Ajker Patrika

নতুন সিরিয়া হবে সবার: অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা

  • সব সম্প্রদায়ের মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
  • নিরাপত্তাব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ওপর জোর।
  • শরণার্থীদের দেশে ফেরা সহজ করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
Thumbnail image
১৩ বছরের গৃহযুদ্ধ চলা সিরিয়ার বিধ্বস্ত একটি ভবনের পাশে বিরোধীদের পতাকা হাতে এক ব্যক্তি। গতকাল আলেপ্পো শহরে। ছবি: এএফপি

বাশার-পরবর্তী নতুন সিরিয়া হবে সবার। সব সম্প্রদায়ের মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করবে সরকার। এক সাক্ষাৎকারে নিজ প্রশাসনের এমন অবস্থানের কথা জানিয়েছেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-বশির।

ইতালীয় সংবাদপত্র কোরিয়ারে ডেলা সেরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভঙ্গুর নিরাপত্তাব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন বশির। তিনি জানান, বাশার আল-আসাদের আমলে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলোয় শরণার্থীর জীবন বেছে নিতে বাধ্য হওয়া সিরিয়ার লাখ লাখ মানুষের স্বদেশে প্রত্যাবর্তন সহজ করতে কাজ করবে সরকার।

মোহাম্মদ আল-বশির বলেন, বাশারের আমলে ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে ভয়াবহ সংকটের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সিরিয়ার নিজস্ব মুদ্রার মান অত্যন্ত কম। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেই বললেই চলে। এটি সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে নানা প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করেই সামনে অগ্রসর হতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে।

এর আগে মঙ্গলবার আল জাজিরা টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই মুহূর্তে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন মোহাম্মদ আল-বশির।

সিরিয়াকে নিয়ে বিদেশিদের ভয়ের কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন বাশার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি। গতকাল বুধবার মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান তিনি। দামেস্ক থেকে সাক্ষাৎকারটি নেন স্কাই নিউজের জেইন জাফার এবং সেলিন আল-খালদি। তাঁদের সঙ্গে আলাপকালে সিরিয়াকে পুনর্গঠনের কথা জানান জোলানি। তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের যুদ্ধ ও সংঘাতে সিরিয়ার মানুষ ক্লান্ত। নতুন করে তারা আর কোনো সংঘাত চায় না।

ইরানি মিলিশিয়া, হিজবুল্লাহ এবং বাশার সরকারের অপসারণ সিরিয়ার পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেও উল্লেখ করেন জোলানি। তিনি বলেন, ‘তাদের অনুপস্থিতিই সমাধান। বর্তমান পরিস্থিতিতে আতঙ্ক ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই।’

বাশার পতনের অভিযানে নিজ দলের যোদ্ধাদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন জোলানি। তিনি বলেন, তাঁরা কোনো বিদেশি সহায়তা বা হস্তক্ষেপ ছাড়াই সিরিয়ার দায়িত্ব নিয়েছে। বাশারের প্রতি রুশ ও ইরানি সমর্থনের দিকে ইঙ্গিত করে জোলানি বলেন, উপনিবেশবাদীরা সিরিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

এদিকে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নতুন সরকার কাঠামো গঠনে সহায়তা করতে নিজেদের আগ্রহের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এইচটিএসের প্রতি ওয়াশিংটনের অনুরোধ, তারা যেন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করে।

মার্কিন সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, বাইডেন প্রশাসন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করা বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে একাই দেশের সর্বময় ক্ষমতা দখল না করার অনুরোধ জানিয়েছে। এর বদলে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এইচটিএসের সঙ্গে আলোচনায় তুরস্কের সহায়তা নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কয়েক দিন ধরে চলা এই আলোচনার অংশ হিসেবে ওয়াশিংটন সিরিয়ার বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে সমন্বয় করছে। নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দলও আলোচনার প্রক্রিয়ায় যুক্ত রয়েছে।

ওদিকে ইরানের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তেহরান সিরিয়ার নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করেছে। তবে দেশটির আশঙ্কা, বাশার-পরবর্তী নতুন প্রশাসনে ইরানের প্রভাব কোণঠাসা হয়ে পড়লে দীর্ঘ মেয়াদে এটি দেশটির জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত