শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলমানদের মতো ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত গাজার মানুষেরাও শুরু করেছেন রোজা। তবে অন্যান্য দেশ বা অঞ্চলের মানুষ যতটা উৎসাহ, উদ্দীপনা আর উচ্ছ্বাস নিয়ে রমজান শুরু করেছেন, শোকাহত গাজাবাসীর সেই সুযোগ ছিল না। কিন্তু তাদের বিশ্বাসের কোনো কমতি নেই। গাজাবাসীর রমজান ও বিশ্বাসের বিষয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরায় লিখেছেন ফিলিস্তিনি লেখিকা ইসরা আবু ক্বামার।
অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বের অন্য প্রান্তে যখন মানুষ উৎসবের আবহে রমজানের রোজা ও ইবাদত শুরু করছে, তখন আমরা তা করছি শোক ও বেদনার মধ্যে। যুদ্ধের আর্তনাদ এখনো কানে বাজছে। এই যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হবে কি না, কেউ জানে না। সবাই উদ্বিগ্ন ভবিষ্যৎ নিয়ে। সবারই আশঙ্কা—যদি আবার যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়!
গত এক বছরে আমরা যা দেখেছি, যা সহ্য করেছি, তার স্মৃতি ও ট্রমা আমাদের মনকে ভারাক্রান্ত করে রেখেছে। তবে এটি প্রথম নয় যে, আমরা যুদ্ধের মধ্যে রমজান পালন করছি। ২০১৪ সালেও যুদ্ধ চলাকালে রমজান কেটেছিল। তখন আমার বয়স মাত্র ৯ বছর। তবুও স্পষ্ট মনে আছে, কীভাবে সেসময় বিমান হামলা আর ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আমাদের রমজানের রাতগুলো কেটেছিল। স্পষ্ট মনে আছে, আমাদের পাড়ায় বোমা বর্ষণের সময় কীভাবে আমরা অন্ধকারের মধ্যে তাড়াহুড়ো করে ঘর ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলাম।
কিন্তু গত বছরের রমজান ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। সেটা ছিল অকল্পনীয়ভাবে ভয়াবহ। চারপাশে শুধুই ক্ষুধা। সারা দিন উপবাস থেকে ইফতার করতাম এক ক্যান হামুস বা মটরশুঁটি দিয়ে। এইটুকু খাবারও খেতাম ছয়জন মিলে ভাগ করে। বিদ্যুৎ না থাকায় সেই বিস্বাদ টিনজাত খাবার অন্ধকারে চিবিয়ে খেতাম। টেবিলের ওপারে থাকা পরিবারের সদস্যদের মুখও দেখতে পেতাম না।
আমরা আমাদের আত্মীয়স্বজনদের থেকেও দূরে ছিলাম। যাদের সঙ্গে আগে রমজান কাটাতাম—আমার দাদি, খালা, ফুফু, চাচাতো-খালাতো ভাইবোনরা—সবাই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গিয়েছিল। কেউ আশ্রয়শিবিরের তাঁবুতে, কেউ আটকে ছিল উত্তরে। যে মাসটি একত্রিত হওয়ার, তা আমাদের জন্য হয়ে উঠেছিল বিচ্ছিন্নতা ও নিঃসঙ্গতার মাস।
আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল রমজানের আনন্দময় আবহ। আমরা ব্যাকুল হয়ে অপেক্ষা করতাম মাগরিবের আজানের জন্য, ফজরের আজানের জন্য—কিন্তু সেই ডাক কখনো শোনা যেত না। সব মসজিদ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। যারা আজান দিতে চেয়েছিল, তারাও ভয় পেয়েছিল। ভয় ছিল, তাদের কণ্ঠস্বর হয়তো বোমার নিশানা বানিয়ে দেবে, তারা হয়তো হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।
কাছের মসজিদের লাউডস্পিকারে মুয়াজ্জিনের কণ্ঠ শোনার বদলে আমরা ইফতার করতাম ক্ষেপণাস্ত্রের বিকট আওয়াজ আর গোলাগুলির শব্দে। যুদ্ধের আগে, ইফতারের পর পরিবারের সঙ্গে মসজিদে যেতাম নামাজ পড়তে, আপনজনদের সঙ্গে দেখা করতে। তারপর গাজার রাস্তায় ঘুরে বেড়াতাম, রমজানের প্রাণবন্ত পরিবেশ উপভোগ করতাম, শেষে বাড়ি ফিরে তাজা কাতায়েফ খেতাম। কিন্তু গত বছর, গণহত্যার মধ্যে, আমাদের কোথাও যাওয়ার উপায় ছিল না।
গাজার সবচেয়ে সুন্দর ও ঐতিহাসিক মসজিদগুলোর একটি—গ্রেট ওমরি মসজিদ, যেখানে আমার বাবা ও ভাইয়েরা রমজানের শেষ দশ রাত কাটাতেন, যেখানে কোরআন তিলাওয়াত হতো সুমধুর কণ্ঠে—সেটাও ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছিল। যে স্থান একসময় ছিল ইবাদত ও শান্তির প্রতীক, তা পরিণত হয়েছিল ধ্বংসস্তূপে।
এ বছরের রমজান শুরু হচ্ছে যুদ্ধবিরতির মধ্যে। ইফতারের সময় আর বোমার আঘাতে জমিন কাঁপে না। ফজরের নীরবতা ভেঙে আর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় না। এখন অন্তত এই ভয় নেই যে, ঘর সাজানোর রঙিন বাতি ঘরগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে দেবে।
ব্যথা আর বিপর্যয়ের মাঝেও গাজার রাস্তায় জীবন ফিরে আসার চেষ্টা করছে। যেসব দোকানপাট এখনো টিকে আছে, সেগুলো আবার খুলেছে। ফেরিওয়ালারাও ফিরে এসেছে। নুসেইরাতের বড় সুপারমার্কেট হাইপার মল আবার চালু হয়েছে। রমজানের আগে আমার বাবা আমাকে ও আমার বোনকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন। আলোকিত মলে ঢুকে আমরা উচ্ছ্বাস সামলাতে পারছিলাম না। মুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিল, যেন আমরা অতীতে ফিরে গিয়েছি। তাকাগুলো আবার ভরে গিয়েছে—চকোলেট, বিস্কুট, চিপসের নানা ব্র্যান্ডে। ছিল রমজানের সাজসজ্জা, নানা আকৃতির ফানুস, খেজুরের বাক্স, রঙিন শুকনো ফল আর ক্বমর আল-দিন।
কিন্তু এই প্রাচুর্য বিভ্রমমাত্র। দোকানপাটে যা কিছু রয়েছে, তার বেশির ভাগই এসেছে বাণিজ্যিক ট্রাকে, যা মানবিক সাহায্যের পরিবর্তে গাজায় ঢোকার অনুমতি পেয়েছে। অথচ এসব পণ্য অধিকাংশ মানুষের সাধ্যের বাইরে—যারা তাদের জীবন ও জীবিকা হারিয়েছে।
তাহলে গাজার বেশির ভাগ মানুষ এবার ইফতারে কী খাবে? হয়তো টিনজাত খাবারের চেয়ে একটু ভালো কিছু—একটা সাধারণ খাবার, হয়তো ভাত, মোলোখিয়া বা যতটুকু সবজি তারা কিনতে পারবে।
আমাদের পরিবারের জন্য প্রথম ইফতারে থাকছে মুসাখান—পালংশাকের রুটি, মুরগি ও প্রচুর পেঁয়াজ দিয়ে তৈরি এক ফিলিস্তিনি খাবার। আমরা জানি, আমরা ভাগ্যবান। গাজার বেশির ভাগ মানুষ সেই মুরগিও কিনতে পারবে না, যা এখন বাজারে পাওয়া গেলেও যুদ্ধের আগে দামের দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
কিন্তু খাবারই একমাত্র জিনিস নয়, যা এ বছরের রমজানের টেবিল থেকে হারিয়ে যাবে। যুদ্ধের এই সময়ে ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে, সরকারি তালিকা থেকে তাদের নামই মুছে গেছে। তারা আর কখনো রমজান পালন করবে না।
অসংখ্য ইফতার টেবিলে থাকবে এক শূন্য আসন—একজন বাবা, যার কণ্ঠে আর শোনা যাবে না সন্তানদের ডাক; এক ছেলে, যে আর অধীর আগ্রহে ইফতারের অপেক্ষা করবে না; এক মা, যার হাতে আর কখনো তৈরি হবে সুস্বাদু খাবার।
আমিও আমার প্রিয় মানুষদের হারিয়েছি। আমার খালার স্বামী, যিনি প্রতি বছর আমাদের ইফতারে ডাকতেন, তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার বন্ধু শাইমা, লিনা আর রোয়া—যাদের সঙ্গে আমি তারাবির নামাজের পর মসজিদে দেখা করতাম—তাঁরা সবাই শহীদ হয়েছে।
উৎসবের আমেজ হয়তো নেই, কিন্তু রমজানের মূল সত্তা টিকে আছে। এই মাস আমাদের জীবনের অন্যান্য ব্যস্ততা ও চিন্তা থেকে দূরে সরে গিয়ে ইমানের সঙ্গে সংযোগ করার সুযোগ দেয়। এটি ক্ষমার সময়। এটি আল্লাহর কাছে ঘনিষ্ঠতা ও আধ্যাত্মিক ধৈর্য খোঁজার মাস।
আমাদের মসজিদ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, কিন্তু আমাদের বিশ্বাস ভাঙেনি। আমরা এখনো ধ্বংসস্তূপে, তাঁবুর নিচে তারাবির নামাজ পড়ব। আমরা আমাদের সব আশা নিয়ে দু’আ করব, কোরআন তিলাওয়াতে সান্ত্বনা খুঁজব, এই বিশ্বাস নিয়ে যে, আমাদের সব কষ্টের প্রতিদান আল্লাহ দেবেন।
বিশ্বের অন্য প্রান্তে যখন মানুষ উৎসবের আবহে রমজানের রোজা ও ইবাদত শুরু করছে, তখন আমরা তা করছি শোক ও বেদনার মধ্যে। যুদ্ধের আর্তনাদ এখনো কানে বাজছে। এই যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হবে কি না, কেউ জানে না। সবাই উদ্বিগ্ন ভবিষ্যৎ নিয়ে। সবারই আশঙ্কা—যদি আবার যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়!
গত এক বছরে আমরা যা দেখেছি, যা সহ্য করেছি, তার স্মৃতি ও ট্রমা আমাদের মনকে ভারাক্রান্ত করে রেখেছে। তবে এটি প্রথম নয় যে, আমরা যুদ্ধের মধ্যে রমজান পালন করছি। ২০১৪ সালেও যুদ্ধ চলাকালে রমজান কেটেছিল। তখন আমার বয়স মাত্র ৯ বছর। তবুও স্পষ্ট মনে আছে, কীভাবে সেসময় বিমান হামলা আর ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আমাদের রমজানের রাতগুলো কেটেছিল। স্পষ্ট মনে আছে, আমাদের পাড়ায় বোমা বর্ষণের সময় কীভাবে আমরা অন্ধকারের মধ্যে তাড়াহুড়ো করে ঘর ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলাম।
কিন্তু গত বছরের রমজান ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। সেটা ছিল অকল্পনীয়ভাবে ভয়াবহ। চারপাশে শুধুই ক্ষুধা। সারা দিন উপবাস থেকে ইফতার করতাম এক ক্যান হামুস বা মটরশুঁটি দিয়ে। এইটুকু খাবারও খেতাম ছয়জন মিলে ভাগ করে। বিদ্যুৎ না থাকায় সেই বিস্বাদ টিনজাত খাবার অন্ধকারে চিবিয়ে খেতাম। টেবিলের ওপারে থাকা পরিবারের সদস্যদের মুখও দেখতে পেতাম না।
আমরা আমাদের আত্মীয়স্বজনদের থেকেও দূরে ছিলাম। যাদের সঙ্গে আগে রমজান কাটাতাম—আমার দাদি, খালা, ফুফু, চাচাতো-খালাতো ভাইবোনরা—সবাই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গিয়েছিল। কেউ আশ্রয়শিবিরের তাঁবুতে, কেউ আটকে ছিল উত্তরে। যে মাসটি একত্রিত হওয়ার, তা আমাদের জন্য হয়ে উঠেছিল বিচ্ছিন্নতা ও নিঃসঙ্গতার মাস।
আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল রমজানের আনন্দময় আবহ। আমরা ব্যাকুল হয়ে অপেক্ষা করতাম মাগরিবের আজানের জন্য, ফজরের আজানের জন্য—কিন্তু সেই ডাক কখনো শোনা যেত না। সব মসজিদ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। যারা আজান দিতে চেয়েছিল, তারাও ভয় পেয়েছিল। ভয় ছিল, তাদের কণ্ঠস্বর হয়তো বোমার নিশানা বানিয়ে দেবে, তারা হয়তো হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।
কাছের মসজিদের লাউডস্পিকারে মুয়াজ্জিনের কণ্ঠ শোনার বদলে আমরা ইফতার করতাম ক্ষেপণাস্ত্রের বিকট আওয়াজ আর গোলাগুলির শব্দে। যুদ্ধের আগে, ইফতারের পর পরিবারের সঙ্গে মসজিদে যেতাম নামাজ পড়তে, আপনজনদের সঙ্গে দেখা করতে। তারপর গাজার রাস্তায় ঘুরে বেড়াতাম, রমজানের প্রাণবন্ত পরিবেশ উপভোগ করতাম, শেষে বাড়ি ফিরে তাজা কাতায়েফ খেতাম। কিন্তু গত বছর, গণহত্যার মধ্যে, আমাদের কোথাও যাওয়ার উপায় ছিল না।
গাজার সবচেয়ে সুন্দর ও ঐতিহাসিক মসজিদগুলোর একটি—গ্রেট ওমরি মসজিদ, যেখানে আমার বাবা ও ভাইয়েরা রমজানের শেষ দশ রাত কাটাতেন, যেখানে কোরআন তিলাওয়াত হতো সুমধুর কণ্ঠে—সেটাও ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছিল। যে স্থান একসময় ছিল ইবাদত ও শান্তির প্রতীক, তা পরিণত হয়েছিল ধ্বংসস্তূপে।
এ বছরের রমজান শুরু হচ্ছে যুদ্ধবিরতির মধ্যে। ইফতারের সময় আর বোমার আঘাতে জমিন কাঁপে না। ফজরের নীরবতা ভেঙে আর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় না। এখন অন্তত এই ভয় নেই যে, ঘর সাজানোর রঙিন বাতি ঘরগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে দেবে।
ব্যথা আর বিপর্যয়ের মাঝেও গাজার রাস্তায় জীবন ফিরে আসার চেষ্টা করছে। যেসব দোকানপাট এখনো টিকে আছে, সেগুলো আবার খুলেছে। ফেরিওয়ালারাও ফিরে এসেছে। নুসেইরাতের বড় সুপারমার্কেট হাইপার মল আবার চালু হয়েছে। রমজানের আগে আমার বাবা আমাকে ও আমার বোনকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন। আলোকিত মলে ঢুকে আমরা উচ্ছ্বাস সামলাতে পারছিলাম না। মুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিল, যেন আমরা অতীতে ফিরে গিয়েছি। তাকাগুলো আবার ভরে গিয়েছে—চকোলেট, বিস্কুট, চিপসের নানা ব্র্যান্ডে। ছিল রমজানের সাজসজ্জা, নানা আকৃতির ফানুস, খেজুরের বাক্স, রঙিন শুকনো ফল আর ক্বমর আল-দিন।
কিন্তু এই প্রাচুর্য বিভ্রমমাত্র। দোকানপাটে যা কিছু রয়েছে, তার বেশির ভাগই এসেছে বাণিজ্যিক ট্রাকে, যা মানবিক সাহায্যের পরিবর্তে গাজায় ঢোকার অনুমতি পেয়েছে। অথচ এসব পণ্য অধিকাংশ মানুষের সাধ্যের বাইরে—যারা তাদের জীবন ও জীবিকা হারিয়েছে।
তাহলে গাজার বেশির ভাগ মানুষ এবার ইফতারে কী খাবে? হয়তো টিনজাত খাবারের চেয়ে একটু ভালো কিছু—একটা সাধারণ খাবার, হয়তো ভাত, মোলোখিয়া বা যতটুকু সবজি তারা কিনতে পারবে।
আমাদের পরিবারের জন্য প্রথম ইফতারে থাকছে মুসাখান—পালংশাকের রুটি, মুরগি ও প্রচুর পেঁয়াজ দিয়ে তৈরি এক ফিলিস্তিনি খাবার। আমরা জানি, আমরা ভাগ্যবান। গাজার বেশির ভাগ মানুষ সেই মুরগিও কিনতে পারবে না, যা এখন বাজারে পাওয়া গেলেও যুদ্ধের আগে দামের দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
কিন্তু খাবারই একমাত্র জিনিস নয়, যা এ বছরের রমজানের টেবিল থেকে হারিয়ে যাবে। যুদ্ধের এই সময়ে ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে, সরকারি তালিকা থেকে তাদের নামই মুছে গেছে। তারা আর কখনো রমজান পালন করবে না।
অসংখ্য ইফতার টেবিলে থাকবে এক শূন্য আসন—একজন বাবা, যার কণ্ঠে আর শোনা যাবে না সন্তানদের ডাক; এক ছেলে, যে আর অধীর আগ্রহে ইফতারের অপেক্ষা করবে না; এক মা, যার হাতে আর কখনো তৈরি হবে সুস্বাদু খাবার।
আমিও আমার প্রিয় মানুষদের হারিয়েছি। আমার খালার স্বামী, যিনি প্রতি বছর আমাদের ইফতারে ডাকতেন, তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার বন্ধু শাইমা, লিনা আর রোয়া—যাদের সঙ্গে আমি তারাবির নামাজের পর মসজিদে দেখা করতাম—তাঁরা সবাই শহীদ হয়েছে।
উৎসবের আমেজ হয়তো নেই, কিন্তু রমজানের মূল সত্তা টিকে আছে। এই মাস আমাদের জীবনের অন্যান্য ব্যস্ততা ও চিন্তা থেকে দূরে সরে গিয়ে ইমানের সঙ্গে সংযোগ করার সুযোগ দেয়। এটি ক্ষমার সময়। এটি আল্লাহর কাছে ঘনিষ্ঠতা ও আধ্যাত্মিক ধৈর্য খোঁজার মাস।
আমাদের মসজিদ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, কিন্তু আমাদের বিশ্বাস ভাঙেনি। আমরা এখনো ধ্বংসস্তূপে, তাঁবুর নিচে তারাবির নামাজ পড়ব। আমরা আমাদের সব আশা নিয়ে দু’আ করব, কোরআন তিলাওয়াতে সান্ত্বনা খুঁজব, এই বিশ্বাস নিয়ে যে, আমাদের সব কষ্টের প্রতিদান আল্লাহ দেবেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক আলোচনার নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে উদ্যোগী হয়েছেন ইউরোপের নেতারা। এই লক্ষ্যে আজ রোববার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার লন্ডনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
৮ ঘণ্টা আগে‘প্রেসিডেন্ট অ্যাট ওয়ার’ নামে নতুন একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এই বইয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কীভাবে একাধিক মার্কিন প্রেসিডেন্টের জীবন ও শাসনকে প্রভাবিত করেছিল, তা বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া বইটিতে জন এফ কেনেডির প্রেমজীবনের একটি বিতর্কিত অধ্যায় তুলে ধরেছেন লেখক স্টিভেন এম গিলন। ইনগা আরভাদ নামে একজন
৮ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, দেশটির দক্ষিণ সীমান্তে আরও প্রায় ৩ হাজার সেনা মোতায়েন করা হবে। গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের নর্দার্ন কমান্ড (নর্থকম) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দ্বিতীয় স্ট্রাইকার ব্রিগেড কমব্যাট টিম (এসবিসিটি) থেকে প্রায় ২ হাজার ৪০০ সেনা এবং তৃতীয় কমব্যাট এভিয়েশন ব্রিগেড থেকে ৫০০
৯ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস ও বোস্টনে শত শত মানুষ ইউক্রেনের প্রতি সংহতি জানিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। ভারমন্টের ওয়েটসফিল্ড শহরেও সমবেত হয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। সেখানে ভাইস-প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স তাঁর পরিবার নিয়ে স্কি অবকাশযাপনে গিয়েছিলেন।
১১ ঘণ্টা আগে