Ajker Patrika

‘গাজায় গণহত্যা চলছে’, দুই ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থার পর্যবেক্ষণ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৭: ৫১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

এবার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনল ইসরায়েলেরই দুই মানবাধিকার সংস্থা। বেতসেলেম ও ফিজিশিয়ান্স ফর হিউম্যান রাইটস ইসরায়েল নামের ওই দুই সংগঠন সরাসরি বলেছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। নিজেদের অভিযোগের স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় তথ্যউপাত্ত, প্রমাণসহ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থা দুটি।

এই দুই মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন প্রকাশের পর এবার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কড়া বিবৃতি দিল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটির মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, ইসরায়েলের দুই মানবাধিকার সংস্থা বেতসেলেম ও ফিজিশিয়ান্স ফর হিউম্যান রাইটস ইসরায়েল প্রথমবারের মতো সরাসরি বলল যে ইসরায়েল গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে। এটি মানবাধিকার অঙ্গনের জন্য এক নতুন মাইলফলক, যা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করবে।

তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি সরকার যখন ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কার্যক্রম দমন করার চেষ্টা করছে, তখন এই দুই প্রতিবেদন প্রকাশ সাহসিকতা ও ন্যায়বিচারের প্রতি অটল প্রতিশ্রুতির নিদর্শন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত অবিলম্বে এই গণহত্যা বন্ধে এগিয়ে আসা, দখলদারির অবসান ঘটানো এবং ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের আরোপিত বর্ণবাদী শাসনব্যবস্থা ভেঙে দেওয়া।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি সামরিক অভিযান, দীর্ঘমেয়াদি দখলদার ও বর্ণবাদনীতির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে যে প্রতিবেদন বেতসেলেম প্রকাশ করেছে, তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘আওয়ার জেনোসাইড’ বা ‘আমাদের গণহত্যা’। প্রতিবেদনে হত্যাকাণ্ড, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ও ফিলিস্তিনি জনগণের জীবনযাপনের ধরন বিশ্লেষণ করে প্রমাণ করা হয়েছে—পরিকল্পিতভাবে ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করা হচ্ছে। এর পেছনে কী কারণ থাকতে পারে, তা–ও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

বেতসেলেম সতর্ক করে বলেছে, গাজায় যে ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, তার কিছু কৌশল পশ্চিম তীরেও প্রয়োগ করা হচ্ছে। যদিও তা তুলনামূলকভাবে ছোট পরিসরে, তবুও তা উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো যথেষ্ট। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, অবকাঠামোগত ধ্বংস ও দখলের নীতিকে প্রতিবেদনে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

ফিজিশিয়ান্স ফর হিউম্যান রাইটস ইসরায়েলের মেডিকেল লিগ্যাল বিশ্লেষণে তুলে ধরা হয়েছে, কীভাবে পরিকল্পিতভাবে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হচ্ছে। সংগঠনটির নিজস্ব চ্যালেঞ্জ, ভিজ্যুয়াল প্রমাণ ও ভুক্তভোগী ফিলিস্তিনিদের সাক্ষ্য দিয়ে দেখানো হয়েছে—এই ধ্বংস যুদ্ধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নয়, বরং একটি সুচিন্তিত নীতি, যার লক্ষ্য গাজার ফিলিস্তিনিদের ধ্বংস করা এবং এটি গণহত্যারই একটি রূপ।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজার হাসপাতাল, ক্লিনিক ও চিকিৎসাকেন্দ্রে সরাসরি ও নির্বিচার হামলা চালানো হয়েছে, চিকিৎসাসহায়তা আটকে দেওয়া হয়েছে, মুমূর্ষু রোগীদের গাজা থেকে সরিয়ে নেওয়ার ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, এমনকি চিকিৎসকদের আটক, নির্যাতন ও হত্যাও করা হয়েছে।

এই প্রতিবেদন দুটি এমন সময়ে প্রকাশিত হলো, যখন নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে। অ্যামনেস্টি মহাসচিব বলেন, এই নির্ভুল ও শক্তিশালী প্রতিবেদনগুলো সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলোর সামনে একটি সুস্পষ্ট বাস্তবতা তুলে ধরেছে। আর সেই বাস্তবতা হলো—গাজায় যা ঘটছে, তা গণহত্যা।

তিনি আরও বলেন, সবার বোঝা উচিত, এখন আর লোকদেখানো বিবৃতি আর প্রতীকী বিতর্কের সময় নেই। এখনই কার্যকর ও জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুলিশ কর্মকর্তা ৪ বার ধর্ষণ করেছে—মহারাষ্ট্রে নারী চিকিৎসকের হাতে লেখা সুইসাইড নোট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৩৩
ছবি: এনডিটিভি
ছবি: এনডিটিভি

ভারতের মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলায় একটি হাসপাতালে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এক নারী চিকিৎসক ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। গত পাঁচ মাসে পুলিশের একজন উপপরিদর্শক (এসআই) তাঁকে চারবার ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ করে গেছেন তিনি।

ওই চিকিৎসক এসআই গোপাল বাদনের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ বাঁ হাতের তালুতে লিখে গেছেন।

ওই চিকিৎসক লিখেছেন, বাদনের লাগাতার হয়রানিই তাঁকে নিজের জীবন দিতে বাধ্য করেছে। এ ছাড়া আরও এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রশান্ত বাংকারের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ হাতে লিখে যান ওই নারী।

তাঁর হাতে লেখা ছিল, ‘পুলিশ ইন্সপেক্টর গোপাল বাদনেই আমার মৃত্যুর কারণ। সে আমাকে চারবার ধর্ষণ করেছে। পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে সে আমাকে ধর্ষণ করেছে। মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেছে।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, সাতারা জেলায় ফাল্টান মহকুমা হাসপাতালে মেডিকেল কর্মকর্তা ছিলেন ওই চিকিৎসক। আত্মহত্যার কয়েক মাস আগে গত ১৯ জুন ফাল্টান সাবডিভিশনাল অফিসের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশকে (ডিএসপি) লেখা এক চিঠিতে একই ধরনের অভিযোগ করেছিলেন তিনি।

চিঠিতে ওই চিকিৎসক ফাল্টান গ্রামীণ পুলিশ বিভাগের দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ আনেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান।

চিঠিতে তিনি গোপাল বাদনে, সাবডিভিশনাল পুলিশ ইন্সপেক্টর পাটিল ও অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ ইন্সপেক্টর লাদপুত্রের নাম উল্লেখ করেন।

চিঠিতে ওই চিকিৎসক বলেছিলেন, ‘চরম মানসিক চাপের মধ্যে আছি। অনুরোধ করছি, গুরুতর বিষয়টি তদন্ত করা হোক এবং দোষী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’

একাধিক সূত্র বলছে, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশের নির্দেশে গোপাল বাদনেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এদিকে গতকাল রাতের এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ মহারাষ্ট্রজুড়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

রাজ্য কংগ্রেস নেতা বিজয় নামদেভরাও ওয়াদেত্তিবার এ ঘটনায় ক্ষমতাসীন সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বিজয় নামদেভরাও বলেন, ‘যখন রক্ষকই ভক্ষক হয়! পুলিশের কাজ হলো সুরক্ষা দেওয়া। কিন্তু তারাই যদি একজন নারী চিকিৎসককে নির্যাতন করে, ন্যায়বিচার তাহলে কীভাবে হবে? মেয়েটি যখন অভিযোগ করেছিল, তখন কেন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলো না? রাজ্য সরকার বারবার পুলিশকে আড়াল করছে। ফলে পুলিশের নৃশংসতা বাড়ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেষ হলো চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মহাসম্মেলন, ইশতেহারে তিন বিষয়ে জোর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বৃহস্পতিবার শেষ হলো চার দিনব্যাপী মহাসম্মেলন। ছবি: সিনহুয়া
বৃহস্পতিবার শেষ হলো চার দিনব্যাপী মহাসম্মেলন। ছবি: সিনহুয়া

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) চার দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় কমিটির প্লেনাম (পূর্ণাঙ্গ সভা) শেষ হলো গতকাল বৃহস্পতিবার। এই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন দলের সাধারণ সম্পাদক প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং।

সভা শেষে প্রকাশিত ইশতেহারে চীনের পরবর্তী পঞ্চবার্ষিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনার মূল দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এই ইশতেহার থেকে চীনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, সামরিক শুদ্ধি অভিযান এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতির ক্ষেত্রে তিনটি প্রধান বার্তা পাওয়া যায়।

ধারণার চেয়েও বড় হতে পারে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান

প্লেনাম বৈঠকে কেন্দ্রীয় কমিটির ২০৫ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র ১৬৮ জনের উপস্থিতি চীন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে জল্পনা বাড়িয়েছে। প্লেনামের মতো গুরুত্বপূর্ণ সভায় গুরুতর কারণ ছাড়া এতো নেতার অনুপস্থিতি স্বাভাবিক নয়। জানা গেছে, একজন সদস্যের মৃত্যু এবং ১০ জন বহিষ্কারের পরও ২৬ জন ক্যাডার অনুপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া, অনুপস্থিত ছিলেন কয়েক ডজন ‘বিকল্প’ প্রতিনিধি। এই বৃহৎ অনুপস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, পার্টির অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা পরিদর্শন দলগুলোর সর্বশেষ ‘দুর্নীতি বিরোধী’ অভিযানে সরকারিভাবে ঘোষিত সংখ্যার চেয়েও অনেক বেশি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অপসারিত হয়েছেন।

সেনাবাহিনীতেও চিত্রটি অত্যন্ত স্পষ্ট। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পদমর্যাদার ৩৩ জন জেনারেলের মধ্যে ২২ জন প্লেনামে যোগ দেননি। যদিও ৮ জনের অপসারণ আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে, বাকি ১৪ জনের অনুপস্থিতি রহস্যজনক।

এই ঘটনাকে সি চিনপিংয়ের শক্তি না দুর্বলতা হিসেবে দেখা হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে বিতর্ক চলছে। এটি কি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ক্ষমতার কেন্দ্রগুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন একজন নেতার পদক্ষেপ, নাকি পদমর্যাদা নির্বিশেষে অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত একজন দৃঢ় নেতার ইঙ্গিত? তবে একটি বিষয় স্পষ্ট—পার্টির পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে এই অভিযান থামবে না। কেন্দ্রীয় নীতি গবেষণা কার্যালয়ের পরিচালক জিয়াং জিনকুয়ান জানিয়েছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবিচল দৃঢ়তা বজায় রাখা হবে, এর কোনো শেষ সীমা নেই।

প্রযুক্তিগত স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে চীনের ঝোঁক

ইশতেহারে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে, তা হলো ‘বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত স্বয়ংসম্পূর্ণতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি’ অর্জন করা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য বিরোধের কারণে চীন বিশেষত কম্পিউটার চিপ এবং উন্নত সফটওয়্যার-এর মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য অন্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে চাচ্ছে। সিপিসি-র এই পদক্ষেপের মূল কথা হলো: কোনো বিষয়ে সন্দেহ থাকলে, তা নিজেদেরই তৈরি করতে হবে।

সিপিসি নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা সিনহুয়াও এটিকে স্পষ্ট করে ‘স্বয়ংসম্পূর্ণতা’ শব্দ উল্লেখ করে বলেছে, ‘দেশকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বৃহত্তর স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও শক্তি অর্জন করতে হবে এবং নতুন গুণগত উৎপাদনশীল শক্তির বিকাশ ঘটাতে হবে।’ সি চিনপিংয়ের এই ‘নতুন গুণগত উৎপাদনশীল শক্তি’ সামরিক প্রয়োগসহ উচ্চ-স্তরের প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে বোঝায়, যা বেসরকারি খাত, রাষ্ট্রায়ত্ত উদ্যোগ এবং পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) মধ্যে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে গড়ে উঠবে। এর মূল লক্ষ্য হলো—আমেরিকান নির্ভরতা ছাড়াই উন্নত প্রযুক্তি তৈরি করা।

আত্মনির্ভরতার ওপর জোর দিলেন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা। ছবি: সিনহুয়া
আত্মনির্ভরতার ওপর জোর দিলেন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা। ছবি: সিনহুয়া

স্থানীয় জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের আরেকটি বড় প্রভাব হলো রপ্তানি বাজার হারানো। চীন ঐতিহ্যগতভাবে রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় এটি অর্থনীতির জন্য একটি কঠিন ধাক্কা। অর্থনীতিবিদেরা দীর্ঘদিন ধরে পরামর্শ দিচ্ছিলেন যে চীনকে অভ্যন্তরীণ ভোগ বা ব্যয়ের ওপর বেশি জোর দিয়ে অর্থনীতিকে পুনর্গঠন করতে হবে।

আমেরিকান শুল্কের কারণে চীনে তৈরি পণ্যের রপ্তানি কিছুটা কমেছে। এই ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে, চীন এখন তার বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজারের দিকে মনোযোগ দিতে চাচ্ছে। ইশতেহার অনুযায়ী, দেশে একটি শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ বাজার তৈরি করতে হবে এবং উন্নয়নের একটি নতুন প্যাটার্ন তৈরি করতে দ্রুত কাজ করতে হবে।

তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, আবাসন সংকট এবং উচ্চ বেকারত্বের কারণে যখন জনগণ সঞ্চয় করতে বেশি আগ্রহী, তখন তাদের কীভাবে বেশি ব্যয় করতে উৎসাহিত করা হবে—সে বিষয়ে এই বৈঠকে কোনো সুনির্দিষ্ট নতুন ধারণা উঠে আসেনি। একটি শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ বাজার তৈরির কথা বলা হলেও, বাস্তবে তা কার্যকর করতে কী পদক্ষেপের প্রয়োজন সেটি স্পষ্ট নয়।

সূত্র: বিবিসি

বিষয়:

চীন
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

একসঙ্গে দুই চাকরি: যুক্তরাষ্ট্রে ৪৯ লাখ রুপি আয়ের পর ধরা খেলেন ভারতীয়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মেহুল গোস্বামী। ছবি: এনডিটিভি
মেহুল গোস্বামী। ছবি: এনডিটিভি

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি গোপনে ঠিকাদার হিসেবে অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিযোগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক মার্কিন নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৩৯ বছর বয়সী মেহুল গোস্বামী নামের ওই নাগরিকের বিরুদ্ধে করদাতাদের অর্থ অপচয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের পুলিশের মহাপরিদর্শকের কার্যালয় এবং সারাটোগা কাউন্টি শেরিফের কার্যালয়ের যৌথ তদন্তে জানা গেছে, মেহুলের এই অবৈধ কার্যকলাপের ফলে করদাতাদের ৫০ হাজার ডলার (প্রায় ৪০ লাখ রুপি) অপব্যবহার হয়েছে।

তদন্ত সূত্রে জানা যায়, নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ইনফরমেশন টেকনোলজি সার্ভিসেসের জন্য দূর থেকে কাজ করতেন মেহুল। এটিই ছিল তাঁর মূল চাকরি। কিন্তু পাশাপাশি ২০২২ সালের মার্চ থেকে সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি গ্লোবালফাউন্ড্রিজে ঠিকাদার হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি।

একটি বেনামি ই-মেইল থেকে বিষয়টি ফাঁস হলে মেহুলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়।

পুলিশের মহাপরিদর্শক লুসি ল্যাং বলেন, সরকারি কর্মচারীদের সততার সঙ্গে জনগণের সেবা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। মেহুল গোস্বামীর এহেন আচরণ সেই আস্থার গুরুতর লঙ্ঘন। সরকারি চাকরিতে থাকার সময় দ্বিতীয় পূর্ণকালীন চাকরি করা সরকারি সম্পদ ও করদাতার অর্থের অপব্যবহার।

১৫ অক্টোবর সারাটোগা কাউন্টি শেরিফ কার্যালয় মেহুলকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ হলে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে তাঁর।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দক্ষিণ কোরিয়ায় বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প ও সি চিন পিং

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ০১
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং। ছবি: সংগৃহীত
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩০ অক্টোবর দক্ষিণ কোরিয়ায় এক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে নিশ্চিত করেছে হোয়াইট হাউস।

বিশ্বের বৃহৎ দুই অর্থনীতির দেশের এই দুই নেতার বৈঠকের প্রস্তুতি কয়েক সপ্তাহ ধরে চলছিল। তবে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় বৈঠক আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল।

বৈঠকটি হলে তা হবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার পর দুই নেতার প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ।

এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট গতকাল বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বলা হচ্ছে, দ্বিপক্ষীয় এ বৈঠক হবে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলনের ফাঁকে, যা ৩১ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর গিয়ংজুতে অনুষ্ঠিত হবে।

ট্রাম্প এর মধ্যে বলেছেন, ‘আমাদের বেশ দীর্ঘ বৈঠকের সময়সূচি রয়েছে। আমরা আমাদের অনেক প্রশ্ন ও সন্দেহ মিটিয়ে নিতে পারব এবং একসঙ্গে আমাদের বিশাল সম্ভাবনাগুলো নিয়ে কাজ করতে পারব। আমার মনে হয়, কোনো না কোনো সমাধান পাওয়া যাবে। আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আসন্ন আলোচনাকে ঘিরে আজ শুক্রবার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও।

ওয়াং ওয়েনতাও বলেন, আগের আলোচনাগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, দুই পক্ষের উদ্বেগের সমাধান খুঁজে পাওয়া সম্পূর্ণ সম্ভব এবং এতে চীন-যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের সুস্থ, স্থিতিশীল ও টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত