Ajker Patrika

ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি স্থগিত করল হামাস

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০: ৪২
যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর গাজায় ফিরতে শুরু করেছে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা। ছবি: এএফপি
যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর গাজায় ফিরতে শুরু করেছে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা। ছবি: এএফপি

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত’ জিম্মিদের মুক্তি স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) তারা এই ঘোষণা দিয়েছে।

হামাসের সামরিক শাখার মুখপাত্র আবু উবাইদা বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় ফিরতে বাধা দিয়ে, গোলাবর্ষণ ও গুলি চালিয়ে এবং গাজায় ত্রাণ আসা বন্ধ করার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন করেছে।’

একদিকে, ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা সরকারের প্রতি যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছেন। অন্যদিকে, গাজার বাসিন্দারা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নিজেদের জীবন পুনর্গঠনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনই এক সময়ে হামাসের এই অপ্রত্যাশিত ঘোষণা এল, যখন যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে।

যদিও গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে। তবে এর মাঝেও ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে গাজায় মানবিক সহায়তা সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে।

হামাস জানিয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী আগামী শনিবার যে বন্দী বিনিময়ের কথা ছিল, তা স্থগিত করা হল। ইসরায়েল যত দিন পর্যন্ত ঠিকভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি মানবে না এবং সাম্প্রতিক ক্ষয়ক্ষতির ক্ষতিপূরণ দেবে না তত দিন যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্থগিত থাকবে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানান, ‘হামাসের এই ঘোষণা যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন। তিনি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং ইসরায়েলি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।

চুক্তির প্রথম ৪২ দিনে ৩৩ জন জিম্মির মুক্তির কথা ছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত ১৬ জন ইসরায়েলি ও ৫ জন থাই নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে হামাস।

এর বিনিময়ে, ইসরায়েল শত শত ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেন প্রাণদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দী থেকে শুরু করে যুদ্ধের সময় গ্রেপ্তার হওয়া ফিলিস্তিনি, যাদের অনেককে অভিযোগ ছাড়াই আটকে রাখা হয়েছিল।

হামাসের অভিযোগ, ইসরায়েল গাজায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সরবরাহ প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। যা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল। তবে ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

অন্যদিকে, ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে তারা চুক্তির শর্ত অনুযায়ী নির্দিষ্ট ক্রমানুসারে জিম্মিদের মুক্তি দিচ্ছে না এবং রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তরের আগে জনসমক্ষে অপমানজনক পরিস্থিতি তৈরি করছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর জানিয়েছে, কাতারে চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা থেকে একটি ইসরায়েলি প্রতিনিধি দল দেশে ফিরে এসেছে। তবে কেন তারা ফিরে এসেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

ফিলিস্তিনের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুই পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাসের কারণে অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘হামাস মনে করছে, চুক্তির প্রথম ধাপ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ইসরায়েল মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে যে শর্ত ছিল তা পূরণ করেনি।’

ফিলিস্তিনের আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘চুক্তির প্রথম ধাপে মানবিক সহায়তার বিষয়টি কার্যকর না হওয়ায় হামাস উদ্বিগ্ন। তারা মনে করছে, ইসরায়েল প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না।’

এদিকে, শনিবার মুক্তি পাওয়া তিন ইসরায়েলি জিম্মি— ওহাদ বেন আমি, ইলি শারাবি ও ওর লেভির শারীরিক অবস্থা দেখে ইসরায়েলিদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত