Ajker Patrika

প্রধান শরিকের জোট ত্যাগ, সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেন ইমরান

প্রধান শরিকের জোট ত্যাগ, সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেন ইমরান

পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন দল তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতৃত্বাধীন জোট ত্যাগ করেছে আরও একটি দল। ইমরান খান সরকারের প্রধান মিত্র মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এম কিউ এম) বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে জোট ত্যাগের ঘোষণা দেয়। এম কিউ এম জোট ত্যাগ করায় ইমরান খানের পতন একপ্রকার নিশ্চিতই হয়ে গেল। এখন কেবল আনুষ্ঠানিকতা বাকি। বুধবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে। 

বুধবার ইসলামাবাদে মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের (এম কিউ এম) আহ্বায়ক খালিদ মকবুল সিদ্দিকী এক সংবাদ সম্মেলনে জোট থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের বিষয়টি জানিয়ে বলেন, তাঁরা প্রধানমন্ত্রী ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের আগে বিরোধী শিবিরে যোগ দিচ্ছেন। জোট সরকারে এম কিউ এমের প্রাধান্য থাকায় দলটি জোট ত্যাগের ফলে প্রধানমন্ত্রী ইমরান দেশটির জাতীয় পরিষদে সরকার গঠনের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবেন। 

খালিদ মকবুল সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে একত্র হয়েছি। আমি আশা করি এবার আমরা এমন একটি গণতন্ত্রের জন্য প্রচেষ্টা চালাতে পারি যার প্রভাব পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে। এই প্রত্যাশা নিয়েই আমরা আপনাদের (বিরোধীদের) এই যাত্রায় যোগ দিয়েছি। আমাদের কোনো ব্যক্তি বা দলীয় সুবিধা নেই। আমাদের চুক্তির প্রতিটি ধারা পাকিস্তানের সাধারণ জনগণের জন্য এবং বিশেষ করে সেই সব এলাকার জন্য যাদের আমরা গত ৩৫ বছর ধরে প্রতিনিধিত্ব করে আসছি।’ 

খালিদ মকবুল সিদ্দিকী আরও বলেন, ‘আমরা ব্যক্তিগত স্বার্থের চেয়ে পাকিস্তানের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছি।’ 

মকবুল সিদ্দিকীর ঘোষণার পর জাতীয় পরিষদের বিরোধী দলের নেতা শাহবাজ শরীফ বলেছেন, ‘আজ পাকিস্তানের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। কারণ আজ বিরোধী দলগুলো একত্র হতে পেরেছে এবং জাতীয় ঐক্য গঠনের প্রচেষ্টা করা হয়েছে।’ 

শাহবাজ শরীফ আরও বলেন, ‘আমি এম কিউ এম এবং দলটির নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা পাকিস্তানের ২২ কোটি মানুষের ইচ্ছা হৃদয়ে রেখে এবং এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি আসিফ আলী জারদারি ও বিলাওয়ালের কাছে কৃতজ্ঞ যে—তাঁরা আলোচনার এই পুরো প্রক্রিয়াটির মাধ্যমে ইতিহাসকে একপাশে রেখে পাকিস্তানের সমৃদ্ধি এবং সুখের জন্য এই যাত্রা শুরু করেছে।’ 

পিপিপি নেতা বিলাওয়ালও এম কিউ এম-কে ধন্যবাদ জানিয়ে এম কিউ এমের সিদ্ধান্তকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘আমি বলতে চাই, পিপিপি ও এম কিউ এম সম্পর্ক অনাস্থা প্রস্তাবের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পর্কিত নয়। যদি আমরা করাচি ও পাকিস্তানের সমৃদ্ধির জন্য কাজ করতে চাই তবে পিপিপি ও এম কিউ এমকে যেকোনো শর্তে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’ 

বিলাওয়াল আরও বলেন, ‘ইমরান খান জাতীয় পরিষদে তাঁর সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন, তিনি আর প্রধানমন্ত্রী নন। আগামীকাল সংসদ অধিবেশন। আসুন আগামীকাল ভোট দেই করি এবং বিষয়টির নিষ্পত্তি করি। তার পর আমরা একটি স্বচ্ছ নির্বাচন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথে যাত্রা শুরু করে তা শেষ করতে পারি।’ 

জমিয়তে উলেমা-ই-ইসলাম-ফজলের প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমানও এম কিউ এমের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘সিদ্ধান্তটি শুধু করাচি কিংবা সিন্ধু নয় পুরো পাকিস্তানের জন্য জাতীয় ঐক্যের অভিব্যক্তি। এই সিদ্ধান্তের ফলে (সরকারের মিত্ররা বিরোধীদের সঙ্গে যোগ দেওয়ায়) জাতীয় পরিষদে আমাদের পক্ষের আসনসংখ্যা এখন ১৭৬ অথচ আমাদের দরকার মাত্র ১৭২টি আসন।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ সীমান্তে সেনাসমাবেশ বাড়াচ্ছে ভারত, চিকেনস নেকের কাছে নতুন তিন গ্যারিসন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে নতুন তিনটি সক্রিয় সেনাঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত। সিলিগুড়ি করিডর বা ‘চিকেনস নেক’ নামে পরিচিত এই অঞ্চল কৌশলগতভাবে ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধারণা করা হচ্ছে, এর নিরাপত্তা বাড়াতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাম-বাংলাদেশ সীমান্তের ধুবড়ির কাছে বামুনি, বিহারের কিশনগঞ্জ এবং পশ্চিমবঙ্গের চোপড়ায় এই তিন নতুন ঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ ভারতের পূর্ব সীমান্তে প্রতিরক্ষা জোরদার করার বড় পরিকল্পনার অংশ, যার লক্ষ্য সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো, ট্যাকটিক্যাল ঘাটতি পূরণ করা এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

উত্তরবঙ্গের ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত সিলিগুড়ি করিডর ভারতের মূল ভূখণ্ডকে সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করে। এই অঞ্চল চারদিক থেকে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ ও চীনের ঘেরা।

চিকেনস নেককে অনেকে ভারতের দুর্বল অংশ মনে করলেও ভারতীয় সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একে দেশের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা করিডর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট এক সেনা সূত্রের ভাষায়, ‘সিলিগুড়ি করিডর বহুস্তরীয় নিরাপত্তাবলয়ে সুরক্ষিত। নতুন ঘাঁটিগুলো আমাদের দ্রুত চলাচল, লজিস্টিকস এবং রিয়েল টাইম গোয়েন্দা তথ্য সংহত করার ক্ষমতা আরও বাড়াবে।’

এর আগে ভারতীয় সেনাপ্রধানও মন্তব্য করেছিলেন, ‘চিকেনস নেককে আমি দুর্বল অংশ হিসেবে দেখি না। এটি আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী অঞ্চল। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত আমাদের সব বাহিনী এখানে একত্রে মোতায়েন করা যায়।’

জানা গেছে, সিলিগুড়ির কাছে সুখনায় অবস্থিত ত্রি-শক্তি কর্পস (৩৩-কর্পস) এই করিডরের প্রতিরক্ষা তদারক করে।

ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আকাশপথে করিডরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে পশ্চিমবঙ্গের হাশিমারা বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন রাফাল যুদ্ধবিমান। এ ছাড়া মিগ সিরিজের বিমান এবং ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র রেজিমেন্টও রয়েছে।

এ ছাড়া ভারত এই অঞ্চলে একটি উন্নত তিনস্তরের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা স্থাপন করেছে, যেখানে রয়েছে রাশিয়া থেকে আনা এস-৪০০ সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, ইসরায়েল ও ডিআরডিওর যৌথভাবে তৈরি এমআরএসএএম সিস্টেম এবং দেশীয় আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা। এই তিনটি মিলেই পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব দিক থেকে আসা বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা কাভারেজ দেয়।

ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই অঞ্চলে এস-৪০০ সিস্টেম মূলত চীন বা অন্য শত্রুপক্ষের বিমান অনুপ্রবেশ ঠেকানোর উদ্দেশ্যে স্থাপন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে ‘বন্দে মাতরম’ নিয়ে আবারও বিতর্ক—বাদ দেওয়া হয়েছিল স্তবক, কিন্তু কেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ৫১
‘বন্দে মাতরম’ কবিতাটি লিখেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত
‘বন্দে মাতরম’ কবিতাটি লিখেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সংগীত নিয়ে বিতর্ক আবারও সামনে এসেছে। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) ‘বন্দে মাতরম’ শিরোনামে এই সংগীত রচনার ১৫০ বছর পূর্তি ছিল। এই উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পুরো কবিতাটি পাঠ করেন এবং অভিযোগ করেন, বর্তমান বিরোধী দল কংগ্রেস কবিতাটিকে অতীতে ‘ছিন্নভিন্ন’ করেছে।

১৮৭৫ সালের ৭ নভেম্বর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন ‘বন্দে মাতরম’ কবিতাটি। এটি পরে তাঁর ‘আনন্দমঠ’ (১৮৮২) উপন্যাসে প্রকাশিত হয়। ছয় স্তবকের এই কবিতা একসময় ভারতীয় স্বাধীনতাসংগ্রামের অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে ওঠে। কবিতাটিতে মাতৃভূমিকে এক দেবীরূপে কল্পনা করা হয়েছে—যিনি একই সঙ্গে স্নেহময়ী ও দুর্জয়। বঙ্কিমচন্দ্র শেষের স্তবকগুলোয় ভারতমাতাকে দুর্গা, লক্ষ্মী ও সরস্বতী রূপে উল্লেখ করেছিলেন।

এদিকে ১৯৩৭ সালে কংগ্রেস দলের একটি অধিবেশনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়—জাতীয় অনুষ্ঠানে শুধু প্রথম দুটি স্তবক গাওয়া হবে। কারণ, অন্য স্তবকগুলোতে হিন্দু দেবীদের সরাসরি উল্লেখ কিছু মুসলিম প্রতিনিধির কাছে ‘বর্জনমূলক’ মনে হয়েছিল। সেই সময় দলের নেতা জওহরলাল নেহরু নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে চিঠি লিখে জানান—পুরো কবিতাটি সুপাঠ্য হলেও এর কিছু অংশ মুসলিম সমাজে অস্বস্তি সৃষ্টি করছে। তাই আপাতত কেবল প্রথম দুটি স্তবকই জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া উচিত বলে তিনি মত দেন।

আজ দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তকেই আজ বিজেপি ‘বিভাজনের বীজ বপন’ বলে সমালোচনা করছে। প্রধানমন্ত্রী মোদির দাবি, কংগ্রেস রাজনৈতিক সুবিধার জন্য জাতীয় ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অন্যদিকে কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে পাল্টা মন্তব্যে বলেছেন, যারা আজ জাতীয়তাবাদের রক্ষক সেজেছে—আরএসএস ও বিজেপি—বন্দে মাতরম তারা কখনোই গায়নি।

বিতর্ক আরও তীব্র হয়, যখন নেহরু ও নেতাজির মধ্যে ১৯৩৭ সালে আদান-প্রদান হওয়া চিঠি প্রকাশ করে বিজেপি। সেই পত্রে নেহরু স্বীকার করেন, কিছু মুসলিমের আপত্তির ক্ষেত্রে যুক্তি থাকতে পারে।

প্রায় ৯০ বছর পর কংগ্রেসের সেই সিদ্ধান্ত ভারতের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে, পশ্চিমবঙ্গের আগামী নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশপ্রেম ও মুসলিম তোষণ ইস্যুতে ‘বন্দে মাতরম’ আবারও রাজনৈতিক তরবারি হয়ে উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট শারার ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, সোমবার হোয়াইট হাউসে বৈঠক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল-শারার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি সংগৃহীত
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল-শারার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি সংগৃহীত

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। আগামী সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠকের ঠিক আগে গতকাল বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া করা এই প্রস্তাবে সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী আনাস খাত্তাবের ওপর থেকেও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবটির পক্ষে ১৪টি ভোট পড়ে, তবে চীন ভোটদানে বিরত ছিল।

ওয়াশিংটন কয়েক মাস ধরে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদকে সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার জন্য তাগিদ দিচ্ছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত মে মাসে যখন সিরিয়ার ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেন, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে একটি বড় পরিবর্তন আসে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি, শারা দারুণ কাজ করছেন। অঞ্চলটি কঠিন, তিনিও কঠিন প্রকৃতির মানুষ, কিন্তু তাঁর সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আমরা সিরিয়া নিয়ে অনেক দূর এগিয়েছি।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমরা সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছি, যাতে তারা নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য নতুনভাবে লড়াইয়ের সুযোগ পায়।’

১৩ বছরের বিধ্বংসী গৃহযুদ্ধের পর গত ডিসেম্বরে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিদ্রোহী জোটের আকস্মিক হামলায় ক্ষমতাচ্যুত হন। ইসলামপন্থী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নেতৃত্ব দেয় সেই হামলায়।

এইচটিএস একসময় আল-কায়েদার সিরীয় শাখা নুসরা ফ্রন্ট নামে পরিচিত ছিল। ২০১৬ সালে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। ২০১৪ সালের মে মাস থেকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আল-কায়েদা ও আইএস-সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে এই সংগঠন।

এইচটিএসের একাধিক সদস্যের ওপর জাতিসংঘের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, সম্পদ জব্দ এবং অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। তবে এবার প্রেসিডেন্ট শারা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খাত্তাবের বিরুদ্ধে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলো।

জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে পর্যবেক্ষকেরা জানিয়েছেন, চলতি বছর আল-কায়েদা ও এইচটিএসের মধ্যে কোনো সক্রিয় সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে জুলাইয়ে রয়টার্সের হাতে আসা জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনেও এমন তথ্যের উল্লেখ ছিল।

নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকে চীন। জাতিসংঘে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেন, ‘খসড়া প্রস্তাবটিতে সিরিয়ার সন্ত্রাসবিরোধী ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের উদ্বেগ যথাযথভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।’

চীন দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ায় ইস্টার্ন তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্টের (ইটিআইএম) কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এই সংগঠনে চীন ও মধ্য এশিয়া থেকে আসা উইঘুর যোদ্ধারা যুক্ত রয়েছে।

তবে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ভোট দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির জাতিসংঘে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, মস্কো এই সংক্ষিপ্ত প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে; কারণ, এটি ‘সিরীয় জনগণের নিজস্ব স্বার্থ ও আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে।’

গৃহযুদ্ধ চলাকালীন রাশিয়া বারবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সিরিয়ার আসাদ সরকারের পক্ষে ভেটো দেয়। এ সময় চীনও রাশিয়ার পাশে ছিল। প্রসঙ্গত, যুদ্ধকালীন সিরিয়া ইস্যুতে রাজনৈতিক, মানবিক ও রাসায়নিক অস্ত্রবিষয়ক আলোচনার জন্য পরিষদ মাসে একাধিকবার বৈঠকে বসত।

এদিকে, দীর্ঘ বিভাজনের পর নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সিরিয়ার জাতিসংঘ প্রতিনিধি ইব্রাহিম ওলাবি। তিনি বলেন, ‘এটি সিরিয়ার নারী-পুরুষদের জন্য মাতৃভূমি পুনর্গঠন এবং জীবন পুনঃস্থাপনে আশার সঞ্চার করবে।’

ইব্রাহিম ওলাবি আরও বলেন, ‘নতুন সিরিয়া হবে এক সাফল্যের গল্প। এটি প্রমাণ করবে যে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সর্বোত্তম পথ হলো ইতিবাচক সম্পৃক্ততা ও গঠনমূলক সহযোগিতা। যদি কারও কোনো উদ্বেগ থাকে, সিরিয়া তা সমাধানে সদিচ্ছাসহ পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে কাজ করতে প্রস্তুত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসলামবিদ্বেষী ডানপন্থীদের হারিয়ে নেদারল্যান্ডসের প্রথম সমকামী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন রব জেটেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
৩৮ বছর বয়সী মধ্যপন্থী নেতা রব জেটেন। ছবি: সংগৃহীত
৩৮ বছর বয়সী মধ্যপন্থী নেতা রব জেটেন। ছবি: সংগৃহীত

নেদারল্যান্ডসের নির্বাচনে ৩৮ বছর বয়সী মধ্যপন্থী নেতা রব জেটেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (স্থানীয় সময়) দেশটির নির্বাচন কমিশন এই ফলাফল ঘোষণা করে। ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী ও প্রথম সমকামী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন জেটেন।

কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসলামবিরোধী ও কট্টর ডানপন্থী নেতা গির্ট উইল্ডার্সকে মাত্র ২৯ হাজার ৬৬৮ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে এ জয় পেয়েছেন জেটেন। সাম্প্রতিক এই নির্বাচন ইউরোপে ডানপন্থী উত্থানের এক সূচক হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।

ফলাফল ঘোষণার পর জেটেন বলেন, ‘আমরা ইউরোপ ও বিশ্বের কাছে প্রমাণ করেছি—একটি ইতিবাচক বার্তা নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে জনতাবাদী (পপুলিস্ট) আন্দোলনকে পরাজিত করা সম্ভব।’

তবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে জেটেনকে এখন জোট সরকার গঠন করতে হবে, যা নেদারল্যান্ডসের রাজনৈতিক প্রথা অনুযায়ী কয়েক মাস সময় নিতে পারে। দেশটির ১৫০ আসনের সংসদে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় না। ফলে সরকার গঠনের জন্য সমঝোতা ও আলোচনাই মূল চাবিকাঠি।

নির্বাচন কমিশনের হিসাবে, জেটেনের দল ডি৬৬ পেয়েছে ২৬টি আসন, যা নেদারল্যান্ডসের ইতিহাসে নির্বাচনে বিজয়ী কোনো দলের জন্য সবচেয়ে কম সংখ্যা। ডানপন্থী উইল্ডার্সের পিভিভি দলও পেয়েছে ২৬টি আসন।

এই নির্বাচনে মোট ১৫টি দল সংসদে প্রতিনিধিত্ব পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রাণী অধিকার রক্ষায় কাজ করা একটি দল এবং ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের স্বার্থ রক্ষাকারী একটি সংগঠনভিত্তিক দল।

যদিও উইল্ডার্স ২০২৩ সালের নির্বাচনের তুলনায় ১১টি আসন হারিয়েছেন, তবু নেদারল্যান্ডসে ডানপন্থীদের উপস্থিতি এখনো শক্ত অবস্থানে রয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, ডানপন্থী ফোরাম ফর ডেমোক্রেসি দলের আসন বেড়ে হয়েছে সাতটি (আগে ছিল তিনটি) আর কট্টর ডানপন্থী জে-এ২১ দল পেয়েছে ৯টি আসন, যা ২০২৩ সালের নির্বাচনে ছিল মাত্র একটি।

জেটেনের পছন্দ হলো চারদলীয় একটি জোট—যেখানে রাজনৈতিকভাবে ভিন্নমুখী দলগুলো একত্র হবে। তিনি চান মধ্য-ডানপন্থী সিডিএ (১৮ আসন), ডানপন্থী উদারপন্থী ভিডিভি (২২ আসন) এবং বামপন্থী গ্রিন/লেবার (২০ আসন) পার্টি তাঁর সঙ্গে যুক্ত হোক। এতে তাঁর মোট আসন দাঁড়াবে ৮৬, যা সংসদে তাঁকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেবে।

তবে ভিডিভি নেতা দিলান ইয়েসিলগোজ ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, তিনি গ্রিন/লেবারের সঙ্গে কোনো জোটে যাবেন না। তাঁর পছন্দ হলো ডানমুখী জোট, যাতে থাকবে সিডিএ, জে-এ২১ ও জেটেনের ডি৬৬। কিন্তু এ জোটে আসন হবে ঠিক ৭৫টি, যা ন্যূনতম সীমা এবং এটি ভবিষ্যতে সরকারকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।

জেটেন যদিও বলেছেন, সংখ্যালঘু সরকার তাঁর পছন্দ নয়, তবে সেটিও এখন একটি সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে আলোচনায় আছে।

এদিকে পরাজয় মেনে নিয়ে উইল্ডার্স জেটেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোট জালিয়াতির অভিযোগও তুলেছেন। তবে দেশটির নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এ ধরনের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।

কমিশনের চেয়ারম্যান উইম কুইকেন জানান, এই নির্বাচনের ফলাফল নির্ভরযোগ্য। নেদারল্যান্ডসে ভোট গ্রহণ ও ফল ঘোষণার একটি অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ও নির্ভরযোগ্য প্রক্রিয়া বিদ্যমান।

উইল্ডার্স প্রস্তাব দিয়েছেন, তিনি জোটে যোগ দিতে আগ্রহী। তবে নির্বাচনের আগে মূলধারার সব দল তাঁর সঙ্গে কাজ না করার ঘোষণা দিয়েছিল।

উল্লেখ্য, উইল্ডার্সের দলই গত বছর সরকারের জোট থেকে সরে এসে এই আগাম নির্বাচন ডেকে আনে। কারণ, তিনি দাবি করেছিলেন, সরকার ‘ইতিহাসের সবচেয়ে কঠোর অভিবাসননীতি’ বাস্তবায়নে ধীরগতি দেখাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

উচ্চতা ‘কম’ বলে ডেটিং অ্যাপে মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এখন আফসোস হচ্ছে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত