Ajker Patrika

সির সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ায় দেখা করবেন ট্রাম্প, তারপর যাবেন চীনে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সির সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ায় দেখা করবেন ট্রাম্প, তারপর যাবেন চীনে

আসন্ন অক্টোবরের শেষে দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে দেখা করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর সামনের বছর যাবেন চীনে। শুক্রবার সির সঙ্গে দীর্ঘ ফোনালাপের পর এ সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

এই ফোনালাপের পর নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেন, অক্টোবরের শেষ দিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠেয় একটি আঞ্চলিক শীর্ষ সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং পরবর্তী বছরের শুরুতে চীনে সফর করবেন।

পোস্টে ট্রাম্প আরও জানান, ‘উপযুক্ত’ সময় হলে সি চিন পিংও যুক্তরাষ্ট্রে আসবেন। তাঁরা ‘টিকটক চুক্তি’ অনুমোদন নিয়ে আলোচনায় অগ্রসর হয়েছেন বলেও জানান ট্রাম্প।

তিনি বলেন, জনপ্রিয় এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি যাতে যুক্তরাষ্ট্রে চালু থাকতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনার অগ্রগতি হয়েছে। তবে এর বিস্তারিত কিছুই জানাননি তিনি।

এদিকে চীনা সরকারের বিবৃতিতে এসব সফরের কোনো উল্লেখ করা হয়নি। টিকটকের চীনা মূল কোম্পানির নিয়ন্ত্রণকারী শেয়ার বিক্রিতে সি চিন পিংয়ের সম্মতির বিষয়েও কোনো তথ্য তুলে ধরা হয়নি। তবে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সি ট্রাম্পকে বলেছেন, ‘বাণিজ্য সম্পর্ক আরও খারাপ হওয়া থেকে রক্ষা করতে বাণিজ্য বিধিনিষেধ আরোপ এড়াতে।’

যদিও বহুল প্রতীক্ষিত এই ফোনালাপ বিশ্বের বৃহত্তম দুটি অর্থনীতির দেশের নেতাদের মধ্যে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ইঙ্গিত দিচ্ছে, তবে বিবৃতিগুলো থেকে ধারণা পাওয়া যায়, পরস্পরবিরোধী বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গির দুটি দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক কতটা জটিল। তবে, তাঁদের মধ্যে ইতিবাচক অবস্থানের একটি প্রমাণ হলো সামনাসামনি সাক্ষাতের ইচ্ছা।

ট্রাম্প লিখেছেন, ‘ফোনালাপটি খুবই ভালো ছিল। আমরা আবারও ফোনে কথা বলব। টিকটক অনুমোদনের জন্য কৃতজ্ঞ। এপিইসিতে সাক্ষাতের অপেক্ষায় আছি দুজন।’

এপিএসি হলো প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২১টি অর্থনীতির এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন গ্রুপ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ট্রাম্প আরও বলেন, মার্কিন বিনিয়োগকারীরা টিকটকে বিনিয়োগে আগ্রহী। সিকে এই আলোচনা প্রসঙ্গে ‘এ জেন্টেলম্যান’ বলে অভিহিত করেন ট্রাম্প। তবে টিকটকের অ্যালগরিদমের মালিকানা প্রসঙ্গে কিছুই বলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প জানান, সির সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা কথা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সবকিছু নিয়ে কাজ চলছে। আমাদের খুব ভালো নিয়ন্ত্রণ থাকবে।’

টিকটকের চীনা মালিকানাধীন মূল কোম্পানি বাইটড্যান্স এক বিবৃতিতে দুই নেতাকেই ধন্যবাদ জানিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপটির পরিষেবা অব্যাহত রাখার জন্য চলমান আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে মালিকানার বিষয়টি কীভাবে সমাধান হবে, সে সম্পর্কে তারা বিস্তারিত কিছু জানায়নি। ট্রাম্পও জানান, চুক্তিটি ‘অনেক দূর’ এগিয়েছে।

মাদ্রিদে বাণিজ্য আলোচনার সময় চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে অ্যাপটির মালিকানার বিষয়ে একটি কাঠামো চুক্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

গত বছর ডেটা গোপনীয়তা এবং জাতীয় নিরাপত্তার উদ্বেগের কারণে বাইটড্যান্স থেকে টিকটককে আলাদা করার জন্য একটি সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ট্রাম্প এই সময়সীমা বেশ কয়েকবার বাড়িয়েছেন।

মার্কিন কর্মকর্তারা বাইটড্যান্সের উৎস এবং মালিকানা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাঁরা চীনের এমন কিছু আইনের দিকে ইঙ্গিত করেছে, যা অনুযায়ী চীনা কোম্পানিগুলো সরকারের অনুরোধে তাদের কাছে থাকা তথ্য দিতে বাধ্য।

গত সোমবার চীনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘মেধাস্বত্ব অধিকার ব্যবহারের’ অনুমোদন, যার মধ্যে অ্যালগরিদমও অন্তর্ভুক্ত, সে বিষয়ে একটি ঐকমত্যে পৌঁছানো গেছে। এ ছাড়া, দুই পক্ষ মার্কিন ব্যবহারকারীদের ডেটা এবং কনটেন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একজন অংশীদারের ওপর দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়েও সম্মত হয়েছে।

চীনের বিবৃতি অনুযায়ী, ফোনালাপে সি ট্রাম্পকে বলেছেন, বেইজিং বাজারের নিয়ম মেনে ফলপ্রসূ বাণিজ্যিক আলোচনা দেখে খুশি হবে। যা চীনের আইন ও প্রবিধান মেনে একটি সমাধান বের করতে এবং উভয় পক্ষের স্বার্থ বিবেচনা করতে সাহায্য করবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের উচিত চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি উন্মুক্ত, ন্যায্য এবং বৈষম্যহীন পরিবেশ তৈরি করা।’

ওয়াশিংটনের থিঙ্কট্যাংক ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অব ডেমোক্রেসিসের জ্যেষ্ঠ চীনা গবেষক ক্রেইগ সিঙ্গেলটন বলেন, টিকটক নিয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো চুক্তি হয়েছে বলে মনে হয় না।

তিনি বলেন, ‘বেইজিং চীনের আইন অনুযায়ী বাজারভিত্তিক আলোচনার কথা বলে, যার ফলে তাদের হাতে কার্যত ভেটোর ক্ষমতা থেকে যায়। অন্যদিকে, ট্রাম্প নিজেকে চূড়ান্ত অনুমোদনকারী হিসেবে তুলে ধরছেন।’

শুক্রবারে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ট্রাম্প বলেছেন, তাঁরা আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অগ্রগতি করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য, ফেন্টানিল এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানোর প্রয়োজনীয়তা।

এর আগের দিন ট্রাম্প বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হতে পারে যদি ইউরোপীয় দেশগুলো চীনের ওপর উচ্চতর শুল্ক আরোপ করে। ট্রাম্প ভারতের ওপর যেমন মস্কোর তেল কেনার জন্য শুল্ক আরোপ করেছিলেন, বেইজিংয়ের ওপরও তিনি একই রকম শুল্ক আরোপ করার পরিকল্পনা করছেন কি না, তা অবশ্য জানাননি।

গত মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও চীনা কর্মকর্তারা চার দফায় বাণিজ্য আলোচনা করেছেন। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আরও একটি বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উভয় পক্ষই উচ্চ শুল্ক স্থগিত করেছে এবং কঠোর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ থেকে কিছুটা পিছিয়ে এসেছে।

তবে, প্রযুক্তি রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা, যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য ক্রয় বা ফেন্টানিল নিয়ে তারা এখনো কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি। ট্রাম্প প্রশাসন চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এর কারণ হিসেবে অভিযোগ করা হয়েছে, বেইজিং এমন রাসায়নিকের প্রবাহ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রে আফিম জাতীয় (অপিওয়েড) ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

এর জবাবে চীন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে।

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে চীনের সঙ্গে শুরু হওয়া বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে মার্কিন কৃষকেরা তাঁদের অন্যতম প্রধান বাজার হারিয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত চীনে মার্কিন কৃষিপণ্যের রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৩ শতাংশ কমে গেছে। কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি, যেমন—চীনে যুক্তরাষ্ট্রের জোয়ার বিক্রি ৯৭ শতাংশ কমেছে।

ইউএস-চায়না বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি শন স্টেইন বলেন, যদি ফেন্টানিল-সম্পর্কিত শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়, তাহলে বেইজিং তার প্রতিশোধমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করে নেবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য ও অন্যান্য পণ্যের কেনাকাটা আবার শুরু করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘এর ফলে বাজারে অনেক ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে এবং ফেন্টানিলের মানবিক সংকটও হ্রাস পাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এশিয়া সফরে কিমের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের জল্পনা, উত্তর কোরিয়াকে ‘পারমাণবিক শক্তি’ আখ্যা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ০৮
প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রাখেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রাখেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এশিয়া সফরের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার প্রাক্কালে উত্তর কোরিয়াকে ‘একপ্রকার পারমাণবিক শক্তি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের জল্পনা চলছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এয়ারফোর্স ওয়ান বিমানে ট্রাম্পকে সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে উত্তর কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি তিনি মানতে প্রস্তুত কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন: ‘আমি মনে করি তারা একপ্রকার পারমাণবিক শক্তি। যখন আপনারা বলেন তাদের পারমাণবিক শক্তি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে, আমি বলব—তাদের প্রচুর পারমাণবিক অস্ত্র আছে।’

ট্রাম্পের এ মন্তব্যটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, কিম জং-উন গত মাসেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগের ‘বিভ্রান্তিকর’ দাবি ত্যাগ করে, তবে তিনি আলোচনার জন্য প্রস্তুত। উত্তর কোরিয়া এর আগে একাধিকবার নিজেদের একটি ‘পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।

ট্রাম্প আগামী বুধবার এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) ফোরামে যোগ দিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন অভ্যন্তরীণভাবে কিম জং-উনের সঙ্গে একটি বৈঠক আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা করছে। ট্রাম্প নিজেও আশা প্রকাশ করেছেন, তিনি সম্ভবত এ বছরই কিমের সঙ্গে আবারও দেখা করবেন।

গতকাল শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রকরণ মন্ত্রী চুং ডং-ইয়ং বলেন, আগামী সপ্তাহে কোরিয়া উপদ্বীপে সফরের সময় কিমের সঙ্গে ট্রাম্পের সাক্ষাতের জোর সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে একজন ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের জানান, এই সফরসূচিতে কোনো বৈঠক ‘তালিকায় নেই’।

দুই নেতার বৈঠকের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাতিসংঘ কমান্ড জয়েন্ট সিকিউরিটি এরিয়ায় (জেএসএ) চলতি অক্টোবরের শেষ নাগাদ থেকে নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে।

মন্ত্রী চুং জানিয়েছেন, গত বছর প্রথমবার জেএসএ-এর কাছাকাছি এলাকায় উত্তর কোরিয়ার কর্মীদের ‘সাজসজ্জা’ করতে দেখা গেছে। তারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, আগাছা পরিষ্কার করা এবং ফুলের টব গোছানোর কাজ করেছে। এটি সাধারণত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের আগে দেখা যায়।

ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে কিমের সঙ্গে তিনবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেছিলেন। তাঁদের শেষ বৈঠকটি ২০১৯ সালে দুই কোরিয়ার সীমান্ত বিভাজনকারী পানমুনজমে (জেএসএ) হয়েছিল। সেই সময় ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার মাটিতে কয়েক কদম হেঁটেছিলেন। উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রাখা প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট তিনি।

তবে উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্রাগারের কতটা ত্যাগ করতে ইচ্ছুক এবং বিনিময়ে কী পাবে—এ বিষয় নিয়ে মতানৈক্যের কারণে সেই আলোচনা শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাটডাউনে বন্ধুর উপহারের টাকায় সেনাবাহিনীর বেতন দিয়েছেন, দাবি ট্রাম্পের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

শাটডাউনের সময় এক ‘বন্ধু’র দেওয়া টাকায় সেনাবাহিনীর বেতন দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তহবিলের ঘাটতি মেটাতে প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনকে ওই বন্ধু ১৩০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

ওই ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করেননি ট্রাম্প। তিনি বলেন, তাঁর ওই বন্ধু প্রচার বা পরিচয় প্রকাশ হোক চান না। সেনাবাহিনীর প্রতি ভালোবাসা থেকে তিনি এই অনুদান দিয়েছেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘একেই বলে দেশপ্রেম।’

গতকাল শুক্রবার বিজনেস ইনসাইডারকে দেওয়া এক বিবৃতিতে পেন্টাগন অনুদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, সামরিক বিভাগ ‘সাধারণ উপহার গ্রহণের ক্ষমতা’ (general gift acceptance authority) অনুযায়ী এক নাম-পরিচয় প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক দাতার কাছ থেকে ১৩০ মিলিয়ন ডলারের অনুদান পেয়েছে।

পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল জানান, সেনাসদস্যদের বেতন ও সুবিধার পেছনে ব্যয় করার শর্তে এই অনুদান দেওয়া হয়েছে।

এই অনুদান নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই পেন্টাগনের এই অর্থ রাখা এবং ব্যয় করা আইনত বৈধ কি না।

কর্নেল ল’ স্কুলের তথ্যানুযায়ী, কোনো সংস্থা বা দপ্তর যদি কোনো উৎস থেকে এ ধরনের অনুদান পায়, তবে ‘যত দ্রুত সম্ভব কোনো কর্তন বা দাবি ছাড়া সেই অর্থ কোষাগারে জমা দিতে হবে।’

মার্কিন সংবিধানের অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন ক্লজ (Appropriations Clause)-এও বলা আছে, ‘আইন অনুযায়ী বরাদ্দ করা না হলে কোনো অর্থ কোষাগার থেকে তোলা যাবে না।’ অর্থাৎ, পেন্টাগনকে এই ১৩০ মিলিয়ন ডলার কোষাগারে জমা দিতে হবে এবং অর্থ ব্যবহারের জন্য কংগ্রেসের অনুমোদন বা বরাদ্দ প্রয়োজন হবে।

সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবা আইন (Affordable Care Act)-এর জন্য ভর্তুকি অব্যাহত রাখা হবে কিনা, এই বিষয়ে মতপার্থক্যের কারণে কংগ্রেস একটি অর্থায়ন বিল পাস করতে ব্যর্থ হওয়ায় গত ১ অক্টোবর সরকার শাটডাউন হয়ে যায়। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ট্রাম্প চলতি অর্থবছরের অবশিষ্ট তহবিল ব্যবহারের অনুমোদন দিলে সেনাসদস্যরা বেতন পেতে শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ক্যারিবীয় সাগরে এবার বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরি পাঠালেন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ১২
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে উন্নত বিমানবাহী রণতরী ‘ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড’। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে উন্নত বিমানবাহী রণতরী ‘ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড’। ছবি: সংগৃহীত

মাদক কার্টেলগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ক্রমেই জোরদার করছে ট্রাম্প প্রশাসন। এবার মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন গতকাল শুক্রবার ঘোষণা করেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে উন্নত বিমানবাহী রণতরি ‘ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড’ ক্যারিবীয় সাগরে মোতায়েন করছে।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমধ্যসাগরে চলমান সামরিক যান মোতায়েন শেষ করার কাছাকাছি সময়ে ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ডকে ক্যারিবীয় অঞ্চলে, বিশেষ করে ভেনেজুয়েলার উপকূলের দিকে আনা হচ্ছে। সুপারক্যারিয়ারটির সঙ্গে রয়েছে কয়েক ডজন স্টিলথ ফাইটার জেট ও নজরদারি বিমান, সেই সঙ্গে অন্যান্য সহগামী যুদ্ধজাহাজ তো থাকছেই।

ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপকে ক্যারিবীয় সাগরে পাঠানোর ঘটনাটি প্রশাসনের সামরিক অভিযানের পরিধি বাড়ানোর সবচেয়ে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত। এর আগে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের দিকে আসা সন্দেহভাজন ছোট মাদকবাহী নৌকায় আঘাত হানা হচ্ছিল, কিন্তু এখন স্থলভিত্তিক লক্ষ্যবস্তুতেও হামলা চালানোর পরিকল্পনার কথা বলছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

এই সুপারক্যারিয়ারে থাকা ডজনখানেক এফ-১৮ সুপার হর্নেট জেট বিমান যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণ সক্ষমতা বাড়াবে এবং ভেনেজুয়েলার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোতে আঘাত হানার সক্ষমতা দেবে। বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তারা বলছেন, এর ফলে মার্কিন বিশেষ আভিযানিক দল বা ড্রোনগুলোর জন্য স্থলভিত্তিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করার পথ প্রশস্ত হবে।

পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পার্নেল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই বর্ধিত নৌ উপস্থিতি অবৈধ কার্যকলাপ এবং অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত, পর্যবেক্ষণ এবং প্রতিহত করার মার্কিন সক্ষমতাকে জোরদার করবে। এসব অপতৎপরতা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং পশ্চিম গোলার্ধে মার্কিন উপস্থিতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।’

এই বর্ধিত মার্কিন সামরিক উপস্থিতির তীব্র সমালোচনা করেছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। শুক্রবার দিনের শেষে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে তারা আর কখনো কোনো যুদ্ধে জড়াবে না, আর এখন তারা একটা যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করছে।’

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন কয়েক সপ্তাহ ধরে মাদক কার্টেলগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে। ইতিমধ্যে কমপক্ষে ৯টি সন্দেহভাজন মাদক পাচারকারী নৌকায় হামলা চালানো হয়েছে।

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার বলেন, তাঁর সামরিক অভিযানের পরবর্তী পর্যায় হবে স্থল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা। ট্রাম্প বলেন, ‘স্থলই হবে পরবর্তী (লক্ষ্য)।’

তবে কোন দেশের কোন লক্ষ্যবস্তুতে যুক্তরাষ্ট্র আঘাত হানতে চায়, সে বিষয়ে ট্রাম্প কিছু বলেননি। যদিও তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে প্রশাসনের পরিকল্পনা সম্পর্কে কংগ্রেসকে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

মাদক কার্টেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবেন কি না জানতে চাইলে ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, তিনি হামলা চালিয়ে যাবেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি যারা আমাদের দেশে মাদক আনছে, আমরা শুধু তাদের মেরে ফেলব, ঠিক আছে? আমরা তাদের মেরে ফেলব।’

গত ৩ সেপ্টেম্বর একটি নৌকায় প্রথম হামলার কথা ঘোষণা করেন ট্রাম্প। পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে আরও হামলার কথা জানানো হলেও নিহতের সংখ্যা এবং নৌকাগুলোতে মাদক ছিল—এই দাবি ছাড়া আর কোনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে প্রশাসন হামলার আইনি ন্যায্যতা দিয়েছে। দ্য গার্ডিয়ানের রিপোর্ট অনুযায়ী, তারা দাবি করছে, এই নৌকাগুলো চিহ্নিত সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। যুক্তরাষ্ট্র এই গোষ্ঠীর সঙ্গে ‘সশস্ত্র সংঘাতে’ জড়িত।

তবে প্রশাসন এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেয়নি যে নৌকায় হামলায় নিহত ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার করছিলেন। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত সূত্রগুলো জানিয়েছে, কংগ্রেসের কাছে ব্রিফিংয়ে পেন্টাগনের কর্মকর্তারা বলেছেন, ট্রাম্প যেহেতু নৌকাগুলোকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে দেখা কার্টেলগুলোর সম্পদ হিসেবে চিহ্নিত করছেন, তাই সেগুলোতে হামলা বৈধ।

এই সামরিক অভিযানে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাও (সিআইএ) জড়িত। ট্রাম্প ১৫ অক্টোবর নিশ্চিত করেছেন, তিনি ভেনেজুয়েলায় সিআইএর তথাকথিত ‘গোপন কার্যক্রমের’ অনুমোদন দিয়েছেন। দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বিমান হামলায় ব্যবহৃত গোয়েন্দা তথ্যের একটি বড় অংশ সিআইএ সরবরাহ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সমুদ্রে কেন হঠাৎ মাদকযুদ্ধে নামলেন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সমুদ্রে একের পর এক সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকার ওপর হামলা করছে মার্কিন বাহিনী। গত এক সপ্তাহের মধ্যেই অন্তত তিনটি সন্দেহভাজন নৌকায় আঘাত করেছে তারা। এর মধ্যে একটি ক্যারিবিয়ান সাগর ও অন্তত দুটি হামলা হয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরে।

গত ২২ অক্টোবর মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের একটি এক্স পোস্টে দেখা গেছে—নীল রঙের একটি নৌকা দ্রুত গতিতে ছুটে চলেছে। পরে সেটি আঘাতপ্রাপ্ত ও বিস্ফোরিত হয়ে আগুনের গোলায় পরিণত হয়। ভিডিওতে হেগসেথ মন্তব্য করেছেন, ‘আল-কায়েদার মতোই কার্টেলগুলো আমাদের সীমান্ত ও জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। কোনো প্রশ্রয় বা ক্ষমা হবে না—শুধুই ন্যায়বিচার।’

এখন পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগরের ওই দুটি হামলায় আক্রান্ত নৌকা দুটিকে যথাক্রমে ৮ নম্বর ও ৯ নম্বর হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ক্যারিবিয়ান সাগরে আরও একটি হামলার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এসব হামলায় মৃতের সংখ্যা এখন ৪৩-এ পৌঁছেছে।

তবে মার্কিন প্রশাসন এখনো জনসমক্ষে কোনো প্রমাণ দেয়নি যে, নৌকাগুলোতে যারা ছিলেন, তাঁরা আসলে কোনো মাদক কার্টেলের সদস্য ছিলেন বা নৌকাগুলো মাদক বহন করছিল। এর ফলে বিষয়টি আইনি বৈধতা ও হোয়াইট হাউসের আসল উদ্দেশ্য নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) এনপিআর-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার আগে থেকেই মার্কিন বাহিনী ভেনেজুয়েলার উপকূলে শক্তি বাড়িয়েছে। নৌবহর ও সৈন্যদল এমনভাবে মোতায়েন করেছে যে, আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরা এটিকে নজিরবিহীন বলছেন। এ অবস্থায় ছোট ছোট নৌকাকে লক্ষ্য করে এত সামরিক শক্তি প্রয়োগকে একটি অতিরঞ্জিত পদক্ষেপ বলে মনে করছেন তাঁরা। কিছু বিশ্লেষকের মতে, এটি ভেনেজুয়েলার নেতৃত্বকে উৎখাতের উদ্দেশ্য প্রকাশ কিংবা তাঁর বিরুদ্ধে সেনা উত্থানকে উসকে দেওয়ার কৌশলও হতে পারে।

ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন, আন্তর্জাতিক জলসীমায় এই ধরনের হামলা করার আইনি ক্ষমতা তাঁর প্রশাসনের আছে। এটিকে তিনি জাতীয় নিরাপত্তার অংশ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলছেন, এই হামলাগুলো আমেরিকানদের জীবন বাঁচাচ্ছে। কিন্তু আইনগতভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করার ক্ষমতা মার্কিন কংগ্রেসের হাতে এবং কংগ্রেস মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ধরনের যুদ্ধ ঘোষণা করেনি। ডেমোক্র্যাট, এমনকি রিপাবলিকান কয়েকজন নেতাও এই হামলাগুলোকে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে সমালোচনা করেছেন। কেন্টাকি সিনেটর র‍্যান্ড পল বলেছেন, ‘প্রমাণ ছাড়াই, মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া অনৈতিক।’

এদিকে জাতিসংঘের স্বাধীন বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন—আন্তর্জাতিক জলসীমায় আইনগত ভিত্তি ছাড়া মারণাস্ত্র প্রয়োগ আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইনের লঙ্ঘন এবং নির্বিচারে হত্যার সমান হতে পারে। প্রতিবেশী কলম্বিয়াও উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে। কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট কিছু হামলায় তাঁর দেশের নাগরিক নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। পরিসংখ্যান ও প্রমাণ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এখন ক্রমেই বাড়ছে।

এই পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত কোন দিকে যাবে, তা জানতে সারা বিশ্ব এখন সমুদ্রে তাকিয়ে আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত