Ajker Patrika

আদালতের উপেক্ষায় নির্বাচনের স্বপ্ন ফিকে হলো ইমরান খানের

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০: ২৯
Thumbnail image

সর্বোচ্চ আদালতের উপেক্ষায় পাকিস্তানের কারারুদ্ধ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নির্বাচনে লড়াইয়ের স্বপ্ন আরও ফিকে হয়ে গেল। তোশাখানা মামলায় সাজা বাতিলের আবেদন দ্রুত শুনানির অনুরোধ গতকাল বুধবার গ্রহণ করেননি সুপ্রিম কোর্ট।

জানুয়ারির আগে আবেদনটি শোনা হবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন আদালত। এতে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পিটিআই নেতার ইমরানের অংশ নেওয়ার সম্ভাবনায় বড় আঘাত লাগল। পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে। 

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় রাষ্ট্রীয় সংরক্ষণাগারে থাকা বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পাওয়া উপহার বিক্রির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন ইমরান খান। গত ৫ আগস্ট এই মামলায় ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন ইসলামাবাদের জেলা ও দায়রা জজ আদালত। দোষী সাব্যস্ত ও কারাদণ্ড হওয়ায় ইমরানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। 

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চেষ্টায় সেই রায়ের বিরুদ্ধে প্রথমে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট ও পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন পাকিস্তানের বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও দেশটি হয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খান। 

আইনজীবী সরদার শাহবাজ খোসা সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চে মৌখিকভাবে এই আবেদন করেন। কিন্তু তাঁকে বলা হয়, যেহেতু এই আপিল তিনজনের কম বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি করা যাবে না, তাই তা অবিলম্বে নেওয়া যাবে না। কারণ, বেশির ভাগ বিচারপতি শীতের ছুটিতে ইসলামাবাদ থেকে দূরে অবস্থান করছেন। 

সংবিধানের ১৮৫ অনুচ্ছেদে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সরদার লতিফ খোসা ও তাঁর ছেলে সরদার শাহবাজ খোসা এই আপিল দায়ের করেন। তাঁরা ১১ ডিসেম্বর ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। কিন্তু আপিলের মূল আবেদনটি ছিল গত ৫ আগস্টের রায়ে বর্ণিত সাজা বাতিল করা। বেআইনিভাবে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির জন্য ইসলামাবাদের অতিরিক্ত দায়রা জজ (পশ্চিম) ইমরান খানকে দোষী সাব্যস্ত করেন। রায়ে ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। 

বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহ কৌঁসুলিকে মনে করিয়ে দেন, ট্রায়াল কোর্ট কর্তৃক প্রদত্ত সাজা সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত করলেও দোষী সাব্যস্ততা মুছে যাবে না। তিনি বলেন, ‘আবেদনে বলা হয়েছে যে সুপ্রিম কোর্ট কেবল সাজাই স্থগিত করেনি, দোষী সাব্যস্ততাও মুছে দিয়েছে। কিন্তু বিচারিক ইতিহাসে এমন কোনো নজির নেই, যেখানে সাজা স্থগিতের সঙ্গে সঙ্গে দোষী সাব্যস্ততাও মুছে যায়।’ 

মামলাটির সঙ্গে পুরো জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা জড়িত বলে অবিলম্বে এর শুনানি সম্পন্ন করার অনুরোধ জানান ইমরানের আইনজীবী। বিচারক এর জবাবে বলেন, দুই বিচারকের বেঞ্চ আবেদনকারীকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনও দিতে পারে না। কারণ, রায়ের বিরুদ্ধে তাঁদের আগের আপিল হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ শুনানি করেছিল। আপিলের বক্তব্যগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় তাঁর জন্য একটি বৃহত্তর বেঞ্চের ব্যাখ্যার প্রয়োজন। 

পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি কাজি ফয়েজ ইসা আগামী সপ্তাহে দেশে ফিরে না আসা পর্যন্ত কৌঁসুলির অপেক্ষা করা উচিত বলে মন্তব্য করেন বিচারক। 

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের এপ্রিলে দেশটির পার্লামেন্টে বিরোধী দলগুলোর আনা অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান ইমরান খান। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে একে একে শতাধিক মামলা করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ফাঁস, দুর্নীতিসহ বেশ কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ইমরান এখন রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত