Ajker Patrika

রুশদির রসবোধ এখনো অটুট

রুশদির রসবোধ এখনো অটুট

সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত বুকারজয়ী ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির শারীরিক অবস্থা এখনো জটিল থাকলেও তাঁর রসবোধ এখনো অটুট আছে বলে জানিয়েছেন তাঁর ছেলে। রুশদির ছেলে জাফর রুশদি বলেছেন, তাঁর বাবা জীবন বদলে দেওয়া আঘাত সয়েছেন। তবে পরিবারের সঙ্গে এখনো কথা বলতে পারছেন। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

গত শুক্রবার নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছেন ৭৫ বছর বয়সী সালমান রুশদি। তাঁর জখম এতটাই গুরুতর ছিল যে তাঁকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে (কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস প্রশ্বাস চালু রাখার প্রক্রিয়া) রাখা হয়েছিল। তিনি কথাও বলতে পারছিলেন না। একদিন পর তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে ভেন্টিলেটর সরিয়ে নেওয়া হয়। তিনি এখন কথা বলতে পারছেন। 

এ প্রসঙ্গে রুশদির ছেলে জাফর রুশদি এক টুইটার পোস্টে বলেছেন, ‘শুক্রবারের হামলার পর আমার বাবা গুরুতর আহত অবস্থায় এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শনিবার তাঁকে ভেন্টিলেটর থেকে সরিয়ে নেওয়া হলে আমরা পরিবারের মানুষেরা অনেক স্বস্তি পেয়েছি। বাবা এখন কিছুটা কথা বলতে পারছেন। যদিও তাঁর ওপর হওয়া জীবন সংশয়ী আঘাতগুলো খুবই গুরুতর, তারপরও তাঁর স্বভাবসুলভ রসবোধ অটুট রয়েছে।’ 

এর আগে সালমান রুশদির প্রকাশক অ্যান্ড্রু উইলি বলেছেন, ‘রুশদি সুস্থ হয়ে উঠতে শুরু করেছেন। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। কারণ তাঁর আঘাতগুলো গুরুতর। 

এদিকে রুশদিকে আক্রমণকারী সন্দেহে ২৪ বছর বয়সী হাদি মাতারকে গ্রেপ্তার করেছে নিউ ইয়র্ক স্টেট পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, রুশদির ঘাড়ে, পেটে, মুখে অন্তত ১০ বার ছুরিকাঘাত করেছেন তিনি। 

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক সালমান রুশদি গত শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে নিউইয়র্কের শিতৌকা ইনস্টিটিউটে এক সাহিত্যসভায় ছুরিকাঘাতের শিকার হন। ঘটনার পরপরই তাঁকে হেলিকপ্টারে করে পেনসিলভানিয়ার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 

গতকাল শনিবার রুশদির স্বাস্থ্যের অবস্থা জানিয়েছে তাঁর বইয়ের প্রকাশক অ্যান্ড্রু উইলি বলেছিলেন, ‘অস্ত্রোপচারের পর শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কথা বলতে পারেননি রুশদি। তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে। ছুরিকাঘাতে তাঁর বাহুর স্নায়ু বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাঁর একটি চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।’ 

এর একদিন পর রুশদির অবস্থার উন্নতি হলে ভেন্টিলেটর খুলে নেওয়া হয়। আজ তাঁর ছেলে জানালেন, বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় এ লেখক কথা বলতে পারছেন এবং তাঁর স্বভাবসুলভ রসবোধ এখনো অক্ষুণ্ন রয়েছে। 

১৯৪৭ সালের ১৯ জুন ভারতের তৎকালীন বোম্বে (বর্তমান মুম্বাই) শহরে জন্মগ্রহণ করেন সালমান রুশদি। ১৪ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাজ্যের চলে যান। কেমব্রিজের কিংস কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে দেশটির নাগরিকত্ব অর্জন করেন। একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কপিরাইটার হিসেবে চাকরি শুরু করলেও পরে উপন্যাস ও নন-ফিকশন লেখায় মনোযোগ দেন তিনি। ১৯৮১ সালে দ্বিতীয় উপন্যাস ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ লিখে বুকার প্রাইজ জেতেন। তবে ১৯৮৮ সালে চতুর্থ উপন্যাস ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ লিখে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেন। বইটিতে ইসলাম ধর্মের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে অবমাননা করা হয়েছে এবং নবুয়ত নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছে অভিযোগ এনে পরের বছর ইরানের তৎকালীন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লা খোমেনি সালমান রুশদিকে হত্যার ফতোয়া জারি করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত