Ajker Patrika

রাষ্ট্রদূতদের বাড়তি প্রটোকল প্রত্যাহার: বাংলাদেশকে ভিয়েনা কনভেনশন মনে করাল যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৬ মে ২০২৩, ২০: ৪৪
রাষ্ট্রদূতদের বাড়তি প্রটোকল প্রত্যাহার: বাংলাদেশকে ভিয়েনা কনভেনশন মনে করাল যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ ৬ দেশের রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশ আর বাড়তি প্রটোকল দেবে না বলে গতকাল সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে। পুলিশের পরিবর্তে এখন থেকে কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় থাকবেন আনসার সদস্যরা। এই বিষয়ে কূটনৈতিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিধি অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। 

১৫ মে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে ব্লুমবার্গের হোয়াইট হাউস প্রতিনিধি জেনি লিওনার্দের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশকে ভিয়েনা কনভেনশনের কথা মনে করিয়ে দেন উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল। তিনি বলেন, কূটনীতিকদের সুরক্ষা ইস্যুতে ভিয়েনা কনভেনশন মনে রাখার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশন ও কর্মীদের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

জেনি লিওনার্দ তাঁর প্রশ্নে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের বাড়তি নিরাপত্তা প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, তারা মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং যুক্তরাজ্যসহ অন্য প্রায় ছয় দেশের রাষ্ট্রদূতকে কোনো বাড়তি নিরাপত্তা দেবে না। আপনি জানেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাড়ি বহরে হামলা এবং ২০১৮ সালে কয়েকবার সরকার-সমর্থকদের আক্রমণের শিকার হয়েছে। আপনি কি বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন?’

জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘আমি মার্কিন দূতাবাস বা এর কর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিশদ বিবরণে যাচ্ছি না। কিন্তু আমি উল্লেখ করতে চাই, কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে যে কোনো দেশকে অবশ্যই সব কূটনৈতিক মিশন প্রাঙ্গণ ও এর কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে চলতে হবে। কর্মীদের ওপর কোনো আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য কার্যকর সব পদক্ষেপ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। আমাদের কূটনৈতিক কর্মী এবং স্থাপনার নিরাপত্তা ও সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

এরপর জেনি লিওনার্দ বলেন, আমার দুটি ছোট প্রশ্ন- একটি ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার সম্পর্কে। বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন সম্পর্কে তিনি গত শনিবার বলেছেন, নির্বাচন চূড়ান্তভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করছে। তারা অংশগ্রহণ করতে চাক বা না চাক, যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করবে না। বিএনপি বা অন্যান্য দল নির্বাচনে অংশ না নিলে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কী মন্তব্য করবে, এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কী সুষ্ঠু হবে?

‘আরেকটি বিষয় হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী সহায়তা সত্ত্বেও ২০০৪ এবং ২০০৫ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশ ভয়ঙ্করভাবে সন্ত্রাসী হুমকির সম্মুখীন হয়েছিল। গ্লোবাল টেরোরিজম ইনডেক্স অনুযায়ী, ২০২৩ সালে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থানে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে সন্ত্রাস দমনের কাজে যুক্ত থাকবে কি না এবং র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসন নতুন কোনো পরিকল্পনা করছে কি না।’

উত্তরে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘এবিষয়ে নতুন কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। তাই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া বা তুলে নেওয়ার বিষয়ে নতুন কোনো খবর নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের কথা বললে– আমি আগেও বলেছি– গত বছর আমাদের দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করেছে। আমরা যে সম্পর্কের জন্য অপেক্ষা করছি, তা হলো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী নির্বিশেষে সেই সম্পর্ককে আরও গভীর করা এবং বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতাকে আরও দৃঢ় করা। বিশ্বজুড়ে যে কোনো নির্বাচনে আমাদের প্রত্যাশা হলো– নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হবে। তবে এর বাইরে রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী বা এই জাতীয় কিছুর ক্ষেত্রে অন্তর্দৃষ্টি দেওয়ার মতো আর কিছুই নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত