Ajker Patrika

সবচেয়ে ‘শক্তিশালী বোমা’ যুক্তরাষ্ট্রের, তাতেও ইরানের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংসে সন্দিহান বিশ্লেষকেরা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৭ জুন ২০২৫, ১৬: ৫২
যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান থেকে একটি বাংকার বাস্টার ফেলা হচ্ছে। ছবি: মার্কিন বিমানবাহিনী
যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান থেকে একটি বাংকার বাস্টার ফেলা হচ্ছে। ছবি: মার্কিন বিমানবাহিনী

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ভূ-স্তরভেদী বোমার মালিক যুক্তরাষ্ট্র। এই বোমার নাম জিবিইউ-৫৭ /বি। এই বোমা দিয়ে মাটির প্রায় ২০০ ফুট পর্যন্ত গভীরের যেকোনো স্থাপনা ধ্বংস করা যায়। কিন্তু এই শক্তিশালী বোমাটিও ইরানের ফোরদো পারমাণবিক গবেষণাকেন্দ্র ধ্বংস করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে বিশ্লেষকদের।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ইয়েখিয়েল লেইতার বলেছেন, ইরানের মাটির অনেক গভীরে অবস্থিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করার সক্ষমতা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর কাছেই আছে। তবে বিশ্লেষকেরা সতর্ক করে বলেছেন, ওই বোমা দিয়েও যে কাজ হবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

ইরানের কৌম শহরের উত্তরে পাহাড়ের গভীরে ফোরদো প্ল্যান্টটি অবস্থিত। এর সুনির্দিষ্ট গভীরতা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি, তবে কিছু হিসাবে এর গভীরতা ৮০ থেকে ৯০ মিটার বলে অনুমান করা হয়।

রাষ্ট্রদূত লেইটার বলেন, ‘আকাশ থেকে ফোরদোকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার মতো বোমা বিশ্বের শুধু একটি দেশের কাছেই আছে, তা হলো যুক্তরাষ্ট্র।’ লেইটার যে বোমার কথা বলছেন, তা হলো জিবিইউ-৫৭ /বি, যা ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর নামেও পরিচিত। ‘বাংকার বাস্টার’ নামেও পরিচিত এই বোমা ৩০ হাজার পাউন্ডের একটি জিপিএস নিয়ন্ত্রিত যুদ্ধাস্ত্র। এতে ৫ হাজার ৭৪০ পাউন্ড উচ্চ বিস্ফোরকের ওয়ারহেড রয়েছে। এটি এতটাই ভারী যে, কেবল মার্কিন বিমানবাহিনীর বি-২ বোমারু বিমান থেকেই এটি নিক্ষেপ করা যায়।

মার্কিন সামরিক বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ‘এর ওয়ারহেডের আবরণ বিশেষ উচ্চ কার্যকারিতাসম্পন্ন ইস্পাত সংকর দিয়ে তৈরি’, যা এটিকে মাটির গভীরে প্রবেশ করে সুরক্ষিত বাংকার ও সুড়ঙ্গ ধ্বংস করতে সক্ষম করে তোলে।

যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর বা এমওপি বোমা। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর বা এমওপি বোমা। ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটেনের থিংক ট্যাংক রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের (রুসি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিবিইউ-৫৭ ৬১ মিটার (২০০ ফুট) গভীর পর্যন্ত প্রবেশ করতে পারে। প্রতিবেদনের হিসাব অনুযায়ী, এটি ইরানের ফোরদো স্থাপনার চেয়ে প্রায় ২০ মিটার কম।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘ফোরদো স্থাপনায় আঘাত হানতে জিবিইউ-৫৭ /বি-এর একই লক্ষ্যবস্তুতে একাধিক আঘাতের প্রয়োজন হতে পারে।’ অন্য বিশ্লেষকেরাও এতে একমত পোষণ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ফোরদোতে আঘাত হানার চেষ্টা করে, তবে সম্ভবত একটি বোমা দিয়ে তা সম্ভব হবে না।

মার্কিন বিমানবাহিনীর সাবেক কর্নেল ও সিএনএনের সামরিক বিশ্লেষক সেড্রিক লেইটন বলেন, ‘ফোরদোতে বারবার হামলা চালাতে হবে।’

গ্রিফিথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের ফেলো এবং রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান বিমানবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা পিটার লেইটন বলেন, ‘বারবার হামলা হয়তো কাজ করতে পারে, তবে নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, আঘাত হানলেও ‘সফলতার কোনো নিশ্চয়তা নেই বা ফোরদোকে ধ্বংস করা গেছে তা প্রমাণ করারও কোনো উপায় থাকবে না।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নেতানিয়াহু বাংকারে লুকিয়ে, ট্রাম্পের একটি ফোনকলই যথেষ্ট: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মেয়াদের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় চালুর পরিকল্পনা সরকারের

ঐকমত্য কমিশনের মঙ্গলবারের সংলাপ ‘বয়কট’ করল জামায়াত

বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধে আইন পরিবর্তন করায় জাতিসংঘের উদ্বেগ

ইরানের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস করা সম্ভব নয়, স্বীকার করল ইসরায়েল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত