Ajker Patrika

করাচিতে সংখ্যালঘু আহমদিয়া সম্প্রদায়ের এক সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা

অনলাইন ডেস্ক
এ ঘটনার পর আহমদিয়া সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ের সামনে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। ছবি: এএফপি
এ ঘটনার পর আহমদিয়া সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ের সামনে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। ছবি: এএফপি

পাকিস্তানের করাচিতে সংখ্যালঘু আহমদিয়া সম্প্রদায়ের এক সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করেছে উগ্র ইসলামপন্থীরা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ শুক্রবার করাচির একটি মোবাইল মার্কেটের কাছে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এর আগে উগ্রপন্থীরা এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটি উপাসনালয় ঘেরাও করে।

আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মুখপাত্র আমির মাহমুদ জানিয়েছেন, নিহত ব্যক্তির নাম আবদুর সাত্তার (৪৭)। তিনি করাচির স্থানীয় একটি গাড়ির ওয়ার্কশপের মালিক ছিলেন।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল সৈয়দ আসাদ রাজার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি) দলের প্রায় ৪০০ কর্মী করাচির একটি মোবাইল মার্কেটের কাছে জড়ো হয়। নিহত ব্যক্তি সেই মার্কেটের ১০০-১৫০ মিটার দূর দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় টিএলপির কর্মীরা তাঁকে চিনে ফেলে এবং পিটিয়ে হত্যা করে।

পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সফদার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ওই ব্যক্তি আহমদিয়া সম্প্রদায়ের, এটা জানার পরই তাঁর ওপর লাঠি ও ইট দিয়ে হামলা চালানো হয়। পরে পুলিশ এসে উগ্রপন্থীদের ছত্রভঙ্গ করে এবং ভেতরে আটকে পড়া আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়। এ সময় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দায়েরের খবর পাওয়া যায়নি।

কারা এই আহমদিয়া সম্প্রদায়

আহমদিয়ারা নিজেদের ‘মুসলিম সংস্কারপন্থী’ দাবি করলেও পাকিস্তান সরকার তাদের ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং ধর্মদ্রোহী হিসেবে বিবেচনা করে। দেশটিতে তাদের ‘মুসলিম’ পরিচয় ব্যবহার করা এবং ইসলামি প্রতীক ব্যবহারে আইনি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

এ সম্প্রদায়ের উৎপত্তি ১৮০০ সালের শেষ ভাগে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ১ কোটি ২০ লাখ আহমদিয়া বসবাস করে। পাকিস্তানে রয়েছে কয়েক লাখ এবং জার্মানিতে প্রায় ৪০ হাজার।

দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানে আহমদিয়া সম্প্রদায় নিপীড়নের শিকার। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ হামলা আরও বেড়েছে।

কেন এই হামলা

শুক্রবারের হামলার সঙ্গে জড়িতরা বলেছেন, আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সদস্যদের গ্রেপ্তার করার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করা ছিল তাঁদের লক্ষ্য।

টিএলপির নেতা আব্দুল কাদির আশরাফি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা এ স্থানটি সিল করে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলাম। এ ছাড়া যারা শুক্রবারের নামাজ পরিচালনা করে, আমরা তাদেরও গ্রেপ্তারের দাবি জানাই। তাই এখানে বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।’

পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) ঘটনাটিকে ‘আইনের শাসনের চরম ব্যর্থতা’ বলে অভিহিত করেছে। এইচআরসিপি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে যেভাবে হামলা চালানো হলো, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। হামলাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। কট্টরপন্থীদের চাপের কাছে মাথানত করা যাবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত