Ajker Patrika

অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হামাস ও ইসরায়েল

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০০: ০৮
Thumbnail image
যুদ্ধ বিরতির খবর শুনে গাজার খান ইউনিসে কিশোরদের উল্লাস। ছবি: এএফপি

অবশেষে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে উপনীত হয়েছে হামাস ও ইসরায়েল। বার্তা সংস্থা রয়টার্স আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, আজ বুধবার ইসরায়েল ও হামাস গাজা যুদ্ধের জন্য একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছেছে। যেখানে টানা ১৫ মাসের সংঘাতে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং যুদ্ধের উত্তাপে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বেড়েছে।

চুক্তিটি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, প্রাথমিকভাবে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির একটি পর্যায় নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর ধাপে ধাপে প্রত্যাহার এবং হামাসের হাতে আটক বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলে আটক ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

চুক্তিটি মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে কয়েক মাসের আলোচনার ফল। যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ জানুয়ারির অভিষেকের ঠিক আগে চূড়ান্ত চুক্তিটি চূড়ান্ত হলো। যেখানে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতা হস্তান্তরের আগেই মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

গাজার প্রধান ফিলিস্তিনি সশস্ত্র স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস জানিয়েছে, হামাসের প্রতিনিধিদল মধ্যস্থতাকারীদের কাছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি এবং বন্দীদের ফেরতের বিষয়ে তাদের সম্মতি জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, হামাস চুক্তির মৌখিক সম্মতি দিয়েছে এবং চূড়ান্ত লিখিত সম্মতি দেওয়ার জন্য আরও তথ্যের অপেক্ষায় রয়েছে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সা’আর জানিয়েছেন, তিনি ইউরোপ সফর সংক্ষিপ্ত করে আজ রাতেই ইসরায়েল ফিরে আসছেন। ফিরেই তিনি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ও সরকারের ভোটে অংশ নেবেন। সম্ভবত আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস–নেতৃত্বাধীন সশস্ত্র ব্যক্তিরা নিরাপত্তা বাধা ভেঙে ইসরায়েলি এলাকায় প্রবেশ করে। তারা ১ হাজার ২০০ সেনা ও সাধারণ নাগরিককে হত্যা করে এবং ২৫০ জনেরও বেশি বিদেশি ও ইসরায়েলি নাগরিককে বন্দী করে নিয়ে যায়।

এরপর ইসরায়েলের গাজা অভিযানে এ পর্যন্ত ৪৬ হাজার এরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। উপকূলীয় এই এলাকাটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে ইসরায়েল। তীব্র শীতে শত শত মানুষ তাঁবু ও অস্থায়ী আশ্রয়ে কোনোরকম টিকে আছে।

ট্রাম্প তাঁর অভিষেকের আগে বারবার দ্রুত চুক্তি করার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, বন্দীদের মুক্তি না দিলে ‘মারাত্মক পরিণতি’ হবে। তাঁর মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দলের সঙ্গে মিলে চুক্তিটি সম্পন্ন করতে কাজ করেছেন।

এখন ইসরায়েলে বন্দীদের ফিরে আসা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তাঁর ডানপন্থী সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ কমাতে পারে। যেখানে গত বছরের ৭ অক্টোবরের নিরাপত্তা ব্যর্থতার জন্য নেতানিয়াহুর সরকার তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।

এই সংঘাত পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে ইরান–সমর্থিত লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইরাক ও ইয়েমেনের গোষ্ঠীগুলো ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে। এই চুক্তিটি ইসরায়েলি অভিযানে হামাস ও লেবাননের হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতাদের হত্যা করার পর চূড়ান্ত হলো। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই নেতাদের হত্যার মাধ্যমে ইসরায়েল কৌশলগতভাবে এগিয়ে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত