Ajker Patrika

সিরিয়ায় প্রতিরক্ষার ভার বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের হাতে, সংঘাত এড়াতে শারার চুক্তি

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image
সিরিয়ায় এইচটিএসের নেতৃত্বে পতন হয়েছে অর্ধশত বছরের আসাদ সরকারের। ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ায় হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে পতন হয়েছে ৫৪ বছরের আসাদ শাসনামালের। এবার দেশটিতে গঠন হচ্ছে নতুন সরকার। নিজেদের বিদ্রোহী অতীতকে সরিয়ে রেখে সিরিয়ার কার্যত নেতা আহমেদ আল-শারা সরকার গঠনে সমর্থন চাচ্ছেন সব বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। এরই অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার গোষ্ঠীগুলোর নেতাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছেন তিনি। এদের মধ্যে সংঘাত এড়াতে শারার এই উদ্যোগ।

আজ বুধবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, এ চুক্তি অনুযায়ী সব গোষ্ঠী ভেঙে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একত্রিত করা হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে মুরহাফ আবু কাসরাকে।

গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-বাশির বলেছিলেন, সাবেক বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং বাশার আল-আসাদের সেনাবাহিনী থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া কর্মকর্তাদের নিয়ে মন্ত্রণালয়কে পুনর্গঠন করা হবে।

এর আগে গত রোববার শারা জানান, রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের বাইরে কোনো অস্ত্র থাকতে দেওয়া হবে না।

সিরিয়ার ঐতিহাসিক জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে রয়েছে মুসলিম কুর্দি ও শিয়া সম্প্রদায়, যারা গৃহযুদ্ধ চলাকালে আশঙ্কা করেছিল, ভবিষ্যতে কোনো সুন্নি ইসলামী শাসন তাদের জীবনযাত্রার ওপর হুমকি হয়ে উঠতে পারে। এছাড়াও রয়েছে—সিরিয়াক, গ্রিক ও আর্মেনীয় অর্থোডক্স খ্রিস্টান এবং দ্রুজ সম্প্রদায়।

রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা থেকে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, শারার সঙ্গে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রধানরা বসে আছেন। তবে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার কুর্দি বাহিনীর কোনো প্রতিনিধি সেখানে ছিলেন না।

যদিও শারা জানান, কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য।

এর আগে গত সপ্তাহে হায়াত তাহরির আল-শামের সামরিক প্রধান এএফপিকে বলেন, কুর্দি নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোকে নতুন নেতৃত্বের অধীনে একীভূত করা হবে এবং ‘সিরিয়াকে বিভক্ত করা হবে না’।

পশ্চিমা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে শারা জানান, তাঁর নেতৃত্বাধীন ইসলামী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) তাদের প্রাক্তন শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবে না বা কোনো ধর্মীয় সংখ্যালঘুকে দমন করবে না।

তিনি পশ্চিমা কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করেন, তাঁর প্রধান লক্ষ্য হলো পুনর্গঠন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন করা এবং তিনি কোনো নতুন সংঘাতে জড়াতে আগ্রহী নন।

একসময় এইচটিএস সহিংসতা এবং শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তারা আরও বাস্তবধর্মী ও নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে। এইচটিএস এখনো জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের কাছে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত। তবে দেশগুলোর সঙ্গে ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক সম্পর্ক বলে দিচ্ছে শিগগিরই পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে। গত শুক্রবার বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেওয়া এইচটিএস নেতা আহমেদ আল-শারার মাথার দাম হিসেবে এক কোটি ডলারের পুরস্কারের ঘোষণাটি বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

গত ৮ ডিসেম্বর দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেয় সিরীয় বিদ্রোহীরা। তারপরই ১৩ বছরের শাসনামল ফেলে দেশত্যাগ করে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন বাশার আল-আসাদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত