Ajker Patrika

৯ জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ২ মাসের যুদ্ধবিরতি চায় হামাস

অনলাইন ডেস্ক
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত একটি এলাকা। ছবি: আনাদোলু
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত একটি এলাকা। ছবি: আনাদোলু

সাময়িক যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব এনেছে হামাস। গতকাল শনিবার নতুন করে আলোচনার পর গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন চুক্তির অধীনে আরও জিম্মি মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে হামাস। এই প্রস্তাব অনুসারে, গোষ্ঠীটি তাদের হাতে থাকা জিম্মিদের অর্ধেককে মুক্তি দেবে। বিনিময়ে গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে হবে। ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় নতুন করে বড় ধরনের হামলা শুরুর কয়েক ঘণ্টা পরেই এই আলোচনা শুরু হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে হামাস ৯ জন জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে। স্কাই নিউজ আরাবিয়ার এক প্রতিবেদনেও একই ধরনের প্রস্তাবের কথা বলা হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা জানান, নতুন চুক্তির প্রস্তাব অনুসারে, গাজায় প্রতিদিন ৪০০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি এবং গাজা থেকে চিকিৎসার জন্য রোগীদের সরিয়ে নেওয়ার কথাও রয়েছে। জানা গেছে, হামাসের এই প্রস্তাবের পর ইসরায়েল অবশিষ্ট সব জিম্মির জীবিত থাকার প্রমাণ ও বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে। যুদ্ধবিরতি আলোচনার এই নতুন দফা কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দোহায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় বিকেলে এটি শুরু হয়।

প্রস্তাবিত চুক্তি নিয়ে ইসরায়েল এখনো প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে আলোচনার আগে দেশটি বলেছিল, গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে না বা যুদ্ধের অবসানে কোনো প্রতিশ্রুতিও তারা দেবে না। বিবিসি জানিয়েছে, হামাসের প্রস্তাবে এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে না।

এর আগে, গতকাল শনিবারই ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ‘অপারেশন গিদিওনস চ্যারিয়ট’ নামে এক নতুন অভিযানের ঘোষণা দেয়। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গাজায় এটি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার ঘটনা। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে এই প্রতিবেদন লেখার কয়েক ঘণ্টা আগ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে গাজার উত্তর ও দক্ষিণের হাসপাতাল এবং শরণার্থীশিবিরের লোকজনও রয়েছে।

গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল হামলা পুনরায় শুরু করার পর থেকে গাজায় ৩ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। ইসরায়েলের সেই হামলা মাধ্যমে দুই মাসের এক ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি ভেঙে যায়। ত্রাণ ও অন্যান্য সহায়তা সংস্থাগুলো বলছে, গাজার ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ইসরায়েল ১০ সপ্তাহ ধরে খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণ সরবরাহে বাধা দিচ্ছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ মাসের শুরুতে গাজার বিস্তীর্ণ এলাকা দখল ও নিয়ন্ত্রণ, ফিলিস্তিনি জনসংখ্যাকে দক্ষিণাঞ্চলে ঠেলে দেওয়া এবং হামাসকে ‘ধ্বংস’ করার জন্য এক বড় সামরিক অভিযানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। গাজার ভেতর থেকে সাংবাদিক গাদা আল কুর্দ বিবিসির নিউজ আওয়ার প্রোগ্রামে বলেন, গাজার উত্তর ও পূর্বে ব্যাপক ‘বিমান হামলা, গোলাবর্ষণ, ড্রোন হামলা, গুলি ও এমনকি বিস্ফোরণ’ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটা ভয়াবহ ও ভয়ংকর।’

গাদা আল-কুর্দ জানান, খাবার দুষ্প্রাপ্য ও ব্যয়বহুল হওয়ায় তাঁর পরিবারই দিনে মাত্র একবার খাচ্ছে। তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার’ করার অভিযোগ তুলেছেন। সম্প্রতি জাতিসংঘের কর্মকর্তারাও একই অভিযোগ করেছেন। সহায়তা সংস্থাগুলো গাজার ২১ লাখ বাসিন্দার মধ্যে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করেছে। ইসরায়েলি অবরোধের মুখে অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা শিশুদের কঙ্কালসার ছবি ও বর্ণনা সামনে আসছে।

ইসরায়েল গাজায় নতুন করে হামলা শুরুর পর জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এবং ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, নতুন হামলা গাজার জনসংখ্যা ও অবশিষ্ট জিম্মিদের ‘ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করার’ ঝুঁকি তৈরি করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এবার প্রশাসনিক কাজে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত কুয়েট শিক্ষক সমিতির

বন্দর-করিডর আপনার এখতিয়ারে নেই, বিদেশি উপদেষ্টাকে বিদায় করুন: ইউনূসকে সালাহউদ্দিন

জামায়াতের কেউ ইমাম-মুয়াজ্জিন হতে পারবে না: আটঘরিয়ায় হাবিব

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প স্থবির

দায়িত্ব পেয়েই ‘অনিয়ম দুর্নীতিতে’ মাসুদ রানা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত