া করেছে। মার্কিন কনস্যুলার অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন এমন কোনো সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট খুঁজে বের করেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি প্রতিকূল হতে পারে।

ব্যাপক অভিবাসনবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ট্রাম্প গত সেপ্টেম্বরে এইচ-১বি ভিসার ওপর নতুন করে ফি আরোপ করেন। ট্রাম্প এবং তাঁর রিপাবলিকান মিত্ররা বারবার সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনকে অনলাইনে স্বাধীন মতপ্রকাশ দমনে উৎসাহ দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। এই অভিযোগগুলোর কেন্দ্রে ছিল ভ্যাকসিন এবং নির্বাচন-সংক্রান্ত মিথ্যা দাবি দমন করার চেষ্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

এবার ৪.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষককে বরখাস্ত, পাঁচ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

জাপানের ‘লৌহমানবী’ কি দেশকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মার্কিন মধ্যস্থতায় ৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবার সরাসরি আলোচনায় লেবানন-ইসরায়েল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০৯
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম। ছবি: এএফপি
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম। ছবি: এএফপি

লেবানন ও ইসরায়েলের বেসামরিক প্রতিনিধিরা যুক্তরাষ্ট্রের সভাপতিত্বে নাকোউরায় যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ কমিটির একটি বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। এটি চার দশকের বেশি সময়ের মধ্যে দুই দেশের মধ্যকার প্রথম সরাসরি আলোচনার সূচনা। খবর আল জাজিরার

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম গতকাল বুধবার বলেছেন, বৈরুত নিরাপত্তা-সংক্রান্ত বিষয়ের বাইরে আলোচনা করতে প্রস্তুত, তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে এটি কোনো শান্তি আলোচনা নয় এবং সম্পর্ক ‘স্বাভাবিকীকরণ শান্তির প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত।’ তিনি বলেন, এই আলোচনা শুধু ‘শত্রুতা বন্ধ করা’, ‘লেবাননের জিম্মিদের মুক্তি’ এবং লেবাননের ভূখণ্ড থেকে ‘ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার’-এর লক্ষ্যে করা হয়েছে।

সালাম জানান, লেবানন ২০০২ সালের আরব শান্তি উদ্যোগের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা ইসরায়েলের ১৯৬৭ সালে দখল করা অঞ্চল থেকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কের পূর্ণ স্বাভাবিকীকরণের প্রস্তাব দেয় এবং ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো পৃথক শান্তিচুক্তি করার ইচ্ছা লেবাননের নেই।

তিনি বলেন, বেসামরিক দূতদের অংশগ্রহণ ‘উত্তেজনা কমাতে’ সাহায্য করতে পারে। এ সময় তিনি সম্প্রতি ইসরায়েলের মারাত্মক বিমান হামলা ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার স্পষ্ট লক্ষণ বলেও উল্লেখ করেন।

কমিটি ব্লু লাইন (Blue Line) বরাবর (লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যবর্তী সীমান্ত) প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেছে। পরে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বেসামরিক দূতদের সংযোজনকে ‘স্থায়ী বেসামরিক ও সামরিক সংলাপের’ মাধ্যমে প্রক্রিয়াটিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার দিকে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে স্বাগত জানানো হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে কমিটি দীর্ঘদিন ধরে অস্থির এই সীমান্ত বরাবর "শান্তি বজায় রাখতে" আশা করছে।

যুক্তরাষ্ট্র এক মাস ধরে উভয় পক্ষকে শুধু ২০০৪ সালের ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি তদারকি করার বাইরে কমিটির পরিধি প্রসারিত করার জন্য অনুরোধ করে আসছে। গত মাসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় লেবাননের রাজধানী আক্রান্ত হওয়ার পর নতুন করে উত্তেজনা বৃদ্ধির ক্রমবর্ধমান আশঙ্কার মধ্যে এই সর্বশেষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো।

ইসরায়েল লেবাননে নিয়মিত বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব হামলার বৈধতা দেওয়ার জন্য সাধারণত তারা বলে যে তারা হিজবুল্লাহর সদস্য ও স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে এবং যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী সম্পূর্ণভাবে সরে আসার কথা থাকলেও তারা দক্ষিণের পাঁচটি এলাকায় সেনা মোতায়েন রেখেছে।

ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র শোশ বেড্রোসিয়ান সাংবাদিকদের একটি অনলাইন ব্রিফিংয়ে বুধবারের বৈঠকটিকে ‘একটি ঐতিহাসিক অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করেছেন।

বেড্রোসিয়ান বলেন, ‘ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে এই সরাসরি বৈঠকটি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দেওয়ার প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেমন বলেছেন, আমাদের প্রতিবেশীদের সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য অনন্য সুযোগ রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

এবার ৪.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষককে বরখাস্ত, পাঁচ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

জাপানের ‘লৌহমানবী’ কি দেশকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুতিনের নয়াদিল্লি সফর: ঐতিহাসিক কৌশলগত সম্পর্কের পুনর্নবায়ন নাকি কেবলই আনুষ্ঠানিকতা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের সফরে আজ বৃহস্পতিবার ভারতে আসবেন। সময়সূচী অনুসারে, আজ স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ভারতে পৌঁছানোর কথা তাঁর। এই সফরে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আয়োজিত এক ব্যক্তিগত নৈশভোজ এবং ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। খবর এনডিটিভির।

খবরে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট পুতিনের আজ সন্ধ্যায় নয়াদিল্লি পৌঁছানোর কথা রয়েছে। তিনি পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভর্তির প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর সম্মানে ব্যক্তিগত নৈশভোজের আয়োজন করবেন। এর মাধ্যমে তিনি ২০২৪ এর জুলাইয়ে মোদির মস্কো সফরের সময় রুশ নেতার আয়োজিত অনুরূপ আতিথেয়তার প্রত্যুত্তর জানাবেন। নৈশভোজটি অনানুষ্ঠানিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা আনুষ্ঠানিক শীর্ষ সম্মেলনের আগে দুই নেতাকে একান্তে আলোচনা শুরু করার সুযোগ দেবে।

আগামীকাল শুক্রবার সকালে প্রেসিডেন্ট পুতিন একটি আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনার মাধ্যমে তাঁর সরকারি সফরের কর্মসূচী শুরু করবেন। এরপর তিনি রাজঘাটে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন, যা বিদেশী সফরকারী রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য একটি প্রথাগত কর্মসূচি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এরপর নয়াদিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদি শীর্ষ সম্মেলনের কর্মসূচীর অংশ হিসেবে রুশ প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর প্রতিনিধিদলের জন্য একটি কার্যনির্বাহী মধ্যাহ্নভোজেরও আয়োজন করবেন।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কিছু সামরিক সরঞ্জামের সরবরাহে বিলম্ব হওয়ায় ভারত মুলতুবি থাকা সামরিক হার্ডওয়্যারগুলির দ্রুত ডেলিভারির জন্য চাপ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির মধ্যে অতিরিক্ত এস–৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারত ২০১৮ সালে পাঁচটি এস–৪০০ ইউনিটের জন্য ৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। তিন স্কোয়াড্রন এরই মধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে এবং আরও দুটি আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে পাওয়ার কথা রয়েছে। অপারেশন সিন্দুরের সময় এই সিস্টেমগুলি ব্যবহৃত হয়েছিল।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, আলোচনায় সুখোই–৫৭ পঞ্চম-প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের প্রতি ভারতের আগ্রহ অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। ভারত বর্তমানে রাফালে, এফ–২১, এফ/এ–১৮ এবং ইউরোফাইটার টাইফুনের মতো যুদ্ধবিমান দিয়ে সাথে পরবর্তী প্রজন্মের যুদ্ধবিমান প্রতিস্থাপনের বিষয়টি মূল্যায়ন করছে।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতীয় রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানির ওপর কী প্রভাব পড়েছে, তা নিয়ে আলোচনা কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় জ্বালানি সুরক্ষা গুরুত্বপূর্ণ স্থান পাবে। পেসকভ বলেছেন যে ভারতের ক্রয় ‘সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য’ কমতে পারে, যদিও রাশিয়া সরবরাহ বজায় রাখার জন্য চেষ্টা করছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের বৈঠক ছাড়াও, উভয় দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী—রাজনাথ সিং এবং আন্দ্রে বেলোসভ—গুরুত্বপূর্ণ সামরিক হার্ডওয়্যার নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকে বসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট পুতিনের এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন ভারত-মার্কিন সম্পর্ক কয়েকটি ধাক্কার সম্মুখীন। ওয়াশিংটন সম্প্রতি বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক এবং বিশেষ করে ভারতের রুশ অপরিশোধিত তেল সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত ২৫ শতাংশ লেভি আরোপ করেছে।

প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনের সংঘাত সংক্রান্ত সর্বশেষ মার্কিন কূটনৈতিক উদ্যোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে অবহিত করবেন বলেও আশা করা হচ্ছে। ভারত এই অবস্থান বজায় রেখেছে যে সংলাপ এবং কূটনীতিই এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ, এবং মস্কোর সমালোচনা এড়িয়ে নিজেকে সম্ভাব্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তুলে ধরছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

এবার ৪.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষককে বরখাস্ত, পাঁচ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

জাপানের ‘লৌহমানবী’ কি দেশকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত