Ajker Patrika

সৌদি আরবে তেল-গ্যাসের নতুন সাতটি খনি আবিষ্কার 

আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৪, ১৫: ৫১
সৌদি আরবে তেল-গ্যাসের নতুন সাতটি খনি আবিষ্কার 

সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ ও রাব আল-খালি মরুভূমিতে সাতটি তেল ও গ্যাসের মজুত আবিষ্কারের কথা জানিয়েছেন দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী। সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে সৌদি সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ। 

সৌদি আরবের জ্বালানিমন্ত্রী আবদুল আজিজ বিন সালমান বলেছেন, সৌদি আরবের তেল কোম্পানি সৌদি আরামকো দুটি অপ্রচলিত তেলক্ষেত্র, একটি তেলের খনি, দুটি প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র ও দুটি প্রাকৃতিক গ্যাসের খনি আবিষ্কার করেছে। 

নতুন খোঁজ পাওয়া এই সাত মজুতের মধ্যে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে দুটি অপ্রচলিত তেলক্ষেত্র ও একটি খনি এবং রাব আল-খালি মরুভূমিতে দুটি প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র ও দুটি খনি আবিষ্কার করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে আবিষ্কৃত লাদাম তেলকূপের পাশেই অবস্থিত লাদাম-২ নামের কূপ থেকে খুব হালকা ‘আরব গ্রেডের’ তেল পাওয়া যাবে এবং প্রতিদিন ৫ হাজার ১০০ ব্যারেল হারে তেল উত্তোলন করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে প্রতিদিন প্রায় ৪৯ লাখ ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে। 

এ ছাড়া, পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের আল-ফারুক তেলক্ষেত্রের আল-ফারুক-৪ কূপের পাশেই আরেকটি তেল খনি পাওয়া গেছে। এখানে গ্যাসের একটি মজুত পাওয়া গেছে। এর বাইরে পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে উনাইজাহ বি/সি নামে একটি গ্যাসের মজুত পাওয়া গেছে, যা অঞ্চলটির ‘মাজালিজ’ তেলক্ষেত্রে অবস্থিত। 

নতুন আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্র বা খনিগুলোর মধ্যে একটি রাব আল-খালি মরুর আল-জাহাক কূপের কাছাকাছি অবস্থিত। একই অঞ্চলের আল-কাতুফ কূপের কাছেও আরেকটি গ্যাসক্ষেত্রের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। অপর গ্যাস খনিটি হলো হানিফা। এটিও রাব আল-খালিতেই অবস্থিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববাজারে সোনা বিক্রির হিড়িক, ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন

নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদল তাঁর তত্ত্বাবধানেই, যোগ্যদেরকে ডিসি নিয়োগ— বিএনপিকে প্রধান উপদেষ্টা

৫ বছরের জন্য কারাগারে গেলেন সারকোজি, হাত ধরে এগিয়ে দিলেন স্ত্রী

গাজার যুদ্ধবিরতি ভেঙে যেতে পারে—আশঙ্কা ট্রাম্প প্রশাসনের

‘কল রেকর্ড ক্রস চেক করালে ভালো হতো’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিঙ্গাপুরে ফিলিস্তিনপন্থী মিছিল করে গ্রেপ্তার, বেকসুর খালাস পেলেন ভাইরাল ৩ তরুণী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ৩৪
(বাঁ থেকে) সিতি আমিরাহ মোহাম্মদ আসরোরি, কোকিলা আন্নামালাই এবং মোসাম্মদ সাবিকুন নাহার। ছবি: কোকিলা আন্নামালাই
(বাঁ থেকে) সিতি আমিরাহ মোহাম্মদ আসরোরি, কোকিলা আন্নামালাই এবং মোসাম্মদ সাবিকুন নাহার। ছবি: কোকিলা আন্নামালাই

ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় পর্যন্ত পদযাত্রার আয়োজন করেছিলেন তিন তরুণী। তবে বেআইনি তৎপরতার অভিযোগে তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার তিনজনকেই বেকসুর খালাস দিয়েছেন সিঙ্গাপুরের একটি আদালত। ‘অবৈধ মিছিল’ আয়োজনের জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। বিচারক রায়ে বলেছেন, তাঁদের কর্মকাণ্ড অভিযোগের সম্পূর্ণ ধারা পূরণ করেনি।

সামাজিক সংগঠক মোসাম্মদ সাবিকুন নাহার, কনটেন্ট ক্রিয়েটর সিতি আমিরাহ মোহাম্মদ আসরোরি এবং কোকিলা আন্নামালাই—এই তিনজনের বিরুদ্ধে গত ফেব্রুয়ারিতে ইস্তানার (প্রেসিডেন্টের কার্যালয়) আশপাশে পুলিশের অনুমতি ছাড়া একটি পদযাত্রা আয়োজনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। সেই পদযাত্রায় প্রায় ৭০ জন মানুষ অংশ নেন এবং তাঁরা ফিলিস্তিনি প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে তরমুজের মতো রং করা ছাতা বহন করেন।

আদালত রায়ে বলেছেন, যদিও নারীরা পদযাত্রাটি আয়োজন করেছিলেন, তবে তাঁরা ‘জানতেন না’ যে ইস্তানার চারপাশের রাস্তাটি একটি সংরক্ষিত এলাকা। বিচারক উল্লেখ করেন, তাঁরা একটি সাধারণ ফুটপাত ব্যবহার করেছিলেন এবং সেখানে কোনো নিষেধাজ্ঞার চিহ্ন ছিল না। বিচারক মন্তব্য করেন, ‘প্রমাণ থেকে স্পষ্ট, তাঁরা তিনজনই আইন ভাঙা থেকে নিজেদের বিরত রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছিলেন।’

দোষী সাব্যস্ত হলে এই তিন তরুণীর প্রত্যেকের ১০ হাজার সিঙ্গাপুরি ডলার পর্যন্ত জরিমানা বা ছয় মাসের কারাদণ্ড হতে পারত।

আদালতের রায়ে মুক্তি পাওয়ার পর সমর্থকদের সঙ্গে তিন তরুণী। ছবি: কোকিলা আন্নামালাই
আদালতের রায়ে মুক্তি পাওয়ার পর সমর্থকদের সঙ্গে তিন তরুণী। ছবি: কোকিলা আন্নামালাই

খালাস পাওয়ার পর অধিকারকর্মী কোকিলা আন্নামালাই বিবিসিকে জানিয়েছেন, এই অপ্রত্যাশিত রায় সিঙ্গাপুরের অধিকারকর্মীদের মধ্যে ‘নতুন শক্তি এবং আশা’ জাগিয়ে তুলবে। তিনি বলেন, তাঁরা সাজার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলেন এবং খালাস পাওয়াটা ‘আশ্চর্যজনক’। তিনি আরও যোগ করেন, ‘প্রথমত, আমাদের অভিযুক্তই করা উচিত ছিল না।’

এ মামলাটি সিঙ্গাপুরে ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। আদালতে শুনানিতে ফিলিস্তিনি পতাকার রঙে পোশাক পরে এবং কেফিয়াহ স্কার্ফ পরে এই তিন তরুণীর উপস্থিতি অনলাইন জগতে ভাইরাল হয়েছিল।

সিঙ্গাপুরে জনসমাবেশের বিষয়ে কঠোর নিয়ম রয়েছে এবং কোনো কারণ প্রচারের জন্য পুলিশি অনুমতি বাধ্যতামূলক। কর্তৃপক্ষ কার্যকরভাবে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ-সম্পর্কিত সব জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। কারণ, তাদের মতে, এই ধরনের ঘটনা ‘জনশৃঙ্খলার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে’।

যদিও সরকার দাবি করে, এই নিয়মগুলো দেশে শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয়। সমালোচকেরা মনে করেন, এগুলো বাক্‌স্বাধীনতা দমন করারই কৌশল।

এদিকে সিঙ্গাপুরের প্রসিকিউটরিয়াল অফিস জানিয়েছে, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে। পুলিশ ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ-সম্পর্কিত অন্যান্য অফলাইন এবং অনলাইন ইভেন্ট নিয়েও তদন্ত শুরু করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববাজারে সোনা বিক্রির হিড়িক, ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন

নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদল তাঁর তত্ত্বাবধানেই, যোগ্যদেরকে ডিসি নিয়োগ— বিএনপিকে প্রধান উপদেষ্টা

৫ বছরের জন্য কারাগারে গেলেন সারকোজি, হাত ধরে এগিয়ে দিলেন স্ত্রী

গাজার যুদ্ধবিরতি ভেঙে যেতে পারে—আশঙ্কা ট্রাম্প প্রশাসনের

‘কল রেকর্ড ক্রস চেক করালে ভালো হতো’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দীর্ঘ বিরতির পর একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল কিমের কোরিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৪১
কয়েক মাসের বিরতির পর আবারও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। ছবি: সংগৃহীত
কয়েক মাসের বিরতির পর আবারও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। ছবি: সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়া তাদের পূর্ব উপকূলের জলসীমায় একাধিক স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী। বিগত কয়েক মাসের মধ্যে এটাই উত্তর কোরিয়ার প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ। আজ বুধবার সকালে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছোড়া হয়। খবর আল জাজিরার।

এই ক্ষেপণাস্ত্র এমন এক সময়ে ছোড়া হলো, যার এক সপ্তাহ পরই দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়োংজু শহরে শুরু হতে যাচ্ছে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলন। সেখানে যোগ দেবেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ বিশ্বের শীর্ষ নেতারা।

দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর বরাতে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, ‘আমরা কয়েকটি বস্তু শনাক্ত করেছি, যা স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বলে ধারণা করা হচ্ছে। এগুলো পূর্ব সাগর (জাপান সাগর নামেও পরিচিত) অভিমুখে নিক্ষেপ করা হয়।’ সিউলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার (২১৭ মাইল) পথ অতিক্রম করেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ বাহিনী কমান্ড এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘অতিরিক্ত নিক্ষেপের সম্ভাবনা মাথায় রেখে আমরা নজরদারি বাড়িয়েছি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করছি। সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।’

ইয়োনহাপের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সর্বশেষ উত্তর কোরিয়া ৮ ও ২২ মে স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল। অর্থাৎ এটাই দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা। তিনি গত জুনে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করেছিলেন, এপেক সম্মেলনের আগে বা চলাকালীন সময় উত্তর কোরিয়া উসকানিমূলক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারে, যাতে নিজেদের পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের প্রচেষ্টা জোরদার করা যায়।

এর আগে চলতি মাসের শুরুতে পিয়ংইয়ংয়ে অনুষ্ঠিত বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন দেশটির নতুন দূরপাল্লার ‘হোয়াসং-২০’ আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করেন। একে উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র বলা হচ্ছে। ওই কুচকাওয়াজে চীন, রাশিয়া ও অন্যান্য দেশের উচ্চপর্যায়ের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

দেশটির শাসক ওয়ার্কার্স পার্টির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই প্যারেডে কিম জং-উনের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক কূটনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধি এবং পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম উন্নত অস্ত্র তৈরির ধারাবাহিক প্রচেষ্টা স্পষ্ট হয়। পিয়ংইয়ং বহুদিন ধরে তথাকথিত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অস্ত্র উন্নয়ন চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে এসব অস্ত্র তৈরি জরুরি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে কিম জং-উনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, চলতি বছর আবারও কিমের সঙ্গে দেখা করার আশা করছেন। অন্যদিকে উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, কিম জং-উন ভবিষ্যতে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে আগ্রহী, তবে শর্ত হলো পিয়ংইয়ং কখনোই তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববাজারে সোনা বিক্রির হিড়িক, ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন

নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদল তাঁর তত্ত্বাবধানেই, যোগ্যদেরকে ডিসি নিয়োগ— বিএনপিকে প্রধান উপদেষ্টা

৫ বছরের জন্য কারাগারে গেলেন সারকোজি, হাত ধরে এগিয়ে দিলেন স্ত্রী

গাজার যুদ্ধবিরতি ভেঙে যেতে পারে—আশঙ্কা ট্রাম্প প্রশাসনের

‘কল রেকর্ড ক্রস চেক করালে ভালো হতো’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুতিনের সঙ্গে ‘অকারণ বৈঠকে সময় নষ্ট’ করতে চান না ট্রাম্প, সম্ভাবনা নেই ‘অদূর ভবিষ্যতেও’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে নির্ধারিত বৈঠকের পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা কিয়েভের কোনো ভূখণ্ড ছাড় না দিয়ে যুদ্ধবিরতির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত আসে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মধ্যে ‘অদূর ভবিষ্যতে’ কোনো বৈঠকের পরিকল্পনা নেই। গত সপ্তাহের শেষে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় যুদ্ধের অবসানেও কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।

গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের মধ্যে ফোনালাপের পর এই বিষয়টি সামনে এল। ওই আলাপে লাভরভ জানান, রাশিয়ার আলোচনার অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।

লাভরভ বলেন, ‘আমি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করছি—আলাস্কা সম্মেলনে যে সমঝোতা হয়েছিল, তার পর থেকে রাশিয়ার অবস্থান বদলায়নি।’ তিনি আরও জানান, রুবিওকেও তিনি আগের দিন একই কথা বলেছেন।

গত রাতে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, তিনি ‘অকারণ বৈঠক’ চান না। তাঁর ভাষায়, ‘সময় নষ্ট করতে চাই না। দেখি কী হয়।’

বুদাপেস্ট সম্মেলন স্থগিত হওয়ার মানে হলো গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প–পুতিন ফোনালাপের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া সংক্ষিপ্ত এক কূটনৈতিক প্রচেষ্টার সমাপ্তি।

ওই ফোনালাপে পুতিন নাকি প্রস্তাব দিয়েছিলেন—রুশ বাহিনীর দখলে থাকা খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া প্রদেশের কিছু অংশ ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে দোনেৎস্ক অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ মস্কোকে দিতে। এই দোনেৎস্ক অঞ্চলকে রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের লক্ষ্য হিসেবে দেখে আসছে, যদিও ইউক্রেনের কাছে এটি দেশটির মধ্যাঞ্চলে প্রবেশের প্রধান দ্বার।

পুতিনের প্রস্তাবে প্রথমে কিছুটা ইতিবাচক মনোভাব দেখালেও রোববার ট্রাম্প সেই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, দোনেৎস্ক ‘যেভাবে আছে, সেভাবেই থাকা উচিত।’ এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘তারা চাইলে পরে আলোচনা করতে পারে, কিন্তু আমি বলেছি, বর্তমান ফ্রন্টলাইনেই থামো। ঘরে ফিরে যাও। যুদ্ধ থামাও, মানুষ মারা বন্ধ করো।’

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, তাঁর দেশ পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে ‘একই অবস্থানে’ আছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ট্রাম্প ইউক্রেনকে টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিলম্বিত করায় রাশিয়া ‘গুরুতর আলোচনায় আগ্রহ হারিয়েছে।’

গত শুক্রবার ট্রাম্প ও জেলেনস্কি ওয়াশিংটনে বৈঠক করেন—যা হয়েছিল ট্রাম্পের পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের এক দিন পর। ওই বৈঠক ছিল বেশ উত্তেজনাপূর্ণ। হোয়াইট হাউস সেখানে ইউক্রেনের সম্ভাব্য ভূখণ্ড ছাড়ের বিষয়টি তুলেছিল, যা কিয়েভ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে। একই সঙ্গে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র কেনার অনুরোধও স্থগিত হয়ে যায়।

কিয়েভের ধারণা, প্রায় এক হাজার মাইল পাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে পারলে তারা রাশিয়ার ওপর সামরিক চাপ বাড়াতে পারবে। ইউক্রেন এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার সামরিক শিল্পাঞ্চল ও তেলশোধনাগারে হামলার অনুমতি চায়। তবে ক্রেমলিন বলেছে, এমন কোনো পদক্ষেপকে তারা যুদ্ধের উত্তেজনা বৃদ্ধির ইঙ্গিত হিসেবে দেখবে।

এর আগে মঙ্গলবার জেলেনস্কি ও যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি এবং আরও পাঁচটি ইউরোপীয় দেশের নেতারা বর্তমান যুদ্ধক্ষেত্রের সীমারেখা ধরে যুদ্ধবিরতির ট্রাম্পের আহ্বানকে সমর্থন করেন। যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘বর্তমান যোগাযোগের সীমারেখাই আলোচনার সূচনাবিন্দু হওয়া উচিত।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেরৎস, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এবং পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক।

এছাড়া ফিনল্যান্ড, নরওয়ে ও ডেনমার্কের নেতারা, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লায়েন এবং ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কোস্তাও ওই বিবৃতিতে সমর্থন জানান।

কিয়েভ বলেছে, রাশিয়ার দখলে থাকা কোনো ভূখণ্ডকে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবে না। তবে ইউক্রেন বিদ্যমান সীমারেখায় যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে রাজি আছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। এর অর্থ দাঁড়ায়—মস্কো বর্তমানে ইউক্রেনের যে প্রায় এক-পঞ্চমাংশ দখল করে রেখেছে, তা কার্যত তাদের নিয়ন্ত্রণেই থেকে যাবে, কারণ সামরিকভাবে ইউক্রেন এখনো দখলদার বাহিনীকে পুরোপুরি সরাতে পারেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববাজারে সোনা বিক্রির হিড়িক, ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন

নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদল তাঁর তত্ত্বাবধানেই, যোগ্যদেরকে ডিসি নিয়োগ— বিএনপিকে প্রধান উপদেষ্টা

৫ বছরের জন্য কারাগারে গেলেন সারকোজি, হাত ধরে এগিয়ে দিলেন স্ত্রী

গাজার যুদ্ধবিরতি ভেঙে যেতে পারে—আশঙ্কা ট্রাম্প প্রশাসনের

‘কল রেকর্ড ক্রস চেক করালে ভালো হতো’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হামাসকে সোজা পথে আনতে গাজায় সেনা পাঠাতে চায় মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ: ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ৩৭
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গাজায় সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গাজায় চলমান নাজুক যুদ্ধবিরতির মধ্যেই তিনি ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির বিরুদ্ধে নতুন করে হুমকি দিলেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার ট্রাম্প তাঁর নিজ মালিকানাধীন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য এবং এর আশপাশের বহু দেশ, আমাদের এখনকার মহান মিত্ররা, আমাকে স্পষ্টভাবে ও উৎসাহের সঙ্গে জানিয়েছেন, আমার অনুরোধে তাঁরা গাজায় প্রবেশ করে বড় ধরনের বাহিনী নিয়ে হামাসকে সোজা পথে আনতে প্রস্তুত, যদি হামাস আমাদের সঙ্গে করা চুক্তি লঙ্ঘন করে খারাপ আচরণ চালিয়ে যায়।’

ট্রাম্প নির্দিষ্ট করে বলেননি কোন কোন দেশ গাজায় সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। তবে তিনি ইন্দোনেশিয়ার ভূমিকার প্রশংসা করেছেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মহান ও শক্তিশালী দেশ ইন্দোনেশিয়া এবং তার অসাধারণ নেতাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, মধ্যপ্রাচ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য তারা যে সহায়তা দেখিয়েছে এবং দিয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।’

জাকার্তা ও আরও কিছু দেশ গাজায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো দেশ সরাসরি হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করেনি।

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের জন্য এমন ভালোবাসা ও ঐক্যের স্পিরিট গত এক হাজার বছরেও দেখা যায়নি! এটি সত্যিই দেখার মতো এক সুন্দর দৃশ্য! আমি এসব দেশ ও ইসরায়েলকে বলেছি, এখনো নয়! এখনো আশা আছে, হামাস সঠিক কাজটি করবে।’

ট্রাম্প সতর্ক করে দেন, ‘যদি তারা তা না করে, হামাসের শেষ হবে দ্রুত, কঠোর ও নির্মমভাবে!’

এদিকে ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল প্রায় ১০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।

ট্রাম্প প্রায়ই হামাসকে এ ধরনের হুমকি দিয়ে থাকেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো দেশ আসলে হামাসের বিরুদ্ধে এমন কিছু করতে পারবে কি না, যা ইসরায়েল এত দিনেও করতে পারেনি, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

গত দুই বছরে ইসরায়েল হামাসের রাজনৈতিক ও সামরিক শীর্ষ নেতাদের বেশির ভাগকেই হত্যা করেছে। পাশাপাশি তারা গাজা উপত্যকার প্রায় পুরো অংশ ধ্বংস করে দিয়েছে, ৬৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং সেখানে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছে, যা জাতিসংঘের তদন্তকারীদের মতে এবং শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ভাষায় একপ্রকার গণহত্যা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববাজারে সোনা বিক্রির হিড়িক, ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন

নির্বাচনের আগে প্রশাসনে রদবদল তাঁর তত্ত্বাবধানেই, যোগ্যদেরকে ডিসি নিয়োগ— বিএনপিকে প্রধান উপদেষ্টা

৫ বছরের জন্য কারাগারে গেলেন সারকোজি, হাত ধরে এগিয়ে দিলেন স্ত্রী

গাজার যুদ্ধবিরতি ভেঙে যেতে পারে—আশঙ্কা ট্রাম্প প্রশাসনের

‘কল রেকর্ড ক্রস চেক করালে ভালো হতো’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত