Ajker Patrika

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের অর্থ লেনদেন ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ এখন মাস্কের হাতে

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের অর্থ লেনদেনে চাবিকাঠি এখন ইলন মাস্কের হাতে। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের অর্থ লেনদেনে চাবিকাঠি এখন ইলন মাস্কের হাতে। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হয়েই মিত্র ইলন মাস্ককে দেশটির সরকারি কর্মদক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) দায়িত্ব দেন। ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর মাস্কও তাঁর কাজ শুরু করে দেন। এবারে তিনি মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ তথা অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ লেনদেনের পুরো ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ পেয়েছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্কের নিয়ন্ত্রণে থাকা সরকারি কর্মদক্ষতা বিভাগে তাঁর নিয়োগ করা মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের অর্থ প্রদান ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার পেয়েছেন। এর ফলে কয়েক দিন ধরে চলা অচলাবস্থার অবসান হয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস গতকাল শনিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইলন মাস্ক বর্তমানে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে এই বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছেন। মাস্ককে সরকারি ব্যয়ের অপ্রয়োজনীয় অংশ চিহ্নিত করা এবং সম্ভাব্য জালিয়াতি খুঁজে বের করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি ট্রেজারি বিভাগের সেই সিস্টেমের অ্যাকসেস চেয়েছিলেন।

এই সিস্টেমের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ফেডারেল তহবিল বিতরণ করা হয়। কিন্তু তার এই প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেন ট্রেজারি বিভাগের অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা ডেভিড লেব্রিক। তিনি মাস্কের এই অ্যাকসেস পাওয়ার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। এর ফলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। তবে চলতি সপ্তাহে লেব্রিককে ছুটিতে পাঠানো হয় এবং পরে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। এরপর গত শুক্রবার মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট ব্যাসেন্ট মাস্কের দলকে সরকারি অর্থ প্রদানের এই গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেমের অ্যাকসেস প্রদান করেন।

এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থার একটি। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে ৬ লাখ কোটি ডলারের বেশি অর্থ লেনদেন করা হয়। এটি বিভিন্ন ফেডারেল সংস্থার পক্ষ থেকে অর্থ প্রদান করে থাকে। যেমন, সামাজিক নিরাপত্তার সুবিধাভোগী, কর ফেরতের অর্থ প্রদান, সরকারি অনুদান ও সহায়তা এবং সরকারি ঠিকাদারদের অর্থও এই সিস্টেমের মাধ্যমে দেওয়া হয়। এই সিস্টেমে কোটি কোটি আমেরিকানের ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষিত, যা অত্যন্ত সংবেদনশীল।

মাস্কের দল এই সিস্টেমে প্রবেশাধিকার পাওয়ার পর, মার্কিন সিনেটের শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতা রন ওয়াইডেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্লুস্কাইয়ে শেয়ার করা এক পোস্টে এ বিষয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, তাঁর দপ্তরকে একটি সূত্র জানিয়েছে, ট্রেজারি সেক্রেটারি ব্যাসেন্ট ডিওজিইকে সম্পূর্ণ প্রবেশাধিকার দিয়েছেন। এর মধ্যে সোশ্যাল সিকিউরিটি ও মেডিকেয়ার সুবিধাভোগীদের অর্থ প্রদান, সরকারি অনুদান ও সহায়তা প্রদান, এবং সরকারি ঠিকাদারদের পেমেন্ট অন্তর্ভুক্ত। এমনকি এই ঠিকাদারদের মধ্যে মাস্কের কোম্পানির প্রতিদ্বন্দ্বীরাও রয়েছেন।

সিনেট ফাইন্যান্স কমিটির প্রধান ওয়াইডেন আরও বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুতর এবং এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ হতে পারে।’ গত শুক্রবার ওয়াইডেন ট্রেজারি সেক্রেটারি ব্যাসেন্টকে একটি চিঠি পাঠান। সেখানে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘যদি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কেউ অর্থ প্রদানের সিস্টেমের অপব্যবহার করে, তবে এটি আমাদের দেশের অর্থনীতি এবং নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি সৃষ্টি করবে।’

ডেমোক্র্যাটদের শঙ্কা হলো, মাস্ক এই সিস্টেমের ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেন, অথবা এমন কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন যা তার নিজস্ব ব্যবসার স্বার্থ রক্ষা করবে। তবে বাস্তবতা হলো এটি কেবল নামেই ডিপার্টমেন্ট। আসলে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি কোনো ফেডারেল সংস্থা নয়। এটি ট্রাম্পের নির্দেশে গঠিত একটি বিশেষ ইউনিট, যা হোয়াইট হাউসের নির্দেশে কাজ করছে।

গতকাল শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের শেয়ার করা এক পোস্টে মাস্ক দাবি করেন, ‘ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তাদের পরিচিত জালিয়াত বা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর অর্থ প্রদান অনুমোদন করতে বলা হয়েছিল। তবে, মাস্ক এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

‘আমি আওয়ামী লীগ করি, এটাই অপরাধ’

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোয়া লাখের বদলে ৭৫০০ শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে যুক্তরাষ্ট্র, বেশির ভাগই শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত ১২ মে ভার্জিনিয়ার ডালস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ শরণার্থীরা। ছবি: এপির সৌজন্যে
গত ১২ মে ভার্জিনিয়ার ডালস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ শরণার্থীরা। ছবি: এপির সৌজন্যে

আগামী অর্থবছরে (২০২৬-২৭) যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী প্রবেশের সর্বোচ্চ সীমা ৭ হাজার ৫০০ জনে নামিয়ে আনছে ট্রাম্প প্রশাসন। এটি পূর্ববর্তী বাইডেন প্রশাসনের নির্ধারিত ১ লাখ ২৫ হাজারের তুলনায় প্রায় ৯৪ শতাংশ কম।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) মার্কিন ফেডারেল রেজিস্টারে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, ‘মানবিক উদ্বেগ ও জাতীয় স্বার্থে’ শরণার্থী প্রবেশের নতুন সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বিজ্ঞপ্তিতে নতুন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নির্ধারিত ৭ হাজার ৫০০ জনের বেশির ভাগই হবেন দক্ষিণ আফ্রিকার বংশোদ্ভূত শ্বেতাঙ্গ।

এর আগে জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়িত্ব নিয়েই এক নির্বাহী আদেশে যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী প্রবেশ কর্মসূচি (ইউএসআরএপি) স্থগিত করার ঘোষণা দেন। তিনি দাবি করেন, এই পদক্ষেপ ‘জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিতে’ সহায়ক হবে।

গত মে মাসে হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে ট্রাম্প দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, দেশটিতে শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের হত্যা ও নির্যাতন করা হচ্ছে।

বৈঠকে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে একটি ভিডিও দেখানো হয়। সেখানে আফ্রিকায় ‘হত্যাকাণ্ডের শিকার শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের কবরস্থান’ দেখানো হয়েছিল। তবে ট্রাম্প স্বীকার করেন, তিনি জানেন না ভিডিওটি দক্ষিণ আফ্রিকার কোন স্থানে ধারণ করা হয়েছে।

এ বৈঠকের কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্র ৬০ জন শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকান নাগরিককে আশ্রয় দেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

‘আমি আওয়ামী লীগ করি, এটাই অপরাধ’

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ক্লাস ফাঁকি দিয়ে পার্কে ‘লাভ জিহাদে’ মত্ত শিক্ষার্থীরা—অভিযোগ ভারতীয় কর্মকর্তার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: দ্য প্রিন্টের সৌজন্যে
ছবি: দ্য প্রিন্টের সৌজন্যে

ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার (ডিইও) একটি চিঠি নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। রাজ্যের ফরিদাবাদ জেলার ওই শিক্ষা কর্মকর্তার অভিযোগ, শিক্ষার্থীরা ‘ক্লাস ফাঁকি দিয়ে পার্কে গিয়ে লাভ জিহাদে জড়াচ্ছে’।

গতকাল বুধবার ওই চিঠি প্রকাশের পরপরই তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। পরে আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অংশু গর্গ বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে নতুন এক নির্দেশনায় আগের চিঠি ‘বাতিল’ ঘোষণা করেন।

ডিইও অংশু গর্গ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টকে বলেন, নাগরিকদের উদ্বেগ প্রকাশের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ পোর্টালে (সিএম উইন্ডো) একটি অভিযোগ পাওয়া যায়, যেখানে বলা হয়, ফরিদাবাদের কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে পার্কে গিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ ও লাভ জিহাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারকে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্যই ওই চিঠি জারি করা হয়েছিল।

চিঠিতে বলা হয়েছিল, সরকারি ও বেসরকারি সব বিদ্যালয়কে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং অভিভাবকদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে হবে। নির্দেশনায় আরও বলা হয়, বিদ্যালয়গুলোকে শিক্ষার্থীদের অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়ানো ঠেকাতে কঠোর তদারকি করতে হবে।

চিঠির মূল শিরোনামে বলা হয়েছিল, শিক্ষার্থীরা ‘বিভিন্ন পার্কে অসামাজিক কার্যকলাপ ও লাভ জিহাদে জড়িয়ে সমাজের বন্ধন নষ্ট করছে ও পরিবেশ দূষিত করছে’।

চিঠিতে সতর্ক করা হয়—যেকোনো বিদ্যালয়ে এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা বা জরিমানা আরোপ করা হতে পারে। তবে এক দিন পর আজ নতুন চিঠিতে ডিইও স্পষ্টভাবে জানান, শিক্ষা বিভাগে এমন কোনো অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়া যায়নি। তাই আগের চিঠিটি বাতিল করা হলো।

কুরুক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মহাবীর জাগলান এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে একজন শিক্ষা কর্মকর্তার জন্য অত্যন্ত ‘অশোভন’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলায় রাখা এক বিষয়, কিন্তু এতে ‘লাভ জিহাদ’ শব্দটি আনার মানে কী? এ ধরনের ভাষা কোনো সরকারি শিক্ষা কর্মকর্তার মুখে শোভা পায় না।

জাগলান অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক নেতারা যেভাবে ‘লাভ জিহাদ’ শব্দটি ব্যবহার করে থাকেন, এখন কিছু প্রশাসনিক কর্মকর্তাও তা অনুসরণ করছেন রাজনৈতিক কর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য।

‘লাভ জিহাদ’ শব্দটি ভারতের উগ্র ডানপন্থী রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রচলিত একটি শব্দ। তারা ভিন্ন ধর্মের তরুণ-তরুণীর প্রেম বা বিবাহকে ধর্মান্তরের কৌশল হিসেবে উপস্থাপন করে। তবে এর কোনো বাস্তব প্রমাণ নেই এবং বহু বিশ্লেষক একে রাজনৈতিক প্রচারণা ও বিভাজনের হাতিয়ার হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

‘আমি আওয়ামী লীগ করি, এটাই অপরাধ’

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতে ১৭ শিশুকে জিম্মি করা যুবক নিহত, কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রোহিত আর্য (বাঁয়ে), মুম্বাইয়ের পাওয়াই এলাকার এই আবাসিক ভবনে ১৭ শিশুকে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত
রোহিত আর্য (বাঁয়ে), মুম্বাইয়ের পাওয়াই এলাকার এই আবাসিক ভবনে ১৭ শিশুকে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের মুম্বাইয়ে ১৭ শিশুকে জিম্মি করে রাখা এক যুবক পুলিশের অভিযানে নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ের পাওয়াই এলাকার একটি আবাসিক ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিত আর্য নামের ওই যুবক একটি ‘অডিশনের’ কথা বলে ১৭ শিশুকে সেখানে নিয়ে আসেন। মুম্বাই পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী এই শিশুদের প্রায় দুই ঘণ্টা জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। তবে তাদের সবাইকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, একটি সরকারি প্রকল্পের বকেয়া দুই কোটি টাকা না পেয়ে এমন ভয়ানক ঘটনা ঘটিয়েছেন রোহিত। কিন্তু দুঃখের বিষয়, জিম্মি শিশুদের উদ্ধারে পুলিশের অভিযানে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিশুদের উদ্ধার অভিযানের সময় রোহিত এয়ারগান ব্যবহার করে পুলিশের দিকে গুলি চালান। এর প্রতিক্রিয়ায় পুলিশও একটি গুলি চালায়। গুলির আঘাতে আহত অবস্থায় রোহিতকে হাসপাতালে নেওয়া হয়, কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

পুলিশ জানায়, পাওয়াই থানা বেলা ১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ একটি জরুরি ফোন কল পায় এবং সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এরপর রোহিতের সঙ্গে জিম্মি উদ্ধারে আলোচনা শুরু হলে তিনি শিশুদের মুক্তি দিতে অস্বীকার করতে থাকেন। একসময় রোহিত শিশুদের ক্ষতি করার হুমকি দেয়, তখন পুলিশ ওই স্টুডিওর বাথরুম দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে এবং নিরাপদে ১৭ শিশুকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

এদিকে, এ ঘটনার আগে রোহিত একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি বলেন, তিনি ‘আত্মহত্যা করার বদলে’ এই পথ বেছে নিয়েছেন। ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি রোহিত আর্য। আত্মহত্যা না করে আমি একটি পরিকল্পনা করেছি এবং এখানে কিছু শিশুকে জিম্মি করে রেখেছি।’ এরপর তিনি তাঁর দাবিগুলোকে ‘সাধারণ দাবি, নৈতিক দাবি, নীতিগত দাবি এবং কয়েকটি প্রশ্ন’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আপনাদের সামান্যতম ভুল পদক্ষেপ আমাকে ভয়ানক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করবে।’ এ সময় তিনি ওই স্টুডিওতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। তিনি আরও বলেন, তিনি টাকাপয়সা চান না এবং তিনি ‘সন্ত্রাসী নন’।

ভিডিওতে রোহিত বলেন, ‘আমি কিছু মানুষের সঙ্গে কথা বলতে চাই। আর সেই কারণেই আমি এই শিশুদের জিম্মি করেছি। যদি আমি বেঁচে থাকি, আমি এটা করব; যদি মারা যাই, অন্য কেউ এটা করবে, কিন্তু এটা অবশ্যই ঘটবে।’

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে এয়ারগান এবং কিছু রাসায়নিকের পাত্র উদ্ধার করেছে। পুলিশ ধারণা, রোহিত এসব দেখিয়েই প্রথমে তাদের ভয় দেখান। জানা গেছে, জিম্মি শিশুরা একটি ওয়েব সিরিজের অডিশনের জন্য পাওয়াইয়ের ওই আবাসিক ভবনের নিচতলায় অবস্থিত আরএ স্টুডিওতে এসেছিল।

এর আগে রোহিত অভিযোগ করেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর ‘মাই স্কুল, বিউটিফুল স্কুল’ কর্মসূচির অধীনে ‘পিএলসি স্যানিটেশন মনিটর প্রজেক্ট’ নামে একটি পরিচ্ছন্নতা প্রচারণার জন্য শিক্ষা বিভাগ তাঁর বকেয়া অর্থ পরিশোধ করেনি। রোহিত দাবি করেন, তাঁর ‘লেটস চেঞ্জ’ (Lets Change) প্রচারণার অংশ হিসেবে ২০১৩ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল স্কুলছাত্রদের ‘পরিচ্ছন্নতার দূত’ হিসেবে তৈরি করা।

তাঁর এই কাজের জন্য স্থানীয় শিক্ষা বিভাগ দুই কোটি রুপি অনুমোদন করেছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে তাঁকে কোনো অর্থ দেওয়া হয়নি। ওই বছর রোহিত দুবার অনশনও করেছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী দীপক কেসরকারের ব্যক্তিগত আশ্বাস সত্ত্বেও কর্মকর্তারা তাঁকে কর্মসূচি থেকে সরিয়ে দিয়েছে।

পুলিশ এখনো নিশ্চিত নয়, রোহিত আর্য ঠিক কী কারণে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। অনেকেই ধারণা করছেন, সরকারি প্রকল্পের বকেয়া দুই কোটি টাকা না পাওয়ার ক্ষোভ থেকে রোহিত এমন পদক্ষেপ নেন। তবে পুরো ঘটনা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

‘আমি আওয়ামী লীগ করি, এটাই অপরাধ’

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

করুণ পরিণতির মুখোমুখি হচ্ছে যুদ্ধে অস্বীকৃতি জানানো রুশ সেনারা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইউক্রেনের ঝাপোরিঝিয়া অঞ্চলে দুই রুশ সেনা। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
ইউক্রেনের ঝাপোরিঝিয়া অঞ্চলে দুই রুশ সেনা। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

ইউক্রেন যুদ্ধে লড়তে অস্বীকার করা রুশ সেনাদের নিজ কমান্ডাররা নির্যাতন ও হত্যা করছেন—এমন ভয়াবহ অভিযোগ উঠে এসেছে স্বাধীন রুশ সংবাদমাধ্যম ভার্স্তকা-এর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ সেনাবাহিনীর ভেতরে এখন এমন এক সহিংস সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, যেখানে অবাধ্যতা মানে মৃত্যুদণ্ড বা আত্মঘাতী যুদ্ধে পাঠানো।

তদন্তে ১০১ জন রুশ কমান্ডারের নাম উঠে এসেছে, যারা নিজেদের সেনাদের হত্যা, নির্যাতন বা মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। ভার্স্তকা অন্তত ১৫০টি মৃত্যুর ঘটনা যাচাই করতে পেরেছে, যদিও তাদের ধারণা প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি। প্রমাণ হিসেবে তারা ব্যবহার করেছে ভিডিও ফুটেজ, সেনাদের পরিবার ও সহযোদ্ধাদের সাক্ষ্য এবং সরকারি অভিযোগের নথি।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, যুদ্ধ থেকে ফিরতে চাওয়া বা আদেশ অমান্যকারী সেনাদের বিশেষভাবে নিয়োগ করা ‘এক্সিকিউশন শুটার’ দিয়ে গুলি করে হত্যা করাতেন অনেক কমান্ডার। পরে নিহতদের দেহ নদীতে বা অগভীর গর্তে ফেলে দেওয়া হতো, আর রেকর্ডে দেখানো হতো—যুদ্ধে নিহত।

আরও ভয়ংকর তথ্য হলো—যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পিছু হটে আসছে এমন সেনাদের ওপর ড্রোন থেকে গ্রেনেড ফেলে হত্যা করা হয়েছে, যেন তা শত্রুপক্ষের হামলা মনে হয়।

ভার্স্তকা আরও জানায়, অনেক সেনাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। লোহার খাঁচায় ফেলে রাখা, পানি ঢেলে মারধর, কিংবা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে পিটিয়ে হত্যা করা—এই সব ঘটনা খুবই সাধারণ চিত্র। কিছু ক্ষেত্রে সেনাদের বাধ্য করা হতো একে অপরের সঙ্গে প্রাণঘাতী লড়াইয়ে, অনেকটা ‘গ্ল্যাডিয়েটর স্টাইলে’।

ইউক্রেনীয় পর্যবেক্ষকেরা গত মে মাসে এমন একটি ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে দেখা যায়—দুই অর্ধনগ্ন রুশ সৈন্য একটি গর্তের মধ্যে একে অপরকে মারছে, আর পাশে এক কর্মকর্তা চিৎকার করছেন, ‘যে মেরে ফেলতে পারবে, সে মুক্তি পাবে।’

প্রতিবেদনটিতে আরেকটি উদ্বেগজনক দিক উন্মোচিত হয়েছে—কমান্ডারদের আর্থিক চাঁদাবাজি। অনেক সেনাকে জানানো হয়, বিপজ্জনক ও আত্মঘাতী মিশনে যাওয়ার হাত বাঁচতে হলে ঘুষ দিতে হবে। যারা ঘুষ দিতে পারেনি, তাদের করুণ পরিণতি বরণ করতে হয়েছে।

ভার্স্তকা-এর তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত প্রায় ২৯ হাজার সেনা ও তাদের পরিবার অভিযোগ দায়ের করেছে। এর মধ্যে ১২ হাজার অভিযোগই নিজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

এদিকে রাশিয়ার একটি সামরিক প্রসিকিউটর সূত্র জানিয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা কমান্ডারদের বিরুদ্ধে কোনো তদন্তে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফলে, অভিযোগ যতই গুরুতর হোক, তাদের দায়মুক্তিই এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

‘আমি আওয়ামী লীগ করি, এটাই অপরাধ’

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত