Ajker Patrika

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন দখল করল বিক্ষোভকারীরা

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন দখল করল বিক্ষোভকারীরা

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক ডজন ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি একাডেমিক ভবন দখল করেছে। গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচির মাত্রা বাড়ানোর অংশ হিসেবে বিক্ষোভকারীরা নিউইয়র্কে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আজ মঙ্গলবার ভোরে হ্যামিল্টন হল দখল করে ভেতরে ব্যারিকেড দিয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের অন্যতম সংগঠন কলাম্বিয়া স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন (এসজেপি) সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিক্ষোভকারীদের তাঁবুতে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

সংগঠনটি এরপর হ্যামিল্টন হল দখলের কথা ঘোষণা দেয়। তারা জোর দিয়ে বলে যে, একাডেমিক ভবনটি ১৯৬৮ সালে ছাত্র বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।

বিক্ষোভকারী আরেক সংগঠন কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি অ্যাপার্থেইড ডাইভেস্ট (সিইউএডি) বলেছে যে, এ বছরের শুরুতে গাজায় মৃত অবস্থায় পাওয়া ছয় বছর বয়সী মেয়ে হিন্দ রাজাবের সম্মানে ভবনটি দখল করেছে তারা।

কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের ছাত্রত্ব স্থগিত করা শুরু করেছে। গতকাল সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্দোলন দমাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট নেমাত মিনোশ শফিক নিজেই এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীরা তাঁবু গেঁড়ে যে অবস্থান নিয়েছে, তা তুলে নিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাডেমিক নেতৃত্বের আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গতকাল সোমবার সকালে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ এক চিঠিতে আন্দোলনকারীদের সতর্ক করে বলে যে, স্থানীয় সময় দুপুর ২টার মধ্যে অবস্থান ছেড়ে উঠে যেতে হবে এবং এই মর্মে লিখিত অঙ্গীকার করতে হবে যে, তাঁরা ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা মেনে চলবে। অন্যথা হলে, তাদের ছাত্রত্ব স্থগিত করা হবে এবং সেমিস্টার পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হবে না।

হ্যামিল্টন হলের সামনের দরজা ভাঙছেন একজন বিক্ষোভকারী। ছবি: এএফপিকলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বর্তমান অবস্থাকে ‘অনিয়ম ও নৈরাজ্যপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেছেন একজন শিক্ষার্থী। তিনি বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা জানালা ভেঙে ভবনে প্রবেশ করেছে এবং আসবাবপত্র দিয়ে দরজা আটকে রেখেছে।

সিবিএস নিউজের সংবাদকর্মী জেসিকা শোয়ালব বলেছেন যে, বিক্ষোভকারীরা অনেক কিছু দিয়ে ব্যাগ ভর্তি করে একাডেমিক ভবনটিতে প্রবেশ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমি অনুমান করছি যে তারা সেখানে অনির্দিষ্টকালের জন্য বসবাস করবে।’

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে প্রকম্পিত যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাস। গত ১৭ এপ্রিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের সরাতে ক্যাম্পাসে নিউইয়র্ক পুলিশ প্রবেশ করে একশোর বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করলে এই বিক্ষোভের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে।

গত এক সপ্তাহে পুলিশ ৫৫০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত