পানামা খাল বা পানামা ক্যানেল নামটির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে যোগাযোগ তৈরি করেছে ৫০ মাইল দীর্ঘ এই খাল। ১৯৯৯ সালের আজকের দিনে মানে ৩১ ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে পানামা খালের নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা তুলে দেয় পানামার হাতে।
পানামা খাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম খুলে দেওয়া হয় ১৯১৪ সালের ১৫ আগস্ট, তখন এসএস আরকন নামের একটি জাহাজ খালটি অতিক্রম করে। আর টোরিজস-কার্টার নামের এক চুক্তির আওতায় ১৯৯৯ সালে খালটি পানামাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথ প্রথমবারের মতো পানামার নিয়ন্ত্রণে আসে।
ষোলো শতকের গোড়ার দিকে আটলান্টিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগরে যাওয়ার একটি সংক্ষিপ্ত পথের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে শুরু করেন অভিযাত্রীরা। ১৫২৩ সালে রোমান সম্রাট পঞ্চম চার্লস ইসথুমাস অব পানামা নামরে পরিচিত সরু ভূখণ্ডটিতে একটি জরিপের উদ্যোগ নেন। পরে একটি ক্যানেল বা খাল তৈরির নানা ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া হলেও আলোর মুখ দেখেনি।
১৮৪৮ সালের দিকে ক্যালিফোর্নিয়ার গোল্ড রাশসহ আরও দু-একটি কারণে এ ধরনের একটি খালের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের সূচনা হয়। পানামা খাল তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের যে মস্ত সুবিধা হয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। বর্তমানে নিউইয়র্ক থেকে সান ফ্রান্সিসকোগামী কোনো জাহাজ দক্ষিণ আমেরিকা হয়ে ঘুরে যাওয়ার বদলে পানামা খাল দিয়ে যাওয়ার কারণে ৭ হাজর ৮০০ মাইল কম দূরত্ব পেরোতে হয়।
১৮৮০ সালে সুয়েজ খাল তৈরি করে যারা, তাদের পরিচালিত একটি ফরাসি কোম্পানি ১৮৮০ সালে ইসমাস অব পানামা (তখন এটি কলম্বিয়ার অংশ ছিল) দিয়ে একটি খাল খনন শুরু করে। কিন্তু কাজের গোড়ার দিকেই ইয়েলো ফিভারসহ নানা ধরনের রোগে ২২ হাজারের বেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়। কোম্পানিটি শেষ পর্যন্ত দেউলিয়া হয়ে যায়। ১৯০২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তার প্রকল্পটির স্বত্ব ৪ কোটি ডলারে বিক্রি করে দেয়।
প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট আমেরিকার অর্থনৈতিক ও সামরিক স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে খালটি তৈরির উদ্যোগ নেন। ১৯০৩ সালে মার্কিন-সমর্থিত বিপ্লবে পানামা কলম্বিয়া থেকে তার স্বাধীনতা লাভ করে। তারপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পানামা হে-বানাউ-ভ্যারিলা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এর আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পানামাকে খালের জন্য জমির স্থায়ী ইজারা দেওয়ার জন্য এক কোটি ডলার দিতে সম্মত হয়। এ ছাড়া প্রতি বছর ভাড়া হিসেবে পানামা পাবে আড়াই লাখ ডলার।
১৯০৪ সাল থেকে ১৯১৩ সাল পর্যন্ত ৫৬ হাজার লোক কাজ করেন খালটি নির্মাণে, এদের মধ্যে ৫ হাজার ৬০০ জন মারা যান। খালটির নির্মাণে ৩৭ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার খরচ হয় এটি নির্মাণে। আর পানামা খাল তৈরি যখন শেষ হলো, একে বিবেচনা করা হলো অসাধারণ ও বিস্ময়কর প্রকৌশলবিদ্যার অনন্য এক উদাহরণ হিসেবে। বিশ্বশক্তি হিসেবে আমেরিকার উত্থানেও এই খাল বড় ভূমিকা রাখে।
১৯৭৭ সালে প্রায় ২০ বছর ধরে পানামাবাসীর আন্দোলনের কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার এবং পানামার জেনারেল ওমা তোরিজস দুটি নতুন চুক্তি সাক্ষর করেন। এটি ১৯০৩ সালের ওই চুক্তির স্থান নেয়। এতে খালের নিয়ন্ত্রণভার ১৯৯৯ সালে পানামাকে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। তবে ১৯৭৯ থেকে পানামার হাতে হস্তান্তরের আগে পর্যন্ত পানামা ক্যানেল কমিশন নামে যুক্তরাষ্ট্র ও পানামার একটি যৌথ কমিশন এটি নিয়ন্ত্রণ করে।
পানামা খালের দৈর্ঘ্য কত শুরুতেই বলছি। আর এটি চওড়ায় জায়গাভেদে ১৫০ থেকে ৩০০ মিটার (৫০০ থেকে ১ হাজার ফুট)। প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক জাহাজ পানামা খাল অতিক্রম করে। ২০২২ সালে ১৪ হাজার ২০০-এর বেশি জাহাজ খালটি দিয়ে যাতায়াত করে। আর এগুলোর টোল থেকে বিপুল আয় হয় দেশটির।
সূত্র: হিস্টরি চ্যানেল, ব্রিটানিকা, স্ট্যাটিস্টা ডট কম
পানামা খাল বা পানামা ক্যানেল নামটির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে যোগাযোগ তৈরি করেছে ৫০ মাইল দীর্ঘ এই খাল। ১৯৯৯ সালের আজকের দিনে মানে ৩১ ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে পানামা খালের নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা তুলে দেয় পানামার হাতে।
পানামা খাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম খুলে দেওয়া হয় ১৯১৪ সালের ১৫ আগস্ট, তখন এসএস আরকন নামের একটি জাহাজ খালটি অতিক্রম করে। আর টোরিজস-কার্টার নামের এক চুক্তির আওতায় ১৯৯৯ সালে খালটি পানামাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথ প্রথমবারের মতো পানামার নিয়ন্ত্রণে আসে।
ষোলো শতকের গোড়ার দিকে আটলান্টিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগরে যাওয়ার একটি সংক্ষিপ্ত পথের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে শুরু করেন অভিযাত্রীরা। ১৫২৩ সালে রোমান সম্রাট পঞ্চম চার্লস ইসথুমাস অব পানামা নামরে পরিচিত সরু ভূখণ্ডটিতে একটি জরিপের উদ্যোগ নেন। পরে একটি ক্যানেল বা খাল তৈরির নানা ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া হলেও আলোর মুখ দেখেনি।
১৮৪৮ সালের দিকে ক্যালিফোর্নিয়ার গোল্ড রাশসহ আরও দু-একটি কারণে এ ধরনের একটি খালের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের সূচনা হয়। পানামা খাল তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের যে মস্ত সুবিধা হয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। বর্তমানে নিউইয়র্ক থেকে সান ফ্রান্সিসকোগামী কোনো জাহাজ দক্ষিণ আমেরিকা হয়ে ঘুরে যাওয়ার বদলে পানামা খাল দিয়ে যাওয়ার কারণে ৭ হাজর ৮০০ মাইল কম দূরত্ব পেরোতে হয়।
১৮৮০ সালে সুয়েজ খাল তৈরি করে যারা, তাদের পরিচালিত একটি ফরাসি কোম্পানি ১৮৮০ সালে ইসমাস অব পানামা (তখন এটি কলম্বিয়ার অংশ ছিল) দিয়ে একটি খাল খনন শুরু করে। কিন্তু কাজের গোড়ার দিকেই ইয়েলো ফিভারসহ নানা ধরনের রোগে ২২ হাজারের বেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়। কোম্পানিটি শেষ পর্যন্ত দেউলিয়া হয়ে যায়। ১৯০২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তার প্রকল্পটির স্বত্ব ৪ কোটি ডলারে বিক্রি করে দেয়।
প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট আমেরিকার অর্থনৈতিক ও সামরিক স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে খালটি তৈরির উদ্যোগ নেন। ১৯০৩ সালে মার্কিন-সমর্থিত বিপ্লবে পানামা কলম্বিয়া থেকে তার স্বাধীনতা লাভ করে। তারপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পানামা হে-বানাউ-ভ্যারিলা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এর আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পানামাকে খালের জন্য জমির স্থায়ী ইজারা দেওয়ার জন্য এক কোটি ডলার দিতে সম্মত হয়। এ ছাড়া প্রতি বছর ভাড়া হিসেবে পানামা পাবে আড়াই লাখ ডলার।
১৯০৪ সাল থেকে ১৯১৩ সাল পর্যন্ত ৫৬ হাজার লোক কাজ করেন খালটি নির্মাণে, এদের মধ্যে ৫ হাজার ৬০০ জন মারা যান। খালটির নির্মাণে ৩৭ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার খরচ হয় এটি নির্মাণে। আর পানামা খাল তৈরি যখন শেষ হলো, একে বিবেচনা করা হলো অসাধারণ ও বিস্ময়কর প্রকৌশলবিদ্যার অনন্য এক উদাহরণ হিসেবে। বিশ্বশক্তি হিসেবে আমেরিকার উত্থানেও এই খাল বড় ভূমিকা রাখে।
১৯৭৭ সালে প্রায় ২০ বছর ধরে পানামাবাসীর আন্দোলনের কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার এবং পানামার জেনারেল ওমা তোরিজস দুটি নতুন চুক্তি সাক্ষর করেন। এটি ১৯০৩ সালের ওই চুক্তির স্থান নেয়। এতে খালের নিয়ন্ত্রণভার ১৯৯৯ সালে পানামাকে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। তবে ১৯৭৯ থেকে পানামার হাতে হস্তান্তরের আগে পর্যন্ত পানামা ক্যানেল কমিশন নামে যুক্তরাষ্ট্র ও পানামার একটি যৌথ কমিশন এটি নিয়ন্ত্রণ করে।
পানামা খালের দৈর্ঘ্য কত শুরুতেই বলছি। আর এটি চওড়ায় জায়গাভেদে ১৫০ থেকে ৩০০ মিটার (৫০০ থেকে ১ হাজার ফুট)। প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক জাহাজ পানামা খাল অতিক্রম করে। ২০২২ সালে ১৪ হাজার ২০০-এর বেশি জাহাজ খালটি দিয়ে যাতায়াত করে। আর এগুলোর টোল থেকে বিপুল আয় হয় দেশটির।
সূত্র: হিস্টরি চ্যানেল, ব্রিটানিকা, স্ট্যাটিস্টা ডট কম
ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মের সর্বোচ্চ নেতা পোপ ফ্রান্সিস আজ সোমবার সকালে মারা গেছেন। ভ্যাটিকান এই খবর নিশ্চিত করেছে। শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের চিকিৎসার পর কয়েক দিন আগে তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। পোপ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের ১২ বছর পর তাঁর মৃত্যু হলো।
১ ঘণ্টা আগেমূলত তিনি ইতালির নাগরিক। তবে তাঁর জন্মের আগেই ফ্যাসিবাদের নিপীড়ন থেকে বাঁচতে আর্জেন্টিনায় পালিয়ে আসেন তাঁর বাবা-মা। পরে সেখানে থাকতেই জন্ম হয় মারিওর। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে মারিওই ছিলেন সবার বড়। তরুণ বয়সে নিজের ও পরিবারের দায়িত্ব ঘাড়ে এসে পড়ায় তিনি ঝাড়ুদার-নাইটক্লাবে নিরাপত্তাকর্মীর...
২ ঘণ্টা আগেক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা পোপ ফ্রান্সিস মারা গেছেন। ৮৮ বছর বয়সে ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্তায় নিজ বাসভবনে আজ সোমবার মারা যান তিনি। ভ্যাটিকানের বিবৃতির বরাত দিয়ে এই মৃত্যু সংবাদ জানিয়েছে বিবিসি।
৪ ঘণ্টা আগেভেনেজুয়েলার কারাগারে আটক রাজনৈতিক বন্দীদের বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নির্বাসিত ২৫২ ভেনেজুয়েলান বন্দীকে প্রত্যর্পণের প্রস্তাব দিয়েছে এল সালভাদর। গতকাল রোববার সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে এ প্রস্তাব দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলে।
৪ ঘণ্টা আগে