Ajker Patrika

ইরানের ৯০ শতাংশ তেল রপ্তানি ঠেকিয়ে দিতে চান ট্রাম্প

ইরানের তেল খাতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের কঠিন পদক্ষেপ। ছবি: এআই দিয়ে তৈরি
ইরানের তেল খাতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের কঠিন পদক্ষেপ। ছবি: এআই দিয়ে তৈরি

ইরানের তেল রপ্তানির পরিমাণ কমিয়ে ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা আঁটছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘সর্বাধিক চাপ’ প্রয়োগ করে ইরানের তেল বাণিজ্যের এই পরিণতি করতে চান তিনি। গতকাল শুক্রবার ফক্স বিজনেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘প্রতিদিন ইরান ১৫ থেকে ১৬ লাখ ব্যারেল তেল রপ্তানি করে। এটি আমরা ১ লাখে নামানোর লক্ষ্যে কাজ করছি।’

ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে এই লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন। গত সপ্তাহে ট্রাম্প একটি স্মারকের মাধ্যমে ট্রেজারি বিভাগকে ইরানকে পরমাণু খাতে এগিয়ে যাওয়া রুখতে ‘সর্বাধিক অর্থনৈতিক চাপ’ প্রয়োগের নির্দেশ দেন। ট্রাম্পে প্রথম মেয়াদে এমন নির্দেশের ফলে ইরানের তেল রপ্তানি ২০১৭ সালে প্রায় ৩০ লাখ ব্যারেল থেকে ২০১৯ সালে ৪ লাখ ব্যারেলে নেমে এসেছিল।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৫ সালের যৌথ সমন্বিত কর্ম পরিকল্পনা (জেসিপিওএ) থেকে বেরিয়ে আসে ওয়াশিংটন। তারপর শুরু হয় তাদের সর্বাধিক চাপ অভিযান। ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে একটি চুক্তি করা হয়। ইরানের পারমাণবিক প্রযুক্তি উন্নয়ন ঠেকাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন ট্রাম্প।

ট্রেজারি সেক্রেটারি বেসেন্ট বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ওয়াশিংটন ইরানের ওপর ‘সর্বাধিক অর্থনৈতিক চাপ’ প্রয়োগ করতে সক্ষম। যদি আমরা তাদের ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের অবস্থানে ফিরিয়ে নিতে পারে তাহলে তারা গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে বলে আমি মনে করি।

ইরানের উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং বিশাল আকারের বাজেট ঘাটতির কথা উল্লেখ করে বেসেন্ট বলেন, ‘তাদের অর্থনীতি এখন বেশ ভঙ্গুর।’

তিনি আরও দাবি করেন, ইরানের তেল রপ্তানি থেকে প্রাপ্ত আয় ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ অর্থায়নে ব্যবহার করা হচ্ছে।

গত সপ্তাহে ট্রাম্পের ঘোষণার পরবর্তী দিনগুলোতে তিনটি ট্যাংকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ট্রেজারি বিভাগ। বেসেন্ট বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশনা পেলে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ রাশিয়ান শক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরও বাড়াবে।

ট্রাম্পের আদেশে বলা হয়, স্টেট ডিপার্টমেন্ট বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞার অব্যাহতি পরিবর্তন বা বাতিল করবে এবং ট্রেজারির সঙ্গে সমন্বয় করে সর্বাধিক চাপ অভিযানে অংশ নেবে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তেল রপ্তানি প্রায় শূন্যের পর্যায়ে নামিয়ে আনতে পারবে না, যদি না তারা মধ্যস্থতাকারী এবং চীনের ক্রেতাদের লক্ষ্য করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

এ প্রসঙ্গে বেসেন্ট বলেন, ‘চীন, সম্ভবত ভারতও নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত ইরানি তেল কিনছে এবং তা মেনে নেওয়া হবে না।’

ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করার আশা করছেন ট্রাম্প। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ট্রাম্পের সর্বাধিক চাপ নীতির অধীনে এ সংক্রান্ত আলোচনা করা সম্ভব নয়।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলেন, ‘আলোচনা দুর্বল অবস্থান থেকে পরিচালিত হতে পারে না, কারণ এটি আর আলোচনা হিসেবে গণ্য হবে না, বরং এটি এক ধরনের আত্মসমর্পণ হবে। আমরা কখনো এভাবে আলোচনা টেবিলে বসি না।’

বৈশ্বিক অর্থনীতি বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইকোনমিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি রিসার্চের (সিইআইসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ইরানের অপরিশোধিত তেল উৎপাদন দিনপ্রতি ৩২ লাখ ৮০ হাজার মিলিয়ন ব্যারেল ছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ওপেকের স্বেচ্ছায় উৎপাদন কমানোর পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধিক চাপ অভিযানের দ্বারা খুব বেশি প্রভাবিত হবে না। এছাড়া, বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়া প্রায় পাঁচ লাখ ব্যারেল তেল সংরক্ষণের পর্যাপ্ত সক্ষমতা রয়েছে জোটের কাছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাশিয়ার হামলায় বিদ্যুৎবিহীন ইউক্রেনের ১০ লাখ পরিবার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ওডেসা শহরের বর্তমান চিত্র। ছবি: ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা বিভাগ
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ওডেসা শহরের বর্তমান চিত্র। ছবি: ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা বিভাগ

রাতভর রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের বৈদ্যুতিক অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দেশটির অন্তত ১০ লাখ পরিবার বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর ক্লাইমেঙ্কোর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, রাতভর চালানো এসব হামলায় দেশের পাঁচটি অঞ্চল আক্রান্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আগুন নেভানো এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো রাশিয়ার হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে। তবে শীতকাল ঘনিয়ে আসায় সাম্প্রতিক সময়ে এসব হামলার মাত্রা আরও বেড়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ বন্ধের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে জার্মানি সফরে যাচ্ছেন। সেখানে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করবেন। বার্লিনে প্রস্তাবিত শান্তি চুক্তির সর্বশেষ খসড়া নিয়েই মূলত আলোচনা হবে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, রাতভর হামলায় রাশিয়া ৪৫০টির বেশি ড্রোন ও ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লাইমেঙ্কো জানান, হামলার শিকার অঞ্চলগুলো হলো—দনিপ্রোপেত্রোভস্ক, কিরোভোহরাদ, মাইকোলাইভ, ওডেসা ও চেরনিহিভ।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করছে, এসব হামলায় তারা কিনঝাল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মাঝপথে দিক পরিবর্তন করতে পারে, ফলে এগুলো শনাক্ত করা কঠিন।

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংযোগ সারা রাত বিচ্ছিন্ন ছিল। হামলার কারণে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে আবার বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। রুশ নিয়ন্ত্রণাধীন এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বর্তমানে চালু নেই, তবে রিঅ্যাক্টর ঠান্ডা রাখতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রয়োজন।

এদিকে রাশিয়ার সারাতোভ অঞ্চলে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় একটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দুজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর রোমান বুসারগিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

থাইল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করল কম্বোডিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া মধ্যকার পোইপেট আন্তর্জাতিক সীমান্ত চেকপয়েন্ট। ছবি: বিসিবি
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া মধ্যকার পোইপেট আন্তর্জাতিক সীমান্ত চেকপয়েন্ট। ছবি: বিসিবি

চলমান সংঘর্ষের জেরে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সব সীমান্তপথ বন্ধ করে দিয়েছে কম্বোডিয়া। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সীমান্ত ক্রসিংগুলো বন্ধ থাকবে।

এর আগে গতকাল শুক্রবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু তাঁর এমন দাবির কয়েক ঘণ্টা পর শনিবার ভোর থেকে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে।

শুক্রবার রাতে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন, দুই দেশ ‘আজ সন্ধ্যা থেকে সংঘর্ষ বন্ধ করতে’ এবং অক্টোবরে তাঁর সামনে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে ফিরে যেতে সম্মত হয়েছে। তিনি দাবি করেন, ‘উভয় দেশ শান্তির জন্য প্রস্তুত।’

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলার পরও থাইল্যান্ড বা কম্বোডিয়া কেউই অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করেনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুলের বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে—তিনি (থাই প্রধানমন্ত্রী) ট্রাম্পকে বলেছেন, কম্বোডিয়া তাদের সব সেো প্রত্যাহার করলে এবং সীমান্ত থেকে ভূমি মাইন অপসারণ করলেই কেবল যুদ্ধবিরতি সম্ভব।

তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘আমাদের দেশের ক্ষতি ও দেশের মানুষের ওপর হুমকি অব্যাহত রয়েছে। আমরা যত দিন পর্যন্ত নিরাপদ বোধ করছি না, তত দিন থাইল্যান্ড সামরিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। আমি এই কথাটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই। আজ সকালে আমাদের সামরিক পদক্ষেপই তার প্রমাণ।’

অন্যদিকে কম্বোডিয়ার সরকার জানিয়েছে, তাদের দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য তাদের অবশ্যই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

এতে স্পষ্ট হয়, ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির তোয়াক্কা না করে আজ শনিবারও সীমান্তে বোমা ও ভারী হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া।

কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, থাই যুদ্ধবিমান সীমান্তের আশপাশের হোটেল ও একটি সেতুতে বোমা হামলা করেছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ড জানিয়েছে, কম্বোডিয়ার রকেট হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।

কম্বোডিয়া আরও জানিয়েছে, থাই সামরিক বাহিনী দুইটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে সাতটি বোমা ফেলেছে। তারা এখনো বোমা হামলা বন্ধ করেনি।

নতুন করে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছে এবং উভয় পক্ষের প্রায় ৭ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এই দুই দেশ তাদের ৮০০ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত নিয়ে বিরোধে লিপ্ত। ১৯০৭ সালে ফ্রান্স যখন কম্বোডিয়ার ঔপনিবেশিক শাসক ছিল, তখন ফরাসি মানচিত্রকারদের আঁকা সীমান্তরেখা থেকেই এই বিরোধের সূত্রপাত।

গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের তীব্র সংঘর্ষের পর ট্রাম্প ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের মধ্যস্থতায় দেশ দুটি একটি ‘তাৎক্ষণিক ও শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছিল। কিন্তু এরপর উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করতে থাকে। থাইল্যান্ড অভিযোগ করেছে, কম্বোডিয়ার সেনারা ভূমি মাইন স্থাপন করছে, যার ফলে সাতজন থাই সৈন্য হাত-পা হারিয়েছে। কম্বোডিয়া অবশ্য দাবি করেছে, মাইনগুলো ১৯৮০-এর দশকের গৃহযুদ্ধের সময়কার।

এদিকে, থাইল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে যে তারা যেন এই সংঘাতকে বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত না করে, যেমনটা গত জুলাইয়ে ট্যারিফ ব্যবহারের মাধ্যমে করা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘর্ষ চলছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘাতে পুরসাত প্রদেশে বিস্ফোরণের পর ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। ছবি: এএফপি
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘাতে পুরসাত প্রদেশে বিস্ফোরণের পর ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করছেন, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু তাঁর এমন দাবির কয়েক ঘণ্টা পর শনিবার ভোর থেকে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াই শুরু রয়েছে।

এর আগে শুক্রবার রাতে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন, দুই দেশ ‘আজ সন্ধ্যা থেকে সংঘর্ষ বন্ধ করতে’ এবং অক্টোবরে তাঁর সামনে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে ফিরে যেতে সম্মত হয়েছে। তিনি দাবি করেন, ‘উভয় দেশ শান্তির জন্য প্রস্তুত।’

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলার পরও থাইল্যান্ড বা কম্বোডিয়া কেউই অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করেনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুলের বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে—তিনি (থাই প্রধানমন্ত্রী) ট্রাম্পকে বলেছেন, কম্বোডিয়া তাদের সব সেনা প্রত্যাহার করলে এবং সীমান্ত থেকে ভূমি মাইন অপসারণ করলেই কেবল যুদ্ধবিরতি সম্ভব।

তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘আমাদের দেশের ক্ষতি ও দেশের মানুষের ওপর হুমকি অব্যাহত রয়েছে। আমরা যত দিন পর্যন্ত নিরাপদ বোধ করছি না, তত দিন থাইল্যান্ড সামরিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। আমি এই কথাটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই। আজ সকালে আমাদের সামরিক পদক্ষেপই তার প্রমাণ।’

অন্যদিকে কম্বোডিয়ার সরকার জানিয়েছে, তাদের দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য তাদের অবশ্যই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

এতে স্পষ্ট হয়, ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির তোয়াক্কা না করে আজ শনিবারও সীমান্তে বোমা ও ভারী হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া।

কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, থাই যুদ্ধবিমান সীমান্তের আশপাশের হোটেল ও একটি সেতুতে বোমা হামলা করেছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ড জানিয়েছে, কম্বোডিয়ার রকেট হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।

কম্বোডিয়া আরও জানিয়েছে, থাই সামরিক বাহিনী দুটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে সাতটি বোমা ফেলেছে। তারা এখনো বোমা হামলা বন্ধ করেনি।

নতুন করে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছে এবং উভয় পক্ষের প্রায় সাত লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এই দুই দেশ তাদের ৮০০ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত নিয়ে বিরোধে লিপ্ত। ১৯০৭ সালে ফ্রান্স যখন কম্বোডিয়ার ঔপনিবেশিক শাসক ছিল, তখন ফরাসি মানচিত্রকারদের আঁকা সীমান্তরেখা থেকেই এই বিরোধের সূত্রপাত।

গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের তীব্র সংঘর্ষের পর ট্রাম্প ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের মধ্যস্থতায় দেশ দুটি একটি ‘তাৎক্ষণিক ও শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছিল। কিন্তু এরপর উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করতে থাকে। থাইল্যান্ড অভিযোগ করেছে, কম্বোডিয়ার সৈন্যরা ভূমি মাইন স্থাপন করছে, যার ফলে সাতজন থাই সৈন্য হাত-পা হারিয়েছে। কম্বোডিয়া অবশ্য দাবি করেছে, মাইনগুলো ১৯৮০-এর দশকের গৃহযুদ্ধের সময়কার।

এদিকে, থাইল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে যে তারা যেন এই সংঘাতকে বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত না করে, যেমনটা গত জুলাইয়ে ট্যারিফ ব্যবহারের মাধ্যমে করা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৫ ফুট উচ্চতার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে ১৮০ অভিবাসী, চাঞ্চল্যকর ভিডিও প্রকাশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৪০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বেলারুশ সীমান্তঘেঁষা বনে গোপন এক সুড়ঙ্গ দিয়ে ১৮০ জনের বেশি অভিবাসী পোল্যান্ডে প্রবেশ করেছেন বলে জানিয়েছেন সীমান্তরক্ষীরা।

গত বৃহস্পতিবার ওই পথটির সন্ধান পাওয়ার পর প্রায় ১৩০ জনকে পোল্যান্ডে আটক করা হয়। তবে বাকিরা এখনো পলাতক রয়েছে বলে গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে পোলিশ বর্ডার গার্ড।

এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, সুড়ঙ্গটির একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন সীমান্তরক্ষীরা। এতে দেখা যায়, গাছের শিকড় ও মাটি কেটে তৈরি করা সুড়ঙ্গটি কাঠের খুঁটি ও ধাতব রড দিয়ে ঠেস দেওয়া। সুড়ঙ্গটির উচ্চতা ১ দশমিক ৫ মিটার (প্রায় ৫ ফুট)। ফলে বেশির ভাগ মানুষকে নিচু হয়ে এর ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র পোল্যান্ড ২০২১ সাল থেকে বেলারুশ সীমান্তে অভিবাসী সংকট মোকাবিলা করছে।

পোল্যান্ডের অভিযোগ, মূলত মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার মানুষদের সীমান্ত পার হতে উৎসাহিত করার মাধ্যমে দেশটির পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে বেলারুশ ও তাদের মিত্র মস্কো।

তবে বেলারুশ ও রাশিয়া বারবারই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

পোলিশ বর্ডার গার্ড জানায়, চলতি বছরে পশ্চিম পোদলাস্কি অঞ্চলে আবিষ্কৃত এটি চতুর্থ সুড়ঙ্গ। এ ছাড়া অভিবাসীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য আসা ৬৯ বছর বয়সী এক পোলিশ নাগরিক এবং ৪৯ বছর বয়সী এক লিথুয়ানিয়ান নাগরিককেও আটক করেছে সীমান্তরক্ষীরা।

বিবৃতিতে বলা হয়, বনের ভেতর সুড়ঙ্গটির লুকানো প্রবেশপথটি বেলারুশ অংশে সীমান্ত প্রাচীর থেকে প্রায় ৫০ মিটার দূরে অবস্থিত। অন্যদিকে এর বহির্গমন পথটি পোল্যান্ডের সীমানা প্রাচীর থেকে প্রায় ১০ মিটার দূরে পাওয়া গেছে।

কতজন মানুষ এই সুড়ঙ্গ দিয়ে পার হয়েছে, তা নিশ্চিত করতে কর্মকর্তারা ইলেকট্রনিক সিস্টেম ব্যবহার করেন। নিখোঁজ অভিবাসীদের খুঁজে বের করতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ তল্লাশিতে যোগ দিয়েছে বলেও জানানো হয়।

পোল্যান্ড ২০২২ সালে তাদের ১৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করেছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত