Ajker Patrika

ট্রাম্প প্রশাসনের ১৫ সদস্যের মন্ত্রিসভায় আছেন যাঁরা

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরেই ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর প্রশাসনের শীর্ষ মুখগুলোকে বেছে নিতে শুরু করেন। সর্বশেষ কৃষিমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন দীর্ঘদিনের সহকর্মী ব্রুক রোলিন্সকে। অর্থাৎ ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে প্রবেশের আগে ১৫ সদস্য নিয়ে ট্রাম্প তাঁর মন্ত্রিসভা জন্য চূড়ান্ত করে ফেলেছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ট্রাম্প পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন একসময়ের প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কো রুবিওকে।

মার্কো রুবিও মায়ামিতে কিউবান অভিবাসী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৩ সালে ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক হন। ২০১০ সালে মার্কিন সিনেটে নির্বাচিত হন। ওবামা সরকারের সময় রিপাবলিকান কট্টরপন্থীদের ‘টি পার্টি’র ব্যাপক সমর্থন পান রুবিও।

২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের নীতির কঠোর সমালোচনা করেন কংগ্রেসম্যান মার্কো রুবিও। সে সময় নির্বাচনী প্রচারণাকালে ট্রাম্পকে প্রতারক এবং ‘যাবতকালের সবচেয়ে অশালীন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী’ হিসেবে আখ্যা দেন রুবিও। তবে এবারের নির্বাচনে ট্রাম্পকেই জোরালো সমর্থন দিয়েছেন তিনি; তাঁর পক্ষে প্রচারণাও চালিয়েছেন।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন অভিজ্ঞ সামরিক কর্মকর্তা ও ফক্স নিউজের উপস্থাপক পিট হেগসেথকে। ২০১৪ সালে ফক্স নিউজে যোগ দেন হেগসেথ। এখন থেকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর নেতৃত্ব দেবেন।

স্বাস্থ্য ও মানবসেবা মন্ত্রণালয়

ট্রাম্প প্রশাসনের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা মন্ত্রণালয় (এইচএইচএস) সামলাবেন রবার্ট এফ. কে। স্বাস্থ্য ও পরিবেশ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন কেনেডি জুনিয়র। তবে মার্কিন এই রাজনীতিককে নিয়ে বিস্তর বিতর্ক আছে। করোনা টিকার বিরোধিতা করে ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ প্রচার করে খ্যাতি পান তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী

রেসলিং কোম্পানির সাবেক প্রধান নির্বাহী (সিইও) লিন্ডা ম্যাকমাহনকে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। লিন্ডা ওয়ার্ল্ড রেসলিং এন্টারটেইনমেন্টের (ডব্লিউডব্লিউই) সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সিইও। এসবিএ থেকে ২০১৯ সালে পদত্যাগ করে তিনি ট্রাম্পপন্থী তহবিল সংগ্রাহক আমেরিকা ফার্স্ট অ্যাকশন পরিচালনার দায়িত্ব নেন। তিনি ট্রাম্পপন্থী থিংক ট্যাংক হিসেবে পরিচিত আমেরিকা ফার্স্ট পলিসি ইনস্টিটিউটের চেয়ার হিসেবেও কাজ করছেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল

যৌন কেলেঙ্কারি নিয়ে বিতর্কে ম্যাট গেটজ সরে দাঁড়ানোর পর অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে পুরোনো মিত্র পাম বন্ডিকে বেছে নিয়েছেন সাবেক রিপাবলিক প্রেসিডেন্ট। ২০১৬ সালে নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকে তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ট্রাম্পের। সম্প্রতি এক সমাবেশে বন্ডি বলেন, তিনি ট্রাম্পকে ‘বন্ধু’ মনে করেন। দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের আইনের জগতে আছেন বন্ডি। ফ্লোরিডার অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।

২০১৯ সালে ট্রাম্পের প্রথম সিনেটে অভিশংসন প্রক্রিয়ায় তাঁর আইনজীবী দলের সদস্য ছিলেন বন্ডি। ট্রাম্পের অভিশংসনের বিপক্ষে জনসমর্থন গঠনে কাজ করেন তিনি। তাঁর আইনি সহায়তায় অভিযোগ থেকে মুক্তি পান ট্রাম্প। আর্থিক প্রতারণায় অভিযুক্ত ট্রাম্পের পক্ষে নিউইয়র্কের আদালতেও দাঁড়ান তিনি।

অর্থমন্ত্রী

মার্কিন সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান কি স্কয়ার ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও স্কট বেসেন্টকে অর্থমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন ট্রাম্প। ওয়াল স্ট্রিটের শীর্ষ বিনিয়োগকারী হিসেবে পরিচিত স্কট বেসেন্ট। একসময় কাজ করেছেন মার্কিন ধনকুবের জর্জ সোরোসের প্রতিষ্ঠানে। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্যমতে, তিনি ২০২৪ সালে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার জন্য ৩০ লাখ ডলার দেন।

৬২ বছর বয়সী স্কট বেসেন্ট দক্ষিণ ক্যারোলিনার বাসিন্দা। ১৯৮৪ সালে তাঁর জন্ম। পড়াশোনা করেছেন ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১৫ সালে ২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে তিনি নিজের হেজ ফান্ড গঠন করেন।

শ্রমমন্ত্রী

শ্রমমন্ত্রী পদে লোরি শাভেজ-ডিরেমারের নাম ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। ৫৬ বছর বয়সী লোরি শাভেজ-ডিরেমার রিপাবলিকান রাজনীতিক অরেগন থেকে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচিত সদস্য। তাঁর প্রতি ট্রেড ইউনিয়নগুলোর ব্যাপক সমর্থন রয়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী পদে ট্রাম্প তাঁর পরবর্তী প্রশাসনের জন্য মনোনীত করেছেন ধনকুবের হওয়ার্ড লাটনিককে। তিনি মার্কিন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ক্যানটর ফিৎসজেরাল্ডের প্রধান। ট্রাম্পের ভাষ্য, ওয়াল স্ট্রিটে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করার দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে লাটনিকের।

ভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়কমন্ত্রী

৬৮ বছর বয়সী ডাগ বারগামকে ভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়কমন্ত্রী পদে মনোনয়ন দিয়েছেন ট্রাম্প। বারগাম নর্থ ডাকোটার গভর্নর। সম্পদশালী বারগাম সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের সাবেক নির্বাহী।

জ্বালানিমন্ত্রী

ট্রাম্প তাঁর প্রশাসনের জন্য জ্বালানিমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন ক্রিস রাইটকে। রাইট জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের পক্ষে সোচ্চার। তিনি লিবার্টি এনার্জি নামের ডেনভারভিত্তিক একটি তেলক্ষেত্র পরিষেবা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও।

পরিবহনমন্ত্রী

মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক সদস্য সোন ডাফিকে পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন ট্রাম্প। সোন ডাফি উইসকনসিন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি একসময় মার্কিন গণমাধ্যম ফক্স নিউজের নিয়মিত প্রদায়ক ছিলেন।

যুদ্ধাহত সেনা বিষয়ক মন্ত্রী

ইরাক যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ডগ কলিন্সকে ভেটেরানস অ্যাফেয়ার্স বা যুদ্ধাহত সেনা বিষয়ক মন্ত্রী পদে মনোনয়ন দিয়েছেন ট্রাম্প। কলিন্স একজন আইনজীবী ও অবসরপ্রাপ্ত রাজনীতিক।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ট্রাম্পের প্রশাসনে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন সাউথ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ক্রিস্টি নোয়েম। তিনি ট্রাম্পের রানিংমেট (ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী) হতে পারেন বলে এবারের নির্বাচনের আগে বেশ আলোচনায় ছিলেন।

আবাসন ও নগর উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী

ট্রাম্প প্রশাসনে আবাসন ও নগর উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী পদে মনোনয়ন পেয়েছেন স্কট টার্নার। তিনি ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও সাবেক ফুটবলার।

কৃষিমন্ত্রী

ট্রাম্প তাঁর প্রশাসনের জন্য কৃষিমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন দীর্ঘদিনের সহকর্মী ব্রুক রোলিন্সকে। ৫২ বছর বয়সী ব্রুক রোলিন্স থিংক ট্যাংক ও ট্রাম্পের ‘হোয়াইট হাউস ইন ওয়েটিং’ হিসেবে পরিচিত ‘আমেরিকা ফার্স্ট পলিসি ইনস্টিটিউটে’র প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ব্রুক রোলিন্স ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ ভিশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি তৈরিতে বড় ভূমিকা পালন করেছেন।

এ ছাড়া ২৭ বছর বয়সী ক্যারোলিন লেভিটকে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। টেক জায়ান্ট ইলন মাস্ককে সরকারি কর্মদক্ষতা বিভাগের দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। সিআইএ প্রধান হিসেবে ট্রাম্প বেছে নিয়েছেন জন র‍্যাটক্লিফকে। প্রথম হিন্দু হিসেবে মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হচ্ছেন তুলসী গ্যাবার্ড।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত