Ajker Patrika

আইসিসিতে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিলের আবেদন খারিজ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ৫২
২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর রোমে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে আয়োজিত এক সমাবেশে বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। ছবি: এএফপি
২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর রোমে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে আয়োজিত এক সমাবেশে বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। ছবি: এএফপি

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তাঁর সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। চলতি বছরের মে মাসে ইসরায়েল আইসিসির কাছে পরোয়ানা বাতিলের আবেদন করেছিল। একই সময়ে আদালতের এখতিয়ার নিয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে করা একটি পৃথক চ্যালেঞ্জ পর্যালোচনাধীন ছিল।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৬ জুলাই আইসিসি ইসরায়েলের এই আবেদন খারিজ করেন। আদালত জানান, আদালতের এখতিয়ারের বিষয়টি অমীমাংসিত থাকায় পরোয়ানা বাতিল করার ‘কোনো আইনি ভিত্তি নেই’।

এর এক সপ্তাহ পর ইসরায়েল ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার চেষ্টা করে। কিন্তু গত শুক্রবার আইসিসির বিচারকেরা রায় দেন, ইসরায়েল যে বিষয়টি উত্থাপন করেছে, তা আপিলের যোগ্য নয়।

ইসরায়েল আইসিসির সদস্য না হলেও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ২০১৫ সালে এর সদস্যপদ লাভ করে। এর ফলস্বরূপ, গাজা উপত্যকা, পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেমসহ অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইসরায়েলিদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধের তদন্ত করার ক্ষমতা আইসিসির রয়েছে।

নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। আইসিসির ২২ বছরের ইতিহাসে পশ্চিমাদের কোনো মিত্রের বিরুদ্ধে এমন পরোয়ানা জারির এটিই প্রথম ঘটনা।

ফিলিস্তিনিরা এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্তকে ‘ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত’ বলে স্বাগত জানায়। অন্যদিকে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এর তীব্র নিন্দা করে এটিকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে আখ্যা দেন।

এর পর থেকে আইসিসি ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা, হুমকি ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার মুখে পড়েছে। ওয়াশিংটন আইসিসির বেশ কয়েকজন বিচারক ও প্রসিকিউটরের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে এবং ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ বলে অভিহিত করে।

আইসিসি একটি বৈশ্বিক ট্রাইব্যুনাল, যার কাজ হলো গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও আগ্রাসনের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার করা। রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরকারী ১২২টি রাষ্ট্রই (যার মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব সদস্য রয়েছে) নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টকে গ্রেপ্তার করে আইসিসির কাছে হস্তান্তর করতে আইনত বাধ্য। তবে এই আদালতের বাস্তবায়নক্ষমতা নেই এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু করা যায় না। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তাঁর দেশ বা অন্য কোথাও গ্রেপ্তার করার পর আইসিসিতে হাজির করা হয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায়। এর জবাবে নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের নেতৃত্বে গাজা উপত্যকায় একটি বিধ্বংসী যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল, যা এখনো চলছে।

দুই বছর ধরে চলা অবিরাম বোমা হামলা, ধ্বংসাত্মক স্থল অভিযান ও কঠোর অবরোধে ইসরায়েল ৬৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ফাঁস হওয়া তথ্য অনুসারে, নিহত ব্যক্তিদের ৮০ শতাংশের বেশি বেসামরিক নাগরিক। ধারণা করা হচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও কমপক্ষে ৯ হাজার ৫০০ জন নিখোঁজ রয়েছে।

চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় ইতিমধ্যে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। বাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল, মসজিদ, চার্চসহ মোট অবকাঠামোর ৮৩ শতাংশের বেশি ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু আন্তর্জাতিক সংস্থা, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ ও বিভিন্ন দেশ ইসরায়েলের এই কার্যকলাপকে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিবিনিময়ের চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় দুই বছর ধরে চলা গাজা যুদ্ধের অবসান হয়েছে। তবে বাস্তবতা হলো, ইসরায়েল এখনো গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে আজও গাজায় হামলা চালিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

লটারিতে স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেল ৩ লাখ ৫ হাজার শিক্ষার্থী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা ছাড়ল বুলগেরিয়ার সরকার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সপ্তাহজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী রোসেন জেলিয়াজকভ তাঁর সরকারের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। পার্লামেন্টে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের ঠিক কয়েক মিনিট আগে টেলিভিশনে দেওয়া এক বিবৃতিতে জেলিয়াজকভ তাঁর পদত্যাগের ঘোষণা দেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জনস্বার্থবিরোধী অর্থনৈতিক নীতি ও দুর্নীতি দমনে ব্যর্থতার অভিযোগে সপ্তাহ ধরে এ বিক্ষোভ চলছিল।

টেলিভিশনে দেওয়া বিবৃতিতে ঝেলিয়াজকভ বলেন, ‘আমরা জোটের বৈঠকে বর্তমান পরিস্থিতি, চ্যালেঞ্জ এবং আমাদের করণীয় সিদ্ধান্তগুলো আলোচনা করেছি। জনগণ আমাদের কাছ থেকে যে দায়িত্বশীলতার প্রত্যাশা করে, আমরা সে উচ্চতায় থাকতে চাই। ক্ষমতা আসে জনগণের কণ্ঠ থেকে।’

কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজধানী সোফিয়া ছাড়াও দেশজুড়ে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সরকারের অর্থনৈতিক নীতি জনস্বার্থবিরোধী, উচ্চকর ও সামাজিক নিরাপত্তা অবদানের প্রস্তাব জনগণের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে এবং বছরের পর বছর চলা দুর্নীতি দমনে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ।

গত সপ্তাহে সরকার তাদের ২০২৬ সালের বাজেট প্রস্তাব করে, যেখানে প্রথমবারের মতো ইউরো মুদ্রায় খসড়া করা হয়েছিল। তবে বিক্ষোভের কারণে সরকার তা প্রত্যাহার করে নেয়। বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তায় নাগরিক ব্যয় বাড়ানো এবং লভ্যাংশের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপের পরিকল্পনা ছিল।

তবে বাজেট প্রত্যাহারের পরও বিক্ষোভ থামেনি। গত চার বছরে দেশটিতে সাতটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সর্বশেষ ২০২৪ সালের অক্টোবরে। রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভাজন বুলগেরিয়ার সংকট আরও গভীর করেছে।

এর মধ্যেই প্রেসিডেন্ট রুমেন রাদেভ সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। আজ বৃহস্পতিবার সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘জনগণের কণ্ঠ আর মাফিয়ার ভয়ের মাঝে—জনগণের কণ্ঠই শুনুন। রাস্তায় যে স্লোগান উঠছে, তার প্রতিধ্বনি শুনুন।’

বুলগেরিয়ার সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সীমিত। এখন তিনি সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে নতুন সরকার গঠনের চেষ্টা করবেন। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে নতুন সরকার গঠন কঠিন হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আর যদি দলগুলো নতুন সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে প্রেসিডেন্ট একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করবেন এবং দেশে আবারও নতুন নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

লটারিতে স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেল ৩ লাখ ৫ হাজার শিক্ষার্থী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সাবেক গোয়েন্দা প্রধানের ১৪ বছর কারাদণ্ড

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান ফায়েজ হামিদ। ছবি: বিবিসি
পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান ফায়েজ হামিদ। ছবি: বিবিসি

পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ফায়েজ হামিদকে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁস, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপসহ একাধিক অভিযোগে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির সামরিক আদালত। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রচার শাখা আইএসপিআর-এর এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিবিসি জানিয়েছে, ফায়েজ হামিদ ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আগাম অবসরে যান হামিদ। পাকিস্তানের ইতিহাসে হামিদই প্রথম কোনো আইএসআই প্রধান, যাকে সামরিক আইনের মুখোমুখি হতে হলো।

আইএসপিআর জানিয়েছে, পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্ট অনুযায়ী ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে ১৫ মাসব্যাপী চলেছে এই বিচারপ্রক্রিয়া। হামিদের বিরুদ্ধে মোট চারটি অভিযোগ আনা হয়—রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা, অফিশিয়াল গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করা, ক্ষমতা ও সরকারি সম্পদের অপব্যবহার এবং নাগরিকদের ক্ষতি সাধন।

সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, হামিদ নিজের পছন্দমতো আইনজীবী দল নিয়োগের সুযোগ পেয়েছিলেন। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য তাঁর কাছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার অধিকারও উন্মুক্ত রয়েছে।

মামলার শুনানি সামরিক আদালতে হওয়ায় এর সুনির্দিষ্ট তথ্য গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করা হয়নি।

আইএসপিআর জানিয়েছে, হামিদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অস্থিরতা উসকে দেওয়ার অভিযোগ আলাদাভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। এই অভিযোগটি ২০২৩ সালের ৯ মে ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে হওয়া সহিংস বিক্ষোভে হামিদের ভূমিকার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পাকিস্তানের ক্ষমতাকাঠামোতে আইএসআই প্রধানকে সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রভাবশালী পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই এই রায় দেশটির রাজনৈতিক–সামরিক সম্পর্কে নতুন প্রভাব ফেলতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

লটারিতে স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেল ৩ লাখ ৫ হাজার শিক্ষার্থী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিমানের ডানায় আটকে গেল প্যারাস্যুট, অলৌকিকভাবে বাঁচলেন স্কাইডাইভার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিমানটির ডানায় এভাবেই আটকে গিয়েছিলেন স্কাইডাইভার। ছবি: সংগৃহীত
বিমানটির ডানায় এভাবেই আটকে গিয়েছিলেন স্কাইডাইভার। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার ফার নর্থ কুইন্সল্যান্ডে গত ২০ সেপ্টেম্বর ঘটে বিস্ময়কর সেই দুর্ঘটনাটি। সেদিন প্রায় ৪ হাজার ৬০০ মিটার উচ্চতায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন এক স্কাইডাইভার। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) প্রকাশিত অস্ট্রেলিয়ান ট্রান্সপোর্ট সেফটি ব্যুরোর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটির বিস্তারিত উঠে এসেছে।

এই বিষয়ে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ফার নর্থ কুইন্সল্যান্ডের টুলি এয়ারপোর্টের আকাশে ১৭ জন প্যারাস্যুটার একটি ‘সিক্সটিন-ওয়ে ফরমেশন জাম্পে’ অংশ নিচ্ছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রথমজন যখন বিমান থেকে বের হচ্ছিলেন, ঠিক তখনই তাঁর রিজার্ভ প্যারাস্যুটের হ্যান্ডেলটি বিমানের উইং ফ্ল্যাপে আটকে যায়। এর ফলে মুহূর্তের মধ্যেই রিজার্ভ প্যারাস্যুট খুলে যায় এবং বাতাসের হঠাৎ টানে পেছনের দিকে ছিটকে গিয়ে বিমানের ডানায় ধাক্কা খান এবং আটকে যান ওই স্কাইডাইভার। এতে বিমানের ডানায় ও স্ট্যাবিলাইজারে গুরুতর ক্ষতি হয়।

প্যারাস্যুটের দড়ি স্ট্যাবিলাইজারের চারপাশে পেঁচিয়ে যাওয়ায় স্কাইডাইভার ঝুলন্ত অবস্থায় অচল হয়ে পড়েন। অন্য প্যারাস্যুটারেরা জাম্প সম্পন্ন করলেও দুজন দরজায় দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি দেখছিলেন। ঝুলে থাকা প্যারাস্যুটার জীবন বাঁচাতে তাঁর হুক নাইফ বের করে রিজার্ভ প্যারাস্যুটের ১১টি লাইন কেটে নিজেকে মুক্ত করেন। এরপর তিনি মূল প্যারাস্যুট খুলতে সক্ষম হন, যদিও রিজার্ভ প্যারাস্যুটের কিছু লাইন তখনো তাঁকে জড়িয়ে ছিল।

এদিকে পাইলট হঠাৎ বিমানটিকে ওপরের দিকে ঢলে যেতে এবং গতি কমে যেতে দেখে প্রথমে ভেবেছিলেন বিমানটিতে ত্রুটি হয়েছে। পরে তাঁকে জানানো হয়, একজন স্কাইডাইভার বিমানের পেছনে ডানায় ঝুলে আছেন। এ অবস্থায় পাইলট জরুরি ‘মে ডে’ বার্তা পাঠান এবং প্রয়োজনে নিজেও বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন।

অবশেষে ২,৫০০ ফুট উচ্চতায় এসে পাইলট বুঝতে পারেন, বিমানটি তাঁর নিয়ন্ত্রণেই আছে। ছোট-খাটো আঘাত নিয়ে নিরাপদেই অবতরণ করেন ওই স্কাইডাইভার এবং পাইলটও ক্ষতিগ্রস্ত বিমানটিকে নিরাপদে অবতরণ করাতে সক্ষম হন।

এই ঘটনার পর স্কাইডাইভারদের প্রতি এক সতর্কবার্তায় ‘অস্ট্রেলিয়ান ট্রান্সপোর্ট সেফটি ব্যুরো’ বলেছে—বিমানের দরজার কাছে প্যারাস্যুটের হ্যান্ডেল সম্পর্কে অতিরিক্ত সতর্ক হতে হবে এবং জরুরি অবস্থার জন্য হুক নাইফ অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে। ব্যুরো আরও জানিয়েছে, বিমানের ওজন ও ভারসাম্য নির্ণয় স্কাইডাইভিং অভিযানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অতীতে এসব কারণে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

লটারিতে স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেল ৩ লাখ ৫ হাজার শিক্ষার্থী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাসপাতালে মিয়ানমার জান্তার বিমান হামলা, নিহত অন্তত ৩০

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হামলার সময় ৩০০ শয্যার হাসপাতালটি রোগীতে ঠাসা ছিল। ছবি: এএফপি
হামলার সময় ৩০০ শয্যার হাসপাতালটি রোগীতে ঠাসা ছিল। ছবি: এএফপি

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে একটি হাসপাতালে সামরিক জান্তার বিমান হামলায় অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই হাসপাতালে ভর্তি রোগী। এ ঘটনায় ৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাখাইন রাজ্যের মুরাক উ শহরের হাসপাতালটিতে বুধবার রাতে একটি সামরিক বিমান থেকে বোমা ফেলা হয়। আরাকান আর্মির (এএ) মুখপাত্র খাইন থু খা রয়টার্সকে বলেন, ‘মুরাক উ জেনারেল হাসপাতাল সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। সরাসরি হাসপাতালটিকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোয় হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি।’

ওয়াই হুন অং নামে স্থানীয় একজন উদ্ধারকর্মী জানান, হামলার সময় ৩০০ শয্যার হাসপাতালটি রোগীতে ঠাসা ছিল। কারণ, চলমান সংঘাতের কারণে রাখাইন রাজ্যের বিস্তৃত অঞ্চলে বেশির ভাগ স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হয়ে গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালের কিছু ছবি শেয়ার করে ওয়াই হুন অং জানান, হামলায় হাসপাতালের ছাদ ধসে পড়েছে। আশপাশে মৃতদেহ পড়ে ছিল। হামলার পর বাকি রোগীদের একটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে এসব ছবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

আরাকান আর্মির (এএ) মুখপাত্র খাইন থু খা জানান, মুরাক উ শহরটি গত বছর থেকেই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সম্প্রতি ওই এলাকায় সামরিক জান্তার সঙ্গে বড় কোনো লড়াই হয়নি।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে মিয়ানমারে সংঘাত চলছে।

সম্প্রতি, জান্তা সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিমানবাহিনী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে। আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্টের তথ্য অনুযায়ী—২০২৪ সালে মিয়ানমারে বিমান হামলার ঘটনা ছিল ১ হাজার ৭১৬টি। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত বিমান হামলা হয়েছে ২ হাজার ১৬৫টি।

২০২৩ সালে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৪টি থেকে সামরিক বাহিনীকে বিতাড়িত করে। সিঙ্গাপুরভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আইসিইএএস-ইউসুফ ইশাক ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, আরাকান আর্মি বর্তমানে বেলজিয়ামের চেয়েও বড় একটি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিজির সঙ্গে তর্ক: অব্যাহতির ৪ দিনের মাথায় পুনর্বহাল ময়মনসিংহের চিকিৎসক

রাশেদ খানের পদত্যাগ চেয়ে গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্যের অনাস্থা

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

মধ্যরাতে দেশে দুই দফা ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল সিলেট ও মৌলভীবাজার

লটারিতে স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেল ৩ লাখ ৫ হাজার শিক্ষার্থী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত