Ajker Patrika

গাজায় পোলিও টিকা দিতে সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ইসরায়েল: প্রতিবেদন

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ, যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল গাজায় পোলিও আক্রান্ত প্রথম শিশু শনাক্ত হয়েছে। মাত্র ১০ মাস বয়সী সেই শিশুর নাম আব্দেল রহমান আবু আল-জাদেইন। এই অবস্থায় অঞ্চলটিতে পোলিও টিকা দেওয়ার জন্য সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল। এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মার্কিন কর্মকর্তা দেশটির সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টকে জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তাঁকে সাময়িক যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিয়েছিলেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গাজায় পোলিও ছড়িয়ে পড়ার গুরুতর আশঙ্কা ব্যক্ত করার পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিষয়টি নিয়ে নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলাপ করেন। 

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর স্টেট ডিপার্টমেন্টের ওই কর্মকর্তা জানিয়েছে, সাময়িক যুদ্ধবিরতি এবং কোন কোন অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি হবে সেই বিষয়টি নির্ধারণ করতে কাজ চলছে। এর বাইরে এই বিষয়ে তিনি আর কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি। 
 
এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে—পোলিও টিকা দেওয়ার জন্য ইসরায়েল কোনো ধরনে যুদ্ধবিরতি দিতে সম্মত হয়নি বরং এ লক্ষ্যে গাজায় কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চল বরাদ্দ করতে সম্মত হয়েছে। যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা এই বিষয়টিরই অনুমোদন দিয়েছে। 

এর আগে, গাজার শিশুদের পোলিও ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য অঞ্চলটিতে ৩ দিনের মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান ও ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জোসেপ বোরেল। 

তিনি তাঁর টুইটে লিখেন, ‘পোলিওর দ্রুত বিস্তার গাজার সব শিশুকে হুমকির মুখে ফেলেছে। যারা এরই মধ্যে বাস্তুচ্যুতি, বঞ্চনা এবং অপুষ্টির কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে। আমি অবিলম্বে ৩ দিনের মানবিক যুদ্ধবিরতির—গাজায় যে বৃহত্তর যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের কার্যক্রম চলছে তার থেকে আলাদাভাবে—আহ্বান জানাই। যাতে ডব্লিউএইচও ও ইউনিসেফ শিশুদের টিকা দিতে সক্ষম হয়। এটি আমাদের মানবিক দাবি।’

ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় স্বাস্থ্য সেবা ভেঙে পড়েছে। এই অবস্থায় অঞ্চলটির শিশুদের মধ্যে পোলিও মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এমনকি সংস্থাটি গাজায় ১০ লাখ পোলিও ভ্যাকসিনও পাঠিয়েছিল। এবার সেই ভ্যাকসিন গাজার শিশুদের দিতে অঞ্চলটিতে ৩ দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান করা হলো। 

সে সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানম ঘেব্রেইসাস গত জুলাই মাসের ২৭ তারিখ জানান, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ও যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ড গাজায় শিশুদের পোলিও রুখতে ১০ লাখের বেশি ভ্যাকসিন পাঠিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে লিখিত কলামে তেদরোস আধানম ঘেব্রেইসাস উল্লেখ করেন, গাজার পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায় এমন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে। তবে দুই বছর বয়সী শিশুরা আরও বেশি ঝুঁকিতে। কারণ তাদের জন্মের পরপরই যেসব প্রয়োজনীয় টিকা পাওয়ার কথা, তার অধিকাংশই পাওয়া হয়নি গাজায় ৯ মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে। 

সাধারণত পোলিওমাইলাইটিস রোগটি মুখের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। এটি অত্যন্ত সংক্রামক ভাইরাস, যা স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করতে পারে এবং এর কারণে মানুষের প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাত ঘটতে পারে। ১৯৮৮ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী পোলিওর ঘটনা ৯৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে গণ টিকা অভিযানের কারণে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত