Ajker Patrika

লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯২

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

লেবানন জুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯২ জনে। গত সোমবার দেশটিতে থাকা হিজবুল্লাহ গেরিলাদের প্রায় ৩০০ অবস্থান লক্ষ্য করে চালানো এই হামলা চালানো হয়। নিহতদের মধ্যে ৩৫ জন শিশুও রয়েছে। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিবিসি এ তথ্য দিয়েছে। 

হিজবুল্লাহ সক্রিয় রয়েছে, এমন এলাকা থেকে লেবাননের বাসিন্দাদের সরে যেতে বলেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। নিরাপত্তার জন্য ১০ হাজারো বেশি মানুষ পালাতে বাধ্য হয়েছে। 

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লেবাননে প্রায় ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের দিন ছিল এটি। 

অন্যদিকে হিজবুল্লাহও ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা ২০০ এর বেশি রকেট হামলা চালিয়েছে। 

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যে ৪৯২ জন সোমবার ইসরায়েলের বিমান হামলায় মারা গেছেন, তার মধ্যে ৫৮ জন নারী এবং ৩৫ জন শিশু। আহত হয়েছেন এক হাজার ৬৪৫ জন। 

তবে আহত বা নিহতদের মধ্যে কতজন সাধারণ নাগরিক এবং কতজন হিজবুল্লাহ যোদ্ধা ছিল তা জানা যায়নি। 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু রেকর্ড করা বার্তায় বলেছেন, লেবাননের সাধারণ মানুষ যেন ইসরায়েলের পরামর্শ মেনে নিরাপদ জায়গায় চলে যান। তারা যেন এই সতর্কবার্তাকে গুরুত্ব দেন। 

এরপর দক্ষিণ লেবানন থেকে হাজার হাজার মানুষ ঘর ছেড়েছেন। দক্ষিণ লেবাননের বন্দর শহর সিডনের রাস্তা গাড়িতে ভর্তি। ২০০৬ সালের পর থেকে এ রকম দৃশ্য দেখা যায়নি। 

ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র হাগারি বলেছেন, হিজবুল্লাহকে ইসরায়েলের সীমান্ত থেকে দূরে সরাতে যা করার দরকার তা সেনা করবে। 

তিনি দাবি করেছেন, সোমবার বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে ইসরায়েল স্থলপথেও লেবাননে ঢুকবে। 

হামলার আগে ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র ডেনিয়েল হাগারি বলেছিলেন, তাঁদের বিমান লেবাননের বেকা উপত্যকায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। স্থল হামলার সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, ইসরায়েল লেবাননে ব্যাপক মাত্রায় বিমান হামলা শুরু করেছে। 

কয়েক দিন ধরেই ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ গেরিলাদের মধ্যে স্নায়ু যুদ্ধের পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। যোগাযোগের জন্য হিজবুল্লাহ সদস্যদের ব্যবহৃত পেজার ও ওয়াকিটকিগুলোর একযোগে বিস্ফোরণ ওই যুদ্ধেরই সর্বশেষ পরিস্থিতি ছিল। তবে সোমবার দক্ষিণ লেবাননে সরাসরি বিমান হামলা পরিচালনা করেছে ইসরায়েলের বাহিনী। ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে ৩০ টির মতো রকেট ছুড়ে এই হামলার জবাব দিয়েছে হিজবুল্লাহ যোদ্ধারাও। 

সোমবার হামলার আগে এক ভিডিওতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেন, ‘আমরা লেবাননে হামলা তীব্রতর করেছি। দক্ষিণ ইসরায়েলের বাসিন্দাদের নিরাপদে তাদের বাড়িঘরে পাঠানোর আগপর্যন্ত এই হামলা অব্যাহত থাকবে।’ 

লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘আমি চাই না লেবানন ‘‘আরেকটি গাজা’’ হয়ে উঠুক।’ 

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সম্মেলনের যোগদানের ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল বলেছেন, ‘এই উত্তেজনা অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং উদ্বেগজনক। আমরা প্রায় পুরোদস্তুর যুদ্ধের মধ্যে ধাবিত হচ্ছি।’ 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘এভাবে পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য কাজ করছে যাতে মানুষ নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে।’ 

অপরদিকে পেন্টাগন ঘোষণা করেছে যে, সতর্কতার কারণে তারা মধ্যপ্রাচ্যে ‘একটি ছোট সংখ্যক’ অতিরিক্ত সেনা পাঠাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত